বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)
বিশেষ ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বেবিচক
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) শনিবার বিশেষ ফ্লাইটের যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
এই আদেশ ২৮ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সকল আগত বা বহির্গামী যাত্রীর বাধ্যতামূলকভাবে পিসিআর ভিত্তিক কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে ৪ আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ইউএস বাংলার বিশেষ ফ্লাইট
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, পিসিআর পরীক্ষাটি ফ্লাইট ছাড়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করতে হবে।
আগত যাত্রীদের মধ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ প্রাপ্ত এবং সাথে টিকাদানের প্রমাণসহ পিসিআর ভিত্তিক কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট বহনকারীদেরও ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করতে হবে।
স্থানীয় প্রশাসন বাড়িতে তাদের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করবে।
পিসিআর ভিত্তিক কোভিড-১৯ এর নেগেটিভ সার্টিফিকেট বহনকারী আগত যাত্রীদের এবং ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রাপ্ত বা এখনও ভ্যাকসিন নেননি তাদের বাধ্যতামূলক ভাবে সরকার মনোনীত হোটেলগুলোতে যাত্রীদের নিজস্ব ব্যয়ে তিন দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুন: লকডাউন: আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালু ১৭ এপ্রিল
তিন দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়ার পরে কোভিড-১৯ পিসিআর পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পিসিআর ভিত্তিক কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হলে মোট ১১ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ করার পর যাত্রীদের ছেড়ে দেয়া হবে।
স্থানীয় প্রশাসন তাদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পিসিআর ভিত্তিক কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ হলে সেক্ষেত্রে যাত্রীকে নিজস্ব ব্যয়ে সরকার মনোনীত হোটেলে আইসোলেশনেথাকতে হবে।
টিকা দেয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হলেই সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস যাত্রীদের বোর্ডিং পাস প্রদান করবে।
আরও পড়ুন: বিদেশগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছে সরকার
সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হোটেলগুলোতে যাত্রীদের জন্য আসন রয়েছে কিনা বা যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল রিজারভেশনের প্রমাণ রয়েছে কিনা তা এয়ারলাইন্সের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হোটেলগুলোতে আসন পাওয়ানা গেলে যাত্রীরা হোটেলে রিজারভেশন নিশ্চিত করার পরেই কেবল ফ্লাইটে উঠবেন।
ঢাকা-গুয়াংজু রুটে ইউএস-বাংলার বিশেষ ফ্লাইট শনিবার শুরু
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) বিশেষ অনুমতি অনুসারে আগামী শনিবার থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা-গুয়াংজু রুটে সপ্তাহে একটি ফ্লাইট পরিচালনার শুরু করতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান।
বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে দুবাই, দোহা, মাস্কাট ও সিঙ্গাপুরে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
আরও পড়ুন: শনিবার থেকে ৪ আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ইউএস বাংলার বিশেষ ফ্লাইট
বর্তমান সময়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সকল বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে বিদেশ গমনেচ্ছু সকল যাত্রীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের সকলের জন্য নিজ খরচে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন অথবা হোটেলে অবস্থান করতে হবে।
উল্লখ্য, প্রতি শনিবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে চীনের গুয়াংজুর উদ্দেশে ফ্লাইট ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় রাত ৩টা ৫০ মিনিটে গুয়াংজুতে পৌঁছাবে। আবার প্রতি রবিবার ভোর ৫টায় গুয়াংজু থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে এবং সকাল ৭টায় ঢাকায় অবতরণ করবে।
আরও পড়ুন: লকডাউন: আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালু ১৭ এপ্রিল
ঢাকা-গুয়াংজু-ঢাকা রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ১৬৪ আসনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে পরিচালিত হবে। বর্তমান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বহরে ৪টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফটসহ মোট ১৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে।
বিদেশগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছে সরকার
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বুধবার থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মধ্যে প্রবাসী কর্মীদের বহনের জন্য পাঁচটি দেশে বিশেষ ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ইউএনবিকে বলেন, ‘লকডাউনকালীন বিদেশগামী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট চালু করা হবে।’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর দাবি আটাবের
তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরের জন্য অতিশীঘ্রই স্পেশাল ফ্লাইট চালু করা হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ বিষয়ে বিস্তারিত ওয়ার্ক প্ল্যান তৈরি করবে।’
মন্ত্রী বলেন, যে পাঁচটি দেশে আমরা ফ্লাইট চালু করব সে সব দেশ এখনো ওপেন আছে। সে দেশে কোন সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, যারা বিদেশকর্মী বা ওয়ার্কার তাদের কীভাবে বিদেশ পাঠানো যায়, আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছিলাম। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আসল ।
কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ফ্লাইট চালু বিষয়ে সিদ্ধান্ত আপনি ফাইনালই বলতে পারেন। এ বিষয়ে গতকাল এবং আজকে মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু প্রক্রিয়াটা কী হবে তার সিদ্ধান্ত হবে। আগামীকাল বিকাল ৩টায় আরেকটি মিটিং হবে। যারা এখন বিদেশ যাবেন তাদের বিষয়ে কিছু শর্ত থাকবে। সেখানে সব সিদ্ধান্ত হবে।
বিদেশগামী কর্মীদের প্রক্রিয়াটা কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এয়ারপোর্টে আনার দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের।
আরও পড়ুন: লকডাউনে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে: বেবিচক
মন্ত্রী বলেন, 'প্রবাসী কর্মীরা কেবল জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনের ছাড়পত্র গ্রহণ করে এবং দেশে প্রযোজ্য কোয়ারেন্টাইন শর্ত মেনে কোভিড নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।
কতজন কর্মী এখন আটকে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটির সঠিক সংখ্যা বলা কঠিন। তবে এজেন্সিগুলো বলছে ২৫-৩০ হাজার। আমার ধারণা যখন ফ্লাইট চালু করব তখন দেখবেন আরও অনেকে যাবে, তখন সংখ্যা ১ লাখ হয়ে যেতে পারে।'
এদিকে, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম ইউএনবিকে বলেন, 'ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী ও নতুন ভিসা প্রাপ্তদের যাতায়াত সচল রাখার নিমিত্তে লকডাউনের মাঝে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ চলাচল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি সরকারে কাছে। এ বিষয় গতকাল আমরা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের দাবি জানাই।'
আটাবের সভাপতি বলেন, 'মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অনেক প্রবাসী ছুটি নিয়ে বা জরুরি প্রয়োজনে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলেছে। তারা এয়ারলাইন্সের টিকিট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে গমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। তাছাড়াও অনেক নতুন কর্মী ভিসা প্রাপ্ত হয়ে কর্মস্থলে গমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করতে পারলে নিয়োগকর্তা তাদের অনেকেরই ভিসা বাতিল করবেন।'
তিনি বলেন, 'একজন প্রবাসীর আয়ের ওপর তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল। সঠিক সময়ে নিজ কর্মস্থলে গমন করতে না পারার কারণে তাদের কর্মচ্যুতি হলে তাদের পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে। তাই ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের সময় মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।'
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক: বেবিচক
অন্যদিকে, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা)- সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য এসব দেশে এখন করোনার প্রকোপ নেই। শ্রমিক গ্রহণকারী এসব দেশের পক্ষ থেকেও কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তাই, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দেশে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা যুক্তিযুক্ত নয়। এতে হাজার হাজার বিদেশগামী এবং সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই, চলমান লকডাউনে বিদেশগামীদের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট দেশে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। প্রয়োজনে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে হলেও বিদেশগামীদের যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রকোপ আকার ধারণ করায় বুধবার থেকে আট দিনের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনে বাংলাদেশ। গণপরিবহনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই অবস্থায় সঙ্কটে পড়েছেন বিদেশগামীরা।
কোভিড-১৯: ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেল এমিরেটস এয়ারলাইন্স
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী নজিরবিহীন ক্ষতি গুনতে হচ্ছে বিমান চলাচল শিল্পকে।