চুনাপাথর
আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেট সীমান্ত দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
কাস্টমস ডিউটি ও আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে তারা আমদানি বন্ধ থেক রেখেছেন।
সিলেটের বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) ও চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়। ফলে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় অচল হয়ে পড়েছে স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরে নেই নিত্যদিনকার ব্যস্ততা। ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাকই বাংলাদেশে আসছে না। ফলে স্থবির হয়ে আছে সিলেটের প্রধান এই স্থলবন্দর।
তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির উপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে দুই ডলার বৃদ্ধি করে।
এই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই সিলেটের সবকটি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনপাথর পাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।শুল্ক বাড়ানো নিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্থলবন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমদানিকারকদের বাদানুবাদ চলছে।
ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানালেও কাস্টমরস কর্মকর্তারা তাতে রাজি হনননি। আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় আমদানি বন্ধ তরে দেন তারা।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে দিন রাত পাথর উত্তোলন, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা
সুনামগঞ্জের ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক সেলিম চৌধুরী বলেন, এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ। তার ওপর টন প্রতি ২ ডলার করে ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসম্যান্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়েছে। এ কারণে ট্রাক প্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমরা বুধবার থেকে সিলেট বিভাগের সব শুল্ক স্টেশন দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বোল্ডার ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি বন্ধ থাকবে।
তবে ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়নি। শুল্কও আমরা বাড়াইনি। এনবিআর থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগের ৮৪ টাকার পরিবর্তে এখন ডলারের দাম ১০৯ টাকা। ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনার আলোকেই মূলত অ্যাসেসম্যান্ট ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে। তবে, আমদানিকরা চাইলে এ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরও ১২টি শুল্কস্টেশন রয়েছে।
সেগুলো হলো কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাও এবং ছাতকের ইছামতি ও চেলা স্টেশন। এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি হয়।
আরও পড়ুন: পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা: সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট শুরু
পাথর উত্তোলন: সিলেটে সোমবার থেকে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট
১ বছর আগে
দোয়ারাবাজারে শুল্কস্টেশন দিয়ে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে শুল্কস্টেশন দিয়ে চেলা রুটে চুনাপাথর আমদানি গত সোমবার থেকে বন্ধ রয়েছে।
চলতি মাসের শেষ দিকে পুরোদমে চুনাপাথর আমদানি শুরু করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ভারতীয় ব্যাবসায়ীদের আইনি নানা জটিলতার কারণে সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে চেলা রুটে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় শতাধিক ছোট-বড় ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বেকার হয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েক হাজার বারকি শ্রমিক।
গত ২৫ জুলাই থেকে চেলা রুটে চুনাপাথর রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আমদানি বন্ধ থাকায় বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত বার্ষিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
চেলা শুল্কস্টেশন সূত্রে জানা যায়, বিগত অর্থবছরে চেলা রুটে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং আদায় করা হয় দুই কোটির ওপরে।
চুনাপাথর আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক না হলে এবার সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না।
ছাতক লাইম স্টোন ইম্পোটার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের সেক্রেটারি অরুন বাবু ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আইনি জটিলতার কারণে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় এখানে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার বারকি শ্রমিক। ব্যবসায়ীরাও ব্যাংকের লোনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
চেলা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল কাদির বলেন, মূলত ভারতীয় ব্যাবসায়ীদের আইনি নানান জটিলতার কারণে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়েছে। চুনাপাথর আমদানিতে আমাদের কোনো জটিলতা নেই।
তিনি বলেন, ভারতীয় ব্যাবসায়ীদের নানা জটিলতায় কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। আগামী ১৮ আগস্ট কোর্টে রায় না পেলে ভারত থেকে চুনাপাথর রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা রপ্তানি করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি শুরু
১০ মাস পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু
২ বছর আগে
ইছামতি নৌপথে চুনাপাথর আমদানি কয়েক ঘণ্টা চলে ফের বন্ধ
সুনামগঞ্জের ছাতক শুল্ক স্টেশন দিয়ে ইছামতি নৌপথে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি দীর্ঘ ১১ মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার সকালে শুরু হয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের বন্ধ হয়ে গেছে।
৩ বছর আগে
সিলেটের ভোলাগঞ্জ দিয়ে চুনাপাথর আমদানি শুরু
প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকার পর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর দিয়ে চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়েছে।
৪ বছর আগে