তিস্তা নদী
ভারী বর্ষণে পানি বাড়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট
তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাটের সবগুলো খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫১ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ রেকর্ড করেছে পাউবো।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে দেখা দিয়েছে নদ-নদীর ভাঙন।
এছাড়াও গত দু’দিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি আবার কখনো ভারী বৃষ্টি। এতে জনসাধারণের মাঝে যেমন স্বস্তি ফিরে এসেছে। তেমনি খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ কাজে যেতে না পারায় পড়েছেন চরম বিপাকে।
আরও পড়ুন: ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে বিল ডাকাতিয়ার ৮২৫০টি মাছের ঘের, ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি
গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু রংপুরে ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ভারী বর্ষণের কারণে নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমানতালে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চর গড্ডিমারী এলাকার হোসেন আলী বলেন, ‘পানি বৃদ্ধিতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি। কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।’
পাউবো ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।’
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জিয়াউল হক জিয়া বলেন, ‘দুদিন ধরে টানা বর্ষণের তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওইসব ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকার রাস্তাঘাটে পানি উঠে চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।’
এদিকে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হাক্কানি বলেন, ‘অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ভারী বর্ষণে মৎস্য খাতে ক্ষতি ৬০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
২ মাস আগে
লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ভোগান্তি এখনো কমেনি তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের।
কয়েক দিন ধরে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় শনিবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় আরও কমে তা ৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় বিদ্যুৎহীন সিলেটের ১২ হাজার গ্রাহক
গত বুধবার সকালে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে স্বল্প বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে শুক্রবার সকাল থেকে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
সদর উপজেলার গোকুন্ডা, কালমাটি, আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন, চর এলাকা ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়ি-ঘরে এখনো পানি রয়েছে। পানিতে ডুবে আছে আমন ধানের বীজতলাসহ অনেক ফসলি জমি।
এদিকে নদীর চর ও নিম্নাঞ্চলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তা জেগে উঠলেও জমে আছে কাদামাটি। ফলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি।
কিছুটা উঁচু বাড়িঘর থেকে পানি নেমে গেলেও ঘরে বাইরে জমে আছে কাদামাটি। ফলে তাদের চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। এখনো অনেক বাড়িতে নলকূপ, টয়লেট পানিতে তলিয়ে আছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতলে হ্রাস পেতে পারে।
এছাড়া আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
আরও পড়ুন: সিলেট-সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
সিলেটের বন্যায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি
৬ মাস আগে
তিস্তা নদীতে ছুড়ে সন্তানকে হত্যার অভিযোগে বাবা আটক
তিস্তা ব্রিজ থেকে নদীতে ছুড়ে ফেলে নবজাতক সন্তানকে হত্যার অভিযোগে বাবা লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ। এর আগে, শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে তিস্তা ব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিএনপি-জামায়াতের ৭ কর্মী আটক, আহত ৫ পুলিশ সদস্য
পুলিশ জানায়, জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝার ইউনিয়নের রাবাইটারী এলাকার লাল মিয়া ও ছামিরন ৩ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন। লাল মিয়ার পরিবার এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রী দুইজনে মিলে নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ তেতুলতলা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন।
এরই মধ্যে গত ২২ অক্টোবর ছামিরন তার বাবার বাড়িতে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান প্রসব করেন। জন্মের পর থেকে তার স্বামী ওই সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেন। এমতাবস্থায় স্ত্রী ছামিরন প্রতিবাদ করলে গত ২৭ অক্টোবর বিকালের দিকে স্বামী লাল মিয়া পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মোটরসাইকেলে করে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।
একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিস্তা ব্রিজের মাঝখানে স্বামী লাল মিয়া মোটরসাইকেল থামিয়ে নবজাতককে তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর কথা বলে বিরতি নেয়। দুধ খাওয়ানোর এক পর্যায়ে ছামিরন লাল মিয়া আকস্মিকভাবে নবজাতককে তার কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ব্রিজের উপর থেকে তিস্তা নদীতে ফেলে দিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে রংপুরের দিকে পালিয়ে যান।
পুলিশ আরও জানায়, পরে ছামিরন কান্নাকাটি ও চিৎকারে লোকজন জমা হয়। তাদের ঘটনাটি জানান ছামিরন। লোকজন কাউনিয়া ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নবজাতকে খোঁজাখুজি করেও কোনো সন্ধান পাননি।
গত ২৮ অক্টোবর রাতে লাল মিয়া ছামিরনের কাছে এলে ৯৯৯ নম্বরে কল করে কচাকাটা থানা পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লাল মিয়া সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. রুহুল আমীন বলেন, এই বিষয়ে নাগেশ্বরী থানায় গত ২৯ অক্টোবর একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা ও সত্যতা স্বীকার করে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুন: বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেওয়া মিয়া আরেফিকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আটক
ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ-বিএনপি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বিএনপি নেতা আটক
১ বছর আগে
তিস্তায় ধরা পড়ল ৭২ কেজি ওজনের বাঘাইড়, ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা নদীতে এক জেলের জালে ৭২ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ ধরা পড়েছে। বাঘাইড়টি ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে হাতীবান্ধার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ ডাউয়াবাড়ী গ্রামের ইছাহাকের ছেলে মহাসিন আলী তিস্তা নদীতে মাছ ধরতে গেলে তার জালে আটকা পড়ে বাঘাইড় মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারে নিয়ে এলে স্থানীয়রা মাছটি দেখতে ভিড় জমায়। এ সময় অনেক ক্রেতা মাছটি পেতে দামাদামি শুরু করে। দুপুরে ৮০ হাজার টাকায় এলাকাবাসী মাছটি কিনে ভাগাভাগি করে নেয়।
আরও পড়ুন: রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি, সতর্কতা জারি
স্থানীয় বাসিন্দা আফছার আলী বলেন, তিস্তায় এত বড় মাছ পাওয়ায় আমরা নদী পাড়ের মানুষ অনেক খুশি। নদীতে সহজে এত বড় মাছ পাওয়া যায় না।
জেলে মহাসিন আলী বলেন, তিস্তায় পানি বাড়লে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে আমি মাছ ধরতে যাই। এ সময় আমার জালে বিশাল আকৃতির একটি বাঘাইড় মাছ আটকা পড়ে। মাছটি বাজারে নিয়ে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করি।
আরও পড়ুন: তিস্তার বাঁধ ভেঙে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা
১ বছর আগে
তিস্তার পানিতে ফসলের ক্ষতি
ভারী বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় ভারতের উত্তর সিকিমের তিস্তা অংশে বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে চরের ফসলসহ দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বছরজুড়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। দেখা দিয়েছে শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন সংকট।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার নিচে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হলেও, কাউনিয়া পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার উপরে রেকর্ড করা হয়।
বিস্তৃর্ণ তিস্তা চরাঞ্চলে বিভিন্ন ফসল এবং নদী তীরে বসবাসকারী মানুষের জানমালের বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের গোবর্দ্ধন এলাকার বাসিন্দা কৃষক ফারুক মিয়া বলেন, চরে তিন দোন জমিতে রোপা আমন করেছিলাম। ধান উঠার সময়ও চলে আসছে। হঠাৎ পানি আসায় সব ডুবে আছে। কতটুকু ধান থাকবে বলা মুশকিল।
আরেক কৃষক তোতা মিয়া বলেন, চরে কয়েকদিন আগে ধান কেটে রেখেছি। হালকা বৃষ্টি হয় জন্য নিয়ে আসিনি বাড়িতে। পানি আসার খবরে কোনোরকমে ভেজা ধান নিয়ে আসছি। বৃষ্টি পড়তেছে। তাই ধান মাড়াই করতেও পারছি না।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ
১ বছর আগে
তিস্তার বাঁধ ভেঙে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা
ভারতের উত্তর সিকিমে অতি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভারী ঢলে তিস্তার বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বুধবার (৪ অক্টোবর) রাতে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের (CWC) তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। তা ছাড়া রংপুর অঞ্চলসহ লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে তিস্তার বাম ও ডান তীরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় বাড়ছে পানি, বন্যার আশঙ্কা
এতে মৌসুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রটি ।
লালমনিরহাট জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা দেওয়াসহ বন্যা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন ও আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার জানান, নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিংসহ বিভিন্নভাবে মানুষকে সচেতন করতে বলা হয়েছে। তিস্তাপাড়ের সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের গবাদিপশুসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারী ঢলে তিস্তায় আবারও বন্যা দেখা দিতে পারে। আমরা সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে কবি রাধাপদের ওপর হামলা
১ বছর আগে
তিস্তাপাড়ে ভাঙনে মানুষের মানবেতর জীবন
বর্ষায় ভয়াবহ বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভাঙনের মুখে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। গেল সপ্তাহে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে কেউ কেউ রাস্তার পাশে কিংবা বাঁধের ওপর মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভাঙনের কবলে রয়েছে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, দুটি উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা।
স্থানীয়রা জানান, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নীলফামারীর কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে তিস্তা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। নদীটি লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।
অভিযোগ রয়েছে, ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে দেশেটির সরকার একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতের আগেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয় এবং বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। তবে বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় লালমনিরহাট।
আরও পড়ুন: অসময়ে যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
জন্মলগ্ন থেকে তিস্তা নদী খনন না করায় পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে পানি প্রবাহের পথ না পেয়ে বর্ষাকালে উজানের ঢেউয়ে লালমনিরহাটসহ পাঁচ জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ সময় নদী ভাঙনও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। প্রতি বছরই নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করে। ফলে লালমনিরহাটে বিস্তৃর্ণ জমি বালুময় চরাঞ্চলে পরিণত হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে সদরের খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের খামারটারী ও পূর্ব কালমাটি গ্রামের প্রায় ১০ থেকে ১৫ টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের কবলে চোংগাডারা উচ্চ বিদ্যালয়, খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, খুনিয়াগাছ উচ্চ বিদ্যালয়সহ নানান প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। এছাড়া নদীর পাড়ে নির্মাণাধীন চোংগাডারা উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা বিশিষ্ট ভবনসহ শতাধিক বসত বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে।
২ বছর আগে
তিস্তা নদী থেকে সুন্দরগঞ্জে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বৃহস্পতিবার রাতে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে লালচামার কাপাসিয়া ঘাটে তিস্তা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সিহাব একই উপজেলার পূর্ব বেলকা গ্রামের ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের ছেলে এবং স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ১৬ ঘণ্টা পর পদ্মা নদী থেকে বুয়েট শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
নিহতের স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সিহাব তার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে রওনা দেয়। তার হাতে দোকানে বিক্রির টাকাও ছিল। পরে রাতে সে আর বাড়িতে না ফেরায় তার বাবা আনিসুর রহমান সুন্দরগঞ্জ থানায় ছেলে নিখোঁজের একটি জিডি করেন। শুক্রবার বিকালে নিখোঁজ সিহাবের লাশ কাপাসিয়া লাল চামার ঘাটে তিস্তা নদীতে ভেসে উঠলে গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার, কাউন্সিলর পুত্র গ্রেপ্তার
সুন্দরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ জানান, দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় কে বা কারা তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে তার গায়ের গেঞ্জি দিয়ে গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ তিস্তা নদীতে ফেলে দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২ বছর আগে
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে, নিচু এলাকা প্লাবিত
গাইবান্ধায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত না হলেও সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ঘাঘট নদী এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার চার উপজেলার নিচু এলাকার অন্তত ৩৫ চরে হাটু ও কোমর পানিতে ডুবে গেছে।
সোমবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে গাইবান্ধা শহরের ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজজ্জামান জানান, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, শ্রীপুর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, অন্তত পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়িতে পানিতে ডুবে গেছে। অনেকেই নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। আবার অনেকেই স্বজনদের বাড়িতে চলে গেছে।
তিনি বলেন, বন্যার পানিতে গাইবান্ধার তিস্তা, যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ফুলছড়ির কঞ্জিপাড়া, উড়িয়া, ফুলছড়ি, গজারিয়াসহ অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কমতে শুরু করেছে শাবিপ্রবিতে বন্যার পানি
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। চরাঞ্চলে বন্যা শুরু হলেও জানমাল বাঁচাতে লোকজন বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছেন।
২ বছর আগে
তিস্তায় ধরা পড়লো ১৭ কেজি ওজনের বোয়াল
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদীতে এবার জেলেদের খোঁচার আঘাতে ধরা পড়েছে ১৭ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ। সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার পূর্ব ডাউয়াবাড়ি এলাকায় তিস্তা নদীতে মাছটি ধরা পড়ে।
মাছটি মুহূর্তেই এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: লাখ টাকায় বিক্রি হলো ১৩৭ কেজি ওজনের মাছ!
জানা গেছে, সোমবার সকালে হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব ডাউয়াবাড়ি গ্রামের জেলে সাজু মিয়া তিস্তা নদীতে মাছ ধরতে যান। এ সময় তার খোঁচার আঘাতে ১৭ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ ধরা পড়ে। মাছটি পাওয়ার পর বিক্রয়ের জন্য স্থানীয় ঘুন্টি বাজারে নিয়ে এলে উৎসুক জনতা ভিড় জমান।
জেলে সাজু মিয়া বলেন, গত দুইদিন ধরে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর বোয়াল মাছটি উঁচুতে ওঠার চেষ্টা করলে আমার খোঁচার আঘাতে মাছটি আটক হয়। পরে ঘুন্টি বাজারে নিয়ে এলে ১৭ কেজি ১৭ হাজার টাকা দরে বিক্রি করি।
ঘুন্টি বাজারের দোকান মালিক সমিতির সদস্য মফিজুল ইসলাম বলেন, বোয়াল মাছটি জেলে সাজু মিয়ার কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকায় কিনে ১৫ জন মিলে ভাগাভাগি করে নিয়েছি।
আরও পড়ুন: পদ্মায় জেলেদের জালে ধরা পড়ল ৩৫ কেজির বাগাড় মাছ
ঘুন্টি বাজারের তবারক হোসেন জানান, তিস্তা নদীতে এত বড় বোয়াল মাছ কোনো দিন দেখিনি। এটিই প্রথম।
প্রসঙ্গত, পাহাড়ি ঢল ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে তিস্তা নদীতে উজানে বিভিন্ন জাতের মাছও বেড়েছে। এরমধ্যে তিস্তা নদীতে বৈরালি, ইলিশ, কালীবাইস, গুলশা, টেংরাসহ বিভিন্ন মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
২ বছর আগে