সোলার প্যানেল
বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ এবং সম্পর্ক গভীর করতে আগ্রহী চীন
চীন বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় তার দেশ।
নিউইয়র্ক সময় বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইড লাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ বিষয়ে জানান।
আরও পড়ুন: প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে কানাডা: ড. ইউনূসকে জাস্টিন ট্রুডো
বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, 'বাংলাদেশে সোলার প্যানেল উৎপাদনে যদি চীনা বিনিয়োগ আসে তাহলে এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে কারণ এটি একটি বিশাল বিনিয়োগ এবং এটি বিপুল কর্মসংস্থানের সৃষ্টিতে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই বিনিয়োগ থেকে লাভবান হবে এবং বাংলাদেশ হবে সোলার প্যানেলের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ।
চীন বাংলাদেশের সঙ্গে 'সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব' জোরদার করতে চায় বলে জানান প্রেস সচিব।
'চীনা জনগণের পুরনো বন্ধু' হিসেবে বর্ণনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আপনার ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আপনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন।’
ওয়াং ই আরও বলেন, বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে চীনা প্রস্তুতকারকদের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বানকে চীন গুরুত্ব দেবে।
গত মাসে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি এ আহ্বান জানান।
বেইজিং দুই দেশের কোম্পানিগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করবে বলে জানান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সব পণ্যে শূন্য শুল্ক সুবিধা দেওয়া নিয়ে চীনের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশও লাভবান হবে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কের ‘নতুন অধ্যায়’ শুরু করতে প্রধান উপদেষ্টাকে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মারাত্মকভাবে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার জন্য চীনের রেড ক্রস চিকিৎসকদের একটি দল পাঠিয়েছে।
চীন বাংলাদেশ থেকে আরও শিক্ষার্থীকে স্বাগত জানাবে বলে উল্লেখ করেন ওয়াং ই।
চীনের এই আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক ইউনূস। কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে চীনের 'বিস্ময়কর' প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন তিনি।
তিনি বলেন, চীনা সোলার প্যানেল কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বড় আকারে বিনিয়োগ করতে পারে, যা অনেক ধনী দেশের বাজারে প্রবেশাধিকারের সুযোগ করে দেবে।
এসময় অন্যান্য চীনা নির্মাতাদের বাংলাদেশে তাদের কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
এছাড়াও তিনি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে 'নতুন অধ্যায়ের' শুরুর বিষয়ে জোর দেন।
পাশাপাশি দুই দেশের কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা চীনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে পছন্দ করব। আমাদের একসঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সংস্কার এজেন্ডা এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে আইএমএফ: অধ্যাপক ইউনূসকে জর্জিয়েভা
২ মাস আগে
অতিরিক্ত দাবদাহে যেভাবে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখবেন
গ্রীষ্মকালসহ অন্যান্য উষ্ণ ঋতুগুলোতে বহুতল আবাসিক এলাকায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে একদম উপরের তলার বাসিন্দারা। রোদের প্রখর তাপ সরাসরি ঘরের ছাদে পড়ায় তাপ জমে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা অস্বস্তিকরভাবে বেড়ে যায়। বৈশ্বিক উষ্ণতার ধারাবাহিকতায় চলমান গরমের অবিরাম প্রতাপ থেকে ছাদকে রক্ষা করা এখন আর ঐচ্ছিক বিষয় নেই। বাইরের তাপ থেকে গা বাঁচিয়ে ঘরের ভেতর থাকার জন্য ছাদকে ঠান্ডা রাখা এখন আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন, তীব্র গরম আবহাওয়াতে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখার উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
গ্রীষ্ম ও অন্যান্য উষ্ণ মৌসুমে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখার ১০টি টিপ্স
ছায়াদানকারী উঁচু দেওয়াল বা নেট স্থাপন
খুব ঘন উপাদান সম্পন্ন কংক্রিটে তৈরি হওয়ায় ছাদের স্ল্যাবগুলো খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য তাপ ধরে রাখে। এই তাপ পরিবাহিত হয় নিচের ফ্ল্যাটগুলোর প্রতিটি কক্ষে। তাই স্ল্যাব পর্যন্ত যেন সূর্যালোক পৌঁছাতে না পারে, তার জন্য উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে ছাদে ছায়ার ব্যবস্থা করা। এর ফলে নিদেনপক্ষে ছায়াযুক্ত জায়গাগুলো আশেপাশের স্ল্যাবগুলো থেকে অনেক কম গরম থাকে।
এই ছায়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে ছাদের সীমানার ধার ঘেষে উঁচু দেয়াল বা নেটের মাধ্যমে। এই নেট বা দেওয়াল বিভিন্ন নকশা দিয়ে আকর্ষণীয় করা যায়। সুতরাং ছায়াদানকারী এই স্থাপনা শুধু তাপ নিয়ন্ত্রণই করে না, সেই সঙ্গে দালানের সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি করে। তবে এখানে খেয়াল দেওয়াল বা নেটে হালকা রঙ দেওয়া হচ্ছে কি না সেদিকে দৃষ্টি রাখা উচিৎ।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
ছাদে বাগান করা
বিভিন্ন ধরনের ফুল-ফল ও শাক-সবজির গাছ দিয়ে সাজানো বাগানে তৈরি হয় সবুজ ছাদ। এই সবুজ ছাদ নিচের ফ্ল্যাটকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে ছায়া দেয়। উদ্ভিদগুলো নিজেদের খাবার প্রক্রিয়ার কাজে সূর্যের আলো শুষে নেওয়ার কারণে ছাদের পৃষ্ঠসহ আশেপাশের বায়ুর তাপমাত্রা উভয়ই হ্রাস পায়। এতে করে ছাদের আর্দ্রতা অপসারিত হয়ে ছাদ ও নিজের ঘরের পরিবেশ সহনীয় অবস্থায় থাকে।
৭ মাস আগে
সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাসা-বাড়িতে সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব।
তিনি বলেন, যে কোন প্রতিষ্ঠান বা বাসা-বাড়ি তাদের সোলার প্যানেল ব্যবহার করে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করলে মোট বিদ্যুৎ খরচ ২০ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। আপনি যে সোলার প্যানেল ব্যবহার করবেন আপনার ভবনে, সেখান থেকে যেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হবে তা আমাদের দিয়ে দেবেন। সেটি যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। আর আপনার মোট বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে সেই পরিমাণ বিদ্যুতের বিল মাইনাস করা হবে। এতে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব।
বৃহস্পতিবার ‘লেটস টক অন গ্রিন ট্রানজিশন’- অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সোলার প্যানেল স্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেই সোলার প্যানেলগুলো স্থাপিত হয়েছে তার ৫০ শতাংশ খরচ সরকার প্রদান করেছে। বাকি ৫০ শতাংশ আবার ব্যক্তিগত লোন হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদান করছে। অর্থাৎ সোলার প্যানেল অতি স্বল্প খরচে ব্যবহার করা সম্ভব।
নসরুল হামিদ বলেন, রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পর জার্মান তার ২৫ শতাংশ গ্যাস বিতরণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। বিকল্প জ্বালানি খুঁজছে সবাই। বিশেষত সামনের শীতের জন্য। একই অবস্থা যুক্তরাজ্যের। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ১২-১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকতো। সেখান থেকে সাময়িক সমস্যার জন্য এখন কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। অর্থাৎ প্রাথমিক ধকল সামলে উঠেছি আমরা। ২০০৯ সালে আমরা স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি বিদ্যুৎ খাত নিয়ে। সম্প্রতি জাপানের সহায়তায় আমরা আরেকটি পরিকল্পনা করছি।
নসরুল হামিদ বলেন, আসলে আগে যেই নতুন প্রযুক্তি আসতে কয়েক দশক লেগে যেতো, এখন কয়েক মাসের মধ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। আর এ কারণেই আমরাও তা ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট, এরপর হাইড্রোজেন প্লান্ট- সামনে হয়ত নতুন আরও কিছু আসবে। সেটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশও গ্রিন সাসটেইনেবল এনার্জি ব্যবহার করতে চায়। আর এ ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় ইলেকট্রিক যানবাহন বা ই-ভিয়েকেল। নসরুল হামিদ বলেন, এরই মধ্যে ই-ভিয়েকেলের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপনের কাজ করছি আমরা। এটি দুর্দান্ত একটি বিষয় হবে। আপনি যেই পথ পাড়ি দিতে ৮০ টাকা খরচ করতেন, সেই পথ পাড়ি দিতে ১০ টাকা খরচ হবে।
আরও পড়ুন: সৌরবিদ্যুতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমি: নসরুল হামিদ
ই-ভিয়েকেল নিয়ে সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করছে বলে জানান তিনি।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্ব দেয়া উচিত পাবলিক পরিবহনগুলোকে। বিশেষত বাস, ট্রেন এবং কারগুলো যেন ইলেক্ট্রনিক হয়। একবার ভেবে দেখুন, কি পরিমাণে সাশ্রয় হবে।
এদিকে দূষণ হ্রাসের জন্য পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যবহার করলে তার বর্জ্যের কী হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে হাসতে হাসতে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, দেখুন পরমাণু কেন্দ্রের জ্বালানি যারা সরবরাহ করবেন, তারাই বজ্র নিয়ে যাবেন। এমনভাবেই চুক্তিটি হয়। সুতরাং এটি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
এ সময় নসরুল হামিদ আরও বলেন, আমাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেজ এমাউন্ট যেন গ্রিন নির্ভর হয় সেই চেষ্টা করছি আমরা। অর্থাৎ বর্তমানে আমাদের বেজ ১২ হাজার মেগাওয়াট। ধীরে ধীরে এটি আরও বাড়ানো হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য ৯ আগস্ট একটি বড় দিন বলে মন্তব্য করেন নসরুল হামিদ।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে দেশের পাঁচটি গ্যাস ক্ষেত্র ব্রিটিশ সেল কোম্পানির কাছে ছিল। তখন বঙ্গবন্ধু এই গ্যাস ক্ষেত্রগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত করতে চেয়েছিলেন। প্রায় চার বিলিয়ন পাউন্ড অর্থ ব্যয়ে সেটি সম্পন্ন করেন তিনি। তার এই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে ৪০০ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি সহায়তা করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে।
৭২এর সংবিধানের ১৬ নং অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে শহরের সুবিধা গ্রামে নিয়ে যেতে হবে। পৃথিবীর কোন সংবিধানে এভাবে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার কথা বলা নেই। ২০০৯ সালে ১৩-১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং থেকে রক্ষা পেতে শর্টটার্ম, মিডটার্ম এবং লংটার্ম প্লান করি। ভবিষ্যতের জ্বালানি ক্ষেত্র কী হতে পারে, তা আমরা যাচাই করছি। জাপান এ ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ম. তামিম, ইয়ুথ এনভারমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভলোপমেন্ট সোসাইটি (ওয়াইইএসডিএ)-এর প্রেসিডেন্ট রেবেকা সুলতানা এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. তানভীর হাসান।
সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সোলার প্যানেল ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করছে বলে জানান লেটস টক অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান।
আলোচকেরা আরও জানান, বাতাসের এনার্জি ব্যবহার করে, বায়ো গ্যাস এবং আরও বিকল্প উৎস সন্ধানে কাজ করে যাচ্ছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যখন বিশ্ব জ্বালানি ব্যবস্থা টাল-মাটাল, তখন সরকারের বর্তমান উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।
এ সময় তারা বলেন, যে কোন কাজের ফলাফল পেতে সময় লাগে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলমান জ্বালানি সংকটের ছোঁয়া বাংলাদেশেও লেগেছে। এক্ষেত্রে আগে থেকে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব ছিল কিনা এমন এক প্রশ্ন তুলে ড. ম. তামিম বলেন, বলতে পারেন এখন যেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, পাঁচ বছর আগে নিলে আমাদের বর্তমান গ্যাস সংকট থাকতো না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তখনো বৈশ্বিক এই সংকটের প্রভাব পড়ত। তবে সরকার যেই উদ্যোগগুলো গ্রহণ করেছে তার ফলাফল ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে।
সরকার এলএনজি আমদানি বেশি দামে আমদানি করায় জ্বালানি খাতে সংকট তৈরি হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য ‘মিক্সড সোর্স’ খুবই জরুরি। আর এ কারণেই এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। আপনার হাতে যত বেশি অপশন থাকবে, সিদ্ধান্ত নেয়া তত সহজ হবে।
তরুণরা যাতে দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে আলোচনা করতে পারেন এবং নিজেদের ভাবনা ও সমস্যাগুলোর কথা নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য সিআরআই ২০১৪ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজন করে আসছে ‘লেটস টক’। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদকে নিয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার লেটস টক আয়োজন করা হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আয়োজন করা হয় ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের সংকট বেশিদিন থাকবে না: নসরুল হামিদ
গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান নসরুল হামিদের
২ বছর আগে
কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে অর্থ সহায়তার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশের কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তায় বিশ্ব ব্যাংকসহ বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার স্থানীয় সময় বিকালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ‘ডায়ালগ অন প্রসপেক্ট অব সোলার পাওয়ার্ড ইরিগেশন টু ইনহেন্স ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ইন দ্য এগ্রিকালচার সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
সেচ কাজে ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু সহিষ্ণু, ব্যয় সাশ্রয়ী,পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে দেশে-বিদেশে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। প্রতি বছর দেশে সেচের জন্য এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল চালিত পাম্প ব্যবহার হচ্ছে। এতে বছরে ডিজেল চালিত সেচ পাম্পে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি ডিজেল ব্যবহার হচ্ছে। ডিজেল চালিত সেচ পাম্পকে সোলার প্যানেলে পরিণত করা গেলে বছরে সাশ্রয় হবে এক লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল।
মন্ত্রী বলেন, ডিজেল চালিত পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়ানো গেলে একদিকে পরিবেশ রক্ষা পাবে অন্যদিকে দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে এবং কার্বন নিঃসরণ কমবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি
তিনি বলেন, ডিজেল চালিত পাম্প মাঝে মাঝে নষ্ট হয়। এ জন্য কৃষককে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে তা মেরামত করতে হয়। কিন্তু একটি সোলার প্যানেল নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২০ বছর ব্যবহার করা যাবে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন,ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষয়-ক্ষতি কমানোর প্রক্রিয়ার মতোই ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেচ পাম্পে ডিজেলের পরিবর্তে সোলার প্যানেল ব্যবহার গুরুত্ব দিয়ে এর ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইটকল সেচে সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ করে আসছে। সরকারি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ৪৪৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৭৮৯টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্রেটিজিক অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করে কাজ করে আসছে। এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকি নিরসনে এই অ্যাকশন প্ল্যান বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্ব রোল মডেল।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সমূহের অনুদান, সহজ ঋণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সফলভাবে এক হাজার ৫১৫টি সৌর চালিত পাম্প স্থাপন করেছে ইটকল। ইটকলের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: জলবায়ু তহবিল পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো দেশে সৌর সেচ কর্মসূচি বাড়ানোর জন্য অর্থ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানির দক্ষতার উন্নয়নে ইটকলের অর্জন বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিশ্রুতি অর্জনে একটি সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবে। আমাদের এনডিসি প্রতিশ্রুতি কেবল কার্বন নিঃসরণ কমাতেই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। জীবনের জন্য আমাদের বিনিয়োগ, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সবুজ প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।
ইটকলের আয়োজনে ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল। এছাড়া বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, বিশ্বব্যাংক,জ্যাইকা,এডিবি,ইউএসএআইডি,ইউএনডিপি,জিইএফসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি বৃন্দ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সহনশীলতা বাড়াতে সহায়তা দিতে আগ্রহী অস্ট্রেলিয়া
৩ বছর আগে
স্থানীয় পরীক্ষাগারগুলোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকায় সমস্যার মুখে সৌর শিল্প
স্থানীয় পরীক্ষাগারগুলো আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত না হওয়ায় নিজেদের পণ্য রপ্তানি এবং প্রকল্পগুলোতে তা সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় সমস্যায় রয়েছেন দেশের সোলার প্যানেল প্রস্তুতকারীরা।
৪ বছর আগে