সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
সুনামগঞ্জে দিরাই উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার (৯ মার্চ) সকালে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের রণভূমি গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, রণভূমি গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান ও আশিক মিয়ার মধ্যে স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। গত দুই দিন আগে ব্যাক্তিগত একটি জায়গা বিক্রিকে কেন্দ্র করে রবিবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ জড়ান তারা। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে তিনজন গুলিবিদ্ধ, ৫ ডাকাতকে গণপিটুনি
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সংঘর্ষের পর পুরো গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে।’
এছাড়া গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে বলেও জানান ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
৩৯ দিন আগে
সুনামগঞ্জে ২ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত এলাকা থেকে ২ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) তাহিরপুর উপজেলাধীন ১ নম্বর উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের চারাগাঁও বিওপি কর্তৃক সীমান্ত পিলার-১২৯৪/৩- এস হতে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জঙ্গলবাড়ি নামক স্থান হতে এসব পণ্য জব্দ করা হয়।
জব্দ করা পণ্যগুলো হলো— শার্ট ৫ হাজার ১২৭টি, প্যান্টের কাপড় ১৫৬ মিটার, ব্লেজার কাপড় ১ হাজার ২৯৬ মিটার, পাঞ্জাবি কাপড় ২০ হাজার ৪৩০ মিটার ও স্কিন সানরাইজ ক্রীম ৯ হাজার পিস। আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৯২ হাজার ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চারাগাঁও বিওপির টহল দল জঙ্গলবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মালিকবিহীন ভারতীয় পণ্যগুলো আটক করে।’
তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তের চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। জব্দ করা মালামাল শুল্ক কার্যালয়, সুনামগঞ্জে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
৪১ দিন আগে
সুনামগঞ্জের ৩ উপজেলার ১০ জলমহালের মাছ লুট, নির্বিকার প্রশাসন
প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় সুনামগঞ্জের শাল্লা, দিরাই, জামালগঞ্জ উপজেলায় ঘোষণা দিয়ে ইজারাকৃত বৈধ জলমহালের মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে লুটে নেওয়া হয়েছে তিন উপজেলার অন্তত ১০টি জলমহালের মাছ। মাইকিং করে জলমহালের আশপাশের কয়েক ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতা জলমহালগুলোর কোটি কোটি টাকার মাছ লুটে নেয়।
সর্বশেষ বুধবার(৫ মার্চ) দিরাই উপজেলার মেধা বিল ও বেতরগাং জলমহাল এবং জামালগঞ্জ উপজেলার আইলা বিল লুট করেছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। পূর্ব ঘোষণা দিয়ে লুট চালালেও হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতার সামনে যেন অসহায় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: মাগুরায় দুদলের সংঘর্ষে আহত ২০, ভাঙচুর ও লুটপাট
এদিকে, জলমহালের কোটি কোটি টাকার মাছ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন ইজারাদাররা। সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, বুধবার দিরাই উপজেলার মেধা ও বেতর বিলে জাল, পলো, কুচাসহ বিভিন্ন মাছ ধরার যন্ত্র হাতে হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়। মিছিল দিয়ে তারা পানিতে নেমে লুটে নেয় মাছরাঙ্গা মৎস্যজীবী সমিতির নামের ইজারাকৃত বিলের কোটি টাকার মাছ। একই কায়দায় জামালগঞ্জ উপজেলার আইলা বিলেও পূর্ব ঘোষণা দিয়ে মাছ লুটে নেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন ও বিলের ইজারাদার জানান, আগের রাতেই মাইক ও মুঠোফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিল লুটের খবর। ভোর থেকে বিলের পাড়ের জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। মাছ শিকারের সরঞ্জামের পাশাপাশি সঙ্গে দেশীয় অস্ত্রও নিয়ে আসেন উচ্ছৃঙ্খল জনতা। দিরাই-শাল্লা উপজেলার শ্যামারচর, ললোয়াারচর, মাইতি, চন্দ্রপুর, ইসলামপুর, সন্তোষপুর, কার্তিকপুর, নোয়াগাঁও, চিকাডুপি, বল্লবপুর, উজানগাঁও, সোনাকানি, নিজগাঁও, মির্জাপুর, রাহুতলা, শরিফপুর, কাশীপুরসহ আশপাশের গ্রামের উচ্ছৃঙ্খল লোকজন দিরাই-শাল্লার কামান ও লাইরা দীঘা, সতোয়া নদী, মেদা বিল ও বেতরগাং জলমহালের মাছ লুটে জড়িত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে বিল লুটের খবর পেয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে লুট না করার জন্য আকুতি জানান ইজাোদার। তাতেও কাজ না হলে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ভোরে বিলে উপস্থিত হয়েও রক্ষা করতে পারেননি নিজেদের জলমহাল। হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতার সামনে অসহায় ছিল পুলিশ ও ইজারাদার। লুটে নেওয়া হয় কোটি টাকার মাছ। জলমহাল লুটের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
আরও পড়ুন: লুটপাটে কাজে আসছে না ‘মুহুরী সেচ উন্নয়ন প্রকল্প’
মাছরাঙ্গা সমবায় সমিতির সভাপতি রুশন মিয়া বলেন, মাইকে ঘোষণা দিয়ে হাজার হাজার উচ্ছৃঙ্খল মানুষ এসে আমাদের সমিতির জলমহাল লুটে নিয়ে গেছে। আমরা বাঁধা দিয়েও পারিনি। আমাদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা কিভাবে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেবো এটা আমাদের জানা নেই।
এদিকে, গত রবিবার সকালে দিরাই উপজেলার মেঘনা জলমহালের একটি বিল ও একই উপজেলার আতনি বিলের (শাল্লা উপজেলার জয়পুর গ্রামের সামনে) মাছ লুটে নেয় হাজারো মানুষ। এরপর সোমবার দিরাই উপজেলার কাশীপুর লাইরা দীঘা গ্রুপ ফিশারির এলংজুরি ও আলীপুর গ্রামের পেছনের লাইরা-দীঘা ও চনপইট্টা বিলের পাইলের (অভয়ারণ্য সৃষ্টি করে মাছ বড় করা) প্রায় কোটি টাকার মাছ লুটে নেয় বিল এলাকার ৮-১০ হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
মঙ্গলবার শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের কাছের কাশীপুর লাইরা দীঘা গ্রুপ ফিশারির সতোয়া নদীর মাছ লুট করে দিরাই ও শাল্লার ১০-১৫টি গ্রামের উচ্ছৃঙ্খল মানুষ।
কাশীপুর লাইরা দীঘা গ্রুপ জলমহালের ইজারাদার উত্তর জারুলিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক প্রজেশ দাস বলেন, এমন পরিস্থিতি জীবনেও দেখিনি। প্রতি বছর ৪৫ লাখ টাকা রাজস্ব দেই। তিন বছর অন্তর অন্তর মাছ ধরা হয়। আগামী বছর মাছ ধরার কথা থাকলেও ১০-১৫ হাজার উচ্ছৃঙ্খল মানুষ দুই দিনে আমাদের জলমহালের কোটি টাকার বেশি মাছ লুটে নিয়ে গেছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানিয়েন বলে জানান তিনি।
জলমহাল লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জাকির হোসেন বলেন, দিরাই-শাল্লার জলমহাল লুটের বিষয়টি আমরা অবগত। ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, দিরাই, শাল্লা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জে জলমহাল লুট করার সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ জড়িত। তাজাড়া পলো, টেঁটা, কুচ দিয়ে সংঘব্ধভাবে মাছ ধরতে আসে। এসব জলমহাল সরকারি ইজারার আওতায়। এই জলমহালগুলো লুটের কারণে আগামীতে ইজারা প্রদানে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেবে। এর ফলে দেশ গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। এতে দেশের উন্নয়নমূলক কাজ বিঘ্নিত হবে। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তারা নিজেদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। আমি অনুরোধ করব, তারা যেনো এসব কাজ থেকে বিরত থাকেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ইজারাদাররা যদি আইনি পদক্ষেপ নিলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে অনুরোধ করবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।
আরও পড়ুন: বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ‘স্বর্ণালংকার লুট’
৪২ দিন আগে
সুনামগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ইফতারের আগমুহূর্তে উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের শ্রীনাথপুর গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার শ্রীনাথপুর গ্রামের এলকাছ মিয়া, ইদ্রিছ মিয়া গোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে একই গ্রামের মো. মুরছালিন মিয়া, মনছুর উদ্দিন ও ইয়াস উদ্দিনসহ চার গোষ্ঠীর লোকজনের (মড়লবাড়ী) দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর আগে সোমবার দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
ঘটনাটি শালিসের মাধ্যমে আপস হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। এর জেরে মঙ্গলবার রাতে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এতে নারীসহ দুই পক্ষের ৫০ জন আহত হন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ২
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
৪৩ দিন আগে
সুনামগঞ্জে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ
সুনামগঞ্জে গরুর খেতের ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের আস্তমা গ্রামের উত্তরে ও কামরূপদলং মাদরাসার পূর্ব পাশে পশ্চিম বন্দে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।
আস্তমা গ্রাম ও কামরুপদলং গ্রামের এই সংঘর্ষে আহতরা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল, শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আস্তমা গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন— আক্তার হোসেন, দুলাল মিয়া, জুয়েল মিয়া, শামসুজ্জামান, নাছির আলী, আবদুল জলিল, খাইরুল আমীন, এমরান হোসেন, সাদিক মিয়া, নুরুজ্জামান ও সৌরভ হোসেন।
এ ছাড়াও ওই গ্রামের পক্ষ থেকে আরও ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
অপরদিকে, কামরুপদলং গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন— বাতির আলী, সুন্দর আলী, সুজন মিয়া, কালাই মিয়া, মতিউর রহমান, শওকত আলী, নবী হোসেন ও শাফি আহমেদ।
তাদের পক্ষের আহত আরও ৭ থেকে ৮ জনের নামও তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকালে আস্তমা গ্রামের আলগা বাড়ির (আলাদা বাড়ি) কৃষক বজলু মিয়ার গরু কামরুপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খায়। এ বিষয় নিয়ে দুই কৃষকের মধ্যে মারামারি হয়। পরে এই ঘটনার জেরে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েলে এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হন।
আস্তমা গ্রামের পক্ষে আজগর মিয়া দাবি করেন, গরু অবুঝ প্রাণী। তাকে কেউ বলে দেয় না যে, অমুকের জমিতে গিয়ে ধান খেয়ে আয়। গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে বজলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করে জমির মালিক সুরুজ মিয়া। এতে আমাদের গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সন্ধ্যায় কামরুপদলং গ্রামের পক্ষে নুরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন এসেছিলেন ঘটনাটি শালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করে দিতে। আমরাও তাদের আশ্বস্ত করেছিলাম যে, গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে ফেলাই ভালো। কিন্তু আজ (রবিবার) সকালে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
কামরুপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমরা চেয়েছিলাম বিষয়টি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে শেষ করে দেই। কিন্তু আস্তমা গ্রামবাসী বিচার না মেনে সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমাদের গ্রামের দিকে আক্রমণ করে। পরে আর কোনো কিছুই কন্ট্রোলে থাকেনি। পরবর্তীতে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। যদি কোনো পক্ষ মামলা করে, তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
৫৯ দিন আগে
সুনামগঞ্জের দিরাইতে উদযাপিত হলো শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব-২০২৫
‘বন্ধে মায়া লাগাইছে, দিওয়ানা বানাইছে’, ‘গাড়ি চলে না’, ‘বসন্ত বাতাসে সইগো’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলা রে বন্ধু’, ‘তুমি বিনে আকুল পরান’— এরকম অসংখ্য কালজয়ী গান ও এর স্রষ্টাকে শ্রদ্ধায় স্মরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুই দিন-ব্যাপী ‘শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব-২০২৫’।
বাউল সম্রাটের ১০৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিরাইয়ে শাহ আবদুল করিম পরিষদ আয়োজিত এই উৎসবের আয়োজনে তৃতীয়বারের মত সহযোগী ছিলো দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
বাংলা লোকগানের এই অমর স্রষ্টার স্মরণে ২০০৬ সাল থেকে কালনী নদীর তীরে উজান ধল মাঠে আয়োজিত হয়ে আসছে এই উৎসব। সারাদেশ থেকে আসা লোক সঙ্গীতের শিল্পী ও ভক্ত-অনুরাগীরা বাউল সম্রাটের সৃষ্টিকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে গান-শ্রদ্ধা-স্মরণে মাতিয়ে রাখেন দুরাত। তরুণ-বৃদ্ধ-মহিলাদের পাশপাশি বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বাইরে থেকেও আসা ভক্ত-সুধীজনেরা অংশ হয়ে ওঠেন এই প্রাণের উৎসবের।
উৎসবকে কেন্দ্র করে উজানধল মাঠে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে এবারও জমে ওঠে বর্ণিল মেলা। মুড়ি মুড়কি ও মিষ্টির দোকান, খেলনা, গৃহস্থালি নানান পণ্যের ছোট ছোট স্টলে সেজে উঠে পুরো উজানধলের মাঠ।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে এই উৎসব আয়োজনের সহযোগী বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম (অব.) বলেন, ‘বিকাশ সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজে, নিরাপদে আর্থিক সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে। এই সেবাগুলো দেয়ার পাশাপাশি দেশের আবহমান সংস্কৃতির চর্চায়ও যেনো আমরা ভূমিকা রাখতে পারি, সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। দায়িত্বশীল করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এমন এক মহান ব্যক্তিত্বের স্মরণে আয়োজিত এই লোক উৎসবের সহযোগী হতে পেরে আমরা নিজেদেরকে গর্বিতও মনে করছি।’ বরাবরের মত এবারও উৎসব আয়োজনে সহযোগিতার জন্য বিকাশ ও গ্রামবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান শাহ আবদুল করিম পরিষদের সভাপতি ও বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নুর জালাল।
শুক্রবার শাহ আবদুল করিম পরিষদের সভাপতি ও বাউল সম্রাট পুত্র শাহ নুর জালালের সভাপতিত্বে এবারের উৎসবের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলামসহ (অব.) অন্যান্যরা।
৬৬ দিন আগে
সুনামগঞ্জে বাস-সিএনজির সংঘর্ষে নিহত ২
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে বাসের সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের আহসানমারা সেতু এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দুর্লভপুর ফিরোজ আলীর ছেলে আলী নূর (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত গোলাব হোসেনের ছেলে জমির হোসন (৩৩)।
আহতরা হলেন- একই গ্রামের আলী আকবর (৩০) আমীর আলী(৪০) ও জনি আহমদ (২২)।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু
নিহতদের পরিবার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিশ্বনাথ এলাকার ইশবপুর সাহেববাড়ী উরস মাফহিল থেকে সিএনজি যোগাযোগ বাড়ি ফিরছিলেন সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের পাঁচ যুবক। সিলেট- সুনামগঞ্জ সড়কের শান্তিগঞ্জ আহসানমারা সেতু এলাকায় পৌঁছালে সুনামগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সিএনজির চালকসহ চার যাত্রী গুরুতর আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই যুবককে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় গুরুতর আহত তিনজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়।
নিহত জমিন হোসেনের ভাই তারিফ আলী বলেন, ‘আমার ভাইসহ এলাকার পাঁচজন সিলেট বিশ্বনাথের ইসবপুর সাহেববাড়ি উরস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। আহসানমারা এলাকায় বেপরোয়া বাস ও সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে সবাই আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার ভাই আর আরেক প্রতিবেশী মারা গেছেন। আমরা ঘাতক বাসচালকের শাস্তি চাই।’
জয়কলস হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ সরকার জানান, দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যু
৬৮ দিন আগে
মন্ত্রণালয়ে আটকে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের কাজ
২০ বছর আগে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটার পথ বাসে যেতে লাগত সোয়া ঘণ্টা। অথচ এত বছর ধরে দেশে এত উন্নয়নের পরও এখন লাগে পৌনে দুই ঘণ্টা। সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ায়, এই প্রতিনিয়ত যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে সুনামগঞ্জবাসীর।
কথাগুলো বলছিলেন এই মহাসড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি খসরুল আলম।
অপ্রশস্থতার কারণে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে প্রতিনিয়ত যানজট থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি একটি নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও প্রায় এক বছর ধরে তা মন্ত্রণালয়ে আটকে রয়েছে।
সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ বলছে, এ মহাসড়কের দুটি স্থান মিলে পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার সড়ক চার লেন করাতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপর সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে দরপত্র গ্রহণ শেষে তা সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সেটি সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা, অথচ এখনও সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি এই প্রকল্প।
সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, ২৫ লাখ মানুষের জেলা সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও ট্রাক মিলিয়ে অন্তত ১২শ গাড়ি প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। পাশাপাশি পাঁচ হাজারের বেশি সিএনজিচালিত তিন চাকার যানসহ অসংখ্য ছোটবড় গাড়ি চলে এই সড়কে। অথচ সড়কটির কেবল জেলা শহরের তিন দশমিক আট কিলোমিটার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে ওয়েজখালী পাড় হয়ে পৌর কলেজ পর্যন্ত এবং উজানীগাঁও থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর পাড় হয়ে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত চার লেন সড়ক করার উদ্যোগ নিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা।
ওই প্রকৌশলী জানান, এই দুইটি স্থান চার লেনে উন্নীত করতে দরপত্র আহ্বান করার পর তা গ্রহণও করা হয়েছে। পরে এগুলো অনুমোদনের জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাওয়ার কথা, কিন্তু তা এখনও হয়নি।
তিনি জানান, সরকারি ক্রয় কমিটি থেকে অনুমোদনের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় কাজ। তবে ক্রয় কমিটিতেই দরপত্র এখনও পৌঁছেনি, ফলে প্রক্রিয়াটি থেমে আছে।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দেওয়া তথ্যমতে, সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় পাঁচশ গাড়ি প্রতিদিন সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে চলাচল করে। এছাড়া সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিদিনঅন্তত ৮০টি আন্তঃজেলা বাস আসা-যাওয়া করে। ছাতক ও দিরাই থেকেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পথ দিয়েই যাওয়া আসা করে বাসগুলো। সব মিলিয়ে আন্তঃজেলা বাসের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়ে যাবে।
এছাড়া জেলাজুড়ে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস আছে আরও প্রায় পাঁচশ, ট্রাক আছে একশর মতো। এসব যানবাহনের যাতায়াতও এই পথ হয়েই।
এর পাশাপাশি সম্প্রতি ছোট যানবাহনের চলাচলও বেড়েছে। জেলায় বৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশাই আছে পাঁচ হাজার তিনশর মতো। অবৈধ মিলিয়ে এই সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে যাবে। এগুলোর বেশিরভাগেরই যাতায়াতের প্রধান পথ সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক। এ ছাড়াও জেলায় লেগুনা আছে প্রায় দুইশ। ২৪ ফুট প্রশস্ত এই সড়ক এত যানবাহনের চাপ নিতে পারে না বলে দাবি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের।
আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সদস্য, জেলা বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ককে দ্রুত চার লেনে উন্নীত করতে হবে। সেই সঙ্গে সুনামগঞ্জ-পাগলা-আউশকান্দি সড়কটিও স্থানে স্থানে চার লেনে উন্নীত করা প্রয়োজন।’
সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের দুটি স্থান মিলে পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার দরপত্র ২০২৪ সালের জুলাই মাসেই হয়েছিল। দরপত্র গ্রহণ শেষে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। তবে এখনও সেটি সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি বলে জেনেছি আমরা।’
কবে নাগাদ ক্রয় কমিটি হয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে—জানতে চাইলে ‘ধারণা নেই’ বলে জানান এ কর্মকর্তা।
৭০ দিন আগে
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ বেড়ে দ্বিগুণ
লাভজনক হওয়ায় সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে বেড়েছে পেঁয়াজের চাষ। এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। দিনরাত একাকার করে খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার কৃষিবিভাগের কার্যক্রম পাশের ধর্মপাশা উপজেলা থেকে পরিচালিত হয়। তবে সমন্বয় ও কৃষকদের পরামর্শদানে উপজেলা কৃষিবিভাগের তৎপড়তা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গতবছর মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। তাই চলতি অর্থবছরে শুধু মধ্যনগর উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন চাষিরা। এর মধ্যে উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে। সারা উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে সার সংকটে পেঁয়াজ চাষিরা, ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে ১০ জন কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামের মো. বাসেত ভূঁইয়া জানান, বাজারে চড়া দামে পেঁয়াজ বিক্রয় হওয়ায় অতীতের তুলনায় বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর পেঁয়াজ চাষে বিঘা প্রতি খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, কীটনাশক সহায়তা পেয়েছি। জমিচাষ, চারা রোপণ, পরিচর্যাসহ প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। আবহাওয়া ভালো থাকলে, প্রতি বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
একই ইউনিয়নের তেলীগাঁও গ্রামের কৃষক রিপন মিয়া বললেন, এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করছি। এবার সাড়ে ৩ হাজার টাকার পেঁয়াজের বীজ কিনতে হয়েছে।
সবমিলিয়ে বিঘাপ্রতি খরচ ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মণ পেঁয়াজ পাব বলে আশা করছি। উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের রুপনগর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বললেন, ভরা মৌসুমে কৃষকরা লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করে চাষাবাদে হতাশ হয়েছিল। তবে শেষ সময়ে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। অসময়ে ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তুষার বললেন, চলতি অর্থবছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এবার মাঠের হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৪০ হেক্টরের অধিক জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ উপজেলার কৃষকদের সবসময় কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত বছর পেঁয়াজের চড়া দাম থাকায় এই বছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মো. আনোয়ার হোসেন বললেন, হাওরে মশলা ফসলের সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে, এ বছর মধ্যনগর উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায় নতুন জাতের পেঁয়াজ প্রদর্শনীর বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিলি দিয়ে ফের পেঁয়াজ ও আলু আমদানি শুরু
৭৮ দিন আগে
সুনামগঞ্জে অটোরিকশা খাদে পড়ে শ্রমিক নিহত, আহত ৭
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে আটোরিকশা খাদে পড়ে শাহীনূর রহমান নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও সাতজন।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের জাল্লাবাজ গ্রামে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শাহীনূর (২০) জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী চানপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘শাহীনূরসহ আমরা আট শ্রমিক অটোরিকশা যোগে কাজের উদ্দেশে সেলিমগঞ্জ যাচ্ছিলাম। এ সময় জাল্লাবাজ গ্রামে পৌঁছানো মাত্রই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় আমরা ৭ শ্রমিক আহত হই। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় শাহীনূরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
জামালগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার পংকজ ঘোষ বলেন, ‘গাড়িতে আটজন যাত্রী ছিলেন। খাদে পড়ে একজনের মৃত্যু হয়। বাকিরা আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। নিহতের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে লাশ পাঠানো হয়েছে।’
৮৫ দিন আগে