জলবায়ু পরিবর্তন
রাসায়নিক বিষাক্ততা জলবায়ু পরিবর্তনের মতোই বড় হুমকি: গবেষকদের সতর্কতা
জলবায়ু পরিবর্তনের মতোই মানবজাতি ও জীবজগতের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে রাসায়নিক দূষণ (বিষাক্ততা)। অথচ সারা বিশ্বে এই বিষয়ে আলোচনার পরিমাণ প্রায় শূন্যের কোটায়।
সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রাসায়নিক দূষণ নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকেরা।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিপ সায়েন্স ভেঞ্চার্স (ডিএসভি) প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পুঁজিবাদী অর্থনীতি এ পর্যন্ত ১০ কোটিরও বেশি ‘নভেল এন্টিটি’—অর্থাৎ প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে অনুপস্থিত নতুন রাসায়নিক উপাদান তৈরি করেছে। এর মধ্যে ৪০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার উপাদান বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
গবেষণা অনুযায়ী, এসব রাসায়নিক উপাদান জীবমণ্ডলে ভয়াবহ দূষণ সৃষ্টি করছে। ফলে মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে অনেকের কাছেই এই বিষয়টি অজানা।
গবেষণার অন্যতম লেখক হ্যারি ম্যাকফারসন বলেন, ‘অনেকেই ধরে নেন, আমরা যে খাদ্য, পানি, প্রসাধনী বা গৃহস্থালি সামগ্রী ব্যবহার করি, সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত গবেষণা ও দায়িত্বশীলতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।’
প্রতিদিনই দূষিত হচ্ছে মানবদেহ
গ্রানথাম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে আট মাস ধরে পরিচালিত এই গবেষণায় জানা গেছে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও মোড়কজাতকরণে ব্যবহৃত উপকরণ থেকেই ৩ হাজার ৬০০–এর বেশি কৃত্রিম রাসায়নিক মানুষের দেহে শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৮০টি উপাদান স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
বিশ্বজুড়ে প্রায় প্রতিটি মানুষের দেহে ‘চিরস্থায়ী রাসায়নিক’ নামে পরিচিত পিএফএএস পাওয়া গেছে। এমনকি বৃষ্টির পানিতেও এসব রাসায়নিকের মাত্রা অনেক জায়গায় নিরাপদ সীমার চেয়ে বেশি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বিষাক্ত বায়ু শ্বাস নিচ্ছেন।
গর্ভপাত থেকে ক্যানসার পর্যন্ত, সর্বত্র হুমকি
গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন সাধারণ ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানের সঙ্গে মানুষের প্রজনন, রোগপ্রতিরোধ, স্নায়ুবিক, হৃদ্যন্ত্র, শ্বাসপ্রশ্বাস, লিভার, কিডনি ও বিপাক প্রক্রিয়ার সমস্যার সরাসরি বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।
বিশেষ করে কীটনাশকের সংস্পর্শে আসা ও প্রজনন সমস্যার মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা।
পরীক্ষা পদ্ধতিতে ত্রুটি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে রাসায়নিক উপাদানের বিষাক্ততা নিরূপণে প্রচলিত পদ্ধতিগুলো পর্যাপ্ত নয়। অনেক ক্ষেত্রে এসব পদ্ধতি বাস্তব ক্ষতি শনাক্তে ব্যর্থ হচ্ছে।
ম্যাকফারসন বলেন, ‘বিশেষ করে যেসব রাসায়নিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, তাদের প্রভাব অনেক সময় খুবই অল্প মাত্রাতেই শুরু হয়। প্রচলিত “ডোজ বাড়লে প্রভাব বাড়ে” ধারণা এখানে প্রযোজ্য নয়।’
ভোক্তা সচেতনতা বদলে দিতে পারে পরিস্থিতি
রাসায়নিক দূষণ মোকাবিলায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিএসভি বিষয়টিকে শুধু গবেষণার ক্ষেত্র নয়, বরং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের সমস্যা সমাধানে উদ্যোক্তাদের সম্ভাব্য খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
গবেষকেরা বলছেন, রাসায়নিক বিষাক্ততা মোকাবিলায় বরাদ্দকৃত অর্থ অত্যন্ত কম, যা জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত খাতের তুলনায় বৈষম্যপূর্ণ। এ বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
ম্যাকফারসনের মতে, রাসায়নিক বিষাক্ততা নিয়ে এখনই আলোচনা শুরু হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘এর কিছু দিক তুলনামূলকভাবে সহজে সমাধানযোগ্য।’
‘ভালো দিক হলো—এটি অনেকটাই ভোক্তানির্ভরভাবে সমাধান করা সম্ভব, যদি মানুষ তাদের কেনা পণ্যের বিষয়ে সচেতন হন। এর জন্য বিশাল সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন নেই, শুধু নিরাপদ পণ্যের চাহিদা তৈরি করলেই যথেষ্ট,’ বলেন তিনি।
তবে অর্গানিক খাবার তুলনামূলকভাবে দামী হওয়ায়, ম্যাকফারসনের পরামর্শ—কমপক্ষে ফল ও সবজি ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত। সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই অর্গানিক খাবার বেছে নেওয়া জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাসায়নিক ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। পাশাপাশি, নিরাপদ বিকল্প ও সবুজ রসায়নে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি।
তারা সতর্ক করে বলেছেন, এই রাসায়নিক বিষক্রিয়া নীরব ও অদৃশ্যভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হতে পারে, যা মানবজাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
১১৯ দিন আগে
জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির গভীরতা ও গুরুত্ব বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগামী অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিকালে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ প্রস্তাব করেন।
বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় ইকোসিস্টেম মূল্যায়ন, জলবায়ু সহনশীলতা অর্জনে গণমাধ্যমের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের ওষুধের দাম কমছে
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে বায়ু, পানি ও মাটি দূষণ প্রতিরোধ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনে প্রশমন, স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানানো হয়।
১৮৫ দিন আগে
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব অপরিহার্য: পরিবেশ উপদেষ্টা
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, ‘সরকার টেকসই পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই জলবায়ু বিনিয়োগ ফলপ্রসূ করতে কৌশলগত অংশীদারত্ব প্রয়োজন। এছাড়া স্থানীয় সম্প্রদায় ও বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও এটি জরুরি।’
রবিবার (২ মার্চ) পানিভবনে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং নরওয়ের সাবেক পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী এরিক সোলহেইমের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের জলবায়ু সহযোগিতা জোরদার, কার্বন বাজারের সুযোগ অন্বেষণ ও বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়।
পুনর্বনায়ন, আগ্রাসী প্রজাতি নিয়ন্ত্রণ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের বিষয়েও মতবিনিময় হয়। বাংলাদেশের বনায়ন ও সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় এ সময় তারা সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এমনকি, টেকসই বন ব্যবস্থাপনা ও ইকো-রেস্টোরেশন কর্মসূচির প্রস্তাবও দেন।
আরও পড়ুন: ১৯ খাল সংস্কারের মহাপরিকল্পনা নেওয়া হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে জলবায়ু উদ্যোগে যুক্ত হতে একটি কাঠামোবদ্ধ পন্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রতিনিধিদল। কার্বন ক্রেডিট প্রকল্প ও নবায়নযোগ্য শক্তি সমাধানে বিনিয়োগের সম্ভাবনা জোর দেন তারা।
প্যারিস চুক্তির অনুচ্ছেদ ৬ বাস্তবায়নের জন্য একটি শক্তিশালী জাতীয় কাঠামোর গুরুত্ব তুলে ধরে দলটি এবং দেশের কার্বন রেজিস্টার ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব রাখে।
উভয়পক্ষ সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনী অর্থায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে দ্রুততর করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একমত হন।
২৭৭ দিন আগে
মানহীন হাসপাতাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিতে দেশ
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের বর্তমান স্বাস্থ্যসেবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি বাস্তবায়ন থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যেখানে শহরাঞ্চলে ৫৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য থাকছে উন্মুক্ত অবস্থায়। যা দূষণ, জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
প্রয়োজন মতো আইন প্রণয়নের মারাত্মক পরিণতি এবং একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা—এমনকি বাংলাদেশের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেখভালেরও একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ নেই।
দেশের মেডিকেল বর্জ্য উত্পাদন প্রতি বছর আনুমানিক ৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামগ্রিক বর্জ্য উত্পাদন প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। শুধু ঢাকায় দৈনিক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা ২০৩২ সাল নাগাদ বেড়ে সাড়ে ৮ হাজার টনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিদিন ১৫ লাখ টনেরও বেশি কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয় এবং ১০ শতাংশেরও কম পুনরায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
'হেলথকেয়ার ওয়েস্ট ইন বাংলাদেশ: কারেন্ট স্ট্যাটাস, দ্য ইমপ্যাক্ট অব কোভিড-১৯' এবং সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট উইথ লাইফ সাইকেল অ্যান্ড সার্কুলার ইকোনমি ফ্রেমওয়ার্ক শীর্ষক এক গবেষণায় পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে যে, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বাদ দিলে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৫০ হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য (প্রতি শয্যায় ১ দশমিক ২৫ কেজি) উৎপন্ন করবে। যেগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ৪৩৫ টন বিপজ্জনক হবে।
২০২২ সালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রতি শয্যায় মেডিকেল বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১ দশমিক ৬৩ কেজি থেকে ১ দশমিক ৯৯ কেজি। কোভিড-১৯ মহামারির পরে এটির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও স্থায়ী চ্যালেঞ্জ
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কক্সবাজার জেলায় পাঁচটি মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপন করেছে। এ ধরনের উদ্যোগ সত্ত্বেও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এলাকায়।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে মাসিক গোলটেবিল আলোচনা সিরিজ এসডিজি ক্যাফের ১২তম পর্বের আয়োজন করে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) বাংলাদেশ।
২০২৪ সালের ৩ অক্টোবরের এই অনুষ্ঠানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা– বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান অন্বেষণ করা হয় এবং এসডিজি ১১, ১২ এবং ১৩ তুলে ধরা হয়। এর লক্ষ্য হলো- ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিরোধ, হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করা।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করেছে ডিএসসিসি
টেকসই সমাধানের উপর বিশেষজ্ঞদের অভিমত
অনুষ্ঠানটিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ। তিনি তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকটের বাস্তবতা তুলে ধরেন।
তিনি একটি বড় পরিবারের বর্জ্য পৃথকীকরণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে উল্লেখ করেন যে, প্রতি ১৫ বছরে বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, পৃথকীকরণের অভাব এবং দুর্বলভাবে পরিচালিত ল্যান্ডফিলগুলো পরিবেশগত সমস্যাগুলোকে আরও বাড়াচ্ছে।
ড. মমতাজ তিনটি আর অর্থাৎ- হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন। অতিরিক্ত উত্পাদক দায়বদ্ধতা (ইপিআর) অবশ্যই একটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো বিকাশের জন্য বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করতে হবে।
ইউএনওপিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু নিষ্পত্তি নয়; এটি আমাদের ভোগের ধরণগুলো পুনরায় আকার দেওয়া এবং স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ও।’
যদিও মেডিকেল বর্জ্য বাংলাদেশের মোট কঠিন বর্জ্যের মাত্র ১ শতাংশ হলেও এর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা পুরো বর্জ্য প্রবাহকে দূষিত করে এবং বিপজ্জনক করে তোলে।
নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা
বাংলাদেশ সরকার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুশীলন বাড়ানোর জন্য জাতীয় থ্রিআর কৌশল প্রণয়ন করেছে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম উন্নত করতে এসব কৌশল অন্তর্ভুক্ত করেছে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১-এ প্রথমবারের মতো এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি (ইপিআর) চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পণ্য উৎপাদনে দায়িত্বশীল উদ্যোগ নিতে আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার
এই বিধিমালা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ এখনও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিবেদিত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এর পরিবর্তে প্রিজম বাংলাদেশ, ওয়েস্ট কনসার্ন, সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি), এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এবং আইসিডিডিআর,বি'র মতো সংস্থাগুলো মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে ঢাকায় নেতৃত্ব দিয়ে থাকে।
মেডিকেল বর্জ্য অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, হাসপাতালের কিছু কর্মী সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনপা নিশ্চিতের পরিবর্তে পুনর্ব্যবহারযোগ্য মেডিকেল বর্জ্য (যেমন কাচের বোতল, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ব্যাগ এবং ব্লাড ব্যাগ) অসাধু পুনর্ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য সংগ্রহকারীদের কাছে বিক্রি করে। একটি চক্র ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোতে বিক্রি করার আগে প্রয়োজনীয় জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই এই উপকরণগুলো পরিষ্কার এবং পুনরায় প্যাকেজ করে বলে জানা গেছে।
২০০৮ সালের মেডিকেল বর্জ্য (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট) বিধিমালা অনুসারে, হাসপাতালগুলোকে পুনরায় ব্যবহার রোধ করতে প্লাস্টিকের টিউব এবং অন্যান্য বর্জ্য উপকরণগুলো কেটে বা ছিদ্র করে দিতে হয়। তবে টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, ৩১ শতাংশ হাসপাতালে এই নিয়ম মানতে ব্যর্থ হয় এবং ৪৯ শতাংশ হাসপাতালে সুই ধ্বংসকারী যন্ত্রের অভাব রয়েছে।
২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত 'গভর্নেন্স চ্যালেঞ্জেস ইন মেডিকেল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড' শীর্ষক এক গবেষণায় ৪৫টি জেলার হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষসহ ৯৩টি মেডিকেল বর্জ্য কর্মী এবং ২৩১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মকানুন মেনে না চলা এবং তদারকির অভাব রয়েছে।
যদিও ২০০৮ সালের বিধিমালা প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর পরিবর্তে সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালগুলো লাইসেন্সবিহীন ঠিকাদারদের কাছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আউটসোর্স করেছে।
স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের অভাব
ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ইউএনবির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলতে চায় না। অনেক হাসপাতাল এখনও উচ্চ বাছাই ব্যয় এবং প্রয়োগকারী ব্যবস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে সাধারণ আবর্জনা হিসাবে বর্জ্য অপসারণ করে।
তাছাড়া মেডিকেল বর্জ্য ট্র্যাক করার কোনো কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ নেই। গবেষণায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মও উঠে এসেছে। সরকারি হাসপাতালে চাকরির জন্য এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতার কারণে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেকাংশেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য শনাক্ত করতে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি
জরুরি সংস্কারের আহ্বান
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান পদ্ধতিগত সুশাসন ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে জবাবদিহিতার অভাব রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় এবং প্রতিটি পর্যায়ে পরিবেশ বিপর্যয়ে ভূমিকা রাখে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি উভয় হাসপাতালেই কার্যকর মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকার সংস্থা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে অধিকতর সচেতনতা, উন্নত কারিগরি সহায়তা এবং সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
কর্তৃপক্ষ, টেকসই মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতের জন্য বিদ্যমান নিয়ম-কানুনের কঠোর প্রয়োগ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) বৃদ্ধি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সম্মতি নিশ্চিত করার জন্য আরও ভাল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার পক্ষে পরামর্শ দিচ্ছে।
অবিলম্বে সংস্কার এবং একটি নিবেদিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা না হলে— মারাত্মক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।
২৯২ দিন আগে
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ খাতে বাংলাদেশ-নরওয়ে সম্পর্ক জোরদার করবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বনজ সম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ ও নরওয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, উভয় দেশ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট মূল বিষয়গুলোতে আগামী দিনে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বাংলাদেশ সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কার্যালয়ে নরওয়ের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত এসপেন রিক্টার-সভেন্ডসেন বিদায়ী সাক্ষাৎকালে পরিবেশমন্ত্রী এই কথা বলেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে তার অবদানের প্রশংসা করেন সাবের হোসেন।
তিনি বলেন, তার মেয়াদকালে, বাংলাদেশ-নরওয়ে সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী হয়েছে এবং এটি আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো আরও প্রসারিত করার জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি গড়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: যথাসময়ে লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড বিতরণ নিশ্চিতের উপায় বের করার আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
এছাড়াও নবায়নযোগ্য শক্তি, বন সংরক্ষণ এবং জলবায়ু অভিযোজনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উদ্যোগ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেন মন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত রিক্টার-সভেন্ডসেন বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং এর সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রচেষ্টার জন্য নরওয়ের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বৈশ্বিক পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন। বাংলাদেশের পরিবেশগত উদ্যোগগুলোকে বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য নরওয়ের প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।
উভয় পক্ষ তাদের পারস্পরিক পরিবেশগত লক্ষ্যগুলোকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর এবং অংশীদারত্বের নতুন ক্ষেত্র অন্বেষণ করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হন। উভয় দেশ পরিবেশ এবং জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। যা উভয় দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বৃক্ষ নিধন পরিহারের আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
৪৯০ দিন আগে
উন্নত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়নে ব্যর্থ: প্রধানমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২১ মে) সফররত অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংয়ের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোলামেলা কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
নজরুল ইসলাম বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার কারণে তিনি কিছুটা হতাশা ব্যক্ত করেন।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা অলস বসে থাকিনি (উন্নত দেশের অপেক্ষায়), আমরা আমাদের জনগণকে বাঁচানোর জন্য আমাদের নিজস্ব ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিকালে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে, কারণ এখানে প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আঘাত হানে।
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা এবং ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে কোনো ধরনের যুদ্ধ বা সংঘাতের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, 'আমরা প্রতিটি সংঘাত নিরসনে আলোচনা ও সংলাপ চাই।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য অনুরোধ করলেও প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বাংলাদেশ ২০১৭ সাল থেকে কক্সবাজার জেলায় প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। যাদের বেশিরভাগই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দ্বারা পরিচালিত হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। মিয়ানমার এখনো তাদের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোট আয়তনের বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। তিনি বলেন, 'এজন্য আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেছি।’
তিনি বলেন, সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে।
তিনি বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোক্তারা সেখানে বিনিয়োগ করতে পারে এবং দেশের বিনিয়োগবান্ধব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে মুনাফা অর্জন করতে পারে।’
কৃষি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গত ১৫ বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদনে সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি, তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জমি হ্রাস পাওয়ায় আমাদের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে।’
তিনি এর উন্নত কৃষি প্রযুক্তি বিনিময়ে অস্ট্রেলিয়ার সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, সরকারের সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
নজরুল বলেন, তারা কৃষি, শিক্ষা, বাণিজ্যসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তিনি এসব বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছে এবং তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
তিনি অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাদের দেশে আরও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর প্রবেশাধিকারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার ও গভীর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে এবং আঞ্চলিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতা জোরদারের উপায় খুঁজে বের করতে মঙ্গলবার দুই দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় আসেন পেনি ওং।
আরও পড়ুন: কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
৫৬২ দিন আগে
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক আছে, এটাকে কীভাবে আগামীতে আরও এগিয়ে নিতে পারি মূলত আমরা সেটা নিয়ে আলাপ করেছি। সেখানে স্বাভাবিকভাবে যে বিষয়গুলোতে আমাদের অবস্থান অভিন্ন যেমন জলবায়ু পরিবর্তন এবং সেটার অভিঘাত মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে দুই দেশ আরও কীভাবে কাজ করতে পারে, আমরা সেটা নিয়ে আলাপ করেছি।
আরও পড়ুন: ধান উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, যখনই আমরা জলবায়ু নিয়ে কথা বলি পরিবেশের বিষয়টা চলে আসে। পরিবেশ, বন এবং জীববৈচিত্র্য। আমরা চাচ্ছি আমাদের আগামী দিনের যে সহযোগিতা সেটাকে হয়তো আমরা একটা কাঠামোর মধ্যে আনার চেষ্টা করব। আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপের মতো কিছু একটা থাকতে পারে। আমরা ৩ থেকে ৪ অথবা ৫ বছরের একটা কর্মসূচি নেব। প্রতিবছরের সেই কর্মসূচির অধীনে আমরা কি কি কাজ করব সেটা থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা যেটা বলেছি জলবায়ু অর্থায়নের যে বিষয়টা আছে, সেখানে বিশেষ করে বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবি আছে। আগামী দিনে তারা কীভাবে জলবায়ুতে অর্থায়ন করবে, সেটা একটা বড় বিষয়। কেননা আমরা যদি প্যারিস চুক্তির আলোকে দেখি সেখানে চাহিদাটা ছিল বিলিয়ন ডলারের। এখন চাহিদা চলে যাচ্ছে ট্রিলিয়ন ডলারে। এখন ট্রিলিয়ন ডলার তো আর কোনো সরকারের কাছ থেকে আসবে না। মূলত আসবে এই ধরনের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাত থেকে।
মন্ত্রী বলেন, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের কিছু বিষয় আছে যার একটা স্থায়িত্ব থাকে। আবার কিছু কিছু বিষয় তৈরি হতে পারে, যেটা বিশেষ একটা প্রেক্ষাপটে তাদের কিছু অবস্থান থাকতে পারে। আমরা আজ সেটা আলাপ করেছি। আমাদের যে মৌলিক বিষয়গুলো আছে, যেগুলো আমরা মনে করি অভিন্ন- সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে তাদের একটা দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। তাদের হয়তো কিছু অস্বস্তি ছিল। কিন্তু সেটা তো আমাদের মধ্যে ছিল না। আমরা আমাদের নির্বাচন করেছি। সেটা ওই সময়ের জন্য তাদের একটা অবস্থান ছিল, আমি এটাকে এভাবে দেখি। এখন তো ওই পর্বটা আর নেই। আবার ইলেকশন হবে চার বা সাড়ে চার বছর পরে। তো এখন তো ইলেকশনের বিষয়টি এই আলোচনায় প্রাসঙ্গিক না।
আর আমি প্রথমেই বলেছি, আমরা সামনের দিকে কীভাবে আমাদের সম্পর্কটাকে আরও সুদৃঢ় করব, সেটা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে।
এদিকে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেন, পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের চমৎকার আলোচনা হয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনে কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায়, সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি।
ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন একসঙ্গে কাজ করার কথা জানান অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু।
এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবেশমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ডোনাল্ড লু
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিচ্ছে: পরিবেশমন্ত্রী
৫৬৮ দিন আগে
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এডিবি: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় তহবিলের খুবই প্রয়োজন বাংলাদেশের এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশে সহযোগিতা বাড়াবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
রবিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাতিমা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জলবায়ু মোকাবিলায় ৯ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে অবকাঠামো উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষার জন্য সরকারের ৩.৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের পুরোনো বাস প্রত্যাহার করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বৈঠকে বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিংও ছিলেন।
অভিযোজন প্রচেষ্টায় বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অনীহার কথা স্বীকার করে সাবের অভিযোজন কর্মসূচি নগদীকরণ এবং স্থানীয়ভাবে নেতৃত্বাধীন উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর জোর দেন।
এছাড়াও আন্তঃসীমান্ত বায়ু দূষণের বিষয়টি তুলে ধরেন পরিবেশমন্ত্রী। যা বাংলাদেশের বায়ু দূষণের ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী। এর মোকাবিলার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
ডেল্টা প্ল্যান, মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান ও ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে এডিবির দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাতিমা ইয়াসমিন।
তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে এডিবির দৃঢ় অংশীদারিত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় রূপান্তরমূলক প্রকল্প গ্রহণে এডিবির নিবেদনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মোট ৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের মধ্যে এডিবি বাংলাদেশের জন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিশেষ করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রতি তার গভীর প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
আরও পড়ুন: নদীর দখল ও দূষণমুক্ত করতে একযোগে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৬১৩ দিন আগে
সম্পদের বিভাজন রোধে সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সম্পদের বিভাজন রোধে সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্লাটফর্মে আসা উচিত বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘কান্ট্রি এনভায়রনমেন্টাল অ্যানালাইসিস ২০২৩ : বিল্ডিং ব্যাক এ গ্রিনার বাংলাদেশ বিল্ডিং’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে ডুপ্লিকেশন এবং ওভারল্যাপিং কমানো প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অসংখ্য ঝুঁকি এবং অস্তিত্বের হুমকির সঙ্গে আর্থিক এবং সক্ষমতা বাড়াতে সম্পদের সুরক্ষা অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: সব উন্নয়ন জলবায়ু সহায়ক করার লক্ষ্য সরকারের: পরিবেশমন্ত্রী
উদীয়মান চাহিদা মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় নীতির সমন্বয় করা হবে জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যই সবার আগে তাই সরকার বায়ু ও পানির গুণমান উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জলবায়ু কর্মের জন্য অগ্রাধিকারমূলক হস্তক্ষেপগুলো ক্রমানুসারে করা হচ্ছে এবং সরকার সক্রিয়ভাবে একটি সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে।
টেকসই অনুশীলনের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে স্থিতিস্থাপক সমাজ গড়ে তুলতে নারীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে: পরিবেশমন্ত্রী
কর্মশালায় আরও ছিলেন বাংলাদেশের নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম।
কর্মশালায় পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, কান্ট্রি এনভায়রনমেন্টাল অ্যানালাইসিস ২০২৩ রিপোর্টের মূল ফলাফলের ওপর উপস্থাপনা এবং আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৬১৬ দিন আগে
সুপেয় পানি সরবরাহই হবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় অন্যতম চ্যালেঞ্জ: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ভবিষ্যতের বাংলাদেশে সুপেয় পানির সরবরাহ ঠিক রাখাই হবে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বিকালে ঢাকায় ইউনিসেফ আয়োজিত বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ‘শান্তির জন্য পানি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবীর শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে একটি। পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, লবণাক্ত পানির কারণে জীববৈচিত্র্য এবং কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সুপেয় পানির উৎসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ সুপেয় পানির সরবরাহ ঠিক রাখাই হবে আমাদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ভূগর্ভস্থ পানের স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে তাই ভবিষ্যতে পান করার জন্য পানি সরবরাহ একটি চ্যালেঞ্জ হবে। সেজন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি অর্থাৎ ভূউপরিভাগের পানি সংগ্রহ করে কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সুইডেনের এম্বাসেডর আলেক্সান্ডরা বার্গ ভন লিনডে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিড ড. রাজেন্দ্র বোহরা এবং সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহীম।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ।
এর আগে সকালে আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি জাইকা, এডিবি ও এএফডি নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প (এসসিআরডিপি) নামক প্রকল্প দুটির অর্থায়ন করে।
জুন ২০২৮ সাল নাগাদ নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে মোট ৬০২ মিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ হবে এবং ডিসেম্বর ২০২৮ সালে শেষ হবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প (এসসিআরডিপি) যেখানে মোট প্রায় ৩ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রকল্প দুটির উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিকল্পনা অনুযায়ী টেকসই নগরায়ন, নগর পরিচালন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করা, দক্ষিণ চট্টগ্রামের জীবন মানের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. শের আলী, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং, এএফডি বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কট্রিস, জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিডে। এছাড়াও প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রগণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
৬২০ দিন আগে