দাকোপ
খুলনায় বাঁধ ভেঙে দুই উপজেলা প্লাবিত
খুলনায় বেড়িবাঁধ ভেঙে দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে খুলনা নগরীর অধিকাংশ রাস্তা।
খুলনার দাকোপ উপজেলায় শিবসা নদীর তীব্র স্রোতে পানখালী বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের।
একই সময় পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগর এলাকায় ওয়াপদার বাঁধ ভেঙে কালিনগর, হরিণখোলা, দারুণমল্লিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা করার উপায়
এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ২২ নম্বর পোল্ডারের কালিনগর বাওয়ালী বাড়ির দক্ষিণ পাশের পূর্বের আম্ফানের ভাঙনের দক্ষিণের প্রায় ৩০০ ফুটের বেশি এলাকা জুড়ে ওয়াপদার রাস্তা অতি জোয়ারের পানিতে ভেঙে যায়।
ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ার পাশাপাশি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের, তলিয়ে গেছে বীজতলাসহ ফসলি জমি।
সন্ধ্যার মধ্যে পুরো ২২ নম্বর পোল্ডার প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এলাকাবাসী বাঁধ মেরামতের কাজ করলেও বিপদের শঙ্কা দূর হচ্ছে না। প্রবল স্রোতের কারণে বিঘ্ন হচ্ছে বাঁধ মেরামতের কাজ।
খুলনা জেলা প্রশাসন বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে গতকাল সারা রাত বৃষ্টি হওয়ায় খুলনা মহানগরীর টুটপাড়া, বয়রা, নিরালা, মৌলভীপাড়া, বায়তি পাড়াসহ অধিকাংশ রাস্তা পানিতে ডুবে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ভেঙে গেছে কুমিল্লার গোমতী প্রতিরক্ষা বাঁধ
২ মাস আগে
খুলনার দাকোপে বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে এলাকাবাসী
খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার সংলগ্ন সড়কসহ কয়েকটি স্থানে নদীর তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙনের কারণে বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসীরা।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি এবং এলাকায় বিভিন্ন নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারণে সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে ভদ্রা নদীর তীরে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার সংলগ্নে ওয়াবদা রাস্তায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এলাকার মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোনো সময় ওয়াবদা রাস্তা ভেঙ্গে ভেতরে পানি প্রবেশ করে এলকার হাজার হাজার বিঘা জমির চলতি মৌসুমের আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে যাওয়াসহ পুকুরের মাছ ভেসে যেতে পারে এবং এলাকার মানুষের ঘরবাড়িতে পানি উঠতে পারে বলে তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান গাজী জালাল উদ্দীন জানান।
আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে গুরুত্বপূর্ণ পাগলার বাজার
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তৎক্ষণাৎ দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খানসহ নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তীকে মুঠোফোনে জনানো হয়েছে।
নির্বাহী অফিসার অফিসিয়াল কাজে বাইরে যাওয়ার কারণে ভাঙন এলাকা আজ পরিদর্শন করবেন উপজেলা চেয়ারম্যান, এমনটাই জানা গেছে।
এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি খবর পেয়েছি, অফিসিয়াল কাজে ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার কারণে এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোডের প্রকৌশলীসহ ডিজি মহোদয়কে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়েছে। আশাকরি উনারা তাড়াতাড়ি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: আবারও ভাঙন ঝুঁকিতে চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ
১ বছর আগে
খুলনায় বজ্রপাতে ৩ জন নিহত, আহত ৪
খুলনার দাকোপে পৃথক বজ্রপাতে তিনজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে। রবিবার সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে নিহতরা হলেন- তিলডাংগা ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ডের কাকড়া বুনিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল ছাত্তার শেখ এর ছেলে আজিজুল শেখ (৬২), সুতারখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কালাবগী গ্রামের কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে সুজিত মণ্ডল (৩৩) এবং পাইকগাছার খোরশেদ শেখ (৬০)।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দীন গাজী জানান, কাকড়া বুনিয়ায় আজিজুল শেখসহ তিন-চারজন একসঙ্গে মৎস্যঘেরের রাস্তায় মাটির কাজ করছিল। এমন সময় সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে হঠাৎ বজ্রপাতে মারা তিনি যান। তবে অন্যদের কোনো সমস্যা হয়নি।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে যুবক নিহত
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সুজিত মণ্ডলসহ চার থেকে পাঁচজন কালাবগী নদীতে মাছ ধরার জন্য জালপেতে অবস্থান করছিল। এমন সময় সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০ দিকে হঠাৎ বজ্রপাতে সুজিত মণ্ডল মারা যান। এ সময় আহত হন একই এলাকার মৃত মোমিন গাজীর ছেলে আনিস গাজী (৩৪), ইসমাইল, রিপন বৈদ্য, শাহারিয়া বেগম নামে মৎস্যজীবীরা। আহতদের স্থানীয় ডাক্তারের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানান।
অন্যদিকে, পাইকগাছা এলাকার মৃত রহিম শেখের ছেলে খোরশেদ আলম শেখ বাঁশ বিক্রি করার জন্য বটবুনিয়া নদীতে বাঁশের নৌকা নিয়ে অবস্থান করছিল। এমন সময় হঠাৎ বৃষ্টি ও ব্রজপাতের ঘটনায় সে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাকে দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথিমধ্যে খোরশেদ আলম শেখ মারা যায়।
দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) পাপিয়া সুলতানা বলেন, সকালে দাকোপের পৃথক তিনটি স্থানে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি।
দাকোপ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত শেখ শাহিনুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে আমাদের টিম পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় বজ্রপাতে ৪ জন নিহত
কিশোরগঞ্জের হাওরে বজ্রপাতে যুবক নিহত
১ বছর আগে
খোলা পানি বিক্রির দোকানে দীর্ঘ লাইন
খুলনা জেলার দাকোপে শুষ্ক মওসুমের শুরু থেকেই সুপেয় পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বিশুদ্ধ খোলা পানি বিক্রির দোকানেও পড়ছে দীর্ঘ লাইন। কিছু লোক আবার দূর-দূরান্ত থেকেও সংগ্রহ করছেন এই পানি। বাধ্য হয়েও কেউ কেউ ডোবা-নালার পানি খেয়ে ডায়রিয়াসহ পানি বাহিত নানা রোগে ভুগছেন।
সরেজমিন ঘুরে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা এই উপজেলা ৩টি পৃথক দ্বীপের সমন্বয় গঠিত। এর চারপাশে নদীতে লবণ পানির প্রচণ্ড চাপ থাকায় খরা মওসুমে সুপেয় পানির চরম সংকট দেখা দেয়। প্রতি বছরের মতো এবারও একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের সর্বত্রই সুপেয় পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে দুই লাখেরও বেশি মানুষ সুপেয় পানির জন্য হা-হুতাশ করছেন। এমনকি চায়ের দোকান, খাবার হোটেল, মিষ্টির দোকানে খরিদ্দারকে বিশুদ্ধ পানি দিতে না পেরে দোকানদাররা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।
আবার চলতি রবি মওসুমে এ অঞ্চলের প্রধান ফসল তরমুজ, বোরো ক্ষেতেও সেচ দিতে না পারায় গাছ মরাসহ ফল ভালো বড় না হওয়ার কারণে অনেক কৃষকের লোকসান হয়েছে। এখানে কোথাও গভীর নলকুপ সফল না হওয়ায় রয়েছে অগভীর নলকুপ যেগুলোর অধিকাংশই অকেজো। আবার কোন কোন নলকুপের পানিতে লবণ, আর্সেনিক এবং অতিরিক্ত আয়রনযুক্ত।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাবার পানি: দ. এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ৫ম, বিশ্বে ১২৮তম
এছাড়া এ অঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃস্টির পানিও নেই। যে কারণে এলাকার মানুষের খাবার পানির একমাত্র ব্যবস্থা পুকুরের পানি ফিল্টার করে খাওয়া। কিন্তু অপ্রতুল পুকুরগুলোতে পানি স্বল্পতার কারণে প্রায় সকল ফিল্টার বা পিএসএফগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এলাকার কতিপয় স্বচ্ছল ব্যক্তিরা বটিয়াঘাটা, খুলনাসহ বাহিরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি কিনে জীবন ধারণ করছেন। আর মধ্যবিত্ত এবং নিন্ম আয়ের মানুষ বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচাতে যে পুকুরে পানি আছে সেখান থেকেই সরাসরি পানি নিয়ে পান করছেন।
বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটের কারণে এই বৃহৎ জনগোষ্টিকে বাধ্য হয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার অনুপযোগী পানি খেয়ে জীবন ধারণ করতে হচ্ছে। এতে অনেকেই ডায়রিয়াসহ পানি বাহিত নানা রোগে ভুগছেন বলে জানা গেছে।
কালাবগি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নিমাই মন্ডলসহ আরও অনেকে জানান, প্রায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পথ নৌকায় যাওয়া আসা করে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন কৈলাশগঞ্জ এলাকা থেকে অতি কষ্টে বিশুদ্ধ পানি এনে খেতে হচ্ছে। আর যাদের ভাল অবস্থা টাকা পয়সা আছে তারা বাহিরে থেকে পানি কিনে খায়। আবার এলাকার কিছু অসহায় গরিব মানুষ সরাসরি পুকুরের খাবার অনুপযোগী পানি পান করছেন বলে তিনি জানান।
চালনা বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী সমরেশ মন্ডল বলেন, পানি সংকটের কারণে ক্রেতাদের পানি দিতে পারছি না। পুকুরের পানি খাবার অনুপযোগী হওয়ায় তা দিয়ে প্লেট ধোয়া পরিষ্কারের কাজ চলছে আর খরিদ্দারদের এক টাকারও বেশি দামে প্রতি লিটার পানি কিনে খেতে দিতে হচ্ছে। তার মতো চা দোকানদার মিলন মল্লিকও একই অভিমত ব্যক্ত করেন।
চালনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মেহেদী হাসান বুলবুল বলেন, সুপেয় পানি সংকট নিরসনে এ পৌরসভায় পানির প্রকল্পের আওতায় একটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টের কাজ শেষ হয়েছে। একইসঙ্গে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি পাইপ লাইনের কাজও শেষ হয়েছে। বর্তমানে সেটি পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে আর এই কাজ সম্পন্ন হলেই পৌর এলাকায় সুপেয় পানি সংকট অনেকটা নিরসন হবে বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা উপ-সহকারি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, বর্তমানে এখানে সুপেয় পানির আধারের মধ্যে ২৬৬৮টি রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং (ট্যাংকি), ২৭টি গভীর নলকূপ, ৫০০টি অগভীর নলকূপ সচল রয়েছে। এছাড়া সমগ্রদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের ২৩৪টি, উপকূলীয় জেলা সমুহে বৃষ্টির পানি সরবরাহ প্রকল্পের ৮৩৩টি ট্যাংকি, কমিউনিটি রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ২১টি, ১৮টি পন্ড আল্টা ফিল্টার, আরও প্লান্ট ২টি ও ১৫টি ভ্যাসেল টাইপ পিএসএফের কাজ চলমান রয়েছে। তাছাড়া কয়েকটি এনজিও কিছু পানির ট্যাংকি ও কয়েকটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট নির্মাণ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় রয়েছে অপ্রতুল। এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষ নিরাপদ সুপেয় পানির জন্য রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রচণ্ড তাপদাহ এবং খরার কারণে পানির চাহিদা তীব্র থাকে। এ অঞ্চলে তরমুজ চাষের সময়ও ব্যাপক পানির সংকট দেখা দেয়। উক্ত সময়ের জন্য ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুকুর, দিঘি খনন করা প্রয়োজন। এছাড়াও বিভিন্ন খাল খননের মাধ্যমে কৃষি জমিতে সেচ এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, পানি সংকট সমাধানের জন্য এ অঞ্চলে আরও অনেক বেশি রেইন ওয়টার হারভেস্টিং (ট্যাংকি) ও পুকুর খনন করা দরকার। একই সঙ্গে পানির জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণও করতে হবে।
এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান বলেন, এ উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। সে কারণে উপজেলা পরিষদ থেকে হতদরিদ্র পরিবারের জন্য পানির ট্যাংকি বিতরণ করার জন্য একটা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি যে সকল এলাকায় মোজা পুকুর ও খাল আছে তা পযার্য়ক্রমে খননের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সায়দাবাদ পানি পরিশোধন প্রকল্পের দূষণ প্রতিরোধে মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে: মন্ত্রী
১ বছর আগে
খুলনার দাকোপে ২৮৩ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি
শস্য ভান্ডার খ্যাত খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলা। গেল বছরের তুলনায় এখানে এ বছর কম জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। তবে তরমুজের ফলন কম হলেও দামে খুশি কৃষকরা। এখানকার তরমুজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে।
তরমুজের সঙ্গে অন্যান্য ফসল আবাদ করে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
দাকোপে এ পর্যন্ত ২৮৩ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে এলাকার হাজারো কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে বেড়েছে খুলনার দাকোপের তরমুজের চাহিদা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার গড় হিসাব মতে ২৮৩ কোটি ১৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রির সম্ভবনা। এ তরমুজ খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হচ্ছে।
দাকোপ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২০ হাজার ৮৮৩ হেক্টর চাষাবাদযোগ্য জমি রয়েছে। এর মধ্যে চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ছয় হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল সাত হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে।
এছাড়া বোরো ধান ৩৪০ হেক্টর, সূর্যমুখী ৩০৮ হেক্টর, ভুট্টা ২৮ হেক্টর, বাঙ্গি ২০ হেক্টর, তিল ৭ হেক্টর, মুগডাল ৮ হেক্টর, পাট এক হেক্টর, আদা ৪ হেক্টর, হলুদ ৮ হেক্টর ও অন্যান্য শাক-সবজি ২০৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আর পতিত রয়েছে ১৩ হাজার ৬৪১ হেক্টর জমি।
তবে প্রচণ্ড খরা ও বৃষ্টি না হওয়ায় পানির উৎস খাল ও পুকুরগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তরমুজ খেতে চরম সেচ সংকটে পড়েন এলাকার কৃষক।
চাষের মাঝের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় সেচ সংকট কিছুটা লাঘব হয়। এতে অল্প সংখ্যক কৃষকের লোকসান হলেও অধিকাংশই বাম্পার দাম পেয়ে হয়েছেন লাভবান।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুর্গম চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ, ভাগ্য পরিবর্তনের আশা
কৃষকদের অভিযোগ, স্থানীয় দালাল, ফড়িয়া ও পরিবহন সিন্ডিকেট, ফেরীঘাটে যানযটে ট্রাকের দীর্ঘ লাইন এবং ঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় না হলে আরও দাম বৃদ্ধি হতো বলে অনেকে মনে করেন।
কৈলাশগঞ্জ এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য কৃষক সিন্ধু রায় বলেন, তিনি ৯ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। এতে তার প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু তরমুজ চাষ শুরুর আগে এলাকার কতিপয় ব্যক্তি রাতের আঁধারে কয়েকটি সুইচ গেট দিয়ে লবণ পানি তুলে দেয়।
তিনি আরও বলেন, এতে জলাশয়গুলো লবণ-পানিতে সয়লাব হয়। ফলে মিষ্টি পানির অভাবে তিনি খেতে সেচ সংকটে পড়েন। পরবর্তীতে চাষের মাঝের দিকে বৃষ্টি হলে সেচ সমস্যা কিছুটা লাঘব হয়। যার কারণে তার খেতে তরমুজের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে এবং মোট পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন।
তবে বীজে অতিরিক্ত ভেজালের কারণে এবার তরমুজের আকার অনেক ছোট হয়েছে বলে তিনি জানান।
বটবুনিয়া এলাকার কৃষক প্রণব কবিরাজ জানান, তিনি ১৮ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেন। এতে তার সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা খরচ হয়। সেচের চরম সংকট এবং ভাইরাস লেগে সব গাছ মারা যায়।
কৃষি কর্মকর্তার মরামর্শ নিয়েও একটি গাছও বাঁচাতে পারেনি। তিনি এবার ব্যাপকভাবে লোকসানে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে.এম. মাকসুদুন্নবী বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার তরমুজের ফলন অনেক কম হয়েছে। কিন্তু সেচের মিষ্টি পানির সংকট থাকলেও এলাকার কৃষকরা দাম পেয়েছেন ভালো। তরমুজ বিক্রিও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তিনি আরও বলেন, তবে এ বছর আকার ছোট হলেও গড় হিসাব অনুযায়ী ২০ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার কেজি তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। গড়ে ১৪ টাকা কেজি ধরা হলে ২৮৩ কোটি ১৩ লক্ষ ৬০ হাজার আর বিঘা প্রতি ৬৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ইউটিউব দেখে ব্লাকবেরি তরমুজ চাষ করে সফল মনিরুল
১ বছর আগে
তীব্র গরমে বেড়েছে খুলনার দাকোপের তরমুজের চাহিদা
তীব্র তাপদাহের কারণে হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে খুলনার দাকোপের তরমুজের চাহিদা। আর তাই দামও বেড়ে গেছে। শেষ সময়ে এসে তরমুজ বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে খুলনার কৃষকেরা।
জানা যায়, অন্যান্য জেলার তরমুজ এর আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন দাকোপ উপজেলার তরমুজই ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। গরমে চাহিদা বাড়ায় তাই সবাই তাকিয়ে আছে দাকোপের তরমুজের দিকে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা অনেকেই দাকোপে গিয়ে তরমুজ কিনে আনছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর খুলনায় ১২ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দাকোপ উপজেলাতেই চাষ হয়েছে ছয় হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে।
তবে কৃষকদের অভিযোগ, চার মাস রোদে পুড়ে হাড় ভাঙা খাটুনি করে তারা যে মুনাফা করছে, তার থেকে তিনগুণ মুনাফা করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
নগরীর কদমতলা মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, সোমবার মাঝারি সাইজের তরমুজ গড়ে বিক্রি হয়েছে (১০০ পিস) ছয় হাজার টাকায়। অর্থাৎ ছোট-বড় সব তরমুজের গড় মূল্য প্রতি পিস ৬০ টাকা।
আরও পড়ুন: খুলনায় লবণাক্ত এলাকায় তরমুজের বাম্পার ফলন
মাত্র এক কিলোমিটার দূরে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে ভ্যান ও ফলের দোকানে সেই তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
কৃষকরা জানান, দুইভাবে তরমুজ বিক্রি হয়। ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীরা দাকোপে এসে মাঠ থেকে সরাসরি তরমুজ কেনেন। তারাই ট্রাকে করে তরমুজ নিয়ে যান। চলতি সপ্তাহে ছোট আকারের তরমুজ (তিন থেকে পাঁচ কেজি) প্রতি বিঘা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। একই তরমুজ গত বছর বিক্রি হয়েছে ৩০/৩৫ হাজার টাকা।
এছাড়া বড় আকারের (আট কেজির ওপরে) তরমুজ বিক্রি হচ্ছে এক লাখ টাকায়।
এছাড়া কিছু কৃষক নিজেই তরমুজ নিয়ে খুলনার কদমতলায় পাইকারি বিক্রি করেন। পাইকারি তরমুজ বিক্রি হয় পিস হিসেবে। ছোট আকারের তরমুজ (তিন থেকে পাঁচ কেজি) প্রতি বিক্রি সোমবার বিক্রি হয়েছে ৫০/৬০ টাকা পিস। এছাড়া বড় তরমুজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা পিস।
দাকোপ উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের কৃষক আজগর হোসেন জানান, শুরুতে প্রতি বিঘা ৪০/৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হবে বলে তারা আশা করেছিলেন। কিন্তু এখন দাম ৭০ হাজারের ওপর। এতে কৃষকেরা খুশি।
দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম মাকসুদুন্নবী জানান, ‘সোমবার পর্যন্ত আড়াই হাজার হেক্টর জমির তরমুজ বিক্রি হয়েছে। প্রতিদিন ৫০০/৬০০ হেক্টর জমির তরমুজ সংগ্রহ হচ্ছে। বেশিরভাগ তরমুজই ঢাকায় যাচ্ছে। ঈদের আগেই ৮৫ শতাংশ তরমুজ বিক্রি করা হবে।’
কৃষকদের অভিযোগ, তরমুজ বিক্রিতে বড় বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে পরিবহনে চাঁদাবাজি। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক তরমুজ পরিবহনের জন্য দাকোপ থেকে বিভিন্ন রুটে যাচ্ছে। প্রায় মোড়ে তারা চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও খুলনার চাষিরা হতাশ
খুলনায় তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের চোখে সোনালী স্বপ্ন
১ বছর আগে
সুন্দরবন ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ শুঁটকির ডিপো
সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে শুটকির (খটি) ডিপো। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী নালা থেকে বিষ প্রয়োগ করে মারা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছগুলোও শুকানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
৪ বছর আগে