ওসি প্রদীপ
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপের সম্পদের খোঁজে ৭ দেশে দুদকের চিঠি
টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশের সম্পদের খোঁজে সাতটি দেশে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের যেসব দেশে চিঠি পাঠিয়েছে- কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১৯ সালে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকিকে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশ প্রদান করা হয়।
পরবর্তীতে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করা হয়। দুদকের অনুসন্ধানে চুমকির জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকিকে দুদকের মামলায় জামিন দেননি হাইকোর্ট
নুরুল ইসলাম বলেন, দেশের বাইরে ওসি প্রদীপের কোনো সম্পদ আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে সাতটি দেশে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ২৭ জুলাই দুদকের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেওয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজার জেলার টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ হত্যা মামলায় প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এ রায় দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুনানি ২০ জুন
১ বছর আগে
ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকিকে দুদকের মামলায় জামিন দেননি হাইকোর্ট
টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় দণ্ডিত আসামি চুমকিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তাকে জামিন না দিয়ে ২১ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে তার করা আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত করতে বলেছেন আদালত।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব শফিক।
পরে আসিফ হাসান জানান, দণ্ডের পর চুমকি আপিল করলে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আদালত আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এর মধ্যে জামিন আবেদন করে। শুনানি শেষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য আজকের দিন (সোমবার) রাখেন। আজকে আদালত মৌখিকভাবে জামিন না দেয়ার কথা বলে আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত করতে বলেছেন।
গত বছরের ২৭ জুলাই এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত করা ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদ।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুনানি ২০ জুন
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারায় চুমকিকে ১ বছর কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাস কারাদণ্ড, ২৭ (১) ধারায় প্রদীপ ও চুমকিকে ৮ বছর কারাদণ্ড, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় প্রদীপ ও চুমকিকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও চার কোটি টাকা জরিমানা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় প্রদীপ ও চুমকিকে দুই বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ২ মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
প্রত্যেক কারাদণ্ড একসঙ্গে চলবে।
গত বছরের ১৮ জুলাই চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালতে এ মামলায় দুদকপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর বিচারক ২৭ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়। তদন্তের পর টাকার অংকে কিছু পরিবর্তন আনা হয়।
২০২১ সালের ২৮ জুলাই দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আসামি প্রদীপের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। সম্পদ বিবরণীতে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেয়া এবং ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার শুরু থেকে চুমকি পলাতক থাকলেও গত বছরের ২৩ মে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিন তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সেই থেকে কারাবন্দি চুমকি কারন।
এদিকে, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
এই হত্যা মামলায় গত বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রদীপসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন
১ বছর আগে
ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুনানি ২০ জুন
মেজর অব. সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
রবিবার দুপুরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায়চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত আগামী ২০ জুন তাদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেন।
এ সময় আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণ উপস্থিত ছিলেন।
তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত ও রতন চক্রবর্তী বলেন, প্রদীপ ও চুমকি কারণের পক্ষে দুজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষ্য দিয়েছেন বোয়ালখালীর সারোয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন ও ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল জলিল। ২০ জুন আদালত যুক্তিতর্কের দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে আসামি উচ্চ আদালতে আবেদন করে মামলা থেকে অব্যাহতি চান। কিন্তু হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেন।
এর আগে ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রম-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। পরের বছরের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত।
গত ২৩ মে আদালতে ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারন আত্মসমর্পণ করেন।
নগরের কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা এলাকার একটি ছয়তলা বাড়ি প্রদীপ কুমার দাশ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপন করার জন্য শ্বশুরের নামে নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ওই বাড়িটি প্রদীপ দাশের শ্বশুর তার স্ত্রী চুমকি কারণের নামে দান করেন। দানপত্র দলিল হলেও বাড়িটি প্রদীপ দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণ কর্তৃক অর্জিত।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় ওসি প্রদীপের সাক্ষ্যগ্রহণ সাময়িক স্থগিত
আয়কর রির্টানে আসামি চুমকি কারণের কমিশন ব্যবসা ও বোয়ালখালী উপজেলায় ১০ বছরের জন্য লিজ নেয়া পাঁচটি পুকুরে মাছের ব্যবসার যে আয় দেখানো হয়েছে তাও স্বামী প্রদীপ দাশের অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে ভুয়া ব্যবসা প্রদর্শন করে দেখানো হয়েছে। প্রদীপ তার স্ত্রীকে কমিশন ব্যবসায়ী ও মৎস্য ব্যবসায়ী সাজিয়ে অবৈধ সম্পদ বৈধ করার চেষ্টা করেছেন।
অভিযোগপত্রে যেসব সম্পদের উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হলো- নগরের পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে সেমিপাকা ঘর, ৪৫ ভরি সোনার গহনা, একটি করে কার ও মাইক্রোবাস এবং কক্সবাজারে ফ্ল্যাট। মামলায় ২৯ জনকে সাক্ষী করা হলেও দুদকের পক্ষে ২৪ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২ বছর আগে
ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন
সেনাবাহিনীর (অবসরপ্রাপ্ত) মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আদালতে পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। আগামী ২৭ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষীর দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ নিয়ে মোট ১৭ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
সাক্ষীরা হলেন- গৃহায়ণ ও গণপূর্তের প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, চন্দিমা শীল, মাহমুদুল হাসান, জুলিয়ান সেতেরা ও বিআরটিএ’র মোটরযান শাখার পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলার অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন ওসি প্রদীপের
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে গৃহায়ণ ও গণপূর্তের চার প্রকৌশলী ও বিআরটিএর এক কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্তের চার প্রকৌশলী ওসি প্রদীপের পাঁচলাইশ থানার ষোলশহরের সেমিপাকা ঘরগুলো পরিমাপের প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। বিআরটিএর কর্মকর্তা আদালতে দুটি গাড়ির প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এই পাঁচ জনসহ প্রদীপের বিরুদ্ধে মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন আদালত।
গত ২৯ জুন দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত প্রদীপ কুমার দাশের অবৈধ সম্পদ দেখভালের দায়িত্ব কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে দেন। ২০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলাটির এজাহারে উল্লেখিত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকিকেও আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২ বছর আগে
সিনহা হত্যা: যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির আপিল শুনবেন হাইকোর্ট
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মার খালাস চেয়ে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুল ইসলাম আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৩১ জানুয়ারি বিকালে সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া ছয় আসামি সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনার পাঁচদিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২য় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০২১ সালের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ৩১ জানুয়ারি রায় দেন আদালত।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলার রায় সোমবার
সিনহা হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু
২ বছর আগে
দুদকের মামলায় ওসি প্রদীপের সাক্ষ্যগ্রহণ সাময়িক স্থগিত
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত ওসি ও সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশের সাক্ষ্যগ্রহণ সাময়িক স্থগিত করেছেন আদালত।তার আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে শুনানি শেষে তা স্থগিত করা হয়। তবে তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ চলবে।বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে আদালতে মামলার বাদী ও দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবনএকই দিনে মামলার আসামি প্রদীপ দাশের সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল। এজন্য বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। তবে, এদিন প্রদীপের আইনজীবী তার সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিতের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রদীপের সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রাখেন।বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ বলেন, ‘গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। গত ১৭ জানুয়ারি মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। তবে, ওইদিন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। আজ (বৃহস্পতিবার) সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন মামলার বাদী রিয়াজ উদ্দিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি মামলার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও নথিপত্র আদালতে উপস্থাপন করেছেন। তবে হাইকোর্টে প্রদীপ দাশ এ মামলার অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে একটি আবেদন করেছিলেন। সেই সূত্র ধরে প্রদীপের সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিতের আবেদন করেন তার আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন।’প্রদীপ কুমার দাশের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত বলেন, প্রদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, সেটা অবৈধ। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে। সেটা শুনানির জন্য রয়েছে। তাই সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রাখার আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত করেছেন।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: খালাস চেয়ে ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের আপিলআদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৬ জুলাই প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়টি। একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর আসামি প্রদীপের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। এরপর ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়।দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে প্রদীপের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর সম্পদের হিসাব দাখিলের জন্য নোটিশ করা হলে একই বছরের জুনে তারা সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। এরপর প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন।
২ বছর আগে
সিনহা হত্যা: খালাস চেয়ে ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের আপিল
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলী খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছেন। মঙ্গলবার আসামিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেছি। আপিল আবেদনে নিম্ন আদালতের দেয়া ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে।
গত ৩১ জানুয়ারি মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল।
এ মামলায় আদালত লিয়াকত ও প্রদীপ কুমারের মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। বাকি সাত আসামিকে খালাস দেন। পরে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফেরেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন: মেজর সিনহা হত্যা: ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনার পাঁচদিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২য় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০২১ সালের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এ মামলায় মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: প্রদীপ ও লিয়াকত এখন চট্টগ্রাম কারাগারে
সিনহা হত্যা: সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে যাবে প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
২ বছর আগে
কাশিমপুর কারাগারে প্রদীপ ও লিয়াকত
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার স্থানান্তর করা হয়েছে।
বুধবার রাতে তাদের কাশিমপুর কারাগার হাই সিকিউরিটি ইউনিটের কনডেম সেলে আনা হয়।
আরও পড়ুন: ওসি প্রদীপ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকত ৭ দিনের রিমান্ডে
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে হাই সিকিউরিটি ইউনিটে আনা হয়েছে।
প্রদীপ কুমার ও লিয়াকত আলী ফাঁসির দণ্ডাদেশের পর কক্সবাজার কারাগারে ছিলেন। সেখান থেকে তাদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার ও বুধবার রাতে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে আনা হয়।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: টেকনাফ থানার সেই ওসি প্রদীপের আত্মসমর্পণ
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা নিহত হন। নিহতের চার দিন পর ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন।
মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে ৩১ জানুয়ারি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
২ বছর আগে
সিনহা হত্যা: সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে যাবে প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
আগামী সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদন্ডাদেশ হাইকোর্টে যাবে। কক্সবাজারের সিনিয়র আইনজীবী ও সিনহা হত্যা মামলার বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, কোন ব্যক্তি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত হলে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী মামলার রায় হওয়ার সাত দিনের মধ্যে সমস্ত নথি, কেস ডায়েরি, সাক্ষীপ্রমাণাধীসহ কাগজপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এ সময় ‘লালসালু’ দিয়ে বিশেষ ধরনের প্যাকেট করে এসব কাগজ পত্র হাইকোর্টে পাঠাতে হয়। একারণে নিয়মানুযায়ী সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মামলার রায়ের কপিও সেভাবে হাইকোর্টে যেতে পারে বলে।
এডভোকেট জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির আদেশ হাইকোর্টকে অবহিত করতে হয়। হাইকোর্টকে অবহিত না করা পর্যন্ত কার্যকর হবে না। এছাড়াও আসামি পক্ষ তো আপিল করতে পারে। মামলায় সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার এখতিয়ার সবার রয়েছে।’
৩১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে কনডেম সেলে রাখা হচ্ছে। খাবার থেকে শুরু করে সকল সুযোগ-সুবিধা জেল কোড অনুযায়ী হবে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার নেছার আলম।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক (বরখাস্ত) লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। এছাড়াও ছয় আসামি এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে চারজন কনস্টেবল সাগর দেব, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেয়া হয়। অনাদায়ে ছয় মাসের জেল দেয়া হয়। এছাড়াও এপিবিএন’র এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত। সন্ধ্যায় পুলিশ ভ্যানে করে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয় তাদের।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্যচিত্র নির্মাণের শুটিং শেষে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে রিসোর্টে ফেরার পথে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানা। ঘটনার পাঁচদিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে হত্যা মামলা করেন নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আসামি করা হয় প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যকে। টানা চার মাস তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব। দেড় বছরে এ মামলার রায় দেয়া হলো।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলার রায় পড়া শুরু
২ বছর আগে
রায়ে সন্তুষ্ট নই, তবে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে: মেজর সিনহার বোন
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে, তবে সন্তুষ্ট নয়। রায় কার্যকর হলেই সন্তুষ্ট হবো।’
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও সাবেক পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেবের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি সাতজন আসামি খালাস পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
ছেলে হত্যার রায় শুনতে সিনহার মা নাসিমা আক্তার মেয়ে শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসসহ কক্সবাজারে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বলেন, ‘এ রায়ে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। বিশেষ করে প্রধান দুই আসামি সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত লিয়াকত ও প্রদীপের ফাঁসির রায় হবে এমন প্রত্যাশা ছিল, আজ তা পূরণ হয়েছে। তখনি সন্তুষ্ট হবো রায় যখন কার্যকর হবে। ’তিনি এই মামলায় সিনহার পক্ষে যে সব আইনজীবী লড়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সেই সঙ্গে মামলার তদন্তকারী সংস্থার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এ রায়ের মাধ্যমে পরিস্কার হয়েছে আইন তার যথাযথ নিয়মে চলছে। আইনে কেউ বাধা হতে পারেনি। কেউ যেন আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার না হন। প্রত্যেকেরই আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার আছে। এই রায়ে তাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘিরে কক্সবাজারে নিরাপত্তা জোরদার
২ বছর আগে