জাতিসংঘ
জিম্মিদের ওপর যৌন সহিংসতা ইসরায়েলের হামলার বৈধতা দেয় না: জাতিসংঘ দূত
সংঘাতের সময় যৌন সহিংসতার বিষয় তুলে ধরে জাতিসংঘের দূত ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় অপহৃত হওয়া জিম্মিরা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন এমন ‘স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য’ পাওয়া গেলেও পরবর্তীকালে চালিয়ে যাওয়া হামলাকে এটি বৈধতা দেয় না।
সোমবার প্রমিলা প্যাটেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের অকথ্য দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে এবং সমস্ত জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জন্য একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি নৈতিকভাবে অপরিহার্য।
এ সময় অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজা ও সুদানে রমজান মাসে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
প্রমিলা আরও বলেন, ‘হামলা চালিয়ে যাওয়া, কোনোভাবেই, তাদের রক্ষা করতে পারে না। এটি যৌন সহিংসতাসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার ঝুঁকির পথ তৈরি করে দেয়।’
ইসরায়েলের আহ্বানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের ডাকা এক কাউন্সিলের বৈঠকে প্যাটেন তার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন। যেখানে জানা যায়, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলাকালে হামাস ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং নারীদের বিরুদ্ধে অন্যান্য নিষ্ঠুর ও অমানবিক কাজ করেছে এমন প্রমাণ মিলেছে। এ সময় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
এখনও ১৩৪ জিম্মি বন্দি এবং গাজার ২ মিলিয়নেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তাদের স্বার্থে এখনই যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান আক্রমণে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ইসরায়েলি সমাজকে প্রতিরোধ ও ভয় দেখানোর জন্য হামাসের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে যতটা সম্ভব উচ্চস্বরে প্রতিবাদ জানাতে তিনি পরিষদে এসেছিলেন।
হামাসের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাতে ৭ অক্টোবর থেকে ৪০টিরও বেশি বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী সংস্থার উচিত চরমপন্থী গোষ্ঠীটিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করা এবং অবিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া।’
সোমবার মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে উল্লেখ করে কাটজ রমজানের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাকে আমাদের মুসলিম ভাইদের শুভেচ্ছা জানাতে সুযোগ দিন।’
কাটজ বলেন, হামাস মুসলিম বিশ্বের পক্ষে কথা বলছে না। মুসলিম ধর্মের নামে যে যৌন সহিংস অপরাধ তারা করেছে এর নিন্দা জানানো উচিত।
কাউন্সিলে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ‘সারা বিশ্বের মুসলমানরা রমজান পালন করছে কিন্তু গাজার সর্বত্র মৃত্যু ও দুর্ভোগ। খাদ্য ও আশা কোথাও পাওয়া যাবে না।’
তিনি কাউন্সিলকে বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চান না কারণ তার ‘রাজনৈতিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য আক্রমণ চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে দিয়ে আমাদের জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে রাখা ইসরায়েলের উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
প্যাটেনের প্রতিবেদনে এক সপ্তাহের মধ্যে সভা ডেকে নিরাপত্তা পরিষদ যে ‘নজিরবিহীন’ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষদের ওপর যৌন নিপীড়নের প্রতিবেদনেও সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্যাটেনের মূল সুপারিশ হলো হামাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান এবং স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রবেশাধিকার দিতে ইসরায়েলকে উৎসাহিত করা।
ফিলিস্তিনিরা এই তদন্তকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে মনসুর ইসরাইলকেও তদন্তে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করতে প্যাটেনকে গাজা পরিদর্শন করতে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বৈঠকে প্যাটেন কাউন্সিলকে বলেন, পশ্চিম তীরে তিনি ধর্ষণের কোনো তথ্য না পেলেও ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ আটকের সময় যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছেন।
প্রতিবেদনগুলো ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপন করেছেন জানিয়ে প্যাটেন বলেন, এসব কাজ প্রতিরোধের জন্য যারা তথ্য দিয়েছিলেন তারা অন্যান্য অভিযোগ লঙ্ঘনের তদন্ত করতেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কিছু ‘রাজনৈতিক অভিনেতা’র দেয়া প্রতিবেদনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেসব অভিযোগগুলোর তদন্তের অনুমতি ছিল না বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সরাসরি প্রত্যাখান জানিয়েছিলেন তারা।
আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে: জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী
বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে ২০৫০ সালের আগে নেট জিরো (গ্রিন হাউজ নির্গমন শূন্যের কোটায়) অর্জন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যে জরুরি ও সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেবরুয়ারি) কেনিয়ার নাইরোবিতে ষষ্ঠ জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে জাতীয় বিবৃতি প্রদানকালে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় তিনি মানবজাতির সামনে অভূতপূর্ব পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক ঐক্যবদ্ধতার জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে যোগ দিতে কেনিয়া যাচ্ছেন পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে নগন্য অবদান সত্ত্বেও বাংলাদেশ হিমবাহ গলে যাওয়া, বন্যা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো বিরূপ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
মন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণগুলো নিরসনের গুরুত্ব এবং টেকসই স্থাপনার লক্ষ্যে আরও বেশি বহুপক্ষীয় প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের পরিবেশগত দায়িত্বের প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে পরিবেশমন্ত্রী ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত ‘পৃথিবীর জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নকে প্রচারের লক্ষ্যে 'মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা' গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।
মন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে পরিবেশ সংরক্ষণের নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি তুলে ধরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দেশের আন্তরিকতার প্রমাণ দেন।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশমন্ত্রী প্লাস্টিক দূষণকে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়ে প্লাস্টিকের বর্জ্য মোকাবিলা এবং টেকসই ভোগ ও উৎপাদন পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ বৈশ্বিক পরিবেশগত শাসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইউএনইএ-৬ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সবুজ, আরও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ইউএনইএ-৬ এর সভাপতি লেইলা বেনালি, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, প্রতিনিধি ও বিশ্ব নেতারা।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা যথেষ্ট নয়: পরিবেশমন্ত্রী
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের হত্যার নিন্দা জাতিসংঘ প্রধানের
উত্তর গাজায় সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক।
উত্তর গাজায় হামলার নিন্দা জানিয়ে দুজারিক বলেন, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলের হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব, যেখানে জীবন রক্ষা করার জন্য সাহায্য চাইতে গিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গাজার আহত বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন, যার মধ্যে অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলের লোকজনও রয়েছে। সেখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারেনি জাতিসংঘ।’
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকার পশ্চিমে সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১০৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। আহত হয় ৭৬০ জনেরও বেশি।
আরও পড়ুন: উপহার-অনুগ্রহ নয়, রাষ্ট্রকে একটি আন্তর্জাতিক আইনি অধিকার মনে করে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি বাহিনীর এক মুখপাত্র দাবি করেন, ভোরে গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকগুলোতে আক্রমণ করে লুটপাট চালায় গাজাবাসীরা। এ সময় আত্মরক্ষা করতে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না জানিয়ে দুজারিক বলেন, ঘটনার তদন্ত করে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি এবং সমস্ত জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, গুতেরেস আবারও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যাতে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা গাজায় সবার কাছে পৌঁছাতে পারে।
গাজা সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারেরও বেশি মৃত্যু এবং ৭০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃত্যুর এই মর্মান্তিক সংখ্যা দেখে গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানান দুজারিক। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচেও অনেকে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০
বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকারে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় হাছান মাহমুদ সামনের চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করলেও জাতীয় স্বপ্নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করা। এটাই আমাদের স্বপ্ন। আমি জানি এখানে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, কিন্তু এটাই আজ আমাদের স্বপ্ন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে ছিলেন।
তিনি বলেন, 'অনেকেই জানেন না, তাকে যখন চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কারাগার থেকে) নেওয়া হয়, তখন তিনি একটি সভার আয়োজন করেছিলেন। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হবে।বঙ্গবন্ধু তার কারাগারের সদস্যদের নিয়ে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ বিভিন্ন বিদেশি মিশনের পাশাপাশি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনও অংশ নেন। ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস, কূটনীতিক, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তরুণ নেতা হিসেবে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাছান মাহমুদ।
বাংলাদেশকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন ড. হাছান মাহমুদ। এসময় তিনি তিনি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ তার নেতৃত্বের জন্য প্রাপ্ত প্রশংসার কথাও উল্লেখ করেন।
ইউনেস্কো ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন ভাষাগত বৈচিত্র্য উদযাপন করে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করে।
২০২৪ সালের প্রতিপাদ্য, ‘বহুভাষিক শিক্ষা - শেখার এবং আন্তঃপ্রজন্মীয় শিক্ষার একটি স্তম্ভ’, মাতৃভাষায় শুরু হওয়া শিক্ষার পক্ষে সমর্থন করে, বহুভাষিক শিক্ষার রূপান্তরকে সহজ করে এবং আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণ করে।
বাংলাদেশে 'অমর একুশে' স্মরণে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, যা সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সংরক্ষণে জাতির অঙ্গীকারের কথা বলা হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।যা জাতীয় ঐক্য ও স্মরণীয় মুহূর্তের প্রতীক। এসময় কালজয়ী সংগীত 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি'র গানটি বাজানো হয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘ইশারায় ভাষা শিক্ষার অভিধান’ চালু করল ইউএনডিপি
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সময়টা ভালো নয়: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরের পরিস্থিতি খুবই কঠিন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য এটি ভালো সময় নয়।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ইউএনআরসি বলেছে, প্রত্যাবাসন বাংলাদেশের জন্য একটি অগ্রাধিকার এবং রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থায়ন এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ও কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থায়নের ঘাটতি রয়েছে।’
এর আগে রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারে তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সংহতি ও তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের প্রয়োজন আমাদের সংহতি। এ সবের জন্য আমাদের তহবিল বাড়াতে হবে।’
মুখপাত্র বলেন, ‘কোনো শরণার্থীকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রত্যাবাসন করা উচিত নয়।’ এটি স্বেচ্ছায় ও এমনভাবে করা দরকার যাতে তাদের মর্যাদা ও সুরক্ষা রক্ষা হয়।
দুজারিক বলেন, 'আমাদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি বর্তমানে তাদের দাবি পূরণ করে না। আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো, যারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উদারভাবে আশ্রয় দিচ্ছে তাদের জন্য বৈশ্বিক সংহতি বাড়ানো দরকার, যেমন কক্সবাজারের স্থানীয় সম্প্রদায়। এর আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন মহাসচিব।’
রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘের আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতে মহাসচিবের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ
রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘের আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখার জন্য আন্তোনিও গুতেরেসকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে উগান্ডার কাম্পালায় তৃতীয় দক্ষিণ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি এ অনুরোধ জানান।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ন্যাম সম্মেলন: ফিলিস্তিনিদের সমর্থন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
২০২৪ সাল জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য হওয়ার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছর উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ এটিকে যথাযথভাবে উদযাপনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং গুতেরেসকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতির কাঠামো সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া জাতিসংঘের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: কাম্পালায় ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের সাক্ষাৎ
দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও মহাসচিবকে ব্রিফ করেন হাছান মাহমুদ। তিনি জানান, জনগণের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উগান্ডার কাম্পালায় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন এবং ৭৭ জাতি গ্রুপ ও চীনের তৃতীয় দক্ষিণ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ এ মুহিত, কেনিয়া ও উগান্ডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক মুহাম্মদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ষায় জাতিসংঘ মহাসচিবকে সুপ্রিম কোর্টের চাইল্ড রাইটস কমিটির চিঠি
ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ষায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের চাইল্ড রাইটস কমিটি।
কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের স্বাক্ষরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নিম্ন আদালতে কালো কোট-গাউন পরার আবশ্যকতা নেই: সুপ্রিম কোর্ট
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় শিশুদের নিরাপত্তা প্রদানে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১৪ জানুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট চাইল্ড রাইটস কমিটি চিঠি পাঠিয়েছে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা অনুযায়ী এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, চিঠিতে ফিলিস্তিনের গাজার সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে জাতিসংঘের শিশু অধিকার কনভেনশনের (ইউএনসিআরসি) অনুচ্ছেদ ৩৮ (১) ও (৪) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের ফলে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট চাইল্ড রাইটস কমিটি।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের রায় কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ
শিশুদের জীবন ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য, শিশুদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতার অবসান, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের সূচনা, শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদান এবং যথাযথ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা প্রয়োগসহ দ্রুত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছে।
বিশ্বের সব শিশুর আনন্দ ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতকরণে যেহেতু আমাদের সমষ্টিগত নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে, সেহেতু বিশ্বের শিশুদের প্রতিপালন ও উন্নতি বিধানকল্পে জাতিসংঘের সব উদ্যোগে সমর্থন ও অবদান রাখতে সুপ্রিম কোর্টের চাইল্ড রাইটস কমিটি বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর: ২৫ আইনজীবীর আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট চাইল্ড রাইটস কমিটির সদস্য বিচারপতিরা হলেন— বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী।
বাংলাদেশের সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহারের আহ্বান জাতিসংঘের
যেকোনো ধরনের সহিংসতা পরিহার এবং প্রত্যেকের মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে পূর্ণ সম্মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সব পক্ষের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গত ৯ জানুয়ারি নিউইয়র্কে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এই আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সহিংসতা পরিহার করে বাংলাদেশে মানবাধিকার-আইনে শ্রদ্ধা নিশ্চিতে সব পক্ষের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি মনে করি, আমরা আপনাদেরকে আগেই বলেছি, মহাসচিব সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করতে এবং সবার মানবাধিকার ও আইনের শাসনে সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুসংহতকরণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: ট্রেনে অগ্নিসংযোগে মা-শিশুসহ ৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় জাতিসংঘ
মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যে সহিংসতা দেখেছি তা নিয়ে তিনি অবশ্যই উদ্বিগ্ন।’
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা প্রতিরোধে রাষ্ট্রসমূহ বাধ্য: জাতিসংঘ কমিটি
সহিংসতা পরিহার করে বাংলাদেশে মানবাধিকার-আইনে শ্রদ্ধা নিশ্চিতে সব পক্ষের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করতে এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সম্পূর্ণভাবে শ্রদ্ধা দেখাতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো নিউ ইয়র্কে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সেখানে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুসংহতকরণের জন্য এটি অপরিহার্য। এই বিষয়ে আপনাদেরকে এটাই বলতে পারি।’
সহযোগী মুখপাত্র বলেন, তারা বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা দেখেছেন।
তিনি বলেন, ‘যা ঘটছে তা মহাসচিব অনুসরণ করছেন। তিনি বিরোধীদের নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেছেন।’
ভিন্নমতাবলম্বী ও সমালোচকদের কণ্ঠরোধ এবং বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তারের সব অভিযোগ জাতিসংঘ মহাসচিব আমলে নিয়েছেন।
সহযোগী মুখপাত্র বলেন, ‘তিনি স্পষ্টতই নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের সময় সহিংসতার ঘটনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।’
বাংলাদেশ সরকারের গণতন্ত্রের পরিবেশ গড়ে তোলা অপরিহার্য উল্লেখ করে বলেন, ‘সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করুন এবং মানবাধিকারকে সম্মান করার বিষয় নিশ্চিত করুন।’
ট্রেনে অগ্নিসংযোগে মা-শিশুসহ ৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় জাতিসংঘ
সম্প্রতি চলন্ত ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মা ও তার শিশুসহ চারজনের প্রাণহানির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছে জাতিসংঘ।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি মনে করি, কারা এ হামলা চালিয়েছে তা শনাক্ত করতে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব।’
একই সঙ্গে অগ্নিসংযোগের হামলায় নিহতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস 'দ্রুত' উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়েছে।
নাশকতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘তদন্তে দেখা গেছে যে এই কাজ পূর্বপরিকল্পিত ছিল, এই মারাত্মক ঘটনার পরিকল্পনা করার জন্য সভা করেছিল। আসন্ন নির্বাচন ও দেশের অগ্রগতি ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে এই নাশকতা রাষ্ট্র ও জনগণের ওপর সরাসরি হামলা।’
এক প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, তারা বাংলাদেশে 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে জনগণ কোনো ধরনের ভয়ভীতি ছাড়াই ভোট দিতে পারবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
তিনি বলেন, 'অবশ্যই নির্বাচনের পর আমাদের কিছু বলার আছে, কিন্তু আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে 'দৃঢ় অবস্থান' নিয়েছে।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে,‘এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তারা শান্তি সমুন্নত রাখতে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।’
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন বৃহস্পতিবার বিকালে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, ৯টি দেশ আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ভারত, জাপান, শ্রীলঙ্কা, চীন, রাশিয়া, জাপান, উজবেকিস্তান, মরিশাস, জর্জিয়া ও ফিলিস্তিন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে।
ওআইসি, কমনওয়েলথ ও আরব পার্লামেন্টও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউ'র চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল ইতোমধ্যে ঢাকায় এসেছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের বিবৃতি বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে: তথ্যমন্ত্রী
একটি কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, এনডিআই-আইআরআই-এর ছোট একটি দলও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জনপ্রিয় ও রাজনৈতিক সমর্থন অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তাদের মিত্রদের একটি অংশ আসন্ন নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অবরোধ আরোপের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
বিএনপির এই কৌশলগত পদক্ষেপের ফলে সারাদেশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের সমর্থকরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এবং তাদের বিতর্কিত দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর অযৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করতে এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা প্রতিরোধে রাষ্ট্রসমূহ বাধ্য: জাতিসংঘ কমিটি