জুলাই
দেশে জুলাই-ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় ২৭.২২ বিলিয়ন ডলার
এক সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে চলতি অর্থবছরের ২০২২-২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ ২৭ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।
দেশে শুধুমাত্র গত দুই মাসে (নভেম্বর ও ডিসেম্বর) রপ্তানি থেকে ১০ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা দুই মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়।
আরও পড়ুন: ২০৩০ সালে লেদারপণ্যের রপ্তানি হবে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে, ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা একমাসের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ও।
২০২২ সালের নভেম্বরে রপ্তানি আয় প্রথমবারের মতো ৫ বিলিয়ন অতিক্রম করে। ডিসেম্বরে রপ্তানি আয়ে আরেকটি রেকর্ড গড়েছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় ছিল ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
রপ্তানি আয়ে যথারীতি সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে তৈরি পোশাক।
তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় ডিসেম্বরে বছরে ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় ছিল ৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এক ইউনিটের দাম বৃদ্ধির কারণে ডিসেম্বরে পোশাক খাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তিনি বলেন, ভালো দাম এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিলাস বহুল পণ্যের অনুপাত বৃদ্ধির কারণে পোশাক খাতের অবদান বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশে কারখানাগুলো চালু রাখার বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ অনেক অর্ডার পেয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পোশাক নির্মাতারা প্রতি পিস ৪০ ডলারের বেশি দামে জ্যাকেট রপ্তানি করছে, যা আগে ছিল ৩০ ডলার।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে রপ্তানি আয় ছিল ৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার এবং ৪ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। পোশাক খাতের ভালো পারফরম্যান্সের জন্য জুলাই মাসে রপ্তানি ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বছরে ৩ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ আগস্টে রপ্তানির মাধ্যমে ৪ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা বছরে ৩৬ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করেছে।
সেপ্টেম্বরে এটি গত বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন হয়েছে। কেননা উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে পোশাকের অর্ডার কমে যায়।
আরও পড়ুন: জুলাই-নভেম্বর: প্রধান দেশগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’
জনশক্তি রপ্তানির বিষয়ে ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে চুক্তি সইয়ের প্রক্রিয়া চলছে: মন্ত্রী
দেশে জুলাই-ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১০.৪৯ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা আগের বছরের একই মাসের তূলনায় ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।
রবিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে নভেম্বরে, প্রবাসীরা আইনি চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলার
কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণোদনা এবং মার্কিন ডলারের উচ্চ বিনিময় হার অফার করে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) মোট ১০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে দেশ।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসীরা ১০ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল। সে অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ ২৮৭ মিলিয়ন ডলার বেশি রেমিট্যান্স পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেসবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ ঝামেলামুক্ত প্রণোদনা ছাড়াও, বেশ কয়েকটি ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা আকৃষ্ট করার জন্য অতিরিক্ত প্রণোদনাও দিয়েছে।
আইনি চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ব্যাংকগুলি কোনও চার্জ বা ফি কাটবে না বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবাসী আয়ের ৪০ শতাংশের বেশি দেশে পাঠানো হয় হুন্ডি বা অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ
বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে ফি দিতে হবে না প্রবাসীদের
জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭৩৯: প্রতিবেদন
গেল জুলাই মাসে দেশের সড়ক ও মহাসড়কে ৬৩২টি দুর্ঘটনায় ৭৩৯ জন নিহত এবং ২০৪২ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
একই সময় ১৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত এবং সাত জন নিখোঁজ রয়েছে। ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় (রেলক্রসিং দুর্ঘটনাসহ) ৪১ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার নিহত ৪৩৯: প্রতিবেদন
এতে বলা হয়, জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ১৩৭ জন চালক ও সহকারী, ২৫১ জন মোটরসাইকেল আরোহী, নারী ১০৫, শিশু ১০৯ এবং ১১৮ জন পথচারী রয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, জুলাই মাসে মোট দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৫২টি (৩৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৯৯টি (৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ১০৯টি (১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৬৪টি (১০ দশমিক ১২ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৮টি ১ দশমিক ২৬ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬৩১ দশমিক ৬১ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা পাঁচ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা চার দশমিক ৯০ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ছয় শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ছয় দশমিক ৯৬ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে বরে দাবি করছেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
করোনায় এক মাসে ১৪২ জনের মৃত্যু
দেশে করোনাভাইরাসে শুধু জুলাই মাসেই আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৪৭২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৪২ জনের। যা এ বছরের মার্চ থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, মৃতদের মধ্যে ৫৭ জনকে টিকা নেন নি, ৭ জন প্রথম ডোজ, ৫২ জন দ্বিতীয় ডোজ এবং ২৬ জন তৃতীয় ডোজ পেয়েছিলেন। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে ৩৪ হাজার ৯০১ রোগী করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন।
দেশে মার্চ মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আট হাজার জন, মৃত্যু হয়েছে ৮৫ জনের। এপ্রিল মাসে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ১১৪ জন, মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। মে মাসে ৮১৬ জন আক্রান্ত, মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। আর জুন মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২০ হাজার ২৭৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সোমবার করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৩৪৯ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে মোট সনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৫ হাজার ৬০৬ এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ২৯২।
এদিকে মৃত্যুর হার ১.৪৬ শতাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে এবং সোমবার সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬.৯০ শতাংশে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে মহামারি শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ প্রথমবার করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন ছিল ২০ নভেম্বর।
গত বছরের ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়। সেদিন ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা সনাক্ত হয় এবং একই বছরের ১০ আগস্ট সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে
দেশে পৌঁছেছে শিশুদের করোনার টিকা
জুলাই মাসে দেশে ২৬১ জন খুন হয়েছেন: বিএইচআরসি
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) এক রিপোর্টে জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রতিদিন গড়ে আটজনকে খুন করা হয়েছে। এসময়ে দেশে মোট ২৬১ জনকে খুন করা হয়েছে, যেখানে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মাত্র ১৩৯ জন মারা গেছে।
সোমবার বিএইচআরসির রিপোর্টে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে- নিহতদের মধ্যে পারিবারিক সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানী হয়েছে (১৫), তারপরে সামাজিক সহিংসতায় মৃত্যু (২), যৌতুকের জন্য হত্যা (২) ও অপহরণের পর হত্যার (২) কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া ৩১ জনের মৃত্যু রহস্যজনক বলে জানা গেছে।
রাজনৈতিক পাঁচটি হত্যা এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক দুটি হত্যার কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্টে।
এছাড়া চলতি মাসে ধর্ষণের পর খুন হয়েছেন দুজন ভুক্তভোগী। বিএইচআরসি এই সময়ের মধ্যে সাতটি ধর্ষণের ঘটনাও রেকর্ড করেছে।
এদিকে বিএইচআরসি জানিয়েছে, সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন এবং চারজন আত্মহত্যা করেছেন।
সংগঠনটি তার জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা শাখার তথ্য এবং জাতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
সংস্থাটি বলেছে, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরনের ক্রমবর্ধমান হত্যাকাণ্ড হ্রাস করা সম্ভব।।’
আরও পড়ুন: মার্চে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৬ জন, আর করোনায় ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে: বিএইচআরসি
জানুয়ারিতে দেশে খুন হয়েছেন ১৮৫ জন: বিএইচআরসি
জুলাইয়ের শেষে শিশুদের টিকা পাওয়া যাবে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক
জুলাইয়ের শেষে শিশুদের টিকা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা.খুরশিদ আলম।
তিনি বলেন, ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের টিকা আলাদা। এটা পয়েন্ট টু এমএলের ডোজ। এই টিকার ভায়াল ও সিরিঞ্জ আলাদা। চলতি মাসের শেষে আমাদের বেশকিছু টিকা ও সিরিঞ্জ এসে পৌঁছাবে। আমরা আশা করছি, চলতি মাসের শেষে শিশুদের করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু করা যাবে।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বুস্টার ডোজ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাও করোনার টিকা নিতে পারবে: এফডিএ
ডা. খুরশিদ আলম বলেন, শিশুদের টিকার বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একটি মিটিং হবে। এরপর একযোগে সারা দেশে কার্যক্রম শুরু করব। প্রাথমিকভাবে ঢাকা থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে, পর্যায়ক্রমে সারাদেশে চালু করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার একদিনের ক্যাম্পেইনে ৭৫ লাখ টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ফিলাপ করা যাবে কিনা জানতে চাইলে ডা. খুরশিদ আলম বলেন, এটা দিন শেষে বলা যাবে। যদি এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হয় তাহলে আগামী দুই দিনও এই কার্যক্রম চলবে।
তিনি বলেন, বুস্টার ডোজ নিতে মানুষের আগ্রহ কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কারণ করোনা এখন মারাত্মক সংক্রমণ ঘটাচ্ছে না। আগে যেরকম ভয়াবহতা ছিল প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পরে সেই ভয়াবহতা না থাকায় আমরা মানুষের মধ্যে বুস্টার ডোজ নেয়ার আগ্রহ কম দেখছি।
আরও পড়ুন: সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন শিশুদের ক্ষেত্রে কার্যকর
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে বুস্টার ডোজের আগ্রহ বাড়ানোর। মিডিয়া এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু করোনার প্রকোপ আবার বাড়ছে তাই সবাইকে বুস্টার ডোজ নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
জুনের শেষে বা জুলাইয়ের ১ম সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
জুনের শেষে বা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেটরি টিম (বিডব্লিউআইটি)।
রবিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং মৌসুমী বায়ু সারাদেশে মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে রবিবার ১১টি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
আধিদপ্তরের পূর্বাভাস তথ্য মতে, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আরও পড়ুন: দেশে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জুলাইয়ে খুলনা বিভাগে করোনায় ১৩১৮ মৃত্যু
সদ্য বিদায়ী মাস জুলাইয়ে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় করোনার ভয়াবহতা ছিল সবচেয়ে বেশি। সর্বাধিক মৃত্যুর সাথে রেকর্ড শনাক্তও হয়েছে জুলাইতে।
একই সাথে সর্বোচ্চ সংখ্যাক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর ওই মাসেই এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। তবে মাসের শেষ দিকে শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মহামারিতে এক মাসে সর্বাধিক ১ হাজার ৩১৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে জুলাইয়ে। এক মাসে সর্বাধিক ৩৬ হাজার ১৫ জন রোগীও শনাক্ত হয়েছে ওই মাসেই। আর একই মাসে সর্বাধিক ৩০ হাজার ৩৮৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে করোনায় রেকর্ড ৯৯৬ শনাক্ত, মৃত্যু ৯
গত জুন মাসে বিভাগে ৪২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শনাক্ত হয়েছিল ২২ হাজার ৬২৬ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন ৭ হাজার ৪৩ জন। দুই মাসে তিনদিক বিবেচনায় জুলাইয়ে করোনার ভয়াবহ অবস্থা ছিল খুলনা অঞ্চলে। মহামারির ১৭ মাসে এখন পর্যন্ত খুলনা বিভাগে এটাই সর্বোচ্চ।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ডেল্টা বা ভারতীয় ধরনের কারণেই জুলাই মাসে এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যু ও আক্রান্তের লাগাম টানতে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে কিনা তা এখনো বলা কঠিন বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ৩১ জুলাই সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯২ হাজার ৯৩২ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৩৮৮ জনে। এ সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬৮ হাজার ৭৮৬ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: বরিশাল বিভাগে ১৮ মৃত্যু
জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে খুলনা জেলা শীর্ষে রয়েছে। খুলনায় মারা গেছেন ৬২৪ জন। এরপর কুষ্টিয়ার অবস্থান। এই জেলায় ৫৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া যশোরে ৩৪৪ জন, ঝিনাইদহে ২০২, চুয়াডাঙ্গায় ১৬১, মেহেরপুরে ১৩৭, বাগেরহাটে ১২৩, নড়াইলে ৯২, সাতক্ষীরায় ৮৫ ও মাগুরায় ৬৭ জন মারা গেছে।
বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার সুযোগ দিচ্ছে সরকার
দেশে করোনা পরিস্থিতির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কারণে দেশের অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের মানুষেরা বিনামূল্যে পুরো জুলাই মাস জুড়ে করোনা পরীক্ষার সুযোগ পাবেন।
দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায়, বেশি করোনা পরীক্ষা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এই তথ্য জানায়।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় একদিনেই সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যু
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এবং অধিখ করোনা পরীক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
পুরো জুলাই মাস জুড়ে দেশের সকল সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।
আরও পড়ুন: লকডাউন লঙ্ঘন: ঢাকায় গ্রেপ্তার ৫৫০
এদিকে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে করোনায় বৃহস্পতিবার দেশে ১৪৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যা দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে গত ২৭ জুন সর্বোচ্চ ১১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৪৬ জনে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসে আরও ৮ হাজার ৩০১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৯ লাখ ২১ হাজার ৫৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: সিলেটে হাসপাতালে শয্যা সংকট, খালি নেই আইসিইউ
এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ভাইরাসে একদিনে ১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৮ হাজার ৮২২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
জুলাই মাসে ৫০.৪৩ কোটি টাকার চোরাই পণ্য ও মাদক জব্দ
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জুলাই মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ৫০ কোটি ৪২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।