ড. ইউনূস
এনসিপিসহ তিন দলের নেতাদের সঙ্গে আজ প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ রবিবার বিকেলে বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন। বৈঠকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বিএনপির সঙ্গে বৈঠক হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। তার আগে জামায়াতের সঙ্গে বিকেল সাড়ে ৪টায় এবং এনসিপির সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শুরু
শুক্রবার রাতে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের লাঠিচার্জে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আহত হওয়ার পর দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
৯৫ দিন আগে
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংলাপে যোগ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে এই সংলাপে যোগ দিতে কক্সবাজার পৌঁছান তিনি। এদিন ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়।
এতে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা স্মরণ দিবস’ উপলক্ষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
এ সময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে তাদের নিজ আবাসভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা যা করছি, তা অব্যাহত রাখতে হবে।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রথম দিনের কর্মসূচিতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এ সেশনে অংশ নেন। এতে আরও অংশ নেন কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে আসা রোহিঙ্গা প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা প্রবাসীরা।
সেশনটি পরিচালনা করেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ লাকি করিম, মোহাম্মদ রফিক (খিন মৌং) ও ওমর সালমা। এ সময় বক্তব্য রাখেন সয়েদুল্লাহ, ফুরকান মির্জা, আবদুল্লাহ, হুজ্জাউত উল্লাহ, সহাত জিয়া হিরো, আবদুল আমিন, জাইতুন নারা, জিহিন নূর, আবদুল্লাহ ও রো মুজিফ খান। রোহিঙ্গা প্রবাসীর সদস্যরাও আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের জন্য নির্ধারিত থাকায় অন্য অংশগ্রহণকারীরা কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে সংলাপে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত থমাস এইচ অ্যান্ড্রুজ সেশনে যোগ দেন। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন, সংবাদমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সেশনে অংশ নেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান এবং ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণ অধিকার পরিষদসহ প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এ সংলাপে অংশ নেন।
১০১ দিন আগে
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে সংলাপে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘স্টেকহোল্ডারস’ ডায়ালগে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে তিন দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। এতে প্রধান উপদেষ্টা যোগ দেবেন। সংলাপে যোগ দিতে ড. ইউনূস এরইমধ্যে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রথম দিনের কর্মসূচিতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশেষ ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য আস্থা গড়ে তোলার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এ সেশনে অংশ নেন। এতে আরও অংশ নেন কক্সবাজারের বিভিন্ন শিবির থেকে আসা রোহিঙ্গা প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা প্রবাসীরা।
সেশনটি পরিচালনা করেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ লাকি করিম, মোহাম্মদ রফিক (খিন মৌং) ও ওমর সালমা। এ সময় বক্তব্য রাখেন সয়েদুল্লাহ, ফুরকান মির্জা, আবদুল্লাহ, হুজ্জাউত উল্লাহ, সহাত জিয়া হিরো, আবদুল আমিন, জাইতুন নারা, জিহিন নূর, আবদুল্লাহ ও রো মুজিফ খান। রোহিঙ্গা প্রবাসীর সদস্যরাও আলোচনায় অংশ নেন। সেশনটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের জন্য নির্ধারিত থাকায় অন্য অংশগ্রহণকারীরা কেবল পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সুস্পষ্ট পথ দেখাবে জাতিসংঘ সম্মেলন, আশা অধ্যাপক ইউনূসের
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত থমাস এইচ অ্যান্ড্রুজ সেশনে যোগ দেন। এ ছাড়া ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন, সংবাদমাধ্যম, বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সেশনে অংশ নেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত সংস্থার প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান এবং ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণ অধিকার পরিষদসহ প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও এ সংলাপে অংশ নেন।
১০২ দিন আগে
সাগর-রুনির সন্তান মেঘের হাতে পূর্বাচলের প্লটের দলিল হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা
হত্যাকাণ্ডের শিকার সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির সন্তান মাহির সরওয়ার মেঘের কাছে পূর্বাচলে তিন কাঠা জমির দলিল হস্তান্তর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মাহির সরওয়ার মেঘের হাতে এই দলিল হস্তান্তর করেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাংবাদিক সাগর সরওয়ার এই প্লটটি ২০০৪ সালে আবেদন করে ২০০৫ সালে বরাদ্দ পান। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করার পরও বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এই প্লট সাগর সরওয়ারের পরিবারকে প্লটটি বুঝিয়ে দেয়নি।
উত্তরাধিকার সূত্রে এই প্লটের বর্তমান মালিক সাগর সরওয়ারের মা সালেহা মনির এবং মাহির সরওয়ার মেঘ।
প্লটের দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
তিনি বলেন, ‘তদন্তে এ ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে।’
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আলোচিত এই হত্যা মামলায় দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১২০ বার পেছানোর রেকর্ড
বৈঠকে উপস্থিত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগ বহু আলামত নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে বর্তমান তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এসময় মেঘ তার নিজের ডিজাইন করা এরা একটি জার্সি ও ব্যাগ প্রধান উপদেষ্টাকে উপহার দেন।
দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, ফরিদা আখতার ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম এবং মেহেরুন রুনির ভাই নওয়াজেশ আলম রোমান।
১০৫ দিন আগে
২৫ আগস্ট কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা কনফারেন্সে যোগ দিতে একদিনের সফরে কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু আবারও আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে কক্সবাজারে বড় পরিসরে রোহিঙ্গা কনফারেন্সের আয়োজন করা হচ্ছে। ২৪-২৬ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিন এ কনফারেন্স চলবে। প্রধান উপদেষ্টা ২৫ আগস্ট কনফারেন্সে যোগ দেবেন।
প্রেস সচিব জানান, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, দেশে ফেরত পাঠানো এবং আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রধান প্রধান সমস্যাগুলো কনফারেন্সে উঠে আসবে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
শফিকুল আলম আরও বলেন, 'এমন আরও দুটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে। সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখ জাতিসংঘে ১৭০ দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বড় পরিসরে কনফারেন্স হবে। এছাড়া কাতারের দোহায় আরেকটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হচ্ছে।'
কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে ৪০ দেশের প্রতিনিধি থাকবেন। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত ১০ দেশের রাষ্ট্রদূতেরা কনফারেন্সে অংশ নেবেন বলে জানান প্রেস সচিব।
১০৫ দিন আগে
অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় বিপুল অর্থ বিদেশ চলে যায়: ড. ইউনূস
অসংক্রামক রোগ হলে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ দেশের বাইরে চলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এসব রোগ যাতে না হয় কিংবা কম হয়, সে জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের একটি যৌথ ঘোষণাপত্র সই অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ হলে মানুষ উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়ের মুখোমুখি হতে বাধ্য হয়। কোনো ব্যক্তির ক্যান্সার হলে তার পরিবারকে আর্থিক সামর্থ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে হয় এবং প্রায় ক্ষেত্রেই সহায়হীন-সম্বলহীন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অতি উচ্চ মূল্যে চিকিৎসা নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। আমাদের বিপুল অঙ্কের টাকা চলে যায় বিদেশে এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে।’
‘তাই অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা যেমন উন্নত হওয়া জরুরি, তেমনি রোগগুলো যেন কম হয় অথবা না হয়, সে জন্য উপযুক্ত জনসচেতনতা এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করে তোলা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একার পক্ষে এটা সম্ভব নয়। এজন্য সব মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা দরকার। খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত—এমন প্রত্যেকটি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
‘প্রত্যেক খাত থেকে দরকার সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও নিবিড় উদ্যোগ। তাই এসব মন্ত্রণালয় চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবুও আমি যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে কয়েকটি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে চাই।’
আরও পড়ুন: পরিবেশবান্ধব চাষাবাদে মৎস্যখাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব: ড. ইউনূস
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি দরকার বেসরকারি উদ্যোগ। দরকার আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কারিগরি সহযোগিতা। আমি বিশ্বাস করি, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল প্রয়োগ করে এ সংক্রান্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে যৌথ ঘোষণা বাস্তবায়ন সহজ হবে।’
‘আশা করছি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয়গুলো সহযোগিতা করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।’
১০৬ দিন আগে
পরিবেশবান্ধব চাষাবাদে মৎস্যখাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা কেবল নদী শাসনের কথা বলি। নদী পালনের কথা বলি না। আমরা সব বর্জ্য নদীতে ফেলে দিয়ে পানিকে বিষাক্ত করে তুলছি, সেই বিষ এসে আমাদের শরীরে ঢুকছে।
এ সময়ে পরিবেশবান্ধব চাষাবাদের মধ্য দিয়ে মৎস্যখাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘মৎস্য খাতের অবদানের জন্য আমাদেরকে প্রকৃতি ও পানির প্রতি সদয় হতে হবে। প্রকৃতি-প্রতিবেশ নষ্ট হলে মাছ উৎপাদন একসময় বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণে এ খাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: নিজের নয়, জনগণের ইচ্ছায় ক্ষমতায় বসেছি: ড. ইউনূস
‘মাছ আমাদের প্রিয় খাদ্য। যারা এ খাদ্য উৎপাদনে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেন, আমরা তাদের মনে রাখি না। আমরা কেবল মাছটা সস্তা কিনা; টাটকা কিনা, সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। আজকে দিনটা তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। তারা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও বাছাই করা মাছগুলো টাটকা অবস্থায় পরিবেশনার করার জন্য ব্যস্ত থাকেন,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পদক দেওয়ার আগে তাদের একজনের কথাই শুনলাম। শিং মাছ বিক্রি করতে এসে গুলির সামনে পড়েছেন। সারারাত বেচারা মাছের পেছনে ছিলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন। এটা মাত্র একটি উদাহরণ।
তিনি বলেন, আমরা এত নির্দয় হচ্ছি, অন্যান্য জিনিসের মধ্যে মাছও বোধহয় আমাদের কপাল থেকে চলে যাবে। দুনিয়ার সব বর্জ্য আমরা পানিতে ফেলে দিই। আমাদের সবকিছু পানির দিকে দিয়ে দিচ্ছি। আমরা নদী শাসনের কথা বলি। কথার কথাই বলি হয়ত। নদী পালনের কথা বলি না।
‘আমাদের সব বর্জ্য পানিতে ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু এই বর্জ্য যে বিষ হয়ে আমাদের দিকে আসছে, সেটাও আমরা গ্রাহ্য করছি না। বর্জ্য ছাড়াও যত রকমের বিষ, শরীরের যত রকমের অনিষ্টকারী জিনিস আছে, সব পানির মধ্যে ঢালছি আমরা।’
অধ্যাপক ইউনূস মৎস্য খাতের অপার সম্ভাবনা, বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সুযোগকে কাজে লাগানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
১০৮ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়: প্রধান উপদেষ্টা
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তি সই উপলক্ষে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচক দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এই চুক্তিকে একটি ‘সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করে। এরপর বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এই নতুন শুল্ক ঘোষণার পর শুক্রবার (১ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে শুল্ক আলোচক দলকে অভিনন্দন অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তি করায় বাংলাদেশের শুল্ক নিয়ে আলোচকদের আমরা গর্বের সঙ্গে অভিনন্দন জানাই। এটি একটি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যাশিত হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণের মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও অগ্রগতিতে অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং অবিচল প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল। আজকের সাফল্য আমাদের জাতির দৃঢ়তা ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে আলোচকরা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন এবং শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক জটিল আলোচনার মধ্য দিয়ে সফলভাবে পথ অতিক্রম করেছেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলামের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকল। সেই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার আরও বাড়ল এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থও সুরক্ষিত হলো।
এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থানকেই শক্তিশালী করেনি বরং আরও বেশি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে যা ভবিষ্যতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়ী সমৃদ্ধির পথ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
১২৬ দিন আগে
অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার: ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নতুন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা ঘিরে তারা জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য কাজ করছেন, যা ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য’ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার, আমরা এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সব বাংলাদেশি শান্তিতে, গর্বের সঙ্গে, স্বাধীনতা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমাদের সংস্কার কর্মসূচির পাশাপাশি আমরা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের আইনি জবাবদিহির আওতায় আনতে কাজ করছি।
তবে ন্যায়বিচার কেবল শাস্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘ন্যায়বিচার মানে—রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যেন আর কখনো জনগণকে দমন, নিশ্চুপ বা ধ্বংস করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না হয়।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান, ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গত বছরের ঘটনাগুলো স্মরণ করতে গিয়ে আমরা তাদের কথা মনে করি—যারা এই স্বপ্নের জন্য জীবন দিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের পথ তৈরি করেছে। তারা একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করেছেন—যা আশাবাদ, মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
পড়ুন: দেশে জনগণের প্রতিনিধিত্বের সরকার খুবই জরুরি: মির্জা ফখরুল
জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন, ঢাকা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, যেখানে জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা, নাগরিক সমাজ, তরুণ প্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক অংশীদাররা অংশ নেন।
প্রধান উপদেষ্টার অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইআর) ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ঘটনাবলি নিয়ে একটি স্বাধীন তথ্য-অনুসন্ধান মিশন পরিচালনা করে।
এই মিশনের প্রতিবেদন ২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়, যেখানে বিস্তৃত তথ্য ও ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আমি জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানাই—আমাদের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে পাশে থাকার জন্য। আমি ভবিষ্যতেও এই অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে আশাবাদী।’
এই আয়োজন ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর তাৎপর্যের মুহূর্ত।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি ছিল এমন একটি মুহূর্ত, যখন হাজার হাজার নারী-পুরুষ—অধিকাংশই তরুণ—অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন এবং আমাদের দেশের মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ পুনরুদ্ধার করেছিলেন। তাদের সাহস কেবল আমাদের জনগণের হয়ে নয়, গোটা মানবতার পক্ষেই উচ্চারিত হয়েছে।’
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়—বিশেষত জাতিসংঘের অবিচল সমর্থনের কথা স্বীকার করেন, যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে রোহিঙ্গা সংকট এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের কঠিন সময়েও বাংলাদেশের পাশে ছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ সকল মানুষের অবিচ্ছেদ্য অধিকার রক্ষা ও সংজ্ঞায়নের উদ্যোগ নেয়—ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা মর্যাদা নির্বিশেষে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা আমাদের পৃথিবীর নৈতিক দিশারি হয়ে ওঠে, এবং এর মূলনীতি বাংলাদেশের সংবিধানেও দীর্ঘদিন ধরে অন্তর্ভুক্ত।’
পড়ুন: বিচার-সংস্কার, নির্বাচন পাশাপাশি হতে হবে: জামায়াত আমির
গত ১৬ বছরে এই অধিকার বারবার অস্বীকার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো দখল হয়ে যায়। স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। শাসনব্যবস্থায় সহিংসতা হয়ে ওঠে প্রধান অস্ত্র। গত জুলাইয়ে আমাদের সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাস্তবতাকে প্রত্যাখ্যান করেছে,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ স্পষ্টতা, সংকল্প ও অসাধারণ সাহসিকতার সঙ্গে নিজেদের অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে।’
গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পরপরই অধ্যাপক ইউনূস মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে ওএইচসিএইচআরকে স্বাধীন অনুসন্ধান পরিচালনার জন্য অনুরোধ জানান—এই সময়কাল ছিল ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট।
‘আমরা বিশ্বাস করতাম, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য সত্য-উদঘাটন শুধু ন্যায়বিচারের জন্য নয়, বরং নিরাময়ের জন্যও অত্যন্ত জরুরি।’
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হাইকমিশনারের প্রতিবেদনে এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা প্রকাশ পায়। যাতে দেখা গেছে, জুলাইয়ের কয়েক সপ্তাহেই আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সহিংসতা ছিল পদ্ধতিগত, পরিচালিত এবং পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থার সর্বোচ্চ স্তর থেকে সমন্বিতভাবে সংঘটিত। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এতে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের তাৎক্ষণিক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।’
এই অনুসন্ধানের তথ্য আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাও সমর্থন করেছে—যার মধ্যে বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদন উল্লেখযোগ্য।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা হাইকমিশনারের কার্যালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ—তারা কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘনকে নথিভুক্ত করেনি, বরং একটি বিস্তৃত সুপারিশমালা দিয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর কখনো না ঘটে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এসব সুপারিশ অন্তর থেকে গ্রহণ করেছি—অন্য কারো দায়ে নয়, নিজেদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে।’
সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস।
‘আমরা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছি এবং জোরপূর্বক গুম প্রতিরোধবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদে যোগ দিয়েছি। চলতি মাসেই আমরা ওএইচসিএইচআরের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছি, যাতে ঢাকায় একটি সহায়ক মিশন প্রতিষ্ঠা করা যায়,’ বলেন তিনি।
এই মিশন সংস্কার কর্মসূচিতে কারিগরি সহায়তা দেবে এবং মানবাধিকার রক্ষায় সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক সমাজকে সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে।
‘অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই জাতিসংঘ আমাদের রূপান্তর প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ তিনি বলেন, ‘আমি মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানাই—তার অবিচল সমর্থন ও সংহতির জন্য এবং এ বছরের মার্চে বাংলাদেশ সফরের জন্য।’
তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক, ওএইচসিএইচআরের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিম, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এবং মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খানকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান তাদের অসাধারণ ও ঐতিহাসিক অবদানের জন্য।
১২৮ দিন আগে
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: বিদেশি চিকিৎসক দলের প্রতি ড. ইউনূসের কৃতজ্ঞতা
সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারত থেকে আগত ২১ সদস্যের চিকিৎসক ও নার্সের একটি প্রতিনিধিদল রবিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময়ে দ্রুত সাড়া দিয়ে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য চিকিৎসক ও নার্সদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
এই আন্তর্জাতিক মেডিকেল টিম মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবা দিতে ঢাকায় অবস্থান করছে।
জাতীয় সংকটের সময়ে তাদের পেশাদারিত্ব, সহানুভূতি ও সংহতির প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
‘এই চিকিৎসক দল শুধু দক্ষতা নিয়ে আসেননি, তাদের হৃদয়ও সঙ্গে এনেছেন,’ বলেন অধ্যাপক ইউনূস। ‘তাদের উপস্থিতি আমাদের অভিন্ন মানবিকতা ও দুঃসময়ে বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের মূল্য নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়’।
এই আন্তর্জাতিক টিম স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে যৌথভাবে দিনরাত পরিশ্রম করে আহতদের— বিশেষ করে শিশুদের— জরুরি চিকিৎসা ও ট্রমা কেয়ার নিশ্চিত করছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি টিমগুলোর দ্রুত আগমনে কূটনৈতিক সমন্বয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাদের মিশনে সরকারের সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন।
তিনি এই চিকিৎসকদের বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকার অনুরোধ করেন, যেন মেডিকেল শিক্ষায় বিনিময়, প্রতিষ্ঠানিক সহযোগিতা এবং উদ্ভাবন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অব্যাহত অংশগ্রহণ বজায় থাকে।
পড়ুন: সৌদি আরবকে বাংলাদেশে উৎপাদন খাত গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, এ ধরনের অংশীদারিত্ব জনস্বাস্থ্য এবং জরুরি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম এই দুঃসময়ে সহায়তার জন্য বিদেশি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সৈয়দুর রহমান জানান, ‘বিদেশি চিকিৎসকরা দ্রুত সাড়া না দিলে অনেক জীবন রক্ষা করা যেত না।’
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের (এনআইবিপিএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এটি আবারও প্রমাণ করলো— চিকিৎসকরা সত্যিকার অর্থে সীমান্তহীন।’
সাক্ষাতে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রদূতও উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় মেডিকেল টিম জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশনায় তারা বাংলাদেশে এসেছেন এবং দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত পুনর্বাসনে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।
ভারতীয় মেডিকেল দলের প্রধান চিকিৎসক বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম কিংবা পুনর্বাসনে যেকোনো প্রয়োজনে ভারত সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যেকোনো গুরুতর রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ভারতে দ্রুত তা নিশ্চিত করা সম্ভব।’
ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এনআইবিপিএস-এর ব্যবস্থাপনা ও প্রটোকল পদ্ধতিতে ভারতীয় চিকিৎসকরা সন্তুষ্ট।
১৩০ দিন আগে