সড়ক অবরোধ
নাটোরে সারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে কৃষকদের বিক্ষোভ
সারের দাবিতে নাটোরের নলডাঙ্গায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। আসন্ন বোরো মৌসুমের জন্য ডিলার পয়েন্টে গিয়ে সার না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে এ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলা মোড়ে কৃষকরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভে উপস্থিত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সকাল ১০টার দিকে উপজেলা মোড়ে অবস্থিত সার ডিলার শ্যাম সুন্দর আগরওয়ালের দোকানে গিয়ে সারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন তারা। সেখানে সার না থাকার খবর পেয়ে একপর্যায়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন তারা। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। সেখান থেকে ফিরে উপজেলা মোড়ে গিয়ে প্রধান সড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় কৃষকরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কিশোয়ার হোসেনের অপসারণ দাবি করেন। পরে পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সার প্রপ্তি নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে প্রায় এক ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নেন কৃষকরা।
শ্যাম সুন্দরের ব্যবস্থাপক বকুল দাস জানান, বরাদ্দ অনুযায়ী সব সার তারা উত্তোলন করতে পারেননি। অনেক কৃষক চলতি রবি ও আসন্ন বোরো মৌসুমের একবারে সার সংগ্রহ করার কারণে চাপ তৈরি হয়েছে। বরাদ্দ অনুযায়ী সকল সার কৃষক-পর্যায়ে বিক্রি করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল এমরান খান বলেন, ডিলার পয়েন্টে সার পৌঁছলেও কৃষকরা কেন পাচ্ছে না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১৪ দিন আগে
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: স্বপ্ন নাকি অধরা বাস্তব?
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজ নিয়ে `ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ (ডিসিউ) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অনিশ্চয়তা-অনৈক্য যেন কাটছেই না।
দীর্ঘ আন্দোলনের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় পেলেও ক্লাস শুরু না হওয়া, অধ্যাদেশ জারি, প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোয় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের অন্তভুক্তি, নারী শিক্ষার্থীদের কাঠামোগত শঙ্কা, ঐতিহ্যবাহী উচ্চ মাধ্যমিক স্তর নিয়ে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাত্রা
ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ— জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকা এই ৭ কলেজকে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। বর্তমানে এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন।
২০২৪ সালের ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে’ দেশের পট পরিবর্তনের পর সে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। পরে, সাত কলেজের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে গত ২৭ জানুয়ারি কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মঞ্জুরি কমিশন অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে একটি কাঠামো করার প্রস্তাব দেয়।
ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকার সরকারি সাত কলেজ পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ হওয়ার আগ পর্যন্ত একজন অধ্যক্ষের নেতৃত্বে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়, এই পুরো কার্যক্রমের ওপর নজরদারির দায়িত্ব রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন সদস্য।
এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনির্ভাসিটি’ নামটি চূড়ান্ত হয়। নাম চূড়ান্ত করার আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন অংশীজনের মত নেয়।
চলতি বছরের ১৮ মে অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসকের হিসেবে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জুলাই মাসে প্রস্তাবিত ডিসিউ স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর ২৬ আগস্ট ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে—বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান— ৩ ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ১১ হাজার ১৫০টি। তিন ইউনিটে প্রায় ৭২ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত রূপরেখা তৈরি করে। বর্তমানে সংসদ কার্যকর না থাকায়, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাদেশ আকারে জারির উদ্যোগ নেয়।
অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব পড়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটির ওপর। প্রস্তাবিত প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাঠামো নিয়ে অংশীজনদের মতামত জানতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে।
যারা এই সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেই ২০১৯–২০, ২০২০–২১ ও ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
খসড়া অধ্যাদেশের ৫২ (খ) অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ ও ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্ররা ঢাকেবির অন্তর্ভুক্ত।
খসড়া অধ্যাদেশে প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈক্য চরমে ওঠে।
এক বছরের সেশনজটে ডিসিইউ
প্রস্তাবিত ডিসিইউতে প্রথমবারের মত ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ২৩ নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শুরু হয়নি। অথচ দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই শিক্ষাবর্ষের ক্লাস চার-পাঁচ মাস ধরে চলছে। এমনকি ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের দুটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং অন্যান্য স্বায়ত্বশাসিত ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন চলছে।
ফলে প্রস্তাবিত ডিসিইউ’র প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার আগেই এক বছরের সেশনজটে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অতি দ্রুত ক্লাস শুরুর দাবিতে গত ৩০ নভেম্বর রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
বিশ্ব সঙ্গীতশিক্ষাকে গুরুত্ব দিলেও উল্টো পথে হাঁটছে বাংলাদেশ
২২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভর্তির তারিখ ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ায়, এবং ৩০ নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরুর কথা জানানো হয়। পুনর্নির্ধারিত তারিখেও ক্লাস শুরু না হওয়ায় এদিনই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
স্কুলিং নিয়ে অনৈক্য
খসড়া অধ্যাদেশে বলা হয়, সাতটি কলেজ ক্যাম্পাসকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ, স্কুল অব বিজনেস স্টাডিজ, স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসে বিভক্ত করে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালানো হবে।
ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস, ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে স্কুল অব সায়েন্স।
ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে অ্যাপ্লাইড ম্যথেমেটিক্স, জুলোজি, ড্যাটা সায়েন্স, বায়োকেমিস্ট্রি ও বায়োটেকনোলজি ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে ফিজিক্স, অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি, বোটানি ও ফরেনসিক সাইন্স ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে সাইকোলজি, এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ স্কুলটি সরকারি বাঙলা কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে।
এই ক্যাম্পাসে জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেশন স্টাডিজ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ইকোনোমিকস, ফিল্ম স্টাডিজ, ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
স্কুল অব বিজনেস স্কুলটি সরকারি তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে। এ ক্যাম্পাসে অ্যাকাউন্টিং, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, হোটেল অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস, ব্যাংক অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিন চালু করা যাবে।
মানবপাচার, অস্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশি পাসপোর্টের প্রতি বৈশ্বিক আস্থা কমছে
স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিস স্কুলটি কবি নজরুল সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে।
তবে, খসড়া অধ্যাদেশ প্রকাশের পর থেকেই এই হাইব্রিড বা স্কুলিং পদ্ধতির বিরুদ্ধে নানামহল থেকে বিরোধীতা করা হচ্ছে।
ইউজিসি কর্তৃক প্রস্তাবিত সিস্টেমের মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোর স্বাতন্ত্র্য ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কায় পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের একাংশ। এমনকি ঢাকা কলেজের স্বকীয়তা রক্ষায় খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কলেজটির প্রাক্তন ছাত্ররা।
প্রকাশিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ অধ্যাদেশের খসড়া অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান পদ্ধতি হাইব্রিড পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ৩৫%-৪০% ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এবং সকল পরীক্ষা সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।
স্বকীয়তা বনাম নতুন বিশ্ববিদ্যালয়
এমনকি শিক্ষার্থীদের একাংশ এখনো ৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান নি।
৭টি কলেজের অবকাঠামো ও ক্যাম্পাস স্থায়ীভাবে দিনের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ সময়সীমা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে ইডেন ও বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সাম্য হত্যা নিয়ে ধোঁয়াশা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হলেও পুরস্কৃত পুলিশ
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) কলেজ ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে, ইডেন কলেজকে শুধু নারীদের জন্য সংরক্ষিত করার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু হলে, তা এই প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইডেন কলেজের স্বতন্ত্রতা রক্ষায় সকালে সড়ক অবরোধ করেন কলেজটির ছাত্রীরা। পরে ইডেন কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা কলেজে আসে ছাত্রীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ইডেন কলেজের শিক্ষকরাও।
ঢাকা কলেজের দর্শন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র শেখ ইউএনবিকে বলেন, ‘৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার প্রস্তাবটি বাস্তবতার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
এই শিক্ষার্থী বলেন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, গবেষণাসুবিধা ও স্থায়ী শিক্ষকসংখ্যা এসব মৌলিক শর্ত পূরণ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদা শুধু নামেই মূল্য যোগ করবে, শিক্ষার মানে নয়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত শিক্ষার্থীদের উপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি না করে বিদ্যমান কলেজগুলোর শিক্ষার স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। উন্নয়নকে নামের সম্প্রসারণ নয়, মানের নিশ্চয়তা দিয়েই মূল্যায়ন করা উচিত।
শিক্ষকদের আপত্তি
খসড়া অধ্যাদেশের ২ (ফ) অনুযায়ী, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা ঢাকেবির শিক্ষক নন, তাই ওই শিক্ষাবর্ষের ক্লাস–পরীক্ষা নেওয়ার এখতিয়ার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নেই। এদিকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব জনবল নিয়োগ দেয়নি, ফলে প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
কুকি-চিনের উত্থান বনাম বান্দরবানের পর্যটন: ক্ষতির পাহাড়
ঢাকার সরকারি সাতটি কলেজে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পদ আছে দেড় হাজার। এর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক স্থায়ী পদ প্রায় ১১০০। আর ডেপুটেশনের পদ আছে চারশ।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয় বিষয়ভিত্তিক পদের বিপরীতে। সাতটি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হলে এ দেড় হাজার পদ শিক্ষা ক্যাডার থেকে বিলুপ্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা, যা তাদের ‘নানা জটিলতায় জর্জরিত’ পদোন্নতির প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করবে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) প্রস্তাবিত ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং’ পদ্ধতি বাতিল এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারকে স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করে আইন করার দাবি জানিয়েছেন কলেজগুলোর শিক্ষকরা। ‘সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা কমিটি’ ব্যানারে তারা এ দাবি জানান।
এর আগের দিন, সোমবার শিক্ষকরা চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করলে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের সব সরকারি কলেজ ও দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক কর্মবিরতির হুশিয়ারি দেন।
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শঙ্কা
এদিকে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রস্তাবিত কাঠামোতে হলে তা কলেজগুলো ‘স্বকীয়তার’ জন্য হুমকি হবে বলে মনে করছেন কলেজগুলো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও নিউমার্কেট মোড় অবরোধ করে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা।
যেখানে নায়কেরা শুয়ে আছেন, সেই তিন নেতার মাজার মাদকসেবীদের দখলে
ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক বহাল রাখা এবং কলেজের স্বকীয়তা রক্ষার দাবিতে এর আগেও আন্দোলন করেছেন শিক্ষালয়টির উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। তাদের ভাষ্য, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি খসড়া আইনে উচ্চ মাধ্যমিক বহাল রাখার কথা বলা হলেও ধীরে ধীরে তা তুলে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭ কলেজের মধ্যে ৫টি— ঢাকা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজ, কবি নজরুল ও সরকারি বাঙলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু রয়েছে।
চূড়ান্ত অধ্যাদেশ ‘সময়সাপেক্ষ’
চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সুধীজনের কাছ থেকে ছয় হাজারের বেশি মতামত পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব মতামত বিবেচনায় নিয়ে অধ্যাদেশ চূড়ান্ত সময়সাপেক্ষ বিবেচনা করে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়।
তবে, এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে রাস্তা অবরোধ এবং আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তা বন্ধ করে রাখেন। যে কারণে নিউমার্কেট থেকে শাহবাগ ও আজিমপুরমুখী রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
এরপর তারা আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দেন। এর মধ্যে অধ্যাদেশ জারি না হলে রবিবার থেকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর শিক্ষা ভবনের সামনে টানা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবেন।
ডাকসু: নজর কাড়ছে লিগ্যাল নোটিশ, ডলারসহ জেন-জি প্রচারণা
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রশাসক অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করছি খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।”
ইউজিসির সদস্য ও ৭ কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে গঠিত কমিটির সদস্য ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ৭ কলেজ নিয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমাদের নেই। আমাদের টার্মস অব কন্ডিশন অনুযায়ী আমাদের যে দায়িত্ব ছিল, তা আমরা সম্পন্ন করেছি। এরপর আমাদের আর কোন ভূমিকা নেই, বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে।
এমতাবস্থায়, এখন পর্যন্ত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি স্বপ্ন ও স্থবিরতার মধ্যে আটকে আছে। অবিশ্বাস, প্রশাসনিক শূন্যতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়, স্বায়ত্তশাসন ও শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর সময়ের হাতেই তোলা।
১৬ দিন আগে
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ১৬০৪ বার সড়ক অবরোধ হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১২৩টি সংগঠন মোট ১ হাজার ৬০৪ বার সড়ক অবরোধ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ঢাকা ও এর আশপাশের সড়কে এক হাজার ৬০৪টি অবরোধ হয়েছে। ১২৩টি সংগঠন এগুলো করেছে।
তবে এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি অনুরোধ জানান, এগুলো যেন সড়কে না করা হয়। কারণ এতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নামে ভুয়া অডিও রেকর্ড, মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ
তিনি বলেন, যানজটের একটা বড় কারণ হলো, একটি সড়কের যদি কোনো একটা কোণা ব্লক হয়ে যায়, তাতে ঢাকা শহর অ্যাফেক্টেড হয়। আমি সবার কাছে অনুরোধ করব, এগুলো যেন একটি সুনির্দিষ্ট জায়গায় করা হয়। মাঠ রয়েছে, কিংবা আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রয়েছে— এসব জায়গায় করা হলে জনদুর্ভোগটা কম হবে।
১১৩ দিন আগে
পুলিশের উপপরিদর্শক সুশান্তকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে কেএমপি ঘেরাও ছাত্র-জনতার
খুলনায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুশান্ত দাসকে থানার পুলিশি হেফাজত থেকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তর (কেএমপি) ঘেরাও করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। একই সঙ্গে কেএমপির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তারা।
এছাড়া মূল ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা। ফলে রূপসা থেকে শহরে প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে এই কর্মসূচি শুরু হয়। বিকাল পৌনে ৫টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সড়কে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে স্থানীয়রা উপপরিদর্শক সুশান্তকে আটকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তিনি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানায় কর্মরত। আদালতে একটি মামলার সাক্ষী দিতে খুলনায় এসেছিলেন তিনি।
তার নামে খুলনা সদর থানায় ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় গত ১২ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে তদন্তাধীন। এছাড়া বিএনপির নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ দুটি মামলা চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: পাঁচ দাবিতে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবীর হোসেন বলেন, গতকাল এস আই সুশান্ত আদালতে সাক্ষী দিয়ে বাইকযোগে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। এসময় শিরোমণি এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয়রা তাকে মারধর করে। এসময় পুলিশ ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি চলে যান। তার বিরুদ্ধে খান জাহান আলী থানায় কোনো অভিযোগ নেই।
১৭৯ দিন আগে
পাঁচ দাবিতে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের আবাস সংকট দূর করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়ে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।
এরপর কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ভবনটিতে তালা ঝুঁলিয়ে দেন তারা। পরে বেলা ১১টার দিকে বিএম কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে নগরীর নতুন বাজার থেকে নথুল্লাবাদ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর সোয়া ১টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল।
আরও পড়ুন: ২৬ ইউআইইউ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
শিক্ষার্থীরা জানান, বিএম কলেজে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। অথচ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় আবাসনের ব্যবস্থা নেই; যা রয়েছে তার অবস্থাও বেহাল। বৃষ্টি হলেই কলেজ ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই তারা জলাবদ্ধতা নিরসন করে রাস্তা ড্রেন সংস্কারের দাবি জানান।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা মাঠ ভরাট, কলেজের অডিটোরিয়াম সংস্কার, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সংস্কার ও শিক্ষক সংকট দূর করে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগেরও দাবি তুলে ধরেন।
তারা আরও জানান, দাবি মানা না মানা পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
১৭৯ দিন আগে
২৬ ইউআইইউ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) সম্মান শেষ বর্ষের ২৬ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে রাজধানীর ভাটারা নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
শনিবার (২১ জুন) সকাল থেকে এই অবরোধ শুরু হয়। এতে করে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডামুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিপরীতমুখী সড়কে, অর্থাৎ বাড্ডা থেকে কুড়িল বিশ্বরোডগামী যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল হাসান ইউএনবিকে জানান, সকাল ৮টার পর ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান নিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ওসি জানান, সম্মান শেষ বর্ষের পরীক্ষায় অত্যন্ত কম নম্বর পাওয়ায় ভবিষ্যতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না—এমন আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করে।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত একতরফাভাবে নেওয়া হয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ
১৮৪ দিন আগে
রাজধানীতে অহেতুক সড়ক অবরোধ না করতে ডিএমপির অনুরোধ
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দাবি-দাওয়া বা প্রতিবাদের নামে অহেতুক রাস্তা অবরোধের ঘটনা বাড়ছে, যার ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী। এ অবস্থায় সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
সোমবার (১২ মে) ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অকারণে রাস্তা অবরোধের কারণে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অফিসগামী যাত্রীরা নানা বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিদেশগামী যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগী পরিবহনে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক ব্যাঘাত।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা: নাগরিকদের চলাচলে ডিএমপির নির্দেশনা
এতে আরও বলা হয়, যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ প্রাণান্তর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তথাপি, কারণে-অকারণে রাস্তা অবরোধ করলে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাঘাত ঘটে এবং নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
এ পরিস্থিতিতে নগরবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে এবং চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে যেকোনো ধরনের অহেতুক সড়ক অবরোধ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তালেবুর রহমান।
২২৩ দিন আগে
বকেয়া মজুরির দাবিতে রবিবার সড়ক অবরোধের ঘোষণা চা শ্রমিকদের
গত ২০ সপ্তাহ ধরে বেতন না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন সিলেটের চা শ্রমিকরা। প্রায় ২ হাজার ৫০০ চা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আগামীকাল রবিবার (৪ মে) সিলেট-বিমানবন্দর সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে চা শ্রমিক ও বাগান রক্ষা কমিটি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চা শ্রমিক ও বাগান রক্ষা কমিটির সাধারণ সদস্য সোহাগ ছত্রী।
তিনি বলেন, প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিকের ২০ সপ্তাহের বেতন ও রেশন প্রদান, সরকারি নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট হারে নির্ধারিত সময়েই বেতন বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে এ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১ মে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আমরা গিয়েছিলাম, এ বিষয়ে কথা বলেছি। নিয়মিত আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থাকছে তাদের অগ্রগতি। অনতিবিলম্বে চা বাগান ও শ্রমিদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সকল দাবি-দাওয়া মেনে নিতে আমাদের এ কর্মসূচি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে মজুরি-রেশন পরিশোধের দাবিতে চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল
চা শ্রমিক ও চা বাগান রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে এ সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছেন সংগঠনটির আহ্বায়ক রঞ্জিত নায়েক রঞ্জু।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বারবার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও কেউ তাদের কথা রাখেনি। একে একে ২০ সপ্তাহ ধরে বেতন ভাতা বন্ধ শ্রমিকদের। আমরা অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি, কিন্তু একটিও পূরণ হয়নি। তাই দাবি আদায়ের জন্য আমরা রবিবার (৪ মে) মালনীছড়ায় সিলেট-বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করব।
জানা যায়, সিলেটের বুরজান চা-কোম্পানির অধীন তিনটি চা বাগান—বুরজান, ছড়াগাঙ ও কালাগুল কারখানার শ্রমিকদের ২০ সপ্তাহের বকেয়া রয়েছে। এই বকেয়া পরিশোধ ও চা বাগান খুলে দেওয়ার দাবিতে গত ১ মে বকেয়া নগরীর লাক্কাতুরা এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করেন শ্রমিকরা। মিছিলটি বন্দরবাজারের সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়। সেখানে দুই ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভও করেন চা শ্রমিকরা। পরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো. আনোয়ার উজ জামানের আশ্বাসে তারা স্থান ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা সঞ্জয় কান্ত দাস বলেন, গত প্রায় ২০ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও রেশন পাচ্ছেন না কালাগুল, বুরজানসহ ৪টি চা বাগানের শ্রমিকরা। জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জানানো হয়েছে। তারা বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
তিনি আরও বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আগামী ৪ মে বকেয়া মজুরি-রেশনের দাবিতে তারা রাজপথে অবস্থান নেবেন। রাজপথ ছাড়া তাদের আর কোনো বিকল্প পথ নেই। প্রাপ্য মজুরি-রেশন আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা এখন রাজপথেই থাকবেন।
চা শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি সমূহ হলো:
১. অবিলম্বে বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে হবে।
২. অবিলম্বে বকেয়া রেশন পরিশোধ করতে হবে।
৩. সরদার চা শ্রমিকদের বকেয়া মাসিক বেতন পরিশোধ করতে হবে।
৪. আট মাসের অধিক সময় যাবৎ চা শ্রমিকদের কর্তনকৃত প্রডিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) এবং টাকা অবিলম্বে জমা দিতে হবে।
৫. অবিলম্বে চা শ্রমিকদের চিকিৎসা চালু করা ও ওষুধ সরবরাহ করতে হবে ।
৬. অবিলম্বে চা শ্রমিকদের বসতবাড়ি নির্মাণসহ টিন, কাঠ, দরজা-জানালা দিতে হবে।
৭. অবিলম্বে চা শ্রমিকদের বকেয়া বোনাস পরিশোধ করতে হবে।
৮. চা শ্রমিকদের বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবা সরবরাহ করতে হবে।
৯. চা শ্রমিকদের প্রডিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্নসাৎ করা বন্ধ করতে হবে।
১০. অবিলম্বে চা বাগানের সম্পদ গাছ কাটা ও বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
১১. অবিলম্বে বেকার চা শ্রমিক ও চা শ্রমিকের শিক্ষিত সন্তানদের চা কর্মচারী ও চা শ্রমিক পদে নিয়োগ দিতে হবে এবং অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত চা শ্রমিকদের অবিলম্বে চাকরিতে বহাল করতে হবে।
২৩৩ দিন আগে
মহানবীকে (সা.) কটূক্তির অভিযোগে তেজগাঁওয়ে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান সড়ক অবরোধ করে রেখে প্রতিবাদ করছেন কোহিনুর ক্যামিকেল কোম্পানির কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে সড়কটি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
কারখানার কসমেটিকস বিভাগের বাবু নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন।পরে তারা প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত মানুষ। মহাখালী থেকে আসা যাওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে।
শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে, সেই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন। বারবার তাদের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে আ. লীগ নেতার ছেলে আটক
তারা আরও বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ঠিক বিপরীত পাশে সড়কে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির অবস্থান। সেই কারখানাটির গেটের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার এসে তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, কারখানাটির কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। সেই ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অপসারণের পাশাপাশি আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
এমন বিষয় জানানোর পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানাটির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভাঙচুর বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মহাখালী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ট্রাফিক) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা ব্লকের কারণে তেজগাঁও সাত রাস্তাসহ আশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
২৪৩ দিন আগে
গাবতলীতে সড়ক অবরোধ তুলে নিল শ্রমিকরা
পুলিশের সঙ্গে বিরোধের জেরে ঢাকার গাবতলী এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রেখে সড়ক অবরোধ করলেও তা তুলে নিয়েছে শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে এ অবরোধ শুরু হয়েছিল। তবে দুপুর সাড়ে ১২টার পর শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে গাড়ি চলাচল সচল হয়েছে।
গাবতলী এলাকার ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান এমন তথ্য জানিছেন। দুপুর ১টা ২২ মিনিটে তিনি বলেন, ‘চল্লিশ মিনিট আগে ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’
তবে নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই প্রবেশ পথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ছে রাজধানীর বড় এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন এলাকার সড়কে ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: তেজগাঁওয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট
পরিবহন শ্রমিক শিহাবুর রহমান বলেন, একজন ট্রাফিক পুলিশ এক চালকের কাগজপত্র যাচাই করে ঠিক পেলেও গাড়ির গ্লাস নষ্ট বলে অযথা হয়রানি করে। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্য চালককে মারধর করেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যেই হাতাহাতি হয়।
অবস্থা বেগতিক দেখে গাবতলীতে দায়িত্বরত সকল পুলিশ সদস্য ওই এলাকা ত্যাগ করেন। পরিবহন শ্রমিকরা তখন রাস্তার উপর আড়াআড়ি গাড়ি রেখে অবরোধ সৃষ্টি করেন।
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্বাস উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শুনেছি কভার্ড ভ্যান শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছে। তাদের এক চালককে নাকি ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্ট চড় মেরেছিল।’
২৪৯ দিন আগে