অর্থবছর
জুলাই-নভেম্বর: প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) একজন পরিচালক বলেছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসে প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ পেয়েছে।
বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল জানান, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের পোশাক রপ্তানি ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ২০২২-২৩ সালের জুলাই-নভেম্বরে ৭ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৯ দমমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, জার্মানি, ইউরোপের বৃহত্তম বাজার যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
স্পেন ও ফ্রান্সে রপ্তানিও যথাক্রমে ১৯ দশমিক ১৫ শতাংশ ও ৩৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশ যেমন- ইতালি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে রপ্তানি যথাক্রমে ৫০ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ৪৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পোল্যান্ডে রপ্তানি বছরে ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
উল্লিখিত সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি ছিল ৩ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালে লেদারপণ্যের রপ্তানি হবে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
রুবেল বলেন, ‘এছাড়া, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় আমাদের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ ও ৩০ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।’
একই সময়ে, অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি একই সময়ের মধ্যে ২ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে।
প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপানে আমাদের রপ্তানি ৫৯৭ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২২-২৩ সালের জুলাই-নভেম্বর মাসে আগের বছরের তুলনায় ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে।
উচ্চ প্রবৃদ্ধি সহ অন্যান্য অ-প্রথাগত বাজারগুলো হল মালয়েশিয়া ১০০ দশমিক ২১ শতাংশ, মেক্সিকো ৪৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ভারত ৪৮ দশমিক ৭৮ দশমিক, ব্রাজিল ৪৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে রপ্তানি আয় পাঁচশ’ কোটি ছাড়াল, ডলার সংকট কেটে যাওয়ার আশা
জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া চলছে: মন্ত্রী
২৫ অর্থবছরের মধ্যে বাজেট ঘাটতি ৫% এর মধ্যে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য সরকারের
সরকার বর্তমান ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে বাজেট ঘাটতিকে জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে ফিরিয়ে আনবে।
একটি সরকারি বাজেট নথি অনুসারে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে সংশোধিত ঘাটতি ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাবের আগে বর্তমান ঘাটতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল: ১৫ অর্থবছর থেকে ১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ঘাটতি গড় জিডিপির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ ছিল।
নথি অনুযায়ী, চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের জিডিপির আকার ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য এটি ৪৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা হবে এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৫৬ লাখ ৬ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা।
নথিতে বলা হয়েছে, বাজেট ঘাটতি কমাতে সরকার অভ্যন্তরীণ সম্পদের ওপর নির্ভর করবে।
চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ আসবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে এবং জিডিপির ২ দশমিক ৪ শতাংশ আসবে ব্যাংকিং খাত থেকে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পাস
নথি অনুযায়ী, বহিরাগত অর্থায়ন চলমান অর্থবছরে জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপির ২ দশমিক ৯ শতাংশ আসবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে এবং জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ আসবে ব্যাংকিং খাত থেকে।
বাহ্যিক অর্থায়ন চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপির ২ দশমিক ৮ শতাংশ আসবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে এবং ২ দশমিক ৩ শতাংশ আসবে ব্যাংকিং খাত থেকে।
নথি অনুসারে, বাহ্যিক অর্থায়ন চলমান অর্থবছরে জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ অবদান রাখবে।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখন নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় বিশ্ব আরেকটি ধাক্কা খায়।
নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে একটি সম্ভাব্য বিশাল বৈশ্বিক সরবরাহ-সাইড শক প্রবৃদ্ধি হ্রাস করতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতিকে ধাক্কা দিতে পারে, যা কোভিড-১৯-পরবর্তী পুনরুদ্ধারকে প্রভাবিত করবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং পরবর্তীতে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
নথিতে বলা হয়েছে যে রাশিয়া বিশ্বের প্রায় ১০ শতাংশ শক্তি সরবরাহ করে, যার মধ্যে ১৭ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ১২ শতাংশ তেল রয়েছে।
তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি শিল্পের খরচ বাড়াবে এবং ভোক্তাদের প্রকৃত আয় হ্রাস করবে।
বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশে রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি বর্তমানে স্পষ্ট।
দেশে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ২১ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বাণিজ্য অংশীদারদের মুদ্রাস্ফীতির পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ২২ অর্থবছরের জন্য মুদ্রাস্ফীতির অনুমান সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২৩ অর্থবছরের জন্য ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
অন্যদিকে, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২২ মার্চ ৬ দশমিক ২৯ শতাংশে উন্নীত হচ্ছে, যা আগের বছর ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল।
আরও পড়ুন: বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ: এফবিসিসিআই
চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ বিলিয়ন ডলার
চলতি অর্থবছরে পণ্য ও সেবা খাতে ৬৭ বিলিয়ন ডলারের উচ্চাভিলাষী রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ।
বুধবার (২০ জুলাই) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা থাকা সত্ত্বেও এটি আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছর ৫১ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬০ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছিল, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।
এদিকে বছর শেষে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি।
সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার লক্ষ্যে নীতিমালায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের নীতিমালা ঘোষণা করা হয়।
মুদ্রানীতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ ও ২০২৩ সালের জুনে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত রেপোর সুদ হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করেছে।
আরও পড়ুন: বন্যাকবলিত এলাকায় জরুরি ব্যাংকিং সেবা দেয়ার নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের
২৯ জুন বাজারে নতুন নোট ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্ত্রিসভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন
মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট অনুমোদন করেছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালসহ মন্ত্রিসভার অন্যান্য মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির বাজেটের প্রমাণীকরণের পর অর্থমন্ত্রী আজ বিকালে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট উত্থাপন করবেন।
আ হ ম মুস্তাফা কামাল বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদে প্রায় ছয় লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করবেন।
এটি দেশের ৫১তম এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম বাজেট।
আরও পড়ুন: আজ বাজেট উত্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী
বাজেট সাপোর্টে ১৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহের চেষ্টা চলছে: প্রধানমন্ত্রী
আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের জন্য ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট আগামী ৯ জুন ২০২২ সংসদে পেশ করা হবে। জাতীয় বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় দশমিক ৭৭ ট্রিলিয়ন টাকা (৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা) যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫ দশমিক চার শতাংশ।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) একটি শাখা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাধারণত সরকারের জন্য রাজস্ব সংগ্রহ করে। আসন্ন বাজেটে চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্বের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪ হাজার কোটি টাকা বেশি এবং জিডিপির ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর
সরকার এনবিআরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ালেও, গত কয়েক অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে না পারার হার বাড়ছে। কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব, বন্ধুত্বপূর্ণ রাজস্ব সংগ্রহের পদ্ধতি এবং ব্যাকডেটেড প্রযুক্তি রাজস্ব বোর্ডের জন্য বাধা।
হিসাব অনুযায়ী, বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা এবং বাজেট ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা ঋণ নেবে।
দেশীয় ঋণের মধ্যে ৯৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে এবং ৩৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে ধার করা হবে।
আরও পড়ুন: এ বছরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে এনবিআর
পর্যটন খাতে রাজস্ব বাড়াতে আইন সংশোধিত হচ্ছে
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ হতে পারে
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করে ১৮ হাজার কোটি টাকা করার কথা ভাবছে।
মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে সামগ্রিক ভর্তুকি এবং প্রণোদনা বরাদ্দ ১৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বেড়ে আনুমানিক ৫৭ হাজার ৪৫ কোটি টাকা হবে।
চলতি বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। এ বছর এ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করা হচ্ছে। তবে সংশোধিত বাজেটে, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি তিন হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
প্রতিবছর বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়ছে। ফলে বরাদ্দও বাড়ানো হচ্ছে। যেমন ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা হিসেবে বরাদ্দ ৪০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে ১২ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাজেট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের কারণে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ সহায়তায় বরাদ্দ আনুমানিক ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৯১০ কোটি টাকা বেড়ে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে এই তিনটি খাতে বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, আগামী ২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রায় ছয় দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ; এই তিনটি খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
এ বছরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে এনবিআর
চলতি অর্থবছরের আর চার মাস থাকলেও রাজস্ব আদায়ের এখনও প্রায় অর্ধেক বাকি রয়েছে। এর ফলে এ বছরও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআরের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে তিন দশমিক ৩০ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রাজস্ব বোর্ডের। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি এই আট মাসে এক দশমিক ৭৬ লাখ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে বোর্ড। এর মানে হলো এক দশমিক ৫৩ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ এখনও বাকি।
সরকারি নথিতে দেখা যায়, রাজস্ব বোর্ডকে বাকি চার মাসের (মার্চ-জুন) প্রতি মাসে ৩৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে। তবে এনবিআরের তথ্য বলছে, এটি একেবারে অসম্ভব এবং আগে এমনটা হয়নি।
আরও পড়ুন: এনবিআরকে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর ভ্যাট কমিয়ে সর্বনিম্ন করার নির্দেশ মন্ত্রিসভার
এদিকে অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা ও অর্জনের মধ্যে ব্যবধান কমাতে তিন দশমিক ০৫ লাখ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশোধিত রাজস্ব সংগ্রহ পরিকল্পনা জমা দিয়েছে এনবিআর।
অর্থ মন্ত্রণালয় সংশোধিত রাজস্ব সংগ্রহ পরিকল্পনা অনুমোদন করলে অবশিষ্ট (মার্চ-জুন) মেয়াদে রাজস্ব বোর্ডকে প্রতি মাসে গড়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে।
রাজস্ব আদায়ে এ পর্যন্ত ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও লক্ষ্যমাত্রার শীর্ষে পৌঁছাতে ব্যর্থ হতে পারে এনবিআর।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ
গত ২০২০-২১ অর্থবছরে তিন দশমিক ৩০ লাখ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে দুই দশমিক ৬৬ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা পরে তিন লাখ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।
আয়কর, ভ্রমণ কর, কাস্টমস ডিউটি, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক আকারে রাজস্ব সংগ্রহ করে এনবিআর।
চলতি অর্থবছরে জিডিপি ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে: এডিবি
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান অর্থবছর ২০২১-২২ এ বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এডিবি এ তথ্য দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ থেকে ২০২২ অর্থবছরে-এ মূল্যস্ফীতি ছয় শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আউটলুক (এডিও)অনুযায়ী আমদানি বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি হ্রাসের কারণে ২০২১ এর জিডিপি দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ২০২২ এ দুই দশমিক সাত শতাংশে প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷
আরও পড়ুন: মহামারি মোকাবিলায় সহায়তার জন্য এডিবিকে ধন্যবাদ অর্থমন্ত্রীর
তবে এই বৃদ্ধির প্রধান ঝুঁকি হতে পারে তেল ও আমদানির জন্য উচ্চ মূল্য এবং ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে ঘাটতি।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেন, ‘দেশীয় সম্পদ সংগ্রহ বৃদ্ধি, পণ্য ও সেবা তৈরিতে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা, আধুনিক সবুজ প্রযুক্তির প্রচার এবং জ্ঞান ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে চলমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করা দরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিনিয়োগ আরও শক্তিশালী হবে, যা বেসরকারি খাতের ঋণ এবং শিল্পের কাঁচামাল এবং মূলধনী পণ্য আমদানি তরান্বিত করবে।
আরও পড়ুন: ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬.৯৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগ ও ব্যক্তিগত খরচ বৃদ্ধি পাবে তবে রেমিটেন্স হ্রাস হতে পারে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশগত টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নীতি প্রণয়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।
বিটিএমসির পাটকল ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩,১৬৮ কোটি টাকা লোকসান করেছে: পাটমন্ত্রী
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) আওতাধীন পাটকলগুলো ২০২০-২১ অর্থবছরে তিন হাজার ১৬৮ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
বৃহস্পতিবার সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গার এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই সময়ে পাটকলগুলো ৪৮৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা আয় করেছে এবং ব্যয় করেছে তিন হাজার ৬৫২ দশমিক ৯৪ কোটি টাকা।
স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালিত হয়।
মন্ত্রী বলেন, বিটিএমসির অধীনে ২৫টি পাটকলের মধ্যে ২৪টি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং একটি ভাড়া দেয়া হয়েছে।
বন্ধ হওয়া ২৪টি মিলের মধ্যে দুটিতে টেক্সটাইল পল্লী স্থাপন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কারখানা নির্মাণে কোনো অনিয়ম চলবে না: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
ঢাকা-১৮ আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বর্তমানে (২০১৮ আদমশুমারি অনুযায়ী) দেশে ৫৮৯টি তাঁত কারখানা ও এক কোটি ১৬ হাজার ১১৭টি ইউনিট রয়েছে।
তিনি বলেন, তাঁত শিল্প বছরে প্রায় ৪৭ দশমিক ৪৭ কোটি মিটার তাঁত কাপড় উৎপাদন করে যা দেশের বস্ত্র চাহিদার ২৮ শতাংশ পূরণ করে (পাওয়ার লুম বাদে)।
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে তাঁতের সংখ্যা দুই লাখ ৯০ হাজার ২৮২টি।
সংসদ সদস্য বেগম লুৎফুন্নেসা খানের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের আট মাসে পাঁচ দশমিক ছয় লাখ টন কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে পাঁচ দশমিক ৮৬ লাখ টন কাঁচা পাট এবং সাত দশমিক ৮২ লাখ টন পাটজাত পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাটের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে: পাটমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজীবন কাজ করে যাব: পাটমন্ত্রী