শিল্প-কারখানা
উন্নতির দাবি তিতাসের, তবে ঢাকা-গাজীপুর-নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় এখনো তীব্র গ্যাস সংকট
ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় তীব্র গ্যাস সংকট অব্যাহত। এরপরও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবেশক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি দাবি করছে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
এর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, মধ্যাঞ্চলের এই জেলাগুলোর শিল্পাঞ্চলের পোশাক ও বস্ত্র খাতগুলো গত কয়েক মাস ধরে তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে।
গাজীপুরের গ্রুপ অব টেক্সটাইল কারখানার শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবস্থাপক ইউএনবিকে বলেন, 'কারখানাগুলো ভয়াবহ সংকটে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পিজিসিএলের আওতাধীন এলাকায় ৬০ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা
তিনি অভিযোগ করেন, গাজীপুরের বেশিরভাগ শিল্প কারখানা তাদের উৎপাদনের সময়ে পর্যাপ্ত গ্যাস পায় না। অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সময়েই তাদের মেশিনগুলো চালু রাখা দরকার। অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে গ্যাসের চাপ খুবই কম থাকে।
কম চাপসম্পন্ন গ্যাসের প্রবাহ কম ভোল্টেজের বিদ্যুতের মতো - বৈদ্যুতিক চার্জ থাকা সত্ত্বেও অনেক যন্ত্রপাতি চলবে না।
বস্ত্র গ্রুপের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্যাস সরবরাহ না থাকায় বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং সেগুলো বন্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
চলমান গ্যাস সংকটে কারখানার ডাইং সেকশনের জেনারেটর, ব্রয়লারের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি চালানো হচ্ছে না। এতে শিল্প উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে এবং বিপুল আর্থিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এক শিল্প মালিক বলেন, ‘পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অনেক শিল্প কারখানা আসন্ন ঈদে বেতন ও উৎসব বোনাস দিতে পারবে না।’
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈরসহ অন্যান্য এলাকায় তিন শতাধিক কারখানা রয়েছে।
এই সমস্ত শিল্প তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকটি তাদের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।
প্রতিটি কারখানায় এক হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছে। কিন্তু গ্যাস সংকটের কারণে তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমাতে হচ্ছে। আবার তাদের কেউ কেউ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য উচ্চ মূল্যে সিএনজি ব্যবহার করছে।
মিরপুর, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জ এলাকাতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
তিনি বলেন, দাম বাড়ালেও সরকার পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না।
তিনি বলেন, ‘গ্যাসের অভাবে পোশাক কারখানার উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এরই মধ্যে অনেক ক্রেতা নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে জাহাজের পরিবর্তে বিমানে পণ্য পাঠানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিছু ক্রেতা দামের ক্ষেত্রে ছাড় চাইছেন।’
তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে কিছু গ্রাহক বিরক্ত হয়ে অর্ডার বাতিল করেন।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজও (বিসিআই) অভিযোগ করেছে, গ্যাস সংকটের কারণে দেশের কোনো শিল্পই সম্পূর্ণ সক্ষমতা অনুযায়ী চলতে পারছে না।
আরও পড়ুন: আগামী ৪ বছরের মধ্যে গ্যাসের শতভাগ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে: প্রতিমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের কার্যালয়ে সাক্ষাতের সময় বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরীর (পারভেজ) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযোগ করেন।
শিল্প খাতের এ সংগঠন বলছে, সরকার তাদের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করবে এই আশায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ানোর অজুহাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বিসিআইয়ের এক বিবৃতেত বলা হয়, ‘তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমার প্রবণতা থাকলেও আবারও বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে।’
এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার। ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে শিল্প খাতকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দিলে সে অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।’
তিতাস গ্যাসের মহাব্যবস্থাপক অর্পনা ইসলাম গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। তবে সম্প্রতি গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অদূর ভবিষ্যতে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতির কোনো সম্ভাবনা আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি পেট্রোবাংলার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পেট্রোবাংলার পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গত এক মাসে সারা দেশে গ্যাসের সরবরাহ বেড়েছে দৈনিক মাত্র ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) বা তার কাছাকাছি, যার ফলে উৎপাদন ও সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে প্রায় দেড় হাজার এমএমসিএফডি।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, চার হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিদেশ থেকে আমদানিসহ ২ হাজার ৬৭১ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন হয়েছে।
তিতাস গ্যাসের তথ্যে আরও দেখা যায়, গ্যাস সংকটের কারণে প্রায় ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটের কৈলাশটিলায় আরও ১.৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে: প্রতিমন্ত্রী
৯ মাস আগে
রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের অনুমতি
তৈরি পোশাক কারখানাসহ রফতানিমুখী শিল্প-কারখানায় কাজে যোগ দিতে শ্রমিকদের পরিবহনের জন্য যাত্রীবাহী নৌযান রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। শনিবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এই তথ্য জানিয়েছে।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, সন্ধার পর এখন থেকে আগামীকাল রবিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করবে ।
বিআইডব্লিউটিএ এ বিষয়ে জন সংযোগ কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চের মালিক, মাস্টার, চালক, কর্মচারী ও যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোগান্তি উপেক্ষা করে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে গত ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী সরকার ফের 'কঠোর' লকডাউন দিয়েছে। ঈদুল আজহার আগে বিআইডব্লিউটিএ ১৪ জুলাইয়ের মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬ টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য নির্দেশিকা বজায় রাখার শর্তে লঞ্চগুলোকে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন করার অনুমতি দেয়।
রবিবার ১ আগস্ট কলকারখানা আবার চালুর ঘোষণা আসার পর গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকা সত্বেও লকডাউনের নবমতম দিনে শনিবার হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করে। কর্মস্থলে যোগ দিতে রাজধানীতে ফিরে আসার জন্য মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে দক্ষিণ -পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোর মানুয়ের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: করোনায় আরও ২১৮ প্রাণহানি, শনাক্ত ৩০.২৪ শতাংশ
শুক্রবার থেকে ১৪ দিন বন্ধ থাকবে নৌযান চলাচল
৩ বছর আগে
শিল্প-কারখানায় ‘জিরো এক্সিডেন্ট ও পল্যুশন নীতি’ গ্রহণ করেছে সরকার: শিল্পমন্ত্রী
টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) অর্জনে বর্তমান সরকার শিল্প-কারখানায় জিরো এক্সিডেন্ট ও জিরো পল্যুশন নীতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
৪ বছর আগে