চা
চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজারে এবারের ‘ইত্যাদি’
আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিকড়ের সন্ধানে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইত্যাদি আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে চায়ের রাজধানী হিসেবে পরিচিত অপূর্ব সুন্দর জেলা মৌলভীবাজারে।
মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে ১৮৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে অবস্থিত কুরমা চা বাগান আবৃত মাঠে।
ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে পুরো মৌলভীবাজার জেলায় ছিল উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে বসে জমজমাট মেলা। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানিরা। দূর থেকে দেখলে মনে হয় চা বাগানের মাঝখানে একখণ্ড জনসমুদ্র।
কমলগঞ্জে ধারণ হলেও দর্শকরা আসেন ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিভিন্ন উপজেলা থেকেও। স্থানীয় প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় বিকাল ৩টা থেকেই আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল।
আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অনেক দর্শক আশেপাশের টিলা, রাস্তা ও লেকের পাড়ে দাঁড়িয়ে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে ইত্যাদির শুটিং উপভোগ করেন; যা চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। তীব্র শীত উপেক্ষা করে এই দীর্ঘ সময়ে অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেছেন তাদের প্রিয় অনুষ্ঠানের ভিডিওচিত্র ধারণ।
এবারের অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজারের সন্তান কণ্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরী ও সিলেটের সন্তান তসিবা আঞ্চলিক ভাষায় একটি ভিন্নরকম প্রেমের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির কথা লিখেছেন রামাচরণ, সুর করেছেন আকাশ মাহমুদ।
উল্লেখ্য তসিবার প্রথম টেলিভিশন যাত্রা শুরু হয়েছিল এই ইত্যাদির মাধ্যমেই। এছাড়াও মৌলভীবাজারকে নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায়, হানিফ সংকেতের সুরে এবং মেহেদির সংগীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন মৌলভীবাজারেরই স্থানীয় শতাধিক নৃত্যশিল্পী।
নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছেন খাজা সালাউদ্দিন ঝন্টু, কণ্ঠ দিয়েছেন পুলক, তানজিনা রুমা, মোমিন বিশ্বাস ও নোশিন তাবাসসুম স্মরণ।
আরও পড়ুন: ফের আরটিভিতে সিসিমপুর
১০ মাস আগে
কিডনি পরিশোধনকারী ১০টি ভেষজ চা
কিডনি এমন এক প্রাকৃতিক ফিল্টার, যেটি অবিরাম রক্ত পরিশুদ্ধ করে ভারসাম্য বজায় রাখে মানবদেহে। এই স্বয়ংক্রিয় কার্যপ্রণালীতে কিঞ্চিত অসঙ্গতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সামগ্রিক রেচনজনিত কার্যাবলীতে।সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার দিকে অগ্রসর হয়। ভেষজ চা পান এই আশঙ্কা থেকে মুক্তির একটি প্রতিরোধমূলক উপায় হতে পারে। শুধুমাত্র নিয়ত জীবন ধারার একটি জনপ্রিয় অভ্যাসই নয়; পরিমিত চা পান সুস্থতায় সমৃদ্ধির পারিচালক। তাই কিডনি থেকে দূষিত পদার্থ নিগমনে সাহায্যকারী ১০টি ভেষজ চা-এর কার্যকারিতা নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের নিবন্ধ। চলুন, চা পানের অভ্যাস থেকে সর্বোচ্চ উপযোগিতা বের করে আনতে এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
কিডনিকে সুস্থ রাখার ১০টি ভেষজ চা
ড্যান্ডেলিয়ন চা
এই চা-এর উৎস ড্যান্ডেলিয়ন নামক উদ্ভিদ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Taraxacum officinale। গাছের পাতা, শিকড় এবং ফুল; প্রত্যেকটি অবদান রাখে এই চা উৎপাদনে।
এর পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি, কে, ই এবং ফোলেট। মানবদেহে প্রয়োজনীয় খনিজের মধ্যে এটি আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়ামের যোগান দিতে পারে। এর শিকড়ে আছে প্রচুর পরিমাণে ইনুলিন, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে।
ড্যান্ডেলিয়নের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। রক্তে শর্করা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ড্যান্ডেলিয়ন চা বেশ কার্যকর।
ড্যান্ডেলিয়ন চা বানানোর জন্য এর পাতা বা শিকড় সংগ্রহ করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পাতা থেকে চা বানাতে পাতাগুলো গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হয়। আর শিকড়ের বেলায় পিষে রস বের করে নিতে হয়।
আরও পড়ুন: রোজায় সুস্থ থাকার ৫টি উপায়
নেটল চা
নেটল চা-এর উদ্ভিদের নাম স্টিঙ্গিং নেটল (Stinging Nettle), যার বৈজ্ঞানিক নাম Urtica dioica।
এই গাছের পাতা চা তৈরির প্রধান উপাদান। এই পাতায় আছে ভিটামিন সি, ডি এবং কে। আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ উপাদানের পাশাপাশি আছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এই চা পলিফেনল এবং ক্যারোটিনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস।
নেটল চায়ে থাকা যৌগ প্রদাহ কমাতে এবং আর্থ্রাইটিসের মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। মূত্রনালীর সংক্রমণ উপশমে এটি বেশ সহায়ক। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য জয়েন্টের ব্যথা এবং পেশির খিঁচুনি থেকে মুক্তি দিতে পারে।
নেটল চা বানাতে হলে প্রথমে হাতে গ্লাভস পরে তাজা নেটল পাতা সংগ্রহ করতে হবে। পাতাগুলোকে গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পরেই এটি চা হিসেবে পানের উপযোগী হয়ে ওঠে।
হিবিস্কাস চা
হিবিস্কাস চা-এর উদ্ভিদের নাম হিবিস্কাস; বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus sabdariffa। গাছের শুকনো ক্যালিস তথা ফুলের বাইরের অংশ থেকে চা তৈরি করা হয়। লাল রঙের এই চায়ে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রন ও ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ।
স্বতন্ত্র ট্যাঞ্জি গন্ধের জন্য সুপরিচিত এই চা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি নিয়মিত সেবনে স্বল্প মাত্রার কোলেস্টেরল উন্নত হতে পারে। হিবিস্কাস চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ফ্রি র্যাডিক্যাল এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়া এর হজমে সহায়তা করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা আছে।
হিবিস্কাস ক্যালিস সংগ্রহের পর শুকানোর পরে সেগুলো ৫-১০ মিনিট গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই চা তৈরি হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর সতেজ রাখতে আইস-টি
পার্সলে চা
পার্সলে গাছের (বৈজ্ঞানিক নাম Petroselinum crispum) পাতা থেকে প্রাপ্ত পার্সলে চা প্রচুর পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন। অন্যান্য ভেষজ চায়ের থেকে ভিন্ন এই চা বেশ সুস্বাদু। ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ পার্সলে চা কিডনির কার্যকারিতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। এতে করে দেহ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি পায়।
পার্সলে চায়ে আছে মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য। এতে থাকা তেলের মতো উপাদানগুলোর কারণে প্রস্রাবের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এতে করে শরীরে থাকা টক্সিন বের হয়ে যায় এবং একই সঙ্গে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়।
পার্সলে চায়ের উপকারিতা উপভোগ করতে গরম পানিতে এক মুঠো তাজা পার্সলে পাতা প্রায় ৫-১০ মিনিট জ্বাল দেওয়াই যথেষ্ট।
ক্র্যানবেরি চা
Vaccinium macrocarpon বৈজ্ঞানিক নামের ক্র্যানবেরি উদ্ভিদের ফল থেকে তৈরি হয় ক্র্যানবেরি চা। সুস্বাদু এই ফলটি অনেক স্বাস্থ্যগুণের আধার। এতে থাকা প্রাকৃতিক যৌগ প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন্স মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
এই চায়ে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ফলে এটি শরীরকে শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষম করে তোলে। মূত্রনালীর প্রদাহ এবং অস্বস্তি দূর করাতেও এই চা অপরিসীম ভূমিকা পালন করে।
ক্র্যানবেরি চা তৈরি করতে হলে প্রথমে পানি সিদ্ধ করে সামান্য ঠাণ্ডা করতে হবে। অতঃপর তা তাজা ক্র্যানবেরি ভর্তি কাপে ঢেলে ঢেকে রাখতে হবে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর তৈরি চা পানের উপযোগী হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: এই গরমে ট্যানিং এড়াতে কিছু টিপস
১ বছর আগে
চায়ের দেশ সিলেটে ইউএস-বাংলার আকর্ষণীয় প্যাকেজ
ঢাকা থেকে সিলেট ভ্রমণকে আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আকর্ষণীয় ট্যুর প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
রবিবার (৬ আগস্ট) ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট রুটে ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা।
বর্ষার আগমনে পুরো সিলেট যেন রানীর সাজে বর্ণিল হয়ে উঠেছে। বর্ষায় জাফলং, তামাবিল, শাপলাবিল, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, সাদাপাথর, মাধবকুন্ড আর দু’টি পাতা একটি কুড়ির চা বাগানের অপরূপ সৌন্দর্যকে পূর্ণতা দিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সিলেটে আকর্ষণীয় প্যাকেজ অফার ঘোষণা করেছে।
প্রতিজনের জন্য নূন্যতম অফার ১১ হাজার ৪৯০ টাকা। ২ রাত ৩ দিনের এই অফারটি কমপক্ষে দুই জনের জন্য প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার রুটে ইউএস বাংলার ফ্লাইট শুরু ১ জুন
অফারের মধ্যে রয়েছে সকল প্রকার ট্যাক্সসহ ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রিটার্ন টিকেট, দুই দিনের থাকার ব্যবস্থা ও সকালের নাস্তা এবং এয়ারপোর্ট-হোটেল-এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার সুবিধা।
অফারের অন্তর্ভুক্ত হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে- হোটেল সাদা পাথর, নিরভানা ইন, হোটেল গ্র্যান্ড সিলেট, নাজিমগড় গার্ডেন রিসোর্ট- খাদিম নগর ও নাজিমগড় উইলডারনেস-লালাখাল।
আকর্ষণীয় এ অফারটি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর যেকোনো নিজস্ব সেলস্ কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
শর্তসাপেক্ষে অতিরিক্ত রাত ও শিশুদের জন্য প্যাকেজটিতে সংযুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
সিলেট ট্যুর প্যাকেজের অফারটি সংগ্রহের সময়সীমা ২৮ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত রয়েছে। অফারটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইউএস-বাংলার সকল সেলস কাউন্টারে অথবা ০১৭৭৭৭৭৭৮৮১-৮৮৩ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউএস বাংলার ঢাকা-দোহা ফ্লাইট পুনরায় শুরু হচ্ছে ৩১ আগস্ট
১ বছর আগে
সাংস্কৃতিক চীন: কাল ও দেশের সীমা পেরিয়ে চীনা চায়ের সুবাস
চায়ের আদি নিবাস চীন। হাজার হাজার বছর ধরে, চা চীনা সংস্কৃতির অনুষঙ্গ এবং চীনের জনগণের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এটা বিশ্বাস করা হয় যে চা সংস্কৃতি তাং রাজবংশের (৬১৮-৯০৭) সময় চীন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টম শতাব্দীতে ট্যাং পণ্ডিত লু ইউ’র লেখা ‘দ্য ক্লাসিক অব টি’ চীনের প্রথম গ্রন্থ, যেখানে চা এবং এর সম্পর্কিত জ্ঞান ও গবেষণা পদ্ধতি নিয়ে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল।
উত্তর-পশ্চিম চীনের শানসি প্রদেশের ফামেন মন্দির একসময় তাং রাজবংশের রাজকীয় মন্দির ছিল। ১৯৮৭ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকরা মন্দিরের ভূগর্ভস্থ প্রাসাদ থেকে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাচীনতম এবং সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিং ট্যাং ইম্পেরিয়াল চা সেটটি আবিষ্কার করেন।
ফ্যামেন টেম্পল মিউজিয়ামের গবেষক জিয়াং জি বলেন, ‘এখানে পাওয়া চায়ের সেটটি চীনা চা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য।’
জিয়াং বলেন,‘রাজ পরিবারও বলিদান ও টোস্টিং এর জন্য চা ব্যবহার করতে শুরু করে এবং তাং রাজবংশে চা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।’
গানের রাজবংশে (৯৬০-১২৭৯) চা সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে যখন বিশেষ চা-টেস্টিং ক্লাবগুলো প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে চা প্রতিযোগিতার ফ্যাশন আসে।
ইতিহাস জুড়ে, সাহিত্য, শিল্প, ধর্ম এবং অন্যান্য উপায়ে চা চীনা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিতে গভীরভাবে মিশে আছে।
১ বছর আগে
চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত, মৌলভীবাজারে সড়ক অবরোধ
মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের ১৭তম দিনেও ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন মৌলভীবাজারের চা-শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শ্রমিকেরা ঢাকা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের বেরীর পার মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
এদিন জেলার দেওরাছড়া চা বাগান, প্রেমনগর চা বাগান, মৌলভী চা বাগান, মাজদিহি চা বাগান ও হামিদিয়া চা বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদরে আসেন।
এছাড়াও, ৯টি বাগানের শ্রমিকেরা চা বাগানের ভেতর বিক্ষোভ করেছেন।
এদিকে শ্রমিকরা যাতে কাজে যোগ দেন এ লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বিভিন্ন বাগানে গিয়ে পঞ্চায়েত কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে কাজে যোগদানের আহ্বান করেছেন।
প্রসঙ্গত, দেশের ১৬৭ চা বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা।
গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে প্রথম কয়েকদিন কেবল ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেয়া হয়।
কিন্তু মালিক পক্ষ এই সময়ের মধ্যে বৈঠক বা সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। এরপর দফায় দফায় বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনো সঠিক সমাধানে যায়নি এই সংকট।
২ দফা মজুরি বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হলেও চা শ্রমিকরা তা প্রত্যাখান করেন।
এরপর গত ২১ আগস্ট রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী আসন্ন দুর্গাপূজার আগে নতুন মজুরি ঘোষণা করবেন। তার আগ পর্যন্ত চলমান ১২০ টাকা মজুরি রেখেই কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ করা হয় চা শ্রমিকদের।
সেই প্রস্তাব মেনে প্রথমে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও একদিন পর আবারও কর্মবিরতিতে নামেন শ্রমিকরা।
তাদের দাবি তিনশ’ টাকা মজুরি দিতে হবে অথবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পরবর্তীতে মজুরি বৃদ্ধির সুস্পষ্ট ঘোষণা জানাতে হবে।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের মজুরি ২০১৯ সালেই বৃদ্ধি করা উচিৎ ছিল: গবেষক আশ্রাফুল
চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আলোচনা ছাড়াই রাত ৩টায় চুক্তি সাক্ষর: আন্দোলন অব্যাহত চা শ্রমিকদের
২ বছর আগে
চা শ্রমিকদের অবরোধে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মঙ্গলবারও ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে সাধারণ চা শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তারা মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চৌমুহনী রেললাইন ও কুলাউড়া মৌলভীবাজার আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেছে। ফলে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এসময় সিলেটগামী পাহাড়িকা ট্রেন সিলেটের দিকে আসছিল। অবরোধের কারণে আটকা পরে পাহাড়িকা।
অবরোধে অংশ নেয়া চা শ্রমিক স্বপন নাইডু বলেন, ‘এতদিন ধরে আমরা ধর্মঘট করছি। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে নেয়া হচ্ছে না। তাই আজ আমরা রেলপথ অবরোধ করেছি।’
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটা তারা কোন টেলিভিশনে দেখেনি বা শোনেনি। নেতারা প্রধানমন্ত্রীর নামে মিথ্যা নিদের্শনা দিয়ে আমাদের কাজে যেতে বলছেন। তাই ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে তারা আবারও আন্দোলন শুরু করেন।
চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারের জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তরের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এভাবে বিষয়টির সুরাহা না হলে গত শনিবার শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে এক বৈঠকে জানানো হয় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি দেশের বাইরে যাবেন। সেখান থেকে এসে গণভবনে শ্রমিকদের নিয়ে বসবেন এবং তাদের তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা শুনে বিষয়টি দেখবেন। প্রথমে চা শ্রমিক নেতারা এ কথা মানলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
আরও পড়ুন:মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
২ বছর আগে
চা শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, আগের মজুরিতেই ফিরছেন কাজে
ধর্মঘট প্রত্যাহার করে পূর্বের ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফিরছেন চা শ্রমিকরা। সোমবার থেকেই তারা কাজে যোগ দেবেন।
রবিবার রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ-সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, আপাতত আমরা পূর্বের মজুরিতেই কাজে যোগ দেব। তবে দ্রুততম সময়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করে নতুন মজুরি নির্ধারণ করবেন। আর ধর্মঘট চলাকালীন ১০ দিনের মজুরিসহ সকল সুবিধাদি মালিকপক্ষ প্রদান করবে।
তবে শ্রমিক নেতাদের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা আজ বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, রবিবার রাতে নিজ কার্যালয়ে চা-শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এ সময় চা- শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর উপ-পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসকের প্যাডে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়- প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তার সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ২২ আগস্ট থেকে কাজে যোগদান করবেন। আপাতত চলমান মজুরি অর্থাৎ ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স পরবর্তীতে মজুরির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে।
আরও পড়ুন : মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে কাল থেকে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে চা শ্রমিকরা
২ বছর আগে
জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
প্রকৃতি তার বিপুল উপাচার দিয়ে পরম যত্নে আগলে রেখেছে সমস্ত প্রাণীকুলকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্রমাগত উন্নতির নেপথ্যে এক বিরাট ভূমিকা রয়েছে প্রকৃতির উদ্ভিদ জগতের। এখনো এগুলোর উপযোগিতা বিস্ময়কর ভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়। সৌন্দর্য্যের জন্য বহুল পরিচিত হলেও জবা ফুল ভেষজ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। জবা ফুলের চা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা থেকে অনাক্রম্যতার জন্য গরম-ঠান্ডা দুইভাবেই পান করা হয়ে থাকে। উত্তর আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় উদ্ভূত হলেও এখন অনেক গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলেও এই চা এর জনপ্রিয়তা আছে। জবা ফুলের লাল বা গভীর ম্যাজেন্টা রঙের বৃন্ত থেকে তৈরি করা হয় টক স্বাদযুক্ত এই চা। চলুন, জবা ফুলের চায়ের স্বাস্থ্যগুণ, ব্যবহার এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে জেনে নেয়া যাক।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জবা ফুলের চায়ের উপকারিতা
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
এই পানীয় উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের এবং হালকা উচ্চ রক্তচাপযুক্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক উভয় রক্তচাপকেই উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করণে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে জবা ফুলের চা।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি জবা ফুলের চা রক্তে চর্বির মাত্রাও কমাতে সাহায্য করে। রক্তে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া হৃদরোগের দিকে ঠেলে দেয়। যাদের কোলেস্টেরল মাত্রা বেশ খারাপ পর্যায়ের, এই চা পান এক মাসের মধ্যে তাদের কোলেস্টেরলে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। কোন রকম শারীরিক অসুস্থতা ছাড়া ব্যক্তিরাও তাদের কোলেস্টেরলের মাত্রায় ভারসাম্য বজায় রাখতে এই চা পান করতে পারেন। জবা ফুলের নির্যাস ভাল কোলেস্টেরল বা হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বাড়িয়ে দেয় এবং খারাপ কোলেস্টেরল বা লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
ওজন কমানো
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে ঘনীভূত জবা ফুলের বৃন্তের যুগান্তকারি প্রভাব রয়েছে। এর চা-এর ফলে বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই), শরীরের ওজন, শরীরের চর্বি এবং নিতম্ব থেকে কোমরের অনুপাত কমে যায়। এটি বিশেষ করে স্থূলকায় ব্যক্তিদের জন্য যথেষ্ট সুবিধাজনক অবস্থার সৃষ্টি করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দিয়ে প্যাক করা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এমন একটি অণু, যা কোষের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল নামক যৌগের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ বিশেষ করে পাতা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। আর তাই এটি ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে মুক্ত করতে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা
প্রোটিন উৎপাদন থেকে শুরু করে চর্বি ভাঙ্গা সহ শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপের জন্য লিভারের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো থাকা অপরিহার্য। জবা ফুলের চা পানে লিভার ক্রমাগত ভালোভাবে কাজ করে যেতে পারে। অতিরিক্ত ওজনের মানুষের ক্ষেত্রে তিন মাস জবা ফুলের নির্যাস লিভার স্টেটোসিস উন্নত করে দিতে পারে। এতে করে লিভার এতে জমে থাকা চর্বি থেকে মুক্তি পায়।
আরও পড়ুন: জেনে নিন ডালিমের খোসার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
হজমে সহায়তা
মূত্রবর্ধন প্রয়োজনীয় পানি ও লবণকে দেহে রাখতে সহায়তা করে যেগুলো প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বেড়িয়ে যায়। এই চা প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এটি মূলত চিনি ও ক্যাফেইন-মুক্ত পানীয় পান করার একটি ভালো মাধ্যম, যেটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে। ফলশ্রুতিতে, শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির উপস্থিতি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে হজমে সহায়তা করে।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা
ব্যাকটেরিয়া হল এককোষী অণুজীব, যা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া ও মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রভৃতি রোগের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিক্যান্সার বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে জবা ফুল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।
ই.কোলি নামের ব্যাকটেরিয়াগুলো ক্র্যাম্পিং, গ্যাসট্রিক এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে থাকে। জবা ফুলের নির্যাস এই ব্যাকটেরিয়াটির কার্যকলাপকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে এই নির্যাস বেশ কর্মক্ষম। এমনকি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় রীতিমত অ্যান্টিবায়োটিকের মতই কাজ করে।
আরও পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
জবা ফুলের চা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যাওয়া
কম রক্তচাপ সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এই চা পান বিপজ্জনক হতে পারে। এই পানীয় দেহে রক্তচাপের ভারসাম্যতা যাচাই না করেই রক্তচাপ কমাতে থাকে। তাই চরম অবস্থায় নিচু রক্তচাপের আনুষঙ্গিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। যারা ইতিমধ্যেই রক্তচাপ কমানোর জন্য ওষুধ গ্রহণ করছেন তাদের জন্যও এই চা পান এড়িয়ে চলা উচিত।
রক্তচাপ অনেক কমে গেলে হ্যালুসিনেশন পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি এমনকি যারা উচ্চ রক্তচাপের জন্য ওষুধ নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রেও এই চা পানের সময় তাদের রক্তে শর্করা এবং রক্তচাপের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা উচিত। নতুবা অবস্থা আরো খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে।
ব্লাড সুগার মাত্রাতিরিক্ত কমে যাওয়া
নিম্ন রক্তচাপের মতো রক্তে শর্করার পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হ্রাস পাওয়াও অনেক ঝুঁকি নিয়ে আসে। যাদের রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ওষুধ চলছে, তাদের এই চা না পান করাই ভালো। এছাড়া যাদের মাঝারি থেকে বড় ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাদেরও এই পানীয়টি এড়িয়ে চলা উচিত। স্পষ্টতই সেই পরিস্থিতিতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ আরো কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতে পারে।
আরও পড়ুন: অপরাজিতা ফুলের নীল চা: জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ, বানানোর পদ্ধতি
শরীরে ওষুধের কার্যকারিতা লোপ পাওয়া
জবা ফুলের চা একটি ভেষজ পানীয় হওয়ায় ওষুধের সাথে এর সাধারণ যোগসাজস আছে। তাই সে অনুযায়ী আনুষঙ্গিক ঝুঁকিও নিয়ে আসে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটি হলো টাইলেনলের সক্রিয় উপাদান অ্যাসিটামিনোফেন। শরীরের অভ্যন্তরে জবা ফুলের চা ও এই উপাদানের সংমিশ্রণ লিভারের জন্য চরম ক্ষতিকর হতে পারে। ফলশ্রুতিতে মূত্রবর্ধক সহ নানা ধরনে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে বাঁচার নিমিত্তে এদের পরস্পরের সাথে মিশ্রিত করা থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।
যারা ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন গ্রহণ করেন তাদের জন্য এই শক্তি বর্ধক পানীয় সেবন নিরাপদ নয়। শরীরে এর উপস্থিতি ও প্রভাব স্থায়ী করার জন্য অন্য ওষুধের কার্যকারিতাকে নিমেষেই নষ্ট করে দেয়।
জবা ফুলের চা বানানোর পদ্ধতি
টক স্বাদযুক্ত হলেও জবা ফুলের চা কে সুস্বাদু পানীয়তে পরিণত করা যায় এবং এই চা বানানোর যাবতীয় প্রস্তুতি বাড়িতেই নেয়া সহজ। চায়ের জন্য নির্ধারিত মগটিতে ভালো ভাবে পিষে নেয়া জবা ফুলের কিছু বৃন্ত রাখতে হবে। অতঃপর তাতে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিতে হবে। এই সহজ মিশ্রণটি পাঁচ মিনিটের জন্য রেখে দেয়ার পর ছেঁকে নিলেই একদম সাধারণ মানের জবা ফুলের চা তৈরি হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
তবে ফুলের টক স্বাদে পরিবর্তন আনতে গরম পানি যুক্ত করার আগে অথবা পরে প্রয়োজন মত মধু ও লেবুর রস দেয়া যেতে পারে। এতে টক স্বাধের ভারসাম্য বজায় থাকবে আবার স্বাদ মিষ্টিও হয়ে যাবে। এছাড়াও সাধারণ রঙ চায়ের মত ছোট ছোট আদার টুকরাও যোগ করা যেতে পারে।
এটি ঠান্ডা-গরম উভয় অবস্থাতেই পান করা যায়। তৈরি চা ঠান্ডা হলে ফ্রিজে দুই দিন রেখে দিলেই দারুণ একটি আইস টি হয়ে যায়। তাছাড়া সদ্য বানানো চা ঠান্ডা করার পর কিছু বরফ কুঁচি যোগ করেও ঠান্ডা চায়ের ফ্লেভার নেয়া যায়।
জবা ফুলের চা দোকানে রেডিমেড টি-ব্যাগেও পাওয়া যায়। সেগুলো সহজভাবে গরম পানিতে প্রয়োজন মত ভিজিয়ে উঠিয়ে নিলে কম সময়েই পানের উপযোগী হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
শেষাংশ
ভেষজ পানীয় জবা ফুলের চায়ের স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে এখনো গবেষণা হচ্ছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো উতড়ে সম্পূর্ণ উপযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে এই চা পানকারির উপর এর প্রতিটি প্রভাব সুক্ষ ভাবে যাচাই করা হচ্ছে। অবশ্য নিত্য দিনের খাদ্যাভাসে ২ থেকে ৩ কাপ জবা ফুলের চা রাখা যেতে পারে। এর বেশি পান করাটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে পান করা হলে খাদ্যাভাসে স্বাদ পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য সম্মত উপকারিতায় এই চা একটি দারুণ সংযোজন হতে পারে।
২ বছর আগে
অপরাজিতা ফুলের নীল চা: জাদুকরী স্বাস্থ্যগুণ, বানানোর পদ্ধতি
শুধু সৌন্দর্য্য দিয়ে নয়; প্রকৃতি তার বিস্ময়কর সব উপাচার দিয়ে অকুণ্ঠচিত্তে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে মানুষের সেবায়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বর্তমান অবস্থার পেছনে প্রকৃতির তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখনো গবেষণায় বেরিয়ে আসছে নানান উদ্ভিদের বিস্ময়কর ক্ষমতার কথা। তবে বাটারফ্লাই পি ফ্লাওয়ার বা অপরাজিতা ফুলের নীল চা খুব একটা নতুন বিষয় নয়। এশিয়ায় জন্মানো এই আকর্ষণীয় উদ্ভিদটির নীল রঙ এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগের উপস্থিতির কথা জানান দেয়। এই উদ্ভিদ থেকে তৈরি করা যায় অনেক স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন ভেষজ চা। চলুন, অপরাজিতা ফুলের চায়ের গুণাগুণ ও চা বানানোর পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক।
নীল অপরাজিতা ফুলের চায়ের উপকারিতা ও স্বাস্থ্যগুণ
ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
প্রসাধনী নির্মাতারা স্কিনকেয়ার সিরাম থেকে শুরু করে চুলের মিস্ট এবং শ্যাম্পু সব কিছুতেই অপরাজিতা ফুলের কার্যকারিতা নিয়ে গর্ব করেন। এর নির্যাস সাময়িক প্রয়োগের এক ঘন্টা পরে ত্বকের হাইড্রেশন ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া চুলের বৃদ্ধিতে এটি মিনোক্সিডিলের চেয়েও বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই এটি চুল পড়ার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত একটি সাধারণ পণ্য। এটি চুলের ফলিকলগুলোকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে।
ওজন কমানো
অপরাজিতা ফুলের নির্যাস দেহের কিছু কোষের অগ্রগতিকে নিয়ন্ত্রণ করে চর্বির গঠনকে ধীর করে দিতে পারে। এতে থাকা টার্নেটাইন্স শরীরের চর্বি কোষের সংশ্লেষণ ব্লক করতে পারে।
পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
রক্তে শর্করার মাত্রার ভারসাম্যতা বজায়
অপরাজিতা ফুল ডায়াবেটিস সম্পর্কিত লক্ষণগুলোর ঝুঁকি কমাতে পারে। এর নির্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে। এতে থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড এবং ফেনোলিক অ্যামাইড অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এর অ্যান্টিহাইপারগ্লাইসেমিক প্রভাবে ইনসুলিন নিঃসরণ উন্নত হয়, গ্লুকোজ বিপাক নিয়ন্ত্রণ হয় এবং শরীরের কোষগুলোর দ্বারা শর্করার অতিরিক্ত শোষণ প্রতিরোধ হয়। এমনকি এটি খালি পেট এবং ভরপেট খাওয়ার পরে উভয় ক্ষেত্রেই কাজ করে।
হতাশা এবং উদ্বেগের বিরুদ্ধে কার্যকারিতা
নীল চা পাতা একটি ভাল অ্যাডাপ্টোজেন। অ্যাডাপ্টোজেন এমন অণু, যা হতাশা এবং উদ্বেগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়াতে পারে। ফলে শরীর তার স্বাভাবিক এবং সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসে।
হৃদপিন্ডের সুস্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা
আয়ু বৃদ্ধির সর্বোত্তম উপায় হল যে কোন বয়সেই হৃদপিন্ডকে শক্তিশালী এবং সুস্থ রাখা। এই কাজটি বেশ সুচারুরূপে করতে পারে নীল চা। এই সুস্বাদু পানীয়টি এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে এবং শরীরে এইচডিএল বা ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। এটি হার্ট অ্যাটাক, রক্ত জমাট বাঁধা এবং হৃদযন্ত্রের জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক ঢাল হিসাবে কাজ করে। এই সব কার্ডিওভাসকুলার সুবিধার পাশাপাশি নীল চা হাইপারলিপিডেমিয়া বা রক্তে অত্যধিক চর্বি জমা থেকেও রক্ষা করে।
পড়ুন: বাংলাদেশের বাহারি আম এবং তাদের উৎপাদনকারী অঞ্চল
মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বৃদ্ধি
অ্যাসিটাইলকোলাইন মস্তিষ্কের কার্যকরী স্নায়ু কোষ যোগাযোগের জন্য অপরিহার্য একটি অণু। বয়সের সাথে এই যৌগটি হ্রাস পেতে শুরু করে, বিধায় স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় এবং অন্যান্য মস্তিষ্কের ব্যাধি সৃষ্টি হয়। এই নীল চায়ে রয়েছে অ্যাসিটাইলকোলাইন যৌগ যেটি স্নায়ুকে শান্ত করার সময় স্মৃতিশক্তি হ্রাস রোধ করে। এটি এমনকি মধ্য বয়স্ক ব্যক্তিদের জ্ঞানীয় ক্ষমতাও বাড়ায়।
বার্ধক্য বিরোধী বৈশিষ্ট্য
নীল চা অ্যান্থোসায়ানিনে পূর্ণ, যেটি এমন একটি যৌগ যা ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। এটি ত্বকের কৈশিকগুলোতে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে ত্বককে তরুণ করে তোলে। এটি গ্লাইকেশন প্রক্রিয়াকেও ধীর করে দেয়, যা ত্বকের টান টান ভাব হারানোর জন্য দায়ী।
হজমের স্বাস্থ্যের উন্নতি
খালি পেটে নীল চা পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যায়। সুতরাং লিভার, অগ্ন্যাশয় এবং অন্ত্রগুলো যে ভালভাবে পরিষ্কার থাকবে সে ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকা যেতে পারে। আর এই পরিশুদ্ধি পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সপ্তাহে এক বা দুবার খালি পেটে এক কাপ নীল চা পান করা সিস্টেমে জমে থাকা টক্সিনগুলোকে বের করে দেয়।
পড়ুন: খেজুর খাওয়ার উপকারিতা: সারাদিন রোযা রেখে ইফতারে কেন খেজুর খাবেন?
ব্যাথানাশক ঔষধ
এক কাপ নীল চা প্যারাসিটামলের মত কাজ করে। ফলে এটি পেইন কিলারের উপর নির্ভরশীলতা কমায়। এর প্রদাহ বিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো জ্বর সহ যে কোন ধরনের শরীর ব্যাথা উপশম করতে সক্ষম। নীল চায়ের নির্যাসের চেতনানাশক বৈশিষ্ট্য ব্যথা এবং ফোলা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য
নীল চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রোগ-সৃষ্টিকারী প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যথেষ্ট কার্যকর। এতে উপস্থিত উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী। এটি কেবল প্রদাহ কমাতেই সাহায্য করে না বরং অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করে। নীল চা বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ উভয় প্রদাহের চিকিৎসায় সমানভাবে কাজ করে। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শরীর প্রদাহ এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হয়ে ওঠে।
অপরাজিতা ফুলের চা বানানোর পদ্ধতি
অপরাজিতা ফুলের চা তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান
নীল চা তৈরিতে যেগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে সেগুলো হলো শুকনো নীল অপরাজিতা ফুলের চা দানা, গরম পানি, লেবু বা চুন, মধু বা মিষ্টি, ঠান্ডা চায়ের ক্ষেত্রে বরফের টুকরো। তাজা বা শুকনো অপরাজিতা ফুল ব্যবহার করা যেতে পারে। চায়ের স্বাদ কতটুকু গাঢ় হবে তার উপর ভিত্তি করে ফুলে সংখ্যা কম বেশি করতে হবে। বেশি পুষ্টি অথবা স্বাস্থ্যগুণের সুবিধা ভালো ভাবে পেতে হলে বেশি ফুল ব্যবহার করতে হবে। তবে হালকা নীল চা থেকে অমৃতের স্বাদ পেতে এক চুমুকই যথেষ্ট।
পড়ুন: রন্ধন পাঠশালা: ঢাকায় কোথায় রান্না শেখার কোর্স করতে পারবেন?
ধাপে ধাপে অপরাজিতা ফুলের চা তৈরির পদ্ধতি
প্রথমে উচ্চ তাপে চায়ের কেটলিতে পানি গরম করতে হবে। ২ কাপ বা তার বেশি পরিমাণে পান করতে চাইলে একটি বড় পাত্রে পানি সিদ্ধ করে অতঃপর ছোট পাত্রে চা ঢেলে নেয়া যেতে পারে।
এক-চতুর্থাংশ কাপ নীল চা দানা ছাকনী যুক্ত বলে নিতে হবে। অতঃপর একজনের জন্য তা একটি বড় মগে যোগ করতে হবে। আর ২ জনের জন্য ৪ কাপে যুক্ত করা যেতে পারে।
চায়ের বলের উপর গরম পানি ঢেলে দিয়ে ৩ থেকে ৮ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। চা কতটা গাঢ় স্বাদের হবে তার উপর নির্ভর করে এই সময়টা বাড়ানো যেতে পারে। তবে সতর্ক থাকতে হবে, কেননা ১০ মিনিটের বেশি হয়ে গেলে চা একদম তেতো হয়ে যাবে।
পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
ঠান্ডা চায়ের জন্য একটি গ্লাসে ১ কাপ বরফ রাখতে হবে। এই বরফের উপর ঢেলে দিতে হবে গরম নীল চা। পরিমাণ মত লেবুর রস যোগ করা যেতে পারে। এছাড়া আরো মুখরোচক করার জন্য মধু দেয়া যেতে পারে।
নীল রঙকে ভালো ভাবে পেতে হলে ফুলগুলোকে কয়েক মিনিটের জন্য গরম পানিতে ভিজতে দিতে হবে। আরো রঙ বের করতে কাপের বিপরীতে ফুলগুলোকে চামচের উল্টো পিঠ দিয়ে পিষে নেয়া যেতে পারে। অনেক বেশি পরিমাণে এই চা বানালে সাধারণত ২ থেকে ৩ দিনের জন্য ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। তবে লেবুর রস দিয়ে পান করতে চাইলে পান করার জন্য প্রস্তুত করে অর্থাৎ পান করার ঠিক আগ মুহুর্তে লেবুর রস যোগ করতে হবে।
পরিশিষ্ট
অপরাজিতা ফুলের নীল চায়ের জাদুকরী উপকারিতার জন্য এটি ভেষজ খাবারের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত এবং বহুকাল ধরে এটি আদিম চিকিৎসায় রোগীদেরকে পরামর্শ দেয়া হয়। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এই বহুমুখী পানীয়টির তেমন একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ানেই। তাই এটি যে কোন ডায়েটে একটি দুর্দান্ত সংযোজন। অতিরিক্ত সেবনে সর্বোচ্চ হালকা বমি ভাব এবং ডায়রিয়া হতে পারে। তবে গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে নীল চা পান করার আগে তাদের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
২ বছর আগে
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সিলেটে ২৩ চা বাগানে কর্মবিরতি পালন
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন সিলেট ভ্যালির চা শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেট ভ্যালির ২৩টি চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করেন তারা।এ সময় সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কের লাক্কাতুরা চা বাগানের সামনে মিছিল-সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মজুরি বৃদ্ধির জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানোর পরও কোনো সাড়া মিলছে না। দিনের পর দিন জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মূল্য বাড়ছে; এতে পরিবার নিয়ে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ একেবারেই অসম্ভব।এমতাবস্থায় ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবি জানিয়ে প্রায় দুইবছর আগে আবেদন করলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। প্রতি দুইবছর অন্তর অন্তর চুক্তি নবায়ন করার নিয়ম থাকলেও এবার তা বাস্তবায়নে বাগান কর্তৃপক্ষ কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।এদিকে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বাধ্য হয়েই দুইঘন্টা করে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। অবিলম্বে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি মেনে না নিলে লাগাতার কর্মবিরতির হুমকি দেন শ্রমিক নেতারা।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জে ২৩ চা বাগানের শ্রমিকরা স্বেচ্ছা ছুটিতে
পঞ্চগড়ে চা বাগান ও জঙ্গল কেটে খোঁজা হচ্ছে বাঘ
২ বছর আগে