ড. ইউনূস
তরুণ জনশক্তিকে দক্ষ করতে দৃষ্টিভঙ্গি-নৈতিকতার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান ড. ইউনূসের
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন,আমাদের আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে যে, কীভাবে লাখ লাখ তরুণকে এমন একটি কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তোলা যায়- যেখানে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ, নৈতিকতাও কঠিন দক্ষতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা তারপরও ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রবাবে লাখ লাখ লোককে পুনরায় দক্ষ করার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হয়েছি।’
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ডি-৮ সেক্রেটারি জেনারেল অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
এখন মৌলিক এআই-ভিত্তিক সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সুবিধা আছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন আমরা একটি সহযোগিতামূলক শিক্ষা কর্মসূচি সম্পর্কে চিন্তা করি, যা আমাদের জাতীয় উদ্যোগের পরিপূরক হতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস কায়রো ঘোষণা এবং সম্মেলনের ফলাফল গ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো সমাধানে তাদের সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটান। সকলকে তাদের সম্মিলিত কর্মসূচিগুলোকে নতুন করে দেখার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
সামনে এগিয়ে যাওয়ার উপায় হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা দুটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের প্রস্তাব করেন।
ফলিত বিজ্ঞান বিষয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রথমত, আসুন আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকরী, প্রভাবিত সংযোগ তৈরি ও গভীর করি, বিশেষত ছেলে এবং মেয়েদের স্বার্থে তাদের উদ্যোক্তা হিসাবে প্রস্তুত করার দিকে মনোনিবেশ করি।’
ড. ইউনূস বলেন, উদ্যোক্তা ও উচ্চতর জ্ঞানকে বর্তমানের চেয়ে অনেক কাছাকাছি নিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ফলাফল ভিত্তিক জ্ঞানার্জন। যা ডি৮ দেশগুলোর তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক বাজারের নেতাদের কাছ থেকে বিশ্বব্যাপী সুরক্ষিত ব্যবসা এবং শিল্প তৈরি করতে পারে। যদি ডি-৮ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামোর দিকে নতুন করে নজর দিতে বলা হয়, তাহলে আমাদের তা করা উচিত।’
ড. ইউনূস বলেন, মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবসার পরিবর্তন কেবল মাত্র তাদের পেশা হবে না, বরং তারা নতুন সভ্যতা গড়তে সামাজিক ব্যবসায় জড়িত হবে।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, বহু বছর ধরে আমরা প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে আমাদের দেশগুলোতে লাখ লাখ লোককে মৌলিক শিক্ষা এবং দক্ষতা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘১২০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায়শই এটি একটি ক্রমবর্ধমান কঠিন কাজ। একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে আমরা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি।’
তিনি বলেন, তারা এমন এক সময়ে মিলিত হচ্ছেন যখন বিশ্ব নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ‘তারপরও অনেক সুযোগ আমাদেরও তাক লাগিয়ে দিচ্ছে।’
ড. ইউনূস বলেন, 'তরুণ ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ওপর আলোকপাত করা এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য আমাদের অভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যথাযথভাবে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।’
ডি-৮ দেশগুলোতে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে গড় মধ্যবয়সী (২৭ বছর) বেশি।
তিনি বলেন, প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। একটি বেসরকারি খাত চালিত অর্থনীতিতে, আমরা যখন তাদের বাজারের উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করি বা চটপটে উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশে উৎসাহিত করি, তখন আমরা দেখতে পাই যে প্রযুক্তির উত্থান কীভাবে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো তৈরি করছে যা আগে কখনও হয়নি।
আমাদের দেশে ম্যানুফ্যাকচারিং ল্যান্ডস্কেপে লাখ লাখ শ্রমিক রয়েছে যাদের সাধারণত কম দক্ষ।
আরও পড়ুন: সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
ড. ইউনূস বলেন, 'কিন্তু আগামীর উৎপাদন ও সেবা অর্থনীতি দ্রুত রূপান্তরিত হচ্ছে, যা মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ডেটা-চালিত সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনের উপর নির্ভর করে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি এখনও সমাজ ও অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তারা দেখতে পায় যে বেশিরভাগ ক্ষুদ্র কৃষকের সন্তানরা তাদের পিতামাতারা ঐতিহ্যের বিষয় হিসাবে যেভাবে গ্রহণ করেছিলেন সেভাবে তাদের জন্য কঠিন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রায়শই অনিশ্চিত কৃষিকাজ করতে খুব কমই আগ্রহী।
ড. ইউনূস বলেন, 'বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চল এমনকি এশিয়া, আফ্রিকা ও আরব বিশ্ব জুড়ে ভ্রমণ করে আমি দেখেছি আজকের লাখ লাখ তরুণ চারপাশের সবকিছুতে দ্রুত প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে গ্রহণ করছে। এটি হচ্ছে- হয় দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ ঘুরিয়ে দিতে অথবা নতুন নতুন সুযোগের সন্ধান করতে। এসব কয়েক বছর আগেও অনেকে অসম্ভব বলে মনে করত।
প্রায়শই, তরুণরা মাঠে অসহনীয় জলবায়ু চাপ মোকাবিলায় অদ্ভুত কল্পনা করছে।
ড. ইউনূস বলেন, 'আমি বিশেষ করে এটি গুরুত্ব দিচ্ছি যে, আমাদের কৃষি ও খাদ্য আমাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত করতে এবং আমাদের নিজস্ব সমাজে সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হচ্ছে।’
এর ফলে লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) তাদের বিবেচনায় আসে।
বেশিরভাগ এসএমই অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির মধ্যে সাফল্য লাভ করে। তারা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে বৃদ্ধি এবং সংযুক্ত হতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘প্রায়শই, তাদের আনুষ্ঠানিক কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক অর্থায়ন বা সমর্থন আর্কিটেকচারের সুবিধার অভাব রয়েছে এবং তারা বাজারের নিয়ম-অনুশীলন-মানগুলোর সঙ্গে অপরিচিত। তবুও, আমি দেখতে পাচ্ছি যে এসএমইগুলো কতটা আশ্চর্যজনকভাবে সক্ষম এবং প্রতিযোগিতামূলক।’
তিনি বলেন, ডি-৮ দেশগুলোতে সম্মিলিতভাবে তাদের যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে। এমনকি ব্যক্তিগত জনকল্যাণমূলক অবস্থায়ও এই অসংখ্য এসএমইর পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের সামান্য সমর্থন দিয়ে আমরা তাদের জন্য এবং আমাদের জনগণের জন্য একটি পুণ্যময় 'শুভ চক্র' গঠন করতে পারি। আমাদের উচিত ঝুঁকিমুক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে তাদের কাছে অর্থ প্রবাহের সুযোগ করে দেওয়া।”
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা যা আলোচনা করি তার বাইরে আমরা ডি-৮ সরকারগুলো, যুব সম্প্রদায় - স্টার্টআপ - ব্যবসা - অর্থের সঙ্গে জড়িত অকপট, ফলাফল-ভিত্তিক কথোপকথনের আয়োজন করি। দেখুন আমরা তাদের মধ্যে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারি কিনা। বাংলাদেশ এ ধরনের উদ্যোগ এগিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকবে এবং ২০২৫ সালে প্রথম মাল্টি-স্টেকহোল্ডারদের বৈঠক আহ্বান করুন।’
তিনি বলেন, যুব উদ্যোক্তাদের বিশ্ব হিসাবে 'কাজের ক্ষেত্র' যেভাবে দ্রুত বিকশিত হচ্ছে, ডি-৮ দেশগুলোকে তাদের ছেলে এবং মেয়েদের অর্থনীতির নেতা হওয়ার জন্য জায়গা তৈরি করতে 'শিক্ষা' পুনরায় উদ্ভাবন করতে হবে।
ইউনূস বলেন, 'আমাদের দেশে রয়েছে সুমহান ঐতিহ্য, প্রজ্ঞা ও অর্জন। আমাদের দেখতে হবে কীভাবে আমরা সেগুলো সন্নিবেশিত করতে পারি এবং তৈরি করতে পারি।বহু বছর ধরে আমাদের সঙ্গে থাকা ডিজিটাল বিপ্লবের পূর্ণ সুবিধা আমরা এখনও গ্রহণ করতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, 'এখন যেহেতু এআই এসেছে, আসুন আমরা চিন্তা করি, আমাদের উদ্যোক্তা ছেলে-মেয়েদের সুবিধার্থে লাফিয়ে বাধাগুলো দূর করতে পারি।’
আরও পড়ুন: সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি মাসেই ঘোষণার ইঙ্গিত ড. ইউনূসের
২ দিন আগে
সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের প্রতি একাত্তরের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ড. ইউনূস বলেন, ‘ইস্যুগুলো বারবার আসছে। আসুন আমরা এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করি।’
শাহবাজ শরীফ বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে, তবে 'যদি অন্যান্য অমীমাংসিত ইস্যু থেকে থাকে' তবে তিনি সেগুলো দেখতে পারলে তিনি খুশি হবেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবকিছুর সমাধান করতে পারলে ভালো হবে।’
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন।
বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দল বিনিময়ের মাধ্যমে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হন তারা।
আরও পড়ুন: ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশর পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
দুই নেতা চিনি শিল্প ও ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ও শরীফ সার্কের পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এটি প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ঘোষিত পররাষ্ট্রনীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই ড. ইউনূস 'প্রয়োজনীয় সংস্কার' শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের আগে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে তার সরকারের পরিকল্পনার কথাও বলেন।
তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে সংলাপের মাধ্যমে ঐকমত্য হওয়ার জন্য তিনি একটি গঠন কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
শরীফ বলেন, 'আমরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাই।’
তিনি সার্ক ও বাংলাদেশকে পুনরুজ্জীবিত করে আঞ্চলিক সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার উদ্যোগের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন।
'এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ বলেও শরীফকে জানান অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিসর গেলেন ড. ইউনূস
২ দিন আগে
ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশর পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় মিশরের রাজধানীতে পৌঁছেছেন।
কায়রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান মিশরের পাবলিক বিজনেস সেক্টর মন্ত্রী মোহাম্মদ শিমি।
পরে মন্ত্রীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে সকালে ড. ইউনূস তিন দিনের সফর করতে মিশরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিসর গেলেন ড. ইউনূস
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, ইরান ও পাকিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশের সরকার প্রধানরা ১৯ ডিসেম্বর এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।
৪ দিন আগে
নেচারের শীর্ষ ১০ ব্যক্তির তালিকায় ড. ইউনূস
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ২০২৪ সালে শীর্ষ ১০ ব্যক্তিত্বের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা নেচার।
প্রকাশনাটি সমাজে তার প্রভাবশালী অবদানের জন্য তাকে 'জাতি নির্মাতা' হিসাবে বর্ণনা করেছে।
নেচার শীর্ষ দশের তালিকায় গত এক বছরে বিজ্ঞানের মূল বিকাশ এবং যারা এই অগ্রগতির নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের তুলে ধরেছে।
নেচারের ওয়েবসাইট অনুসারে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতাগুলো গুরুত্ব দিতে এবং বিশ্বকে গঠনে অবদান রাখা ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নেচারের সম্পাদকরা তালিকাটি তৈরি করে থাকেন।
আরও পড়ুন: সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি মাসেই ঘোষণার ইঙ্গিত ড. ইউনূসের
এ বছরের অর্জনগুলো আবহাওয়ার পূর্বাভাসকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা থেকে শুরু করে একটি জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়া পর্যন্ত অসাধারণ অবদান রেখেছে।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া ড. ইউনূস তার প্রথম জীবনে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছেন।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর চট্টগ্রাম পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৬০-এর দশকে ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেন। ওই সময় তিনি পরিবেশগত অর্থনীতির অগ্রদূত নিকোলাস জর্জেস্কু-রোগেনের পরামর্শদাতা ছিলেন। এই ক্ষেত্রটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং প্রাকৃতিক বিশ্বের মধ্যে সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ফলে বাংলাদেশ নামের একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ড. ইউনূস সদ্য স্বাধীন জাতি গঠনে অবদান রাখতে দেশে ফিরে আসেন।
ড. ইউনূস ক্ষুদ্রঋণে তার অগ্রণী কাজের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। সুবিধাবঞ্চিতদের ক্ষমতায়নের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ হিসেবে প্রায়শই ১০০ ডলারেরও কম দিয়ে থাকেন। ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী কিছু কোম্পানি যখন উচ্চ সুদে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শোষণ করে সমালোচনার মুখে পড়েছে, তখন ড. ইউনূস দেখিয়েছেন যৌক্তিক ঋণ প্রদান কীভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জীবন বদলে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা শ্রম আইনের ৫ মামলা বাতিলের রায় বহাল
১ সপ্তাহ আগে
সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি মাসেই ঘোষণার ইঙ্গিত ড. ইউনূসের
জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ঘোষণায় এটি কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে এবং নতুন বাংলাদেশ রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রত্যাশা পূরণ করবে তার রূপরেখা দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কথা উল্লেখ করে বলেন, পুরনো ধাঁচের সমস্যা এড়াতে নির্বাচনের আগেই কিছু সংস্কার কাজ শেষ করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় এসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ‘সরকার যদি এখন নির্বাচন করে তাহলে তা হবে সেকেলে এবং পুরোনো ধাঁচের সব সমস্যা ফিরে আসবে।’
অধ্যাপক ইউনূস নতুন বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। ‘আমরাও নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগ্রহী।’
ড. ইউনূস কূটনীতিকদের বলেন, সরকারের দু'টি দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন- নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করা।
তিনি বলেন, ১৫টি ভিন্ন ভিন্ন কমিশন রয়েছে এবং সরকার এই মাসের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এই কমিশনগুলোর কাছ থেকে প্রতিবেদন আশা করছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, নির্বাচনি প্রক্রিয়া সংস্কার করা হলে তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হবেন। ‘আমরা সেদিকেই যাচ্ছি ...যেদিকে দুটি প্রক্রিয়া আমাদের একই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারতের এফওসি বৈঠক অনুষ্ঠিত
শুরুতেই অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ এটি বিজয়ের মাস। তিনি বলেন, 'আপনাদের সবাইকে একসঙ্গে পাওয়ার জন্য এটি একটি বিশেষ উপলক্ষ।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি বাংলাদেশের প্রতি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থনের প্রতিফলন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কিছু অপপ্রচার ও ভুল তথ্য প্রচার সত্ত্বেও বাংলাদেশে ঐক্যের একটি দৃঢ়তা
বিদ্যমান। এ সময় পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রদূতরা হলেন-
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্তিয়াগা ওচোয়া ডি চিনচেত্রু, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ ডেলিগেশনের প্রধান ও রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সিডিএ এআই আন্দ্রে কার্সটেন্স।
নয়াদিল্লিতে ইইউ মিশনের প্রধান/প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে নিযুক্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত দিদিয়ের ভ্যান্ডারহাসেল্ট, বাংলাদেশে নিযুক্ত বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলাই ইয়ানকভ, বাংলাদেশে নিযুক্ত এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত মারজে লুপ, বাংলাদেশে নিযুক্ত লুক্সেমবার্গের রাষ্ট্রদূত পেগি ফ্রান্টজেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত স্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রদূত রোবার্ট ম্যাক্সিয়ান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সাইপ্রাসের মনোনীত হাইকমিশনার এভাগোরাস ভ্রিওনাইডস, নয়া দিল্লিতে হাঙ্গেরি দূতাবাসের ঢাকা অফিসের প্রথম সচিব গ্যাবর জুকস, নয়া দিল্লিতে পোল্যান্ড দূতাবাসের কাউন্সেলর জারোস্লাভ জেরজি গ্রোবেরেক, নয়া দিল্লিতে পর্তুগাল দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন সোফিয়া বাতালহা, নয়া দিল্লিতে স্লোভেনিয়া দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ইরমা সিনকোভেক, নয়া দিল্লিতে রোমানিয়া দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব রুক্সান্দ্রা সিওকানেলিয়া।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেখতে চায় ইইউ
১ সপ্তাহ আগে
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা শ্রম আইনের ৫ মামলা বাতিলের রায় বহাল
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ঢাকার শ্রম আদালতে করা পাঁচ মামলা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে রবিবার (৮ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আর ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান।
রায়ের পর মুস্তাফিজুর রহমান খান জানান, শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের নামে করা পাঁচটি মামলা গত অক্টোবরে বাতিল করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকছে।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই: ড. ইউনূস
এ মামলাগুলো বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গত ২৪ অক্টোবর পৃথক রায় দেয় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ে মামলাগুলোর কার্যকারিতা বাতিল করা হয়। পরে এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যেটি আজ খারিজ করল আপিল বিভগ।
২০১৯ সালের ৩ জুলাই ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের নামে মামলা করেন তারই প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চাকরিচ্যুত সাবেক তিন কর্মচারী- আব্দুস সালাম, শাহ আলম ও এমরানুল হক। একই বছর হোসাইন আহমেদ ও আব্দুর গফুর নামে আরও দই ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এসব মামলা বাতিল চেয়ে ২০২০ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ড. ইউনূস। তখন হাইকোর্ট মামলা বাতিলে রুল জারি করেন। এরপর পৃথক শুনানি শেষে গত ২৪ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: সব শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে: ড. ইউনূস
১ সপ্তাহ আগে
নির্বাচনের আগে বড় ধরনের সংস্কারের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল সংস্কার এবং তার সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের আগে বড় ধরনের সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের উপদেষ্টা এবং ইউএনডিপির সাবেক প্রধান লর্ড মার্ক মালক-ব্রাউনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অঙ্গীকার পূনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এক ঘণ্টার এ বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান, উন্নয়নমূলক বিষয়াদি, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: আমরা সবাই বাংলাদেশি: ধর্মীয় নেতাদের ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার প্রক্রিয়ার সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্রের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করতে এ পর্যন্ত ১৫টি সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য এ সময় অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান লর্ড মালক-ব্রাউন।
বাংলাদেশি জনগণের কল্যাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারলে তিনি আনন্দিত হবেন বলে জানান।
লর্ড মালক-ব্রাউনের সমর্থনের জন্য ড. ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জনগণের প্রত্যাশা মেটানো সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।
এ সময় উন্নয়নকর্মী মার্থা চেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সার্ক পুনরুজ্জীবিত হলে মানুষ সুফল পাবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
১ সপ্তাহ আগে
আমরা সবাই বাংলাদেশি: ধর্মীয় নেতাদের ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী জনগণের অধিকার নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো হামলা হলে সঠিক তথ্য পেতে ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ‘আমরা সঠিক তথ্য জানতে চাই এবং সঠিকভাবে তথ্য পাওয়ার প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
তথ্য সরবরাহকারীরা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়েন, সেজন্য কীভাবে নিরাপদে সহজে তথ্য গ্রহণ করা যায়, তা জানতে আলোচনায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটতেই পারে, তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক সম্মেলন শনিবার, উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন ড. ইউনুস
ইউনূস বলেন, দেশের সব মানুষের সমান অধিকার রয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক প্রতিকার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'আমি যা বলেছি তার সঙ্গে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ একমত বলে আমি মনে করি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে নিজের দেওয়া বক্তব্যের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, মতপার্থক্য থাকলেও তারা সবাই একটি পরিবার। ‘আমরা একই পরিবারের সদস্য। আমরা একে অপরের শত্রু নই। আমরা সবাই বাংলাদেশি।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা এবং বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মধ্যে তথ্যের ফাঁক রয়েছে।
আলোচনায় অংশ নেন মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন ধর্মের নেতারা।
ইউনূস বলেছেন, কোনো শক্তিই ৫ আগস্টের পর থেকে গড়ে ওঠা সংহতি নষ্ট করতে বা কষ্টার্জিত স্বাধীনতা থেকে জাতিকে বঞ্চিত করতে পারবে না।
রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় সমাপনী বক্তব্যে ইউনূস বলেন, ‘জাতি একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে এবং এটি অটল থাকবে। কেউ আমাদের ঐক্য ভাঙতে পারবে না বা আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে পারবে না।’
তিনি জনগণের মধ্যে ভিন্ন মতামতের উপস্থিতি স্বীকার করে জোর দিয়ে বলেন, জাতির সম্মিলিত ঐক্যের বিষয়ে কোনো বিভেদ নেই।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অধ্যাপক ইউনূস ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে শফিউল আলম ইউএনবিকে বলেন, 'অধ্যাপক ইউনূস জাতি পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।’
প্রেস সচিব বলেন, নাগরিক গোষ্ঠী, প্রবাসী বাংলাদেশি, রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছেন ড. ইউনুস
২ সপ্তাহ আগে
সার্ক পুনরুজ্জীবিত হলে মানুষ সুফল পাবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থে আঞ্চলিক সংস্থাটিকে কার্যকর করার জন্য সার্ক সচিবালয়কে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘সার্ক শব্দটি ভুলে যাওয়ার মতো হয়েছে। আপনারা যদি এটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন, তাহলে এটি পুরো অঞ্চলের মানুষকে সুবিধা দিতে পারবে।’
সার্কের মহাসচিব গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে সোমবার (২ ডিসেম্বর) তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
মহাসচিব সারওয়ার সার্ককে একনিষ্ঠভাকে সমর্থক করার জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বহুপাক্ষিক সংস্থাটির পুনরুজ্জীবনে দক্ষিণ এশিয়ার নেতাদের প্রতি তার সাম্প্রতিক আহ্বানে তারা উৎসাহিত হয়েছেন।
তিনি প্রোগ্রামিং কমিটি, আঞ্চলিক কেন্দ্র ও বিশেষায়িত সংস্থার গভর্নিং বডি, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ইভেন্ট, এসডিজি, আঞ্চলিক সংহতি, শুল্ক সহযোগিতাসহ কর্মস্থলে সার্কের চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের অনুপস্থিতিতে কার্যকরী উদ্যোগগুলো পর্যাপ্ত শক্তি ও স্বচ্ছতা পাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো-জাতীয় পতাকার অবমাননার নিন্দা বাংলাদেশের
অধ্যাপক ইউনূস এবং সার্ক মহাসচিব সংস্থার উন্নতির জন্য পররাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য খাত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের বৈঠক এমনকি নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সার্ক মহাসচিব সারওয়ারবলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।’
অধ্যাপক ইউনূস মহাসচিব সারওয়ারকে প্রতিবেশী দেশগুলো বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানে নেপালের জলবিদ্যুৎ রপ্তানির মতো বহুপাক্ষিক বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় যুব উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর তরুণদের আমন্ত্রণ জানান।
তিনি বলেন, ‘এটি ভাল হবে। কারণ এটি যুবকদের উপর মনোযোগ দেবে। সার্কের পুরো উদ্দেশ্যটাই মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। এটি তা শুরুর একটি উপায় হতে পারে।’
এ বছর সার্ক ঐতিহাসিক ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সার্ক প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অব্যাহত সমর্থন ও দিকনির্দেশনা কামনা করেন সার্ক মহাসচিব।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যায় ড. ইউনূসের নিন্দা, তদন্তের নির্দেশ
২ সপ্তাহ আগে
কলকাতায় ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো-জাতীয় পতাকার অবমাননার নিন্দা বাংলাদেশের
ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের বাইরে উগ্রবাদী বিক্ষোভে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকার ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসকনের সাম্প্রতিক আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন নজরুলের
বাংলাদেশ সরকার যেকোনো ধরনের সহিংস কার্যকলাপের নিন্দা জানিয়েছে এবং ভারত সরকারকে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশন এবং ভারতে বাংলাদেশের অন্যান্য কূটনৈতিক মিশনের পাশাপাশি এর কূটনীতিক এবং অ-কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের সামনে 'বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ' নামের কলকাতার একটি হিন্দু সংগঠনের আয়োজনে সহিংস বিক্ষোভে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন: ইসকন ইস্যুতে দেশি বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের একটি বড় দল সমাবেশ ও বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সীমানায় পৌঁছে যায়।
তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ্য করে।
যদিও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তবে ডেপুটি হাইকমিশনের সকল সদস্য নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতীয় মিডিয়ার ভুল প্রচারণার বিরুদ্ধে সত্য দিয়ে লড়াই করুন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
৩ সপ্তাহ আগে