যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নড়াইলে ফেনসিডিল বহনের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নড়াইলে ফেনসিডিল বহনের দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম আদালত) মুহাম্মাদ আকরাম হোসেন এ রায় দেন। এতে একইসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আসামি আলমগীর হোসেন যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর উত্তরপাড়ার সামছুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সরদার মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: কৃষি জমি থেকে মাটি কাটায় ২ যুবককে কারাদণ্ড, ভেকু মেশিন ও ২টি ট্রাক জব্দ
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি দুপুর ১২টার সময় নড়াইল-যশোর সড়কের সদর উপজেলার চাঁচড়ায় যশোর থেকে নড়াইলগামী সন্দেহভাজন একটি মোটরসাইকেল পুলিশ থামতে বললে চালক আলমগীর মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ তাকে ধাওয়া দিয়ে তুলারামপুর চরপাড়া এলাকা থেকে ধরে ফেলে এবং মোটররসাইকেলে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ৯২ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করে।
এ ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়। পরে আলমগীর হোসেনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় বিচারক এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: নিষেধ অমান্য করে জাটকা ধরায় ১৪ জেলের কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী মো. মিলন হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি জাহানারা আদালতে হাজির ছিলেন। ঘটনার ১৩ মাস পর এ হত্যা মামলার রায় হলো।
মামলার বাদি তাদের ছেলে মো. সাফায়েত হোসেন ওরফে মাহবুব। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুরিয়া গ্রামে।
আরও পড়ুন: ইসলাম বিরোধী মন্তব্য করার দায়ে হিন্দু যুবকের ১০ বছরের কারাদণ্ড
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জাহানারা বেগম পারিবারিক কলহের জেরে তার স্বামী মোহনকে হত্যা করে। উক্ত মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে জাহানারা বেগমকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে সুপারি গাছের সঙ্গে হাত বাঁধা মিলনের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
পরদিন মিলনের ছেলে সাফায়েত হোসেন বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত মিলনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে তিনি স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে তিনি জানান, স্বামী মিলনের সঙ্গে তার ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবন। তাদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। বিয়ের পর থেকেই মিলন অস্বাভাবিক আচরণ করে আসছিলেন। খিটখিটে স্বভাবের কারণে মিলন বিভিন্ন সময়ে তাকে নির্যাতন করতেন।
রমজানের শেষ ১০ দিন জাহানারা তার স্বামীকে মসজিদে এতেফাকে বসতে বলেন। এতে তিনি গালমন্দ করেন। ঘটনার রাতে জাহানারা তার স্বামীকে ঘরের পেছনের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে সুপারি গাছের সঙ্গে গরুর দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে ফেলেন। পরে একটি নাইলনের দড়ি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখে।
পরদিন সকালে জাহানারা নিজেই পরিবারের সদস্যদের স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ জানায় এবং দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন।
পরে পুলিশের কাছে তার আচরণ সন্দেহজনক হলে জিজ্ঞাসাবাদে পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড, বাদীর ৫ বছরের কারাদণ্ড
সিলেটে ৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ফরিদপুরে শিশু ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ফরিদপুরে ১৩ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর চিকিৎসাধীন শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় লিটন মাতুব্বর (২২) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩ মে) দুপুর ১২টায় ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিুজুর রহমান এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: ২০০২ সালে হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: ৪ জনের যাবজ্জীবন, ৪৪ জনের ৭ বছরের কারাদণ্ড
এসময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ওই শিশুর মা বাজারে চায়ের দোকানে পানি সরবরাহ করে থাকেন। এজন্য তাকে বেশিরভাগ সময় কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এর সুবাদে শিশুটি বাড়িতে একাই থাকতো।
এই সুযোগে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া গ্রামের রাশেদ মাতুব্বরের ছেলে আসামি লিটন মাতুব্বর শিশুটির বাড়িতে যাতায়াত করে ও সখ্য গড়ে তোলে।
এক পর্যায়ে লিটন নানা প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিশুটির মা বাড়িতে না থাকায় লিটন বাড়িতে প্রবেশ করে শিশুটির মুখে কাপড় গুজে তাকে ধর্ষণ করে এবং এ কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেয়।
কাউকে এ কথা বললে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় লিটন।
পরবর্তীতে শিশুটি এ কথা কাউকে না বলে ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকে।
প্রায় দুই মাস পর শিশুটি তার মায়ের কাছে সব কথা খুলে বললে, শিশুটির মা তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা: পলাতক আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার
সেই সঙ্গে তিনি কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও করেন। তবে ওইসব সালিশের রায় মানেনি লিটন।
পরে এ ঘটনার ৭৩ দিন পর শিশুটির চাচা বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ লিটন মাতুব্বরকে একমাত্র আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পরদিন ২৫ মার্চ শিশুটি চিকিৎসাধীন মারা যান।
ঘটনা তদন্ত করে ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কুমার মন্ডল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি স্বপন পাল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় একমাত্র আসামি লিটন মাতুব্বরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট স্বপন পাল বলেন, আসামির বিরুদ্ধে সকল প্রমাণাদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ৯(২) ধারায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায়, আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আসামিকে এক লাখ টাকা দিতেই হবে। এখানে অনাদায়ের বিষয় রাখা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এ রায় সমাজে সুস্থতা ফিরতে ও দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। আমরা এ রায়ে অত্যন্ত খুশি।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে জোড়া খুনের মামলায় ২ যুবকের যাবজ্জীবন
নাটোরে ধর্ষণ ও মানবপাচার মামলার পৃথক রায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাটোরে ধর্ষণ ও মানবপাচার মামলার পৃথক রায়ে তিন নারীসহ ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে উভয় মামলার সকল আসামিই পলাতক রয়েছে।
বিশেষ পিপি অনিসুর রহমান জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর নাটোর সদর উপজেলার চকতেবাড়িয়া গ্রামের এক কিশোরীকে পাচারের উদ্যেশ্যে তুলে পাবনার এক বাসায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। পরে তাদেরই একজনের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। এরপর ওই কিশোরীকে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে অশ্লিল কর্মকাণ্ডে বাধ্য করে। সেখান থেকে পালিয়ে নাটোরে ফিরে আসার পর মামলা দায়ের করে।
প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য ও তথ্য প্রমাণ শেষে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামি হালিমা, আম্বিয়া, জেমি, নাইম ও আজবারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই অর্থ আদায় করে ভুক্তভোগীকে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
এরপর একই আদালতে সিংড়া উপজেলার কুশাবাড়ি গ্রামে এক নারীকে ধর্ষণের অপর এক মামলার রায়ে আনছার আলী নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন বিচারক। ২০০৪ সালে রাতে দুঃস্থ ওই নারীর ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র ধরে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে আনছার আলী। তাকেও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং তা আদায় করে ভুক্তভোগীকে প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুষ্টিয়ায় ডাকাতির সময় হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনায় হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনার তেরখাদা আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে খুলনার একটি আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার বিকালে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি পলাতক ছিলেন। অপরদিকে এ মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
নিহত পলাশ ওরফে সবুজ ওই গ্রামের জনৈক লুৎফর রহমানের ছেলে।
সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিরা হলেন- উপজেলার বারাসাত গ্রামের তকুব্বর ফকিরের ছেলে রোমান ফকির ও একই গ্রামের মহিউদ্দিন মোল্লার ছেলে মিলু।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুরাদ শরীফ ও খসরু মোল্লা। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আলমঙ্গীর হোসেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হত্যা মামলার ৩ নং আসামি মিলু মোল্লার বাড়িতে পলাশের প্রায়ই যাতায়াত ছিল। এ কারণে মিলু মোল্লা পলাশ এবং তার স্ত্রী রিক্তা বেগমকে সন্দেহ করত। এ অবস্থায় মিলু মোল্লা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ২০০৯ সালের ৫ নভেম্বর রাত ৯ টায় বাড়ি থেকে পলাশকে ডেকে নেয়।
তারপর থেকে অনেক খোঁজ নেওয়ার পর পলাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পলাশের পরিবার গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে আসামি মিলু মোল্লা তার স্ত্রীর অবৈধ প্রেমকে ঠেকানোর জন্য অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় বারাসাত গ্রামের উত্তর পাশে বিলের ভেতর নিয়ে গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।
ঘটনার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে থাকে। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর আসামি রোমান মোল্লা তার শশুর বাড়ি রাজাপুর এসে স্থানীয় কয়েকজনের সামনে পলাশ হত্যাকাণ্ডের গোমর ফাঁস করে। বিষয়টি জানতে পেরে ওইদিন নিহত পলাশের মা বেগম বিবি বাদী হয়ে চারজন আসামির নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে এ হত্যা মামলার আসামি রোমান ফকির গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এ মামলার আসামি রোমান ফকিরের দেখানো স্থান থেকে পলাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।
২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা উপজেলার পাতলা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই বাবর আলী খান চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ২২ জন আদালতে সাক্ষী দেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাটোরে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাটোরের লালপুরে এতিম শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগীকে পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপাপ্ত রাজা হোসেন লালপুর উপজেলার ধনঞ্জয়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
আদালতের বিশেষ পিপি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন,২০০২ সালের ৩ জুলাই লালপুর উপজেলার ধনঞ্জয়পাড়া গ্রামের রাজা হোসেন নামে এক যুবক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পাশের কচুয়া গ্রামের ১৩ বছরের এতিম শিশুকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় নির্যাতিতার চাচি বাদি হয়ে মামলা করলে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক আজ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ধর্ষণের দায়ে ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঢাবি শিক্ষার্থী খুনের মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম বিপু হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর পাঁচজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ব্যক্তিরা হলেন-বাবু, তারিকুল ইসলাম, খায়রুল বাশার এবং সুমন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাস করে কারাভোগ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্তাদের মধ্যে প্রথম দু’জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগ: ছাত্র অধিকার পরিষদের সোহাগ-মামুনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন-সোহেল, আলম, আজাহারুল ইসলাম ওরফে পারভেজ, মামুন এবং উজ্জল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম বিপু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ শিক্ষার্থী ছিলেন। এর পাশাপাশি ব্যবসা করতেন তিনি ২০০৪ সালের ২৬ জুলাই বিকালে ডেমরার বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন বিপু। সাড়ে ৩টার দিকে প্রতিবেশী বাবু বাসায় এসে বিপুকে ঘুম ডেকে নিয়ে যান।
এর ১৫-২০ মিনিট পর বিপুর বাসার কাজের মেয়ে বাসায় এসে জানায়, বিপু মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বিপুর খালা রোকসানা আক্তার ও প্রতিবেশী সুমন তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বিপুর মা লায়লা বেগম ওই দিনই ডেমরা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ডেমরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুল ইসলাম ২০০৪ সালের ২৯ নভেম্বর ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় বিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে চার্জশিটে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১২ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত ৩০ সাক্ষীর মধ্যে আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থী ‘ধর্ষণ’ মামলায় গ্রেপ্তার ২ সন্দেহভাজন রিমান্ডে
ফারদিন আত্মহত্যা করেনি, তাকে খুন করা হয়েছে: বাবার দাবি
ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাসের জেল দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের ১নং আদালতের বিজ্ঞ বিচারক অশোক কুমার দত্ত এই রায় দেন। এসময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মিলন চৌধুরী ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগর গ্রামের নিহত হারুন অর রশীদ চৌধুরীর ছেলে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২২ ফেব্র্রুয়ারি আসামি মিলন চৌধুরী তার নামে সম্পত্তি লিখে দিতে বাবা নিহত হারুন অর রশীদ চৌধুরীকে চাপ দেয়। এই নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ছেলে লাঠি দিয়ে বাবাকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ: বিসিআইসির ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট
নিহতের স্ত্রী হালিমন বেগম বাদী হয়ে স্বামী খুনের অভিযোগে ছেলে মিলনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণের পরে বৃহস্পতিবার আদালত অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে এই রায় দেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১নং আদালতের ভারপ্রাপ্ত এপিপি আমিনুর রহমান বলেন, এই হত্যা মামলায় একজন আসামিকে অভিযুক্ত এজহার দায়ের করা হয়। বাবাকে হত্যার দায়ে দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি মিলন চৌধুরীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে চার মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তষ্ট বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসের হাইকোর্টের দেয়া জামিনের আপিল শুনানি রবিবার
নয়াপল্টনে সংঘর্ষ: ফখরুল-আব্বাসকে হাইকোর্টে ৬ মাসের জামিন
রাজশাহীতে ২০১২ সালে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় ১০ বছর আগে এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে মঙ্গলবার এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সৈয়দ শামসুন্নাহার জানান, রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন, অনাদায়ে তাকে আরও এক মাসের কারাদণ্ড ভোগের রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উজ্জ্বল আলী (৩৫) চারঘাট উপজেলার পূর্ব কালাবীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে তার বাবার ফসলি জমিতে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় আখ ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত।
বিষয়টি কাউকে জানালে ভুক্তভোগীকে হত্যার হুমকি দেয় অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সৎ মাকে হত্যার দায়ে ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
তবে একজন নারী (যার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি) অপরাধটি প্রত্যক্ষ করেছে এবং মেয়েটির বাবা-মাকে জানিয়েছে।
পরদিন ৫ম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
এরপর পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে।
পিপি বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন আদালত।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে শিশু হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন
ময়মনসিংহে হত্যা মামলায় বাবা-ছেলের যাবজ্জীবন
জয়পুরহাটে বিরোধের জেরে শিশু হত্যা: ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০০৮ সালে আট বছরের এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জজ মো. নূরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়াও আদালত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। যা অনাদায়ে তাদের আরও দুই বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ক্ষেতলাল উপজেলার মোবারকের ছেলে বাবলু, ইংরাজ মণ্ডলের ছেলে আমিনুল ইসলাম লালু, আব্দুল কাদেরের ছেলে আব্দুল হামিদ ও ফিদা মিয়ার ছেলে কাজল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে হত্যা মামলা: ৫ জনের যাবজ্জীবন ও অর্থদণ্ড
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩ মে ক্ষেতলাল উপজেলার সূর্যবান গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক ওবায়দুর রহমান ও তার স্ত্রী তাদের ছেলে তানভীরকে তার দাদী ও বোনের সঙ্গে বাড়িতে রেখে কাজে যান।
বাবার সঙ্গে দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আসামিরা তানভীরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ফেলে দেয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানোর পর পুকুর থেকে তানভীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে পরে ক্ষেতলাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনায় বাড়ির মালিককে হত্যা: ভাড়াটিয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড