রাশিয়া
রাশিয়া-ক্রোয়েশিয়া সফর: দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান
রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছয়দিনের সফর শেষে শনিবার (১২ এপ্রিল) দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি।
সফরকালে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর প্রধান, ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টারসহ উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ক্রোয়েশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে তার।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এমন তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ৭ এপ্রিল রাশিয়ার ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার জেনারেল এ ফোমিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সেনাপ্রধান।
এ সময়ে তারা দুই দেশের সেনাবাহিনীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়, প্রশিক্ষণ সহায়তা, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন ও পারস্পরিক আস্থা সৃষ্টি, রাশিয়াতে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, উচ্চশিক্ষা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা এবং যৌথ প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন।
রাশিয়ান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওলেগ সালিইউকভের সঙ্গে তিনি দেখা করেন ৮ এপ্রিল। দুদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি, প্রশিক্ষণ সহায়তা, বিশেষ করে সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রশিক্ষনার্থী বিনিময় এবং যৌথ প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়াদিসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
আরও পড়ুন: সরকারি সফরে রাশিয়া গেলেন সেনাপ্রধান
এছাড়াও রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা রোসাটামের মহাপরিচালকের সাথে রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থার কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ব্যবস্থাকরণের ব্যাপারে আলোচনা করেন তারা।
গত ১০ এপ্রিল ক্রোয়েশিয়া সফরকালে সেনাবাহিনী প্রধান ক্রোয়েশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল তোহিমির কুন্দিদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। এ সময়ে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপনের সম্ভাব্য সুযোগ, যৌথ সামরিক মহড়া এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
গত ৬ এপ্রিল সরকারি সফরে রাশিয়া এবং পরবর্তীতে গত ১০ এপ্রিল ক্রোয়েশিয়া গমন করেছিলেন ওয়াকার-উজ-জামান।
১ দিন আগে
সরকারি সফরে রাশিয়া গেলেন সেনাপ্রধান
ঢাকাসরকারি সফরে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
রবিবার(৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
রাশিয়া সফর শেষে আগামী ১০ এপ্রিল ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সফরকালে তিনি উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং প্রতিরক্ষা ও সংশ্লিষ্ট খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে মতবিনিময় করবেন।
এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা ও অস্ত্র তৈরির কারখানা পরিদর্শন করবেন।
দুদেশ সফর শেষে আগামী ১২ এপ্রিল তিনি দেশে ফিরবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
৭ দিন আগে
রাশিয়া ও সৌদি আরব থেকে ৭০ হাজার টন সার কিনছে সরকার
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়া ও সৌদি আরব থেকে ৭০ হাজার টন সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৪১৮ কোটি ৩৫ লাখ ১৪ হাজার ২০০ টাকা। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি সার এবং সৌদি আরব থেকে ৩০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে দুটি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মা আদেন সৌদি আরব ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় চতুর্থ লটের ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। সৌদি আরবের মা আদেন থেকে প্রতি টন সার ৬২৭.৫০ ডলারে কেনা হবে।
এছাড়া রাশিয়ার বিদেশি অর্থনৈতিক করপোরেশন (প্রোডিন্টর্গ) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় নবম লটের ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
রাশিয়র প্রোডিন্টর্গ থেকে আনা প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৩০৬.৩৭ ডলার। এতে মোট খরচ হবে ১১২ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার ২০০ টাকা।
১৭ দিন আগে
পুতিন কি রাজি হবেন এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে?
যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন সম্মতি দেওয়ার পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কী যুদ্ধবিরতিতে সায় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির সুযোগটি কাজে লাগাবেন, নাকি প্রত্যাখ্যান করবেন?
সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এক মাসের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউক্রেন। এরপরে রাশিয়াকেও একই প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে জানিয়েছেন, শিগগিরই রাশিয়া-ইউক্রেনকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে ইউক্রেন এ প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে উল্লেখ করে রুবিও বলেন, যদি রাশিয়াও শান্তির হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে এতদিনের চলমান যুদ্ধ বন্ধ হতে খুব বেশি দেরি নেই। কিন্তু রাশিয়া যদি এ প্রস্তাব মেনে না নেয়, তাহলে শান্তি আলোচনায় অনিশ্চয়তা দেখা দেবে বলে মত দেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুদ্ধ বিরতিতে রাশিয়ার রাজি হওয়া না-হওয়া বহুমুখী হিসাব-নিকাশের ওপর নির্ভর করছে।
চলতি বছর জানুয়ারি অবধি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়ে এসেছেন, কোনো ধরনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার আগ্রহ তার নেই। যদি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতেই হয়, সেটি হতে হবে স্থায়ী সমাধান।
বর্তমানে যুদ্ধে অনেকটাই কোণঠাসা ইউক্রেন, রাশিয়ার সেনারা ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া পুতিন বারংবার বলেছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পাবেন। এই পরিস্তিতিতে পুতিন কি ট্রাম্পের মন রাখবেন, নাকি যুদ্ধ চালিয়ে ইউক্রেনে জয়ের পথেই হাঁটবেন তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
মূলত, জানুয়ারির ২০ তারিখ ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেয়ার পর পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। বিশেষ করে ১২ ফেব্রুয়ারি পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের একান্ত ফোনালাপ এবং এরপর একের পর এক রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিনিদের বৈঠকই চলমান যুদ্ধের আশু সুরাহার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন কূটনীতিবিদরা।
তবে রাশিয়ার পদক্ষেপ এখনও স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না বলে মনে করেন তারা। সৌদিতে বৈঠকের পর বেশ কৌশলের সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত না জেনে কোনো মন্তব্য জানানো হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না বলেই রাশিয়া এমন কৌশলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
রুশ-মার্কিনিদের সাপে-নেউলের সম্পর্কের বাইরে গিয়ে ট্রাম্প-পুতিন সখ্য কিন্তু বিশ্ব পাড়ায় মোটেই অজানা নয়। তবে এই সখ্যই সব নয়: এর বাইরে আছে ইউক্রেনের খনিজের প্রতি ট্রাম্পের চোখ আর কিয়েভের ভূমির ওপর পুতিনের লোভ।
শেষ কদিনের যুদ্ধে ভালোই এগিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর কুরুস্কের বেশিরভাগ এলাকা এখন রাশিয়ার দখলে। দর কষাকষিতে কুরুস্ককে নিজেদের হাতে রাখতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে দিনদিন তা কঠিন হয়ে উঠছে তার সৈন্যবাহিনীর জন্য।
আবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভেন্স এবং খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডা এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করার অভিযোগ নিয়ে আমেরিকা ত্যাগের মতো ঘটনা এতদিন জেলেনস্কিকে ভালোই ভুগিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, শান্তি চুক্তির প্রতি যতদিন না আগ্রহ দেখাবে ইউক্রেন, ততদিন বন্ধ থাকবে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা। নিজের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিতে হচ্ছে জেলেনস্কির।
কিন্তু পুতিন কেন আপস করবে? বাইডেন প্রশাসনের সময়ে হাজারখানেক নিষেধাজ্ঞার ভারেও নতজানু না হওয়া পুতিন কেন এত সহজে রাজি হবে যুদ্ধবিরতিতে?
এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি এস পেশকভের সাক্ষাৎকারে। পেশকভ জানিয়েছেন, জেদ্দার আলোচনার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ও পর্যবেক্ষণ করছে মস্কো। এখনি হলফ করে কিছু বলা না গেলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের আরেক দফা ফোনালাপের পর রাশিয়া নিজের সিদ্ধান্ত জানাতে পারবে।
প্রথমবার ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপে রাশিয়ার ইতোমধ্যে দখলকৃত ইউক্রেনের ভূমি নিয়ে ফয়সালা, কোনোভাবেই ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান করতে না দেওয়ার ওয়াদা এবং পূর্ব-মধ্য ইউরোপে ন্যাটোর হম্বিতম্বি কমিয়ে আনার ব্যাপারে পুতিন জোরালো দাবি তুলেছেন বলে জানা যায়।
চলতি সপ্তাহেই ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আবারও পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করবেন তিনি। বার্তাসংস্থা এপির নিশ্চিত করা এই তথ্য থেকেই চূড়ান্ত দর কষাকষির আভাস পাচ্ছেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা।
এর আগে ট্রাম্প বেশ কয়েকবার তার বক্তব্যে আভাস দিয়েছেন, এই চুক্তিতে ইউক্রেনকে ছাড় দিতে হবে। এতদিন ইউক্রেন ছাড় দিতে রাজি না থাকলেও এবার বাধ্য হয়েই আপসের পথে হাঁটতে হতে পারে দেশটি।
রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিয়া গ্রাশ্চিনেকভ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সাদা চোখে এই চুক্তিতে কারও বিজয় হয়নি মনে হলেও রাশিয়া কৌশলগত বিজয় নিশ্চিত করেই চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মতি দেবে।’
রাশিয়া কৌশলগত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ কথা উঠে এসেছে মস্কোর সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনেও। বলা হয়েছে, রুশ প্রতিনিধিরা জেদ্দায় না থাকলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান জন র্যাটক্লিফ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন রুশ প্রশাসনের সঙ্গে।
উপরন্তু ট্রাম্পের প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ গত মাসেও রাশিয়ায় পুতিনের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরেছেন এবং আগামীতেও তার রাশিয়া সফরের সম্ভাবনা রয়েছে।
এখানে একটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো তা হলো, এই পুরো আলোচনায় ইউরোপকে তোয়াক্কাই করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় ইতোমধ্যে দুই ভূখণ্ডের সম্পর্ক অনেকটাই শীতল। ন্যাটো নিয়েও ট্রাম্প খুশি না; শপথ নিয়েই দাবি জানিয়েছেন ন্যাটোর বাজেট বাড়ানোর। আবার ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও তার উপদেষ্টা ইলন মাস্কও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাটো থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ওভালকাণ্ড: পুতিনের পৌষমাস, জেলেনস্কির সর্বনাশ!
এদিকে ডেনমার্কের থেকে গ্রিনল্যান্ড আদায় চেষ্টার ইস্যুতেও ইউরোপের সঙ্গে কয়েক দফা মন কষাকষি হয়েছে ট্রাম্পের। সব মিলিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার ঐতিহাসিক সম্পর্ককে ভেঙে রাশিয়ামুখী হওয়াকে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কংগ্রেস সদস্য ভালো চোখে না দেখলেও, এটাই এখন বাস্তব।
এই বাস্তবতার ভিতকে পুঁজি করেই রুশ কূটনৈতিক বিশ্লেষক স্যামুয়েল শ্যারাপ বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে বর্তমানে মস্কোর সম্পর্ক যেকোনো সময়ের তুলনায় ভালো। ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যকার উষ্ণতার বিচার-বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায়, যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে তা মস্কো মেনে নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
শুরুতে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দিয়ে যুদ্ধ বন্ধের পথ রচিত হলেও পরবর্তীতে হয়তো এই এক মাসের যুদ্ধবিরতিই স্থায়ী যুদ্ধ বন্ধের সূচনা করবে এবং তিন বছর ধরে চলা এই সংঘাতের অবসান হবে বলে মত আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।
৩১ দিন আগে
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: ফের মার্কিন সামরিক সহায়তা পাচ্ছে ইউক্রেন
ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইউক্রেন সম্মত হওয়ায় পরেই এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এমন খবর দিয়েছে।
বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিয়েভ সম্মত হয়েছে। একই প্রস্তাব মস্কোকেও দেওয়া হবে।
রুবিও বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে। এবার মস্কোর সিদ্ধান্ত জানানোর পালা। মস্কো সম্মত না হলে তারা শান্তির পথে বড় একটি প্রতিবন্ধকতা হবে।’এ বিষয়ে ট্রাস্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ জানান, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় বসতে ট্রাম্পের সঙ্গে কিয়েভ একমত বলে নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতেও আলোচনা শুরু হয়েছে।’
এছাড়া ইউক্রেনকে দেওয়া বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়ায় ট্রাম্প সম্মতি দিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের বৈঠক
মঙ্গলবারের এই বৈঠক কিছুদিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সম্পর্কের তিক্ততা কিছুটা হলেও প্রশমিত করেছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডায় জড়ান ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওভাল অফিসের একটি বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প।
চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে জেদ্দার এই বৈঠক ইউক্রেনের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জেদ্দার বৈঠক সম্পর্কে হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটি চুক্তি চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে।’
যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেন সম্মত হওয়ায় তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন সম্মত হয়েছে, এটা ভালো।’ তিনি এ বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান।
এদিকে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে জেলেনস্কি জানান, ‘আমাদের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট। ইউক্রেন দীর্ঘমেয়াদে শান্তি চায়। তবে সেই সঙ্গে নিরাপত্তাও চান ইউক্রেনীয়রা, যেন যুদ্ধ আবার ফিরে না আসে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
যুক্ররাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানান, ‘আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফেরাতে একই লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।’
তবে এই বৈঠক বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আগেই জানিয়েছেন, ‘তারা সাময়িক কোনো যুদ্ধবিরতি চান না। বরং তারা স্থায়ী শান্তি চুক্তি চান।’
এছাড়া ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া ও ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল তারা দখলে নিয়েছে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র কোনো ছাড় দিয়ে তারা কোনো চুক্তি করবে না বলেও জানিয়েছে মস্কো। ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ ইউক্রেনের ভূখণ্ডের এক–পঞ্চমাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে ক্রেমলিন রাজি আছে বলেও জানিয়েছে রুশ প্রশাসন।
৩২ দিন আগে
ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা রাশিয়ার
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, রাতভর দুই শতাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।-খবর এনডিটিভির
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটিই ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা।’
এই হামলাকে ‘আকাশ সন্ত্রাস’ আখ্যা দিয়ে মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার তৃতীয়বার্ষিকীর রাতে ২৬৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।’
ইউক্রেনের শহর ও গ্রামগুলোতে ইরানি ড্রোন হামলা শুরু করার পর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় আঘাত বলে জানান জেলেনস্কি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে ইউক্রেন: ট্রাম্প
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ‘১৩৮ বিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। আর ১১৯টি রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এ সময়ে রাশিয়া তিনটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও নিক্ষেপ করেছে। এতে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে গেল কয়েক মাস ধরে দেশটিতে সমন্বিত ড্রোন হামলা চালাচ্ছে মস্কো। জেলেনস্কি বলেন, ‘গেল সপ্তাহে প্রায় এক হাজার ১৫০টি ড্রোন, এক হাজার ৪০০ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় সক্ষম বোমা ও বিভিন্ন ধরনের ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।’
এ সময়ে ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। ন্যায় ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
৪৯ দিন আগে
মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
ফোনালাপ পর্ব শেষে এবার মুখোমুখি বসতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ায় তার সমকক্ষ ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বের আলোচিত এই দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে গেল তিন বছর ধরে চলা মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। পুতিন-ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠকে শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ নয়; বৈশ্বিক নানা বিষয়ে বৃহত্তর পরিসরে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
সের্গেই রিয়াবকভ জানান, ‘এই বৈঠক দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ। তবে বৈঠক আয়োজন একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-ট্রুডোর ফোনালাপ
এ সময় বৈঠকের প্রস্তুতি বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশ দুটির রাষ্ট্রদূতদের সাক্ষাৎ হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। এর আগে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে একমত হওয়ার কথা জানান ট্রাম্প। তাদের দীর্ঘ ফোনালাপের বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় তখন। ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা করতে পুতিন ও আমি একমত।’
ওভাল অফিসের বৈঠকের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তিনি ও রুশ প্রেসিডেন্ট একমত হয়েছেন, তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক দল অবিলম্বে আলোচনা শুরু করবে এবং আলোচনার জন্য একে অপরকে নিজেদের রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানাবে।’
এরপর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদির দিরিয়াহ প্রাসাদে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-জেলেনস্কি দ্বন্দ্বে
তবে সেই বৈঠকে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না জানানোতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইউক্রেনের প্রসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিয়েভকে ছাড়া করা বৈঠকের কোনো সিদ্ধান্ত মেনে না নেওয়ার কথাও সুস্পষ্ট করে জানান দেন তিনি।
এছাড়াও আলোচনায় ইউরোপকে অর্ন্তভুক্ত না করায় তাদের পাশ কাটিয়ে শান্তি চুক্তির আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইউরোপীয় নেতারা।
৪৯ দিন আগে
ইউক্রেনকে হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়তে হবে: হেগসেথ
রাশিয়ার কাছে হারানো সব ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ত্যাগ করে শান্তি চুক্তি করতে ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এ সময় ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্যপদের দাবিও বাস্তসসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ন্যাটো সফরে হেগসেথ এসব কথা বলেন। এর আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া বাস্তবসম্মত হবে। ইউক্রেনের হারানো সব ভূখণ্ড ফিরে পাওয়াটাও অসম্ভব।’
ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন।’ ক্রেমলিন ও কিয়েভ থেকেও ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে হেগসেথ বলেন, ‘যুদ্ধ করতে হলে কিয়েভকে অবশ্যই মস্কোর পরিকল্পনা নিয়েও ভাবতে হবে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
তিনি জানান, ‘মস্কো দাবি করেছে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়াও ২০২২ সালে ইউক্রেনের যে ৪টি অঞ্চল নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করেছে, রাশিয়াকে সেখান থেকে তাদের সেনাপ্রত্যাহার করে নিতে হবে। ইউক্রেন এই শর্ত মানলে তারা ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করবে।’
হেগসেথ আরও জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও সামরিক সাহায্য নিশ্চিত করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এছাড়াও সেখানে একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়ন করার কথাও বলেছে ট্রাম্প।’
তবে ইউক্রেনে নিযুক্ত ওই বাহিনীতে থাকবে না যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সেনা। এছাড়াও রাশিয়া আক্রমণের শিকার হলে ন্যাটোর আর্টিকেল ৫ এর আওতায় ওই শান্তিরক্ষী বাহিনী কোনো সাহায্য পাবে না বলে জানিয়েছেন এই রিপাবলিকান নেতা। উল্লেখ্য, ন্যাটোর আর্টিকেল-৫ অনুসারে, কোনো সদস্যরাষ্ট্র আক্রান্ত হলে সম্মিলিতভাবে অন্যরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এর আগে, ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও পুনরায় রাশিয়ার আগ্রাসনের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কা করছে কিয়েভ।
এ কারণে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী সামরিক সহায়তা আশা করছে তারা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ন্যাটোর সদস্যপদ কিংবা দেশটিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়ন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে ইউক্রেন: ট্রাম্প
রাশিয়া ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ট্রাম্প ও হেগসেথের বক্তব্যের পর ইউক্রেনের দাবি কতটুকু গুরুত্ব পাবে, মার্কিন প্রশাসনের কাছে তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে রাশিয়া। মস্কোর ভাষায় যা ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’। এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূমি দখল করে নিয়েছে রাশিয়া।
৫৯ দিন আগে
রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে ইউক্রেন: ট্রাম্প
ইউক্রেন ‘কোনো এক সময় রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান তৎপরতার মাঝেই এমন বক্তব্য দিলেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রিপাবলিকান-সমর্থিত ফক্স নিউজে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা একটি চুক্তি করতে পারে, আবার না-ও করতে পারে। কোনো এক সময় তারা রাশিয়ান হয়ে যেতে পারেন, আবার না-ও পারেন।’
এ সময় তিনি ইউক্রেনকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিনিময়ে মুনাফা অর্জনের ওপর জোর দেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সেখানে যে পরিমান অর্থ খরচ করেছি, সেই সমমূল্যের বিরল খনিজসম্পদ চাই।’ তিনি আশা করেন ইউক্রেনও এই চুক্তিতে সম্মত হবেন।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানিয়েছেন, ‘তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’ বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেতে চুক্তির আলোচনায় প্রস্তুত কিয়েভ।
তবে আন্দ্রে জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও পুনরায় রাশিয়ার আগ্রাসনের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কা করছে কিয়েভ। এ কারণে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী সামরিক সহায়তা আশা করছে তারা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ন্যাটোর সদস্যপদ কিংবা দেশটিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়ন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক চলতি সপ্তাহে
রাশিয়া ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নেয় ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত রবিবার নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এই ফোনালাপের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
এ ছাড়াও চলতি সপ্তাহে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ।
৬০ দিন আগে
মার্কিন শিক্ষককে ছেড়ে দিল রাশিয়া
মার্কিন শিক্ষক মার্ক ফোজেলকে ছেড়ে দিয়েছে রাশিয়া। তিনি গেল এক বছর তিন মাস ধরে রাশিয়ার কারাগারে বন্দি ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, তাকে ভুলভাবে আটক করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক আলজাজিরার খবরে বলা হয়, ২০২১ সালের আগস্টে রাশিয়ায় আটক করা হয়েছে ৪৩ বছর বয়সী ফোজেলকে। পরে ১৭ গ্রাম ঔষধি গাঁজা বহনের দায়ে ১৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ বলেন, তাকে ফেরত আনার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আলোচনা করেছেন। তবে কীসের বিনিময়ে এই শিক্ষককে ফেরত দিচ্ছে রাশিয়া তা উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ: জিম্মিদের ফেরত দিচ্ছে না হামাস
তিনি বলেন, ‘রুশরা আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তা বলে দিচ্ছে ইউক্রেনে প্রাণঘাতী হামলা বন্ধে আমরা সঠিক পথে আছি। আজ রাতের মধ্যে মার্ক ফোজেল আমেরিকার মাটিতে থাকবেন এবং তার পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবেন।
নিজের নির্বাচনী প্রচারে প্রেসিডেন্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার করেছিলেন ট্রাম্প। এই যুদ্ধ এখন চার বছরে পা রাখতে যাচ্ছ। কিন্তু এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে ট্রাম্প কী পরিকল্পনা নিয়েছেন, তা এখনো কারও কাছে স্পষ্ট না।
৬০ দিন আগে