পাহাড় ধস
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে বাবা ও মেয়ের মৃত্যু, আহত ২
চট্টগ্রাম মহানগরীতে পাহাড় ধসে বাবা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২ জন। রবিবার (২৭ আগস্ট) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে পাচঁলাইশ থানার ষোলশহর এলাকার আই ডব্লিউ কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- কলোনির বাসিন্দা কালা মিয়ার ছেলে মো. সোহেল (৩৫) ও তার মেয়েশিশু বিবি জান্নাত (৭)।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নুরে আলম আশিক জানান, সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে পাহাড় ধসে আহত ২ জনকে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার পর চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা থেকে অপহৃত কিশোরের লাশ চট্টগ্রামে উদ্ধার
এদিকে ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল থেকে জানা যায়, সকালে নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় একটি কলোনিতে পাহাড় ধসের ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ চালায়।
একটি বসত ঘরে ঘুমন্ত সদস্যদের উপর পাহাড় ধসে পড়ে। এতে আহত ৪ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বাস ধাক্কায় গৃহবধূ নিহত
চকরিয়ায় পাহাড় ধসে ভাই-বোনের মৃত্যু
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পাহাড়ধসে দুই সহোদর ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৭ আগস্ট) বিকাল সোয়া ৪টার দিকে বরইতলী ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সবুজপাড়া এলাকার নাজিম উদ্দিনের সন্তান মোছাম্মদ তাবাচ্ছুম (১) ও মোহাম্মদ সাবিদ (৫)।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক কাইছার হামিদ বলেন, নাজিম উদ্দিনের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। দীর্ঘ সাত থেকে আট বছর ধরে মাটির ঘর তৈরি করে সেখানে বসবাস করছিলেন নাজিম।
আরও পড়ুন: পাবনায় ‘অবৈধ বালুর স্তুপে’ চাপা পড়ে ২ শিশুর মৃত্যু
বিকালে বাড়িতে তার দুই শিশু ঘুমাচ্ছিল। নাজিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী বাড়ির উঠানে কাজ করছিলেন। এ সময় পাহাড় ধসে পড়লে ওই দুই শিশু মাটির নিচে চাপা পড়ে। স্থানীয় লোকজন মাটি সরিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, শিশু দুটির লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে অতি বৃষ্টিতে ঘরের দেয়াল ধসে শিশুর মৃত্যু
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে মা-মেয়ে নিহত
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে পাহাড় ধসে দুইজন নিহত হয়েছে। এঘটনায় আরও চার জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-৯ এই ঘটনা ঘটে।
উদ্ধারকাজ চলায় তাদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পরীর পাহাড়ে ধস ও ফাটল, পরিদর্শনে বিশেষজ্ঞ দল
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, পাহাড় ধসের খবর পেয়ে ক্যাম্পে নিয়োজিত পুলিশ নিহতদের উদ্ধার কার্যক্রম করছে। তাদের পরিচয় এখনো মেলেনি। তারা সম্পর্কে মা-মেয়ে।
তিনি আরও বলেন, মূলত টানা বর্ষণের কারণে এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
কক্সবাজারে পাহাড় ধসে শিশুর মৃত্যু
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পাহাড় ধস, ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চবি কর্মচারী মো. হানিফ আহত হন।
এদিকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে একই পরিবারের ৪ সদসস্যকে জীবিত উদ্ধার করেন।
সোমবার (৭ আগস্ট) ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহী কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে শিশুর মৃত্যু
পাহাড় ধসে পড়া বাড়িটিতে থাকতেন মো. হানিফ নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের এক কর্মচারী।
এ সময় হানিফ ও তার স্ত্রীসহ দুই ছেলে-মেয়ে বাড়ির দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন। পরে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টির কারণে ভোরের দিকে প্রায় ৩০০ ফুট দূর থেকে একটি বড় গাছসহ পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। এতে কাঁচাপাকা বাড়িটির দুই পাশের দেয়াল ভেঙে যায়।
হানিফ বলেন, ভোর রাতে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে মাটি ধসে পড়ে। আমরা সবাই চাপা পড়ি। রাত থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। ভোর রাতের দিকে হঠাৎ দেয়াল এসে আমাদের গায়ের ওপর পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ভোর রাতে অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ঘরের দেয়াল ভেঙে একজনের মাথা ফেটে গেছে।
তিনি আরও বলেন, তাদেরকে আগেও মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছিল। তাছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানিয়েছি।
শিগগিরই সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরে আসবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ে ২৫০ পরিবার
চট্টগ্রামে টাইগার পাসে পাহাড় ধসে রাস্তা বন্ধ, মাইক্রোবাস আটকা
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ে ২৫০ পরিবার
চট্টগ্রামে ২ দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়গুলোতে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নিজে উপস্থিত থেকে শনিবার (৫ আগস্ট) রাতে নগরীর আকবরশাহ এলাকার বিজয়নগর ও ঝিল পাহাড়গুলোতে অভিযান চালিয়ে ২৫০টি পরিবারকে দু’টি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠান।
অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক, স্টাফ অফিসার টু ডিসি প্লাবন কুমার বিশ্বাস ও আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২ দিন ধরে চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মানুষের জানমাল রক্ষার্থে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম মহানগরে ৬টি সার্কেলের মাধ্যমে ভাগ করে পাহাড় রক্ষায় ও মানুষের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। প্রতিদিন মাইকিং থেকে শুরু করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানী ঠেকাতে খোলা হল ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড়ে যাতে মানুষের আর প্রাণ না দিতে হয় সে জন্যে কাজ করছি। মাইকিং থেকে শুরু করে সকলকে সচেতন করার লক্ষে প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের টিম কাজ করছে। আজকেও আমি নিজে ঝুকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ২৫০ পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তাদের জন্য শুকনো খাবার থেকে শুরু করে প্রতি বেলার খাবারের ব্যবস্থা করেছি। চট্টগ্রামের সকল পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত পরিবারকে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গত কয়েকদিন আগে বেলতলী ঘোনায় পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বসবাসরতদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যারা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা ও নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পাহাড় রক্ষায় জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছে। যারা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রামুতে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৪ জন নিহত
সাজেকে পাহাড় ধস, সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর যানচলাচল স্বাভাবিক
সাজেকে পাহাড় ধস, সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর যানচলাচল স্বাভাবিক
রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে নন্দারাম নামক স্থানে অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল। সেনাবাহিনীর সহায়তায় যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার।
অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসে সাজেক-খাগড়াছড়ি প্রধান সড়কে পাহাড়ের বেশ বড় অংশ ধসের কারণে সকাল থেকে যানচলাচল বন্ধ হয়। প্রধান সড়কের ওপর পাহাড় ধসের ঘটনায় রাস্তার দুই পাশে আটকা পড়ে কয়েক হাজার পর্যটক। মঙ্গলবার রাতে ভারী বৃষ্টির কারণে এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পরই সড়ক থেকে মাটি সরাতে সকাল থেকে সেনাবাহিনী কাজ শুরু করে। প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা পর সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করে সেনাবাহিনী।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ন দেব বর্মন জানান, সকালে পাহাড় ধসের ঘটনা আমরা জানতে পেরেছি। সাজেক এলাকায় প্রায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুইশ গাড়ি রয়েছে। যা মঙ্গলবার এসেছিলো। বুধবার সকালে অনেকের চলে যাওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু পাহাড় ধসের কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় সবাই আটকা পড়ে। দুপুরের দিকে যানচলাচল স্বাভাবিক হলে গাড়ি ছাড়তে শুরু করে। আমাদের এখানে ১১২টি কটেজ আছে। সব মিলে প্রায় চার হাজার পর্যটক থাকতে পারেন।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ২ শ্রমিক নিহত
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার জানান, সাজেকে পাহাড় ধসের কারণে দুই পাশে প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক আটকা পড়ে। পরে সেনাবাহিনীর ২০ ইসিবি’র সদস্যদের সাথে স্থানীয়রা মাটি সরানোর কাজে নেমে পড়ে। দুপুর আড়াইটার দিকে মাটি সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এখন কোনো সমস্যা নেই। বর্তমানে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
উল্লেখ্য, টানা ৯ দিনের ছুটির কারণে সাজেকে বাড়তি পর্যটকের চাপ রয়েছে। বর্তমানে সেখানে দুই হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন। আরও তিন হাজার পর্যটক প্রবেশ করছে বলে স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান।
আরও পড়ুন: পাহাড় ধসের আশঙ্কা: সরিয়ে নেয়া হচ্ছে রাঙ্গামাটিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাবাসীকে
কক্সবাজারে পাহাড় ধসে শিশুর মৃত্যু
কক্সবাজারে পাহাড় ধসে শিশুর মৃত্যু
কক্সবাজারের মহেশখালীতে রবিবার রাত ৯টার দিকে অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত রবিউল হোসেন (৫) উপজেলার কালারমারছড়ার গোরা পুছুনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকালে বৃষ্টির সময় খেলতে গিয়ে শিশুটি নিখোঁজ হয়। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজার পর রাত ৯টার দিকে স্থানীয় এক শিশুর দেখিয়ে দেয়া স্থানে পাহাড় ধসের মাটি সরিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই জানান, ধসে পড়া পাহাড়ের মাটির নিচ থেকে একটি শিশু মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
পড়ুন: কক্সবাজার পাহাড়ে ১২ হাজার পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস
কক্সবাজার পাহাড়ে ১২ হাজার পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস
কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে ১২ হাজারের বেশি পরিবার। কক্সবাজার ‘পাহাড় ধস প্রবণ’ জেলা হওয়ায় প্রতিবছর পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ে। গত বছরও জেলায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়। ঝুঁকিপূর্ণ বসতির কারণে এবারও মৃত্যুর আশংকা করছেন পাহাড়ে বসবাসকারীরা। তবে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণ হলে পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেয়া হবে।
উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বাদ দিয়ে কক্সবাজার জেলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ১২ হাজারের বেশি পরিবার পাহাড়ের তলদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এর মধ্যে অতিঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে প্রায় ৫ হাজার পরিবার।
কক্সবাজার শহর ও শহরতলিতে প্রায় ৭ হাজার পরিবার ও জেলায় বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় আরও ৫ হাজার পরিবার পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। পাহাড়ে হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থাকার কারণে পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে।
কক্সবাজার শহর ও শহরতলির লাইট হাউজ, সৈকত পাড়া, সার্কিট হাউস সংলগ্ন, মোহাজের পাড়া, দক্ষিণ ঘোনারপাড়া, বাদশাঘোনা, বৈদ্যঘোনা, মধ্যম ঘোনারপাড়া, পাহাড়তলি, কলাতলী আদর্শগ্রাম, ঝরিঝরিকুয়া, সদর উপজেলা অফিস সংলগ্ন, লিংকরোড পাহাড়ি এলাকায় হাজার হাজার পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।
পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানী ঠেকাতে খোলা হল ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানী ঠেকাতে খোলা হল ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র
চট্টগ্রামে লাগাতার বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যুর পর প্রাণহানির ঠেকাতে খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বা পাহাড়ের ওপর বসবাসকারীরা যাতে সরে গিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সে জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, কাট্টলী ও চান্দগাঁও সার্কেলে এসব আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার প্লাবণ কুমার বিশ্বাস।এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায় আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা ও রাত ৩টার দিকে ফয়েস লেকের বিজয় নগর এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন নারী-পুরুষ নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যার্তদের জন্য ১৯৯ আশ্রয়কেন্দ্র
পাহাড় ধসের আশঙ্কা: সরিয়ে নেয়া হচ্ছে রাঙ্গামাটিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাবাসীকে
রাঙ্গামাটি জেলায় গত কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার রাত ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করে সেখান থেকে সাধারণ মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে নির্দেশনা দেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বেশ কিছু লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন।
এই সময় তার সঙ্গে রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের টিম, রেড ক্রিসেন্ট, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণের ফলে সম্ভাব্য পাহাড় ধসের প্রাণহানী ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জরুরি সভা করেছি এবং রাঙ্গামাটি শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে সচেতনতা মূলক প্রচারণা ও মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে এবং বৃষ্টি হলেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় গিয়ে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
জেলা প্রশাসক বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত রাঙ্গামাটি শহরের লোকনাথ মন্দির, শিমুলতলি, রূপনগর, মোনঘর এলাকাসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শহরে ২৮টি ঝুকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।