রাশিয়া
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে উন্নয়নশীল বিশ্বে আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্র লাভের দিকে নজর দেবে রাশিয়া ও চীন। এ সময় পশ্চিম-বিরোধী যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে কাছে টানতে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে পারে তারা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস অর্থনৈতিক ব্লকের নেতারা জোহানেসবার্গের স্যান্ডটনে তিন দিনের বৈঠক করবেন। গত দেড় দশকে চীন এই ব্লকে কূটনৈতিক মূলধন বিনিয়োগ করেছে এবং এটা নিয়ে তাদের উচ্চাকাক্ষা রয়েছে তার প্রমাণ ওই বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংয়ের উপস্থিতি।
ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। একারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। এ ছাড়া ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা উপস্থিত থাকবেন।
বুধবার প্রধান শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাইডলাইন বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পশ্চিমা আধিপত্য নিয়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে সাধারণ আহ্বান জানানো হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাশিয়া ও চীন সবেচেয়ে বেশি আগ্রহী। দক্ষিণ আফ্রিকায় পুতিনের প্রতিনিধিত্ব করবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এ ছাড়া আরও কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশের নেতা বা প্রতিনিধিরা সাইডলাই বৈঠকে যোগ দেবেন।
ব্রিকস ব্লকের সম্ভাব্য সম্প্রসারণসহ একটি সুনির্দিষ্ট নীতির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের উদীয়মান বাজারভিত্তিক দেশগুলোর সমন্বয়ে ২০০৯ সালে গঠিত হয়েছিল ব্রিকস। পরের বছর সংস্থাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যুক্ত করেছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা বলছেন, আরেকটি সম্ভাব্য সম্প্রসারণে ব্রিকসে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনকারী ২০টিরও বেশি দেশের মধ্যে একটি হলো সৌদি আরব। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক ব্লকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উত্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করার যে কোনো পদক্ষেপ স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। অতিরিক্ত শীতল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ এবং পারস্য উপসাগরে কিছুটা প্রভাব বিস্তারের জন্য বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এরই মধ্যে অনেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
সৌদি আরবে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমেদ বলেছেন, ‘যদি সৌদি আরব ব্রিকসে প্রবেশ করে তবে এটি এই গ্রুপিংকে অসাধারণ গুরুত্ব দেবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত ব্রিকস সম্প্রসারণের নীতিতে একটি চুক্তিও জি-৭ এর ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্লকের জন্য রাশিয়ান ও চীনা দৃষ্টিভঙ্গির জন্য একটি নৈতিক বিজয়।
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার স্নায়ুযুদ্ধের মতো স্থবিরতার মধ্যে উভয়ই এক ধরনের জোটকে শক্তিশালী করার জন্য আরও দেশকে যুক্ত করার পক্ষে -- এমনকি এটি শুধুমাত্র প্রতীকী হলেও৷
আর্জেন্টিনা থেকে শুরু করে আলজেরিয়া, মিশর, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্যন্ত সব দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদির সঙ্গে যোগদানের জন্য আবেদন করেছে এবং সম্ভাব্য নতুন সদস্যও হতে পারে।
জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক অ্যালেক্সিস হাবিয়ারেমি বলেছেন, ‘যদি তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশকে নেওয়া হয়, তাহলে এটি একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক ব্লকে পরিণত হবে এবং সেখান থেকে শক্তির উৎস তৈরি হবে।’
যদিও ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্প্রসারণে কম আগ্রহী এবং বর্তমানে একটি একচেটিয়া উন্নয়নশীল বিশ্ব সংগঠনে তাদের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। যদিও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং পাঁচটি দেশকে প্রথমে নতুন সদস্য হওয়ার যে মানদণ্ড পূরণ করতে হবে তাতে একমত হতে হবে। বেইজিংয়ের চাপের মধ্যে এটি জোহানেসবার্গের এজেন্ডায় রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনের রাষ্ট্রদূত চেন জিয়াওডং বলেছেন, ‘ব্রিকস সম্প্রসারণ এই মুহূর্তে শীর্ষ আলোচিত বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে৷’ সম্প্রসারণই ব্রিকসের মূল কার্যক্রম বাড়ানোর চাবিকাঠি। আমি বিশ্বাস করি আসন্ন এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন একটি নতুন ও দৃঢ় পদক্ষেপের সাক্ষী হবে।’
ব্রিকস থেকে উদ্ভূত যে কোনো রুশ ও চীনা প্রভাবকে বন্ধ করার প্রয়াসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ভারতের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনের আগেই স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশনের অনেক নেতৃস্থানীয় সদস্যদের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত আছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন: মুখপাত্র
ইউরোপীয় ইউনিয়নও জোহানেসবার্গের ঘটনাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করবে, তবে ইউক্রেনের যুদ্ধের উপর প্রায় একমাত্র মনোযোগ এবং উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য ঐক্যবদ্ধ নিন্দা জানাতে ব্লকের অব্যাহত প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছে।
শি, লুলা, মোদি ও রামাফোসা একত্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের এই মুহূর্তটি আন্তর্জাতিক আইন বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
স্ট্যানো বলেছেন, ‘আমরা পুতিনকে তার অবৈধ, অস্থিতিশীল আচরণ বন্ধ করতে তাদের ভূমিকার জন্য অপেক্ষা করছি।’
মূল শীর্ষ সম্মেলনের আগে জুন মাসে কেপটাউনে ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যদি কোনো সমাধান হয়ে থাকে, তাহলে যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া বা পুতিনের প্রকাশ্য সমালোচনা হবে না। স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারের বাইরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাইটস গ্রুপ এবং ইউক্রেনীয় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ আফ্রিকার ঘোষিত প্রতিবাদ সম্ভবত একমাত্র নিন্দা জানাবে।
যদ আগের বৈঠকে কোনো সমাধান হয়, এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে কিছু সুবিধা পেতে পারে রাশিয়া।
ইউরোপ, রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামে ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো মারিয়া স্নেগোভায়া বলেছেন, গত মাসে ইউক্রেনের বাইরে শস্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার একটি চুক্তি স্থগিত করার পরে পুতিন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আরও বিনামূল্যে রাশিয়ান শস্যের চালান ঘোষণা করতে ব্রিকস সমাবেশ ব্যবহার করতে পারেন। তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের জন্য করেছেন।
স্নেগোভায়া বলেন, ইউক্রেনকে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার সময় এটি পুতিনকে উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে ‘সদিচ্ছা’ প্রদর্শনের অনুমতি দেবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন,পুতিন একটি ভিডিও লিঙ্কে উপস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শীর্ষ সম্মেলনে ‘সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ’ করবেন এবং একটি বক্তব্য দেবেন।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জোহানেসবার্গে তিন দিন ধরে নিয়মিতভাবে যা সম্প্রচারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা হলো বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার উপর উন্নয়নশীল বিশ্ব আঁকড়ে ধরা। শীর্ষ সম্মেলনের আগের কয়েক মাস ও সপ্তাহ ধরেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বিশ্বের মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের আধিপত্যের সমালোচনা চলছে।
পাঁচটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের কারণে এবং চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে নীতি বাস্তবায়নে ব্লকের যে অসুবিধা রয়েছে তা নির্দেশ করতে ব্রিকস বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ঐক্যবদ্ধ।
চায়না গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের বিশ্লেষক কোবাস ভ্যান স্টাডেন বলেন, স্থানীয় মুদ্রায় আরও বেশি বাণিজ্যের দিকে মনোনিবেশ করা এমন একটি বিষয় যা তারা সকলেই পিছনে ফেলতে পারে।
তিনি দেখেছেন যে ব্রিকস বিশ্বের কিছু অংশে আঞ্চলিক বাণিজ্যে ডলারের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, ঠিক যেভাবে তিনি এই শীর্ষ সম্মেলনকে সামগ্রিকভাবে দেখেন।
ভ্যান স্ট্যাডেন বলেন, ‘এগুলোর কোনোটিই বড় অস্ত্র নয় যা ডলারকে মোকাবিলা করতে চলেছে। এটা নাটক নয়।’ ‘এটি একটি বড় তরবারির ক্ষত নয়, এটি অনেকগুলো কাগজ কাটার মতো। এটি ডলারকে দমাবে না, তবে এটি অবশ্যই বিশ্বকে আরও জটিল করে তুলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ডলারকে হারানোর দরকার নেই এবং তাদের জি-৭ কে পরাজিত করার দরকার নেই। তারা বিশেষভাবে যা করতে চায় তা হলো এর একটি বিকল্প উত্থাপন। এটা অনেক দীর্ঘ কাজ।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
বন্যার কারণে ২ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া
রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের প্রাইমোরি অঞ্চলের বন্যাকবলিত এলাকা থেকে ২ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় রবিবার (১৪ আগস্ট) দেশেটির জরুরি কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, ক্রান্তীয় ঝড় খানুন এর প্রভাবে এ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পর এই লোকদের সরিয়ে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চীনে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, এই অঞ্চলে সপ্তাহজুড়ে হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে জানিয়েছে, ৪ হাজার ৩০০ টিরও বেশি বাড়ি ও ২৮টি জনবসতি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলের ১৬টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদ্ধারকারীরা এই অঞ্চলে ১৩টি অস্থায়ী আবাসন কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা শুক্রবার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সাতটি জেলায় বন্যা হয়েছে এবং কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারী এবং ১০ ও ১২ বছরের ২টি শিশু।
এর আগে টাইফুন খানুন কোরীয় উপদ্বীপ ও জাপানে আঘাত হানে।
আরও পড়ুন: তাপ, দাবানল ও বন্যা গ্রীষ্মকে ‘তীব্র গরম’ করে তুলেছে
বন্যাকবলিত এলাকায় অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ দিল চীন
রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা
ঢাকায় রুশ দূতাবাস বলেছে, বাংলাদেশে ঈদুল আযহার চেতনা পুরোপুরি অনুভব করা যায়।
এসময় লাখ লাখ মুসলমানের আবাসস্থল হিসেবে রাশিয়া বাংলাদেশসহ বিদেশি দেশগুলোর সঙ্গে মানবিক সম্পর্ক উন্নয়নে মুসলিম সম্প্রদায়ের অবদানের প্রশংসা করে।
মঙ্গলবার দূতাবাসের অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স একাতেরিনা সেমেনোভা ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারাবিশ্বের মুসলমানদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই আনন্দময় উৎসব সুখ, সমৃদ্ধি এবং সমস্ত প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করার শক্তি বয়ে আনুক। ঈদ মোবারক!’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ান দূতাবাস এবং আমার পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশি মুসলমানদের পাশাপাশি হজ পালনকারী সকল মুসলমানকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে চাই।’
আরও পড়ুন: সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল ৮টায় ঈদের জামাত
কূটনীতিক বলেছেন, এই উৎসব সবসময় ইতিবাচক উদ্যোগ এবং সহানুভূতি, আত্ম-উন্নতি ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তোলে।
সেমেনোভা বলেছেন, কীভাবে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি প্রচার করা, অন্যান্য বিশ্বাসের বৈচিত্র্য গ্রহণ করা এবং আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা যায়, তা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা কীভাবে তাদের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে আনন্দঘন পরিবেশে এই উৎসব উদযাপন করতে সমবেত হয়, তা দেখাটাও আনন্দের বিষয়।
রাশিয়ান কূটনীতিক বলেছেন, ‘প্রত্যেকে এখানে অন্যকে সাহায্য করার উদারতা ও আতিথেয়তার মাধ্যমে এই ছুটির চেতনাকে সম্পূর্ণরূপে অনুভব করতে পারে।’
আরও পড়ুন: জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুত, বৃষ্টি হলেও নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে: মেয়র তাপস
ঈদে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ডিএমপি কমিশনার
পাকিস্তান-রাশিয়া নয়া সম্পর্ক: এক দেশভিত্তিক সম্পর্ক আর নয়
সম্প্রতি পাকিস্তান ও রাশিয়া বন্ধু হওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। কারণগুলোও অতি সহজ।
প্রথমত- রাশিয়াকে পণ্য বিক্রি করতে হবে।
দ্বিতীয়ত- পাকিস্তানকে দ্রুত ও সস্তা পণ্য কিনতে হবে।
রাশিয়া জুনের মাঝামাঝি করাচি বন্দর দিয়ে পাকিস্তানে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করেছে। পাকিস্তানে ১ লাখ মেট্রিক টন রাশিয়ান অশোধিত তেল পাঠানোর জন্য এপ্রিল মাসে এ চুক্তিটি করা হয়েছিল।
চুক্তির রাজনীতি
বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বলয়ের বাইরেও এই চুক্তির প্রভাব রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে যা কিছু ঘটে, তার একটি ভারতীয় দিক থাকে। এটি চুক্তিটিও ভিন্ন নয়। রাশিয়া পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অংশ নয়, তবে তারা ভারতের ঘনিষ্ট।
কিছু সূত্রের তথ্যমতে, এই সম্পর্কটি (ভারত-রাশিয়া) নাকি চাপের মধ্যে আছে। এগুলো মূলত মার্কিন সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার সংসদীয় গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
পরিস্থিতি থেকে আরও বোঝা যাচ্ছে, আজীবনের বন্ধু বা ‘আমার বন্ধু, তোমার মিত্র’- টাইপ ভাবনার মডেলের সংস্কার চলছে; পরিবর্তন এসেছে।
সুন্দরভাবে যেটিকে ‘গ্লোবাল সাউথ’ বলা হয়, সেখানকার নেতা ও মানুষেরা এতটাই বোকা না যে তারা সবকিছু মেনে নেবে। এমনকি এখন তারা পশ্চিমসহ কোনো ব্লকের প্রতি স্থায়ী আনুগত্যে বিশ্বাস করে না।
মস্কো, পশ্চিম, বেইজিং এবং এমনকি বহিরাগত এলিয়েনও যদি এগিয়ে আসে, অনেকে তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরির জন্য আগ্রহীI আর ইউক্রেন যুদ্ধ এই প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করেছে।
রাশিয়া ও পাকিস্তান ছিল স্নায়ুযুদ্ধে একে অন্যের ঘোর শত্রু। বিশেষত ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়, যখন রাশিয়া ভারতকে সমর্থন করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে।
অন্যদিকে, চীন সেসময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন বন্ধু ও মিত্রদের সন্ধানে ব্যস্ত ছিল। সেসব পুরনো কথা।
দৌড়ের ওপর কঠিন সিদ্ধান্ত
তবে আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে সম্পর্ক একটু ভাল হয়েছিল, কারণ তাদের যৌথ স্বার্থ ছিল। অর্থাৎ সন্ত্রাসবাদ দমন এবং তালেবানের সঙ্গে পুনর্মিলনের বিষয়।
২০২২ সালে যখন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মস্কো সফর করেন, তখন এজেন্ডার শীর্ষে ছিল তেল বা এনার্জি।
ততক্ষণে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। এতে বিশ্বজোড়া সম্পূর্ণ নতুন একটি জগাখিচুড়ি তৈরি হয়েছে এবং এর ফলাফল এখনও অস্পষ্ট।
কিন্তু পরিস্থিতি অনিশ্চিত হওয়ার কারণেই ছোট/দুর্বল দেশগুলো দৌড়ের ওপর খুব কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে।
পাক-রাশিয়া এপ্রিলের তেল চুক্তিটিকে ‘ট্রায়াল রান’ বলা হয়েছিল, তবে স্পষ্টতই তেলের ড্রামে এর চেয়ে আরও বেশি কিছু রয়েছে।
স্পষ্টতই পাকিস্তান রাশিয়ান অপরিশোধিত দিয়ে তার ট্যাঙ্কের এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করার পরিকল্পনা করছে, যার অর্থ তারা শুধুমাত্র মধ্যেপ্রাচের তেলের ওপর নির্ভর করতে চায় না, যা বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তা নতুন হিসাব-নিকাশ তৈরি করছে।
অন্যদিকে, রাশিয়াও ‘দিল’ খুলে বন্ধুত্বের বোতলে তেল ঢালছে।
এমনকি পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৭৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ উর্দুতে ‘পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হোক’- বলে তার বক্তৃতা শেষ করেন।
এ নিয়ে টলস্টয় কি ভাববেন সেটা জানা যায় নি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ২০২৩-২৪ সালে অর্থনীতির সব খাতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে: প্রতিবেদন
ভারতকে কি একটু চিন্তায় ফেলেছে?
রাশিয়া ও চীনের বন্ধুত্বের বিষয়টি প্রাক্তনের সঙ্গে রোম্যান্স পুনরুজ্জীবিত করার একটি ক্লাসিক উদাহরণ। একইসঙ্গে উভয়ই একসময় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ব্লকের অংশ ছিল, যা ১৯৬১ সালে ভেঙে যায়।
তবে সম্পর্কের মেরামত চলছে এবং উভয়ই অস্ত্রের বিষয় নিয়ে কথা বলছে। এটাই নয়াদিল্লিকে কিছুটা উদ্বিগ্ন করছেI সে আশঙ্কা করছে যে মস্কো তার নতুন প্রেমিক চীনকে বেশি পছন্দ করতে পারে এবং তার সঙ্গে অস্ত্র সহযোগিতা কমাতে পারেI
তবে এটি এখনও ঘটেনি, যদিও মার্কিনিরা খুব আশাবাদী যে অচিরেই এমনটা ঘটবে।
নতুন অংক, পুরনো শত্রু
ভারত বিশেষজ্ঞরা পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার নয়া মাখামাখি’র ভবিষ্যত সম্পর্কে সতর্কI তবে তারা বলছে যে এটি পাকিস্তান বা ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস নয় এবং মস্কো ও ইসলামাবাদের মধ্যে সমীকরণ ইতিবাচক; তবে দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সম্ভব নয়।
কারণ পাকিস্তানের পকেট ছিঁড়ে গেছে এবং তারা মস্কোকে বেশিদিন অর্থ দিতে পারবে না; কারণ তার (রাশিয়ার) নিজের পকেটও মেরামত করা যথেষ্ট প্রয়োজন।
তবে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হতে পারে যে রাশিয়ার সঙ্গে খুব বেশি প্রণয় করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুব্ধ হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ করে। আর পাকিস্তানের এখন তাদের ভীষণ প্রয়োজন।
সুতরাং, পশ্চিমা দেশগুলো যে তেলের দাম নির্ধারণ করেছে, পাকিস্তানকে তা মেনে চলতে হবেI না হয় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে।
মার্কিন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়া
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে যে নগদ টাকার ঘাটতির কারণে রাশিয়া আর নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী নয়, কিন্তু ভারত এই খেলায় পুরানো পাপী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ালেও ভারত এখনও রাশিয়ার সঙ্গে একটি ‘সব সময়ের বন্ধু’-মার্কা পোজ দিচ্ছে।
কারণ ভারত নিশ্চিত হতে চায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত বিয়েতে গেলে সে রাশিয়ার চেয়ে ভাল পার্টনার পাবেI তবে ভারত নিশ্চয়ই শিশু বা কিশোরীর মতো মালাবদলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে না, কারণ এতে অর্থ জড়িত; আর এটাই আসল কথা।
এখন দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশই আর কোনো সরবরাহকারী কাম সুপার পাওয়ারের সঙ্গে একচেটিয়া সম্পর্ক করার চুক্তিতে যাচ্ছে না। সব দরজা খোলা রাখতে চায় সবাইI আর এটা শুধু ভারত ও পাকিস্তানই করছে, এমন না।
বাংলাদেশ যেমন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অনুমোদিত কয়েক ডজন রুশ জাহাজ তার বন্দরে ভিড়তে বাধা দিয়েছে, অন্যদিকে আবার রাশিয়ার সঙ্গে চীনা মুদ্রায় লেনদেন অব্যাহত রেখেছে।
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: রাশিয়ার থ্রিডি-প্রিন্টেড রকেট উৎক্ষেপণের পরপরই ব্যর্থ!
রাশিয়া থেকে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে
দেশে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে রাশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়েছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে এমভি আনকা স্কাই নামে ভ্যানুয়াটি পতাকাবাহী জাহাজটি বন্দরের ৮নং জেটিতে নোঙ্গর করে।
জাহাজটিতে ৩৩৯ প্যাকেজ রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন পণ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় মোংলা বন্দরে ভিড়তে পারেনি রুশ জাহাজ
এমভি আনকা স্কাই জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কনেভেয়ার শিপিং লাইন্সের ম্যানেজার অপারেশন (শিপিং) সাধন কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, গত ২৮ এপ্রিল ৩৩৯ প্যাকেজের রাশিয়ার নোভরোসিস্ক বন্দর থেকে এক হাজার ১৪৯ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে জাহাজটি ছেড়ে আসে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই পণ্য আনা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাহাজে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ, ইলেকট্রিক্যাল ও মেশিনারি বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। এই মালামাল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সড়ক পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ডিপোতে নেওয়া হবে।
জাহাজ থেকে এসব পণ্য খালাস করে আপাত বন্দরের জেটিতে রাখা হচ্ছে।
জানা গেছে, এর আগে ৬ মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে রাশিয়া থেকে এমভি আনকা সান নামে একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করে। আর ২৫ এপ্রিল এমভি ইয়ামাল অরনাল নামে অপর একটি জাহাজ রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করে।
তার আগে এমভি ড্রাগনবল ও এমভি কামিল্লা নামে জাহাজ রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে নোঙ্গর করে। ধারাবাহিকভাবে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ মোংলা বন্দরে ভিড়ছে।
এছাড়া আগামি দুই সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া থেকে আরও একটি জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়বে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর মালামাল নিয়ে বিদেশি জাহাজ
মোংলা বন্দরে বঙ্গবন্ধু রেলসেতু ও রূপপুরের মেশিনারি পণ্যবাহী ৩ জাহাজ
রাশিয়ার সংসদীয় গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
রাশিয়ার সংসদের বাংলাদেশ বিষয়ক সংসদীয় গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান।
বুধবার (১২ এপ্রিল ২০২৩) স্থানীয় সময় সকালে রাশিয়া আইনসভার নিম্নকক্ষ হিসেবে পরিচিত স্টেট ডুমার নব গঠিত বাংলাদেশ বিষয়ক সংসদীয় গ্রুপের আমন্ত্রণে তিনি সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন।
এসময় তারা বাংলাদেশ-রাশিয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, পারমাণবিক বিদ্যুৎ, খেলাধুলা, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, তৈরি পোশাক শিল্প, বিজ্ঞান প্রযুক্তি, কৃষি এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।
রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভবন স্টেট ডুমায় অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ বিষয়ক সংসদীয় গ্রুপের সমন্বয়কারী ও ষ্টেট ডুমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান স্বেতলানা সের্গেইভনা ঝুরোভার নেতৃত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ষ্টেট ডুমার আইন ও সংসদ বিষয়ক ডেপুটি চেয়ারম্যান মিসেস ইরিনা ভিক্টোরোভনা বেলিখ, ষ্টেট ডুমার সদস্য নিকোলাই রবার্টোভিচ বুডুয়েভ ও আলেক্সি সিটনিকভণের। এসময় রাষ্ট্রদূতকে সহায়তা করেন দূতাবাসের উপ-প্রধান ফয়সাল আহমদ ও কাউন্সেলর শুভাশিস সরদার।
বাংলাদেশ বিষয়ক সংসদীয় গ্রুপের সমন্বয়কারী স্বেতলানা সের্গেইভনা ঝুরোভা বলেন, রাশিয়া ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক সুদীর্ঘকালের। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়া বাংলাদেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় যেভাবে সহযোগিতা করেছিল দুই দেশের জনগণের স্বার্থে ভবিষ্যতেও এ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জ্বালানি ও কৃষি, শিক্ষা, খেলাধুলা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বলেন, দুই দেশের বহুমুখী সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ ও মজবুত করতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা না পেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আরও বিলম্বিত হতে পারত। সভায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রথাগত এলাকার বাইরে গিয়ে আরও প্রসারিত ও বৈচিত্র্য আনার বিষয়ে আলোচনা হয়। রাশিয়ার বিভিন্ন শিল্পকারখানায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি এবং রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অধিকসংখায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী প্রেরণের সম্ভাবনার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার জ্বালানি আমদানিতে বাধা হবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা
রাষ্ট্রদূত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সম্ভাব্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দুই দেশকে একসঙ্গে কাজ করার এবং এবিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আহ্বান জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। দুই দেশের সম্পর্কে আরও এগিয়ে নিতে শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সফর বিনিময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রথাগত ও অপ্রচলিত খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় ও সম্প্রসারিত হবে।
পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধানের পাশাপশি আরও অনেক অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশ ও রাশিয়া এক যোগে কাজ করবে বলে ষ্টেট ডুমার সদস্যরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ষ্টেট ডুমার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ বিষয়ক সংসদীয় গ্রুপের সমন্বয়কারী স্বেতলানা সের্গেইভনা ঝুরোভাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে অব্যাহতভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার নিকট যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দাবির জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মতৈক্য ছাড়াই ভারতে জি-২০ বৈঠক শেষ
ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ অর্থনীতির প্রধানদের একটি বৈঠক কোনো ঐক্যমত্য ছাড়াই শেষ হয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধের বর্ণনার একটি চূড়ান্ত নথিতে রাশিয়া এবং চীন আপত্তি জানিয়েছে।
শনিবার ভারতে ব্যাঙ্গালুরুতে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
ভারত আয়োজিত জি-২০ এর বৈঠকটির সভাপতির সারসংক্ষেপ এবং একটি ফলাফলের নথিতে বলা হয় ইউক্রেনে যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও চুক্তি ছিল না। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বার্ষিকীর প্রথম দিন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
সাতটি প্রধান শিল্পোন্নত দেশ শুক্রবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে। ঠিক সেসময় জি-২০ গ্রুপের আলোচনা ভারতীয় প্রযুক্তি কেন্দ্র বেঙ্গালুরুতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন রাশিয়ান কর্মকর্তাদের অংশগ্রহনে একই অধিবেশনে ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বেআইনি এবং অন্যায় যুদ্ধের’ নিন্দা একই সঙ্গে ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য এবং মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়ার জন্য জি-২০ দেশগুলোকে আরও কিছু করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার আহ্বান চীনের
গত নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে শেষ শীর্ষ জি-২০ বৈঠকে নেতারা যুদ্ধের তীব্র নিন্দা করে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে সংঘাত বিশ্বের অর্থনীতিতে ভঙ্গুরতাকে তীব্রতর করছে। এই গোষ্ঠীতে রাশিয়া এবং চীন ও ভারতের মতো দেশগুলোও রয়েছে যাদের মস্কোর সঙ্গে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য রয়েছে।
ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সাংবাদিকদের বলেছেন যে বেঙ্গালুরু বৈঠকের জন্য প্রস্তুত করা বিবৃতিতে বালি ঘোষণার দুটি অনুচ্ছেদ রয়েছে। তবে রাশিয়া এবং চীন তাদের মুছে ফেলার দাবি করে বলেছে যে তারা এবার চূড়ান্ত নথির অংশ হতে পারবে না।
সীতারামন বলেছিলেন, তাদের বিরোধ ছিল তারা তখনকার পরিস্থিতিতে বালি ঘোষণা অনুমোদন করেছিল। ‘এখন তারা এটা চায়নি।’ এর বেশি কিছু তিনি জানাননি।
বালি ঘোষণায় বলা হয়েছে যে ‘বেশিরভাগ সদস্যরা ইউক্রেনে যুদ্ধের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং জোর দিয়েছিলেন যে এটি বিশাল মানবিক দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বিদ্যমান ভঙ্গুরতাকে বাড়িয়ে তুলছে। এরমধ্যে রয়েছে- প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত, মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি, সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত করা, জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার ঝুঁকি।’
আরও পড়ুন: বুরকিনা ফাসোতে ৭০ জনের বেশি সেনা হত্যার দায় স্বীকার আইএসের
ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে: ‘অন্যান্য মতামত এবং পরিস্থিতি এবং নিষেধাজ্ঞার বিভিন্ন মূল্যায়ন ছিল। জি-২০ নিরাপত্তা সমস্যা সমাধানের ফোরাম নয়, আমরা স্বীকার করি যে নিরাপত্তা সমস্যাগুলো বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিণতি হতে পারে।’
ঘোষণার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ বলেছে, এখন রাশিয়া এবং চীনের কাছে অগ্রহণযোগ্য। ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং বহুপক্ষীয় ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখা অপরিহার্য যেটি শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করে। ... পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বা ব্যবহারের হুমকি অগ্রহণযোগ্য। দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধান, সংকট মোকাবিলার প্রচেষ্টা, সেইসঙ্গে কূটনীতি এবং সংলাপ অত্যাবশ্যক। এই সময় অবশ্যই যুদ্ধের নয়।’
সীতারামন বলেছিলেন যে রাশিয়া এবং চীনের আপত্তির কারণে বৈঠকটি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারেনি এবং একটি সারসংক্ষেপ এবং একটি ফলাফলের নথি বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সতর্ক করলো হংকংয়ের বেইজিং অফিস
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে গেলে দেশ আবারও চাঙ্গা হবে: ধর্মপ্রতিমন্ত্রী
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, বর্তমান সময় সংকটময় সেটা বাংলাদেশের মানুষ জানে কারণ সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। তবে বাংলাদেশের এই অবস্থা থাকবে না। সারাবিশ্বের থেকে আমরা এখন পর্যন্ত অনেক ভালো আছি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে গেলে দেশ আবারও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আরও এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাতে আওয়ামীলীগ সরকার আর না করতে পারে সে জন্য একটা বিরোধী শক্তি কাজ করে যাচ্ছে। তারা দেশের শান্তি নষ্ট করতে চায়। এমনকি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য প্রস্তুত থাকে তারা। এই দিকে আমাদের সকলকে সর্তক থাকতে হবে। মন্ত্রী বলেন,,আগামী এক বছর পর জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা অশুভ শক্তি দেশে অনেক কিছু করার চেষ্টা করতে পারে। এই অশুভ শক্তি যাতে তাদের এই শক্তিটা প্রয়োগ করতে না পারে এই জন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনপ্রতিনিধি ও দেশের সাধারণ জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মন্ত্রী বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে হবে। সে জন্য সবাইকে ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে, সবাইকে ভোট প্রয়োগ করতে হবে।
মহানবীর শিক্ষা ও আদর্শ মুসলিম উম্মাহকে উদার ও মানবিক হতে শিক্ষা দেয়: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতামূলক আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, নাদের বখত প্রমুখ।
আরও পড়ুন: জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিলেন: প্রধানমন্ত্রী
ইউক্রেনে যতদিন দরকার ততদিন সাহায্য করবে ন্যাটো
রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনীয়দের রক্ষা করতে যতদিন সময় লাগবে ততদিন ইউক্রেনকে সহযোগিতা করতে বদ্ধপরিকর ন্যাটো। একই সঙ্গে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে পশ্চিমাদের মতো একটি আধুনিক সেনাবাহিনীতে রূপান্তর করতে সহায়তা করবে।
শুক্রবার সামরিক জোটটির মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এই ঘোষণা দিয়েছেন।
আগামী সপ্তাহে রোমানিয়ায় ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম পৌঁছেছে ইউক্রেনের সাড়ে ৫২ হাজার টন গম
সংগঠন হিসেবে ন্যাটো অস্ত্র সরবরাহ করে না উল্লেখ করে ইউক্রেনকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এককভাবে বা দলগতভাবে দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ করেছেন স্টলটেনবার্গ।
তিনি বলেন, ‘যতদিন লাগবে ইউক্রেনের পাশে থাকবে ন্যাটো। আমরা পিছপা হবো না। বলেছেন নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ‘মিত্ররা অভূতপূর্ব সামরিক সহায়তা দিয়েছে এবং আমি আশা করি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও অ-প্রাণঘাতী সমর্থন বাড়াতে সম্মত হবেন।’স্টলটেনবার্গ বলেছিলেন যে ৩০ জাতির নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা জ্বালানি, জেনারেটর, চিকিৎসা সরবরাহ, শীতকালীন সরঞ্জাম এবং ড্রোন জ্যামিং ডিভাইস সরবরাহ করছে। তবে শীতকাল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি প্রয়োজন হবে। বিশেষত রাশিয়া ইউক্রেনের শক্তি অবকাঠামোতে আক্রমণ করার কারণে।
তিনি বলেন, ‘বুখারেস্টে আমাদের বৈঠকে আমি আরও কিছু করার জন্য ডাকব।’ ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমরা ইউক্রেনকে সোভিয়েত যুগের সরঞ্জাম থেকে আধুনিক ন্যাটোর মান, মতবাদ এবং প্রশিক্ষণে রূপান্তর করতে সহায়তা করব।’
স্টলটেনবার্গ বলেছিলেন যে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা তার দেশের সবচেয়ে চাপের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করতে মন্ত্রীদের সঙ্গে যোগ দেবেন, তবে ন্যাটো কী ধরনের দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা প্রদান করতে পারে। ন্যাটোর শীর্ষ বেসামরিক কর্মকর্তা বলেছেন যে সহায়তা ইউক্রেনকে একদিন জোটে যোগদানের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
বুখারেস্টে ২৯ ও ৩০ নভেম্বরের বৈঠকটি ন্যাটো প্রতিশ্রুতি দেয়ার প্রায় ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে যে ইউক্রেন এবং জর্জিয়া একদিন এই সংস্থার সদস্য হবে। আর এই অঙ্গীকারটি রাশিয়াকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছিল।
বসনিয়া, জর্জিয়া এবং মলদোভার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন - তিনটি অংশীদার যে ন্যাটো বলছে রাশিয়ার চাপ বাড়ছে৷
স্টলটেনবার্গ বলেন, 'বৈঠকটি দেখতে পাবে ন্যাটো `তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে এবং তাদের আত্মরক্ষার ক্ষমতা জোরদার করতে সাহায্য করার জন্য আরও পদক্ষেপ নেবে।‘
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১০ মাস আগে ন্যাটো প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছে ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করেছে। কিন্তু একটি বড় পারমাণবিক শক্তির সঙ্গে বৃহত্তর যুদ্ধে জড়ানো এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে চেষ্টা করেছে ন্যাটো। তবে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যেতে ইউক্রেনের ওপর কোন চাপ দেননি স্টলটেনবার্গ। প্রকৃতপক্ষে ন্যাটো এবং ইউরোপীয় কূটনীতিকরা বলেছেন যে পুতিন আলোচনার টেবিলে আসতে ইচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ যুদ্ধই আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়।’ তবে আলোচনার টেবিলে কী হবে তা নির্ভর করে যুদ্ধক্ষেত্রে কী ঘটবে তার ওপর।
অতএব, শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনা বাড়ানোর সর্বোত্তম উপায় হলো ইউক্রেনকে সহায়তা করা।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বিলম্ব: মন্ত্রী
রুশ রাষ্ট্রদূত আশা করছেন শিগগিরই ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ হবে: তথ্যমন্ত্রী
ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকটের আশঙ্কা করছেন না প্রধানমন্ত্রী
দেশে ভোগ্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘ভোগ্যপণ্য নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকেও (পণ্য) আমদানি শুরু করেছি।’শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের (স্বাচিপ) পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যদিও (রাশিয়ার ওপর) নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের সমস্যা রয়েছে, সরকার একটি বিকল্প (পরিশোধ) ব্যবস্থার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো পর্যাপ্ত রিজার্ভ এখনও বাংলাদেশের কাছে রয়েছে।
রিজার্ভ ইস্যুতে সরকারের সমালোচকদের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন সবাই রিজার্ভ ও অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের সময় রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়, যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কিছু বেশি।
তিনি বলেন যে মহামারি মোকাবিলায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন, টেস্টিং কিট ও অন্যান্য সম্পর্কিত উপকরণ সংগ্রহ করতে রিজার্ভ থেকে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পর সরকারকে এখন উচ্চমূল্যে ভোজ্যতেল, গম ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্য আমদানি করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (সরকার) ভোগ্যপণ্য নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছেন এবং জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই রিজার্ভ কমেছে।
তিনি আরও বলেন যে এখন একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে ব্যাংকে টাকা নেই এবং গ্রাহকরা তাদের আমানত ফেরত পাবেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই গুজবের কারণে অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে রেখে দিচ্ছেন। ঘরে টাকা রাখলে চোরের জন্য সুযোগ তৈরি হয়, তাই না?... এখন এটা মালিকদের ব্যাপার যে তারা এটা ব্যাংকে রাখবে নাকি চোরদের হাতে তুলে দেবে।’
আরও পড়ুন: ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বাড়িতে রাখলে চোরেরা উৎসাহিত হবে: প্রধানমন্ত্রী
শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর অনুষ্ঠিত হবে: শাহরিয়ার আলম