ড. ইউনূস
ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও আরও কর্মী নিতে আমিরাতের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দুবাইয়ে দুদিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকগুলোতে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বন্দরে আমিরাতি বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি জানান, আমিরাতি কোম্পানিগুলোকে তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেয়ৌদি এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলে ড. ইউনূস আমিরাতি ব্যবসার জন্য একটি বিশেষ শিল্পপার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে একটি ‘হালাল পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, যেখানে কম খরচে শ্রমসুবিধা পাওয়া যাবে।
এরপর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে চান বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী।
প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ।
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।
শুক্রবার দুবাই বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহৌল আল ফালাসি।
৭ দিন আগে
দেশে স্টারলিংক আনতে মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ড. ইউনূস
বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও কলে আলোচনার সময় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে মাস্কের কোম্পানির সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও তারা আলাপ করেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে দুবাইতে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা স্পেসএক্স ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার-বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার ও গ্লোবাল এঙ্গেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ইলন মাস্কের সঙ্গে আলাপকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের রূপান্তরমূলক প্রভাব, বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবক, গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উচ্চগতির ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ কীভাবে বাংলাদেশের ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে পারে, সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষমতায়ন এবং দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে জাতীয় সীমানার বাইরে প্রবেশাধিকার দেওয়ার উপায় নিয়ে এ সময় আলোচনা করা হয়।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি যুক্ত করা হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত করা হবে।
তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তিচালিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্কের নজর দক্ষিণ এশিয়ায়, বড় সুযোগ বাংলাদেশের
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ পল্লী ফোনের একটি সম্প্রসারিত অংশ হতে পারে, যা গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তারা বৈশ্বিক উদ্যোক্তায় পরিণত হবে।
ইলন মাস্ক এ সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করে দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাবের কথা জানান।
টেসলা মোটরসের এই প্রতিষ্ঠাতা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোন উভয়ের কাজের ব্যাপারেই তিনি অনেক বছর ধরে জানেন।
স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে কাজে লাগানো বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারে বলে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন।
ড. ইউনূস স্টারলিংক সেবার চালুর উদ্দেশ্যে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং জাতীয় উন্নয়নে এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরেন। মাস্কও এই আমন্ত্রণে ইতিবাচক সাড়া দেন; বলেন, ‘এর জন্য আমি অপেক্ষায় আছি।’
বাংলাদেশে ইস্টারলিংক সেবা উদ্বোধনের সম্ভাব্য উদ্বোধনের গুরুত্ব তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তার আশা, এই আলোচনা দেশে উন্নত স্যাটেলাইট সংযোগ চালুর পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করবে।
উভয় পক্ষ এ উদ্যোগে দ্রুত অগ্রগতি আনতে সম্মত হয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরবর্তী কার্যক্রম সমন্বয়ে ড. খলিলুর রহমান, লরেন ড্রেয়ার ও রিচার্ড গ্রিফিথসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
৭ দিন আগে
দুবাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে যোগ দিতে দুবাই সফর করছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: দুবাই সামিটে এআই নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক সহযোগিতায় জোর প্রধান বিচারপতির
'শেপিং ফিউচার গভর্নমেন্টস' প্রতিপাদ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শীর্ষ সম্মেলনটি ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, চিন্তাবিদ এবং বেসরকারি খাতের নেতাদের একত্রিত করেছে। সম্মেলনটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য উদ্ভাবনী সমাধান চিহ্নিত করাসহ সর্বোপরি পরবর্তী প্রজন্মের সরকারগুলোকে অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে যোগ দিতে দুবাইয়ে প্রধান উপদেষ্টা
৭ দিন আগে
'নতুন বাংলাদেশ'র সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্তের আহ্বান ড. ইউনূসের
জালিম শাসক ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্ট 'নতুন বাংলাদেশের' সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রোমে আইএফএডির সদর দপ্তরে গভর্নিং কাউন্সিলের (ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট) ৪৮তম অধিবেশনে তার পূর্ব ধারণকৃত ভিডিও মূল প্রবন্ধের বক্তব্য প্রচার করা হয়।
বৈশ্বিক দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে ভূমিকার জন্য ইফাদকে অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বিশেষ করে কৃষি ও জলবায়ু খাতে ইফাদের চার দশকের সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন।
তিনি ইফাদের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পসমূহে বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন।
ড. ইউনূস তার 'সামাজিক ব্যবসা' ধারণাকে গ্রামীণ উন্নয়নের নতুন মাত্রা হিসেবে উল্লেখ করেন। যা একটি সত্য চক্র তৈরি করে যেখানে সমাজের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে ব্যবসায় সমৃদ্ধি লাভ করে এবং এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন: ‘ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য’, আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস
তিনি ইফাদের প্রচেষ্টা এবং বিশ্বের 'থ্রি জিরো' শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ ভিশনের মধ্যে একটি সাদৃশ্যের কথাও তুলে ধরেন চিত্র তুলে ধরেন।
ড. ইউনূস ইফাদের গভর্নিং কাউন্সিলকে জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো, টেকসই কৃষি চর্চা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমাধান খাতে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান, যাতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নতি করতে পারে।
তিনি ইফাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সবচেয়ে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগগুলো কাজে লাগাতে এবং একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান- যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।
তরুণ ও শিক্ষার্থীদের যারা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব ও পরিবর্তনকারী তাদের সম্পৃক্ত করার জন্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সকলের জন্য একটি উন্নততর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং আবেগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ জানিয়েছে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ইফাদ গভর্নিং বোর্ডের গভর্নর হিসেবে কাউন্সিল সভায় যোগ দেন এবং অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে যোগ দিতে দুবাই যাচ্ছেন ড. ইউনূস
৯ দিন আগে
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে যোগ দিতে দুবাই যাচ্ছেন ড. ইউনূস
'ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিট ২০২৫'-এ যোগ দিতে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধাবর (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দুবাইয়ের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ।
সফরকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, পারস্পরিক স্বার্থ, ভিসা উন্মুক্তকরণ, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আজাদ এর আগে বলেছিলেন, এটি একটি সংক্ষিপ্ত সফর হবে। প্রধান উপদেষ্টা শুক্রবার দেশে ফিরবেন।
এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মেলনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি চিঠি দেন।
'শেপিং ফিউচার গভর্নমেন্টস' প্রতিপাদ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী বিশ্বের সরকারের এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এটি ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, চিন্তাবিদ এবং বেসরকারি খাতের নেতাদের একত্রিত করেছে। সম্মেলনটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য উদ্ভাবনী সমাধান চিহ্নিত করাসহ সর্বোপরি পরবর্তী প্রজন্মের সরকারগুলোকে অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়িত করে।
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ড. ইউনূসের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরার জন্য এই সম্মেলনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এর আগে বলেছিলেন, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র/সরকারপ্রধানদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য’, আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস
তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতীম দুই দেশ বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে সুসম্পর্ক রয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও অভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গনের ভিত্তিতে এ সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে সংহত হয়েছে।
মুখপাত্র আরও বলেন, দেশটিতে অবস্থানরত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
তিনি বলেন, বস্ত্র, কৃষি পণ্য এবং জ্বালানি খাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উভয় দেশ জাতিসংঘ ও ওআইসির মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে কাজ করছে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার বাংলাদেশের অবকাঠামো ও স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।
৯ দিন আগে
‘ভয়ংকর ও অবিশ্বাস্য’, আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস
আয়নাঘর নামে পরিচিত গোপন বন্দিশালাগুলোর মধ্যে তিনটি পরিদর্শনের পর এগুলোকে ‘ভয়াবহ ও অবিশ্বাস্য’ বলে বর্ণনা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘বর্ণনা করতে চাইলে বলা যায়, সে এক ভয়াবহ দৃশ্য! সেখানে যা ঘটেছে সবই ছিল ভয়াবহ। আমি যা শুনেছি তা অবিশ্বাস্য! ভাবছি এটাই কি আমাদের পৃথিবী? আমাদের সমাজ?’
ঢাকায় আগে ‘নির্যাতন কেন্দ্র (টর্চার সেল) ও গোপন কারাগার’ হিসেবে ব্যবহৃত তিনটি স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মী ও কয়েকজন উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ‘আয়না ঘর’ পরিদর্শন করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা কিভাবে আল-জাহিলিয়াহ (অজ্ঞতার যুগ) প্রতিষ্ঠা করেছিল— এটি তার নমুনা এটি।
তিনি বলেন, ‘যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের কথা শুনেছি। এর কোনো ব্যাখ্যা হয় না। তাদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গাড়িতে বিস্ফোরক রাখা হয় এবং জঙ্গি, সন্ত্রাসী সাব্যস্ত করা হয়। এখন জানতে পেরেছি সারা দেশে আরও অনেক টর্চার সেল রয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনার আমলে আট থেকে নয় বছরে নিরাপত্তা বাহিনী আয়না ঘর ও গোপন বন্দিশালায় হাজার হাজার ব্যক্তিকে গুম করে আটকে রেখেছিল।
আরও পড়ুন: আয়নাঘর পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা
শফিকুল আলম বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, শেখ হাসিনা নিজেই গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আদিলুর রহমান খান, আসিফ মাহমুদ, মাহফুজ আলম ও নাহিদ ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকার আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরা এলাকায় অবস্থিত আয়না ঘর ও টর্চার সেল পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য, ভুক্তভোগী, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের সদস্যরা।
প্রধান উপদেষ্টাকে আগারগাঁওয়ের একটি টর্চার সেলে ব্যবহৃত 'ইলেকট্রিক চেয়ার' দেখানো হয়।
টর্চার সেল ও গোপন কারাগার পরিদর্শনের সময় গুমের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে কথাও বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
৯ দিন আগে
জুলাই অভ্যত্থানের পর ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
জুলিই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের 'নিষ্ঠুর শাসনামলের' পতনের মাধ্যমে খুন ও গুমের অবসানের পর জাতিকে 'ঐক্যবদ্ধ' হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবার ও আহতদের মাঝে সহযোগিতার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সংঘাত কাটিয়ে ওঠার আমাদের ক্ষমতার উপর। ‘আমাদের একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি আরও ঘোষণা করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করবে।
প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি অভ্যুত্থানের সময় শহীদ ও সাতজন আহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ করেন।
তিনি বাংলাদেশের গুম ও খুনের শিকার পরিবার ও নাগরিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্ত হত্যাকাণ্ড ও গুমের তদন্ত করা হবে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
ড. ইউনূস সহিংসতা বা রক্তপাত ঘটানোর যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে পরিবারগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দল
তিনি বলেন, ‘বিচার তাৎক্ষণিকভাবে করতে গেলে অবিচার হয়ে যায়। বিচারের মূল জিনিসটা হলো এটা সুবিচার হতে হবে...অবিচার যেন না হয়। আমরা অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম বলেই এই সংগ্রাম হয়েছে, এই আত্মত্যাগ হয়েছে। আমরা যদি অবিচারে নামি, তাহলে তাদের আর আমাদের মধ্যে তফাতটা থাকল কোথায়? আমরা অবিচারে নামবো না।’
তিনি আরও বলেন, যারা অপরাধী তাদের আমরা পুলিশের হাতে, আইনের হাতে সোপর্দ করব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যেসকল মানুষ অপরাধী নয়, তাদের মানুষ বানাবো। তাদের বলব, ‘ভাই, এ দেশটি আমরা একসঙ্গে গড়ি, এই দেশ আমরা একসঙ্গে গড়ার স্বপ্ন দেখছি, তোমরাও সে স্বপ্ন দেখ। এদেশ আমার একার না, তোমারও এ দেশ। তুমি এদেশের সন্তান। আমিও এ দেশের সন্তান। তুমি আমাকে বহু কষ্ট দিয়েছে। আমি তোমারে কষ্ট দেব না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একযোগে যত তাড়াতাড়ি পারি এটাকে একটা সুন্দর দেশ বানাবো। যারা অপরাধী তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। যারা অপরাধী নয়, তাদের সৎ পথে নিয়ে আসতে হবে।’
১১ দিন আগে
ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে আ.লীগের পাশাপাশি ভারতীয় মিডিয়াও: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জঙ্গি নেতা হিসেবে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করতে শেখ হাসিনার ‘অলিগার্ক গোষ্ঠীর’ পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেছেন, ‘তারা একটা নতুন ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাচ্ছে। বিশ্বকে বোঝাতে চাইছে, তোমরা যে এটাকে গণঅভ্যুত্থান বলছ, সেটা আসলে তা না।’
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে দ্রোহের গ্রাফিতির প্রকাশনা উৎসবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও পতিত স্বৈরাচার, চোরতন্ত্রের জননী, গুমের জননী; তারা চাইছেন বাংলাদেশের যে ন্যারেটিভ, সেটাকে চ্যালেঞ্জ করতে।’
‘ওদের বার্তাগুলো খেয়াল করেন— তিন হাজার পুলিশ মারা গেছে; ড. ইউনূস জঙ্গি লিডার; ইউনূসকে জঙ্গিরা ঘিরে আছে। এগুলো কেন বলছে জানেন? এটা সুপরিকল্পিত প্রচারাভিযান। এতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও জড়িত। এর পেছনে মিলিয়ন ডলার খরচ করছেন হাসিনার অলিগার্করা।’
আরও পড়ুন: ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত আ.লীগকে বিক্ষোভ করতে দেওয়া হবে না: প্রেস সচিব
তিনি বলেন, ‘এটা বড় রকমের একটা চক্রান্ত। বিদেশিদের তারা বোঝাতে চাইছে, আমাদের দেশে যেটা হয়েছে, সেটা আসলে গ্লোবাল অর্ডারের বাইরের একটা কিছু।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘ড. ইউনূস ছয় দশক ধরে জনজীবনে আছেন এবং সবাই তাকে চেনেন। তাকে তারা এমনভাবে উপস্থাপন করছে, বাংলাদেশের যে অনন্য ইতিহাস, নতুন বাংলাদেশের ইতিহাস, এটা উল্টে দিতে চায়।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে অনেকেই ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টায় লিপ্ত আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা মিলিয়ন ডলার খরচ করছে। অথচ ড. ইউনূস কিন্তু ছয় দশক ধরে পাবলিকলি আছেন একটা স্বচ্ছ ইমেজ নিয়ে। আমাদের অপপ্রচার যারা করে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে কী ভয়াবহ ১৫টা বছর ছিল—সেটা গবেষণার মাধ্যমে সবাইকে জানানো। প্রত্যেক ক্যাম্পাসে সেমিনার করব, দেওয়ালে দেওয়ালে অন্যায়-অবিচারের কথা লিখে রাখব, যেন বাংলাদেশে এই পতিত স্বৈরাচার ও তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গরা ফিরতে না পারে।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমাদের একটি মহৎ-মহান বিপ্লব হলো, একটি মুক্তিযুদ্ধ করলাম, ভয়ঙ্কর রকমের একটি মিলিটারির বিরুদ্ধে, কিন্তু এটার ডকুমেন্টেশন নেই। খুবই দুর্বল ডকুমেন্টেশন।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবের প্রথম কয়েকটা মাসে একটা ভঙ্গুর অর্থনীতির মাঝে ছিলাম। আরেকটা হচ্ছে, তার বাজে রকমের অর্থনৈতিক পলিসি, এটাকে আমি সুইসাইডাল বলব। সেটা বাংলাদেশকে আরও গরিবীর দিকে নিয়ে গেছে।’
‘মানুষ তখন বাঁচার যন্ত্রণায় ছিল, গ্রাফিতি কী করবে আর! ফলে ১০-১৫ বছর পর দেখা গেল, ১৯৭১ সালের পরে জন্ম নিয়েও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছে, এমনকি ডাকাত হয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধা, মন্ত্রীও হয়েছে।’
আরও পড়ুন: দেশের মানুষের কল্যাণেই ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও স্বাস্থ্যকর জায়াগায় নিতে হবে: প্রেস সচিব
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী; সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, সাংবাদিক কাজী রওনাক হোসেন ও ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’ বইয়ের লেখক জি এম রাজীব হোসেন।
১৩ দিন আগে
সম্পত্তিতে হামলা চালালে ফ্যাসিবাদীরা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে: প্রধান উপদেষ্টা
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, তাদের সম্পত্তির ওপর হামলা চালালে তারা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে এবং তাদের সাজানো গল্প ছড়ানোর চেষ্টা করবে। আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি হলে তা বিশ্বে ভুল বার্তা দেবে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সরকারি বিবৃতিতে এসব কথা জানান।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, (শেখ হাসিনার এ কর্মকাণ্ড) দেশকে তার নিপীড়নের যুগ থেকে পুনরুদ্ধার হতে বাধাগ্রস্ত করছে। অবিলম্বে সম্পূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে হবে। কোনো অজুহাতে শেখ হাসিনার পরিবার ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ দলের রাজনীতিবিদদের সম্পত্তির বিরুদ্ধে বা কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে আর কোনো হামলা করা যাবে না।
তিনি বলেন, যারা (আওয়ামী লীগ নেতাদের) সম্পত্তির ওপর হামলা চালিয়েছে, এতে তাদের ক্ষোভ বোঝা যায়। কারণ তারা ও তাদের আত্মীয়-স্বজন শেখ হাসিনার শাসনামলে বছরের পর বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সরকার বুঝতে পারে যে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েও তার সন্ত্রাসীদের সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন। তবে এই বাস্তবতা বোঝার পরও, সরকার সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যে, আমাদের অবশ্যই আইন মেনে চলতে হবে। বিশ্বকে দেখাতে হবে যে আমরা আইনের শাসনকে সম্মান করি। আইনের শাসন মেনে চলাই আমাদের নতুন বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য, যা পুরোনো ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে আমাদের আলাদা করেছে। আমাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ভিত্তিকে দুর্বল করা যাবে না। আইনের প্রতি কোনো অবজ্ঞা নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তিকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
আরও পড়ুন: ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ নিয়ে সরকারের বিবৃতি
ড. ইউনূস বলেন, যেসব নাগরিক শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে জুলাই ও আগস্ট মাসে রুখে দাঁড়িয়েছিল, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের ও বিশ্বের বন্ধুদের সামনে প্রমাণ করতে হবে যে, আমরা ন্যায়বিচারের পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরস্পরের নাগরিক ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইন মেনে চলার বিষয়ে অবিচল। একটি ন্যায়সঙ্গত নতুন বাংলাদেশের পক্ষের সংগ্রামীদের এমন কিছু করা উচিত নয়, যা বর্তমান প্রতিষ্ঠানগুলোর আচরণকে আগের স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে তুলনা করার সুযোগ তৈরি করে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এ বিষয়ে সচেতন। সরকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সব বাংলাদেশির জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। যদি কেউ দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য উসকানিমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নেবে। যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী নেতারা দেশকে চরম দুর্দশার মধ্যে ফেলে গেছেন। যতদিন আমরা সজাগ থাকবো এবং নৈতিক উচ্চতা ধরে রাখবো, ততদিন তারা ফিরে আসার কোনো সুযোগ পাবে না। তাদের সম্পত্তির ওপর হামলা চালালে তারা আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের সুযোগ পাবে এবং তাদের সাজানো গল্প ছড়ানোর চেষ্টা করবে। আমরা তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় আনছি। সারাবিশ্ব আমাদের সঙ্গে আছে। আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি হলে তা বিশ্বে ভুল বার্তা দেবে।
দেশের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা যেন এমন একটি দেশ গড়ে তুলি, যেখানে সব বাংলাদেশি নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারে। এজন্য আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে। ইতিবাচক পরিবর্তনের পক্ষে গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে নিজেদের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
১৪ দিন আগে
শিগগিরই আয়নাঘর পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
যত দ্রুত সম্ভব দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম সঙ্গে নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়েও আলোচনা হয়। টিসিবির মাধ্যমে পণ্য পরিবহন, ব্যাপকহারে আমদানি ও সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া, আসন্ন রমজানে লোডশেডিং না রাখা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
১৫ দিন আগে