ফাঁসি
দিনাজপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের ফাঁসির রায়
দিনাজপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রায়টি ঘোষণা করেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক শ্যাম সুন্দর রায়। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত। তবে হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে রায় কার্যকরের তাগিদ দিয়েছেন বিচারক।
আরও পড়ুন: অধিকারের সম্পাদক আদিলুরের বিরুদ্ধে আইসিটি মামলার রায় পিছিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের জেলা সদরের আমরই গ্রামে জমি সংক্রান্ত ভাগবাটোয়াকে কেন্দ্র করে বাবা বঙ্কিম চন্দ্র রায় বনরামকে ২০০৬ সালের ১৭ সেপ্টম্বর লাঠিপেটায় হত্যা করে ছেলে বাঞ্জারাম চন্দ্র রায়। এ ব্যাপারে স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন অভিযুক্ত ছেলের স্ত্রী উমুকি রানী রায়।
আদালতে সরকার পক্ষের কৌশুলি এপিপি হাসানে ইমাম নয়ন জানান, জমির বাটোয়ারা বিরোধে ২০০৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে প্রথমে ছোটভাই পঞ্চারাম রায়কে মারছিলেন অভিযুক্ত বড় ভাই বাঞ্জারাম রায়। এ সময় তাকে থামাতে বাবা এগিয়ে গেলে তাকে লাঠিপেটা করে সে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে সে।
আদালতে ১৪ জনের স্বাক্ষ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে দোষী প্রমাণিত ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন বিচারক। তবে আসামি পলাতক থাকায় আত্মসমর্পণ অথবা ধরা পড়ার পর হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে রায় কার্যকরের তাগিদ দিয়েছেন বিচারক।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে ভাই হত্যা মামলায় ৫ ভাই-বোনসহ ৭ জনের যাবজ্জীবন
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতা চাঁদের জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর
১ বছর আগে
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: হত্যাকারীদের ফাঁসি দেখতে চান মাহাবুবুর রশিদের মা-বাবা
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত মাহাবুবুর রশিদের বৃদ্ধ মা-বাবা ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছেন।
রবিবার কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ীর বাড়িতেই ছিলেন নিহত মাহাবুবুরের বৃদ্ধ মা হাসিনা বেগম (৭৫) ও বাবা হারুন অর রশিদ (৮৫) দম্পতি।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৯তম বার্ষিকী আজ
বৃদ্ধ মা-বাবার চোখে ছেলের স্মৃতি এখনো অমলীন হয়ে রয়েছে। ছেলের নিহত হবার খবর মায়ের বুক কেঁপে উঠেছিল। ছেলের শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন বাবা। আজও সে অস্থিরতা কাটেনি। ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তি ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন হলে হয়তো কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।
মাহাবুবুর রশিদ সংসারের একমাত্র উপার্জকারী ছিলেন। তার অবর্তমানে হারুন অর রশিদের দুঃখ ১২ মাস ধরেই। বার্ধক্যজনিত রোগের কারণে মাসে ১৫-১৬ হাজার টাকার ওষুধ লাগে।
মেয়ের পাঠানো টাকা ও বাড়িতে গাভীর দুধ বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। এ টাকারই একটা অংশ জমিয়ে ছেলে মাহাবুবুর রশিদের শাহাদাতবার্ষিকী পালন করে থাকেন।
ছেলের তৈরী করা ঘরই তাদের শেষ আশ্রয় হয়েছে। মাঝে মাঝেই মন চাইলে ছেলের কবরের পাশে কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকেন। আর আল্লাহর কাছে রায় বাস্তবায়নের কামলা করেন। কে কি লিখে তাদের বিপদে ফেলেন এই ভয়ে সাংবাদিক দেখলে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকার দায়ী: প্রধানমন্ত্রী
কেমন আছেন জানতে চাইলে বৃদ্ধ হারুন অর রশিদ বলেন, অনেক দিন হয়েছে কিন্তু খুনিদের শাস্তি বাস্তবায়ন হলো না। তবুও মরার আগে খুনিদের ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন দেখতে চান।
রায় বাস্তবায়নে বিলম্ব বিষয়ে তিনি বলেন, তার শ্রষ্টাই ছেলের খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর করবেন। শৈশবের স্কুলের পাশে শায়িত ছেলে মাহাবুবুর রশিদের সমাধির অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দাবি জানান তিনি।
১ বছর আগে
চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যায় স্ত্রীসহ ২ জনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী (৩৩) হত্যা মামলায় স্ত্রী রাশেদা বেগম (২৭) ও হুমায়ুন রশিদ (২৮) নামে দুইজনেক ফাঁসি এবং অপর তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার আসামি জাকির হোসেন ওরফে মোল্লা জাকিরকে (৩৫) খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রী রাশেদা বেগম কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার উত্তর লক্ষ্যারচর এলাকার মণ্ডল পাড়ার জাকির হোসেনের মেয়ে এবং হুমায়ুন রশিদ পটিয়া থানার শোভনদণ্ডী এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে।
রায় ঘোষণার আগে আসামি আল আমিন ও পারভেজকে কারাগার থেকে আদালত হাজির করানো হয়। রায় ঘোষণা শেষে তাদেরকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ইয়াবা জব্দ: মামলায় ট্রাকচালক ও সহকারীর যাবজ্জীবন
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত তিন আসামি হলেন- আল আমিন (২৮), আকবর হোসেন ওরফে রুবেল ওরফে সাদ্দাম (২৩) এবং মো. পারভেজ ওরফে আলী।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহম্মেদ বলেন, পাঁচজন আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাশেদা বেগম, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আল আমিন ও আকবর হোসেন পলাতক রয়েছে।
রায়ের সময় আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হুমায়ুন রশিদ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মো.পারভেজ আলী এবং খালাস পাওয়া জাকির মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
পরে হুমায়ুন রশিদ ও মো.পারভেজ আলীকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দুলাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। বাকি আসামি তিন আসামিকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাপ্পী ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বারের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তার গ্রামের বাড়ি বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার চৌমুহনী এলাকায়। তার বাবার নাম আলী আহমেদ। মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন বাপ্পী। হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত তিনি অবিবাহিত ছিলেন বলে জানতেন আত্মীয়-স্বজনরা।
২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরের চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডে বড় মিয়া মসজিদের সামনে একটি ভবনের নিচতলার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার হাত-পা ও মুখ টেপ দিয়ে মোড়ানো এবং স্পর্শকাতর অঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পর বাপ্পীর বাবা আলী আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগ: ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে বাপ্পী হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে টানা অভিযান চালিয়ে ঘটনার দুদিন পর ২৭ নভেম্বর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে রাশেদা বেগমসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই সঙ্গে মামলাটি পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট অধিগ্রহণ করে পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে। এরপর তিনি তদন্ত করে বের করেন হত্যার নেপথ্যের কাহিনি।
যে বাড়ি থেকে বাপ্পীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সে বাড়ির কেয়ারটেকার ওই সময়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে ওই নারী (রাশেদা) তার স্বামীসহ থাকবেন বলে বাসা ভাড়া নেন। ঘটনার রাতে ওই বাসায় থাকতে যান বাপ্পি। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
তদন্তকারীরা জানান, দেলোয়ার নামে এক ইয়াবা পাচারকারীর স্ত্রী ছিলেন রাশেদা বেগম। স্বামীর মামলার সূত্র ধরে আইনজীবী বাপ্পীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আবদুর রশিদ বলেন, বাপ্পি হত্যা মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। আদালত সাক্ষী ও প্রমাণের ভিত্তিতে দুজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
১ বছর আগে
কিশোরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে কারারক্ষীর ফাঁসি
কিশোরগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে কারারক্ষীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
স্ত্রী রুমা আক্তারকে হত্যার দায়ে কারারক্ষী স্বামী খাইরুল ইসলামকে এই সাজা দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দিয়েছেন বিচারক।
দণ্ডপ্রাপ্ত খাইরুল ইসলাম টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার বাচাইল এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপের সম্পদের খোঁজে ৭ দেশে দুদকের চিঠি
রাষ্ট্রপক্ষে আদালতের পিপি এমএ আফজাল রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ২০১৮ সালে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আব্দুল মান্নানের কন্যা রুমা আক্তারের সঙ্গে কারারক্ষী খাইরুল ইসলামের বিয়ে হয়। খাইরুল ইসলাম তার স্ত্রী রুমাকে নিয়ে কারাগারের কোয়ার্টারেই থাকতেন। বিয়ের তিন মাস পর স্বামী যৌতুক দাবি করলে রুমার বাবা আব্দুল মজিদ মেয়ের সুখের কথা বিবেচনায় নিয়ে তিন লাখ টাকা দেন। এর কিছুদিন পরেই মোটরসাইকেল কেনার জন্য খাইরুল ইসলাম আবারও ২ লাখ ৮ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু রুমার বাবা টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় রুমাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির আত্মহত্যাচেষ্টা, হাসপাতালে মৃত্যু
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর আবারও যৌতুকের জন্য স্ত্রী রোমা আক্তারকে কারাগারের স্টাফ কোয়র্টারে নির্মমভাবে নির্যাতন করে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে পরদিন রুমার মা ছিনু বেগম এসে তাকে প্রথমে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে ভালপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২৯ ডিসেম্বর রুমার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান।
এ ঘটনায় রুমার মা ছিনু বেগম বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল আলম মামলাটি পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বাবাকে হত্যার দায়ে ৩ ছেলের মৃত্যুদণ্ড
১ বছর আগে
মুক্তি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনিসহ ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো ‘জল্লাদ’ শাহজাহান
মুক্তি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনিসহ ২৬ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ৭৩ বছর বয়সী ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া।
তিন দশকেরও বেশি সময় কারাভোগের পর রবিবার (১৮ জুন) সকাল দুপুর ১টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: চাঁদপুর জেলা কারাগারে বিএনপি নেতার মৃত্যু
কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রবিবার (১৮ জুন) দুপুর ১টার দিকে শাহজাহানকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, শাহজাহান ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার পর স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর শাহজাহানকে ডাকাতির মামলায় ৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানাসহ ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরেকটি ডাকাতি ও হত্যা মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও আরও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সব মামলায় তাকে মোট ৪২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে ১৯৯৫ সালের ২১ নভেম্বর মানিকগঞ্জ থেকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, শাহজাহান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ খুনি, চার যুদ্ধাপরাধী, দুই জেএমবি সদস্য, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, শারমিন রিমা হত্যা মামলায় মনির ও খুকুসহ ২৬ আসামির ফাঁসি কার্যকর করেন।
এছাড়া একজন জল্লাদ হিসেবে তার ভূমিকা এবং শৃঙ্খলা প্রদর্শনের জন্য জেল কর্তৃপক্ষ তার কারাবাসের মেয়াদ থেকে ১০ বছর, ৫ মাস এবং ২৮ দিন ক্ষমা করেছিল।
হিসাব অনুযায়ী- শাহজাহান ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন জেল খাটেন।
আরও পড়ুন: কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলায় পৌর মেয়র কারাগারে
১ বছর আগে
ভারতের প্রেসক্রিপশনে কিছু 'নিরপরাধ' জামায়াত নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে সরকার: নূর
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীর কিছু ‘নিরীহ’ নেতাকে ‘ভারতের প্রেসক্রিপশনে’ ফাঁসি দিয়েছে।
নূর বলেন, ‘জামায়াত আইনত নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগই ভারতের নির্ধারিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াতের কিছু নিরপরাধ নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে।’
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশে তিনি বলেন, ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ঢাকায় সমাবেশ করেছে জামায়াত। আওয়ামী লীগের তিনজন মন্ত্রী বলেছেন, এটা সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন: বগুড়ায় গণঅধিকার পরিষদ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা: আহত ১৫
নূর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি জামায়াতের আদর্শ ও রাজনীতি আওয়ামী লীগের উপকারে আসে এমন কিছু করতে দেবে না। তবে রাজনীতির ক্ষেত্রে শেষ কথা নেই। জামায়াতের বর্তমান অবস্থান আমরা জানি না। কিন্তু তাদের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা রাজপথে থাকবেন।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে উৎখাত করতে আমাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই আমরা বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, চরমোনাই … যেই রাজপথে থাকুক তার সঙ্গে আছি। আমরা এই সরকারকে এক সপ্তাহও ক্ষমতায় রাখার পক্ষে নই।’
সাম্প্রতিক বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে নূর বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন একজন প্রার্থীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি একজন প্রবীণ ব্যক্তিত্ব, মুসলিম আলেমদের মধ্যে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। আমরা তার ওপর এই হামলার নিন্দা করছি।’
আরও পড়ুন: না’গঞ্জে বিএনপি-জামাত-গণঅধিকারের ১৯৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
দেশব্যাপী ১১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা গণতন্ত্র মঞ্চের
১ বছর আগে
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসির আদেশ
কুমিল্লার হোমনায় ২০১০ সালে আবদুল করিম হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: যশোরে শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে যুবকের ফাঁসির আদেশ
তবে এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মজনু মিয়া ও কবির মিয়া দুই জনের বাড়ি কুমিল্লা হোমনা উপজেলার বাগমারা পশিচমপাড়া গ্রামে।
কুমিল্লার আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট সেলিম মিয়া মামলার বিবরণে জানায়, ২০১০ সালের ২৮ জুলাই বাগমারা পশিচমপাড়া গ্রামের আবদুল করিমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে।
চারদিন পর ২ আগস্ট দুপুরে হোমনার বালুর মাঠের পশ্চিমে তিতাস নদীতে থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডসহ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট সেলিম মিয়া।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে জোড়া খুনের মামলায় ৯ জনের ফাঁসি
নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
১ বছর আগে
কুমিল্লায় স্কুলছাত্র হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি
কুমিল্লার হোমনায় স্কুলছাত্র আশিকুর রহমান আশিক হত্যার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। তাদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া দুজনকে কারাদণ্ড এবং এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে জোড়া খুনের মামলায় ৯ জনের ফাঁসি
রবিবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার আসাদপুরের মো. সুজন মিয়া (২৫), আল আমিন (৩০), সোহেল মিয়া (২৫), মো. শাহিন মিয়া (২৭) ও মো. সোহাগ মিয়া (২৮)।
এছাড়াও একই রায়ে আকিমুল হক মধু ও আবদুর রহমানকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। খালাস দেয়া হয় মো. সোহেলকে।
রায়ের সময় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রাপ্ত আকিমুল হক মধু, আবদুর রহমান ও খালাস প্রাপ্ত আসামি সোহেল ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক ছিলো।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালে আশিক অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। ওই সময় প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আশিকুর রহমান আশিককে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করে দণ্ডপ্রাপ্তরা।
রায়ে সন্তুষ প্রকাশ করে নিহত আশিকের বাবা মো. হারুন ভূইয়া বলেন, উচ্চ আদালতেও যেন এই রায় বহাল থাকে পাশাপাশি রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
কুমিল্লা আদালতের পরিদর্শক মুজিবুর রহমান বলেন, আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাবি অধ্যাপক ড. তাহের খুন: ২ আসামির ফাঁসি স্থগিত চেয়ে রিট
নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
১ বছর আগে
রাবি অধ্যাপক ড. তাহের খুন: ২ আসামির ফাঁসি স্থগিত চেয়ে রিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
রবিবার (৭ মে) একজনের ভাই ও অপরজনের স্ত্রী এ রিট করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম।
তিনি জানান, আসামিদের আটক, গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণে সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ব্যত্যয় হয়েছে। তাই এক আসামির ভাই ও আরেক আসামির স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেছেন। রিটে ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলা: দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বাধা নেই
এর আগে ২ মে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি ও যাবজ্জীবন দণ্ডিত এক আসামির আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
আইন অনুসারে এখন রায়টি বিচারিক আদালত হয়ে কারাগারে যাবে। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন।
৩ মে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছিলেন, এখন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন। সেটা খারিজ করে হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে।
ড. তাহেরর মেয়ে আইনজীবী সেগুফতা তাবাসুম আহমেদ জানান, রিভিউ খারিজের রায় হাতে পেয়েছি। এটা একটা আশার আলো। এখন আশা করছি অতি দ্রুত কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২ মার্চ অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামিসহ দণ্ডিত তিনজনের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ।
ওই রায় লেখার পর গতকাল এর পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরের ম্যানহোলে তাহেরের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সেদিন তার ছেলে মতিহার থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত।
রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন।
২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। জাহাঙ্গীরের ভাই আবদুস সালাম ও সালামের আত্মীয় নাজমুলকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামিদের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। পৃথক আপিল খারিজ করে এবং হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় দেন।
সাক্ষী ও আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, এটি স্পষ্ট মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বিভাগের অধ্যাপক হওয়ার পথ পরিষ্কার করতে অধ্যাপক তাহেরকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
মহিউদ্দিন উচ্চশিক্ষিত ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। অধ্যাপক তাহের জীবিত থাকলে এই পদে মহিউদ্দিনের পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ শূন্য এ ধারণা থেকে শুধু অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার উদ্দেশ্যেই তাহেরকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম, আবদুস সালাম ও নাজমুল আর্থিক সুবিধা, সেবা ও কম্পিউটার পেতে অধ্যাপক তাহেরকে হত্যায় মহিউদ্দিনের প্রস্তাব গ্রহণ করেন ও সে অনুযায়ী অধ্যাপক তাহের হত্যার অপরাধ সংঘটন করেন।
গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। পরে মৃত্যুদণ্ড বহালের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর এবং যাবজ্জীবন সাজা পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবদুস সালাম পৃথক আবেদন করেন।
চেম্বার আদালত হয়ে রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগে ওঠে।
গত ২ মার্চ আপিল বিভাগ তিন আসামিরই রিভিউ আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলার রিভিউ খারিজ, ২ আসামির ফাঁসি বহাল
অধ্যাপক তাহের হত্যা: মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত
১ বছর আগে
মেহেরপুরে জোড়া খুনের মামলায় ৯ জনের ফাঁসি
মেহেরপুরের গাংনীতে আপন দুই ভাই রফিকুল ও আবুজেলকে হত্যার দায়ে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন- গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে হালিম, একই গ্রামের আছের হালসানার ছেলে আতিয়ার, আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দিন, নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম, দবির উদ্দিনের ছেলে শরিফ, নবীর উদ্দিনের ছেলে দবির উদ্দিন, আফেল উদ্দিন ওরফে আফেল সরদারের ছেলে আজিজুল হক, দাবির উদ্দিনের ছেলে ফরিদ এবং মুনসারের ছেলে মনি।
আরও পড়ুন: যশোরে শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে যুবকের ফাঁসির আদেশ
তাদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় মামলার অপর পাঁচ আসামি- আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুককে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজিপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ায় একই গ্রামের কিয়ামুদ্দীনের ছেলে আবুজেল (৩৫) ও রফিকুল ইসলামের (৪০) হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেন আসামিরা। পরদিন সকালে কাজিপুর গ্রামের মণ্ডল পাড়ার ভারতীয় সীমান্তের পাশ থেকে তাদের দুই ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে সহোদর হত্যার ঘটনায় নিহতদের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে মোট ১৪ আসামির নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
শুনানি ও সাক্ষ্যে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ৯ আসামিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে আতাউল হক, এ কে এম শফিকুল আলম ও কামরুল হাসান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
মামলার রায় ঘোষণার পর অতিরিক্ত পিপি কাজী শহিদুল হক বলেন, এটা মেহেরপুরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রায়। এই রায় ঘোষণার মধ্যে দিয়ে আবারও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মামলার বাদি জরিনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
আদালতের এই রায় অনতিবিলম্বে কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম বলেন যে রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
কাশিমপুর কারাগারে জোড়া খুনের মামলার এক আসামির ফাঁসি কার্যকর
১ বছর আগে