মৎস্য অধিদপ্তর
৪ জানুয়ারি থেকে ১৭ জেলায় অবৈধ জাল অপসারণে বিশেষ অভিযান: মন্ত্রণালয়
দেশের মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল অপসারণে দেশের ১৭ জেলায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শুরু হচ্ছে বিশেষ কম্বিং অপারেশন।
ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের পোনা রক্ষায় বেহুন্দি জালসহ মৎস্যসম্পদের জন্য ক্ষতিকর সব ধরনের অবৈধ জাল অপসারণে আগামী ৪ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ধাপে ধাপে এ বিশেষ অপারেশন পরিচালনা করা হবে।
জেলাগুলো হলো- পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, বরিশাল, নোয়াখালী, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও চাঁদপুর।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ১০ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ
অপারেশন পরিচালনার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের মৎস্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিটি জেলায় একটি করে মোট ১৭টি মনিটরিং টিম কাজ করবে। এছাড়া অভিযানের নিয়মিত তথ্য সংগ্রহে মৎস্য অধিদপ্তরে চালু থাকবে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
এদিকে মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জালসহ সব ধরণের ক্ষতিকর অবৈধ জাল দিয়ে মৎস্য আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ২ লাখ টাকার কারেন্ট জাল উদ্ধার
ম্যাজিক জালে অবাধে মা মাছ নিধন!
নিষেধাজ্ঞার দুই মাস পর আবার ইলিশ ধরা শুরু
ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুদের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শনিবার মধ্যরাতে শেষ হওয়ায় জেলেরা আবার মাছ ধরার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার জেলেরা মাছ ধরার জাল ও ট্রলার তৈরি করে রাত ১২টার পর নদীতে ইলিশ ধরা শুরু করছেন।
ইউএনবি চাঁদপুর সংবাদদাতা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সারাদেশের পাঁচটি অভয়ারণ্যে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মধ্যরাত থেকে প্রায় ৫২ হাজার জেলে মাছ ধরা আবার শুরু করায় জেলে পাড়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
বিগত বছরের মতো এবারও চাঁদপুরের মতলব উত্তর সাতনল থেকে হাইমচর চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কাজ বন্ধ থাকায় ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলে সরকারি সহায়তা পেয়েছেন।
শনিবার সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, হরিণা, বাহরিয়া, লক্ষ্মীপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় জেলেরা মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে তারা তাদের মাছ ধরার নৌকা মেরামত করেছেন।
ইমাম হোসেন ব্যাপারী (৬২) নামে এক জেলে জানান, নদীতে লুকানো চর থাকায় ইলিশের আনাগোনা কমে গেছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়তে পারে।
এর আগে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে গত ১ মার্চ থেকে দুই মাসের জন্য ইলিশ ধরা, বিক্রি, মজুদ ও পরিবহনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী- ছয়টি জেলার ইলিশের অভয়ারণ্য এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান
ফরিদপুরে ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছাচ্ছে মাছ
কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় প্রাণিজ আমিষের চাহিদা নিশ্চিতকরণে ফরিদপুরে ভ্রাম্যমাণ নিরাপদ মাছ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ফরিদপুর মৎস্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সুপরিকল্পিত সামাজিক সংস্থা ও চোকদার ফিশারিজ এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে বাড়িতেও মাছ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ
চোকদার ফিশারিজের স্বত্তাধিকারী এ এস এম জুনায়েদ জুয়েল জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জনসমাগম এড়াতে এবং ঘরে বসে সাধারণ মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে মৎস্য অধিদপ্তরের ও সুপরিকল্পিত সামাজিক সংস্থার সহযোগিতায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন তারা।
তিনি জানান, ভ্যান ও ইজিবাইকের মাধ্যমে প্রতিটি মহল্লায় গিয়ে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও কেউ মাছ ক্রয় করতে চাইলে আমাদের মোবাইল নম্বর - ০১৭২৯-০৩৫৮৮৩ এ যোগাযোগ করলেই আমরা তার ঠিকানায় মাছ পৌঁছে দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: যশোরের অভয়নগরে দুর্বৃত্তদের দেয়া বিষে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে
জুয়েল জানান, এ উদ্যোগে শহরের মানুষের মাঝে ভালো সারা পাওয়া গেছে। দেশি শিং মাছ, রুই, কাতলা, পাঙ্গাশ, পাবদা, চিংড়ী, বাটা, টেংড়া সহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।
ফরিদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা মৎস্য অফিসের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণভাবে মাছ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মাছ চাষিদের উৎসাহিত করে তাদের মাধ্যমেই মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।’
করোনায় মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তার মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ড. মো. নাজমুল হাসানের (৫৩) মৃত্যু হয়েছে।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২০ শুরু ২১ জুলাই
‘মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি করি, সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ২১ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২০ পালিত হবে।