চলচ্চিত্র
২০২৬-এর ঈদ চলচ্চিত্রে মুখোমুখি শাহরুখ ও রণবীর
মহা ধুন্ধুমার হতে চলেছে ২০২৬-এ বলিউডের ঈদ আয়োজন। এই একই মৌসুমকে ঘিরে ঠিক হলো শাহরুখ খানের ‘কিং’ এবং রণবীর কাপুরের ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’ চলচ্চিত্রের মুক্তির দিনক্ষণ। উপমহাদেশ জুড়ে ভক্তদের প্রত্যাশার সয়লাবে যেন জোয়ার তুলেছে এই ঘোষণা। সেই সঙ্গে পুরোনো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে চলেছে ছবি দুটি। চলুন, এখনও নির্মাণের মঞ্চে না ওঠা সিনেমা দুটি নিয়ে আকর্ষণীয় কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
ঐতিহাসিক পূণর্মিলনী
শাহরুখ অভিনীত ফারাহ খানের পুনর্জন্ম কাহিনী ‘ওম শান্তি ওম’ ছিল ২০০৭-এর দীপাবলির ব্লকবাস্টার। একই সময়ে সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘সাওয়ারিয়া’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে রণবীর কাপুরের। তারপর থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর পর বক্সঅফিসে বলিউড বাদশার মুখোমুখি হতে চলেছেন রণবীর। বলাই বাহুল্য যে, এখন তিনি আর সেই ‘সাওয়ারিয়া’র রণবীর নেই।
নির্মাতা বনসালির সঙ্গে চলচ্চিত্র যুদ্ধে এসআরকে সেবার জিতে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু ২০১৫’তে শাহরুখের ‘দিলওয়ালে’ খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি বনসালির ‘বাজিরাও মাস্তানি’র কাছে। এবার তৃতীয়বারের মতো কিং খানের সঙ্গে বক্সঅফিস প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে যাচ্ছেন ১৫ বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জয়ী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা।
আরও পড়ুন: ‘কাঁটা’ আসছে বঙ্গতে
শাহরুখের ‘কিং’
পরপর ‘পাঠান’, ‘জওয়ান’ এবং ‘ডানকি’র মতো হিট মুভি দেওয়ার পর শাহরুখের এবারের চমকের নাম ‘কিং’। বহুল প্রত্যাশিত এই ক্রাইম ড্রামার মধ্য দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য পর্দায় প্রকাশিত চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে শাহরুখ-কন্যা সুহানা খানের। ছবিটির পরিচালনায় থাকবেন সুজয় ঘোষ।
এসআরকে’র রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্টের সঙ্গে সিনেমার সহ-প্রযোজনায় অংশ নেবে সিদ্ধার্থ আনন্দের মারফ্লিক্স পিকচার্স।
২০১৩-এর ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-এর দুর্দান্ত সফলতার পর থেকে দীর্ঘ বিরতির এই প্রথম ঈদের মৌসুমে ছবি প্রকাশ করছেন কিং খান।
ছবিতে প্রধান খলনায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে অভিষেক বচ্চনকে। তারকাশিল্পীদের মধ্যে আরও থাকবেন সম্প্রতি সাড়া জাগানো হরর-কমেডি মুঞ্জিয়া-খ্যাত অভিনেতা অভয় ভার্মা।
আরও পড়ুন: মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ অভূতপূর্ব কিছু অ্যাকশন সিকোয়েন্স এবং নজরকাড়া কিছু ভিজুয়াল ইফেক্ট দিয়ে সাজানো হবে মুভিটিকে। সঙ্গত কারণে বেশ সময় নিয়ে পরিকল্পনা চলছে ছবি নির্মাণে। সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে আগস্ট বা সেপ্টেম্বর নাগাদ শেষ হবে নির্মাণের যাবতীয় কাজ।
রণবীরের ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’
প্রথম দিকে ২০২৫-এর ক্রিসমাসে মুক্তি পাওয়া কথা থাকলেও সময় পিছিয়ে নতুন তারিখ ঠিক করা ২০২৬-এর ২০ মার্চ। সেই থেকেই ‘কিং’-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’-এর।
সঞ্জয় লীলা বনসালি পরিচালিত এই এপিক রোমান্টিক মুভিতে অভিনয় করবেন রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট এবং ভিকি কৌশল। ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান (২০২২)-এর পর এটি দম্পতি রণবীর-আলিয়ার প্রথম চলচ্চিত্র।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ বিরতির পর ‘নীল জোছনা’ নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন শাওন
বলিউডের ঈদ আয়োজনে এই পরিবর্তনের পটভূমি
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ঈদে ছবি মুক্তি থেকে বলিউডের ভাইজান-খ্যাত সুপারস্টার সালমান খানের সরে দাঁড়ানো থেকে। বছরের পর বছর ধরে অনেকটা একচেটিয়া ভাবেই ঈদ মৌসুমকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে সালমান খানের মুভিগুলো। কিন্তু এই ধারাবাহিকতা ভেঙে ২০২৬ সাল থেকে যাচ্ছে একটু ভিন্ন রকমের।
২০২৫ সালের ঈদের জন্য নির্ধারিত ‘সিকান্দার’ মুভির কাজ শেষ করেই পরিচালক অ্যাটলির সঙ্গে পরবর্তী মেগা-বাজেটের ছবি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সালমান। ব্যাপক শুটিং ও ভিএফএক্স নিয়ে এই নতুন প্রজেক্টে রয়েছে বেশ ভারী কাজের চাপ। স্বভাবতই অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজনীয়তা ছবি মুক্তির দিনক্ষণকে ঠেলে দিয়েছে ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধে। এতে ২০২৬-এর ঈদ মৌসুমে সৃষ্টি হয় বিগ বাজেটের চলচ্চিত্র-শূন্যতা। আর এই শূন্যস্থান পূরণেই মুক্তির তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ‘কিং’ এবং ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’-এর।
শেষাংশ
২০২৬-এ বলিউডের ঈদ আয়োজনে শাহরুখ ও রণবীরের মুখোমুখি হওয়াটা জন্ম দিয়েছে নতুন মাত্রার ব্লকবাস্টার প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা। একদিকে ‘কিং’-এর আবেগপূর্ণ পিতা-কন্যার আবেগঘন চিত্রনাট্য, অন্যদিকে ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’-এ প্রেম ও সংঘর্ষের চিরনবীন পটভূমি। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ২০২৬-এর ঈদুল ফিতর হতে চলছে বলিউডের সবচেয়ে প্রত্যাশিত আয়োজনগুলোর মধ্যে একটি। কার মাথায় মুকুট উঠবে তা নিয়ে রুদ্ধঃশ্বাস প্রতীক্ষার পাশাপাশি মুভিপ্রেমীরা পাচ্ছে এক স্মরণীয় উৎসবমুখর সপ্তাহের হাতছানি।
আরও পড়ুন: আসছে নিশো-তমা জুটির নতুন সিনেমা ‘অসিয়ত’
২ মাস আগে
দীর্ঘ বিরতির পর ‘নীল জোছনা’ নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন শাওন
২০০৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল বাংলাদেশের কিংবদন্তি ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ুন আহমেদের ‘আমার আছে জল’ সিনেমা। সেখানে ‘নিশাদ’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তারপর থেকে গান ও নাটকের মাধ্যমে বেশ কিছুবার দর্শকদের সামনে এলেও বড় পর্দা থেকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। অবশেষে ১৭ বছরের দীর্ঘ বিরতি ভেঙে ‘নীল জোছনা’ শিরোনামের চলচ্চিত্র দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য পর্দায় ফিরছেন শাওন।
কেমন হতে যাচ্ছে সিনেমার গল্প, আর এই নির্মাণে শাওনের সঙ্গী হচ্ছেন কারা- চলুন জেনে নেয়া যাক।
বিনোদন জগতে শাওনের পদচারণা
বিনোদন জগতে শাওনের শুরুটা ছিল ১৯৮৯ সালে ইবনে মিজান পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আলাল দুলাল’-এ শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে। সেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন তৎকালীন খ্যাতিমান নায়িকা সুচরিতার ছোটবেলার চরিত্রে। তবে তিনি আলোচনায় আসেন শিশু শিল্পীদের জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’তে বিজয়ী হওয়ার পর। তার নামের সঙ্গে একাধারে জুড়ে ছিল নৃত্যশিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী।
আরো পড়ুন: ইতালির ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হলো 'ময়না'
ছোটপর্দায় শাওনের অভিষেক হয় ১৯৯৬ সালের ধারাবাহিক নাটক ‘নক্ষত্রের রাত’-এর মাধ্যমে। ধারাবাহিকটি নির্মাণ করেছিলেন প্রথিতযশা নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদ। ১৯৯৯ সালে তার কালজয়ী ধারাবাহিক ‘আজ রবিবার’-এ শাওনের ‘তিতলি’ চরিত্রটি আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। এরপর থেকে হুমায়ুন আহমেদের নাট্যদলের নিয়মিত একজন হয়ে যান শাওন। সে বছরই রম্য নাটক ‘সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড’-এ মিতু চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
শুধু নাটকেই নয়, প্রখ্যাত নির্মাতার চলচ্চিত্রগুলোতেও সমান বিচরণ ছিল এই মেধাবী তারকার। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় প্রধান নায়িকা ‘কুসুম’-এর ভূমিকায় দেখা যায় শাওনকে। এরপর থেকে ‘দুই দুয়ারী’ (২০০১)-তে ‘তরু’, ‘চন্দ্রকথা’ (২০০৩)-য় ‘চন্দ্র’, এবং ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪) সিনেমার ‘আশালতা’ চরিত্রগুলো দর্শক ও সমালোচক মহলে বেশ সমাদৃত হয়।
২০০৪ সালের দর্শকনন্দিত ধারাবাহিক নাটক ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’তে তিনি ‘পুষ্প’ চরিত্রে অভিনয় করেন।
হুমায়ুন আহমেদের নির্দেশনায় শাওনের সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল ২০০৮ সালের ‘আমার আছে জল’, আর সর্বশেষ নাটক ছিল ২০১১ সালের ‘স্বর্ণকলস’।
আরো পড়ুন: কিরণ রাওয়ের ‘লাপাতা লেডিস’ নিয়ে যে কারণে এত আলোচনা
২০১২ সালে হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর পর থেকে তার বেশ কিছু রচনা পরিচালনা করেন শাওন।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১১ সালের নাটক ‘স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ’, ২০১৪ সালের ‘বিভ্রম’, এবং ২০১৬ সালের চলচ্চিত্র ‘কৃষ্ণপক্ষ’। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ সিনেমায় ‘যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দেওয়ার সুবাদে তিনি শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
‘নীল জোছনা’ সিনেমার কথকতা
সিনেমার গল্প
চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য নির্মিত হয়েছে মোশতাক আহমেদের ‘নীল জোছনার জীবন’ উপন্যাস অবলম্বনে, যেটি মুলত একটি প্যারাসাইকোলজি বিষয়ক কাহিনী নিয়ে রচিত।
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র লায়লা, যে অতীত ও ভবিষ্যত দেখতে পারে। আর এই বিষয়টি আতঙ্কিত করে তুলেছে তার স্বামী আমিনকে। কেননা সে জানতে পেরেছে খুব শিগগিরই লায়লার ফাঁসি হতে যাচ্ছে, আর কথাটি বলেছে স্বয়ং লায়লা নিজে। আমিন কিছুতেই বুঝে উঠতে পারে না, কেন তার স্ত্রীর ফাঁসি হবে; সে তো কোনো অপরাধ করেনি!
আরো পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এর বাংলাদেশি সিনেমা
চরম উদ্বিগ্নতার মুহুর্তে তারা শরণাপন্ন হয় মনস্তাত্ত্বিক ড. তরফদারের। গভীর পর্যবেক্ষণে তিনি খেয়াল করেন যে, লায়লা প্রায়ই একটি গান গুনগুন করে। আর এই গানের উৎসটি ডাক্তারকে সন্ধান দেয় এক অদ্ভূত বিমূর্ত জীবনের, যার নাম নীল জোছনা।
লায়লার অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার পেছনে এই নীল জোছনাই দায়ী। আবার এই নীল জোছনাই তাকে ফাঁসির দিকে ধাবিত করছে।
ডাক্তার টের পান, লায়লার জীবন প্রবাহ পৃথিবীর আর দশটা মানুষের মত স্বাভাবিক নয়। এরপরও তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকেন মেয়েটির ভয়াবহ পরিণতির গতিপথ পাল্টানোর জন্য।
আরো পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এর কিছু চমকপ্রদ বাংলা নাটক
চলচ্চিত্রের নির্মাণ ও কলাকুশলি
৬ বছর আগে ২০১৮ সালের শেষ দিকে সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ফাখরুল আরেফিন খানের পরিচালনায়। মহামারী করোনাসহ নানা কারণে শুটিংয়ের কাজ বারবার পিছিয়ে যায়। অতঃপর চলতি বছরের মে মাস থেকে সফলভাবে সিনেমাটির শুটিং চলছে।
‘ভুবন মাঝি’, ‘গণ্ডি’ এবং ‘জেকে ১৯৭১’-এর পর ফাখরুল আরেফিন খানের চতুর্থ সিনেমা ‘নীল জোছনা’। এর আগে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘আল বদর’ (২০১১)-এর জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
চলচ্চিত্রে শাওনকে দেখা যাবে শহুরে এক নারীর চরিত্রে। সিনেমার আলাদা চমক হিসেবে থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী পাওলি দাম। এছাড়া অন্যান্য অভিনয়শিল্পীরা হলেন- ইন্তেখাব দিনার, তারিক আনাম খান, এস এম নাঈম ও পার্থ বড়ুয়া।
আরো পড়ুন: আসছে তাহসান-মিথিলার ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’
ছবির ক্যামেরাম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন রানা দাশগুপ্ত। সাকি ব্যানার্জির সংগীত পরিচালনায় ছবিতে গান থাকবে মোট তিনটি। এগুলোর মধ্যে মৌলিক গান দুটি, যেগুলোর গীতিকার লয়দীপ ও মাহমুদ শাওন।
পরিশেষ
মনস্তাত্ত্বিক গল্পের চলচ্চিত্র দিয়ে শাওনের প্রত্যাবর্তন হুমায়ুন-ভক্তদের জন্য নতুন করে থ্রিলার নির্ভর কাজ দেখার ইন্ধন যোগাচ্ছে। ২১ শতকের প্রথম দশকে বিনোদন জগতের বিভিন্ন অঙ্গনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার মাধ্যমে ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের একটি আলাদা জায়গা তৈরি করেছিলেন শাওন। তবে ‘নীল জোছনা’র মাধ্যমে সেই জনপ্রিয়তার পুনরুত্থান ঘটবে কি না, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে চলচ্চিত্রটির মুক্তির দিন পর্যন্ত।
তবে ফাখরুল আরেফিন খানের বিগত ভিন্ন ধারার কাজের সুবাদে বাংলাদেশি সিনেমা জগতে নতুন কিছু সংযোজনের সম্ভাবনা তৈরি করছে চলচ্চিত্রটি।
মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
৪ মাস আগে
শাকিব খানের 'তুফান' চলচ্চিত্রের চমকপ্রদ কিছু তথ্য
২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু হয় ‘তুফান’ চলচ্চিত্রের। সেই থেকে হৈচৈ-এর শুরু ঢালিউড সুপার স্টার শাকিব খান অভিনীত এই নতুন মুভি নিয়ে। ২৮ মার্চ প্রথম পোস্টার প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে দর্শক ও গণমাধ্যমজুড়ে জল্পনা-কল্পনা যেন আরও বেড়ে গেছে। শাকিব ভক্ত ছাড়াও ছবিটি এবার বাংলা মুভিপ্রেমিদের আরও বড় অংশকে আকৃষ্ট করছে। কেননা বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমাটিতে অংশ নিচ্ছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় সব তারকারা। চলুন, অ্যাকশন ঘরানার চলচ্চিত্র ‘তুফান’ নিয়ে চমকপ্রদ কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
‘তুফান’ এর পর্দার পেছনের শিল্পীরা
ছবিটির নির্দেশনায় রয়েছেন এ সময়ের ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতা রায়হান রাফি। প্রথম ছবি ‘পোড়ামন ২’ (২০১৮) দিয়ে বাজিমাত করার পর থেকে তিনি একের পর এক দুর্দান্ত ছবি উপহার দিয়ে চলেছেন। ‘পরান’ (২০২২), ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’ (২০২১) এবং ‘সুড়ঙ্গ’ (২০২৩) এ অনবদ্য নির্মাণশৈলী রাফিকে এনে দিয়েছে স্বতন্ত্র ভক্তশ্রেণী।
বাংলাদেশের আলফা-আই স্টুডিওস ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি এবং ভারতের এসভিএফ- এই ৩টি প্রোডাকশন হাউজ যৌথভাবে প্রযোজনা করছে ছবিটি। স্বভাবতই নির্মাণ খরচের প্রতিযোগিতায় সমসাময়িক সব সিনেমাকে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে ‘তুফান’।
আরও পড়ুন: শাকিব-সোনাল জুটি: কতটা বরাবর হলো!
‘তুফান’ চলচ্চিত্রের গল্প
কাহিনী ও চিত্রনাট্য নিয়ে পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীরা এখনও গোপনীয়তা বজায় রেখে চলেছেন। এরই মধ্যে ফার্স্ট লুক প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ভক্তদের মাঝে ছবি নিয়ে কৌতুহলটা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
সোফায় হেলান দেওয়া শাকিব খানের বৈমানিক সানগ্লাসের সঙ্গে কালো জ্যাকেট, লম্বা ও ঢেউ খেলানো চুল মারদাঙ্গা কাহিনীর আভাস দিচ্ছে।
বুকের কাছে বোতাম খোলা শার্টের মাঝে গলার কালো লকেট, হাতের অনামিকা ও কনিষ্ঠায় কালো আংটি। এর সঙ্গে পায়ের কাছে কালো বন্দুকটি হলিউডের গডফাদার মুভির কথা মনে করিয়ে দেয়। সর্বপরি, দর্শক এবার পূর্ণদৈর্ঘ্য পর্দায় দেখতে চলেছে গ্যাংস্টার শাকিবকে। সেই সূত্রে বলা যেতে পারে যে, আদ্যোপান্ত হাই-ভোল্টেজ অ্যাকশন ঘরানার ছবি হতে যাচ্ছে ‘তুফান’।
আরও পড়ুন: ভারতের ৩ রাজ্যে শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’
‘তুফান’ এ দুই বাংলার সেরা তারকারা
সিনেমাটির সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বিষয়টি হলো এর কাস্টিং। বাংলাদেশ ও ভারতের জনপ্রিয় সব তারকাদের বড় পর্দায় একসঙ্গে দেখা যাবে এখানে। ফলে প্রত্যেক তারকার স্বতন্ত্র ভক্তদের সংযোজনে দুই বাংলা জুড়ে বিশাল এক দর্শক শ্রেণী তৈরি হয়েছে ‘তুফান’ এর জন্য।
শাকিব খানের বিপরীতে প্রধান সহশিল্পী হিসেবে রয়েছেন কলকাতার তারকা মিমি চক্রবর্তী।
এটি কেবল মিমি-শাকিব জুটির প্রথম ছবিই নয়, সেই সঙ্গে এটি মিমির অভিনয় ক্যারিয়ারেও প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। ২০১২ সালের ‘বাপি বাড়ি যা’ এবং ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ দিয়ে লাইমলাইটে আসেন মিমি। এরপর থেকে বিভিন্ন আর্ট ফিল্মসহ অনেক ব্যবসায়িক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। বিগত বছরগুলোতে তার সেরা কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এসওএস কলকাতা’ (২০২০) এবং ‘বাজি’ (২০২১)।
আরও পড়ুন: রাফির পরিচালনায় শাকিব খানের ‘তুফান’
‘তুফান’-এ প্রধান সহশিল্পী হিসেবে আরও থাকছেন বাংলাদেশের ছোট পর্দার তারকা মাসুমা রহমান নাবিলা। বড় পর্দায় আনাগোণাটা খুব একটা না থাকলেও ‘আয়নাবাজি’ (২০১৬)-এর মাধ্যমে দর্শকদের মনে এক বিশাল জায়গা করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে টলিউড অভিনেতা যীশু সেনগুপ্তকে। বিনোদন জগতে তার পদার্পণ বেশ আগে হলেও ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ (২০০৮), ‘আবহমান’ (২০১০), ‘নৌকাডুবি’ (২০১১), ‘চিত্রাঙ্গদা’ (২০১২) চলচ্চিত্রগুলো তাকে ব্যাপক সুখ্যাতি এনে দিয়েছে। বিগত দশকে তার সেরা কাজগুলো ছিলো ২০১৪-এর ‘জাতিস্মর’, ২০১৫-এর ‘রাজকাহিনী’ ও ‘আরশিনগর’, ২০১৬-এর ‘জুলফিকার’।
অতিথি চরিত্র হলেও ‘তুফান’-এর সঙ্গে চঞ্চল চৌধুরীর যুক্ত হওয়াটা দারুণ চমক দিয়েছে মুভিপ্রেমীদের।
আরও পড়ুন: একই প্ল্যাটফর্মে দুই তারকা শাকিব-সাকিব
চলতি বছরের ‘রুমি’ এবং ‘মনোগামী’ এর জনপ্রিয়তার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন সিনেমার খবরটি নেটিজেনদের মধ্যে রীতিমতো প্রত্যাশার ঝর বইয়ে দিয়েছে। বিশেষ চরিত্রটি কেমন হবে তা এখনও খোলাসা করা হয়নি। ফলে রায়হান রাফি ও চঞ্চল চৌধুরীর এই কাজ নিয়ে কৌতুহল বেড়েই চলেছে সিনেমাপ্রেমীদের।
এখানেই শেষ নয়; ‘তুফান’ টিমের সঙ্গে আরও রয়েছেন ৬ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার বিজয়ী বর্ষিয়ান অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। তার এই সেরা কাজগুলো হচ্ছে ‘শঙ্খনাদ’ (২০০৪), ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ (২০১৬), ‘ফাগুন হাওয়ায়’ (২০১৯), ‘গহীন বালুচর’ (২০১৭) এবং ‘বিশ্বসুন্দরী’ (২০২০), এবং ‘নোনা জলের কাব্য’ (২০২১)। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে বহু সিনেমায় কাজ করলেও শাকিব খানের সঙ্গে এই প্রথম কাজ করছেন ফজলুর রহমান বাবু।
এছাড়া রায়হান রাফির ২০২১ সালের সিনেমা ‘খাচার ভিতর অচিন পাখি’তেও তার কাজ ব্যাপক ভাবে সমাদৃত হয়। যে কোনো চরিত্রে অবলীলায় মিশে যাওয়ার মতো এক অদ্ভূত স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে এই শক্তিমান অভিনেতার মাঝে।
আরও পড়ুন: না ফেরার দেশে অভিনেতা রুমি
‘তুফান’ সিনেমায় আরও দেখা যাবে শহীদুজ্জামান সেলিম, একে আজাদ সেতু, গাজী রাকায়েত এবং হাসনাত রিপনকে।
কবে মুক্তি পাচ্ছে ‘তুফান’
সিনেমার শুটিং শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। এ পর্যন্ত ভারতের হায়দারাবাদের রামুজি ফিল্ম সিটিতে শুটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। ৯০ দশকের গাড়ি, বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনায় সাজানো সেটটি দারুণ ভাবে নজর কেঁড়েছিল দর্শকদের।
বর্তমানে কলকাতা শহরে দৃশ্য ধারণের কাজ চলছে, যেটি শুরু হয়েছিল গত ১৫ এপ্রিল থেকে। চলবে প্রায় এক মাস ধরে। পরিকল্পনা অনুসারে একটি ট্রেইলারও প্রকাশ করা হবে শিগগিরই। বাকি সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে যাবতীয় চমক নিয়ে ‘তুফান’ এর পর্দা উঠবে আগামী ঈদুল আজহায়।
আরও পড়ুন: খালিদকে স্মরণ করে শুরু হচ্ছে টিএমএম বাংলা সংগীত প্রতিযোগিতা ২০২৪
শেষাংশ
দুই বাংলার বড় বড় ৩টি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সমর্থনে শাকিব খানের ‘তুফান’ মুভি বাংলাদেশি ছবির জন্য এক মাইলফলক হতে যাচ্ছে। বিশেষ করে ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ) এর বদৌলতে রায়হান রাফির ভিন্ন ধারার নির্মাণশৈলী বাংলাদেশি ছবির নতুনত্বের ব্যাপারে অবহিত করবে গোটা বিশ্বকে।
অন্যদিকে, শাকিব খানসহ মিমি চক্রবর্তী, যীশু সেনগুপ্ত, চঞ্চল চৌধুরী, মাসুমা রহমান নাবিলা, ও ফজলুর রহমান বাবুর ভক্তরা সব মিলে বিশাল এক দর্শক শ্রেণী তৈরি করছে ‘তুফান’-এর জন্য। এই ধারাবাহিকতায় সর্বাঙ্গীনভাবে এই সিনেমার জন্য শৈল্পিক গুনগত মানের পাশাপাশি থাকছে ব্যবসায়িক ভাবেও সফল হওয়ার অপার সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: কারিনা-টাবু ও কৃতির ক্রু: তিন প্রজন্মের তিন নায়িকার রম্য সিনেমা
৬ মাস আগে
কারিনা-টাবু ও কৃতির ক্রু: তিন প্রজন্মের তিন নায়িকার রম্য সিনেমা
গত ২৯ মার্চ মুক্তির পর থেকেই দর্শক সহ সমালোচকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বলিউড মুভি ক্রু। প্রথমবারের মতো একসঙ্গে অভিনয় করা তিন প্রজন্মের তিন নায়িকা টাবু, কারিনা ও কৃতি চলচ্চিত্রের মূল আকর্ষণ। শুধু তাই নয়, হৈচৈ-এর ব্যপ্তি সম্প্রসারিত হয়েছে নারীপ্রধান হিন্দি ছবির জগতে এর যুগান্তকারী ভূমিকা পর্যন্ত। তবে অভিনয়, চিত্রনাট্য, ও নির্মাণের বিচারে ছবিটি কতটুকু উতড়ে যেতে পেরেছে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ক্রু মুভির কলাকুশলীরা
নিধি মেহরা ও মেহুল সুরির চিত্রনাট্যে রম্য চলচ্চিত্রটির পরিচালনায় ছিলেন রাজেশ এ কৃষ্ণান। টাবু, কারিনা কাপুর খান, ও কৃতি স্যানন ছাড়াও ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলজিৎ দোসাঞ্জ, রাজেশ শর্মা, কুলভূষণ খারবান্দা, এবং কলকাতার অভিনেতা শাশ্বত চ্যাটার্জি। এছাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে জনপ্রিয় স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান ও টিভি উপস্থাপক কপিল শর্মাকে।
সঙ্গীত আয়োজনে ছিলেন দিলজিৎ দোসাঞ্জ, বাদশা, রাজ রঞ্জোধ, বিশাল মিশ্র, অক্ষয়-আইপি, ভার্গ-রোহিত। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর কম্পজিশনের দায়িত্বে ছিলেন জন স্টুয়ার্ট এদুরি।
আরও পড়ুন: এবারের ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় ১০টি নাটক
সিনেমাটোগ্রাফিতে কাজ করেছেন অনুজ রাকেশ ধাওয়ান। চলচ্চিত্রের সার্বিক সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন মনন সাগর।
ক্রু-এর নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বালাজি মোশন পিকচার্স এবং অনিল কাপুর ফিল্মস অ্যান্ড কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক। প্রযোজনা কমিটিতে ছিলেন একতা কাপুর, রিয়া কাপুর, অনিল কাপুর এবং দিগ্বিজয় পুরোহিত।
ক্রু চলচ্চিত্রের কাহিনী
গল্পটি গীতা শেঠি, জেসমিন কোহলি, এবং দিব্যা রানা নামের তিন বিমানবালাকে নিয়ে। দেউলিয়াপ্রায় কোহিনূর এয়ারলাইন্সে তাদের ছয় মাসের বেতন বাকি।
গীতাকে তার নিজের সংসারসহ তার ছোট ভাইয়ের পরিবারেও আর্থিক সাহায্য দিতে হয়।
আরও পড়ুন: ঈদের কেনাকাটায় জনপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর জেসমিন বড় হয়েছেন নানা-নানীর কাছে। তাই পারিবারিক সম্পর্কের প্রতি তার ভীষণ বিতৃষ্ণা। তবে বিলাস জীবন-যাপনের প্রতি তার প্রচণ্ড আকর্ষণ।
আর দিব্যার পাইলট হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে যেয়ে অনেক ঋণ জমে যায়। কিন্তু যথেষ্ট সুযোগের অভাবে তার ভাগ্যে শেষমেষ বিমানবালার চাকরি মেলে। অবশ্য বাড়ি ফেরার সময় বিমানবালার পোশাক বদলে পাইলটের পোশাক পরে পরিবারের সামনে হাজির হন। এভাবে একদিকে পরিবারকে ফাঁকি দেন, আর অন্যদিকে টেনে চলেন সেই ঋণের বোঝা।
এমন আর্থিক সংকটে তিন জনেরই টালমাটাল অবস্থা। এরই মধ্যে কোহিনূর এয়ারলাইন্সের মালিক বিজয় ওয়ালিয়া সবাইকে ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফলে এতদিন ধরে সব ঠিক হয়ে যাবে ভেবে যে স্বপ্ন তারা বুকে লালন করে আসছিল, তার সব গুড়েবালি হয়ে যায়।
ঠিক এমনি সময় তাদের কাছে সুযোগ আসে স্বর্ণ চোরাচালানের। এই সুযোগের সদ্ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তাদের জীবনে ঘটতে থাকে নানা ঘটনা, আর সিনেমার কাহিনীতে যুক্ত হতে থাকে বিচিত্র স্তর।
আরও পড়ুন: ঈদে ঘরে ফিরতে অনলাইনে প্লেন, বাস ও ট্রেনের টিকেট কাটার উপায়
৭ মাস আগে
এবারের ঈদ আয়োজনে বড় পর্দার ১০টি চলচ্চিত্র
নতুন সিনেমার মাধ্যমে ঈদ বিনোদনটা বেশ পুরনো। বিগত কয়েক দশকে ঢালিউড চলচ্চিত্রের অনেক চড়াই- উৎরাই হলেও ঈদের সময় বাংলা ছবির শোরগোলটা ছিল স্বাভাবিক। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এমনকি ব্যবসায়িক সিনেমাগুলোর পাশাপাশি মূলধারার কাতারে শামিল হচ্ছে শৈল্পিক ও নিরীক্ষাধর্মী ছবিগুলোও। তাই ভিন্ন স্বাদে বাড়ছে দর্শকদের প্রত্যাশা। চলুন, ঈদুল ফিতর ২০২৪-এ মুক্তির অপেক্ষায় থাকা তেমনি কিছু বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
আসন্ন ঈদুল ফিতর ২০২৪ এ যে ১০টি বাংলাদেশী সিনেমা দর্শক মাতানোর অপেক্ষায়
রাজকুমার
২০২২ সালের ২৯ মার্চ সিনেমার ফার্স্ট লুক প্রকাশের পর থেকেই হৈচৈ শুরু হয়েছে ‘রাজকুমার’ নিয়ে। রোমান্টিক-অ্যাকশন ঘরানার এই মুভিতে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের নায়িকা হয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী কোর্টনি কফি। আর এ নিয়ে মোট ৩টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করলেন পরিচালক হিমেল আশরাফ।
এখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মোস্তফা, আফজাল হোসেন, ফারুক আহমেদ এবং ডা. এজাজ।
‘রাজকুমার’ বাংলাদেশের একটি গ্রাম্য যুবকের আমেরিকার যান্ত্রিক শহরে তার মাকে খোঁজার গল্প। এই অক্লান্ত যাত্রায় একে একে যুবকটি সম্মুখীন হয় অভিবাসন বাধা, ভিন্ন সংস্কৃতি, এমনকি প্রেম-ভালবাসার।
আরও পড়ুন: অ্যামাজন প্রাইমের পর এবার টফির পর্দায় আসছে ‘ওরা ৭ জন’
কাজলরেখা
দেশের সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রকার গিয়াস উদ্দিন সেলিমের দীর্ঘ ১২ বছরের গবেষণার ফসল এই চলচ্চিত্র। মৈমনসিংহ গীতিকার ‘কাজলরেখা’ অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটির গল্প, পরিচালনা এবং প্রযোজনা করেছেন সেলিম নিজেই। সিনেমার পটভূমিক আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগের।
মুভির নাম ভূমিকায় দেখা যাবে মন্দিরা চক্রবর্তীকে। সুচ কুমারের ভূমিকায় থাকছেন শরিফুল রাজ। আর খলচরিত্র কঙ্কণ দাসী হিসেবে রয়েছেন রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা।
চলচ্চিত্রটিতে আরও আছেন ছোট পর্দার তারকা খায়রুল বাশার, সাদিয়া আয়মান, ইরেশ যাকের, আজাদ আবুল কালাম, ও শাহানা সুমি।
লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী
ওটিটি (ওভার-দ্যা-টপ) প্ল্যাটফর্ম চরকি’র ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রজেক্টের ১২টি ওয়েব ফিল্মের একটি ‘মনোগামী’। পরিচালনায় আছেন স্বয়ং প্রজেক্ট তত্বাবধায়ক প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রজেক্টের অধীনে ইতোমধ্যে তার পরিচালিত ও অভিনীত ‘অটোবায়োগ্রাফি’ ফিল্মটি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবারের ঈদুল ফিতরে ‘মনোগামী’র মাধ্যমে তিনি তুলে ধরতে যাচ্ছেন নারী-পুরুষের সম্পর্কের তীক্ত সত্য কিছু দিক। এর আগে তার এই প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিলো ‘ব্যাচেলার’ (২০০৪) ছবিতে। এবারে আলোকপাত করা হয়েছে বিবাহিত জীবনের দিকে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ আয়কারী ১০ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
সিনেমার শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন এ সময়ের বিনোদন পাড়ার সবচেয়ে পরিচিত মুখ চঞ্চল চৌধুরী। তার সঙ্গে সহশিল্পী হিসেবে আছেন সঙ্গীতশিল্পী ও ইউটিউবার জেফার রহমান এবং নৃত্যশিল্পী সামিনা হোসেন প্রেমাকে।
দেয়ালের দেশ
বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে নির্মিত এই রোমান্টিক ছবির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চিত্র-পরিচালনা করলেন মিশুক মনি। ছবির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্যও সবই তার লেখা। চলচ্চিত্রের গল্প এগিয়েছে দুটি ভিন্ন সময়কে কেন্দ্র করে।
‘দেয়ালের দেশ’-এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো জুটিবদ্ধ হয়েছেন শরিফুল রাজ ও শবনম বুবলী। ব্যবসায়িক ছবির নায়িকা হিসেবে সুপরিচিত বুবলীকে এবার দেখা যাবে অকৃত্রিম বাস্তবধর্মী চরিত্রে।
চলচ্চিত্রের অন্যান্য সহশিল্পীরা হলেন জিনাত শানু স্বাগতা, আজিজুল হাকিম, সাবেরী আলম, শাহাদাত হোসেন, এ কে আজাদ সেতু, সমাপ্তি মাশুক, এবং দীপক সুমন।
আরও পড়ুন: ঈদের কেনাকাটায় জনপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
মেট্রো সিনেমার ব্যানারে যৌথ ভাবে ছবির প্রযোজনা করেছেন মাহফুজুর রহমান ও মিশুক মনি।
ওমর
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী চলচ্চিত্রকার মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ দীর্ঘদিন পর বিনোদন পাড়ায় ফিরছেন ‘ওমর’-এর মাধ্যমে। মুভির শিরোনামটি ঠিক করেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। ছবির গল্প নিয়ে এখনও ‘ওমর’ টিমের কেউই তেমন কিছু প্রকাশ করেননি। তবে চিত্রনাট্য লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ।
চলচ্চিত্রের নাম চরিত্রে রয়েছেন শরীফুল রাজ। বিশেষ একটি চরিত্রে আবির্ভূত হবেন কলকাতার অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। এছাড়া আরও থাকছেন ফজলুর রমান বাবু, নাসির উদ্দিন খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, এরফান মৃধা শিবলু, ও আয়মান সিমলাকে। মাস্টার কমিউনিকেশন্সের ব্যানারে মুভির প্রযোজনায় ছিলেন খোরশেদ আলম।
আরও পড়ুন: টুয়েলভথ ফেইলের মতো অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী ১০ সিনেমা
৭ মাস আগে
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আসছে ৭৪ দেশের ২৫২ সিনেমা
‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’- এই স্লোগানে শনিবার (২০ জানুয়ারি) পর্দা উঠবে ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত এই উৎসব চলবে আগামী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বাংলাদেশসহ ৭৪টি দেশের ২৫২টি সিনেমা নিয়ে শুরু হচ্ছে ৯ দিনব্যাপী এই উৎসব।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে আগামী শনিবার বিকাল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত অভিনেত্রী শ্রীমতি শর্মিলা ঠাকুর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
২০২৪ সালের এই উৎসবে ১০টি বিভাগে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, ট্রিবিউট, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচ্যুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম বিভাগ।
উৎসবকালে দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর অডিটরিয়াম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাডেমির মিলনায়তনে। এসব মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী সবাই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় ‘আগে এলে আগে দেখবেন’ ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে। তবে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করবেন কেবল আমন্ত্রিত অতিথিরা।
উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত থাকবেন ইরানের খ্যাতিমান নির্মাতা মাজিদ মাজিদি, ভারতের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শর্মীলা ঠাকুর, স্বস্তিকা মুখার্জি, অঞ্জন দত্তসহ বিভিন্ন দেশের নামকরা সব তারকা।
সংবাদ সম্মেলন আরও জানানো হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রদর্শন করা হবে- ইরানি পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম নির্মিত ও জয়া আহসান অভিনীত ‘ফেরেশতে’ এবং বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজিত ও শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’।
২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সবার আকর্ষণ এবার ‘মাস্টার ক্লাস’-এ! কারণ মাস্টার ক্লাস নিতে যাচ্ছেন ইরানি সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ‘চিলড্রেন অব হেভেন’, ‘বারান’ ও ‘সং অব স্প্যারো’র মতো বিশ্বনন্দিত সিনেমার পরিচালক মাজিদ মাজিদি। এছাড়া মাস্টার ক্লাসের দু’টি ভিন্ন সেশনে কথা বলবেন চীনের সাংহাই ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ার শি চুয়ান এবং ভারতের নির্মাতা, অভিনেতা ও গায়ক অঞ্জন দত্ত। ২৭ জানুয়ারি দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে মাস্টার ক্লাসটি।
মাস্টারক্লাসের সেশনগুলো পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরু। মাস্টারক্লাস শেষে পরিবেশিত হবে অঞ্জন দত্তের সংগীত। এই চারটি সেশনের জন্যই অগ্রিম নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন লিংক উৎসবের ফেসবুক পেইজে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন মুজতবা জামাল।
এছাড়া আগামী ২২ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মিলনায়তনে ‘ওয়াইড অ্যাঙ্গেল’ সেকশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি থাকবেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং সাংহাই ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ার শি চুয়ান।
আরও পড়ুন: ‘হুব্বা’ দুই বাংলার দর্শককে আকৃষ্ট করবে: মোশাররফ করিম
২১ থেকে ২২ জানুয়ারি উৎসবের অংশ হিসেবে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক ‘দশম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স’ ঢাকা ক্লাবের স্যামসন লাউঞ্জের তৃতীয় তলায় অনুষ্ঠিত হবে। কনফারেন্সে দেশি-বিদেশি নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মত বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী নির্মাতারা অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি সুযোগ পাবেন।
এখানে নারী নির্মাতারা তাদের কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশ্বের খ্যাতিমান নারী নির্মাতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। বিশ্ব পরিবর্তনে নারীর নেতিবাচক ও ইতিবাচক ভূমিকা এবং প্রতিবন্ধকতা থেকে সমাধানের উপায়সমূহ উঠে আসবে এই কনফারেন্সে।
২১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় ‘দশম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্সের’ উদ্বোধনী দিনে কিশওয়ার কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থাকবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে এ পর্বটি উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর সাদেকা হালিম।
উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ২৩-২৬ জানুয়ারি আঁলিয়স ফ্রঁসেজ গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হবে নির্মাতাদের মিথস্ক্রিয়ামূলক চার দিনব্যাপী সেমিনার ও কর্মশালা ‘ওয়েস্ট মিট ইস্ট: চিত্রনাট্য প্রতিযোগিতা’। এই আয়োজনে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য পাবে ৫ হাজার মার্কিন ডলার, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী চিত্রনাট্য পাবে ৩ হাজার মার্কিন ডলার এবং তৃতীয় স্থান জয়ী চিত্রনাট্য পাবে ২ হাজার মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: সিনেমাটি নতুন বছরের অনন্য পাওয়া: বুবলি
উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক মাজিদ মাজিদি এবং ভারতীয় অভিনয়শিল্পী শর্মিলা ঠাকুর। ২৮ জানুয়ারি এ উৎসবের পর্দা নামবে।
উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশের সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন ও চলচ্চিত্র উৎসব। এটি দেশে রুচিসম্পন্ন ও ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ব্যাপক অবদান রাখছে বলে আমরা মনে করি। রেইনবো’র এই উৎসব তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ধারার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে যেমন সফল হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অনুরূপ ধারাকে বলিষ্ঠ করেছে। সারা বিশ্বের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নতুন নতুন চলচ্চিত্র সিনেমাপ্রেমীদের উপহার দেওয়াই উৎসবের মূল লক্ষ্য।
উৎসবে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস ও সামিট গ্রুপ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির চেয়ারপারসন কিশওয়ার কামাল, গবেষক মফিদুল হক, নাট্যজন ম হামিদ, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নির্মাতা আকা রেজা গালিব, ফাখরুল আরেফিন খান, আরিফুর রহমান ও চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরুসহ অনেকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সাল থেকে নিয়মিত এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে আসছে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি। এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে।
আরও পড়ুন: 'টপ গান থ্রি' নির্মাণ হচ্ছে কি?
১০ মাস আগে
ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মেঘের কপাট’ পেল ৩ পুরস্কার
ভারতের গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-২০২৩ এ তিনটি পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘মেঘের কপাট’।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কলকাতায় এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে ‘মেঘের কপাট’ চলচ্চিত্রের পরিচালক ওয়ালিদ আহমেদ ও প্রযোজক আফরোজা মোমেনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
পুরস্কার তিনটি হলো- শ্রেষ্ঠ বিদেশি চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক (বিদেশি চলচ্চিত্র) ও রাজকাপুর পুরস্কার।
তৃতীয়বারের মতো ড্রিমজ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এই চলচ্চিত্র উৎসবে সারাবিশ্ব থেকে ৪০০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অঞ্জন বোস (চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী), অভিজিৎ ব্যানার্জী (চলচ্চিত্র পরিচালক), সি এস কারনান (বিচারপতি, কলকাতা ও মাদ্রাজ হাইকোর্ট), জয়দীপ মুখার্জিসহ (অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট অব ইন্ডিয়া এবং সম্পাদক, অল ইন্ডিয়া লিগ্যাল এইড ফোরাম) আরও অনেকে।
উৎসবে সারাবিশ্ব থেকে ৭০ জনেরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা অংশ নেন।
কলকাতার মৌলালি যুব কেন্দ্রের স্বামী বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে ১ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভারতের গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন প্রথম পর্যায়ে সেরা নির্বাচিত ৪০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে বিকাল ৪টা থেকে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ১০ জন পুরস্কারপ্রাপ্ত পেশাদার বিচারক এই ফেস্টিভ্যালে বিচারের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: এল গার্লস স্কোয়াড সিজন-৩
১১ মাস আগে
অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশরক্ষায় সাংস্কৃতিক বিপ্লবকে এগিয়ে নিতে পারে চলচ্চিত্র: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের ওপর আজ শকুনের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে। সেই থাবা ও অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশরক্ষায় প্রয়োজন একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব। আর সেই বিপ্লবকে এগিয়ে নিতে পারে চলচ্চিত্র।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ২০২২ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো থেকে জুরি বোর্ড নির্বাচিত ২৭ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির ১৫ বছর কেটেছে, আর কত বছর কাটবে জানি না: তথ্যমন্ত্রী
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে দেশ বদলে গেছে। আকাশ থেকে শহর চেনা যায় না; কুঁড়েঘর, মেঠোপথ আর নেই। খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। আমাদের চলচ্চিত্র জগতের প্রতি আহ্বান, আপনারা এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে তুলে ধরবেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেমন বদলে গেছে, চলচ্চিত্রও পিছিয়ে নেই, ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক 'মুজিব: একটি জাতির রূপকার' দেশের ১৫৮টি হলে ২০০ পর্দায় চলেছে, ভারতে ৫০০ হলের ৬০০ পর্দায় মুক্তি পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরে ঢাকার সিনেমা মুক্তি পেয়েছে বিশ্বের ২২টি দেশে। তাই শুধু দেশে নয়, বিশ্ব অঙ্গনেও সম্মানের আসন করবে আমাদের চলচ্চিত্র।
আরও পড়ুন: আন্দোলন মানে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয়: তথ্যমন্ত্রী
ড. হাছান তার বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, 'জাতির পিতা শেখ মুজিব শুধু স্বাধীন রাষ্ট্রই প্রতিষ্ঠা করেননি, বাঙালি শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশেও তিনি ছিলেন সদানিবেদিত প্রাণ। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৭ সালে প্রাদেশিক পরিষদে বিল উত্থাপনের মাধ্যমে ঢাকায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করে এ দেশে সিনেমার প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন। সেই চলচ্চিত্র আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে এবং পরবর্তীতে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছে।'
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন, সিনেপ্লেক্স-সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে এক হাজার কোটি টাকার সহজতম ঋণ তহবিল গঠন করেছেন।
‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’ যুগ্ম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র; চঞ্চল চৌধুরী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এবং জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দিনী শিমু যৌথভাবে ২০২২ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এ বার্ষিক আয়োজনে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাগত বক্তব্য দেন।
শেষে চলচ্চিত্র অঙ্গনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষ কেন বিএনপির অপরাজনীতি ও হিংস্রতার শিকার: বিএনপির কাছে তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন
১ বছর আগে
১০ নভেম্বর আদর-সায়মা জুটির ‘যন্ত্রণা’ মুক্তি
ঢালিউড চলচ্চিত্রের সম্ভাবনাময় নতুন জুটি চিত্রনায়ক আদর আজাদ ও নবাগত সায়মা স্মৃতি। প্রথমবার তারা জুটি বেধে অভিনয় করেছেন ভালোবাসার গল্পে নির্মিত ‘যন্ত্রণা’ নামের সিনেমায়।
আব্দুল্লাহ জহির বাবুর গল্পে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আরিফুর জামান আরিফ। আগামী ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) দেশজুড়ে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বলে জানান এর নির্মাতা।
এই সিনেমার মধ্যদিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু হচ্ছে সায়মার।
এ নিয়ে ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘‘নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। যেহেতু সিনেমায় প্রথম কাজ করেছি, তাই প্রত্যাশাও একটু বেশি। বুঝেশুনে ভালো একটি গল্প দিয়েই যাত্রা করতে চেয়েছিলাম। ‘যন্ত্রণা’ তেমনই একটি গল্প।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। বাকিটা দর্শক বলতে পারবেন কতটুকু পেরেছি। সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই নার্ভাস লাগছে। তবে এতটুকু বলতে পারব প্রেক্ষাগৃহে এসে দর্শক নিরাশ হবেন না। সবাইকে প্রেক্ষাগৃহে এসে সিনেমাটি দেখার আহ্বান রইল। আশা করছি, আমাদের প্রথম জুটির কাজ দর্শক ভালো ভাবে গ্রহণ করবেন।’’
আরও পড়ুন: পরিচালনায় অরুণা বিশ্বাসের অভিষেক, মুক্তি পেল ‘অসম্ভব’
স্মার্ট মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত সিনেমাটিতে চারটি গান রয়েছে। দুটি করে চারটি গান লিখেছেন জনপ্রিয় গীতিকার সুদীপ কুমার দীপ ও রবিন ইসলাম।
গানগুলো গেয়েছেন- আকাশ সেন, কনা, বেলী আফরোজ, মিলন, আতিয়া আনিসা, অয়ন চাকলাদার ও কর্ণিয়া।
আবহ সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক ইমন সাহা।
সিনেমাটিতে আদর-সায়মা স্মৃতি ছাড়াও আরও অভিনয় করেছেন- ছোট পর্দার অভিনেত্রী মানসী প্রকৃতি, শতাব্দী ওয়াদুদ, ডন, বড়দা মিঠু, আশরাফ কবির, সোহেল রশিদ, গাঙ্গুয়া, জাহিদ, পারভেজ সুমন, শেখ স্বপ্না, পারভিন আক্তার, অতিথি শিল্পী তনামি হক প্রমুখ।
পনির আহমদের চিত্রগ্রহণে চলচ্চিত্রটি সম্পাদনা করেছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র সম্পাদক তৌহিদ হোসেন চৌধুরী।
আরও পড়ুন: নতুন জুটির ‘মেঘের কপাট’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল
‘বিউটি সার্কাস’ টিমের প্রতি কৃতজ্ঞ: জয়া আহসান
১ বছর আগে
সর্বোচ্চ আয়কারী ১০ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
প্রতিটি নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে কি না তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হলো কতটা বড় জনগোষ্ঠির ভালো লাগার কারণ হয়েছে চলচ্চিত্রটি, নিদেনপক্ষে এরই ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে চলচ্চিত্র শিল্প। কিন্তু যখন এ দুয়ের সংমিশ্রণ ঘটে তখনি জন্ম মাস্টারপিসের। আজকের নিবন্ধে ঢালিউড ইতিহাসের ব্যবসা সফল সেরা চলচ্চিত্রগুলো একত্রিত করা হয়েছে। এগুলো সিনেমার বিচারের সকল মানদণ্ডের ঊর্ধ্বে, কেননা এগুলোর অধিকাংশই এখনো অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে বেশি আয় করা বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের বিষয়ে।
সর্বাধিক ব্যবসা সফল ১০টি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
প্রিয়তমা (৪১.২৩ কোটি টাকা)
২.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রোমান্টিক অ্যাকশন ছবিটির পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ লেখক হিমেল আশরাফ। এটি ছিলো তার দ্বিতীয় মুভি নির্দেশনা। ভার্সেটাইল মিডিয়ার ব্যানারে আরশাদ আদনান প্রযোজিত চলচ্চিত্রটির গল্পকার ছিলেন প্রয়াত ফারুক হোসেন।
হৃদয়বিদারক প্রেম কাহিনী নিয়ে বানানো এই মুভির নায়ক সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অভিনেতা শাকিব খান। তার বিপরীতে অভিনয় করেন কোলকাতার ছোট পর্দার অভিনেত্রী ইধিকা পল।
২০২৩-এর ২৯ জুন প্রকাশের পর প্রথম সপ্তাহেই প্রিয়তমার সংগ্রহ ১০ কোটি টাকা। বাংলাদেশি সিনেমার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে দ্রুততম সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড। এটি ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ আয়কৃত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র এবং সেই সঙ্গে সর্বকালেরও সর্বাধিক আয়কারী বাংলাদেশি মুভি। শুধু তাই নয়, এটি এখন পর্যন্ত শাকিব খানের ক্যারিয়ারেরও সর্বোচ্চ বক্স অফিস রেকর্ডধারী সিনেমা।
প্রিয়তমা ২২-তম বাবিসাস (বাংলাদেশ বিনোদন সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার) অ্যাওয়ার্ডে বিশেষ সম্মান বিভাগে সেরা অভিনেতা এবং সেরা অভিনেত্রী সহ সর্বমোট নয়টি পুরস্কার জিতে নেয়।
আরও পড়ুন: ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ দেখে কাঁদলেন তারকারা
বেদের মেয়ে জোসনা (২০ কোটি টাকা)
তোজাম্মেল হক বকুল রচিত ও পরিচালিত এই মুভিটি বাংলাদেশের মুভি আর্কাইভের সেরা মুভিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর গল্প নেওয়া হয়েছিল একই নামের অনেক পুরনো গ্রাম বাংলার এক নাটক থেকে। রাজপুত্রের ও বেদের মেয়ের প্রেম কাহিনীর এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও অঞ্জু ঘোষ।
২০ লাখ টাকা বাজেটের এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৯ সালের ৯ জুন। ২০২৩-এর আগ পর্যন্ত এটি সর্বোচ্চ আয়কৃত চলচ্চিত্রের স্থানটি দখল করে ছিল। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে অনুসারে এটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি।
চলচ্চিত্রটির গানের অডিও ক্যাসেট মুক্তির এক মাসের মধ্যে এক লাখ কপি বিক্রি হয়। হাসান মতিউর রহমানের লেখা ও মুজিব পরদেশীর গাওয়া 'আমি বন্দি কারাগারে' গানটি পরবর্তী কয়েক যুগ ধরে মানুষের মুখে শোনা যেতো। এটি বাদে বাকি সবগুলো গানই লিখেছিলেন পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুল। তন্মধ্যে এন্ড্রু কিশোর ও রুনা লায়লার গাওয়া ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ গানটি আজও অমর হয়ে আছে।
স্বপ্নের ঠিকানা (১৯ কোটি টাকা)
এম এ খালেক পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি এখনও অনুপ্রাণিত করে কিংবদন্তির নায়ক সালমান শাহের বাকি মুভিগুলো দেখতে। নুরুল ইসলাম পারভেজের গল্পে ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ গড়েছিলেন ছটকু আহমেদ। ১৯৯৫-এর ১১ মে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমায় সালমান শাহের নায়িকা ছিলেন শাবনূর ও সোনিয়া।
মুভিটি ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তথাকথিত ধনী-দরিদ্র পরিণয় এবং ত্রিভুজ প্রেমের গল্প ভিত্তিক চলচ্চিত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করেছিলো।
সালমান শাহের স্বতন্ত্র অভিনয় ছাড়া স্বপ্নের ঠিকানা-এর বিশেষ দিক ছিলো এর গানগুলো। ‘এই দিন সেই দিন কোনও দিন’সহ ছবির প্রায় সব কটি গান ছিলো তখনকার সময়ে রেডিও’র টপচার্টে। গানগুলো পরিচালনা করেছিলেন প্রখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীত নির্দেশক প্রয়াত আলম খান।
আরও পড়ুন: আনকাট ছাড়পত্র পেল শাকিব খানের 'প্রিয়তমা'
হাওয়া (১৬ কোটি টাকা)
করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে যে কাজগুলো দেশীয় সিনেমাকে পুনরায় তুলে ধরেছিলো সেগুলোর মধ্যে এই হাওয়া একটি। মেজবাউর রহমান সুমন রচিত ও পরিচালিত এই রহস্য-নাটক ঘরানার সিনেমাটির প্রযোজনায় ছিলো সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড।
ছবিতে আকর্ষণীয় অভিনয় দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী এবং উদীয়মান তারকা নাজিফা তুশি। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, এবং রিজভী রিজু।
মাঝ সাগরে মাছ ধরার সময় এক দল জেলে তাদের মাছ ধরার জালে আবিষ্কার করে সুন্দর ও রহস্যময় এক তরুণীকে। আর এরপর থেকেই ঘটতে শুরু করে অদ্ভূত সব ঘটনা।
এমন রোমাঞ্চকর পটভূমির সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০২২ সালের ২৯ জুলাই। ছবিটি বাংলাদেশের অস্কার কমিটি ৯৫-তম অস্কারের 'সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম' বিভাগের জন্য নির্বাচন করেছিলো। এছাড়াও এটি স্থান পেয়েছিলো ৮০-তম গোল্ডেন গ্লোব প্রতিযোগিতার শর্টলিস্টে।
প্রিয়া আমার প্রিয়া (১৫ কোটি টাকা)
বদিউল আলম খোকন পরিচালিত এই ছবিটির মাধ্যমেই শুরু হয় শাকিব খানের আকাশ-সম তারকা-খ্যাতি অর্জন। ২০০৮ সালের ১৩ জুন মুক্তি পাওয়া এই রোমান্টিক অ্যাকশন ছবিটিতে তার নায়িকা ছিলেন সাহারা। ছবিটির গল্প ও চিত্রনাট্য ছিলো পুরী জগন্নাদের আর সংলাপ লিখেছিলেন শচীন নাগ।
আশা প্রোডাকশনের ব্যানারে বানানো ছবিটি মুক্তির বছর বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়ে। মুভিটি ২০০৮ সালের ঢালিউড বক্স অফিসে শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। এর মাধ্যমে এটি বাংলাদেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ উপার্জনকৃত মুভিগুলোর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়। এমনকি ২০১৯-এর আগ পর্যন্ত এটিই ছিলো শাকিব খানের অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ আয়কৃত ছবি।
শাকিব খান এই কাজের জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, চ্যানেল আই পারফরম্যান্স পুরস্কার, এবং ইউরো-সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছিলেন।
আরও পড়ুন: দর্শক আগ্রহে এগিয়ে ‘সুড়ঙ্গ’, ‘প্রিয়তমা’ ও ‘প্রহেলিকা’
১ বছর আগে