পুনর্গঠন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করছে সরকার: আইন উপদেষ্টা
আইন ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এবং গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিতে আইনের খসড়া করছে সরকার।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সুপারিশের আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এর সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
এই আইন সংশোধনী অধ্যাদেশ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, অধ্যাদেশটি পাস হলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন সহায়তা করেছে আইন মন্ত্রণালয়। চিফ প্রসিকিউটরসহ ১১ জন প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২৩৯ জন আইন কর্মকর্তা তথা সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ আইনের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, নতুন আইনের মাধ্যমেই পরবর্তী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের বিচারক, রেজিষ্ট্রেশন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং আইন মন্ত্রণালয় ও এর অধীন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব সংগ্রহ করা হয়েছে। এই হিসাব বিবরণী এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন অধ্যাদেশ হচ্ছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের বিচারের ধারা যুক্ত হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটা-দুটো দিন অপেক্ষা করেন। আর সংশোধনীটা তো উপদেষ্টা পরিষদকে গ্রহণ করতে হবে। আমাদের প্রস্তাবনায় যেটা আছে সেখানে আদালতকে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তবে আদালত যদি মনে করেন, তাহলে তারা এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কনসার্ন অথরিটির কাছে সুপারিশ করতে পারেন।’
লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ এবং জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪ সহ মোট ১০টি অধ্যাদেশ প্রণয়ণে ভেটিং সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৯৫টি প্রজ্ঞাপন, ৩৩টি বৈদেশিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক ভেটিং করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই-তিন দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি ঘোষণা: আইন উপদেষ্টা
ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ আইন উপদেষ্টার
১ মাস আগে
বিচারপতি গোলাম মর্তুজাকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের নথিতে অনুমোদন দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে চেয়ারম্যান এবং বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে সদস্য করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুর্নগঠনের নথিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাইব্যুনালের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ আইন উপদেষ্টার
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এই অনুমোদন দিয়েছেন তিনি। আজই তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
ট্রাইব্যুনালে তিন বিচারক নিয়োগের ফলে অচিরেই জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আসিফ নজরুল আরও জানান, অধস্তন আদালতের বিচার কাজের স্থবিরতা দূরীকরণে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সারাদেশের অধস্তন আদালতগুলোতে জিপি-পিপি নিয়োগের কাজ শেষ করার চেষ্টা করবেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের বিরুদ্ধে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ ববি হাজ্জাজের
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সময়োপযোগী করতে সংশোধনী প্রস্তাব
২ মাস আগে
সুপ্রিমকোর্টে যৌন হয়রানি প্রতিরোধসংক্রান্ত কমিটি পুনর্গঠন
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে যৌন হয়রানিসংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, প্রাপ্ত অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের জন্য কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পাবলিক প্লেসে নারীর নিরাপত্তায় জোর দিতে হবে’
পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুবকে।
এ ছাড়া সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফাতেমা নজীব, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফওজিয়া করিম ও আইনজীবী ফারজানা রহমানকে।
জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক আইনজীবী সালমা আলী ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট কর্মস্থল এবং শিক্ষাঙ্গনে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে জনস্বার্থে রিট করেন।
শুনানি শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট রায় দেন।
এ রায়ে হাইকোর্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমসহ সব প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে একটি কমিটি গঠনের আদেশ দেন। রায়ের পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তা বাস্তবায়নের নির্দেশও দিয়েছিল।
কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই যৌন নির্যাতন বন্ধে মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কমিটি গঠনে রাষ্ট্রের কঠোর নির্দেশ প্রয়োজন।
হাইকোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, কমিটিতে কমপক্ষে পাঁচজন সদস্য থাকবে। এ কমিটির বেশিরভাগ সদস্য হতে হবে নারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাইরে থেকে দুজন সদস্য নিতে হবে। সম্ভব হলে কমিটির প্রধান করতে হবে একজন নারীকে। এছাড়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতি শিক্ষাবর্ষের পাঠদান কার্যক্রমের শুরুতে এবং প্রতি মাসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওরিয়েনটেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
রায়ে আরও বলা হয়, সংবিধানে বর্ণিত লিঙ্গ সমতা ও যৌন নিপীড়ন সম্পর্কিত দিক নির্দেশনাটি প্রকাশ করতে হবে বই আকারে। এ নির্দেশনা আইনে রূপান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তা আইন হিসেবে কাজ করবে এবং সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন: গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স বাস্তবায়নে চুক্তি সই
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ: আবারও পেছাল সাক্ষ্যগ্রহণ
১ বছর আগে
দুর্যোগ উত্তর পুনর্গঠনে প্যারাডাইম শিফটে কাজ করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম ধারণা থেকে সরে এসে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি, দুর্যোগকালীন সুরক্ষা ও দুর্যোগ উত্তর পুনর্গঠনে প্যারাডাইম শিফটে সরকার কাজ করছে।
রবিবার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ সচিবালয়ে দক্ষিণ সুদানের মানবিক বিষয়ক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আলবিনো আকোল আতক মায়োম’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: শতবছর পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় যুগোপযোগী ও সমন্বিত দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের নীতি পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং সব ধরনের দুর্যোগের প্রস্তুতিতে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। দেশবাসীকে আগাম সর্তকর্বাতা দিতে দেশের ৮টি স্থানে পরীক্ষামূলক বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটেনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসানো হয়েছে। তা ছাড়া বজ্রপাতপ্রবণ ১৫টি জেলায় ৩৩৫টি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে। এবছর সর্বোচ্চ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় আমাদের আগাম সতর্কতা, প্রস্তুতি ও সাড়াদান আরেকটি নজির সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, ভূমিকম্প সহনীয় দেশ গড়তে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে ৮টি জোনে ভাগ করে ঢাকাকে ভূমিকম্প সহনীয় হিসেবে গড়ে তুলতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ভূমিকম্পে কার্যকর অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ পূর্বক সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে জরুরি সাড়াদানকারী সংস্থাসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনকে প্রাধান্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন করেছি। ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ এর প্রথম পর্যায়ে মোট বিনিয়োগের একটা বড় অংশ বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদীভাঙন রোধ, পানিধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও নাব্যতা বৃদ্ধির খরচ হিসেবে ধরা হয়েছে। নদী ড্রেজিং, গ্রীষ্মকালে সেচের পানি সংরক্ষণের জন্য জলাধার নির্মাণ, খাল খনন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, সংস্কারসহ নানাবিধ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দুর্যোগ মোকাবিলায় এসব বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ ‘দুর্যোগ সহনশীল’ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, অতিরিক্ত সচিব মো. হাসান সারওয়ার এবং কে এম আব্দুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবাদুর মারা গেছেন
১ বছর আগে
চলমান সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে ৫ দফা প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে 'টুওয়ার্ডস আ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠনে ৫ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সেগুলো হলো:
প্রথমত, এমডিবি (বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকসমূহ), আইএফআই (আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ) ও বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে অবশ্যই তাদের অগ্রাধিকার পুনরায় একত্রিত করতে হবে এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু পদক্ষেপের জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কম খরচে, ছাড়ের হারে এবং বিশেষত উচ্চ পরিমাণে অনুদানে তহবিল উপলব্ধ করা দরকার।
তৃতীয়ত, সমস্ত ঋণপ্রদানকারী উপকরণের দুর্যোগের ধারা থাকা উচিৎ, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো সংকটের সময় ধাক্কা মোকাবিলা করতে পারে।
চতুর্থত, ঋণদাতাদের মধ্যে সমন্বয় ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ন্যায্য ও কার্যকর ঋণ ত্রাণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
পঞ্চমত, কোটার পরিবর্তে এসডিআর (স্পেশাল ড্রইং রাইটস) ঋণসীমা প্রয়োজন এবং দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিৎ, যা হবে সহজ ঋণ প্রক্রিয়া দ্বারা সমর্থিত।
আরও পড়ুন: উন্নয়নশীল বিশ্বে কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রচার করুন: উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সংস্কারের প্রকৃতি ও ব্যাপ্তি নিয়ে সমঝোতার অভাব রয়ে গেছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক পাবলিক অর্থায়ন ব্যয়বহুল এবং নাগালের বাইরে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণের সংকট এড়াতে উচ্চ সুদের হারের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ কখনোই ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা আশা করি এই রেকর্ড বজায় থাকবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিৎ বিষয়ে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, বর্তমান রেটিং সিস্টেম অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের প্রাপ্যতাকে আরও সীমাবদ্ধ করে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ভোটাধিকার, কোটা এবং এমডিবি ও আইএফআই-তে প্রতিনিধিত্বের সীমাবদ্ধতাও তাদের দর কষাকষির ক্ষমতাকে হ্রাস করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর উন্নয়নের বিবরণ প্রমাণ করে যে আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করতে পারি। সময় এসেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার আমাদের প্রত্যাশার প্রতি সাড়া দেওয়ার।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
সুদৃঢ় সামষ্টিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারির ঠিক আগে আমাদের অর্থনীতি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।’
তিনি বলেন, কোভিড মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা এখনও ৬-৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখছি; আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, পেমেন্টের ভারসাম্য পরিচালনা এবং আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমাদের আর্থিক এবং নীতির জায়গাতে স্পষ্ট চাপ রয়েছে।’
তিনি বলেন, তার সরকার দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন: ৭৮তম ইউএনজিএ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা
বিএনপি তাদের এক দফা দাবি ঘোষণার একদিন পর সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার ‘সংস্কার’ এবং অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা উন্মোচন ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ৩১ দফা রূপরেখা তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে যেসব দল আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই রূপরেখা প্রণয়ন করেছি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমি এটা জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই।’
বিএনপি নেতা বলেন, ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য তারা বুধবার রাজধানীতে তাদের সমাবেশ থেকে এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র নির্বাচন ও শাসন পরিবর্তনের জন্য নয় বরং রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সামগ্রিক গুণগত পরিবর্তন এবং দেশকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা এখন ৩১-দফা রূপরেখা ঘোষণা করছি।’
আরও পড়ুন: সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
ফখরুল বলেন, এই রূপরেখা জাতির জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ,’ কারণ, এতে দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে তাদের দলের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ গঠিত হয়েছিল। ‘তারা (জনগণ) এখন দেশের মালিকানা হারিয়েছে।’
আরও পড়ুন: সরকার পতনে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা ফখরুলের
তিনি বলেন, ‘বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।এই রাষ্ট্রটি মেরামত এবং পুনর্নির্মাণ করা দরকার।’
ফখরুল বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশের জনগণের মালিকানা পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যমতের একটি জনকল্যাণমুখী সরকার গঠন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অতীতের নৈরাজ্যের জন্য বিএনপি দায়ী: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে
ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল নিরসনে টাস্কফোর্স পুনর্গঠনের দাবি ক্যাবের
ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল ও গ্রাহক ভোগান্তি নিরসনে টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করে ক্যাব ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত এবং বকেয়া বিলের জরিমানা আগামী আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।
৪ বছর আগে