মৎস্যখাত
মৎস্যজীবী-মৎস্যখাত চরম বৈষম্যের শিকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাতে চরম বৈষম্য রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জুলাই ও আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে নতুনভাবে স্বাধীনতার পর মৎস্যজীবী ও মৎস্যখাতের বৈষম্য দূর করতে সরকার সর্বোচ্চভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তারাই প্রকৃত মৎস্যজীবী। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই ব্যবসায়ীরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুর দিকে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের অধিকার: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মহিষের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নারী মৎস্যজীবীদের স্বীকৃতিকে বড় ধরনের সমর্থন জানাতে হবে। তাদের সঙ্গে অন্য মৎস্যজীবীদের কোনো পার্থক্য করা যাবে না। সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলে মৎস্যজীবীরা আর গরিব থাকবে না।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা যদি মেরিন ফিশারিজকে সত্যিকার অর্থেই ব্যবহার করতে পারি বাংলাদেশ আর গরিব থাকবে না। আমরা শুধু মৎস্য সম্পদের কথা বিবেচনা করি তাহলে দেখা যায়, এই বিশাল প্রজাতির মধ্যে অনেক প্রজাতি এখনও আমাদের আহরণের মধ্যে আসেনি। এমনকি, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সক্ষম উন্নত ভেসেল আমাদের নেই। আমরা জানিনা সত্যিকার আমাদের কত প্রজাতির মৎস্য সম্পদ আছে, তাদের মজুদ কেমন। সরকার নিজস্ব ভেসেল এনে এ বিষয়ে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য দেশের স্বার্থে স্বনামধন্য বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
ইলিশ মাছ আল্লাহর দান উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, নোনা পানি থেকে স্বাদু পানিতে আসা এবং ফেরত যাওয়ার মত মাইগ্রেটরি রুট ঠিক করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের বড় সম্পদে পরিণত হবে। অতীতের সরকার ভারতের নতজানু থাকার ফলে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সে দেশের জেলেরা আমাদের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে ইলিশ ধরে নিয়ে যেত- এ সমস্যা লাঘবে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, নদ-নদীর মত সমুদ্র দূষণমুক্ত নয়। নদীর পানি সমুদ্রে যাচ্ছে সমুদ্রও দূষিত হচ্ছে। দেশে যেভাবে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হচ্ছে তা রোধ করা দরকার। আমরা যে মাছ খাচ্ছি- অনেক মাছের মধ্যে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। ফলে দেশকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। হাওর ও নদীর মাছ রক্ষায় অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপনির্বাহী পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের পরিচালক অদ্বৈত চন্দ্র দাস, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ প্রমুখ।
এক্সপার্ট অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (অব) ড. আব্দুল ওয়াহাব। এছাড়া সেমিনারে বিভিন্ন অংশীজনরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জেলেদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
১ সপ্তাহ আগে
বন্যায় চট্টগ্রামের ১৩ উপজেলায় মৎস্যখাতে ক্ষতি ৭০ কোটি টাকা
চট্টগ্রামে কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় জেলার ১৩ উপজেলা ও মহানগরীসহ মাছ চাষের ১৩ হাজার ৩৭৯টি পুকুর এবং ১২৬টি মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। অবকাঠামোসহ সব মিলিয়ে বন্যায় মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ৭০ কোটি টাকা।
বন্যার পানি নেমে যাবার পর ক্ষয়ক্ষতি অনুসন্ধান করে এ তথ্য জানায় জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের জরিপ কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় প্লাবিত চট্টগ্রামের ১৩ হাজার ৩৭৯টি পুকুরের আয়তন ৩ হাজার ৭৪৬ হেক্টর। আর ভেসে যাওয়া ১২৬টি মাছের ঘেরের আয়তন ১৮৯ হেক্টর। এসব পুকুর ও ঘের থেকে মাছ ভেসে গেছে ৪ হাজার ১৫৪ টন। সেই হিসাবে এই বন্যায় শুধু মৎস্য খাতেই ৬৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
গত ১ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ৪ আগস্ট নগরী ও জেলায় বন্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকে। এরমধ্যে ৭ আগস্ট পর্যন্ত চার দিন টানা জলাবদ্ধতা ছিল নগরীতে।
অপরদিকে, জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলায় এখনও কিছু কিছু এলাকায় বন্যায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৪ উপজেলা। সেগুলো হলো- সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, পটিয়া ও চন্দনাইশ।
চার উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ হয় প্রায় ১০ হাজার পুকুরে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।
সাতকানিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাসান আহসানুল কবির বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার মৎস্য প্রজেক্ট ও পুকুর ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও এ ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যায় নিহত ১৬, ক্ষয়ক্ষতি ১৩৫ কোটি টাকার বেশি
১ বছর আগে
কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মৎস্যখাতের সম্প্রসারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বুধবার বলেছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মৎস্যখাতের সম্প্রসারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৪ বছর আগে