কাতার
কাতারের সঙ্গে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত ও জোরদার করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল (জেবিসি) প্রতিষ্ঠায় চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এ চুক্তি সই হয়। দুই দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (কিউসিসিআই)।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং কিউসিসিআই চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। মূলত বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে বাণিজ্য জোরদার করতে এই চুক্তি সই হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এই প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে জেবিসি প্রতিষ্ঠা দুই দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে। এ চুক্তির আওতায় কাতারের ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবে, তেমনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের পক্ষেও কাতারের রপ্তানি বাজারে প্রবেশ করা আরও সহজতর হবে। এছাড়া কাতার থেকে জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিও সহজ হবে। একইসঙ্গে জেবিসির মাধ্যমে কাতারের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এফবিসিসিআই ও কিউবিসিসিআইয়ের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও কাতারের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, সেবা ও অন্যান্য শিল্প খাতে বাণিজ্য কার্যক্রম জোরদারের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল।
এফবিসিসিআই ও কিউসিসিআই উভয়ই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও পরিষেবা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে উপকৃত হবে। পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসায়িক তথ্যের আদান-প্রদান, সংশ্লিষ্ট সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেওয়া, প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করাসহ অন্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে জেবিসি।
এছাড়া উভয় পক্ষই বাণিজ্য উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য যৌথ বৈঠক আয়োজন করতে পারবে। চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনে এফবিসিসিআই ও কিউসিসিআই সাব-কমিটি ও টাস্কফোর্স গঠন করতে পারবে।
৭ মাস আগে
দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, বোঝাপড়া জোরদারের লক্ষ্যে কাতারের আমিরের সদ্য সফর: ঢাকা
২৪ ঘণ্টার রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মঙ্গলবার বিকালে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
এই সফর বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে 'উল্লেখযোগ্য অবদান' রাখবে বলে আশা ঢাকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত কাতারের আমিরের এই সফর দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও বোঝাপড়া সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণে কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন কাতারের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান, কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির সদস্য।
সোমবার বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি আমিরকে স্বাগত জানান। এ সময় আরও ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বরাষ্ট্র, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, পররাষ্ট্র এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রায় ১৯ বছর পর এই শীর্ষ পর্যায়ের সফর অনুষ্ঠিত হয়।
সফরকালে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও কাতারের আমিরের নেতৃত্বে দুটি দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে। এছাড়াও সফর বিনিময় ও সব পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, জনশক্তি, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়েও মতবিনিময় করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে একটি উন্নত জ্ঞানভিত্তিক বহুমুখী সংস্কৃতির সমাজ হিসেবে কাতারের অবিশ্বাস্য অগ্রগতি ও রূপান্তর এবং আমিরের নেতৃত্বে মধ্যস্থতা ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে কাতারের ভূমিকার গভীর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্জনের প্রশংসা করেন কাতারের আমির। বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে প্রশংসা করে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
উভয় দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখায় কাতারের প্রবাসী কমিউনিটির প্রশংসা করেন তিনি।
জ্বালানি খাতে সমঝোতা ও সহযোগিতার বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে উভয় নেতা জানান, অদূর ভবিষ্যতে অংশীদারিত্ব পর্যায়ে এই সহযোগিতা জোরদার করতে একসঙ্গে কাজ করছে উভয় পক্ষ।
ওই দিনই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাতারের আমির। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফরকালে আমিরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং তার নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতার প্রশংসা করেন।
সাক্ষাতে দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
পরে আমির তার সম্মানে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও ছিলেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
৭ মাস আগে
কাতার আমিরের সফরে ৬ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা। সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ সফরে আসবেন তিনি। এ সফরে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ১১টি সহযোগিতার বিষয়ে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই হবে।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। চলতি বছর নতুন সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে এটিই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।’
এ সফরে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক নিয়ে যে ১১টি দ্বিপক্ষীয় দলিল সই হওয়ার কথা রয়েছে-
১. দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি
২. আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি
৩. সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি
৪. উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি
৫. দুই দেশের মধ্যকার দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি সংক্রান্ত চুক্তি
৬. যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি
৭. শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক
৮. বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
৯. উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
১০. যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
১১. কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র ছাড়াও ফিলিস্তিন-ইসরায়েলসহ বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে, যেখানে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই এই আলোচনা উঠতে পারে। গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। সবাই এটা চায়। আমরাও চাই।’
গত মাসে তুরস্কে আন্তালিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশ নেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের জন্য ইসরাইলকে জবাবদিহির আওতায় আনার উপরও জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে, যুদ্ধের পক্ষে নয়।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসবেন কাতারের আমির।
এক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমিরের দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে তাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
সফর উপলক্ষে ঢাকার কয়েকটি রাস্তায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
প্রায় ১৯ বছর পর বন্ধুপ্রতীম দেশ কাতার থেকে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী এমন উচ্চ পর্যায়ের সফর হচ্ছে।
এর আগে ২০০৫ সালের এপ্রিলে কাতারের তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি বাংলাদেশ সফর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এই সফর দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমিরকে গান স্যালুট ও আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন অভ্যর্থনা জানাবেন।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরকে তার কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানাবেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুজনের মধ্যে বৈঠকের পর আরও একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
সহযোগিতাবিষয়ক নথি সই হওয়ার পর দুই নেতা একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
পরিদর্শন বইয়ে সই শেষে মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গভবনে যাবেন আমির। সেখানে রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানীর একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হবে।
এদিন বিকাল ৩টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় পার্ক এবং মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন করবেন তিনি।
আমির যেখানে অবস্থান করছেন সেখানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন।
এদিনই সন্ধ্যা ৬টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশ ও কাতার জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায়।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি-৫) ফাঁকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতারের কাছে জ্বালানি বিশেষ করে এলএনজি বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর ৪ মার্চ কাতার বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কাতারের কূটনৈতিক মিশন চালু হয়।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ, অভিন্ন ধর্মীয় ভিত্তি, অভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ। কাতারে ৪ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করেন এবং তারা নিবেদিত ও কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে প্রশংসিত।
বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ এবং কাতারের রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও কাতার একে অপরকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে।
৮ মাস আগে
কাতার সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান
কাতারে সরকারি সফর শেষে আজ বুধবার (৬ মার্চ) দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
সফরকালে তিনি কাতারের রাজধানী দোহাতে ৪-৫ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ‘দোহা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডিফেন্স এক্সিবিশন এন্ড কনফারেন্স (ডিআইএমডিএক্স-২০২৪)’ এ অংশগ্রহণ করেন।
এই সম্মেলনে স্ব-স্ব স্থল বাহিনীসমূহের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি, পেশাদারি সম্পর্ক উন্নয়ন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, সংঘাতপূর্ণ সমস্যাসমূহ মোকাবিলা, যৌথ প্রশিক্ষণ এবং স্থল বাহিনীসমূহের আধুনিকায়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বিষয়ে আলোচনা হয়।
পাশাপাশি সেনাপ্রধান কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ (সশস্ত্র বাহিনী প্রধান) এবং বিভিন্ন দেশ হতে আগত সেনাপ্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, তিনি ৩ মার্চ সরকারি সফরে কাতার যান।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান
১৯তম এশিয়ান গেমস আয়োজনে যোগ দিতে চীন যাচ্ছেন সেনাপ্রধান
৯ মাস আগে
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে এবং বাংলাদেশে বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরিতে সহযোগিতা করবে কাতার।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর সদস্য দেশগুলোর তথ্যমন্ত্রীদের ইসলামিক সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত কাতার মিডিয়া করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা শেখ আবদুল আজিজ বিন থানি আল-থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আল জাজিরার মতো বৈশ্বিক গণমাধ্যম তৈরির অভিজ্ঞতার আলোকে কীভাবে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র গড়ে তোলা যায় তা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন প্রতিমন্ত্রী ও কাতারের মিডিয়া করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ সময় গণমাধ্যম সেক্টরে দুই দেশের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ব্যাপারে তার উভয়ে একমত পোষণ করেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
৯ মাস আগে
কাতার-সৌদি থেকে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার
কাতার ও সৌদি আরব থেকে ২২৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়।
আরও পড়ুন: গ্যাস সংকট: ৪ সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক প্রিন্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি। এতে প্রতি মেট্রিকটনের দাম পড়বে ৩৩০ দশমিক ৮৩ মার্কিন ডলার।
আরও পখুলনায় নিবন্ধনহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা করছে সিভিল সার্জন অফিসড়ুন:
তিনি আরও বলেন, এছাড়া অপর এক প্রস্তাবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১৩তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এতে প্রতি মেট্রিকটনের দাম পড়বে ৩৪৭ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে সারাদেশে আত্মহত্যা করেছে ৫১৩ শিক্ষার্থী: আঁচল ফাউন্ডেশন
১০ মাস আগে
কাতারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪ বাংলাদেশির মধ্যে ২ জন ফেনীর
কাতারের রাজধানী দোহায় একটি গাড়ির গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডে ৪ বাংলাদেশিসহ ৬ অভিবাসী নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় রবিবার রাতে দোহার ফিরোজ আবদুল আজিজ এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে তা নিকটবর্তী একটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত ৪ বাংলাদেশির মধ্যে ২ জন ফেনীর এবং আরও দু’জনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত বাকি দু’জন পাকিস্তানি নাগরিক।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৫ সদস্য দগ্ধ
ফেনীর নিহতরা হলেন, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের দিস মোহাম্মদ ভূঁইয়া বাড়ির বাসিন্দা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে মীর হোসেন ফরহাদ ।
জায়লস্কর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুনুর বশীদ মিলন কাতারের দোহায় একটি গাড়ির গ্যারেজে আগুনে মীর হোসেন ফরহাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। ফেনী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সেলর বাহার মিয়া মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: রূপসায় জুটমিলে অগ্নিকাণ্ড, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা
খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে আইআইজি, ইন্টারনেটের গতি ব্যাহত
১ বছর আগে
কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান দুই সফরসঙ্গীসহ সরকারি সফরে শনিবার কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান শেখ আবদুল হান্নান কাতার বিমান বাহিনী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (পাইলট) সালেম হামাদ আকিল আল-নাবিত, কাতার সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ এবং কাতার এমিরি বিমান বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল (পাইলট) জসিম বিন মুহাম্মদ আল-মান্নাইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
আরও পড়ুন: এয়ার মার্শালের র্যাংক ব্যাজে সজ্জিত বিমান বাহিনী প্রধান
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তারা পারস্পরিক স্বার্থের দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে মতবিনিময় করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান দোহায় আল জাইম মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল আত্তিয়া এয়ার একাডেমি পরিদর্শন করবেন।
বিমান বাহিনী প্রধানের এই সফর বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও কাতার এমিরি বিমান বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে বিমান বাহিনী প্রধানের ঢাকা ত্যাগ
কানাডার উদ্দেশে বিমান বাহিনী প্রধানের ঢাকা ত্যাগ
১ বছর আগে
সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর বহুমাত্রিক সম্পর্ককে ত্বরান্বিত করবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর শুধু এই দুই দেশের সঙ্গে নয় বরং আরও কয়েকটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে।
বুধবার (২১ জুন) প্রধানমন্ত্রী গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার আগে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যা ২৩-২৫ মে কাতারে তার তিন দিনের সরকারি সফর এবং ১৩ জুন সুইজারল্যান্ডে চার দিনের সরকারি সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগ দিতে সুইজারল্যান্ড যান এবং এর আগে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ‘তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরাম: একটি নিউ গ্লোবাল গ্রোথ স্টোরি’-এ যোগ দেন।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
তার সুইজারল্যান্ড সফরের সময়, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডির সঙ্গে জেনেভায় ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন।
ওই দিন শেখ হাসিনা প্যালেস ডি নেশনস-এ সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরসেটের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনি বলেন, দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
একই দিনে, প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট ২০২৩’ এর প্লেনারিতে তার ভাষণ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল' শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার সরকারের নেতৃত্বে শ্রম খাতের সংস্কারে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেন।
শেখ হাসিনা মাল্টার প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসার সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন এবং একই স্থানে আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবো তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আইএলও মহাপরিচালকের সদর দপ্তরে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: স্থানীয়ভাবে তৈরি কোস্ট গার্ডের অত্যাধুনিক ৫ জাহাজ কমিশনিং করলেন প্রধানমন্ত্রী
১৫ জুন শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-ডব্লিউইএফ আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশে’ একটি ইভেন্টে ভাষণ দেন।
এছাড়াও, তিনি ডব্লিউইএফ অফিসে ডব্লিউইএফ এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। সন্ধ্যায় তিনি ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক ড. ওকোনজো-ইওয়ালা তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। একই দিন সন্ধ্যায় তিনি একটি কমিউনিটি সংবর্ধনাতেও যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ১৬ জুন সকালে ঢাকার উদ্দেশে জেনেভা ত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে সহযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার কাতার সফরে তিনি অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে তিন দিনব্যাপী কাতার অর্থনৈতিক ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন।
এছাড়া তিনি সম্মেলনে যোগদানকারী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে আয়োজিত একটি আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং একটি মতবিনিময় অধিবেশনে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি দেখিয়েছেন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী আমিরি দেওয়ানে গিয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া র্যাফেলস টাওয়ারে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জেসিম আল থানি এবং দোহায় রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
শেখ হাসিনা দোহার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে ভাষণ দেন।
এগুলো ছাড়াও কাতারের প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল-কাবি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন এবং একই স্থানে সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহও তার সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: কোস্ট গার্ডকে আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
কাতারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এলএনজি সরবরাহকারী রাসগ্যাসের কাছ থেকে আরও এলএনজি সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে সই করা পরবর্তী চুক্তির জন্য তার পার্শ্ব বৈঠকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছিল।
ঢাকার উদ্দেশে দোহা ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা আওসাজ একাডেমি পরিদর্শন করেন।
১ বছর আগে
বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে: দোহায় কাতারের শিক্ষার্থীদের জানালেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার কাতারের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নেতা হওয়ার জন্য তার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত সাতটি পরামর্শ তুলে ধরেছেন।
দোহায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তৃতাকালে তিনি এসব পরামর্শ দেন।
তিনি 'বাংলাদেশ: আ ডেভেলপমেন্ট মডেল: লার্নিং ফ্রম শেখ হাসিনা' প্রতিপাদ্যের ওপর বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে দোহার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা ও সংগ্রাম থেকে ভবিষ্যত নেতাদের জন্য কয়েকটি পরামর্শ দিতে চাই: প্রথম: উপযুক্ত মূল্য উপস্থাপন করুন, দ্বিতীয়: আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে মনোনিবেশ করুন, তৃতীয়: আপনার দৃষ্টিভঙ্গি উপলব্ধি করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করুন, চতুর্থ: উদাহরণ দিয়ে নেতৃত্ব দিন এবং পরিবর্তনকারী নির্মাতা হোন, পঞ্চম: আপনার মানুষ ও দলকে বিশ্বাস করুন, ষষ্ঠ: আপনার মাতৃ-আত্মাকে আহ্বান করুন এবং সপ্তম: নতুন ও ভবিষ্যতকে আলিঙ্গন করুন।’
বাংলাদেশের ইতিহাস ও সাম্প্রতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ভূখণ্ড এক সময় ঐশ্বর্য ও সমৃদ্ধির দেশ ছিল। ১৯৪৭ সালে অবিভক্ত ভারত বিভক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ঔপনিবেশিক শাসকরা এটিকে নির্মমভাবে শোষণ ও লুণ্ঠন করেছিল এবং তারপরে পাকিস্তানিরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভিক্ষ, চরম দারিদ্র্য, অনাহার, অপুষ্টি, মৃত্যু ইত্যাদির ব্যাপকতা এই ভূখণ্ডে সাধারণ জনগণের প্রতি শাসকদের প্রতিশ্রুতিহীনতার কারণে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম ও ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তার সরকারের প্রথম শাসনামলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন যে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তার দল পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর এবং এরপর পরপর আরও দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে তারা বাংলাদেশকে তার বাবার স্বপ্নের সুখী ও সমৃদ্ধ 'সোনার বাংলাদেশ' এর জন্য প্রস্তুত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয় এবং আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখি। এরই মধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় সকল আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং নারীর ক্ষমতায়নের মতো কয়েকটি ক্ষেত্রের উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, যার জিডিপি হচ্ছে ৪৬০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৫-২০০৬ সালে জিডিপি’র আকার ছিল মাত্র ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে। ২০০৫-২০০৬ সালে মাথাপিছু দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমি ৫ শতাংশ, যেখানে বর্তমান দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।’
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে দেশের জাতীয় বাজেটের আকার ছিল ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাজেটের আকার দাঁড়ায় ছয় লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকায়। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ১০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মহামারি আঘাত হানার আগে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খাদ্য নিরাপত্তা, বিনামূল্যে ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, ডিজিটাল সেবা, বিদ্যুতের সহজলভ্যতা, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জলবায়ু অভিযোজনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।’
এ ছাড়া গৃহহীন পরিবারগুলোর জন্য বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণে বাস্তবায়নাধীন আশ্রয়ণ প্রকল্প, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১৮ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক ও পল্লী স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন, সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়তায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ এবং শিক্ষা খাতে উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশে থাকবে স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সমাজ এবং স্মার্ট জনশক্তি। মানুষকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা হবে, যাতে তারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অবদান রাখতে পারে।’
নারী শিক্ষা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার সরকার নারী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এক দশকের প্রচেষ্টার পরে আমরা এখন লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ অবস্থানে আছি… প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় আমাদের মেয়েদের পক্ষে লিঙ্গ সমতা রয়েছে।’
নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে আমরা বিশ্বের শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে রয়েছি। বাংলাদেশ সম্ভবত একমাত্র দেশ যেখানে প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা এবং সংসদ উপনেতা সবাই নারী। স্থানীয় সরকারের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষিত আসন রয়েছে। আমি আমাদের যোগ্য নারীদের সর্বত্র শীর্ষ নেতৃত্বের পদে বসিয়ে সমস্ত কাচের আবরণ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টিকে তুলে ধরেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ একটি পরিবর্তিত বাংলাদেশ। একে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপুষ্টি, নিরক্ষরতা ইত্যাদি দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। দেশে আমাদের কষ্টার্জিত উন্নয়ন অলৌকিক কিছু নয়। এটা আমাদের নারী ও পুরুষের সম্মিলিত কাজ। আমি শুধু তাদেরকে কাঙ্ক্ষিত পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছি। তবে আজকের অবস্থানে পৌঁছানো সহজ যাত্রা ছিল না। আমাকে সারা জীবন প্রচুর অগ্নিপরীক্ষা ও নিপীড়নের সম্মুখীন হতে হয়েছে।’
অগ্নিপরীক্ষা ও নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুধু আমার দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন এটা চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। আমার স্বপ্ন আমাদের বদ্বীপকে আবারও সমৃদ্ধির দেশে পরিণত করা।’
কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানির আমন্ত্রণে কাতার ইকোনমিক ফোরাম-২০২৩ এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে সোমবার দোহায় পৌঁছান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে দোহা পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে