শুল্ক
আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেট সীমান্ত দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
কাস্টমস ডিউটি ও আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে তারা আমদানি বন্ধ থেক রেখেছেন।
সিলেটের বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) ও চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়। ফলে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় অচল হয়ে পড়েছে স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরে নেই নিত্যদিনকার ব্যস্ততা। ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাকই বাংলাদেশে আসছে না। ফলে স্থবির হয়ে আছে সিলেটের প্রধান এই স্থলবন্দর।
তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির উপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে দুই ডলার বৃদ্ধি করে।
এই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই সিলেটের সবকটি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনপাথর পাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।শুল্ক বাড়ানো নিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্থলবন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমদানিকারকদের বাদানুবাদ চলছে।
ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানালেও কাস্টমরস কর্মকর্তারা তাতে রাজি হনননি। আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় আমদানি বন্ধ তরে দেন তারা।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে দিন রাত পাথর উত্তোলন, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা
সুনামগঞ্জের ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক সেলিম চৌধুরী বলেন, এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ। তার ওপর টন প্রতি ২ ডলার করে ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসম্যান্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়েছে। এ কারণে ট্রাক প্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমরা বুধবার থেকে সিলেট বিভাগের সব শুল্ক স্টেশন দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বোল্ডার ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি বন্ধ থাকবে।
তবে ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়নি। শুল্কও আমরা বাড়াইনি। এনবিআর থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগের ৮৪ টাকার পরিবর্তে এখন ডলারের দাম ১০৯ টাকা। ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনার আলোকেই মূলত অ্যাসেসম্যান্ট ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে। তবে, আমদানিকরা চাইলে এ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরও ১২টি শুল্কস্টেশন রয়েছে।
সেগুলো হলো কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাও এবং ছাতকের ইছামতি ও চেলা স্টেশন। এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি হয়।
আরও পড়ুন: পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা: সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট শুরু
পাথর উত্তোলন: সিলেটে সোমবার থেকে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট
শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার আশ্বাস অস্ট্রেলিয়ার সহকারী বাণিজ্য মন্ত্রীর
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী সিনেটর টিম আয়ার্স।
অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার সহকারী মন্ত্রী শুক্রবার (২১ জুলাই) এ আশ্বাস দেন। সিডনির কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অফিসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এসময় হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দিকী কৃষি, তৈরি পোশাক শিল্প, রেমিট্যান্স, ক্ষুদ্র অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গত দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রশংসাও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ওআইসির পক্ষে গভীর নিন্দা জানালেন রাষ্ট্রদূত
দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কটন, উল, এলএনজি, অর্থনৈতিক প্রযুক্তি (Fintech), তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সেবা (ITES) এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুযোগ রয়েছে বলে আল্লামা সিদ্দিকী উল্লেখ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী মন্ত্রীকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ সফরের আহ্বানও জানান বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের দক্ষ ও টেকসই সরবরাহ ব্যবস্থা এবং উৎপাদনশীলতাসহ শ্রমিকদের কল্যাণার্থে এ খাতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয় তুলে ধরেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সংস্কারমূলক কর্মসূচি এবং অধিক গ্রিন ফ্যাক্টরি স্থাপন, নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিতকরণ, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বিজিএমইএ’র ইএসজি অর্জনের লক্ষ্যের বিষয়টিও তিনি অস্ট্রেলিয়ার সহকারী মন্ত্রীকে জানান।
সহকারী মন্ত্রী টিম আয়ার্স বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়ন এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা ও বাংলাদেশের উৎপাদকদের দৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক এ শিল্পকে বহুমুখীকরণে সহায়তা করছে।
টিম আয়ার্স বলেন, বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য এবং সরকারের সম্পৃক্ততার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো টেকসই শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রমিক সংগঠন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার উল ও কটন শিল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
২০২১ সালে বাংলাদেশের ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংক্রান্ত কাঠামোগত সমঝোতাকে (টিফা) পরবর্তী স্তরে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন টিম আয়ার্স।
বর্তমানে বিজিএমইএ’র ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অস্ট্রেলিয়া সফর করছে। গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় মেলবোর্নে তৈরি পোশাক শিল্পবিষয়ক সম্মেলনের আয়োজনও করা হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার সিডনিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যৌথ সভার আয়োজন করে। এতে সিডনিতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সক্ষমতাকে তুলে ধরা হয়। এ সভায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা, ব্রান্ড ও শিল্পপ্রতিনিধিসহ ৩৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সামরিক শাসক ও মৌলবাদীদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে আ. লীগ: জয়
বাজেটে বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণের জন্য বিদ্যমান শুল্ক দ্বিগুণ করার প্রস্তাব
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে আসা প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম সোনার জন্য শুল্ক কর দ্বিগুণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শুল্ক কর বর্তমান ২ হাজার টাকার পরিবর্তে ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব ঘোষণা করেন।
প্যাসেঞ্জার (ননট্যুরিস্ট) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধি ৩-এর উপ-বিধি (১০) অনুসারে, একজন যাত্রী বিদেশ থেকে আগমনের সময় ২৩৪ গ্রাম ওজনের সোনার বার বা সোনার টুকরা আমদানি করতে পারেন সমস্ত শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে।
দেশে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে অর্থমন্ত্রী এই সুবিধা কমিয়ে সোনার পরিমাণ ২৩৪ গ্রামের পরিবর্তে ১১৭ গ্রাম করার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, ‘এছাড়াও, আমি ঘোষণার অতিরিক্ত বা যাত্রী দ্বারা লুকিয়ে আনা যে কোনও পরিমাণ সোনা বাজেয়াপ্ত করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করে বিদ্যমান ব্যাগেজ নিয়ম সংশোধন করার প্রস্তাব করছি।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, লাগেজ নিয়মের অধীনে একজন যাত্রীকে বিদেশ থেকে আসার সময় প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম সোনার বার বা সোনার টুকরোগুলোর জন্য মোট দুই হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। আমি প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম সোনার বার বা সোনার টুকরার জন্য মোট শুল্ক-কর বাড়িয়ে টাকা ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।
আরও পড়ুন: সংসদে দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী
বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
বাজেট ২০২৩-২৪: ভ্রমণ কর বাড়বে
বাজেটে দাম বাড়ানো ও কমানো হয়েছে যেসব পণ্যের
প্রতি বছরের মতো এবারও বেশ কিছু পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বা শুল্ক পরিবর্তনের সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি সরাসরি এসব পণ্যের দামকে প্রভাবিত করে।
সাধারণত বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই এই পরিবর্তন কার্যকর হবে।
কর অব্যাহতি প্রত্যাহার এবং কিছু ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ কর এবং আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট আরোপের কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
পণ্যগুলো হলো- বলপয়েন্ট কলম, প্লাস্টিক পণ্য, খেজুর, গগলস ও সানগ্লাস, সব ধরনের টিস্যু, মোবাইল ফোন সেট, গ্যাস সিলিন্ডার, সিমেন্ট, ইট, সিগারেট, তরল নিকোটিন, বাসমতি চাল, কাজুবাদাম, আঠা, বিদেশি সফটওয়্যার, বিদেশি লিফট এবং এসকেলেটর, সাইকেল এবং বিদেশি স্যান্ডউইচ প্যানেল, জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মিষ্টি ও মিষ্টি সংক্রান্ত পণ্যের দাম কমতে পারে।
এছাড়াও, হাতে তৈরি বিস্কুট, কেক, শিশুর ডায়াপার ও প্যাড, দেশি এলইডি বাল্ব, সুইচ, মাংস এবং মাংস সংক্রান্ত পণ্য, ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ এবং অভিজাত বিদেশি কাপড়ের দামও কমতে পারে।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
'স্মার্ট বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১২,৫০০ ডলার, দারিদ্র্যসীমার ৩ শতাংশের কম হবে'
৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে এনবিআর
অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয় এমন ৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের জন্য কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
শনিবার বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে দেশে কোনও প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়নি। আমদানি নিরুৎসাহিত করতে কতটা শুল্ক বাড়ানো যায় তা মূল্যায়ন করছে বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন এবং এনবিআর।
আরও পড়ুন: বড়ধরনের কর ফাঁকির জন্য লোকসান গুনছে এনবিআর
বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, এসব পণ্য নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সরকার আমদানি নিরুৎসাহিত করতে গত মে মাসে ১৩৫টি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছিল।
তারপরও বাণিজ্য ঘাটতি খুব একটা কমেনি। ফলে অন্য কোনও পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো যেতে পারে কি না তা যাচাই করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশনকে অনুরোধ করে বলে জানায় সূত্রটি।
সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে কমিশন ৩৩০টি পণ্যের তালিকা তৈরি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয় তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠায়।
প্রধানত বিলাসিতা এবং কম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পণ্য তালিকায় প্রাধান্য পায়।
আরও পড়ুন: প্রথম ত্রৈমাসিকে রাজস্ব সংগ্রহ ১৩% কমেছে: এনবিআর
২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ট্যাক্স রিটার্ন ডকুমেন্ট লাগবে না: এনবিআর
পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক ‘সমন্বয়’ বিষয়ে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন(বিইআরসি)বৃহস্পতিবার(১৩ অক্টোবর) পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল ইউএনবিকে বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে নোটিশ জারি করা হবে।
এর আগে বিইআরসি প্রধান বলেছিলেন যে জনশুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার নিয়ম অনুসারে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর সর্বশেষ ১৮ মে গণশুনানি করেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড(বিপিডিবি)।
শুনানির প্রক্রিয়া শেষ করতে বিইআরসি স্টেকহোল্ডারদের প্রাসঙ্গিক নথি জমা দেয়ার সময় বাড়িয়েছে।
বিইআরসি’র সদস্য বলেছেন, সেই অতিরিক্ত সময় থেকে বিইআরসি ৯০ দিন গণনা করছে এবং ১৪ অক্টোবর নির্ধারিত সময় শেষ হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্কের কোনও সমন্বয় বিদ্যুতের বর্তমান খুচরা শুল্কের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে না।
কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর ওপর -এর প্রভাব পড়বে।এর মধ্যে যারা বিপিডিবি থেকে বিপুল পরিমাণে বিদ্যুৎ কিনে তাদের খুচরা গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে তারাও প্রভাবিত হবে। এর অর্থ হলো- যদি নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে কোনো ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয় আসে, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো পরবর্তীতে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াবে।
জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এমন সময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে যাচ্ছে যখন দেশে তীব্র বিদ্যুত সংকট চলছে এবং গ্রাহকরা প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন।
অন্যদিকে, আর্থিক সহায়তা হিসেবে ভর্তুকি পেতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকদের কাছে কম দামে বিক্রি করায় বিপিডিবি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এই পটভূমিতে, বিপিডিবি গণশুনানিতে পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর একটি প্রস্তাব পেশ করে যখন বিইআরসি-এর একটি প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল।
পাঁচ সদস্যের কমিশন যেকোনও প্রস্তাবের বিষয়ে গণশুনানির পর স্টেকহোল্ডারদের যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি শুনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
১৮ মে গণশুনানিতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থার প্রতিনিধিসহ ভোক্তা অধিকার গোষ্ঠীগুলো এই মুহূর্তে বিদ্যুতের শুল্কের যে কোনও বড় বৃদ্ধির তীব্র বিরোধিতা করেছে। কারণ মানুষ ইতোমধ্যেই উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে৷
তারা প্রস্তাবটিকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে বলেন, অদক্ষ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উচ্চ হারে বিদ্যুৎ কেনার ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক প্রথা মোকাবিলার মাধ্যমে বিপিডিবি তার রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি
বিপিডিবি কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে বলেছিলেন যে সংস্থাটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোতে ৮৮ হাজার ৯৯৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা (ইউনিট) সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৭৪ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা রাজস্বের প্রয়োজন হবে।
‘কিন্তু বিপিডিবি যদি তার বর্তমান বিদ্যুত পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা প্রতি ইউনিট দরে বিক্রি করে, তাহলে ২০২২ সালের ক্যালেন্ডার বছরে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির সম্মুখীন হবে। সরকারের ভর্তুকি ছাড়াই গণনা করার কথা উল্লেখ করে শুনানিতে
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিপিডিবিকে বিদ্যুতের দাম ৬৫ দশমিক সাত শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রতি ইউনিটের মূল্য ৫ দশমিক ১৭ টাকা থেকে ৮ দশমিক ৫৬ টাকা করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর বিদ্যুৎ বিভাগ তার ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি স্থগিত করেছে।
ফলে, যদিও দেশের স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় দুই হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট, এটি এখন প্রায় ১৪ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করে এবং প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াটের লোডশেডিং দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিং: ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না
কর্ম সপ্তাহের শুরুতে ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আরও খারাপ
চালের সরবরাহ বাড়াতে আমদানি শুল্ক আরও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত: খাদ্যমন্ত্রী
বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য আমদানি শুল্ক আরও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
রবিবার বিকালে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নওগাঁ জেলার ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এবং বিএডিসি ও বিসিআইসি সার ডিলারদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, চালের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়ে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ করে রবিবার রাতেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। প্রজ্ঞাপন জারির পর পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানি করা যাবে।
তিনি জানান, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ১ সেপ্টম্বর থেকে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু থাকবে। আগে যেখানে বছরে দেড় লাখ মেট্রিক টন ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ করা হতো। এখন সেখানে প্রতি মাসে এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ করা হবে। এতে বাজারে চালের দামে প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ যাঁরা ওএমএস চালের কিনবে এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাবে তাঁদের বাজার থেকে চাল কিনতে হবে না।
তিনি জানান, টিভি স্ক্রল অথবা নিউজে যদি দেখি কোনো ডিলার ওএসএম কিংবা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচারকালে ধরা পড়েছে কিংবা কোনো অনিয়ম করেছে তা হলে যেই হোক না কেন সে ছাড় পাবে না।
তিনি আরও জানান, সার ডিলাররা অবৈধভাবে সারের মজুত গড়ে তুললে কিংবা সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে সারের মজুত রয়েছে। সারের কোনো সংকট নেই। তারপরেও কিছু মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে সারের মজুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই গুজবে কান দিয়ে অনেক সার ব্যবসায়ী অবৈধভাবে সার মজুত করছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। এখন আর জরিমানা নয়। কোনো ডিলারের বিরুদ্ধে সারের অবৈধ মজুতের অভিযোগ পেলে তাঁদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।
তেলের দাম বাড়ার পর চালের দাম অযৌক্তিকভাবে কেজি প্রতি ছয় থেকে সাত টাকা বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, তেলের দাম ৪২ শতাংশ বাড়ানোর পর হিসেব করে দেখা গেছে এক কেজি চালের পরিবহন খরচ বড় জোর ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে। সেখানে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে কেজি প্রতি ছয় থেকে সাত টাকা বাড়ানো হয়েছে।যার কোনো যৌক্তিকতা নাই।
নওগাঁ জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। অন্যদের মধ্যে নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটোয়ারী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ৩৫ লাখ মেট্টিক টন খাদ্য মজুদের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
মদিনা সনদ আমাদের সহিষ্ণুতা শিক্ষা দেয়: খাদ্যমন্ত্রী
সৌরবিদ্যুতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমি: নসরুল হামিদ
জ্বালানি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন উৎসের সন্ধান এবং আধুনিক প্রযুক্তির আরও ভালো ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, দেশে সৌরবিদ্যুতের প্রসারের প্রধান প্রতিবন্ধকতা শুল্ক ও জমির প্রাপ্যতা।
বুধবার মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি।
আরও পড়ুন: দেশে পেট্রোলিয়াম জ্বালানির পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে: জ্বালানি বিভাগ
তিনি ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘সরকার ক্লিন এনার্জির উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি), জলবায়ু পরিবর্তন, স্থানীয় ও উপ-আঞ্চলিক বিদ্যুৎ ভাগাভাগি, বিদ্যুৎ আমদানি, পারমাণবিক জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সোলার হোম সিস্টেম, স্মার্ট গ্রিড, প্রাথমিক জ্বালানি, নেট মিটারিং সিস্টেম, বৈদ্যুতিক যান, লিথিয়াম ব্যাটারি, অনশোর অ্যান্ড অফশোর পাওয়ার সিস্টেম নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।
এ সময় জ্যেষ্ঠ জলবায়ু ও পরিবেশ উপদেষ্টা আনা ব্যালেন্স ও জলবায়ু পরিবর্তন নীতি ব্যবস্থাপক মারজান নুর উপস্থিত ছিলেন।
কর্মবিরতি: মঙ্গলবার বেনাপোলসহ ১১টি শুল্ক স্টেশনে পণ্য খালাস বন্ধ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০২০ সংশোধনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ সিএন্ডএফ ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। এতে মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেনাপোলসহ দেশের ১১টি শুল্ক স্টেশনে পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০২০ সংশোধনের দাবি একাধিকবার জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে না নেয়ায় বাধ্য এ বাণিজ্যিক সংগঠনটি কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে।
এর আগে গত রবিবার ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলন করে সংগঠনটির সভাপতি শামসুর রহমান ও মহাসচিব সুলতান হোসেন খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
কর্মবিরতি চলাকালীন দিনভর কাস্টমসে সব ধরনের পণ্য খালাস কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া প্রতিবাদ কর্মসূচি সফল করতে সিঅ্যান্ডএফ সদস্যদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ ও পথসভা চলবে।
এবিষয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ সিঅ্যান্ডএফ ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান জানান, ২০২০ লাইসেন্সিং বিধিমালা সংশোধনের জন্য কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অনুরোধ জানালেও তারা আমলে নেয়নি। অবশেষে অ্যাসোসিয়েশনের সবার মতামত নিয়ে যৌক্তিক দাবি আদায়ে এই কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা এ কর্মবিরতি পালন করবেন বলেও জানান তিনি।
কর্মবিরতির কারণে বন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্ব আহরণও বাধাগ্রস্ত হবে। একইসঙ্গে বন্দরে পণ্যজটের আশঙ্কাও রয়েছে। শুধু বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানি করা পণ্য থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়। তাই দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে অচলাবস্থা নিরসনের দাবি করেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে ২টি বিদেশি পিস্তল ও ৪টি ম্যাগজিন জব্দ, কাউন্সিলর আটক
বেনাপোলে ১৫ স্বর্ণের বার জব্দ, আটক ১
আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ১৩৫ পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ এনবিআরের
৩৫টি বিদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে এনবিআর।
এনবিআরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৩৫টি এইচএস কোডেড পণ্য যেমন বিদেশি ফল, ফুল, আসবাবপত্র ও প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এবং তা সোমবার থেকে কার্যকর হবে।
বহুল প্রত্যাশিত এই পদক্ষেপটি বিলাসজাত পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ হ্রাস করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: এ বছরও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হতে পারে এনবিআর
রাজস্ব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ফুল ও ফল চাষে ভালো করছে। অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক ফুল ও ফল চাষিদের ন্যায্যমূল্য পেতে সহায়তা করবে।
নতুন নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য:
ফুল ও ফুলজাত দ্রব্য: আমদানি করা তাজা ও শুকনো ফুল, অলঙ্কার তৈরির জন্য আমদানি করা ফুল, বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম ফুল এবং গাছের চারা বা শাখা।
ফল: টাটকা বা প্রক্রিয়াজাত আম, কলা, আঙ্গুর, ডুমুর, আনারস, অ্যাভোকাডো, পেয়ারা, ম্যাঙ্গোস্টিন বা বাঁধাকপি, লেবু, তরমুজ, বরই, এপ্রিকট, চেরি ফল, হিমায়িত বা প্রক্রিয়াজাত ফলের বীজ ও মিশ্র ফলের খাবার।
আসবাবপত্রের জন্য আমদানি করা বাঁশ, যন্ত্রাংশ, বেতের আসবাবপত্র এবং আসবাবপত্রের জন্য বিভিন্ন আমদানি করা উপকরণ। এছাড়া অফিস, রান্নাঘর, বেডরুমে ব্যবহৃত কাঠের আসবাবপত্র, প্লাস্টিকের আসবাবপত্র ও বিভিন্ন ধাতব আসবাবপত্র।
আরও পড়ুন: এনবিআরকে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর ভ্যাট কমিয়ে সর্বনিম্ন করার নির্দেশ মন্ত্রিসভার
প্রসাধনী পণ্যের মধ্যে রয়েছে সুগন্ধি, সৌন্দর্য ও মেকআপ প্রস্তুতি, টুথ ফ্লস, টুথ পাউডার, প্রিজারভেটিভ, শেভ প্রসাধনী ও চুলের প্রসাধনী ইত্যাদি।
বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে তিন হাজার ৪০৮টি পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রযোজ্য। এই পণ্যগুলোর ওপর সর্বনিম্ন তিন শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রযোজ্য।