জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
আগামী দুই অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা সরকারের
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উচ্চাভিলাষী রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য এ লক্ষামাত্রা ৫ হাজার ৮৭২ বিলিয়ন এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ হাজার ৯৭ বিলিয়ন টাকা। তবে ডিজিটালাইজেশনের পরিধি বাড়ানো এবং ব্যক্তি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে কর পদ্ধতি সহজ করার ওপর এ বিষয়টি নির্ভর করছে।
এছাড়াও রাজস্ব বাড়াতে প্রত্যক্ষ কর ও মূল্য সংযোজন করের ওপর নজর দিচ্ছে সরকার। কর নেট সম্প্রসারণ ও কর কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর অব্যাহতির যে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে সে বিষয়টি যৌক্তিকতা যাচাই করতে এবং বাজেট বক্তৃতায় আরও স্বচ্ছতা আনতে সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি (২০২৪-২৫ থেকে ২০২৫-২৬) অনুযায়ী, কর রাজস্ব খাত থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার ৩৪৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ সালে ৬ হাজার ৪৬৩ বিলিয়ন টাকা আসবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগামী দুই অর্থবছরে যথাক্রমে ৫০ হাজার ৯৫ কোটি টাকা এবং ৬ হাজার ১৭১ কোটি টাকা দেবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.০৭%
আয়কর শাখা থেকে, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত সংগ্রহ হবে ১ হাজার ৭৫৩ বিলিয়ন টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ১২৩ বিলিয়ন টাকা। আমদানি শুল্ক থেকে আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৫১১ বিলিয়ন টাকা এবং ১ হাজার ৮৩০ বিলিয়ন টাকা।
আর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৮৩১ বিলিয়ন টাকা এবং ২ হাজার ২১৮ বিলিয়ন টাকা।
২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআর বহির্ভূত কর হবে যথাক্রমে ২৪৮ বিলিয়ন টাকা এবং ২৯২ বিলিয়ন টাকা।
কর বহির্ভূত রাজস্ব আদায় হবে যথাক্রমে ৫২৯ বিলিয়ন টাকা এবং ৬৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৫০০ বিলিয়ন টাকা রাজস্ব করসহ মোট ৫ হাজার বিলিয়ন টাকা। মোট রাজস্বের মধ্যে এনবিআর থেকে আসবে ৪ হাজার ৩০০ বিলিয়ন টাকা, যার মধ্যে আয়কর থেকে ১ হাজার ৪৮০ বিলিয়ন টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ১ হাজার ২৭৫ বিলিয়ন টাকা, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৪৫ বিলিয়ন টাকা।
অন্যদিকে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন টাকা এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব খাত থেকে ৫০০ বিলিয়ন টাকা আদায় করা হবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে
মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক্কলিত রাজস্ব আয় এবং পরবর্তী দুই বছরের আনুমানিক রাজস্ব আয়ে যে উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা এবং ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, তাতে রাজস্ব সংগ্রহের জোরালো আভাস পাওয়া যায়।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহে কর ও কর-বহির্ভূত অংশগুলোর মধ্যে, কর-বহির্ভূত অংশের তুলনায় কর রাজস্ব আরও ক্রিয়াশীল ও স্থিতিস্থাপক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও এই তথ্যউপাত্তে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ন্যূনতম জিডিপি থেকে সামগ্রিক রাজস্ব ১ দশমিক ৬৫ গুণ বেশি বাড়বে বলে অনুমান করা হয়েছে।
বিবৃতি অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জিডিপির রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা গত অর্থবছরের তুলনায় ১ দশমিক ২৮ গুণ বেশি এবং পরবর্তী অর্থবছরে এটি ১ দশমিক ৪০ গুণ বেশি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির কর রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা ১ দশমিক ৩৩ গুণ বেশি হবে, যা পরবর্তী অর্থবছরে ১ দশমিক ৫০ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ দশমিক ৬৬ গুণ বেশি হবে।
চলমান অর্থবছরের জন্য জিডিপির কর-বহির্ভূত রাজস্ব স্থিতিস্থাপকতা চলতি অর্থবছরে ০.৯২ গুণ বেশি, পরবর্তী অর্থবছরে ০.৪৭ গুণ বেশি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১.৫৭ গুণ বেশি হবে।
অন্যদিকে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে করের রাজস্ব প্রকৃত জিডিপির প্রবৃদ্ধির চেয়ে ৯৮ শতাংশ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নীতি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজস্ব সংগ্রহ একটি দেশের উন্নয়ন করতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ হতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১)’- অনুযায়ী রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ২০৩১ সালের মধ্যে ১৯.৫৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ২৪ শতাংশে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, তবে বাংলাদেশ সমন্বিত রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়নি। রাজস্বের একটি বড় অংশ আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংগৃহীত প্রত্যক্ষ (আয়কর) এবং পরোক্ষ কর (ভ্যাট এবং শুল্ক) থেকে। এছাড়াও এনবিআরবহির্ভূত কর এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) হিসেবেও সামান্য অংশ আসে।
এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য কম রাজস্ব সংগ্রহের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। অর্থনৈতিক কাঠামো (বৃহৎ অনানুষ্ঠানিকতা এবং অব্যাহতি), কাঠামোগত দুর্বলতা (জটিল প্রক্রিয়া এবং তথ্যের অসামঞ্জস্য) এবং সাংস্কৃতিক কারণ (কর প্রদানের প্রতি উদাসীনতা) কম রাজস্ব সংগ্রহের উল্লেখযোগ্য কারণ।
নীতিগত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে সহায়তা নিয়ে সরকার কর প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ, কর বিধি যেন সহজে বুঝা যায় এবং কর অব্যাহতি যেন যৌক্তিক হয় সে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এতে আরও বলা হয়, কর প্রশাসনের সঙ্গে সহজে যোগাযোগের সুযোগ, স্বচ্ছতা ও অনুমানযোগ্যতা আনতে ডিজিটালাইজেশন বাড়ানো এবং কর ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনার মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহে সাফল্য জোরদার করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: এডিবি'র সর্বশেষ প্রতিবেদন: ২০২৪ অর্থবছরকে বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো বছর হিসেবে পূর্বাভাস
৯ মাস আগে
ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়া যাবে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত
ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়ার সময়সীমা বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি বিবেচনায় সময়সীমা ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
বুধবার সময়সীমা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারি এই সংস্থাটি।
এর আগে, পৃথক করদাতাদের কাছ থেকে সাড়া কম পাওয়ার কারণে রাজস্ব বোর্ড রিটার্ন জমা দেয়ার সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত বাড়িয়েছিল।
আরও পড়ুন: ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষের করযোগ্য আয় থাকলেও অধিকাংশই রিটার্ন জমা দেয় না: এনবিআর কর্মকর্তা
১ বছর আগে
চট্টগ্রাম কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে ১২ ঘন্টা
চট্টগ্রাম কাস্টমসে পণ্যের শুল্কায়নসহ যাবতীয় কার্যক্রম ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের মাইগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ১৪ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে ১৫ অক্টোবর সকাল ৮টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ কারণে কাস্টমসের শুল্কায়নসহ যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, ১৪ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে ১৫ অক্টোবর সকাল ৮টা পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি পণ্য চালানের বিল অব এন্ট্রি দাখিল, শুল্কায়ন, ডিউটি পেমেন্ট ও বন্দর থেকে ডেলিভারি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে যদি কাজ শেষ হয়ে যায় তবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। তবে সময় বাড়লে তখন সমস্যা হতে পারে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফায়জুর রহমান বলেন, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আগামী ১৪ অক্টোবর অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ভার্সন ৪.৩.১ থেকে ৪.৩.৩ এ মাইগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তাই ১২ ঘণ্টা সিস্টেমের আওতায় থাকা সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে খোলা থাকবে কাস্টমস হাউস
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টমসের পক্ষ থেকে সকল অংশীজনদের বিষয়টি ই-মেইল ও এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে গতিশীল করার জন্য ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৩ সাল থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির পর এর শুল্কায়ন থেকে শুরু করে সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামসহ দেশের সব বন্দর এ সফটওয়্যারের আওতায় কাজ করে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা হয় কাকরাইলের এনবিআরের কার্যালয় থেকে। কোনো চালান ছাড়তে না চাইলে এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেটা বন্ধ করারও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা রয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা ৩৮৫ কনটেইনারের পণ্য ধ্বংস করবে কাস্টমস
চট্টগ্রামে অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় কাস্টমস কর্মকর্তার ৮ বছর কারাদণ্ড
২ বছর আগে
মেডিটেশনকে ভ্যাটমুক্ত করার আহ্বান বিশিষ্টজনদের
প্রস্তাবিত চলতি বাজেট থেকে মেডিটেশনের উপর স্থায়ীভাবে ভ্যাট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, সংসদ সদস্যসহ বিশিষ্টজনেরা। মেডিটেশন বা ধ্যানকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হিসেবে গ্রহণ করে এ সেবাকে পুরোপুরি ভ্যাটমুক্ত করার আহ্বান জানান তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, যেখান থেকে মানুষের সেবা শুশ্রূষা বা সুস্থতার একটা পদ্ধতি করা হয় মেডিটেশন হচ্ছে সেরকম একটা মাধ্যম বা পথ। এর উপর সাধারণত কোনো ভ্যাট বা ট্যাক্স হওয়ার কথা না। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভলি এবং যৌক্তিকভাবে এটা রিভিউ করা দরকার।
কবি অসীস সাহা জানান, মেডিটেশনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যগত উপকার হয়, চিন্তা-চেতনার বিকাশও হয়। তাই মেডিটেশনের উপর যেন কোনো ভ্যাট আরোপ করা না হয়। এটা যদি বন্ধ করা না হয় তাহলে এক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ নিয়েছেন, শুধু তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে-তা নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের লাখ লাখ মানুষ।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তিনি মানবিক মানুষ এবং মানবিক কাজে তার ভূমিকা সর্বত্র নন্দিত। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীরও এ বিষয়ে মনোযোগ দেয়া উচিত। এবং তিনি যদি হস্তক্ষেপ করেন তবে এ ধরনের বৈপরীত্যমূলক কাজে যে ক্ষতি হয় সে ক্ষতিটা অন্তত হবে না এবং বহু মানুষ উপকৃত হবে। মেডিটেশন আরও বেশি বিস্তৃত হোক এবং সারাদেশে ছড়িয়ে যাক, সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাক এটাই আমার প্রত্যাশা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, যারা নিয়মিত মেডিটেশন করেন, তাদের মনোজগত ও দৃষ্টিভঙ্গিতে গভীর পরিবর্তন ঘটে। তাদের হৃদয় পূর্ণ হয়ে ওঠে মমতা ও সমমর্মিতায়। এটি নিজের পরিবারের সদস্য ও আপনজনদের জন্যেই শুধু নয়, অচেনা অজানাদের জন্যেও তাদের সমমর্মিতা খুব গুরুত্ব পায়। এ অনুভূতিটা হয় সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ। ইতিবাচক এই দৃষ্টিভঙ্গি জীবনকে করে তোলে প্রশান্ত, স্থির। এতে ইতিবাচক আবেগের প্রাবল্যও বৃদ্ধি পায়। ফলে মস্তিষ্কের গঠন ও কর্মপন্থায় পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। ইলেক্ট্রো-এনসেফালোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে এমন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হয়েছে। গবেষকরাও বলছেন, নিয়মিত মেডিটেশনের কথা। শারীরিক-মানসিক সুস্বাস্থ্য অর্জনসহ সবদিক থেকে ভালো থাকার এই চর্চা মেডিটেশন বা ধ্যানের উপর কর না নিয়ে এটিকে চিকিৎসা সহায়ক হিসেবে স্থায়ীভাবে ভ্যাটমুক্ত করা হোক।
এর আগে সংসদে চলতি বাজেট বক্তৃতায় মেডিটেশনের উপর ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন কয়েকজন সংসদ সদস্য। মঙ্গলবার নীলফামারী-৪ আসনের আহসান আদেলুর রহমান, এমপি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, আপদকালীন বরাদ্দ বাড়াতে হবে, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে হবে। মেডিটেশন সেবা মানসিক স্বাস্থ্য সেবা। স্বাস্থ্য সেবা ভ্যাটের আওতামুক্ত। মেডিটেশন সেবাকেও স্বাস্থ্যসেবা হিসেবে স্থায়ীভাবে ভ্যাটের আওতামুক্ত করার আবেদন করছি।
পটুয়াখালী-৩ আসনের এসএম শাহজাদা, এমপি সংসদে তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, কোভিডের কারণে অনেকেরই অসুস্থতা দেখা দিয়েছে। এই যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এটা নেয়ার জন্য মেডিটেশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ মেডিটেশনের ওপর আবার ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এই দুটি জিনিস পরস্পর-বিরোধী হয়ে যাচ্ছে। একদিকে সিগারেটের উপর ভ্যাট কম হচ্ছে, কর কম হচ্ছে অন্যদিকে মানসিক স্বাস্থ্য চর্চার জন্য যে মেডিটেশন তার উপর আবার ভ্যাট বসানো হচ্ছে। আমি মনে করি, মানসিক স্বাস্থ্য থেকে ভ্যাট বসিয়ে ইনকামের যে টার্গেট নেয়া হয়েছে সেই টার্গেটই যদি আবার সিগারেটের উপরে আরও চড়াও করে দেওয়া হয় তাহলে সে টার্গেটটা অন্তত পূরণ হবে। এই দুটো জিনিস অর্থমন্ত্রীকে বিবেচনা করার জন্য স্পিকারের মাধ্যমে আবেদন করছি।
পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার: ড. আতিউর
ঢাকা-৮ আসনের রাশেদ খান মেনন, এমপি তার বাজেট বক্তৃতায় প্রশ্ন রেখে বলেন, মেডিটেশনকে মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বিধায় একে করের বাইরে রাখা প্রয়োজন। কোভিড প্রতিক্রিয়ায় মানুষের মন যখন বিপর্যস্ত সেখানে মেডিটেশনের আশ্রয় নিলে তাকে বেশি মূল্য দিতে হবে। কেন মাননীয় স্পিকার?
সোমবার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রহুল হক বলেন, মেডিটেশনে ট্যাক্স দেয়া হয়েছে। সেটা কমিয়ে গতবারের মতো জিরো করার জন্য আমি আহ্বান জানাই।
খুলনা-৫ আসনের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তার বক্তব্যে বলেন, মেডিটেশন পরে একটি শুল্ক ধার্য হতে যাচ্ছে। এ শুল্ক যাতে ধার্য্য না হয় সে দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া সংসদের বাজেট বক্তৃতায় মেডিটেশনের উপর থেকে ভ্যাট আরোপ প্রত্যাহার করে নেয়ার প্রস্তাব করেন বরিশাল-৪ এর পংকজ দেবনাথ এমপি।
প্রসঙ্গত, মেডিটেশন সেবার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে। অথচ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের জন্যে প্রকাশিত উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসার গাইডলাইনে যৌথভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন জীবনধারা পরিবর্তনের পাশাপাশি মেডিটেশন, যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম চর্চার কথা বলা হয়েছে।
পড়ুন: বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ: এফবিসিসিআই
২ বছর আগে
আমদানি-রপ্তানি গতিশীল করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে এনবিআর
আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এবং বাঁধাহীন নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ১৩টি সুসজ্জিত কন্টেইনার স্ক্যানার স্থাপন করতে চলেছে।
বাংলাদেশ কাস্টমস্ আইন ১৯৬৯ এর ১৯৭বি ধারায় আমদানি-রপ্তানি কনসাইনমেন্টের বাঁধাহীন নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আধুনিক নিরীক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর
এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার সুযোগও আর থাকবে না।
এই ব্যবস্থায় এক-রে বা গামা-রে ব্যবহার করে কার্গোতে প্রবেশ না করেই খুব সহজে মালামালের পরিপূর্ণ বিবরণ পাওয়া সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: শুল্ক আদায় প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করবে এনবিআর
এনবিআর সূত্র মতে, প্রায় ৬৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩টি আধুনিক কন্টেইনরা স্ক্যানার কিনবে এনবিআর। নিজস্ব অর্থায়নেই যন্ত্রগুলো ক্রয় করা হবে বলে জানা যায়। এসব যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে, স্ক্যানার, ওজন মাপার যন্ত্র, রেডিও পোর্টাল মনিটর এবং কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ইমেজিং যন্ত্র।
এনবিআরের এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানায়, প্রথম ধাপে ছয়টি যন্ত্র কেনা হবে।
৩ বছর আগে
রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪১ শতাংশ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পেরেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনা মহামারির এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেই রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা পূরণে আঞ্চলিক কার্যালয় সমূহেকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে এনবিআর।
বর্তমান পরিস্থিতি কথায় মাথায় রেখে সকলকে লক্ষমাত্রা পূরণে কাজ করতে এবং বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগযোগ করতে আঞ্চলিক অফিসগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ: আইএমএফ
২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাজেটে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হতে রাজস্ব বোর্ডের মোট আয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি ২৭ লাখ ৭৪৭ কোটি টাকা। কিন্তু এ বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা, যা মোট লক্ষমাত্রার মাত্র ৪১.৫৫ শতাংশ।
কাজে ধীরগতি
আমদানি খাত থেকে ৪৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হলেও এবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মাত্র ১৯ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। শুধু জানুয়ারি মাসেই সংগ্রহ করা হয় ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: শুল্ক আদায় প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করবে এনবিআর
গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ১৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে পেরেছিল এনবিআর এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের সংগ্রহ ছিল ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা।
মাসিক হিসেবে বর্তমান অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ১০.৩২ শতাংশ এবং প্রথম সাত মাসের হিসেবে প্রবৃদ্ধি ১০.৩৫ শতাংশ।
অপরদিকে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো থেকে ভ্যাট সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ছিল ৮২ হাজার ১৯২ কোটি। কিন্তু এবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এনবিআর মাত্র ৩৩ হাজার ৪২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। কেবল জানুয়ারি মাসেই ৫ হজার ৫৬৬ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা হয়।
গত অর্থবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা এবং শুধু জানুয়ারি মাসেই ৫ হাজার ৭১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
আরও পড়ুন: করের আওতা বাড়াতে এনবিআরের সর্বাত্মক চেষ্টা
আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো হিসেবে, মাসিক রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৯.৭৬ শতাংশ এবং প্রথম সাত মাসের হিসেবে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে ২.১২ শতাংশ।
রাজস্ব আয়ে করোনা আঘাত
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকতা ইউএনবিকে বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে লক্ষমাত্রা ঠিক রেখে রাজস্ব আদায় খুব একট সহজ কাজ না।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলেই বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অবগত আছি এবং পরিস্থিতি যেকোনো সময় ভালো বা খারাপ হতে পারে। কিন্তু লক্ষমাত্রা অর্জনে আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কাজ এগিয়ে নিতে হবে।’
বড় কোম্পানিগুলোর সাথে যোগযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমেই রাজস্ব আদায়ের একটা বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। কারণ বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই মোট রাজস্বের একটা বড় অংশ আদায় হয়ে থাকে।
রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষমাত্রা
সরকারি দাপ্তরিক নথি অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৯.৬ শতাংশ এবং ৯.৯ শতাংশ। রাজস্ব প্রবৃদ্ধির ধারাবাহি উন্নতি দেখে ধারণা করা হয়েছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হবে ১৬.১ শতাংশ। কিন্তু ২০২০ সালের জুন মাসে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকীর পরিকল্পনার শেষে দেখা যায় রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হার ছিল ১২.৭ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে এনবিআর ভুক্ত আয় ধরা হয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর বহির্ভূত আয় ধরা হয় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া শুল্কহীন আয় নির্ধারণ করা হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআর এর মোট আয়ের মধ্যে, ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা আদায় হবে আয়কর, মুনাফা এবং মূলধন কর এর মাধ্যমে। এছাড়া ভ্যাট থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা, সম্পূরকশুল্ক থেকে ৫৭ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ৩৭ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৫৫ কোটি টাকা এবং আবগারি শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করবে রাজস্ব বোর্ড।
৩ বছর আগে
গবেষণা: অনিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ব্যবস্থাই ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের কর আহরণে বড় বাধা
বাংলাদেশে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকারীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারের করজালের বাইরে রয়েছে। সম্প্রতি ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহায়তায় ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকারীদের কর জালের বাইরে থাকার কারণ এবং এক্ষেত্রে করণীয় বিষয়ে জানতে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
গবেষণার ফলাফল তুলে ধরতে সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথে একটি ওয়েবিনার আয়োজন করে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, উবিনীগ, ভয়েস এবং প্রজ্ঞা।
আরও পড়ুন: তামাকের ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে হবে: প্রজ্ঞা
গবেষক দলের প্রধান ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে), বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
আলোচনা পর্বে অংশ নেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর রিসার্চ ডিরেক্টর মারিয়া জি. কারমোনা এবং সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামস ডিরেক্টর বন্দনা শাহ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের নেতারা।
আরও পড়ুন: দেশে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বছরে ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষের মৃত্যু: প্রজ্ঞা
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর সদস্য (মূসক নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা) জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘শুধু রাজস্ব নয়, জনস্বাস্থ্যের বিবেচনায় ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ব্যবহার কমলে স্বাস্থ্যখাতে খরচ কমে যাবে।’
গবেষণার সার্বিক ফলাফলে দেখা গেছে, দেশে ৪৩৫টি জর্দা কারখানা এবং ৪৮টি গুল কারখানার মধ্যে মাত্র ২১৮টি জর্দা ও গুল কারখানা কর প্রদান করে। ৮টি বিভাগের ২৯টি জেলায় করজালের বাইরে থাকা ৮৮ জন ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকারীর (৮১ জর্দা এবং ৭ গুল) মধ্যে ৩৩ শতাংশের বৈধ ট্রেড লাইসেন্স নেই। ৯১ শতাংশ উৎপাদনকারী যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া হাতে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদন করেন। সাধারণত বাড়িতে বা ক্ষুদ্র পরিসরে কারখানায় এসব তামাকপণ্য উৎপাদিত হয়। এসব কারখানায় মোট মাসিক গ্রস টার্নওভারের পরিমাণ ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।
গবেষণায় অনানুষ্ঠানিক উপায়ে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকেই ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সের অন্যতম বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও এনবিআর এর দক্ষ জনবলের সংকট, মাঠ পর্যায়ের অবকাঠামো এবং সনাতন সরঞ্জাম ও পদ্ধতি এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার মারাত্মক ঝুঁকিতে ৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী
গবেষণার সার্বিক ফলাফলে আরও দেখা গেছে, আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্স রিটার্ন ব্যবস্থার অনুপস্থিতি এবং শক্তিশালী ট্র্যাকিং ও ট্রেসিং পদ্ধতির অভাবে এখাতে উৎপাদনকারীরা কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ পায়।
গবেষণায় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের কর পদ্ধতি সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। একইসাথে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যগুলোর মধ্যে মূল্য পার্থক্য কমিয়ে সহজলভ্যতা হ্রাস করার সুপারিশও করা হয়েছে।
অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্স রিটার্ন পদ্ধতি প্রচলন, আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ এনবিআর জনবলকে প্রশিক্ষণ প্রদান, ট্র্যাকিং ও ট্রেসিং পদ্ধতি হিসেবে এসব পণ্যে ব্যান্ডরোল ব্যবহার, অনিবন্ধিত কারখানাগুলোকে করজালের আওতায় নিয়ে আসতে স্থানীয় সরকার প্রশাসনকে ক্ষমতা প্রদান এবং তামাকপণ্য উৎপাদনকারীদের পুরস্কার প্রদান না করা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠির মধ্যে ২০.৬ শতাংশ মানুষ (২ কোটি ২০ লক্ষ) এবং ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সি বিদ্যালয়গামী শিশুদের ৪.৫ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩০.৬ কোটি টাকা যা মোট তামাক রাজস্বের মাত্র ০.১২ শতাংশ। ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং মুখ গহ্বরসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। বাংলাদেশে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন চলে অনেকটা অনিয়ন্ত্রিত এবং আইন বহির্ভূত উপায়ে। ফলে এটি অত্যন্ত সস্তা এবং সহজলভ্য রয়ে গেছে। সকল ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকারীদের করজালের মধ্যে আনা হলে এ খাতে রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
৩ বছর আগে
হোন্ডার নতুন ইঞ্জিন সংযোজন লাইন উদ্বোধন
মুন্সীগঞ্জে নিজস্ব কারখানায় নতুন ইঞ্জিন সংযোজন লাইন উদ্বোধন করল জাপানি মোটরসাইকেল ব্রান্ড হোন্ডা।
৩ বছর আগে
দেশের তহবিলে করোনাভাইরাসের ধাক্কা কতটা লাগল?
কোডিড-১৯ মহামারি এবং এর ফলে আরোপিত লকডাউন সরকারের তহবিলে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ছিল মাইনাস ৪ শতাংশ।
৩ বছর আগে
কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই থেমে যায় তদন্তের ফাঁকে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব কিছু দেখে মনে হয় ঠিকঠাক চলছে। তবে সমস্যা শুধু তদন্তে।
৪ বছর আগে