জাতিসংঘ
আবারও জাতিসংঘ উন্নয়ন নীতি বিষয়ক কমিটিতে ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আরও তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসিতে (সিডিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে ২০১৮ সালে জাতিসংঘ মহাসচিবের দ্বারা মনোনয়নের পর টানা তৃতীয় মেয়াদে কমিটিতে নিয়োগ পেলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিডিপি জানায়, কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসিতে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের তৃতীয় দফা নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) হলো জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশে দেশে উন্নয়নের ঝুঁকি নিরসনে সরকারকে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের এলডিসি সংক্রান্ত কমিটির সদস্য হলেন ড. দেবপ্রিয়
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে সদস্য দেশগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে আসছে এই প্রতিষ্ঠান। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ক্ষেত্রেও এটি অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শর্তাবলি পরিপালন করছে কি না তাও দেখবে সিডিপি।
১৯ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালে গড়ে দিনে ১৪০ নারী সঙ্গী বা আত্মীয়ের হাতে নিহত: জাতিসংঘ
২০২৩ সালে নারীদের জন্য বাসা-বাড়ি সবচেয়ে প্রাণঘাতী স্থান হয়ে উঠেছে। সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১৪০ জন নারী ও কিশোরীকে নিকটাত্মীয় বা পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে।
সোমবার জাতিসংঘের দুটি সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ইউএস উইমেন এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫১ হাজার ১০০ নারী ও কিশোরীকে তাদের সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৮ হাজার ৮০০ জন।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে গড়ে দিনে ১৪০ নারী সঙ্গী বা আত্মীয়ের হাতে নিহত: জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিরোধী দিবসে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, হত্যা বেড়েছে বিষয়টি এমন নয়, আসলে তথ্য প্রাপ্তির উন্নতির কারণে সংখ্যা বেড়েছে।
তবে, উভয় সংস্থা জোর দিয়ে বলেছে, এই ধরনের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে নারীদের এবং কিশোরীদের প্রভাবিত করে। কোনো অঞ্চলই এ থেকে মুক্ত নয়। প্রতিবেদনে আবারও বলা হয়েছে, ‘বাড়ি নারী ও মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান।’
২০২৩ সালে সঙ্গী ও পারিবারিক সহিংসতার কারণে সবচেয়ে বেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে আফ্রিকায়। আনুমানিক ২১ হাজার ৭০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে। এই মহাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় এই ধরনের মৃত্যুর হারও সবচেয়ে বেশি ছিল। প্রতি ১ লাখে ২.৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে আফ্রিকা মহাদেশে।
আমেরিকা ও ওশেনিয়াতেও এ সংক্রান্ত মৃত্যুহার বেশি ঘটনা ছিল। আমেরিকায় প্রতি ১ লাখে ১.৬ জন নারী এবং ওশেনিয়ায় প্রতি ১ লাখে ১.৫ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
এর বিপরীতে এশিয়া ও ইউরোপে মৃত্যুহার ছিল অনেক কম, যথাক্রমে প্রতি এক লাখে ০.৮ এবং ০.৬ জন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্যক্তিগত পরিসরে বেশিরভাগ নারীকে তার সঙ্গী হত্যা করেছে।অন্যদিকে পুরুষ অথবা কিশোরদের হত্যা করা হয়েছে বাড়ির বাইরে কোথাও।
এতে আরও বলা হয়, মোট হত্যার শিকার মানুষের মধ্যে পুরুষ ও কিশোরেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে পরিবারের মধ্যে প্রাণঘাতী সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েরা।
২০২৩ সালে হত্যার শিকার হওয়া নারীদের প্রায় ৬০ শতাংশই ঘনিষ্ঠ সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যরা খুন করেছে। আর মোট হত্যাকাণ্ডের শিকার মানুষের মধ্যে নারীদের হার ২০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ধরনের হত্যাকাণ্ডগুলো উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এসব মৃত্যু প্রায়ই লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ফলে ঘটে এবং সঠিক সময়ে ও কার্যকর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: পর্তুগালে জাতিসংঘ সভ্যতা জোটের দশম গ্লোবাল ফোরামে যোগ দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
৩ সপ্তাহ আগে
জাতিসংঘের আলোচনায় কৃষকদের জন্য জলবায়ু তহবিলের অংশ দাবি
অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এ বছর ফিলিপাইনের এসথার পেনুনিয়ার ছোট খামারে আনারস নষ্ট হয়ে গেছে।
এশিয়ান ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল পেনুনিয়া জীবিকা নির্বাহের জন্য খামারের উপর নির্ভর করেন না। তাই তিনি বিপর্যস্ত হওয়ার চেয়ে বেশি হতাশ হয়েছেন।
তবে পেনুনিয়া চিন্তিত তার মতো বিশ্বব্যাপী লাখো ক্ষুদ্র কৃষকদের নিয়ে। কারণ তারা ধানখেত, নারকেল বাগান এবং সবজি খেতের উপর নির্ভরশীল। অথচ সবই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে।
এটাই কারণে এ বছরের জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে বরাদ্দের কিছু অংশ কৃষি খাতে দেবে বলে আশা করছেন তিনি। বিশেষ করে যারা বিশ্বের অনেক অঞ্চলে অধিকাংশ মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করে, এমন কৃষিজীবী পরিবারের জন্য।
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি ক্ষুদ্র কৃষকদের সাহায্য না করেন, তাহলে আপনি খাবার কোথা থেকে পাবেন? কে আপনার জন্য কৃষিকাজ করবে? কে মাছ ধরবে, কে মধু সংগ্রহ করবে, কে আপনার সবজি রোপণ করবে?’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের রাখাইনে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস জাতিসংঘের
গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন। বিশেষ করে টাইফুনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মাঠের পুনরুদ্ধার, কৃষকদের অত্যাধিক খরা থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং উষ্ণ পৃথিবীর জন্য ভালো বীজ, ভালো সার ও উন্নত সেচ অবকাঠামো প্রস্তুত করতে এই অর্থ প্রয়োজন।
তবে, বিশ্ব সম্পদ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের মতে, দরিদ্র দেশগুলোর প্রয়োজন ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের জলবায়ু অর্থায়ন। অর্থাৎ ধনী দেশগুলো যে পরিমাণ অর্থ দিতে প্রস্তুত তার মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে।
যে চুক্তিই হোক না কেন, এটা নিশ্চিত যে টাকা সংগ্রহ করতে হবে। এখানে একটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে-ঠিক কতটুকু অর্থ কৃষির জন্য এবং কতটুকু অর্থ জীবাশ্ম জ্বালানির নির্গমন কমানোর জন্য বরাদ্দ দেওয়া উচিত।
ক্লাইমেট পলিসি ইনিশিয়েটিভের গত বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্ষুদ্র কৃষকরা জলবায়ু অর্থায়নের ১ শতাংশেরও কম পান। একই সময়, খাদ্য ব্যবস্থা—অর্থাৎ খাবার তৈরি, পরিবহন ও নিষ্পত্তির সব প্রক্রিয়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত। পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ উষ্ণায়নের জন্য গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন দায়ী।
উষ্ণ হয়ে যাওয়া জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কৃষকদের প্রচেষ্টা আরও কঠিন হয়ে ওঠছে বলে মন্তব্য করেছেন সিজিআইএআরের নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাহানে এলৌফি। কপ২৯-এ ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য জলবায়ু-স্মার্ট সমাধান নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা চলাকালে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে চাই, তবে আমরা কীভাবে এমন একটি খাতে বিনিয়োগ না করে থাকব, যা সমস্যার তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী?’
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষির অভিযোজনের জন্য কেন দেশগুলোকে সহায়তা করা উচিত তার একটি সহজ কারণ তুলে ধরেন সেভ সয়েল নামে একটি আন্দোলনের প্রধান বৈজ্ঞানিক এবং কারিগরি কর্মকর্তা প্রবীনা শ্রীধর।
যেখানে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে সম্মত হওয়া অনেক কঠিন, সেখানে কৃষি সমাধানগুলোর জন্য সহায়তা প্রদান করা তুলনামূলকভাবে সহজ হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও ধাঁধাটি সমাধান করতে পারিনি। কিন্তু সেসব ধাঁধার যেটুকু সমাধান করতে পেরেছি আমরা, সেগুলো দেখে কাজ শুরু করছি না কেন?’
তবুও অন্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন, এর ফলে জীবাশ্ম জ্বালানি মোকাবিলান মতো সবচেয়ে বড় সমস্যা থেকে মনোযোগ সরে যাবে।
বার্কলে আর্থের একটি গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানী জেক হাউসফাদার একটি ইমেইল বার্তায় বলেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন কমাতে ভূমি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনে ‘সত্যিকার সম্ভাবনা’ রয়েছে।
তবে তিনি বলেন, বৈশ্বিকভাবে এর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় এক বিলিয়ন টন কার্বন ডাইঅক্সাইড কমানো সম্ভব। যদিও বিশ্বে প্রতি বছর যে ৪০ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়, এটি তার একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ মাত্র।
আরও পড়ুন: যেকোনো হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হওয়া উচিত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান
৪ সপ্তাহ আগে
সুদানের পূর্বাঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ১২০: জাতিসংঘ
সুদানের পূর্ব-মধ্যাঞ্চলের একটি শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের যোদ্ধাদের কয়েকদিনের হামলায় ১২০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের একটি গ্রুপ ও জাতিসংঘ।
সুদানের সামরিক বাহিনীর কাছে একের পর এক বিপর্যয়ের শিকার হওয়ার পর এটি ছিল গোষ্ঠীটির সর্বশেষ হামলা। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ আফ্রিকার দেশটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। লাখ লাখ জনগণকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং দেশটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
আরএসএফ যোদ্ধারা গত ২০-২৫ অক্টোবরের মধ্যে গেজিরা প্রদেশের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের গ্রাম ও শহরগুলোতে তাণ্ডব চালান। তারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালান এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এছাড়া তারা খোলা বাজারসহ ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি লুটপাট করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের ট্র্যাকিং ম্যাট্রিক্সের রবিবারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে তাম্বুল শহর এবং পূর্ব ও উত্তর গেজিরার অন্যান্য গ্রামের ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ আগামী সপ্তাহে সুদান সফরের আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘গেজিরা প্রদেশে হত্যাকাণ্ড এবং ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন সুদানের জনগণের উপর এই সংঘাতের অগ্রহণযোগ্য মানবিক ক্ষতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।’
সংঘাত বন্ধে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নষ্ট করার সময় নেই। লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।’
সুদানে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন এনকোয়েতা-সালামি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'এগুলো নৃশংস অপরাধ। নারী, শিশু এবং সবচেয়ে অরক্ষিত লোকেরা এমন একটি সংঘাতের ধকল বহন করছে; যা ইতোমধ্যে বহু জীবন কেড়ে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ২০০০ সালের গোড়ার দিকে দারফুর গণহত্যার সময় ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা ও গণহত্যাসহ যে ভয়াবহতা সংঘটিত হয়েছিল তার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে।
জানজাভিদ নামে পরিচিত আরব মিলিশিয়া থেকে আরএসএফ সৃষ্টি হয়েছিল। সুদানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশির দারফুরের মধ্য বা পূর্ব আফ্রিকান হিসেবে চিহ্নিত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এসব বিদ্রোহীদের একত্রিত করেছিলেন। এ সময় জানজাভিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য নৃশংসতার অভিযোগ আনা হয় এবং দারফুর গণহত্যার সমার্থক হয়ে ওঠে। জানজাভিদ গ্রুপগুলো এখনো আরএসএফকে সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন: সুদানে মসজিদে বিমান হামলায় নিহত ৩১
সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সারিহা শহরে কমপক্ষে ১২৪ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে ত্রাণ সংস্থাগুলো যাতে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে, সেজন্য 'নিরাপদ করিডোর' খোলার জন্য আরএসএফকে চাপ দিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'আহতদের সাহায্য করা বা চিকিৎসার জন্য তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় নেই।’
অনলাইনে বেশকিছু ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। এর কিছু আরএসএফ যোদ্ধারা নিজেরাই শেয়ার করেছে। সেসব ফুটেজে দেখা গেছে, আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যরা বন্দিদের ওপর নির্যাতন করছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সামরিক ইউনিফর্ম পরা এক ব্যক্তি এক বৃদ্ধের চিবুক ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন এবং পেছনে অন্য সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্লোগান দিচ্ছেন।
ওই ভিডিওতে করা মন্তব্যে আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
আরএসএফের বিরুদ্ধে গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের ওপর গুলি চালানোর পাশাপাশি 'বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার' সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে গণতন্ত্রপন্থি দল ও গোষ্ঠীগুলোর জোট কোঅর্ডিনেশন অব সিভিলিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস।
এক বিবৃতিতে জোটটি 'এই ব্যাপক লঙ্ঘনের জন্য আরএসএফকে দায়ী' করেছে এবং প্রস্তুতকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী সফলভাবে আরএসএফের দখলে থাকা এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করার পর গেজিরায় এ হামলা চালানো হলো।
সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুম ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে এবং আরএসএফের কাছ থেকে বিশাল এলাকা পুনরুদ্ধার করে। এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুর দিকে তারা গেজিরা প্রদেশের কৌশলগত পার্বত্য এলাকা জেবেল মোয়া এবং গেজিরা ও নিকটবর্তী সিন্নার প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ দখল করে আরএসএফ বাহিনীকে হটিয়ে দেয়।
অক্টোবরে আরএসএফের একজন শীর্ষ কমান্ডার, গেজিরার ডি ফ্যাক্টো শাসক আবু আকলাহ কেইকেল পক্ষত্যাগ করেন এবং সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
একটি স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ফলে আরএসএফ যোদ্ধারা কেইকেলের অনুগত হিসেবে পরিচিত গেজিরার গ্রাম ও শহরগুলোতে হামলা চালায়।
২০২৩ সালের এপ্রিলে খার্তুমে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সুদানে যুদ্ধ শুরু হয়।
এই যুদ্ধ গণহত্যা এবং জাতিগতভাবে উসকানি দিয়ে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। বিশেষ করে দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে, যেখানে আরএসএফের নৃশংস আক্রমণ চলছে।
সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা অনুসারে, সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১১
১ মাস আগে
‘বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত’
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রতি জাতিসংঘের জোরালো সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘের পলিটিক্যাল অ্যান্ড পিসবিল্ডিং অ্যাফেয়ার্স আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো।
'এক্স' এর মাধ্যমে এক বার্তায় তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে, দেশের উত্তরণ, আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ এবং জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল (ইউএসজি) রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এর সংস্কার প্রচেষ্টায় জাতিসংঘের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে।
বহুপাক্ষিকতার প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার এবং জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের প্রথম সফরে ১০ অক্টোবর নিউইয়র্কে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে জাতিসংঘের সমর্থনকে 'গুরুত্বপূর্ণ' উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব সমর্থনের নিশ্চয়তা পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ডিকার্লোকে ধন্যবাদ জানান।
সাক্ষাৎকালে তারা জাতিসংঘ শান্তি কাঠামোতে বাংলাদেশের অবদান এবং দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব ইউএসজির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে 'বৈশ্বিক মনোযোগের পাশাপাশি বৈশ্বিক পদক্ষেপের' ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি মিয়ানমারের বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের নতুন করে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি করছে।
পুরো অঞ্চলে সম্ভাব্য ছড়িয়ে পড়ার দিকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের সংকট সমাধান এবং বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সহজতর করতে জাতিসংঘকে বৃহত্তর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
তিনি মহাসচিবের বিশেষ দূতকে বাংলাদেশের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র সচিব রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তুলে ধরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রস্তাবের কথা স্মরণ করেন এবং এ বিষয়ে জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করেন।
জবাবে আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মধ্যে চলমান সহযোগিতার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা ড. ইউনূসের
তিনি মূল ক্ষেত্রগুলোতে সংস্কার উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে আরও সহযোগিতার প্রস্তাব দেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সেক্রেটারি জেনারেলের নতুন বিশেষ দূত জুলি বিশপ এই সমস্যাটি সামগ্রিকভাবে সমাধানে সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করবেন।
এর আগে পররাষ্ট্র সচিব সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে 'নারীর অগ্রগতি' শীর্ষক একটি বক্তব্য দেন।
তিনি তার বক্তব্যে নারী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং এ জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি নারী শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা, ডিজিটাল বিভাজন বন্ধ, নারীর কল্যাণ ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব ১৯৯৫ সালের বেইজিং ঘোষণা ও প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন, সিইডিএডব্লিউ এবং উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি (ডব্লিউপিএস) এজেন্ডার প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। ২০০০ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন রেজুলেশন ১৩২৫ প্রণয়নে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত এ সময় আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: স্পেনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চান ড. ইউনূস
২ মাস আগে
বৈরুতে বিমান হামলায় নিহত ২২, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ওপরও ইসরায়েলের গুলি
বৈরুতের কেন্দ্রস্থলের দুটি এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এছাড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ওপর গুলিও চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দেশটিতে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাস্থলে থাকা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক আলোকচিত্রী জানিয়েছে, এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই বিমান হামলায় একটি আটতলা ভবন ধসে পড়ে এবং অন্যটির নিচতলা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এ হামলার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইসরায়েলি বিমান হামলা অনেক বেশি সাধারণ ঘটনা। এসব এলাকায় হিজবুল্লাহর অনেক সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
হামলার পর হিজবুল্লাহর আল মানার টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, গোষ্ঠীটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওয়াফিক সাফাকে হত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এতে বলা হয়, সাফা টার্গেট করা ভবনগুলোর কোনোটিতেই ছিলেন না।
আরও পড়ুন: লেবাননে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৩৬, আহত ১৫০
হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে এক বছরের পাল্টাপাল্টি হামলার পর বৃহস্পতিবারের হামলাটি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সর্বাত্মক যুদ্ধে রূপ নেয়। লেবানন জুড়ে ভারী হামলা চালায় এবং স্থল আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। অন্যদেকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আরও জনবহুল এলাকায় রকেট হামলা বাড়িয়েছে হিজবুল্লাহ। এতে অল্প কিছু হতাহত হওয়াসহ দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
একই দিনে ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের উপর গুলি চালিয়ে দু'জনকে আহত করেছে। যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক নিন্দার ঝড় তুলেছে। এ ঘটনার পর ইতালির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাস আল-নাবা ও বুর্জ আবি হায়দার এলাকায় বৈরুতের দুটি স্থানের ধ্বংসস্তূপের কাছে অনেকগুলো অ্যাম্বুলেন্স ও বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ১১৭ জন আহত হয়েছেন। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
সম্প্রতি বৈরুত সংলগ্ন এলাকায়, বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ দক্ষিণ শহরতলিতে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর হামাস ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ।
আরও পড়ুন: লেবাননে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের প্রত্যাবর্তনে দুই মন্ত্রণালয় কাজ করছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
২ মাস আগে
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
স্বল্পোন্নত দেশ, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং উচ্চ প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্মানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ইউএনওএইচআরএলএলএস’র কাজে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন এবং এলডিসি ইস্যুতে দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্য আমি বাংলাদেশের প্রশংসা করি।’
তারা দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন (ডিপিওএ) বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: তরুণ নাগরিকদের পেছনে বিনিয়োগ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান
২ মাস আগে
জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস
বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ফলপ্রসূ সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিনিধি দল কাতার এয়ারওয়েজের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে শনিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টা ৩২ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
অধ্যাপক ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে জানান, নিউইয়র্কে চার দিন অবস্থানকালে অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ৪০টিরও বেশি বড় ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন।
আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ১৬টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্তত ১২ জন বিশ্ব নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সবার জন্য স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে 'নতুন বাংলাদেশ' সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে দেওয়া ইউনূসের ভাষণে এই আহ্বান জানানো হয়।
আরও পড়ুন: রবিবার রাতে দেশে ফেরার কথা রয়েছে অধ্যাপক ইউনূসের
বাংলায় দেওয়া ভাষণে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা দেখিয়েছে যে, ভেদাভেদ ও মর্যাদা নির্বিশেষে মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখা শুধু উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। 'এটা সবার প্রাপ্য।'
অধ্যাপক ইউনূস গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গভীর করার জন্য বিশ্বের সকল দেশকে আমন্ত্রণ জানান।
'এটি একটি যুগান্তকারী বক্তব্য' উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ভাষণে বাংলাদেশের সমস্যা ছাড়াও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয়ও উঠে এসেছে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকসহ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করতে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে নিউইয়র্ক পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস।
আরও পড়ুন: তরুণ নাগরিকদের পেছনে বিনিয়োগ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান
২ মাস আগে
অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের কাছে নতুন বাংলাদেশকে তুলে ধরবেন আজ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন আজ (২৭ সেপ্টেম্বর)। এই ভাষণের মাধ্যমে জনগণ বিশেষ করে যুবসমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে নতুন বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, অধ্যাপক ইউনূস শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা) সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় ভাষণ দেবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য রাখবেন অধ্যাপক ইউনূস।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের স্বপ্ন ও ভূমিকার পাশাপাশি অধ্যাপক ইউনূস তার সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরবেন। যে সংস্কার এজেন্ডার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের জন্য ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে দেশকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে কাজ করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখবে: অধ্যাপক ইউনূস
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে অধ্যাপক ইউনূসের যে ব্যাপক পরিসরে সম্পৃক্ততা, তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত তার সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরা সহজ হয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করতে কোন ক্ষেত্রগুলোতে সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে পরিকল্পনার একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে এবং এ বিষয়ে তারা বিশ্বকে জানাতে চান যাতে বাংলাদেশে কী ঘটেছিল সে নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ না থাকে।
তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সম্মানিত এবং সব দেশ তার বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে নেবে।
অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থান এবং আগামী দিনে জনমুখী, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে তার দৃঢ় প্রত্যয়ের বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে জ্বালানি ও ট্রানজিট সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করলেন অধ্যাপক ইউনূস-প্রধানমন্ত্রী ওলি
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান; জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব এবং জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা; বৈশ্বিক সংঘাত; রোহিঙ্গা সংকট; টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জটিলতা; উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদ পাচার রোধ; নিরাপদ অভিবাসন এবং অভিবাসীদের মৌলিক সেবাসমূহে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ; প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ফিলিস্তিনের কথা উঠে আসতে পারে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এই অধিবেশন জাতিসংঘ বা বিশ্বমঞ্চে নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন পদক্ষেপ। এই অধিবেশনে বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক এই বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার দারুণ সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে।’
গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রায় ১৫টি বৈঠকে অংশ নেন অধ্যাপক ইউনূস।
শুক্রবার রাতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে অন্তত ৬টি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সংস্কারে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক: অজয় বাঙ্গা
২ মাস আগে
বাংলাদেশের সংস্কারে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক: অজয় বাঙ্গা
বাংলাদেশে আর্থিক খাত সংস্কারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংক ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
নিউইয়র্ক সময় বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এ সহায়তার ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের বন্ধু বাঙ্গা জানান, কমপক্ষে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার নতুন ঋণ দেওয়া হবে। আর আগে প্রতিশ্রুত দেড় বিলিয়ন ডলার নতুন করে যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে পাকিস্তানের সমর্থন চাইলেন অধ্যাপক ইউনূস
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বিশ্বব্যাংক ডিজিটাইজেশন, তারল্য, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতে সংস্কারে সহায়তা করবে।
অজয় বাঙ্গার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত ব্যাপক সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাংকের সমর্থন চান অধ্যাপক ইউনূস।
বিশ্বব্যাংককে ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে সৃজনশীল হতে বলেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'দেশ পুনর্গঠনের এটি একটি বড় সুযোগ।’
দক্ষিণ এশিয়ায় জ্বালানি খাতে সহযোগিতা এবং নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ কীভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগাভাগি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে আরও ছিলেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ এবং সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী চীন
২ মাস আগে