মৌয়াল
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মোশাররেফ হোসেন গাজী নামে এক মৌয়ালের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) ঢাংমারী নদীতে ঘটনাটি ঘটে।
মৃত মৌয়াল মোশাররেফ হোসেন গাজী খুলনার দাকোপ উপজেলার ঢাংমারী গ্রামের আমির আলী গাজীর ছেলে।
আরও পড়ুন: যশোরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যুর অভিযোগ
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে চারজন মৌয়াল শনিবার দুপুরে একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে ঢাংমারী নদী দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় হঠাৎ করে একটি কুমির নৌকা থেকে মোশারফেকে টেনে নদীতে নিয়ে যায়। পরে তার সঙ্গীরা করমজল এলাকার খাল থেকে মোশারেফের লাশ উদ্ধার করে।
প্রসঙ্গত সুন্দরবনে নদী-খালে মাছ এবং বনে বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পযন্ত তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ।
এই তিন মাস জেলে-বাওয়ালি, মৌয়াল ও পর্যটকসহ সবার সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধি রয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু
৫ মাস আগে
ঠাকুরগাঁওয়ে সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা
ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে সরিষা ফুলের হলুদ আভা। সে যেন অপরূপ দৃশ্য! চোখ মেললেই মন জুড়িয়ে যায় মাঠজুড়ে হলুদ গালিচায়।
সরিষার রূপ আর গন্ধে মাতোয়ারা চারিধার। মৌমাছি, প্রজাপতির অবিরাম খেলা গ্রামীণ জনপদকে আরও মুগ্ধ করে তুলেছে। এই সরিষা খেতগুলোতে যেমন রয়েছে চাষিদের পদচারণা, তেমনি মধু সংগ্রহে মেতে উঠেছেন মৌয়ালরা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার সরিষার আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর বেশি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। বাজারে সরিষার তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরিষার আবাদ বেড়েছে।’
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে ঝালকাঠিতে বেড়েছে সরিষা চাষ
রানিশংকৈল কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রানিশংকৈল উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৮৯০ হেক্টর বেশি।
এখন অনেক জায়গায় চলছে মধু সংগ্রহ। সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌচাষিরা সাধারণত পছন্দের একটি সরিষা খেতের পাশে খোলা জায়গায় চাক ভরা বাক্স ফেলে রাখেন। একেকটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়।
প্রতিটি বাক্সের ভেতরে রাখা হয় রানি মৌমাছি। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। বাক্সে একটি রানি মৌমাছি রাখা হয় ৷ রানি মৌমাছির কারণে ওই বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। চাকের বাক্সের মাঝখানের নিচে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে।
রানিশংকৈল উপজেলার গোগর এলাকার মৌচাষি নজরুল ইসলাম জানান, সরিষা খেতে মধু চাষ খুবই লাভজনক। এতে কৃষক ও মধু চাষি— দু’পক্ষই লাভবান হন৷ বাক্সের ভেতরের চাকগুলো মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ছয় থেকে সাত দিন। এরপর মধু চাষিরা বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের মাধ্যমে মধু বের করে নেন। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাড়তি ফলন পান কৃষক, আর মৌচাষিরা পান মধু।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ১৫১.৩৮ কোটি টাকার সরিষার ফলনের প্রত্যাশা চাষিদের
৯ মাস আগে
অর্থসংকটে সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত মৌয়ালদের পরিবার
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যতিন্দ্রনগর গ্রামের হালিমা খাতুন।
২০০৬ সালে বন বিভাগ থেকে পাশ দিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য যান তার স্বামী গোলাম গাজী। দু’দিন পরে খবর আসে গোলাপ গাজী বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। এর কয়েকদিন পরে তার ছিন্ন-বিছিন্ন লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে তার সঙ্গে যাওয়া অন্য মৌয়ালরা।
সেই থেকে হালিমা খাতুন তার ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে বাস করছেন। বর্তমানে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী তার ছেলে।
স্বামীকে হারিয়ে ছেলে ও পুত্রবধূর সঙ্গে খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন হালিমা খাতুন।
সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের হাতে প্রাণ হারানো অপর ব্যক্তি শ্যামনগরের গাবুরা গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন।
মোশাররফের মা খালেদা বেগম ইউএনবিকে জানান, ২০১২ সালে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হন মোশাররফ।
একই উপজেলার হরিনগর গ্রামের সুন্নত আলী শেখের স্ত্রী কোহিনূর বেগম জানান, ২০১৪ সালে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি তার স্বামী সুন্নত আলী শেখ।
তিনি জানান, পরে শুধু তিনি শুনেছেন, তার স্বামীকে বাঘে খেয়েছে। আর কোনো সন্ধান তিনি পাননি তার প্রিয় স্বামীর।
অন্যদিকে নিহত মৌয়াল শ্যামনগরের কাউসার গাইনের ভায়রা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি বছরের ২০মে বাঘের আক্রমণে মারা যান কাউসার।
একইভাবে ২০২১ সালে প্রাণ হারান হাবিবুর মোল্লা ও জিয়াউল ইসলাম নামের দুজন মৌয়াল।
গত এক দশকে ছয়জন মৌয়াল সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। এরা সকলেই সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বাসিন্দা।
নিহতদের কোন পরিবার আর চায়না তাদের পরিবারের কেউ আর সুন্দরবনের সঙ্গে জড়িত থাকুক।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় লোকালয়ে বাঘ, আতঙ্কে গ্রামবাসী
সুন্দরবন বাংলাদেশ তথা বিশ্বের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন। দেশের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা নিয়ে বিস্তৃত এ বন। সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার, আর ভারতের পশ্চিম বাংলায় রয়েছে প্রায় ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার।
পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য সুন্দরবন বিখ্যাত। এ ছাড়া হরিণ, বানর, কুমির সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও রয়েছে এ বনে।
সুন্দরবনের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদীতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার মাছ। আর রয়েছে মধু, এ বনের মধু পৃথিবী বিখ্যাত।
পর্যটকদের জন্য বরাবরই সুন্দরবন একটি আকর্ষণীয় জায়গা। আর পদ্মাসেতু হওয়ার পর পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুধু পর্যটন নয়, এই বনকে ঘিরে কয়েক লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। কেউ বনজীবী, জেলে বা মংস্য সংগ্রহকারী আবার কেউ মৌয়াল বা মধু সংগ্রহকারী।
এই সুন্দরবনকে ঘিরে অনেকে যেমন জীবিকা নির্বাহ করে তেমনি অনেকে সুন্দরবনে গিয়ে বাঘের শিকার হয়েছেন বা আক্রমণে মারা গেছেন। এদের অধিকাংশই ছিল মৌয়াল।
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো খুলনায় মৌয়াল, চাষি, বণিক, গবেষক ও ভোক্তা জাতীয় জোটের উদ্যোগে বাঘের আক্রমণে নিহত মৌয়ালদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
এসময় মেয়র বলেন, মৌয়াল, চাষি, গবেষক ও ভোক্তা জাতীয় জোট বাঘের আক্রমণে নিহতদের পরিবারকে অর্থিক সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, মৌয়াল, চাষি, গবেষক ও ভোক্তা জাতীয় জোটের এই সহযোগিতা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. মো. মোহসীন হোসেন বলেন, মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে যারা নিহত হন, বন বিভাগ তাদের বিষয়ে সচেতন।
তিনি আরও বলেন, বন বিভাগ সবসময়ই তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
সুন্দরবনে বাঘের হামলায় নিহত জেলের মরদেহ উদ্ধার
১ বছর আগে
সুন্দরবন বাঘের আক্রমণে মৌয়াল নিহত
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের সময় বাঘের আক্রমণে এক মৌয়াল নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাচিকাটা এলাকায় সকাল ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মৌয়াল সালাইমান শেখ (৫০) শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোদাড়া গ্রামের আনছার আলী শেখের ছেলে।
বনবিভাগ বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন অফিসার (এসও) নূরআলম জানান, সপ্তাহ খানেক আগে বুড়িগোয়ালিনী বন অফিস থেকে মধু সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বনের ভেতরে যায় সোলাইমান শেখসহ তার কয়েকজন সঙ্গী। শুক্রবার সকালে কাচিকাটা এলাকায় তিনি বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) এম.এ হাসান জানান, সোলাইমান শেখকে তার মৌয়াল সহকর্মীরা উদ্ধার করেছে। তার লাশ লোকালয়ে না আনা পর্যন্ত কোন কম্পার্টমেন্টে মারা গেছেন তা বলতে পারছিনা। তবে, যেহেতু তিনি বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে বনে গিয়েছিলেন, বিধি অনুযায়ী তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২১ বছরে ৪০ বাঘের মৃত্যু
সুন্দরবনে মৃত বাঘ উদ্ধার
২ বছর আগে
সুন্দরবন থেকে ১৫ বস্তা চিনিসহ ৭ মৌয়াল আটক
সুন্দবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে ১৫ বস্তা চিনি ও ভেজাল মধু তৈরির সরঞ্জামাদীসহ সাত মৌয়ালকে আটক করেছে বনবিভাগের সদস্যরা।
শুক্রবার রাতে সুন্দরবনের বাদুড়ঝুলি এলাকার কুমনিওয়ালা খাল থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক মৌয়ালরা হলেন, গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের মৃত নুরমান মোড়লের ছেলে সত্তার মোড়ল ৪৫, একই গ্রামের মৃত হাজের আলীর ছেলে কুবাত আলী (৫০), মৃত এলাহী বক্স মালীর ছেলে শাহাদাত (৫০), মৃত সফদুল গাজীর ছেলে সাহেব আলী (৫২), মৃত ফুলচাঁদ গাজীর ছেলে ইয়াসিন গাজী (৪৫),মজিদ গাজী (৫০) এবং পাতাখালী ইউনিয়নের গড়কোমরপুর গ্রামের মোসলেম সানার ছেলে আবু বক্কর (৫২)।
বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের আব্দুল হাকিম শেখের ১৫ জনের একটি মৌয়াল দল বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন থেকে বৈধ পাশ নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। এরপরই বনবিভাগের কাছে গোপন খবর আসে কিছু অসাধু মৌয়াল অভিনব কায়দায় চিনি দিয়ে ভেজাল মধু তৈরি করছেন। এই সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে সুন্দরবনের বাদুড়ঝুলি এলাকার কুমনিওয়ালা খালে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে ওই সাত মৌয়ালকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে ১৫ বস্তা চিনি, দুটি নৌকা ও ৩৫টি ড্রামসহ ভেজাল মধূ তৈরির সরঞ্জামদি জব্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: ঈদে সুন্দরবনে টহল জোরদার, বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল
তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
৩ বছর আগে
সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু
সুন্দরবনে বৃহস্পতিবার থেকে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও একই সময় পারমিট দেয়া শুরু করে বন অফিসগুলো। এজন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় পাঁচ হাজার মৌয়াল।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের তথ্য মতে, এ বছর মৌসুমের তিন মাসে ৮০০ কুইন্টাল মধু এবং ২৫০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বৃহস্পতিবার স্টেশন অফিসগুলো থেকে পাস-পারমিট দেয়া শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের শিকারি চক্র
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শরণখোলা রেঞ্জের বন থেকে ৭১১ দশমিক ৫০ কুইন্টার মধু এবং ২১৩ দশমিক ৪৫ কুইন্টাল মোম আহরণ করা হয়।
পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, সুন্দরবনে মধু কম-বেশি হওয়া অনেকটা বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ঠিক থাকবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকরী কৌশলপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে: মন্ত্রী
মৌয়ালদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে খলিশা ফুলের মধু আসে। এরপর আসে গারণ ফুলের। শেষ আসে কেওড়া ও ছইলা ফুলের মধু। এই তিন প্রজাতির মধুর মধ্যে সবচেয়ে দামী হচ্ছে খলিশার মধু। কিন্তু এ বছর এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হয়নি। আর বৃষ্টি না হলে ফুল শুকিয়ে ঝরে যায় বলে মধু জমে না। তাই এ বছর মধু কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন মৌয়ালরা।
মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বনে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বন অফিসের ঘাটে পারমিটের অপেক্ষা করছেন মৌয়ালরা। আবার এখনো নৌকা প্রস্তুতির কাজ চলছে অনেকের।
মধু ব্যবসায়ী মো. রাসেল আহমেদ জানান, তিনি এ বছর তিনটি নৌকায় দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার আরও বেশি বিনিয়োগের ইচ্ছা ছিল এবার। কিন্তু বৃষ্টির না হওয়ায় তিনি বেশি বিনিয়োগে সাহস করেননি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত বাঘের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন
মৌয়াল মো. ইউনুচ হাওলাদার (৬৫) জানান, তার নৌকাটি প্রস্তুত করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। কাজ প্রায় শেষের পথে। তার নৌকায় ১২ জন সহযোগী রয়েছে। মৌসুমের তিন মাসে মধু আহরণ করতে গিয়ে একেকজন মৌয়ালের খরচ হয় ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।
তিনি জানান, গত বছর একেকজন সহযোগী দুই মন করে মধু পেয়েছেন ভাগে। ২৫ হাজার টাকা মন দরে তা বিক্রি করেছেন।
এসিএফ জানান, এবারে সংশ্লিষ্ট বন অফিস থেকে ১৪ দিনের পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করে মৌয়ালরা। সংরক্ষিত অভয়ারণ্য এলাকা থেকে মধু আহরণ করা যাবে না এবং কোনো মৌয়াল নিষিদ্ধ বনাঞ্চলে প্রবেশ করলে তাৎক্ষণিক তার পারমিট বাতিল করা হবে।
এছাড়া, পাসধারী মৌয়ালরা মধু আহরণের জন্য মৌমাছি তাড়াতে অগ্নিকুন্ড, মশাল বা অনুরূপ কোনো দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে পারবে না। এগুলোসহ ৯টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মৌয়ালদের। এই নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে বন আইনে শাস্তিও রয়েছে।
৩ বছর আগে
গাছের ঘনত্ব বাড়ায় সুন্দরবনে মধু ও মোম উৎপাদন বেড়েছে
বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান সুন্দরবনে গাছের ঘনত্ব বেড়েছে। ফলে করোনাকালেও গত বছরের তুলনায় এবার ৪৭৮ কুইন্টাল মধু বেশি উৎপাদন হয়েছে।
৪ বছর আগে