শুল্ক
চাল আমদানিতে শুল্ক কমল
চাল আমদানির ওপর শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক হ্রাস এবং আগাম কর প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানো, দেশের আপামর জনগণের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং চালের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: দাম নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর চিন্তা করছে সরকার
রবিবার (২০ অক্টোবর) এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চালের ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, বিদ্যমান রেগুলেটরি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাল আমদানিতে শুল্ক-করাদি হ্রাস করার ফলে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের মূল্য ১৪ দশমিক ৪০ টাকা কমবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আমদানি শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক হ্রাস এবং আগাম কর প্রত্যাহারের ফলে বাজারে চালের সরবরাহ বাড়বে, দেশের আপামর জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং চালের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রথম চালানে ১২ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি
২ মাস আগে
দাম স্থিতিশীল রাখতে চিনির আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমলো ৫০ শতাংশ
দেশের বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে পরিশোধিত ও কাঁচা চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৫০ শতাংশ কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ভোক্তাদের জন্য চিনির দাম আরও সহনীয় করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায় এনবিআর।
এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, সম্প্রতি চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পেছনে বিভিন্ন বৈশ্বিক ও দেশীয় কারণ দায়ী। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বাংলাদেশি মুদ্রার উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়নের কারণে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। বেবি ফুডের মতো পণ্যও সাধারণ মানুষের কাছে ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও চলমান বন্যা পরিস্থিতি অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে, যা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর ও সচিব আমিনুল ৩ দিনের রিমান্ডে
রেগুলেটরি ডিউটি ১৫ শতাংশ কমানোর ফলে অপরিশোধিত চিনির শুল্ক এখন প্রতি কেজিতে ১১ টাকা ১৮ পয়সা এবং পরিশোধিত চিনির ওপর আমদানি পর্যায়ে ১৪ টাকা ২৬ পয়সা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
ভোক্তা পর্যায়ে চিনির দাম একই পরিমাণে কমবে বলে আশা করছে এনবিআর।
শুল্ক কমানো হলে অবৈধ চ্যানেলে চিনি চোরাচালান নিরুৎসাহিত হবে এবং বৈধ আমদানি বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেছে এনবিআর।
বাংলাদেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা ২ থেকে ২২ লাখ টন, যেখানে দেশের চাহিদার মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চিনি দিয়ে পূরণ করা হয়।
বর্তমানে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই), সিটি গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, আব্দুল মোনেম লিমিটেড ও দেশবন্ধু সুগার মিলস- এই পাঁচটি বেসরকারি চিনিকল দেশের বার্ষিক পরিশোধিত চিনির চাহিদার ৯৮ শতাংশের বেশি আমদানি করে। আর অপরিশোধিত চিনি বেশিরভাগই ব্রাজিল থেকে আসে।
আরও পড়ুন: রাজস্ব মামলার জট কমাতে জোরদার উদ্যোগ এনবিআরের
২ মাস আগে
দাম নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর চিন্তা করছে সরকার
দেশে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে চালের আমদানি শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে সরকার।
অর্থ, বাণিজ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বন্যায় ধান চাষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ সিদ্ধান্তের কথা ভাবা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ প্রধান কৃষি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে রংপুর, শেরপুর, লালমনিরহাট, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ বন্যার কবলে পড়েছে। এই অঞ্চলগুলো দেশের ধান উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ফলে স্থানীয় বাজারে চালের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তারা সংকটে পড়েছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের চালের দাম বেড়েছে ৮-১০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: চাল আমদানি নয়, ভবিষ্যতে আমরা রপ্তানি করব: খাদ্যমন্ত্রী
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ অবস্থায় সরকারের লক্ষ্য চাল আমদানি করে দাম নিয়ন্ত্রণ ও বাজার স্থিতিশীল করা। চালের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
বর্তমানে চাল আমদানিতে ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। এই শুল্ক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর যুগ্ম সচিব লুৎফর রহমান এনবিআরকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠান।
উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকদের প্রণোদনা দিতে চলতি বোরো মৌসুমে ৫ লাখ টন ধান ও ১ কোটি ৪৭ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩১ আগস্ট পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭০ টন ধান ও ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৪৯৭ টন চাল। বর্তমানে সরকারি গুদামে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪০ টন চাল ও ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯২৮ টন গম মজুদ রয়েছে।
তবে বন্যার পর উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ কারণে খাদ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য অধিদপ্তর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর এবং স্থানীয় প্রশাসন দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার নজরদারি বাড়িয়েছে। সুষ্ঠু বাজার পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি অবৈধ মজুতের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এরপরও খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, সম্প্রতি ১৪টি জেলায় বন্যায় আউশ, আমনের চারা এবং আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চালের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সরবরাহ কমে গেলে দাম আরও বাড়তে পারে। উপরন্তু, ভারতের গম রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গম আমদানির পরিমাণ কমে যাওয়া এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বৃদ্ধি শস্যের দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
এ প্রেক্ষাপটে চালের বাজার স্থিতিশীল করা এবং সরকারের মজুদ বাড়ানো অপরিহার্য। বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানিরও প্রয়োজন হতে পারে। এরই মধ্যে পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন পেয়েছে সরকার।
যদিও বর্তমানে স্থানীয় বাজারের তুলনায় বৈশ্বিক বাজারে চালের দাম বেশি, তবে বিদ্যমান চালের আমদানি শুল্ক ৬২.৫০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে কমানোর সিদ্ধান্তকে দাম স্থিতিশীল রাখতে একটি জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বর্তমানে চালের আমদানিতে ২৫ শতাংশ কাস্টমস শুল্ক, ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, ৫ শতাংশ অগ্রিম ট্যাক্স, ১ শতাংশ বীমা, ১ শতাংশ ল্যান্ডিং চার্জ এবং ০.৫ শতাংশ ডি এফ ভ্যাট প্রযোজ্য।
সম্প্রতি ভারত তাদের চাল রপ্তানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছে। বাংলাদেশ যদি তার আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনে, তাহলে ভারত থেকে চাল আমদানির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ সম্মিলিত শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, এই শুল্ক হ্রাস আমদানিকারকদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে উৎসাহিত করবে। সরকারি-বেসরকারি আমদানিতে বাসমতি ছাড়াই অন্যান্য সিদ্ধ চাল ও সুগন্ধি ছাড়াই আতপ চালের শুল্ক কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে অনুরোধ জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: শর্ত সাপেক্ষে ৮৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের
২ মাস আগে
সরকার প্রয়োজনে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানি করবে: খাদ্যমন্ত্রী
সরকার প্রয়োজনে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানি করবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, চালের বাজার ৯ মাস স্থির ছিল।
তিনি বলেন, করোনা অতিমারিতেও চালের দাম বাড়েনি। এখন বাড়ছে কেন? মিল মালিকদের প্রতি এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য সহনশীল রেখে মানুষের সেবা করার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
মন্ত্রী বলেন, ধান চালের মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করে কয়েক জেলার ব্যবসায়ীরা। আমরা তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মিল মালিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিবেক জাগ্রত করুন। বেপরোয়া না হয়ে মানব সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করুন।
তিনি বলেন, কৃষক ধানের দাম বেশি পেলে খুশি হতাম। এখন বেশি দামে ধান বিক্রি হলেও কৃষকের লাভ হচ্ছে না। সুবিধা নিচ্ছে মজুতদাররা।
তিনি আরও বলেন, চালের বস্তার দাম কত? তা মিল গেটেই লিখতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে উৎপাদনের তারিখও। নতুন আইন করা হয়েছে। দ্রুত কার্যকর হবে।
এ আইন কার্যকর হলে মিনিকেট নামের কোনো চাল থাকবে না।
আরও পড়ুন: না শোধরালে জেলে যেতে হবে, অবৈধ মজুতদারদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র এখনও চলছে: খাদ্যমন্ত্রী
১০ মাস আগে
আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিলেট সীমান্ত দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ
কাস্টমস ডিউটি ও আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে তারা আমদানি বন্ধ থেক রেখেছেন।
সিলেটের বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) ও চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়। ফলে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় অচল হয়ে পড়েছে স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরে নেই নিত্যদিনকার ব্যস্ততা। ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাকই বাংলাদেশে আসছে না। ফলে স্থবির হয়ে আছে সিলেটের প্রধান এই স্থলবন্দর।
তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির উপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে দুই ডলার বৃদ্ধি করে।
এই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই সিলেটের সবকটি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনপাথর পাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।শুল্ক বাড়ানো নিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্থলবন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমদানিকারকদের বাদানুবাদ চলছে।
ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানালেও কাস্টমরস কর্মকর্তারা তাতে রাজি হনননি। আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় আমদানি বন্ধ তরে দেন তারা।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে দিন রাত পাথর উত্তোলন, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা
সুনামগঞ্জের ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক সেলিম চৌধুরী বলেন, এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ। তার ওপর টন প্রতি ২ ডলার করে ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসম্যান্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়েছে। এ কারণে ট্রাক প্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমরা বুধবার থেকে সিলেট বিভাগের সব শুল্ক স্টেশন দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বোল্ডার ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি বন্ধ থাকবে।
তবে ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়নি। শুল্কও আমরা বাড়াইনি। এনবিআর থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগের ৮৪ টাকার পরিবর্তে এখন ডলারের দাম ১০৯ টাকা। ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনার আলোকেই মূলত অ্যাসেসম্যান্ট ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে। তবে, আমদানিকরা চাইলে এ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরও ১২টি শুল্কস্টেশন রয়েছে।
সেগুলো হলো কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাও এবং ছাতকের ইছামতি ও চেলা স্টেশন। এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি হয়।
আরও পড়ুন: পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা: সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট শুরু
পাথর উত্তোলন: সিলেটে সোমবার থেকে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট
১ বছর আগে
শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার আশ্বাস অস্ট্রেলিয়ার সহকারী বাণিজ্য মন্ত্রীর
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী সিনেটর টিম আয়ার্স।
অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার সহকারী মন্ত্রী শুক্রবার (২১ জুলাই) এ আশ্বাস দেন। সিডনির কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অফিসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এসময় হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দিকী কৃষি, তৈরি পোশাক শিল্প, রেমিট্যান্স, ক্ষুদ্র অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাসহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গত দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রশংসাও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ওআইসির পক্ষে গভীর নিন্দা জানালেন রাষ্ট্রদূত
দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কটন, উল, এলএনজি, অর্থনৈতিক প্রযুক্তি (Fintech), তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সেবা (ITES) এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুযোগ রয়েছে বলে আল্লামা সিদ্দিকী উল্লেখ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী মন্ত্রীকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ সফরের আহ্বানও জানান বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের দক্ষ ও টেকসই সরবরাহ ব্যবস্থা এবং উৎপাদনশীলতাসহ শ্রমিকদের কল্যাণার্থে এ খাতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয় তুলে ধরেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে গৃহীত সংস্কারমূলক কর্মসূচি এবং অধিক গ্রিন ফ্যাক্টরি স্থাপন, নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিতকরণ, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বিজিএমইএ’র ইএসজি অর্জনের লক্ষ্যের বিষয়টিও তিনি অস্ট্রেলিয়ার সহকারী মন্ত্রীকে জানান।
সহকারী মন্ত্রী টিম আয়ার্স বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়ন এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা ও বাংলাদেশের উৎপাদকদের দৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক এ শিল্পকে বহুমুখীকরণে সহায়তা করছে।
টিম আয়ার্স বলেন, বিদেশি অংশীদারদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য এবং সরকারের সম্পৃক্ততার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো টেকসই শ্রমিক ইউনিয়ন ও শ্রমিক সংগঠন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার উল ও কটন শিল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
২০২১ সালে বাংলাদেশের ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংক্রান্ত কাঠামোগত সমঝোতাকে (টিফা) পরবর্তী স্তরে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন টিম আয়ার্স।
বর্তমানে বিজিএমইএ’র ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অস্ট্রেলিয়া সফর করছে। গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় মেলবোর্নে তৈরি পোশাক শিল্পবিষয়ক সম্মেলনের আয়োজনও করা হয়।
এ ছাড়া শুক্রবার সিডনিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যৌথ সভার আয়োজন করে। এতে সিডনিতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সক্ষমতাকে তুলে ধরা হয়। এ সভায় অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা, ব্রান্ড ও শিল্পপ্রতিনিধিসহ ৩৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সামরিক শাসক ও মৌলবাদীদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে আ. লীগ: জয়
১ বছর আগে
বাজেটে বিদেশ থেকে আনা স্বর্ণের জন্য বিদ্যমান শুল্ক দ্বিগুণ করার প্রস্তাব
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে আসা প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম সোনার জন্য শুল্ক কর দ্বিগুণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শুল্ক কর বর্তমান ২ হাজার টাকার পরিবর্তে ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব ঘোষণা করেন।
প্যাসেঞ্জার (ননট্যুরিস্ট) ব্যাগেজ (আমদানি) বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধি ৩-এর উপ-বিধি (১০) অনুসারে, একজন যাত্রী বিদেশ থেকে আগমনের সময় ২৩৪ গ্রাম ওজনের সোনার বার বা সোনার টুকরা আমদানি করতে পারেন সমস্ত শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে।
দেশে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াতে অর্থমন্ত্রী এই সুবিধা কমিয়ে সোনার পরিমাণ ২৩৪ গ্রামের পরিবর্তে ১১৭ গ্রাম করার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, ‘এছাড়াও, আমি ঘোষণার অতিরিক্ত বা যাত্রী দ্বারা লুকিয়ে আনা যে কোনও পরিমাণ সোনা বাজেয়াপ্ত করার বিধান অন্তর্ভুক্ত করে বিদ্যমান ব্যাগেজ নিয়ম সংশোধন করার প্রস্তাব করছি।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, লাগেজ নিয়মের অধীনে একজন যাত্রীকে বিদেশ থেকে আসার সময় প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম সোনার বার বা সোনার টুকরোগুলোর জন্য মোট দুই হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। আমি প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম সোনার বার বা সোনার টুকরার জন্য মোট শুল্ক-কর বাড়িয়ে টাকা ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।
আরও পড়ুন: সংসদে দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী
বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
বাজেট ২০২৩-২৪: ভ্রমণ কর বাড়বে
১ বছর আগে
বাজেটে দাম বাড়ানো ও কমানো হয়েছে যেসব পণ্যের
প্রতি বছরের মতো এবারও বেশ কিছু পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বা শুল্ক পরিবর্তনের সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি সরাসরি এসব পণ্যের দামকে প্রভাবিত করে।
সাধারণত বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই এই পরিবর্তন কার্যকর হবে।
কর অব্যাহতি প্রত্যাহার এবং কিছু ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ কর এবং আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট আরোপের কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
পণ্যগুলো হলো- বলপয়েন্ট কলম, প্লাস্টিক পণ্য, খেজুর, গগলস ও সানগ্লাস, সব ধরনের টিস্যু, মোবাইল ফোন সেট, গ্যাস সিলিন্ডার, সিমেন্ট, ইট, সিগারেট, তরল নিকোটিন, বাসমতি চাল, কাজুবাদাম, আঠা, বিদেশি সফটওয়্যার, বিদেশি লিফট এবং এসকেলেটর, সাইকেল এবং বিদেশি স্যান্ডউইচ প্যানেল, জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মিষ্টি ও মিষ্টি সংক্রান্ত পণ্যের দাম কমতে পারে।
এছাড়াও, হাতে তৈরি বিস্কুট, কেক, শিশুর ডায়াপার ও প্যাড, দেশি এলইডি বাল্ব, সুইচ, মাংস এবং মাংস সংক্রান্ত পণ্য, ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ এবং অভিজাত বিদেশি কাপড়ের দামও কমতে পারে।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
'স্মার্ট বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১২,৫০০ ডলার, দারিদ্র্যসীমার ৩ শতাংশের কম হবে'
১ বছর আগে
৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে এনবিআর
অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয় এমন ৩৩০টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের জন্য কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
শনিবার বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে দেশে কোনও প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করা হয়নি। আমদানি নিরুৎসাহিত করতে কতটা শুল্ক বাড়ানো যায় তা মূল্যায়ন করছে বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশন এবং এনবিআর।
আরও পড়ুন: বড়ধরনের কর ফাঁকির জন্য লোকসান গুনছে এনবিআর
বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, এসব পণ্য নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সরকার আমদানি নিরুৎসাহিত করতে গত মে মাসে ১৩৫টি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছিল।
তারপরও বাণিজ্য ঘাটতি খুব একটা কমেনি। ফলে অন্য কোনও পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো যেতে পারে কি না তা যাচাই করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশনকে অনুরোধ করে বলে জানায় সূত্রটি।
সেই অনুরোধের প্রেক্ষিতে কমিশন ৩৩০টি পণ্যের তালিকা তৈরি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয় তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠায়।
প্রধানত বিলাসিতা এবং কম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পণ্য তালিকায় প্রাধান্য পায়।
আরও পড়ুন: প্রথম ত্রৈমাসিকে রাজস্ব সংগ্রহ ১৩% কমেছে: এনবিআর
২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ট্যাক্স রিটার্ন ডকুমেন্ট লাগবে না: এনবিআর
২ বছর আগে
পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক ‘সমন্বয়’ বিষয়ে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন(বিইআরসি)বৃহস্পতিবার(১৩ অক্টোবর) পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল ইউএনবিকে বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে নোটিশ জারি করা হবে।
এর আগে বিইআরসি প্রধান বলেছিলেন যে জনশুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার নিয়ম অনুসারে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর সর্বশেষ ১৮ মে গণশুনানি করেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড(বিপিডিবি)।
শুনানির প্রক্রিয়া শেষ করতে বিইআরসি স্টেকহোল্ডারদের প্রাসঙ্গিক নথি জমা দেয়ার সময় বাড়িয়েছে।
বিইআরসি’র সদস্য বলেছেন, সেই অতিরিক্ত সময় থেকে বিইআরসি ৯০ দিন গণনা করছে এবং ১৪ অক্টোবর নির্ধারিত সময় শেষ হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্কের কোনও সমন্বয় বিদ্যুতের বর্তমান খুচরা শুল্কের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে না।
কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর ওপর -এর প্রভাব পড়বে।এর মধ্যে যারা বিপিডিবি থেকে বিপুল পরিমাণে বিদ্যুৎ কিনে তাদের খুচরা গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে তারাও প্রভাবিত হবে। এর অর্থ হলো- যদি নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে কোনো ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয় আসে, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো পরবর্তীতে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াবে।
জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এমন সময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে যাচ্ছে যখন দেশে তীব্র বিদ্যুত সংকট চলছে এবং গ্রাহকরা প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন।
অন্যদিকে, আর্থিক সহায়তা হিসেবে ভর্তুকি পেতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকদের কাছে কম দামে বিক্রি করায় বিপিডিবি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এই পটভূমিতে, বিপিডিবি গণশুনানিতে পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর একটি প্রস্তাব পেশ করে যখন বিইআরসি-এর একটি প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল।
পাঁচ সদস্যের কমিশন যেকোনও প্রস্তাবের বিষয়ে গণশুনানির পর স্টেকহোল্ডারদের যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি শুনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
১৮ মে গণশুনানিতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থার প্রতিনিধিসহ ভোক্তা অধিকার গোষ্ঠীগুলো এই মুহূর্তে বিদ্যুতের শুল্কের যে কোনও বড় বৃদ্ধির তীব্র বিরোধিতা করেছে। কারণ মানুষ ইতোমধ্যেই উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে৷
তারা প্রস্তাবটিকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে বলেন, অদক্ষ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উচ্চ হারে বিদ্যুৎ কেনার ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক প্রথা মোকাবিলার মাধ্যমে বিপিডিবি তার রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি
বিপিডিবি কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে বলেছিলেন যে সংস্থাটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোতে ৮৮ হাজার ৯৯৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা (ইউনিট) সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৭৪ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা রাজস্বের প্রয়োজন হবে।
‘কিন্তু বিপিডিবি যদি তার বর্তমান বিদ্যুত পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা প্রতি ইউনিট দরে বিক্রি করে, তাহলে ২০২২ সালের ক্যালেন্ডার বছরে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির সম্মুখীন হবে। সরকারের ভর্তুকি ছাড়াই গণনা করার কথা উল্লেখ করে শুনানিতে
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিপিডিবিকে বিদ্যুতের দাম ৬৫ দশমিক সাত শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রতি ইউনিটের মূল্য ৫ দশমিক ১৭ টাকা থেকে ৮ দশমিক ৫৬ টাকা করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর বিদ্যুৎ বিভাগ তার ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি স্থগিত করেছে।
ফলে, যদিও দেশের স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় দুই হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট, এটি এখন প্রায় ১৪ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করে এবং প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াটের লোডশেডিং দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিং: ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না
কর্ম সপ্তাহের শুরুতে ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আরও খারাপ
২ বছর আগে