ইউএনডিপি
জ্বালানি খাতে সবুজ রূপান্তর সংলাপে ইউএনডিপির শুভ্চ্ছোদূত
বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর শীর্ষক সংলাপে যোগ দিয়েছেন সুইডেনের রাজকন্যা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র শুভেচ্ছাদূত ভিক্টোরিয়া।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ঢাকায় ইউএনডিপি ও সুইডেন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর ত্বরান্বিত করা: টেকসই আগামীর জন্য সরকারি-বেসরকারি-উন্নয়ন সহযোগিতা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজি অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এ সংলাপ আয়োজন করা হয়।
টেকসই উন্নয়ন বলবৎ রাখার যৌথ প্রয়াস হিসেবে, এই সংলাপে সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থার মূল অংশীজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
গত বছরের অক্টোবর থেকে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ু মোকাবিলায় এসডিজির পক্ষে বৈশ্বিক জনমত তৈরির উদ্দেশ্যে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া। এই সংলাপে তার উপস্থিতি পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার গুরুত্বকেই আরও জোরদার করে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তরে বেসরকারি খাতের ভূমিকার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা মাসরুর রিয়াজ।
জ্বালানিখাতে সবুজ রূপান্তরের জন্য চালিকা শক্তি, চ্যালেঞ্জ ও কৌশলগুলো নিয়ে ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানের তত্ত্বাবধানে সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার যৌথ সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক সুইডিশ মন্ত্রী ইয়োহান ফরসেল, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মদির এবং ‘এসবিকে টেক ভেঞ্চারস’-এর প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির।
বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে সালমান এফ. রহমান বলেন, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা রয়েছে, আর এতেই স্পষ্ট হয় টেকসই পরিবেশ ও নিরাপত্তাকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়। টেকসই পণ্যের জন্য অবশ্যই বেশি বিনিয়োগ করতে হবে এবং ক্রেতাদেরও বাড়তি মূল্য পরিশোধের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে।
সুইডিশ মন্ত্রী ইয়োহান ফরসেল বলেন,‘এখানে প্রচুর পরিমাণে বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে এবং আমরা যদি এর কিছু শতাংশ দারিদ্র্যদূরীকরণে ব্যয় করতে পারি তবে এটি একটি বিশাল প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে। বাংলাদেশে আমাদের ৫০টিরও বেশি সুইডিশ কোম্পানি কাজ করছে। আমি মনে করি এটা বেশ ভালো একটা খবর কিন্তু আমাদের সামনে আরও ভালো কিছু করার সম্ভাবনা আছে।’
বাংলাদেশে সুইডিশ কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোও সুইডেন ও ইউরোপে বিনিয়োগ করবে। এই অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত জায়গায় নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উলরিকা মদির বলেন, ‘উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সত্যিই অসাধারণ। তাছাড়া, বাংলাদেশকে এমন কিছু সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে যার জন্য আদতে তার নিজের জনগণ দায়ী নয়। আর এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা প্রয়োজন পারস্পরিক সংহতি, কারণ কিছু সমস্যা সবাইকে একসাথে সমাধান করতে হবে। আমাদের একে অন্যের কথা শুনতে হবে, নিজ নিজ আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করতে হবে এবং সবাই নিজ নিজ অঙ্গীকারকে কার্যকর করতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্য উভয়ের জন্য আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সমাধানে পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।
বেসরকারি খাতের দায়িত্ব সম্পর্কে সোনিয়া বশির কবির বলেন, ‘বাংলাদেশে বেসরকারি খাতকে উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তা অবশ্যই নীতিমালা মেনে। অন্যান্যদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আমাদের বেসরকারি খাতকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
আলোচনা সভায় সরকার ও উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি এইচএন্ডএম, গ্রামীণফোন, এরিকসন, ম্যারিকো, ইউনিলিভার, ভলভো, অ্যাটলাস কপকো এবং স্ক্যানিয়ার মতো বিভিন্ন বেসরকারি খাতের কোম্পানির প্রতিনিধিরা ছিলেন।
আরও পড়ুন: খুলনা-চট্টগ্রামে জলবায়ু সহনশীল উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত
খুলনা-চট্টগ্রামে জলবায়ু সহনশীল উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও অভিযোজনে ইউএনডিপির গৃহীত কর্মসূচিগুলো পর্যবেক্ষণ করতে খুলনা এবং চট্টগ্রাম সফর করেছেন জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া।
মঙ্গলবার সুইডেন সরকার ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে গৃহীত ইউএনডিপির প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করেন ক্রাউন প্রিন্সেস।
এছাড়াও স্থানীয়ভিত্তিক জীবিকার সমাধানগুলোকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীলতার মডেলগুলো পর্যবেক্ষণ করেন ক্রাউন প্রিন্সেস।
খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে সুইডিশ সরকারের সহায়তায় ইউএনডিপি ও ইউএনসিডিএফের জলবায়ু অভিযোজন কর্মসূচিগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়াও, ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই ডিজিটাল পরিষেবা সরবরাহ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন এবং টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে স্থানীয় কমিউনিটির জনসাধারণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষ, বিশেষত নারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: খুলনায় পোস্ট অফিসের স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট উদ্বোধন করেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলে পাড়ায় নারীদের নেতৃত্বে নির্মিত জলবায়ু সহনশীল বাসস্থানগুলো ঘুরে দেখেন ক্রাউন প্রিন্সেস। ইউএনডিপির সহায়তায় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তির আওতায় নির্মিত একটি বাঁধ প্রাচীরসহ জলবায়ু মোকাবিলায় নির্মিত বেশকিছু স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
এরপর স্বল্প সময়ের জন্য চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে যান সুইডিশ রাজকন্যা। সেখানে তিনি নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন এবং নারী ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে উদ্ভাবনী প্রশিক্ষণ কোর্সসহ ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় সুইডিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মোদের, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী জোহান ফরসেল, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে।
আরও পড়ুন: খুলনার কয়রায় সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
সুইডিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের এই সফরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং লিঙ্গ সমতাকে এগিয়ে নিতে পারষ্পরিক সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাগুলোর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। যা বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে জলবায়ু সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কমিউনিটি গড়ে তোলায় ইউএনডিপির সংকল্পকেই পুনর্ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভাসানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এখন ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারে।
তিনি ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে ইউএনডিপির সহায়তা কামনা করেন।
চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছান প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। এ সফরের অংশ হিসেবে কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রিন্সেস বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।
দু'দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সুইডেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান নগণ্য হলেও দেশটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে।
স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো গৃহহীন মানুষ যাতে না থাকে সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর করে দিচ্ছে।
এ ছাড়া তার সরকার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা ১৯৬৯ সালে তার প্রথম সুইডেন সফরের কথা স্মরণ করেন, যখন তার স্বামী পড়াশোনার জন্য সেখানে ছিলেন।
আরও পড়ুন: উপকূলীয়দের জীবনমান দেখতে মঙ্গলবার খুলনায় আসছেন সুইডেনের রাজকন্যা
ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসের নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত রাষ্ট্রদূত মুহিত
২০২৪ সালের জন্য ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসের নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত।
জাতিসংঘের সদরদপ্তরে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সদস্য রাষ্ট্রগুলো কলম্বিয়া, জার্মানি, রোমানিয়া ও ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রদূতরা নির্বাহী বোর্ডের সহসভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের সভাপতির পদ গ্রহণ করল।
বোর্ডের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসের কাজে আরও অবদান রাখতে সক্ষম হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য সংস্থাগুলোর সুনির্দিষ্ট স্বীকৃতি রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ এই তিন সংস্থার অন্যান্য বোর্ড সদস্য এবং নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে এবং তাদের কৌশলগত দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম হবে।
আরও পড়ুন: পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে চীনের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন
উদ্বোধনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুহিত তাকে সভাপতি নির্বাচিত করায় নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসকে বিশ্বব্যাপী জনগণের ক্ষমতায়ন এবং তাদের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, মহামারি এবং চলমান মানবিক ও জলবায়ু সংকটের কারণে জাতিসংঘের উন্নয়ন এজেন্ডা যে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসকে নতুন ও বহুপক্ষীয় পুনপ্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে এবং সব অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সম্পৃক্ততার মাধ্যমে আরও ভালো কাজ করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাহী বোর্ড সেসব সংস্থাকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং সংস্থান সরবরাহ করতে প্রস্তুত থাকবে, যাতে তারা এই জাতীয় সমস্ত প্রচেষ্টায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।’
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপিত
জাতিসংঘের প্রতি বাংলাদেশের আস্থা ও বিশ্বাসের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উদ্ভাবনী উপায়ে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে বাংলাদেশের অনন্য সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ রাষ্ট্রদূত মুহিত বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
২০২২ সালের জুলাই মাসে স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এই মিশনে যোগদানের পর থেকে রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতিসংঘ শান্তিপ্রতিষ্ঠা কমিশনের চেয়ারম্যান, ইউএন-উইমেন নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি এবং ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসের নির্বাহী বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৯৩ সালে সাধারণ পরিষদের রেজুলিউশনের মাধ্যমে ৩৬ সদস্যের সমন্বয়ে ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসের নির্বাহী বোর্ড গঠিত হয়।
নির্বাহী বোর্ড ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি ৪৮ সদস্যের গভর্নিং কাউন্সিল পুনর্বিন্যাস করে।
ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএসের কার্যক্রমের জন্য সাধারণ পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের সামগ্রিক নীতি নির্দেশিকা এবং জাতিসংঘ সনদে নির্ধারিত দায়িত্ব অনুযায়ী আন্তঃসরকারি সহায়তা প্রদান ও তদারকির জন্য দায়বদ্ধ নির্বাহী বোর্ড।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের প্রত্যাশা পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলায়নি: যুক্তরাষ্ট্র
দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে একত্রে কাজ করবে চীন-ইউএনডিপি
ঢাকা শহরের দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে একত্রে কাজ করবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ।
জীবিকার সুযোগ বাড়াতে এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সোমবার (১৩ নভেম্বর) বনানীর কড়াইল বেদে বস্তিতে সেলাই মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে ১৪২৫টি অটোমেটিক সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
এই উদ্যোগটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) সম্পর্কিত উৎপাদন সক্ষমতা জোরদার করার বিষয়ে চীন-ইউএনডিপি সাউথ-সাউথ ও ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
সেলাই মেশিন বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই ইয়াও ওয়েন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি জনাব স্টেফান লিলার।
স্থানীয় জনগণের উদ্দেশে মেয়র আতিক বলেন, ‘শহরের দরিদ্র অধিবাসীদের; বিশেষ করে নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা এমন একটি শহর তৈরি করতে পারি, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না এবং সবার জীবনেই পরিবর্তন আসবে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসি মেয়র হিসেবে আমি বলব, ইউএনডিপি ও চীন দরিদ্রদের দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে যে কাজ করছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।’
আরও পড়ুন: ইউএনডিপি-এসএমই ফাউন্ডেশনের সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন তার বক্তব্যে বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়নে চীন-ইউএনডিপি’র এই সহযোগিতামূলক সম্পর্কের ইতিবাচক প্রভাব প্রত্যক্ষ করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। অটোমেটিক সেলাই মেশিনের বিতরণ অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা সৃষ্টিতে এবং টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে আমাদের যৌথ অঙ্গীকারের একটি নিদর্শন এবং যা টেকসই পরিবর্তনের পেছনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বকে আরও একবার জানান দেয়।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার তার বক্তব্যে বলেন ‘ইউএনডিপি’র বৈশ্বিক উদ্যোগসমূহকে সফল করার ক্ষেত্রে অনেকদিন ধরেই চীন আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের শীর্ষ ২০টি সহায়তাকারী দেশের মধ্যে চীন অন্যতম। চীনসহ অপরাপর সহায়তা প্রদানকারী দেশগুলোর সমর্থনেই আমরা বিশ্বব্যাপী ১৭০টি দেশে আমাদের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিচ্ছি। আমরা চীনের এই সমর্থনকে সাধুবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র চীনের ভূখণ্ডেই নয়, বরং সাউথ-সাউথ সহযোগিতা বিনিময় প্রকল্পের আওতায়ও আমরা চীনের সহযোগিতায় বিভিন্ন দেশে, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং নগদ অর্থ প্রদানের মত কাজ করছি। ঠিক যেমনটা আজ আমরা এই কড়াইল বস্তিতে নারীদের মধ্যে অটোমেটিক সেলাই মেশিন বিতরণ করলাম। আমরা চীনের এই অব্যহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।’
চীন থেকে প্রাপ্ত মোট ১৪২৫টি অটোমেটিক সেলাই মেশিন ১২৪৫ জন ব্যক্তি এবং ছয়টি সমবায়ের কাছে হস্তান্তর করেছে ইউএনডিপি।
এই মেশিনগুলো বিতরণের উদ্দেশ্য হলো সেলাইয়ের কাজে নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নারীরা যেন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে এবং তৈরি পোশাক খাতের কর্মী হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারে।
অটোমেটিক সেলাই মেশিন পাওয়া শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এই নারীরা মনে করেন, এখন তারা তাদের স্বপ্ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে ইউএনডিপি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমঝোতা চুক্তি
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে ইউএনডিপি’র ‘ক্লিক ফর ওয়াইল্ডলাইফ’ প্রচারাভিযান
ইউএনডিপি-এসএমই ফাউন্ডেশনের সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশে উদ্যোক্তা উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশন।
বুধবার দুপুরে ঢাকায় এসএমই ফাউন্ডেশন এর কার্যালয়ে ইউএনডিপি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি ভ্যান গুয়েন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান সমঝোতা স্মারকে সই করেন। আরও পড়ুন: দ্বিতীয়বার ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হলেন জয়া আহসান
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউএনডিপি জানায়, এই সমঝোতা স্মারক এর আওতায় দুই সংস্থা যৌথভাবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে উদ্যোক্তা বিশেষত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তারা বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করবে।
এছাড়া উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি বিষয়ক বিভিন্ন কর্মশালা এবং সেমিনারের আয়োজন করবে।
বাংলাদেশে উদ্যোক্তা বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত, পুনরুদ্ধার ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার অগ্রগতি সাধন করাই এই অংশীদারিত্বের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই খাত একটি বড় ভূমিকা পালন করছে এবং এই অংশীদারিত্ব এ খাতের প্রবৃদ্ধিকে আরও জোরদার করবে।
ভ্যান নুয়েন বলেন, ‘বাংলাদেশে শিল্পোদ্যোগ এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন এর সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এই সমঝোতা নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অধিক সুযোগ সৃষ্টি, আর্থিক খাত ও ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং গ্রামাঞ্চলে এসএমই পরিষেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সাহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন: ডিজিটাল লাইব্রেরি অ্যাপ চালু করল ইউএনডিপি
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘এই অংশীদারিত্বের উদ্দেশ্য হলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদান এবং বাংলাদেশে উদ্যোক্তা বান্ধব পরিবেশকে শক্তিশালী করা। এই অংশীদারিত্ব আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ও রপ্তানিমুখী দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যা আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা করবে এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মর্যাদা রক্ষায় অবদান রাখবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মাসুদুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান, জাতীয় প্রকল্প স্বপ্ন এর পরিচালক কাজল চ্যাটার্জি, এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের উইং প্রকল্প, জেন্ডার টিম লিডার শারমিন ইসলাম, উইং প্রকল্প ন্যাশনাল কনসালটেন্ট সারাহ জিতা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে ইউএনডিপি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমঝোতা চুক্তি
বাংলাদেশের তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে ইউএনডিপি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমঝোতা চুক্তি
বিশ্বায়নের এই যুগে ইংরেজি ভাষার ওপর আরও দক্ষতা বাড়াতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল সোমবার (১৯ জুন) ইউএনডিপি ঢাকা অফিসে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যার মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় ও বৈশ্বিক চাকরির বাজারে তরুণদেরকে তৈরি করা।
এই চুক্তিটি 'ফিউচারনেশন' এর আওতায় বাস্তবায়ন হবে। ফিউচারনেশন দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সরকার, বেসরকারি খাত ও উন্নয়ন খাতের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। যেটি ইউএনডিপি, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও গ্রামীণফোনের একটি যৌথ উদ্যোগ।
ইংরেজি যোগাযোগের বৈশ্বিক ভাষা হিসেবে পরিচিত।
কর্মসংস্থানের সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য এবং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অপরিহার্য।
ইংরেজি ভাষাশিক্ষা প্রদানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের রয়েছে ৪০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ইউএনডিপি এর ফিউচারনেশন বাংলাদেশের তরুণদের কর্মক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজ করবে।
এই যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল, গ্লোবাল সিটিজেনশিপ, প্রশিক্ষণ এর একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল লাইব্রেরি অ্যাপ চালু করল ইউএনডিপি
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার চুক্তি স্বাক্ষর কালে বলেন, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং ইউএনডিপির এই যৌথ উদ্যোগ শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে পথচলার একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।
উভয় পক্ষের শক্তি, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে সমন্বিত করে, আমরা আরও বড় ফলাফল নিয়ে আসতে পারব এবং কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারব বলে আমি আশা করি।
এই চুক্তির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো, যৌথ ভাবে তরুণদের জন্য ব্যবহারিক ইংরেজি ভাষার ওপর কোর্স তৈরি করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করা।
পাশাপাশি তরুণদেরকে জলবায়ু কার্যক্রম, ব্যবসা ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে সম্পৃক্ত করা এবং সমাজের উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারাভিযান করা।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর টম মিশশা বলেন, আমরা ইউএনডিপির ফিউচারেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পেরে আনন্দিত। মানুষকে পরিবর্তন করার পেছনে শিক্ষার যে শক্তি তা কাজে লাগিয়ে আমরা সারাদেশে তরুণদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করব এবং তাদের উদ্যোক্তা বা চাকরির সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলব বলে আশা রাখি।
বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ইংরেজি, শিক্ষা এবং শিল্প সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস এবং যোগাযোগ বাড়াতে ব্রিটিশ কাউন্সিল সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউএনডিপি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের এই যৌথ উদ্যোগ ভবিষ্যতে আরও অনেক বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং মতবিনিময় করার সুযোগ তৈরি করবে।
সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একসাথে কাজ করে যাওয়াই দুই পক্ষের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে ইউএনডিপি’র ‘ক্লিক ফর ওয়াইল্ডলাইফ’ প্রচারাভিযান
তরুণদের অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরিতে কাজ করবে ইউএনডিপি-গ্রামীণফোন
ডিজিটাল লাইব্রেরি অ্যাপ চালু করল ইউএনডিপি
বাংলাদেশে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) মঙ্গলবার ‘ইউএনডিপিবিডি ই-লাইব্রেরি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে। যাতে যেকোনো হাতে বহনযোগ্য ডিভাইসে এক জায়গায় সব ডিজিটাল রিসোর্সে তাৎক্ষণিক অ্যাক্সেস করা যায়।
ইউএনডিপি অনুসারে বর্তমানে এটিতে প্রায় ২০০টি ই-বুক রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নিন: ডিএসসিসি মেয়র
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘আমাদের জীবনের এমন কোনো দিক নেই যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়নি।বাংলাদেশে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছি শুধুমাত্র আমাদের অনেক প্রোগ্রাম ডেলিভার করার জন্যই নয় বরং আমাদের অংশীদারদের এবং যে সম্প্রদায়গুলোতে আমরা কাজ করি তাদের কাছে আমাদের অ্যাক্সেসযোগ্য করে তুলতে। এই ই-লাইব্রেরি এমন একটি উদ্যোগ যা ছাত্র, শিক্ষক এবং গবেষকসহ সকলের জন্য বিস্তৃত সম্পদ সরবরাহ করে।’
বর্তমানে, ইউএনডিপি ই-লাইব্রেরি অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যায় এবং শিগগিরই এটি অ্যাপল স্টোরে পাওয়া যাবে। ডিজিটাল লাইব্রেরি ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীদের একবার সাইন আপ করতে হবে।
আরও পড়ুন: অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে পর্যাপ্ত অনুদান দেবেন প্রধানমন্ত্রী: ডিএসসিসি মেয়র
আগামী বর্ষায় ১৫ মিনিটে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হবে: ডিএসসিসি মেয়র
দ্বিতীয়বার ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হলেন জয়া আহসান
আগামী দুই বছরের জন্য জনপ্রিয় অভিনেত্রী, প্রযোজক এবং উন্নয়ন কর্মী, জয়া আহসান জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত হিসেবে পুনরায় নিযুক্ত হয়েছেন। যা এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।
জয়া আহসান ২০২২ সাল থেকে গত এক বছর ধরে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেছেন এবং আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ইউএনডিপির সঙ্গে কাজ করবেন।
আরও পড়ুন: শেষ হলো জয়া আহসানের প্রথম বলিউড সিনেমার শুটিং
ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হিসেবে এই দুই বছরে তিনি মূলত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি-২০৩০ অর্জনে সবার সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবেন।
জয়া আহসান বলেন, ‘আমি পুনরায় ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত হতে পেরে একদিকে যেমন আনন্দিত, আরেকদিকে ইউএনডিপির সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করতে পারব ভেবে নিজেকে সম্মানিত মনে করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি এসডিজি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সক্রিয় থাকব।’
জয়া আহসান আরও বলেন, ‘এসডিজি অর্জনের জন্য মাত্র সাত বছর বাকি আছে। আমাদের এ পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে তোলার জন্য এটাই উপযুক্ত সময়। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করতে হলে নাগরিক হিসাবে আমাদের প্রত্যেককে আমাদের নিজেদের ভূমিকা পালন করতে হবে|’
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, জয়া আহসান শুধু একজন জনপ্রিয় শিল্পী নন, পাশাপাশি সমাজ উন্নয়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, এমন একজনকে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হওয়াতে আমরা সৌভাগ্যবান।
লিলার আরও বলেন, গত এক বছরে তার মাধ্যমে আমাদের কথা দেশ ও দেশের বাইরে মানুষকে আরও বেশি করে পৌঁছানো গেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারব এবং যা একটি সুন্দর, সুখী এবং সবার জন্য সমান একটি পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন: ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হলেন জয়া আহসান
জাতিসংঘের ৩ সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত মুহিত
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২০২৩ সালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
সংস্থা তিনটি হচ্ছে- জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএফপিএ) ও প্রকল্প পরিষেবার জন্য জাতিসংঘের অফিস (ইউএনওপিএস)।
এটি বাংলাদেশকে বোর্ডের অন্যান্য সদস্য ও জাতিসংঘের এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে এবং তাদের কাজের জন্য কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করতে সক্ষম করবে।
মঙ্গলবার কেনিয়ার রাষ্ট্রদূত বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হন। অন্য সহ-সভাপতিরা হলেন কোস্টারিকা, ইউক্রেন ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ছে: রাষ্ট্রদূত মুহিত
রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতিসংঘ পিস বিল্ডিং কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং গত বছর ইউএন উইমেনের নির্বাহী বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ ও ইউএনওপিএস’র টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে জাতিসংঘের উন্নয়ন এজেন্ডাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য নির্দিষ্ট ম্যান্ডেট রয়েছে।
ইউএনডিপি দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নের ওপর প্রাথমিক ফোকাসসহ জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থা।
ইউএনএফপিএ জনসংখ্যা ও পরিবার পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখভাল করে। অন্যদিকে ইউএনওপিএস শান্তি, উন্নয়ন ও মানবিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে।
আরও পড়ুন: ভিয়েনায় এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের সভাপতি হলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত
শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদকে ব্রিফ করলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত