আইনজীবী সমিতি
বিএনপির ২৪ আইনজীবীর নামে মামলা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) ইফতার ও দোয়া মাহফিলে হামলা, ভাঙচুর হুমকি ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০/৬০ জন বিএনপিপন্থী আইনজীবীর নামে মামলা করা হয়েছে।
রবিবার (৯ এপ্রিল) শাহবাগ থানায় এজাহার দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান।
এছাড়া মামলার আসামিরা সবাই সমিতির বিএনপি সমর্থক আইনজীবী।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
জানা যায়, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ছাড়া অন্যরা হলেন-ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজি মো. কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহাদিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দীকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট ফয়সাল সিদ্দীকি, অ্যাডভোকেট সফিউল আলম সপু, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমদ রানজিব, অ্যাডভোকেট মো. ইসাসহ আরও ৫০/৬০ জন আইনজীবী ও কয়েকজন বহিরাগত হঠাৎ সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং জামায়াতের নাম নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ প্রথম সমিতির ২ নম্বর হলরুম, পরবর্তীতে ১ নম্বর হলরুমে প্রবেশ করে ইফতার অনুষ্ঠানের প্রধান বিচারপতির নাম সম্বলিত সব ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। আইনজীবী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের চেয়ার টেবিল ভেঙে ও কাপড় উপড়ে ফেলে সমস্ত সমিতি ভবন একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে।
এসময় উপরোক্ত আসামিদের বেআইনী কর্মকাণ্ডে বাধা দিত গেলে তারা সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পানু খান ও অ্যাডভোকেট মো. শাহনওয়াজসহ অন্যান্য আইনজীবীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম ১২ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট নূর আলম সিদ্দীকী সোহাগ প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভিকটিম হাত দিয়ে ঠেকানোর সময় তার ডান হাত মারাত্মক রক্তাক্ত হয়।
তখন উপরোক্ত আসামিরা সাধারণ আইনজীবীদের ইফতার অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করে এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে বিকাল ৫টা ১০ মিনিটের সুপ্রিম কার্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমিতির আমন্ত্রণে ইফতার অনুষ্ঠান যোগদানর জন্য সমিতির নিচ তলার সিঁড়ি দিয় ২য় তলায় ওঠার সময় আসামিরা তাকে গালাগাল করে এবং ৭ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর আসামির নির্দশে তার দিকে পানি ভর্তি বোতল ছুঁড়ে মারে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুন্নসহ ফৌজদারী অপরাধ করে।
সমিতির সাধারণ আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন উপরোক্ত আসামিরা যেকোনো সময় সংগঠিত হয়ে আরও বড় কোনো অঘটন ঘটিয়ে সাধারণ আইনজীবীদের পেশাগত এ পবিত্র স্থানে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতিসহ যে কোনো ধরনের বড় ক্ষতি করতে পারে।
ঘটনার পর ইফতার শেষ করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ায় এবং পর দিন শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় সমিতির নির্বাচিত নেতা ও সিনিয়র সদস্যরা এ ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করে এ দায়ের করতে বিলম্ব হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুটি আলাদা হল রুমে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে সমিতির নির্বাচন ইস্যুতে বিবদমান দুটি পক্ষ। বিকেল ৪টার দিকে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ৯৭ বার পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: ঘটনা তদন্তে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থীর রিট
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
তদন্তের জন্য কমিটি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের প্রতি এ নির্দেশনা দেয়ার আর্জি জানিয়ে রবিবার রিটটি করেছেন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থী।
সোমবার (১৯ মার্চ) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের বেঞ্চে আবেদনটি কার্যতালিকাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারীদের একজন এবং বিএনপি সমর্থক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ডিবির উপ-কমিশনার ও শাহবাগ থানার ওসিকে বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনে ১৫ মার্চ আবেদনকারীদের, আইনজীবী ও সাংবাদিকদদের পেটানোর ঘটনা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন এভাবে পুলিশি তাণ্ডব আর না চালানো হয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এই রিটে।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটের নির্ধারিত দিন ছিল। সমিতির এই নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটি গঠন নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে সমিতির আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক এবং সমমনা আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন: সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
শুরুতেই এই সাব-কমিটি গঠন নিয়ে মতৈক্য থাকলেও পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা ও সাবেক বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে সাত সদস্যের সাব-কমিটি ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গঠন করা হয়।
কিন্তু সাব-কমিটি নির্বাচনে ভোট মেশিনে গণনা করতে চাইলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ সমর্থক প্যানেলের প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল তাতে রাজি না হওয়ায় অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় ১৪ মার্চ বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা ফের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
সমিতির আওয়ামী ফোরামের নেতারা মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থকরা সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান করে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেন। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ১৫ মার্চ সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর উদ্যোগ নিলে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির সঙ্গে বিবাদে জড়ান।
এক পর্যায়ে সমিতির মিলনায়তনে কয়েকশ পুলিশ প্রবেশ করে। তারা বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করতে লাঠিচার্জ শুরু করলে প্রায় ১৫ জন আইনজীবী আহত হন। এসময় পুলিশের সঙ্গে ঢোকা সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি, ভিডিও নিতে থাকেন। ফলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। সাংবাদিকদেরকেও বেধড়ক লাঠিপেটা করতে থাকলে এনটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাভেদ আক্তারসহ ১০-১২জন গণমাধ্যম কর্মী আহত হন। পরে একতরফা ভোটে আওয়ামী লীগ সমর্থক ১৪ প্রার্থীই বিজয়ী হন।
এ নিয়ে গতকাল পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী (বার) সমিতির নির্বাচনে আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনার জন্য আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশদাতা উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল।
একইসঙ্গে নির্বাচন পরিচালনায় নতুন একটি সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে, সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন ‘একতরফা হয়নি’- বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচনে আইনজীবীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। আর বিএনপি সমর্থিতরা ভোট বর্জনের ঘোষণাও দেননি।
এর আগে দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে। যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা।
নির্বাচিত হলেন যারা- আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির তিন হাজার ৭২৫ ভোট পেয়ে সভাপতি ও মো. আবদুন নূর দুলাল তিন হাজার ৭৪১ ভোট পেয়ে সম্পাদক পদে পুর্ননির্বাচিত হয়েছেন। সহ-সভাপতির দুটি পদে মো. আলী আজম ও জেসমিন সুলতানা, কোষাধ্যক্ষ পদে এম মাসুদ আলম চৌধুরী, দুটি সহ-সম্পাদক পদে এ বি এম নূর-এ-আলম উজ্জ্বল ও মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদ জয়ী হয়েছেন।
সাতটি সদস্য পদে জয়ীরা হচ্ছেন- মহিউদ্দিন আহমেদ (রুদ্র), মনিরুজ্জামান রানা, শফিক রায়হান শাওন, মো. সাফায়েত হোসেন (সজীব), মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. নাজমুল হুদা ও সুভাষ চন্দ্র দাস।
সমিতির দক্ষিণ হলে নির্বাচন পরিচালনায় আওয়ামী সমর্থকদের গঠিত সাব-কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
তিনি দাবি করেন, দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে আট হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে চার হাজার ১৩৭টি।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
আ.লীগ ‘তথাকথিত’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে: ফখরুল
পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পবিত্রতার স্বার্থে ‘তথাকথিত’ হিংসাত্মক নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের দাবি করেছে।
শুক্রবার এসসিবিএ নির্বাচনের ফল ঘোষণার একদিন পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিজয়ী হতে পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করতে হচ্ছে। এটা খুবই লজ্জার বিষয়।’
আরও পড়ুন: বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হলে উ. কোরিয়ার মতো স্বৈরাচারী হতে পারে বাংলাদেশ: ফখরুল
ফখরুল বলেন, তাদের দল চায় প্রধান বিচারপতি এগিয়ে এসে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
আইনগতভাবে নির্বাচন না হলেও ভোটের নামে নাটক সাজিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ‘অবৈধ’ ও ‘একতরফাভাবে’ নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমি অবিলম্বে তথাকথিত নির্বাচন বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের প্যানেল বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ বুধবার ও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদের সবকটিতেই জয়ী হয়েছে।
হট্টগোল, সহিংসতা, সংঘর্ষ, পুলিশের তৎপরতা এবং ব্যালট চুরি ও ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগের মধ্যে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ হয়।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে দু’দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে।
সমিতির আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাদের পক্ষ থেকে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচন পরিচালনা করেন।
পুলিশি পাহারায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের ভোট দিতে দেখা যায়।
এবারের নির্বাচনে ৮ হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে দুইদিনে ৪ হাজার ১৩৭ ভোট পড়েছে বলে দাবি এই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির।
অন্যদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সবার সম্মতিতে বৈধভাবে গঠিত না হওয়ার অভিযোগ তুলে, এই ভোটে অংশ নেননি বিএনপি সমর্থক ও সমমনা আইনজীবীরা।
তবে আজও সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে দফায় দফায় মিছিল-পাল্টা মিছিল, ধস্তাধস্তি, হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবছর এই ভোট উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হলেও এবারের চিত্র ছিল কিছুটা ভিন্ন।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
সমিতির এই ভোটের প্রথম দিনে ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের বের করে দেয়া, পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ভোটগ্রহণ, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের রুমে তালা লাগিয়ে দেয়া ও আদালত চত্বরে বিপুল সংখ্যাক পুলিশের উপস্থিতির বিষয়গুলো বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতির আদালতে তুলে ধরেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
পরে খাসকামরায় নিয়ে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতাদের বক্তব্য শোনেন। এরপর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যও শোনেন প্রধান বিচারপতি।
এরপর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিল-শ্লোগান, ভোটের প্যান্ডেলের সামনে দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কি, পৃথক মামলায় বিএনপিপন্থী ২২ আইনজীবীর আগাম জামিন এবং বিকেলে দুপক্ষের ধাক্কাধাক্কির মধ্য দিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই সমিতির দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দিনভরই আদালত চত্বরে ছিল উত্তেজনা।
আইনজীবীর ভাষ্যমতে, সমিতির এবাবের ভোটকে ঘিরে উৎসবের পরিবর্তে উত্তেজনার আমেজ ছিল। তবে আজ রাতেই এই ভোট গণণা ও ফল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মো. মনিরুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
সকালে আপিল বিভাগে শুনানির শুরুতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নজীরবিহীন ঘটনা গতকাল (বুধবার) ঘটেছে, যা চলমান। আজও রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কিনা তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাচ্ছি।’
সমিতির নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘সমিতির নির্বাচন হয় সব সময় উৎসবমুখর। তবে এবার কি হলো? আজও আমি রুমে ঢুকতে পারিনি। রুমের বাইরে থেকে তালা লাগানো। কক্ষের সামনে পুলিশ রয়েছে। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘মি. রুহুল কুদ্দুস আপনাদের সবাইকে সম্মান করি। আপনারা ২ জন ১১টার সময় (বিরতি) আসেন। কোনো করণীয় থাকলে করবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেবো।’
এ সময় সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘নজিরবিহীন ঘটনা। ভোটকেন্দ্রে তিন চারশ পুলিশ ঢুকে ধাক্কা দিতে থাকে। সবাই পড়ে যাচ্ছিল আর পুলিশ পা দিয়ে পাড়িয়েছে। আমার পায়ে ব্যাথা আমি ঠিকমতো দাড়াতে পারছি না।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘এ কথাগুলো ভেতরে বসে শুনি। ১১ টায় আসেন। এখন কোর্টের কাজ করি।’
পরে বেলা ১১টার পরে বিএনপি ফোরামের ৫জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার খাস কামরায় সাক্ষাত করেন। এ সময় সেখানে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিরা ছিলেন। সেখানে তারা তাদের সব অভিযোগ তুলে ধরেন। সবকিছু শুনে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে প্রধান বিচারপতি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের জানায়।
এরপর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে এসে অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এটা আমাদের বিষয় না। সমিতি একটি প্রাইভেট বডি। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।
পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কিনা জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে অপরপক্ষ বাধা দেবে তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা যায়, সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান দু’পক্ষের আইনজীবী নেতারা। পরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করা হয় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা, সাবেক বিচারপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুরুল হক চৌধুরীকে। কিন্তু ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত
একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোট গণনার মেশিন ব্যবহার করতে চাইলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও আওয়ামী ফোরামের সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর দুলাল তাতে বাধা দেন। তিনি আলাদা ব্যালট পেপার তৈরি করে আনেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৩ মার্চ বিকালে প্রার্থী পরিচিতি সভার পর সন্ধ্যায় মনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা ফের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
সমিতির আওয়ামী ফোরামের নেতারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকরা সমিতির সাবেক সহসভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান করে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেন। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর উদ্যোগ নিলে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির সঙ্গে বিবাদে জড়ান। এক পর্যায়ে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও ভোটে আওয়ামী লীগ ফোরামের সভাপতি প্রার্থী মমতাজ উদ্দিন ফকির পুলিশ ডাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেলা ১১টার ৪০ মিনিটের দিকে সমিতির মিলনায়তনে কয়েকশ পুলিশ প্রবেশ করে। তারা বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করতে লাঠিচার্জ শুরু করলে প্রায় ১৫ জন আইনজীবী আহত হন।
এসময় পুলিশের সঙ্গে ঢোকা সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি, ভিডিও নিতে থাকেন। ফলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। সাংবাদিকদেরকেও বেধড়ক লাঠিপেটা করতে থাকলে এনটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাভেদ আক্তারসহ ১০-১২জন গণমাধ্যম কর্মী আহত হন।
পুলিশ দুঃখিত
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন চলাকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
সুপ্রিম কোর্টের বার ভবনে আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএএফ) কার্যালয়ে এসে এ দুঃখ প্রকাশ করে হারুন অর রশিদ বলেন, হঠাৎ করে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশকে একটু হ্যান্ডেল করতে হয়েছে। হ্যান্ডেল করতে গিয়ে আমাদের কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পাশাপাশি আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এজন্য আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমাদের কমিশনার মহোদয়ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন, আসলে এটা উচিত হয়নি।
হারুন অর রশিদ বলেন, ভবিষ্যতে এই পবিত্র জায়গায় হ্যান্ডলিং করতে আমরা একটু সাবধান হব।
নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট
এদিকে সমিতির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নির্বাচনের সভাপতি প্রার্থী ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট করেন। রিটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির সম্পাদক, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও চলমান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মনসুরুল হক চৌধুরীকে বিবাদী করা হয়েছে।
পাশাপাশি অনুষ্ঠিত ২০২৩-২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে নির্বাচন পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের আর্জি জানানো হয়েছে।
সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে যে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছুই নেই। সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে সমিতির নির্বাচনের বিষয়টির সমাধান করতে বলেছেন।প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে এটা আমাদের বিষয় না। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি বিচারপতিদেরকে ডেইলি স্টারের একটি ছবি দেখিয়ে বলেছি বাঁশ হাতে ভাঙচুরে জড়িত আইনজীবী বিএনপিপন্থী। তিনি আওয়ামী লীগ পন্থী না। উভয়পক্ষই যখন এমন করে তখন কি করণীয় জানতে চাইলে আমি বলেছি যে মমতাজ উদ্দিন ফকির ও আবদুন নূর দুলাল যখন নির্বাচন করতে গেল তখন বাধা দিচ্ছিল। সেই পর্যায়ে সেখানে পুলিশ প্রবেশ করে। আগের দিনই বারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। কারণ আগের দিন রাতেই বিএনপি সমর্থক লোকজন ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কিনা জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পরিবেশ সুষ্ঠু রখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে, অপর পক্ষ বাধা দেবে; তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে।
তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।এর আগে
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বুধবার ঘটে যাওয়া সব ঘটনা আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালতে তুলে ধরেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারা।আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ভোট গ্রহণ, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের রুমে আজ সকালে তালা লাগিয়ে দেওয়া ও বিপুল সংখ্যাক পুলিশের উপস্থিতির বিষয়গুলো তারা আদালতে তুলে ধরেন। এ সময় আপিল বিভাগের অপর সাত বিচারপতিও উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধান বিচারপতি সমিতির বিএনপি সমর্থক সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে বেলা ১১টায় তার খাসকামরায় যাওয়ার জন্য বলেন। প্রয়োজনে এ সময় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকেও ডেকে নেয়া যেতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন আদালতের কাজ করতে দিন। আপনারা দু’জন বেলা ১১টায় খাসকামরায় এসে সব বলেন। আমরা শুনব। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেব।’
পরে বেলা ১১টার পরে সমিতির বিএনপি সমর্থক সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ৫জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার খাস কামরায় সাক্ষাত করেন। এ সময় সেখানে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা তাদের সব অভিযোগ তুলে ধরেন। সবকিছু শুনে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে প্রধান বিচারপতি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের জানায়। এরপরই প্রধান বিচারপতির খাসকামরায় যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বিএনপিপন্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদিন জানান, আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে বিচার চাইতে গিয়েছিলাম। আমাদের সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী তাদের সব বক্তব্য ও অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি সব শুনে বলেছেন যে আমি এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাব।
তিনি বলেন, অতীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রধান বিচারপতি সমিতির সাবেক ও বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদককে ডাকেন। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতি বলেছেন তার নাকি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রধান এই অঙ্গনের অভিভাবকের কাছে এ ধরনের ঘটনার বিচার না পেলে আর কোথায় যাব।
এদিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা আজও নির্বাচনের বিপক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরাও স্লোগান দিচ্ছেন। পাশপাশি পুলিশের প্রহরায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে এক তরফাভাবে নির্বাচন চলছে।
বিকাল ৫টা পর্যন্ত আজও ভোট গ্রহণ চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন: সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে ২৭ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ আদালতের
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি কালো দাগ সৃষ্টি করেছে: হাইকোর্ট
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবী সমিতি বাংলাদেশের আইনী ইতিহাসে কালো দাগ সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত কক্ষে ‘অশালীন আচরণের’ অভিযোগের প্রেক্ষাপটে তিন আইনজীবী হাইকোর্টের তলবে হাজির হলে মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ক্ষোভ প্রকাশ করে এই মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির হাইকোর্টকে বলেন,‘মাই লর্ড, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিষয়টির পিসফুল ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। আজ থেকে সব কোর্ট চলছে। আমাদের আরও কিছু কাজ আছে। সবকিছুর সমাধান হবে আমাদের এক মাস সময় দিন।’
হাইকোর্ট বলেন,‘কিছুই (ডেভেলপমেন্ট) হয়নি। হাইকোর্টে এটার তারিখের আগে ওখানে একটু নাড়াচাড়া করেন। আমরা বুঝি। দিন যাচ্ছে আর টাইম নষ্ট করছেন। এটার পরিণতি ভোগ করতে হবে। আপনারা (রুলের) জবাব দিলে দেন, না দিলে না দেন। আমরা আমাদের মতো আগাবো। একটা কোর্টকে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে অচল করে রেখেছেন। সমস্ত কিছু আমরা দেখছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বার (আইনজীবী সমিতি) বাংলাদেশের লিগ্যাল ইতিহাসে কালো দাগ সৃষ্টি করেছে, সমস্ত আইনজীবীদের কলঙ্কিত করেছে।’
এসময় হাইকোর্ট বলেন, ‘আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট হোক আর সদস্য হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। বার কাউন্সিল আছে। তবে বার কাউন্সিল কিছু না করলে আমরা এখান থেকেই করবো। প্রতিদিন আমরা খবরের কাগজে চোখ রাখি যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারে কী হচ্ছে। আপনারা কোর্ট বর্জন করছেন করেন, কিন্তু বিচার প্রার্থীরা কোর্টে গেলে তাদের ডিস্টার্ব করা হচ্ছে, থ্রেট দেয়া হচ্ছে। আপনারা একতরফা (এক্সপার্টি) গেলে আমরা (এক্সট্রিম) এ যাবো। কে বারের সভাপতি, কে বিজ্ঞ আইনজীবী তা আমরা দেখবো না। এরা বাংলাদেশে প্র্যাকটিস (আইন পেশা পরিচালনা) করার যোগ্য কি না সেটাও আমরা দেখবো।’
একপর্যায়ে হাইকোর্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আইনজীবীকে তাদের ব্যাখ্যা দিতে সময় দিয়ে এবিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। আজ আদালতে আইনজীবীদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল ও অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।
গত ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক ও আদালতের কর্মচারীদের গালিগালাজ এবং অশালীন আচরণের অভিযোগে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ অন্য আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর একটি চিঠি পাঠান বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক। এরপর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। পরে প্রধান বিচারপতি বিষয়টি শুনানির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান। এরপর হাইকোর্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিচারক ও আদালতের কর্মচারীদের প্রতি ‘অশালীন আচরণের’ অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সম্পাদকসহ তিন আইনজীবীকে তলব করেন। সেই সঙ্গে এদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্টের এই রুল জারির পরবর্তীতে ‘এজলাস চলাকালীন জেলা জজের নামে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ শ্লোগান প্রদান করে বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও মানহানির’ আরেকটি অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা আইনজীবী সমিতির ২১ আইনজীবীকে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি তলব করেন। সেই সঙ্গে এদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর মামলায় সেই বিচারকের হাইকোর্টে জামিন
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে বদলি এবং নাজির মো. মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীর শাস্তির দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আদালত বর্জন কর্মসূচীতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিচার প্রার্থীরা।
শুরুতে সেখানকার আইনজীবীরা দুটি আদালত বর্জন করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তারা সব আদালত বর্জন শুরু করেন। তবে গত বুধবার থেকে আইনজীবীরা জেলার সব আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁঞা।
অন্যদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত কেন্দ্রিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে গত ৮ জানুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘প্রশাসনিক কারণ’ দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেই আলোচিত নাজির মো. মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীকে চাঁদপুর জেলা জজ আদালতে বদলি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিপিসি’র ৪৭২ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ৩ মাসের মধ্যে দুদককে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভাগাভাগি
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতিসহ ৯টি পদে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ঐক্য পরিষদ এবং সাধারণ সম্পাদকসহ ১২টি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ জয়ী হয়েছে।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। রাতভর গণনা শেষে সোমবার ভোরে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি খসরু, সম্পাদক কাজল নির্বাচিত
জেলা সমিতির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এবারের নির্বাচনে মোট পাঁচ হাজার ৩০৯ জন ভোটারের মধ্যে চার হাজার ১৪৫ জন ভোট দেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার রতন কুমার রায় বলেন, নির্বাচনে ঐক্য পরিষদ সভাপতিসহ ৯টি পদ পেয়েছে। সাধারণ সম্পাদকসহ ১২টি পদ পেয়েছে সমন্বয় পরিষদ।
ঘোষিত ফলাফলে সভাপতি পদে জয় লাভ করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত ঐক্য পরিষদ মনোনীত মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি ভোট পেয়েছেন দুই হাজার ৬৮২ টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মনোনীত মনতোষ বড়ুয়া পেয়েছেন এক হাজার ৩৯৬ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে জয় লাভ করেছেন সমন্বয় পরিষদের এএসএম বজলুর রশিদ মিন্টু। তিনি ভোট পেয়েছেন দুই হাজার ২৮০ টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্যের মোহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী ভোট পেয়েছেন এক হাজার ৮২৪।
সিনিয়র সহসভাপতি পদে সমন্বয় পরিষদের মো. সেকান্দর চৌধুরী, সহ-সভাপতি সমন্বয়ের আব্দুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে সমন্বয়ের মোহাম্মদ ইমরান, অর্থ সম্পাদক পদে সমন্বয়ের মোশাররফ হোসেন,পাঠাগার সম্পাদক পদে সমন্বয়ের মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ঐক্যের মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বেলাল, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ঐক্যের মো. ওমর ফারুক ও তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ঐক্যের অলি আহমদ জয় লাভ করেন।
এ ছাড়া নির্বাহী সদস্যের ১১টি পদের মধ্যে ছয়টিতে সমন্বয় পরিষদ ও পাঁচটিতে ঐক্য পরিষদ জয় পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবী সমিতির আদালত বর্জন প্রত্যাহার
সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত
গাজীপুরে জেএমবির বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে শোক র্যালী
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির আত্মঘাতী বোমা হামলার ১৫তম বার্ষিকী পালন করেছে জেলার আইনজীবীরা।
নির্যাতিত সেই মা ও দুই মেয়ের জামিন
কক্সবাজারের চকরিয়ার আলোচিত গরু চুরির অপবাদে রশি দিয়ে বেঁধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা পাঁচজনের মধ্যে মা-মেয়েসহ তিনজনকে জামিন দিয়েছে আদালত।