২১ আগস্ট
২১ আগস্ট মামলার রায় দেখে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: অ্যাটর্নি জেনারেল
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ‘রায়ের কারণ দেখে ও নির্দেশনা নিয়ে তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপিল করা উচিত বলে মনে করি।’
রবিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে আজ (রবিবার) রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে ও আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়। ফলে এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ দণ্ডিত সব আসামি খালাস পেয়েছেন।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ রায় দেন। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গত ২১ নভেম্বর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ শেষ করেন। সেদিন আদালত মামলা দুটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। আজ তা ঘোষণা করা হয়।
রায়ের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সংবিধান থেকে ‘জাতির পিতা’, ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ বাতিল চান অ্যাটর্নি জেনারেল
‘শোনা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে রায় দেওয়া হয়েছিল। কেউ স্বচক্ষে দেখেছেন— এ মর্মে কোনো প্রমাণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে নির্যাতনের মাধ্যমে। মুফতি হান্নান দুটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ৪০০ বছরের ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশে দ্বিতীয় জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে কাউকে সাজা দেওয়ার নজির নেই।’
এ আইনজীবী আরও বলেন, ‘আদালত বলেছেন, দ্বিতীয় জবানবন্দি তিনি যেটি বলেছিলেন, সেটিও পরে মুফতি হান্নান প্রত্যাহার করেন। এজন্য এ জবানবন্দির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। এজন্য এই অভিযোগ আমলে নেওয়ার ভিত্তিতে যে সাজা দেওয়া হয়েছে, তাকে অবৈধ বলেছেন হাইকোর্ট।’
রায়ের বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘এ মামলার দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে যাদের আসামি করা হয়েছে, সেটি আইনিভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ দ্বিতীয় অভিযোগপত্র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া হয়নি, সরাসরি দায়রা জজ আদালতে দেওয়া হয়েছে। সেজন্য ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী এই অভিযোগপত্র গৃহীত হতে পারে না।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন।
রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ ছাড়াও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
রায়ের পর ২০১৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলা দুটির নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। এটি সংশ্লিষ্ট শাখায় ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
আরও পড়ুন: সাহস থাকলে ফিরে এসে বিচারের মুখোমুখি হোন: হাসিনাকে অ্যাটর্নি জেনারেল
আইনজীবীরা বলেন, কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিলসহ বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর হাইকোর্টে গত ৩১ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ও হত্যাযজ্ঞের ঘটনার তদন্তকে ভিন্ন খাতে নিতে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নানা তৎপরতা চালায় বলে সেসময় অভিযোগ ওঠে।
পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ-সংক্রান্ত মামলা দুটির (হত্যা ও বিস্ফোরক) নতুনভাবে তদন্ত শুরু করে। এরপর ২০০৮ সালে ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তাতে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ওই হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত হয়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারক এখনও গুরুত্বপূর্ণ পদে: অ্যাটর্নি জেনারেল
৩ সপ্তাহ আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার নীল নকশা: ডেপুটি স্পিকার
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করার একটি নীল নকশা।
তিনি বলেন, আগস্ট মাস বাঙালি জাতির রক্তক্ষরণের মাস। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় সংঘটিত হয় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা।
আরও পড়ুন: মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: ডেপুটি স্পিকার
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার কৈটোলায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বালিকা বিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই অপচেষ্টা চালায়। গ্রেনেড হামলার পর উপর্যুপরি গুলি করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে একটি গোষ্ঠী এদেশে পাকিস্থানি সরকার কায়েম করতে চেয়েছিল। তারা এদেশের উন্নয়নকে পেছনে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে দেশে ফিরে এলেন। জাতির পিতা হত্যার বিচার করলেন এদেশের মাটিতেই। এছাড়া বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন: আহমেদ ফিরোজ কবিরের মায়ের মৃত্যুতে ডেপুটি স্পিকারের শোক
সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের যোগ্য সম্মান দিতে হবে: ডেপুটি স্পিকার
১ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার সাজানো নাটক: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার প্রক্রিয়া ‘সাজানো নাটক’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
সোমবার (২১ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সম্মেলনে তিনি আরও দাবি করেন, গ্রেনেড হামলায় তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য নেতারা কোনোভাবেই জড়িত নন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আমি বলতে চাই পুরো বিষয়টি (বিচার প্রক্রিয়া) একেবারে একটি সাজানো নাটক।’
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের নাম এ মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কাছে রেকর্ড আছে কোনো সঠিক তদন্ত ছাড়াই এটি (বিচার) করা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, মামলার প্রথম তিনটি ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্টে (এফআইআর) তারেকের নাম ছিল না।
তিনি আরও বলেন, পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আখন্দকে পুনরায় নিয়োগ দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) করা হয়েছে। ‘ওই ভদ্রলোক এফআইআরে তারেক রহমানের নাম দিয়েছেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, পুরো তদন্তে কোথাও তারেকের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
তিনি বলেন, প্রায় ১৪৫ দিন রিমান্ডে রাখার পর মুফতি হান্নানকে শুধুমাত্র তারেকের নাম বলতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি তা অস্বীকার করেন এবং এ বিষয়ে হলফনামা দেন।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলকে নির্মূলে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাস চালাচ্ছে সরকার: ফখরুল
ফখরুল বলেন, তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের ২১ আগস্টের সমাবেশের নির্ধারিত স্থান অন্য জায়গায় স্থানান্তর করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি গ্রেনেড হামলার ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। সেই নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। আমরা ২১ আগস্টের ঘটনার নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি অবশ্যই একটি জঘন্য ঘটনা এবং এটা নিন্দনীয়।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিএনপি নেতাদের ‘বিনাকারণে’ মামলায় জড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি তারেক রহমান, বিএনপির আব্দুস সালাম পিন্টু বা লুৎফুজ্জামান বাবর এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। রাজনৈতিক কারণে তাদের এর সঙ্গে জড়ানো হয়েছে।’
২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ১ হাজার মানুষ আহত হয়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার একটি আদালত ৪৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এরমধ্যে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
তারেক রহমানসহ ১৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্যেই বোঝা যায় আরেকটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে: রিজভী
আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে বিদেশের কোনো দেশ এগিয়ে আসবে না: ফখরুল
১ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে চান মাহাবুবুর রশিদের মা-বাবা
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মাহাবুবুর রশিদের বৃদ্ধ মা-বাবা ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছেন।
রবিবার কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ীর বাড়িতেই ছিলেন নিহত মাহাবুবুরের বৃদ্ধ মা হাসিনা বেগম (৭৫) ও বাবা হারুন অর রশিদ (৮৫) দম্পতি।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী আজ
বৃদ্ধ মা-বাবার চোখে ছেলের স্মৃতি এখনো অমলীন হয়ে রয়েছে। ছেলের নিহত হবার খবর মায়ের বুক কেঁপে উঠেছিল। ছেলের শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন বাবা। আজও সে অস্থিরতা কাটেনি। ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তি ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন হলে হয়তো কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।
মাহাবুবুর রশিদ সংসারের একমাত্র উপার্জকারী ছিলেন। তার অবর্তমানে হারুন অর রশিদের দুঃখ ১২ মাস ধরেই। বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে মাসে ১৫-১৬ হাজার টাকার ওষুধ লাগে।
মেয়ের পাঠানো টাকা ও বাড়িতে গাভীর দুধ বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। এ টাকারই একটা অংশ জমিয়ে ছেলে মাহাবুবুর রশিদের শাহাদাতবার্ষিকী পালন করে থাকেন।
ছেলের তৈরী করা ঘরই তাদের শেষ আশ্রয় হয়েছে। মাঝে মাঝেই মন চাইলে ছেলের কবরের পাশে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। আর আল্লাহর কাছে রায় বাস্তবায়নের কামলা করেন। কে কি লিখে তাদের বিপদে ফেলেন এই ভয়ে সাংবাদিক দেখলে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকার দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
কেমন আছেন জানতে চাইলে বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, অনেক দিন হয়েছে কিন্তু খুনিদের শাস্তি বাস্তবায়ন হলো না। তবুও মরার আগে খুনিদের ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন দেখতে চান।
রায় বাস্তবায়নে বিলম্ব বিষয়ে তিনি বলেন, তার শ্রষ্টাই ছেলের খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর করবেন। শৈশবের স্কুলের পাশে শায়িত ছেলে মাহাবুবুর রশিদের সমাধির অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দাবি জানান তিনি।
১ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী আজ
ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী দেশবাসী আজ (সোমবার) এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার অঙ্গীকার নিয়ে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছে।
২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা স্পষ্টতই লক্ষ্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ অন্তত ২৪ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৩ শতাধিক। শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণ বৈকল্য সমস্যায় পড়েন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকার দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
১৪ বছর পর গ্রেনেড হামলা মামলায় তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত।
গ্রেনেড হামলায় জড়িত থাকার দায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো সারা দেশে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বেদীতে গ্রেনেড হামলায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
এরপর বেলা সোয়া ১১টায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ‘মানবাধিকার প্রচার করতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের বর্বরতা সম্পর্কে জানতে হবে’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান ছাড়াও সেদিন নিহত হন ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, হাসিনা মমতাজ রিনা, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। গ্রেনেডের স্পিন্টারের সঙ্গে লড়াই করে ঢাকারমেয়র মোহাম্মদ হানিফসহ আরও কয়েকজন পরাজিত হন।
গুরুতর আহতরা হলেন- শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, আইনজীবী সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ হানিফ, অধ্যাপক আবু সাঈদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টের পেছনে জিয়া, ২১ আগস্টের পেছনে তারেক: তথ্যমন্ত্রী
১ বছর আগে
‘মানবাধিকার প্রচার করতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের বর্বরতা সম্পর্কে জানতে হবে’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা’র ইতিহাস তালিকাভুক্ত করেছেন।
তিনি ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সম্পূর্ণ সম্মতিতে’ যে নৃশংস হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছিল সেগুলো তুলে ধরেন। যিনি (জিয়াউর রহমান) পরে খুনিদের বিদেশে বিভিন্ন মিশনে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন।
রবিবার (১৩ আগস্ট) এক টুইটে শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘১৫ আগস্ট ১৯৭৫: জাতির জনক (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে হত্যা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সম্পূর্ণ সম্মতিতে নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। পরে তিনি তাদের (খুনিদের) বিদেশে বিভিন্ন মিশনে রেখে তাদের পুরস্কৃত করেন।’
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী, রাজাকার, আলবদর, আল-শামস এবং তাদের সহযোগীরা ৯ মাসে ৩ মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছে, ২ লাখেরও বেশি নারীর সম্ভ্রমহানি করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে এসে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজকের ‘বিএনপি-জামায়াতে’ সেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগীরা রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা সারাদিনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রতিফলিত করেনা: শাহরিয়ার
শাহরিয়ার আলম ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট যে বর্বরতা সংঘটিত হয়েছিল তার কথাও উল্লেখ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছেলের নেতৃত্বে রাষ্ট্রযন্ত্র ২৪ জনকে হত্যা করেছিল এবং ৫০০ জনের বেশি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে আহত করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হতে চায় এবং মানবাধিকারের প্রচার করতে চায়; তবে তাকে এই ঘটনা এবং এগুলোর প্রভাব সম্পর্কে আরও জানতে হবে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার টুইটে আরও লিখেছেন, ‘এসব শহীদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে সাহায্য করার জন্য ন্যায়বিচার করতে দিতে হবে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, ‘বলা বাহুল্য, এই ভয়াবহ ঘটনাগুলো কিছু রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ এবং অন্যদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নির্ধারণ করেছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির এক দফা দাবি সংবিধানের পরিপন্থী: শাহরিয়ার আলম
পশ্চিমাদের অবশ্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হওয়া পাক গণহত্যার কথা স্বীকার করতে হবে: শাহরিয়ার
১ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: ডেথরেফারেন্স ও আপিল শুনানির দিন ধার্য হতে পারে সোমবার
একুশে আগস্টের আলোচিত গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির দিন সোমবার ধার্য হতে পারে। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলা সম্পর্কিত ডেথ রেফারেন্স ও আপিলগুলো রবিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের কার্যতালিকায় ছিল।
কিন্তু এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলার বিষয়টি কার্যতালিকায় না থাকায় সোমবার তা তালিকার্ভূক্ত করতে বলেন আদালত।
রবিবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন এসব ডেথরেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হতে পারে।
তিনি বলেন, হত্যা মামলাটির ডেথ রেফান্স আদালতের লিস্টে ছিল। আদালত বিস্ফোরক আইনের মামলাটিও লিস্টে আনতে বলেছেন। সোমবার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলগুলোর শুনানির দিন করা হতে পারে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ওই ঘটনা ঘটে। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক , সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।
ঘটনার পরদিন এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলা দুটির বিচার শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। আর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় আরও ১১ আসামিকে। যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া এই ১৯ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ অনেকেই পলাতক।
পরে একই বছরের ২৮ অক্টোবর নিয়ম অনুযায়ী আসামির মৃত্যদণ্ড অনুমোদনের জন্য এ মামলার রায়ের কপিসহ ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার যাবতীয় নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়।
ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
গত বছরের ১৬ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক বিজি প্রেস থেকে তৈরির পর সুপ্রিম কোর্টে এসে পৌঁছায়। গত আগস্টে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল, জেল আপিল দ্রুত শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পরে এ মামলার শুনানির জন্য হাইকোর্টে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা
গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফ।
পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।
তাদের দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা
এছাড়া পুলিশের সাবেক দুই মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অন্য একটি ধারায় আসামি খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
মামলার ৪৯ আসামির মধ্যে রায় দেয়ার সময় ৩১ জন কারাগারে ছিলেন। পলাতক ছিলেন বাকি ১৮ জন। পলাকত আসামিরা হলেন- তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, এটিএম আমিন, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, খান সাঈদ হাসান, ওবায়দুর রহমান, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, রাতুল বাবু, মোহাম্মদ হানিফ, আবদুল মালেক, শওকত ওসমান, মাওলানা তাজউদ্দিন, ইকবাল হোসেন, মাওলানা আবু বকর, খলিলুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম।
২ বছর আগে
২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকার দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করতে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কোনো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে এ ধরনের জঘন্য হামলা হতে পারত না। লক্ষ্য ছিল আমাকে মেরে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা।’
রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হামলায় দলের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে ফিরলেও, তার শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া হত্যাকাণ্ডের পর দুই খুনিকে দেশ ছাড়তে সহায়তা করেছিলেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য রাজনৈতিক সহিংসতার একটি।
তিনি বলেন, ‘এটাই বাস্তবতা। অনেকেই জানেন ডালিম ও রশিদ ঢাকায় ছিলেন। আমি জানি না সবাই এই বিষয়ে জানতেন কি না। তাদের আত্মীয়স্বজন আছে, আপনারা তা সহজেই জানতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যখন জানতে পারে যে হামলায় আমি মারা যাইনি, তখন তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
তৎকালীন বিএনপি সরকার উদ্যোগ না নিলে তাদের এখানে কে নিয়ে এসেছে? তারা এসেছিল এবং তারা চলে গেছে।
পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী আজ
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, হত্যা করা বিএনপির চরিত্র এবং এখন আমাদের তাদের সাথে বসতে হবে এবং তাদের আতিথেয়তা দিতে হবে যাতে তারা নির্বাচনে আসে। কেন? আমি বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশে কি আর কোনো মানুষ নেই?
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে এখনই সন্ত্রাসের রাজনীতি ও উন্নয়নের মধ্যে থেকে বেছে নিতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা সন্ত্রাসের যুগে ফিরে যেতে চায় নাকি বর্তমান উন্নয়নের পথে থাকতে চায়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর তিনি ওই হামলায় আহত ও নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: রায় কার্যকর দেখে মরতে চান রেনু
২ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী আজ
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তনয়া এবং দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগের র্যালিতে নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী আজ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো নানা কর্মর্সূচির মধ্য দিয়ে গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী পালন করছে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
হামলায় দলের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে ফিরলেও, তার শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হামলার প্রায় ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে গ্রেনেড হামলার মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালাত।
এছাড়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: রায় কার্যকর দেখে মরতে চান রেনু
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো সারাদেশে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ উপলক্ষে আজ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্ট শহীদদের স্মরণে বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দিনব্যাপী রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে যানজট পরিহার করার জন্য প্রেসক্লাব, পল্টন ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় যাতায়াত এড়িয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে নগরবাসীকে অনুরোধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দিবসটির শহীদদের স্মরণে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের সম্মান জানাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আওয়ামী লীগের সকল নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভাকাঙ্খী ও সর্বস্তরের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনকে দিবসটি পালনের আহ্বান জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওই দিন হামলায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন লোক নিহত হন। এছাড়া আহত হন আরও পাঁচ শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
সেদিনের হামলায় যারা নিহত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতার নিরাপত্তা কর্মী ল্যান্স করপোরাল (অবসরপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রশিদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আব্দুল কুদ্দস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুন্সি, হাসিনা মমতাজ রীনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম, মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মো. হানিফ, আবুল কাশেম, জেহাদ আলী, মমিন আলী, এম শামছুদ্দিন এবং ইসহাক মিয়া।
এছাড়া গ্রেনেড হামলায় স্প্রিন্টারের আঘাতে মারাত্মক আহত হয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ হানিফ, অধ্যাপক আবু সায়্যিদ এবং এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম।
আরও পড়ুন:২১ আগস্ট রাজধানীতে যান চলাচল সীমিত
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকীতে আ.লীগের নানা কর্মসূচি
২ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: রায় কার্যকর দেখে মরতে চান রেনু
‘কী যে কষ্ট বয়ে বেড়াচ্ছি, বোঝাতে পারবো না। বিচার হয়েছে, খুশী হয়েছি। কিন্ত অপেক্ষায় আছি, রায় কার্যকরের। মরার আগে বিচারের রায় কার্যকর দেখে মরতে চাই। আল্লায় যেন সেই পর্যন্ত হায়াতে বাঁচাই রাখেন’- একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার শিকার শেরপুরের সৈয়দা উম্মে কুলছুম রেনু সেদিনের বিভীষিকার কথা স্মরণ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি তুলে ধরেন।
শুক্রবার বিকালে শেরপুরে নকলা উপজেলার ধানহাটি এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা উম্মে কুলছুম রেনুর সঙ্গে ইউএনবি’র প্রতিবেদকের কথা হয়।
গ্রেনেড হামলার ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রেনু বলেন, ‘ওটা ছিল জামাত-বিএনপি জোট সরকারের পরিকল্পিত গ্রেনেড হামলা। একুশে আগস্ট যখন গ্রেনেড হামলার শিকার হই, তখন আমি ছিলাম ঢাকা মহনগর দক্ষিণ মহিলা আ’লীগের সদস্য। আইভী আপা (তৎকালীন মহিলা আ’লীগের সভাপতি আইভী রহমান) আমাকে খুব স্নেহ করতেন। তার সঙ্গে সঙ্গেই থাকতাম। হামলায় আইভী আপা শহীদ হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আল্লাহর বিশেষ রহমতে বেঁচে যান। আমিও সেই গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছি।’
রেনু বলেন, ‘ভয়ংকর ছিল গ্রেনেড হামলার সেই ঘটনাটি। আমি মঞ্চের কাছেই বসেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ, চারদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন, চিৎকার, চেঁচামেচি। চোখ দু’টি মরিচের মতো জ্বলছিল। তারপরই চোখেমুখে অন্ধকার। এরপর আর আমার কিছু মনে নেই।’
তিনি বলেন, ‘তখন আমি কোমায় ছিলাম। ১৪ দিন পর আমার জ্ঞান ফিরলে দেখি ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে। শুনেছি কে যেন আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে রেনাল জেনারেল হাসপাতাল। আমার স্মৃতিশক্তি তখন লোপ পেয়েছিল। কিছুই মনে করতে পারিনি। মাথায়-পায়ে গ্রেনেডের স্প্রিন্টার ঢুকেছিল। অপারেশনের পর সাভারের সিআরপিতে আট মাস ছিলাম। তারপর কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরি।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকীতে আ.লীগের নানা কর্মসূচি
রেনু আরও বলেন, ‘পায়ে এখনও সাতটি স্প্রিন্টার রয়েছে। সেগুলো মাঝেমধ্যেই জ্বালাতন করে। অসহ্য সে যন্ত্রণা। নিজেই এখন ফিজিওথেরাপি করে কোনমতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি। জীবনে যতদিন বাঁচবো, এ নরক যন্ত্রণা নিয়েই বাঁচতে হবে।’
তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলার বিচার হয়েছে। যেদিন রায় হয়েছে, সেদিন অঝোরে কেঁদেছি। চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। এখন বিচারের রায় কার্যকর দেখে মরতে চাই।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (তৎকালীন বাংলাদেশ আ’লীগের সভাপতি) হত্যার উদ্দেশ্যে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর জনসভায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পরিচালিত হয়েছিল নারকীয় গ্রেনেড হামলা। ওই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন উম্মে কুলছুম রেনু। ওই হামলায় নিহত আইভী রহমানসহ অন্যান্যদের পাশেই গুরুতর আহত, রক্তাক্ত, অজ্ঞান অবস্থায় পড়েছিলেন উম্মে কুলছুম রেনু। সে সময়কার পত্র-পত্রিকায় মৃতদের সঙ্গে তারও নিথর দেহের ছবি ছাপা হয়। পরে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের স্প্রিন্টার নিয়ে এখনও যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্বাভাবিক জীবনযাপন অনেকটা সূদুর পরাহত।
আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’দফায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ২০ লাখ টাকা এফডিআর হিসেবে অনুদান দেয়া হয় তাকে। সেই অনুদানের টাকার লভ্যাংশের পুরোটা দু’বছর আগে তিনি জেলা প্রশাসকের করোনা প্রতিরোধ সহায়তা তহবিলে দান করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
নকলা উপজেলা পরিষদের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা উম্মে কুলছুম রেনু বর্তমানে নকলা উপজেলা আ’লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) মহিলা আ’লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট হামলায় নিহতদের লাশ গুমের চেষ্টা করেছিল খালেদা সরকার: প্রধানমন্ত্রী
২১ আগস্ট রাজধানীতে যান চলাচল সীমিত
২ বছর আগে