ড. ইউনূস
দেশে জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ড. ইউনূসের
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, তারা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে জনগণই হবে প্রকৃত ক্ষমতার উৎস। পাশাপাশি সারা বিশ্বে মানবতা ও সহানুভূতিশীলতার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত হবে জাতি।
নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তুলে সরকার সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রচেষ্টা চালাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ আয়োজিত সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি শক্তিশালী করার জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বানও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। এসব নীতিই হবে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি। জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শিখা অনির্বাণে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের শ্রদ্ধা
বৈশ্বিক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন প্রদান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমাদের তরুণ সমাজ যেন মেধার ভিত্তিতে জাতি গঠনে অবদান রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে সশস্ত্র বাহিনীর সাহসী সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে।
এটি যুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়, যার ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
শহীদদের প্রতি সম্মান জানান ইউনুস।
তিনি বলেন, ‘আজ আমি স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গ করা সব সাহসী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাদের বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীরদের স্বজনদের প্রতি তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
সম্প্রতি ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যত্থান প্রসঙ্গে ইউনুস বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের প্রচেষ্টায় ‘নতুন বাংলাদেশ’ অর্জিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে একটি বৃহত্তর পরিবারে ঐক্যবদ্ধ করা। মতামতের পার্থক্য স্বাভাবিক, কিন্তু এই পার্থক্যের কারণে আমাদের কখনই একে অপরকে শত্রু ভাবা উচিত নয়, তা আদর্শিক হোক বা ধর্মীয় হোক।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এমন হওয়া উচিত যেখানে সব নাগরিক সমান হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের বৈষম্য ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন ইউনূস। তিনি বলেন, 'জাতীয় জীবনে কেউ কারো উপরে বা নিচে নয়।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারসহ বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় আকস্মিক নেতিবাচক কিছু নেই: অধ্যাপক ইউনূস
১২ ঘণ্টা আগে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ জানালেন ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ হবে চার বছরেরও কম হবে বল জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
একই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করাই তাদের উদ্দেশ্য বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'আমি বলিনি যে চার বছর ক্ষমতায় থাকব। এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ। কিন্তু সেটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সম্পন্ন করা।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদের সঠিক সময়সীমা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: সীমাবদ্ধতা সত্বেও একটি মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাব: ড. ইউনূস
তিনি বলেন, ‘এটা চার বছরের নিচে হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা কমও হতে পারে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় সেটাই আসল। 'রাজনৈতিক দলগুলো যদি বলে এটা (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও, আমরা করব।’
নির্বাচনে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা আছে কি না-জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, 'আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি আমার ভূমিকা এবং আমি যা করছি তা উপভোগ করি।’
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস সামনের চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, 'বিগত ১৫ বছর ধরে অব্যবস্থাপনা, অপশাসন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মতো-যে ব্যবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম, সে কারণে বাংলাদেশ এখন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এখন 'পয়েন্ট বাই পয়েন্ট, সেক্টর বাই সেক্টর' পুনর্গঠন বড় কাজ হবে।
আরও পড়ুন: সব শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে: ড. ইউনূস
৩ দিন আগে
সীমাবদ্ধতা সত্বেও একটি মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাব: ড. ইউনূস
দায়িত্ব ছাড়ার আগে দেশের অর্থনীতি মজবুত করে দিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ চলার পথ সহজ এবং নাগরিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে যাবে তার সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস একথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একশ দিন আগে আর্থিক বিষয়ে আমরা যে লন্ডভন্ড অবস্থায় থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম, সেটা এখন অতীত ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই একশ দিনে অর্থনীতি সবল অবস্থানে চলে এসেছে। আর এটি হয়েছে সম্পূ্র্ণ নিজস্ব নীতিমালা দিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘বলা বাহুল্য, এখনও আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে যে সাহায্যের আয়োজন হয়েছে, তা আসা শুরু হয়নি। বন্ধু রাষ্ট্রগুলো শুধু যে আমাদের জন্য বড় বড় অংকের সাহায্য নিয়ে আসছে তা-ই নয়, তাদের এই সাহায্য যে দ্রুততম সময়ে (দেশে) আসা শুরু করবে, এই প্রতিশ্রুতিও আমাকে দিয়েছে। এগুলো আসা শুরু করলে আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত মজবুত ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’
আরও পড়ুন: অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করেই নির্বাচন আয়োজন করব: প্রধান উপদেষ্টা
অর্থনীতি মজবুত হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও নানা রকম বিনিয়োগে উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন থেকেই আমরা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিশ্ব রাষ্ট্রপুঞ্জের মজলিসে আমরা এখন সম্মানিত ও প্রশংসিত দেশের অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। এ কারণে পরাজিত শক্তি নানা কৌশল করেও তাদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না।’
দেশের জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘তারা নানা চেহারা নিয়ে আপনাদের প্রিয় পাত্র হওয়ার চেষ্টা করছে। পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন, দেশকে মুক্ত রাখুন; এ ব্যাপারে অনড় থাকুন।’
‘এমন কিছু করবেন না যা তাদের উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। তাদের সব দিক থেকে নিরাশ করুন। এটি নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের আর কোনো বিষয়ে সংশয় করার প্রয়োজন নেই।’
দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রত্যয় জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি- সকল প্রকার সীমাবদ্ধতা সত্বেও আমরা আপনাদের একটি মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাব; ভবিষ্যতে চলার পথকে সহজগম্য এবং নাগরিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে যাব।’
‘বিপক্ষ শক্তি যত শক্তিশালীই হোক, নাশকতার যত রকমই উদ্ভট পরিকল্পনাই করুক, সবকিছু নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। এবার যে মুক্তি আমরা অর্জন করেছি, তা আমাদের কাছ থেকে কেউ যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে- তার জন্য প্রতিটি মুহুর্তে প্রস্তুত থাকুন।’
এ সময় বাংলাদেশর উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও ইউএনডিপির মতো আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো সর্বাত্মকভাবে সাহায্যের জন্য তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বলে জানান ড. ইউনূস। এমনকি তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে তিনি দীর্ঘ বৈঠকও করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে
এজন্য বিশ্ব নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের এই সংকটময় সময়ে তারা প্রায় সবাই সহযেগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি যখন সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেই, সে সময় জাতিসংঘ মহাসচিব এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা, ইতালি ও নেদারল্যান্ডসসহ বিশ্বের অনেক দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে আমার বৈঠক করার সুযোগ হয়। তারা আমাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এমনকি, নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী বেশ কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গেও আমার বৈঠক হয়েছে।’
‘দেশে ফিরে আসার পর ঢাকায় অবস্থান করা সেসব দেশের রাষ্ট্রদূতরা স্বঃপ্রবৃত্ত হয়ে আমার সঙ্গে দেখা করে তাদের সরকারপ্রধানদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে গেছেন। তারা আমাদের জন্য সহায়তার নতুন ছক তৈরির কাজ শুরু করেছেন।’
ভাষণের শেষে দেশের জনসাধারণের প্রতি আবার সতর্কতার বাণী উচ্চারণ করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে ব্যর্থ, অকার্যকর করার জন্য ব্যাপক পরিসরে বিশ্বব্যাপী এবং দেশের প্রতিটি স্থানে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে এক মহাপরিকল্পনা প্রতি মুহূর্তে কার্যকর রয়েছে। তাদের একটি বড় প্রচেষ্টা হচ্ছে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা।’
‘পতিত সরকারের নেতা যারা এদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে নিয়ে গেছে, সেই অর্থে বলীয়ান হয়ে তারা দেশে ফেরার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের কিছুতেই সফল হতে দেবেন না। তারা সফল হওয়া মানে জাতির মৃত্যু; জাতি হিসেবে আমাদের অবসান। তাই সাবধান থাকুন!’
অপশক্তির সব হীন প্রচেষ্টাকে ঐক্যের মাধ্যমে নস্যাৎ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেভাবে তাদের বন্দুকের গুলিকে, আয়না ঘরকে, প্রতি পায়ে তাদের অনাচারের শিকলকে নস্যাৎ করেছিলেন, সেভাবেই সব (ষড়যন্ত্র) নস্যাৎ করে দিন। এ ব্যাপারে সবাই একমত থাকুন, ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই: ড. ইউনূস
৪ দিন আগে
স্বল্প সময়ের জন্যও বাংলাদেশে আ. লীগের কোনো স্থান নেই: ফিনান্সিয়াল টাইমসকে ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আপাতত দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের কোনো স্থান নেই। ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্যই প্রদর্শন করেছে দলটি।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় না হওয়া পর্যন্ত ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পনের প্রক্রিয়া শুরু করবে না বাংলাদেশ।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করে বলেন, ‘স্বল্প সময়ের জন্যও নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে তার কোনো স্থান নেই, আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা নেই।’
তিনি দলের কৌশলগুলোর সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল, তারা (রাজনৈতিক) ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল, তারা তাদের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল।’
আরও পড়ুন: অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাফল্যের সম্ভাবনায় ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থ
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে নির্বাচনে কারচুপি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার পদত্যাগের পর বাংলাদেশে দলটিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হবে, সংস্কারের আদেশ দেওয়া হবে নাকি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থেকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ভেঙে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দলের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর বিশেষাধিকার হবে। কারণ তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘রাজনৈতিক সরকার’ নয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে 'ঐকমত্যের' ওপর। তিনি বলেন, 'তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক করতে হবে।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকে তার অনুসরণীয় কাজের জন্য তিনি পরিচিত। স্বঘোষিত ‘গরিবের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক ইউনূস এর আগে হাসিনার প্রশাসনের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন। ছাত্র নেতাদের নিয়ে গঠিত তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করছে এবং পুলিশ, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের জন্য ১০টি কমিশন গঠন করেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সম্পৃক্ত করার আগে তিনি রাজনৈতিক দল গঠন বা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার তার কোনো ইচ্ছা নেই বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তার(শেখ হাসিনা সরকারের) প্রধান সমর্থক ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন যে, তার সরকার শেষ পর্যন্ত তাকে হস্তান্তর চাইবে, তবে তারা ট্রাইব্যুনালের রায়ের জন্য অপেক্ষা করবেন। ‘তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। রায় প্রকাশ হলে আমরা ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’ রায় ঘোষণার আগে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো কারণ আছে বলে তিনি মনে করেন না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য তার দায়বদ্ধতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, তিনি ‘বেআইনি কিছু করেননি’ যেকোনো অভিযোগের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছেন।
হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার অনেক সমর্থক আওয়ামী লীগ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক সহিংসতার আশঙ্কায় আত্মগোপনে চলে যায়।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসও তার সরকারের উপর ভারতের উষ্ণ সমর্থনের প্রভাবের কথা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যুৎ, পানি ও অবকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশ নিবিড়ভাবে সংযুক্ত এবং তাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তিনি মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, 'আমরা চেষ্টা করেছি... আমরা প্রতিবেশী, আমাদের একে অপরকে প্রয়োজন, আমাদের অবশ্যই সর্বোত্তম সম্পর্ক থাকতে হবে, যা যেকোনো দুই প্রতিবেশীর হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: গণভবনে দ্রুত জাদুঘর নির্মাণ করতে উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিলেন অধ্যাপক ইউনূস
সৌদির বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের
৩ সপ্তাহ আগে
স্পেনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চান ড. ইউনূস
বছরের পর বছর ধরে শোষণের পর দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তার জন্য বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে স্পেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বাংলাদেশ থেকে কারিগরি ও অন্যান্য খাতে আরও কর্মী নিয়োগের জন্য স্পেনের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্তিয়াগা বুধবার (৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমানে স্পেনে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত।
স্পেনের রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছিলেন যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তার সংস্কার উদ্যোগে স্পেন তার অভিজ্ঞতার আলোকে সহায়তা করতে পারে কিনা।
প্রধান উপদেষ্টা এই প্রস্তাবের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে যেসব সংস্কার বাস্তবায়ন করছে তা এগিয়ে নিতে স্পেনের যেকোনো সহযোগিতাকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
অধ্যাপক ইউনূস স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টো রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘স্পেন আমাদের বিভিন্নভাবে সমর্থন দিতে পারে। এখানে আরও বিনিয়োগ আনতে পারে এবং আমাদের পোশাক পণ্যের আমদানি সম্প্রসারণ করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি আমাদের উন্নয়ন খাতে স্পেনের সহায়তা পেলে তা লাভজনক হবে।’
রাষ্ট্রদূত সিস্তিয়াগা স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজের একটি চিঠি ড. ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় তাকে অভিনন্দন জানান স্পেনের প্রেসিডেন্ট।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, রাষ্ট্রদূত ২০২৫ সালের ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত স্পেনে অনুষ্ঠিতব্য উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্পেনের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
প্রধান উপদেষ্টা স্পেনের রানী সোফিয়ার কাছে তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান এবং তার বাংলাদেশ সফরকালে তার সঙ্গে তার মধুর স্মৃতির কথা স্মরণ করেন।
তিনি তাকে আবারও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা ড. ইউনূসের
১ মাস আগে
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা ড. ইউনূসের
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশে গম ও সার সরবরাহকারী হিসেবে রাশিয়ার ভূমিকার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বুধবার (৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতের সময় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রূপপুর প্রকল্পের বকেয়া-সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান করবে এবং বাংলাদেশে আরও রাশিয়ান বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। 'আমরা একসঙ্গে কাজ করব।'
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার অবস্থান জানে না সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠক চলাকালীন, ম্যান্টিটস্কি রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার তিন বছরেরও বেশি মেয়াদে তার ঘটনাবহুল সময়ের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন।
তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, যা আগামী বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর বিশেষজ্ঞরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন।
বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গ্যাজপ্রমের বাংলাদেশে অনুসন্ধান কার্যক্রম, রাশিয়ার গম ও সার রপ্তানি এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ পরিশোধ নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
এ সময় সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. আবুল হাসান মৃধা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
১ মাস আগে
অনির্দিষ্টকালের অপেক্ষা নয়, রোহিঙ্গা সংকটের আন্তর্জাতিক সমাধান চান ড. ইউনূস
যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও আন্তর্জাতিক সমাধানের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতে, বাংলাদেশের একার হাতে নয়।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ঢাকার একটি হোটেলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা বিষয়টি উত্থাপন অব্যাহত রাখব। মালয়েশিয়া আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করবে। আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না। এটি এমন একটি বিষয় যা আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করতে হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন কারণ এটি মালয়েশিয়ার জন্যও একটি সমস্যা, সেখানেও স্বল্প সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আমরা আসিয়ান, মালয়েশিয়ার সরকার এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করি।’
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া।
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের দুটি দিক তুলে ধরেন- গত ৭ বছর ধরে ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে এবং এর সংঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রতি বছর গড়ে জন্ম নেওয়া ৩২ হাজার নতুন শিশু।
আরও পড়ুন: ঢাকায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী; স্বাগত জানালেন অধ্যাপক ইউনূস
তিনি বলেন, জন্মহার নিয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন নয়, তাদের জীবনে কী ঘটছে সেটাই আসল ব্যাপার। তিনি বলেন, 'তরুণদের একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। এটা ক্ষুব্ধ তরুণদের একটি প্রজন্ম। তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, পুরো বিশ্বের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো এটি একটি টিকিং টাইম-বোম্ব যা যেকোনো উপায়ে বিস্ফোরিত হতে পারে।
তিনি বলেন, অবিচ্ছিন্ন প্রবাহের সঙ্গে প্রতিদিন নতুন প্রবেশও ঘটছে। ‘এই উদ্বেগ আমি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছি। তিনি পুরোপুরি সমর্থন করেন এবং আমাদের অবস্থান বোঝেন।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মালয়েশিয়া এই সমস্যার আন্তর্জাতিক সমাধানের জন্য আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক ফোরামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
সাত বছর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
২০২৪ সালে মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশপাশের সম্প্রদায়ে বাংলাদেশিসহ ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে সহায়তার জন্য ৮৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের আবেদন করে। ইউএনএইচসিআর-এর মতে, এই আবেদনটির প্রেক্ষিতে অর্থায়ন অপর্যাপ্তই রয়ে গেছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত একান্ত বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ১৮ হাজার শ্রমিক প্রবেশের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর
১ মাস আগে
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে কানাডা: ড. ইউনূসকে জাস্টিন ট্রুডো
বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।
সংক্ষিপ্ত এ বৈঠকে বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উপায়, জনসাধারণের স্বাধীনতা আরও বিস্তৃত করা, প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার ও বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা পূর্ববর্তী সরকার দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে ধ্বংস করেছিল সে বিষয়টি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও অধ্যাপক ইউনূস
১ মাস আগে
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হবে না
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো বৈঠক হবে না। কারণ এই দুই নেতার সময়সূচি আলাদা।
ঢাকা ও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন, অধ্যাপক ইউনূস নিউইয়র্কে পৌঁছানোর আগেই মোদি যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দুই নেতার বৈঠকের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, মনে হচ্ছে কোনো সম্ভাবনা নেই, কারণ মোদি একটু আগেভাগে যাচ্ছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সেখানে কিছুটা দেরিতে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন ইউনূস
শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিন দিনের সফর শুরু করেছেন মোদি। সেখানে তিনি উইলমিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত কোয়াড সামিটে অংশ নেবেন এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
এক বিবৃতিতে মোদি বলেন, 'আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেন, প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ এবং প্রধানমন্ত্রী কিশিদার সঙ্গে কোয়াড সামিটে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’
অধ্যাপক ইউনূস পরে নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন। তার বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের মতে, প্রধান উপদেষ্টা নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং ইউএসএইড প্রশাসকসহ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: 'আমাদের ওপর আস্থা রাখুন, আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত': ইউনূসকে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই সময়ে সভার অনেক সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তে নেওয়া হয়। ‘সেই বিবেচনায় নতুন সভা যুক্ত হতে পারে; আবার সময়ের অভাবে কোনো সভা বাদ পড়তেও পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, ইতালির প্রেসিডেন্ট ও কুয়েতের ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এমনকী, চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হতে পারে বলেও আলোচনা রয়েছে।
তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন এবং ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন।
আরও পড়ুন: জাতি পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান ইউনূস
২ মাস আগে
আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে: ড. ইউনূস
দেশের আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন,‘বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে বিগত একমাসে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। আমরা এই খাতে নিয়ম নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। ’
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা লুটপাট ও পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছি।
আরও পড়ুন: গণ-অভ্যুথানে সব শহীদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে: অধ্যাপক ইউনূস
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ষাট হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজার ছাড়ার কারণে মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরে চাল ও গম আমদানির জন্য ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের জন্য ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং খাদ্য ভর্তুকির তিনটি কর্মসূচির জন্য ৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করা হচ্ছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় যৌক্তিক পরিমাণে কমানোর কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য সার আমদানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত চাষিদের কৃষিঋণ পাওয়া নিশ্চিতের পাশাপাশি ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। আর মার্কিন ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করার কথাও বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিশ্ব ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাইকা থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের অনুরোধ করেছে সরকার।
তিনি বলেন, পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
ড. ইউনূস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়া এবং চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সরকারের অনুরোধের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জিডিপি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, প্রাক্কলন এবং প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অর্থ বিভাগের রাজস্ব আয় সম্পর্কিত উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য নিরসনে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। পুঁজি বাজারকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে সম্মানের সঙ্গে পরিচিত হবে। দেশের পরিকল্পনা যেন দেশের মানুষ কেন্দ্রিক হয়, কোনো নেতা বা দল কেন্দ্রিক নয়। আমরা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের অহেতুক কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দেখেছি, যেগুলো কখনোই দেশের মানুষের জন্য ছিল না, বরং এতে ছিল বিশাল আকারের চুরি।
আরও পড়ুন: স্বৈরাচারের প্রতিষ্ঠিত গুম সংস্কৃতির সমাপ্তি ঘটাতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ: ড. ইউনূস
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে দিনরাত পরিশ্রম করছি: প্রধান উপদেষ্টা
২ মাস আগে