চলচ্চিত্র
কারিনা-টাবু ও কৃতির ক্রু: তিন প্রজন্মের তিন নায়িকার রম্য সিনেমা
গত ২৯ মার্চ মুক্তির পর থেকেই দর্শক সহ সমালোচকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বলিউড মুভি ক্রু। প্রথমবারের মতো একসঙ্গে অভিনয় করা তিন প্রজন্মের তিন নায়িকা টাবু, কারিনা ও কৃতি চলচ্চিত্রের মূল আকর্ষণ। শুধু তাই নয়, হৈচৈ-এর ব্যপ্তি সম্প্রসারিত হয়েছে নারীপ্রধান হিন্দি ছবির জগতে এর যুগান্তকারী ভূমিকা পর্যন্ত। তবে অভিনয়, চিত্রনাট্য, ও নির্মাণের বিচারে ছবিটি কতটুকু উতড়ে যেতে পেরেছে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ক্রু মুভির কলাকুশলীরা
নিধি মেহরা ও মেহুল সুরির চিত্রনাট্যে রম্য চলচ্চিত্রটির পরিচালনায় ছিলেন রাজেশ এ কৃষ্ণান। টাবু, কারিনা কাপুর খান, ও কৃতি স্যানন ছাড়াও ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলজিৎ দোসাঞ্জ, রাজেশ শর্মা, কুলভূষণ খারবান্দা, এবং কলকাতার অভিনেতা শাশ্বত চ্যাটার্জি। এছাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে জনপ্রিয় স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান ও টিভি উপস্থাপক কপিল শর্মাকে।
সঙ্গীত আয়োজনে ছিলেন দিলজিৎ দোসাঞ্জ, বাদশা, রাজ রঞ্জোধ, বিশাল মিশ্র, অক্ষয়-আইপি, ভার্গ-রোহিত। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর কম্পজিশনের দায়িত্বে ছিলেন জন স্টুয়ার্ট এদুরি।
আরও পড়ুন: এবারের ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় ১০টি নাটক
সিনেমাটোগ্রাফিতে কাজ করেছেন অনুজ রাকেশ ধাওয়ান। চলচ্চিত্রের সার্বিক সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন মনন সাগর।
ক্রু-এর নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বালাজি মোশন পিকচার্স এবং অনিল কাপুর ফিল্মস অ্যান্ড কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক। প্রযোজনা কমিটিতে ছিলেন একতা কাপুর, রিয়া কাপুর, অনিল কাপুর এবং দিগ্বিজয় পুরোহিত।
ক্রু চলচ্চিত্রের কাহিনী
গল্পটি গীতা শেঠি, জেসমিন কোহলি, এবং দিব্যা রানা নামের তিন বিমানবালাকে নিয়ে। দেউলিয়াপ্রায় কোহিনূর এয়ারলাইন্সে তাদের ছয় মাসের বেতন বাকি।
গীতাকে তার নিজের সংসারসহ তার ছোট ভাইয়ের পরিবারেও আর্থিক সাহায্য দিতে হয়।
আরও পড়ুন: ঈদের কেনাকাটায় জনপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর জেসমিন বড় হয়েছেন নানা-নানীর কাছে। তাই পারিবারিক সম্পর্কের প্রতি তার ভীষণ বিতৃষ্ণা। তবে বিলাস জীবন-যাপনের প্রতি তার প্রচণ্ড আকর্ষণ।
আর দিব্যার পাইলট হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে যেয়ে অনেক ঋণ জমে যায়। কিন্তু যথেষ্ট সুযোগের অভাবে তার ভাগ্যে শেষমেষ বিমানবালার চাকরি মেলে। অবশ্য বাড়ি ফেরার সময় বিমানবালার পোশাক বদলে পাইলটের পোশাক পরে পরিবারের সামনে হাজির হন। এভাবে একদিকে পরিবারকে ফাঁকি দেন, আর অন্যদিকে টেনে চলেন সেই ঋণের বোঝা।
এমন আর্থিক সংকটে তিন জনেরই টালমাটাল অবস্থা। এরই মধ্যে কোহিনূর এয়ারলাইন্সের মালিক বিজয় ওয়ালিয়া সবাইকে ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফলে এতদিন ধরে সব ঠিক হয়ে যাবে ভেবে যে স্বপ্ন তারা বুকে লালন করে আসছিল, তার সব গুড়েবালি হয়ে যায়।
ঠিক এমনি সময় তাদের কাছে সুযোগ আসে স্বর্ণ চোরাচালানের। এই সুযোগের সদ্ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তাদের জীবনে ঘটতে থাকে নানা ঘটনা, আর সিনেমার কাহিনীতে যুক্ত হতে থাকে বিচিত্র স্তর।
আরও পড়ুন: ঈদে ঘরে ফিরতে অনলাইনে প্লেন, বাস ও ট্রেনের টিকেট কাটার উপায়
এবারের ঈদ আয়োজনে বড় পর্দার ১০টি চলচ্চিত্র
নতুন সিনেমার মাধ্যমে ঈদ বিনোদনটা বেশ পুরনো। বিগত কয়েক দশকে ঢালিউড চলচ্চিত্রের অনেক চড়াই- উৎরাই হলেও ঈদের সময় বাংলা ছবির শোরগোলটা ছিল স্বাভাবিক। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এমনকি ব্যবসায়িক সিনেমাগুলোর পাশাপাশি মূলধারার কাতারে শামিল হচ্ছে শৈল্পিক ও নিরীক্ষাধর্মী ছবিগুলোও। তাই ভিন্ন স্বাদে বাড়ছে দর্শকদের প্রত্যাশা। চলুন, ঈদুল ফিতর ২০২৪-এ মুক্তির অপেক্ষায় থাকা তেমনি কিছু বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
আসন্ন ঈদুল ফিতর ২০২৪ এ যে ১০টি বাংলাদেশী সিনেমা দর্শক মাতানোর অপেক্ষায়
রাজকুমার
২০২২ সালের ২৯ মার্চ সিনেমার ফার্স্ট লুক প্রকাশের পর থেকেই হৈচৈ শুরু হয়েছে ‘রাজকুমার’ নিয়ে। রোমান্টিক-অ্যাকশন ঘরানার এই মুভিতে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের নায়িকা হয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী কোর্টনি কফি। আর এ নিয়ে মোট ৩টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করলেন পরিচালক হিমেল আশরাফ।
এখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মোস্তফা, আফজাল হোসেন, ফারুক আহমেদ এবং ডা. এজাজ।
‘রাজকুমার’ বাংলাদেশের একটি গ্রাম্য যুবকের আমেরিকার যান্ত্রিক শহরে তার মাকে খোঁজার গল্প। এই অক্লান্ত যাত্রায় একে একে যুবকটি সম্মুখীন হয় অভিবাসন বাধা, ভিন্ন সংস্কৃতি, এমনকি প্রেম-ভালবাসার।
আরও পড়ুন: অ্যামাজন প্রাইমের পর এবার টফির পর্দায় আসছে ‘ওরা ৭ জন’
কাজলরেখা
দেশের সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রকার গিয়াস উদ্দিন সেলিমের দীর্ঘ ১২ বছরের গবেষণার ফসল এই চলচ্চিত্র। মৈমনসিংহ গীতিকার ‘কাজলরেখা’ অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটির গল্প, পরিচালনা এবং প্রযোজনা করেছেন সেলিম নিজেই। সিনেমার পটভূমিক আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগের।
মুভির নাম ভূমিকায় দেখা যাবে মন্দিরা চক্রবর্তীকে। সুচ কুমারের ভূমিকায় থাকছেন শরিফুল রাজ। আর খলচরিত্র কঙ্কণ দাসী হিসেবে রয়েছেন রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা।
চলচ্চিত্রটিতে আরও আছেন ছোট পর্দার তারকা খায়রুল বাশার, সাদিয়া আয়মান, ইরেশ যাকের, আজাদ আবুল কালাম, ও শাহানা সুমি।
লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী
ওটিটি (ওভার-দ্যা-টপ) প্ল্যাটফর্ম চরকি’র ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রজেক্টের ১২টি ওয়েব ফিল্মের একটি ‘মনোগামী’। পরিচালনায় আছেন স্বয়ং প্রজেক্ট তত্বাবধায়ক প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রজেক্টের অধীনে ইতোমধ্যে তার পরিচালিত ও অভিনীত ‘অটোবায়োগ্রাফি’ ফিল্মটি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবারের ঈদুল ফিতরে ‘মনোগামী’র মাধ্যমে তিনি তুলে ধরতে যাচ্ছেন নারী-পুরুষের সম্পর্কের তীক্ত সত্য কিছু দিক। এর আগে তার এই প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিলো ‘ব্যাচেলার’ (২০০৪) ছবিতে। এবারে আলোকপাত করা হয়েছে বিবাহিত জীবনের দিকে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ আয়কারী ১০ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
সিনেমার শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন এ সময়ের বিনোদন পাড়ার সবচেয়ে পরিচিত মুখ চঞ্চল চৌধুরী। তার সঙ্গে সহশিল্পী হিসেবে আছেন সঙ্গীতশিল্পী ও ইউটিউবার জেফার রহমান এবং নৃত্যশিল্পী সামিনা হোসেন প্রেমাকে।
দেয়ালের দেশ
বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে নির্মিত এই রোমান্টিক ছবির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চিত্র-পরিচালনা করলেন মিশুক মনি। ছবির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্যও সবই তার লেখা। চলচ্চিত্রের গল্প এগিয়েছে দুটি ভিন্ন সময়কে কেন্দ্র করে।
‘দেয়ালের দেশ’-এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো জুটিবদ্ধ হয়েছেন শরিফুল রাজ ও শবনম বুবলী। ব্যবসায়িক ছবির নায়িকা হিসেবে সুপরিচিত বুবলীকে এবার দেখা যাবে অকৃত্রিম বাস্তবধর্মী চরিত্রে।
চলচ্চিত্রের অন্যান্য সহশিল্পীরা হলেন জিনাত শানু স্বাগতা, আজিজুল হাকিম, সাবেরী আলম, শাহাদাত হোসেন, এ কে আজাদ সেতু, সমাপ্তি মাশুক, এবং দীপক সুমন।
আরও পড়ুন: ঈদের কেনাকাটায় জনপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
মেট্রো সিনেমার ব্যানারে যৌথ ভাবে ছবির প্রযোজনা করেছেন মাহফুজুর রহমান ও মিশুক মনি।
ওমর
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী চলচ্চিত্রকার মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ দীর্ঘদিন পর বিনোদন পাড়ায় ফিরছেন ‘ওমর’-এর মাধ্যমে। মুভির শিরোনামটি ঠিক করেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। ছবির গল্প নিয়ে এখনও ‘ওমর’ টিমের কেউই তেমন কিছু প্রকাশ করেননি। তবে চিত্রনাট্য লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ।
চলচ্চিত্রের নাম চরিত্রে রয়েছেন শরীফুল রাজ। বিশেষ একটি চরিত্রে আবির্ভূত হবেন কলকাতার অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। এছাড়া আরও থাকছেন ফজলুর রমান বাবু, নাসির উদ্দিন খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, এরফান মৃধা শিবলু, ও আয়মান সিমলাকে। মাস্টার কমিউনিকেশন্সের ব্যানারে মুভির প্রযোজনায় ছিলেন খোরশেদ আলম।
আরও পড়ুন: টুয়েলভথ ফেইলের মতো অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী ১০ সিনেমা
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আসছে ৭৪ দেশের ২৫২ সিনেমা
‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’- এই স্লোগানে শনিবার (২০ জানুয়ারি) পর্দা উঠবে ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজিত এই উৎসব চলবে আগামী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বাংলাদেশসহ ৭৪টি দেশের ২৫২টি সিনেমা নিয়ে শুরু হচ্ছে ৯ দিনব্যাপী এই উৎসব।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে আগামী শনিবার বিকাল ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত অভিনেত্রী শ্রীমতি শর্মিলা ঠাকুর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
২০২৪ সালের এই উৎসবে ১০টি বিভাগে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, ট্রিবিউট, বাংলাদেশ প্যানারোমা, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন্স ফিল্ম, স্পিরিচ্যুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম বিভাগ।
উৎসবকালে দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শিত হবে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ, বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর অডিটরিয়াম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাডেমির মিলনায়তনে। এসব মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী সবাই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় ‘আগে এলে আগে দেখবেন’ ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে। তবে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানটি উপভোগ করবেন কেবল আমন্ত্রিত অতিথিরা।
উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত থাকবেন ইরানের খ্যাতিমান নির্মাতা মাজিদ মাজিদি, ভারতের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শর্মীলা ঠাকুর, স্বস্তিকা মুখার্জি, অঞ্জন দত্তসহ বিভিন্ন দেশের নামকরা সব তারকা।
সংবাদ সম্মেলন আরও জানানো হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রদর্শন করা হবে- ইরানি পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম নির্মিত ও জয়া আহসান অভিনীত ‘ফেরেশতে’ এবং বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজিত ও শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’।
২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সবার আকর্ষণ এবার ‘মাস্টার ক্লাস’-এ! কারণ মাস্টার ক্লাস নিতে যাচ্ছেন ইরানি সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ‘চিলড্রেন অব হেভেন’, ‘বারান’ ও ‘সং অব স্প্যারো’র মতো বিশ্বনন্দিত সিনেমার পরিচালক মাজিদ মাজিদি। এছাড়া মাস্টার ক্লাসের দু’টি ভিন্ন সেশনে কথা বলবেন চীনের সাংহাই ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ার শি চুয়ান এবং ভারতের নির্মাতা, অভিনেতা ও গায়ক অঞ্জন দত্ত। ২৭ জানুয়ারি দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে মাস্টার ক্লাসটি।
মাস্টারক্লাসের সেশনগুলো পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরু। মাস্টারক্লাস শেষে পরিবেশিত হবে অঞ্জন দত্তের সংগীত। এই চারটি সেশনের জন্যই অগ্রিম নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন লিংক উৎসবের ফেসবুক পেইজে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন মুজতবা জামাল।
এছাড়া আগামী ২২ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মিলনায়তনে ‘ওয়াইড অ্যাঙ্গেল’ সেকশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি থাকবেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং সাংহাই ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি চেয়ার শি চুয়ান।
আরও পড়ুন: ‘হুব্বা’ দুই বাংলার দর্শককে আকৃষ্ট করবে: মোশাররফ করিম
২১ থেকে ২২ জানুয়ারি উৎসবের অংশ হিসেবে চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক ‘দশম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স’ ঢাকা ক্লাবের স্যামসন লাউঞ্জের তৃতীয় তলায় অনুষ্ঠিত হবে। কনফারেন্সে দেশি-বিদেশি নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মত বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী নির্মাতারা অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি সুযোগ পাবেন।
এখানে নারী নির্মাতারা তাদের কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাসমূহ এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশ্বের খ্যাতিমান নারী নির্মাতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন। বিশ্ব পরিবর্তনে নারীর নেতিবাচক ও ইতিবাচক ভূমিকা এবং প্রতিবন্ধকতা থেকে সমাধানের উপায়সমূহ উঠে আসবে এই কনফারেন্সে।
২১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় ‘দশম আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্সের’ উদ্বোধনী দিনে কিশওয়ার কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থাকবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি। মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে এ পর্বটি উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর সাদেকা হালিম।
উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ২৩-২৬ জানুয়ারি আঁলিয়স ফ্রঁসেজ গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হবে নির্মাতাদের মিথস্ক্রিয়ামূলক চার দিনব্যাপী সেমিনার ও কর্মশালা ‘ওয়েস্ট মিট ইস্ট: চিত্রনাট্য প্রতিযোগিতা’। এই আয়োজনে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য পাবে ৫ হাজার মার্কিন ডলার, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী চিত্রনাট্য পাবে ৩ হাজার মার্কিন ডলার এবং তৃতীয় স্থান জয়ী চিত্রনাট্য পাবে ২ হাজার মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: সিনেমাটি নতুন বছরের অনন্য পাওয়া: বুবলি
উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক মাজিদ মাজিদি এবং ভারতীয় অভিনয়শিল্পী শর্মিলা ঠাকুর। ২৮ জানুয়ারি এ উৎসবের পর্দা নামবে।
উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশের সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন ও চলচ্চিত্র উৎসব। এটি দেশে রুচিসম্পন্ন ও ইতিবাচক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ব্যাপক অবদান রাখছে বলে আমরা মনে করি। রেইনবো’র এই উৎসব তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ধারার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে যেমন সফল হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অনুরূপ ধারাকে বলিষ্ঠ করেছে। সারা বিশ্বের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নতুন নতুন চলচ্চিত্র সিনেমাপ্রেমীদের উপহার দেওয়াই উৎসবের মূল লক্ষ্য।
উৎসবে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস ও সামিট গ্রুপ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির চেয়ারপারসন কিশওয়ার কামাল, গবেষক মফিদুল হক, নাট্যজন ম হামিদ, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নির্মাতা আকা রেজা গালিব, ফাখরুল আরেফিন খান, আরিফুর রহমান ও চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরুসহ অনেকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সাল থেকে নিয়মিত এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে আসছে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি। এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে।
আরও পড়ুন: 'টপ গান থ্রি' নির্মাণ হচ্ছে কি?
ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মেঘের কপাট’ পেল ৩ পুরস্কার
ভারতের গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-২০২৩ এ তিনটি পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘মেঘের কপাট’।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কলকাতায় এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে ‘মেঘের কপাট’ চলচ্চিত্রের পরিচালক ওয়ালিদ আহমেদ ও প্রযোজক আফরোজা মোমেনের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
পুরস্কার তিনটি হলো- শ্রেষ্ঠ বিদেশি চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক (বিদেশি চলচ্চিত্র) ও রাজকাপুর পুরস্কার।
তৃতীয়বারের মতো ড্রিমজ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এই চলচ্চিত্র উৎসবে সারাবিশ্ব থেকে ৪০০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অঞ্জন বোস (চলচ্চিত্র প্রযোজক ও অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী), অভিজিৎ ব্যানার্জী (চলচ্চিত্র পরিচালক), সি এস কারনান (বিচারপতি, কলকাতা ও মাদ্রাজ হাইকোর্ট), জয়দীপ মুখার্জিসহ (অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট অব ইন্ডিয়া এবং সম্পাদক, অল ইন্ডিয়া লিগ্যাল এইড ফোরাম) আরও অনেকে।
উৎসবে সারাবিশ্ব থেকে ৭০ জনেরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা অংশ নেন।
কলকাতার মৌলালি যুব কেন্দ্রের স্বামী বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে ১ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভারতের গ্লোবাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন প্রথম পর্যায়ে সেরা নির্বাচিত ৪০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে বিকাল ৪টা থেকে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ১০ জন পুরস্কারপ্রাপ্ত পেশাদার বিচারক এই ফেস্টিভ্যালে বিচারের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: এল গার্লস স্কোয়াড সিজন-৩
অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশরক্ষায় সাংস্কৃতিক বিপ্লবকে এগিয়ে নিতে পারে চলচ্চিত্র: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের ওপর আজ শকুনের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে। সেই থাবা ও অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশরক্ষায় প্রয়োজন একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব। আর সেই বিপ্লবকে এগিয়ে নিতে পারে চলচ্চিত্র।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ২০২২ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো থেকে জুরি বোর্ড নির্বাচিত ২৭ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির ১৫ বছর কেটেছে, আর কত বছর কাটবে জানি না: তথ্যমন্ত্রী
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে দেশ বদলে গেছে। আকাশ থেকে শহর চেনা যায় না; কুঁড়েঘর, মেঠোপথ আর নেই। খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। আমাদের চলচ্চিত্র জগতের প্রতি আহ্বান, আপনারা এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে তুলে ধরবেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেমন বদলে গেছে, চলচ্চিত্রও পিছিয়ে নেই, ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক 'মুজিব: একটি জাতির রূপকার' দেশের ১৫৮টি হলে ২০০ পর্দায় চলেছে, ভারতে ৫০০ হলের ৬০০ পর্দায় মুক্তি পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বিগত বছরে ঢাকার সিনেমা মুক্তি পেয়েছে বিশ্বের ২২টি দেশে। তাই শুধু দেশে নয়, বিশ্ব অঙ্গনেও সম্মানের আসন করবে আমাদের চলচ্চিত্র।
আরও পড়ুন: আন্দোলন মানে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয়: তথ্যমন্ত্রী
ড. হাছান তার বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, 'জাতির পিতা শেখ মুজিব শুধু স্বাধীন রাষ্ট্রই প্রতিষ্ঠা করেননি, বাঙালি শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশেও তিনি ছিলেন সদানিবেদিত প্রাণ। বঙ্গবন্ধু ১৯৫৭ সালে প্রাদেশিক পরিষদে বিল উত্থাপনের মাধ্যমে ঢাকায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করে এ দেশে সিনেমার প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন। সেই চলচ্চিত্র আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে এবং পরবর্তীতে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছে।'
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন, সিনেপ্লেক্স-সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে এক হাজার কোটি টাকার সহজতম ঋণ তহবিল গঠন করেছেন।
‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’ যুগ্ম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র; চঞ্চল চৌধুরী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এবং জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দিনী শিমু যৌথভাবে ২০২২ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এ বার্ষিক আয়োজনে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাগত বক্তব্য দেন।
শেষে চলচ্চিত্র অঙ্গনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষ কেন বিএনপির অপরাজনীতি ও হিংস্রতার শিকার: বিএনপির কাছে তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন
১০ নভেম্বর আদর-সায়মা জুটির ‘যন্ত্রণা’ মুক্তি
ঢালিউড চলচ্চিত্রের সম্ভাবনাময় নতুন জুটি চিত্রনায়ক আদর আজাদ ও নবাগত সায়মা স্মৃতি। প্রথমবার তারা জুটি বেধে অভিনয় করেছেন ভালোবাসার গল্পে নির্মিত ‘যন্ত্রণা’ নামের সিনেমায়।
আব্দুল্লাহ জহির বাবুর গল্পে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন আরিফুর জামান আরিফ। আগামী ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) দেশজুড়ে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বলে জানান এর নির্মাতা।
এই সিনেমার মধ্যদিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু হচ্ছে সায়মার।
এ নিয়ে ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘‘নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। যেহেতু সিনেমায় প্রথম কাজ করেছি, তাই প্রত্যাশাও একটু বেশি। বুঝেশুনে ভালো একটি গল্প দিয়েই যাত্রা করতে চেয়েছিলাম। ‘যন্ত্রণা’ তেমনই একটি গল্প।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছি চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। বাকিটা দর্শক বলতে পারবেন কতটুকু পেরেছি। সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই নার্ভাস লাগছে। তবে এতটুকু বলতে পারব প্রেক্ষাগৃহে এসে দর্শক নিরাশ হবেন না। সবাইকে প্রেক্ষাগৃহে এসে সিনেমাটি দেখার আহ্বান রইল। আশা করছি, আমাদের প্রথম জুটির কাজ দর্শক ভালো ভাবে গ্রহণ করবেন।’’
আরও পড়ুন: পরিচালনায় অরুণা বিশ্বাসের অভিষেক, মুক্তি পেল ‘অসম্ভব’
স্মার্ট মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত সিনেমাটিতে চারটি গান রয়েছে। দুটি করে চারটি গান লিখেছেন জনপ্রিয় গীতিকার সুদীপ কুমার দীপ ও রবিন ইসলাম।
গানগুলো গেয়েছেন- আকাশ সেন, কনা, বেলী আফরোজ, মিলন, আতিয়া আনিসা, অয়ন চাকলাদার ও কর্ণিয়া।
আবহ সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক ইমন সাহা।
সিনেমাটিতে আদর-সায়মা স্মৃতি ছাড়াও আরও অভিনয় করেছেন- ছোট পর্দার অভিনেত্রী মানসী প্রকৃতি, শতাব্দী ওয়াদুদ, ডন, বড়দা মিঠু, আশরাফ কবির, সোহেল রশিদ, গাঙ্গুয়া, জাহিদ, পারভেজ সুমন, শেখ স্বপ্না, পারভিন আক্তার, অতিথি শিল্পী তনামি হক প্রমুখ।
পনির আহমদের চিত্রগ্রহণে চলচ্চিত্রটি সম্পাদনা করেছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র সম্পাদক তৌহিদ হোসেন চৌধুরী।
আরও পড়ুন: নতুন জুটির ‘মেঘের কপাট’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল
‘বিউটি সার্কাস’ টিমের প্রতি কৃতজ্ঞ: জয়া আহসান
সর্বোচ্চ আয়কারী ১০ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
প্রতিটি নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে কি না তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হলো কতটা বড় জনগোষ্ঠির ভালো লাগার কারণ হয়েছে চলচ্চিত্রটি, নিদেনপক্ষে এরই ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে চলচ্চিত্র শিল্প। কিন্তু যখন এ দুয়ের সংমিশ্রণ ঘটে তখনি জন্ম মাস্টারপিসের। আজকের নিবন্ধে ঢালিউড ইতিহাসের ব্যবসা সফল সেরা চলচ্চিত্রগুলো একত্রিত করা হয়েছে। এগুলো সিনেমার বিচারের সকল মানদণ্ডের ঊর্ধ্বে, কেননা এগুলোর অধিকাংশই এখনো অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে বেশি আয় করা বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের বিষয়ে।
সর্বাধিক ব্যবসা সফল ১০টি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
প্রিয়তমা (৪১.২৩ কোটি টাকা)
২.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রোমান্টিক অ্যাকশন ছবিটির পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ লেখক হিমেল আশরাফ। এটি ছিলো তার দ্বিতীয় মুভি নির্দেশনা। ভার্সেটাইল মিডিয়ার ব্যানারে আরশাদ আদনান প্রযোজিত চলচ্চিত্রটির গল্পকার ছিলেন প্রয়াত ফারুক হোসেন।
হৃদয়বিদারক প্রেম কাহিনী নিয়ে বানানো এই মুভির নায়ক সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অভিনেতা শাকিব খান। তার বিপরীতে অভিনয় করেন কোলকাতার ছোট পর্দার অভিনেত্রী ইধিকা পল।
২০২৩-এর ২৯ জুন প্রকাশের পর প্রথম সপ্তাহেই প্রিয়তমার সংগ্রহ ১০ কোটি টাকা। বাংলাদেশি সিনেমার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে দ্রুততম সর্বোচ্চ আয়ের রেকর্ড। এটি ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ আয়কৃত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র এবং সেই সঙ্গে সর্বকালেরও সর্বাধিক আয়কারী বাংলাদেশি মুভি। শুধু তাই নয়, এটি এখন পর্যন্ত শাকিব খানের ক্যারিয়ারেরও সর্বোচ্চ বক্স অফিস রেকর্ডধারী সিনেমা।
প্রিয়তমা ২২-তম বাবিসাস (বাংলাদেশ বিনোদন সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার) অ্যাওয়ার্ডে বিশেষ সম্মান বিভাগে সেরা অভিনেতা এবং সেরা অভিনেত্রী সহ সর্বমোট নয়টি পুরস্কার জিতে নেয়।
আরও পড়ুন: ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ দেখে কাঁদলেন তারকারা
বেদের মেয়ে জোসনা (২০ কোটি টাকা)
তোজাম্মেল হক বকুল রচিত ও পরিচালিত এই মুভিটি বাংলাদেশের মুভি আর্কাইভের সেরা মুভিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর গল্প নেওয়া হয়েছিল একই নামের অনেক পুরনো গ্রাম বাংলার এক নাটক থেকে। রাজপুত্রের ও বেদের মেয়ের প্রেম কাহিনীর এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও অঞ্জু ঘোষ।
২০ লাখ টাকা বাজেটের এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৯ সালের ৯ জুন। ২০২৩-এর আগ পর্যন্ত এটি সর্বোচ্চ আয়কৃত চলচ্চিত্রের স্থানটি দখল করে ছিল। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে অনুসারে এটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি।
চলচ্চিত্রটির গানের অডিও ক্যাসেট মুক্তির এক মাসের মধ্যে এক লাখ কপি বিক্রি হয়। হাসান মতিউর রহমানের লেখা ও মুজিব পরদেশীর গাওয়া 'আমি বন্দি কারাগারে' গানটি পরবর্তী কয়েক যুগ ধরে মানুষের মুখে শোনা যেতো। এটি বাদে বাকি সবগুলো গানই লিখেছিলেন পরিচালক তোজাম্মেল হক বকুল। তন্মধ্যে এন্ড্রু কিশোর ও রুনা লায়লার গাওয়া ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ গানটি আজও অমর হয়ে আছে।
স্বপ্নের ঠিকানা (১৯ কোটি টাকা)
এম এ খালেক পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি এখনও অনুপ্রাণিত করে কিংবদন্তির নায়ক সালমান শাহের বাকি মুভিগুলো দেখতে। নুরুল ইসলাম পারভেজের গল্পে ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ গড়েছিলেন ছটকু আহমেদ। ১৯৯৫-এর ১১ মে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমায় সালমান শাহের নায়িকা ছিলেন শাবনূর ও সোনিয়া।
মুভিটি ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তথাকথিত ধনী-দরিদ্র পরিণয় এবং ত্রিভুজ প্রেমের গল্প ভিত্তিক চলচ্চিত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করেছিলো।
সালমান শাহের স্বতন্ত্র অভিনয় ছাড়া স্বপ্নের ঠিকানা-এর বিশেষ দিক ছিলো এর গানগুলো। ‘এই দিন সেই দিন কোনও দিন’সহ ছবির প্রায় সব কটি গান ছিলো তখনকার সময়ে রেডিও’র টপচার্টে। গানগুলো পরিচালনা করেছিলেন প্রখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীত নির্দেশক প্রয়াত আলম খান।
আরও পড়ুন: আনকাট ছাড়পত্র পেল শাকিব খানের 'প্রিয়তমা'
হাওয়া (১৬ কোটি টাকা)
করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে যে কাজগুলো দেশীয় সিনেমাকে পুনরায় তুলে ধরেছিলো সেগুলোর মধ্যে এই হাওয়া একটি। মেজবাউর রহমান সুমন রচিত ও পরিচালিত এই রহস্য-নাটক ঘরানার সিনেমাটির প্রযোজনায় ছিলো সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড।
ছবিতে আকর্ষণীয় অভিনয় দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী এবং উদীয়মান তারকা নাজিফা তুশি। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, এবং রিজভী রিজু।
মাঝ সাগরে মাছ ধরার সময় এক দল জেলে তাদের মাছ ধরার জালে আবিষ্কার করে সুন্দর ও রহস্যময় এক তরুণীকে। আর এরপর থেকেই ঘটতে শুরু করে অদ্ভূত সব ঘটনা।
এমন রোমাঞ্চকর পটভূমির সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০২২ সালের ২৯ জুলাই। ছবিটি বাংলাদেশের অস্কার কমিটি ৯৫-তম অস্কারের 'সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম' বিভাগের জন্য নির্বাচন করেছিলো। এছাড়াও এটি স্থান পেয়েছিলো ৮০-তম গোল্ডেন গ্লোব প্রতিযোগিতার শর্টলিস্টে।
প্রিয়া আমার প্রিয়া (১৫ কোটি টাকা)
বদিউল আলম খোকন পরিচালিত এই ছবিটির মাধ্যমেই শুরু হয় শাকিব খানের আকাশ-সম তারকা-খ্যাতি অর্জন। ২০০৮ সালের ১৩ জুন মুক্তি পাওয়া এই রোমান্টিক অ্যাকশন ছবিটিতে তার নায়িকা ছিলেন সাহারা। ছবিটির গল্প ও চিত্রনাট্য ছিলো পুরী জগন্নাদের আর সংলাপ লিখেছিলেন শচীন নাগ।
আশা প্রোডাকশনের ব্যানারে বানানো ছবিটি মুক্তির বছর বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়ে। মুভিটি ২০০৮ সালের ঢালিউড বক্স অফিসে শীর্ষস্থান দখল করে নেয়। এর মাধ্যমে এটি বাংলাদেশের সর্বকালের সর্বোচ্চ উপার্জনকৃত মুভিগুলোর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়। এমনকি ২০১৯-এর আগ পর্যন্ত এটিই ছিলো শাকিব খানের অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ আয়কৃত ছবি।
শাকিব খান এই কাজের জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, চ্যানেল আই পারফরম্যান্স পুরস্কার, এবং ইউরো-সিজেএফবি পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছিলেন।
আরও পড়ুন: দর্শক আগ্রহে এগিয়ে ‘সুড়ঙ্গ’, ‘প্রিয়তমা’ ও ‘প্রহেলিকা’
শুভ’র প্রশংসায় নাসিরুদ্দিন শাহ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ মুক্তি পাবে ভারতেও। এই উপলক্ষে সিনেমাটি প্রচারণায় অংশ নিতে সম্প্রতি মুম্বাই পৌঁছেছেন সিনেমাটির মূল চরিত্রে অভিনয় করা আরিফিন শুভ।
ভারতে মুক্তি পাওয়া উপলক্ষে বুধবার (২৫ অক্টোবর) মুম্বাইয়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জাতীয় জাদুঘরে বাংলা ও হিন্দিতে সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে উপস্থিত ছিলেন শুভসহ সিনেমার কলাকুশলীরা।
সিনেমাটি দেখার পর আরিফিন শুভর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বলিউডের নাসিরুদ্দিন শাহ।
এছাড়াও সেখানে উপস্থিত থেকে সিনেমাটির প্রশংসা করেছেন বলিউডের অনেক তারকা। যাদের মধ্যে ছিলে অদিতি রাও হায়দারি, রজিত কাপুর, শ্রেয়া ঘোষাল, দিব্যা দত্ত, দক্ষিণী অভিনেতা সিদ্ধার্থ সূর্যনারায়ণ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ দেখে কাঁদলেন তারকারা
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে জানা যায়, সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল বলেন যে ‘অবশ্যই আমি ছবিটি তৈরি করে উপভোগ করেছি। এটা আমার জন্য সম্মানের বিষয় যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও মুজিবকন্যা ছবিটি পছন্দ করেছেন।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’।
সিনেমায় আরিফিন শুভ ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন- নুসরাত ফারিয়া, নুসরাত ইমরোজ তিশা, রিয়াজ আহমেদ, জায়েদ খান, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, খায়রুল আলম সবুজ, ফেরদৌস আহমেদ, দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ ও মিশা সওদাগরসহ দেশের শতাধিক শিল্পী।
আরও পড়ুন: সবাই দেখার অপেক্ষায় 'মুজিব: একটি জাতির রূপকার’
এই সিনেমার গল্প কখনো জানতে চাইনি: আরিফিন শুভ
কলম্বোতে তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন
শ্রীলংকার কলম্বোতে শুরু হয়েছে তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব।
শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশটির ন্যাশনাল ফিল্ম কর্পোরেশনের মর্যাদাপূর্ণ থারাঙ্গানি থিয়েটারে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশ হাইকমিশন এ চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করেছে। যা ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে তৃতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেক্ষাগৃহে আসছে আদর-প্রকৃতি জুটির ‘যন্ত্রণা’
এ সময় শ্রীলঙ্কার শতাধিক সিনেমাপ্রেমী প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাংলাদেশি সিনেমার স্বাদ উপভোগ করতে উপস্থিত হন।
থারাঙ্গানি থিয়েটার হলে উপস্থিত হন শ্রীলঙ্কার ধর্ম ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ভীদুরাহ বিক্রমনায়ক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক জি এল পেরিস, সাবেক মন্ত্রী পাটালি চম্পিকা রানাওয়াকা এবং কূটনৈতিক মিশনের প্রধানরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রীলঙ্কার সিনেমার গোল্ডেন স্টার হিসেবে পরিচিত প্রখ্যাত অভিনেত্রী স্বর্ণা মাল্লাওয়ারাচ্চি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। উৎসবের কিউরেটর হিসেবে চলচ্চিত্র সমালোচক ও পরিচালক অনোমা রাজাকরুণা প্রদর্শনের আগে চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।
তার স্বাগত ভাষণে তিনি সাম্প্রতিক সময়ে নতুন প্রজন্মের প্রতিভাবান চলচ্চিত্র পরিচালকদের হাত ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংস্কৃতির পুনরুত্থানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তারা অনেক আন্তর্জাতিক প্রশংসা বয়ে আনছেন।
হাইকমিশনার আরিফুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও জোরদার করবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যের কারণে শ্রীলঙ্কার দর্শকরা প্রদর্শনের জন্য নির্ধারিত সিনেমাগুলোর মর্মার্থ আরও গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারবে।
আগামী দুই দিনে, আরও চারটি সমসাময়িক বাংলাদেশি সিনেমা প্রদর্শন করা হবে। এর মধ্যে ‘রাত জাগা ফুল’ ও ‘নোনা জলের কাব্য’ শনিবার (৭ অক্টোবর) একই ভেন্যুতে যথাক্রমে বিকাল সাড়ে ৩টা ও সন্ধ্যা ৬টায় প্রদর্শিত হবে এবং ‘দামাল’ ও ‘ন ডরাই’ প্রদর্শিত হবে ৮ অক্টোবর একই সময়ে।
এর আগে ২০১৪ সালের এপ্রিল ও ২০১৮ সালের মার্চে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তারই সাফল্যের ধারাবাহিকতার উপর ভিত্তি করে এবার আবারও আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুফিয়া: চোখ আটকে গেল বাঁধনে
বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে টফি’র মিউজিক ভিডিওতে র্যাপার আলী হাসান
ইউরোপিয়ান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩-এর পর্দা উঠছে
তরুণ ইউরোপিয়ান ও বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতিভা প্রদর্শন করে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ইউরোপীয় চলচ্চিত্র উৎসব।
‘এ সেলিব্রেশন অব ইউরোপিয়ান অ্যান্ড বাংলাদেশি ইয়ং সিনেমা’- ট্যাগলাইন নিয়ে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আয়োজিত এই উৎসবের প্রধান সহযোগী হিসেবে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা।
রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির পরিচালনায় একটি চমকপ্রদ আলোচনা পর্বের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আরও পড়ুন: আর পারছি না রাষ্ট্র: ওমর সানি
'চলচ্চিত্রে তারুণ্য'- শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক ও কবি সাজ্জাদ শরীফ, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিজ্যুয়াল নৃবিজ্ঞান ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও চলচ্চিত্র কর্মী সিমিন ইবনাত ধরিত্রী।
প্যানেল আলোচনায় সাজ্জাদ শরীফ বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এমন একটি আনন্দময় সময়ে এই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং আমাদের তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতারা সমাজের অজানা অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করে নতুন ভাষার সন্ধান করছেন। তারা আমাদের সিনেমার বাধাগুলো পরিবর্তন করার জন্য উন্মুখ। এই ধরনের উৎসব আমাদের গাইড করতে এবং সাহায্য করতে পারে।’
চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমি যখনই আমাদের নতুন প্রজন্মের লোকদের জিজ্ঞেস করি, তাদের অধিকাংশই বলে যে তারা দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়। আমাদের এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে দেশে তারা তাদের প্রতিভা দিয়ে উন্নতি করতে পারে। যদি আমাদের সিনেমা আমাদের গল্প বলতে না পারে বা আমাদের জীবন এবং আমাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটের সঙ্গে অনুরণিত না হতে পারে, তবে এই সমস্যাটি আমাদের মাঝে থেকেই যাবে এবং আমাদের নতুন প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের গাইড করার জন্য আমাদের বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র প্রশিক্ষক-সহযোগীদের সমর্থন প্রয়োজন।’
সাইমন ইবনাত ধরিত্রী বলেন, তরুণদের জীবনে সিনেমার প্রভাব খুবই প্রবল এবং সিনেমা দর্শকদের বিনোদনের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও সামাজিক সচেতনতার ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে।
উদ্বোধনী প্যানেল আলোচনার পর ডাচ চলচ্চিত্র ‘ম্যালি ক্যান ফ্লাই’ প্রদর্শনের মাধ্যমে উৎসবের চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু হয়।
এরপর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এই চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনের জন্য বাংলাদেশে ইইউ দূতাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গোয়েথে-ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, অ্যালায়েন্স ফ্রাঙ্কেস ডি ঢাকা এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশসহ সহযোগী আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
এর আগে উৎসব কর্তৃপক্ষ সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে ইউরোপ ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করতে তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিয়ে একটি 'মাস্টারক্লাস' আয়োজন করেছিল।
গত শুক্র ও শনিবার পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু, চিত্রগ্রাহক অপু রোজারিও এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী এবং পিপলু আর খান ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিলে মাস্টারক্লাস পরিচালনা করেন।
রবিবার উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব প্রশিক্ষককে সম্মাননা দের ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।
উৎসবের অংশ হিসেবে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় এবং চলচ্চিত্র নির্মাতাদের তিনটি বিভাগে সম্মানিত করা হয়। তরুণ পরিচালক মোস্তফা মনোয়ার তার ‘যাত্রী’ ছবির জন্য সেরা গল্পের পুরস্কার পেয়েছেন এবং ‘আশ্লেষা’ ছবির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন আকিব মাহমুদ।
উৎসবে মেহেদী হাসান জোসেফের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘পোস্টার’ সেরা চলচ্চিত্রের মর্যাদা পায় এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং চরকি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদোয়ান রনি।
২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে রয়েছে অ্যালায়েন্স ফ্রাঙ্কেস ডি ঢাকা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ডাচ ক্লাব, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আরও পড়ুন: নেটফ্লিক্সে বাঁধনের ‘খুফিয়া’ আসছে ৫ অক্টোবর
বিরতির পর ফিরছেন পরীমণি