ডিম
বিচারপতিকে ডিম ছুঁড়ে মারলেন আইনজীবীরা
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার জেরে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে তার নিজ এজলাস কক্ষে ডিম ছুঁড়ে মেরেছেন একদল আইনজীবী। এক পর্যায়ে ওই বিচারপতি এজলাস ছেড়ে নেমে যেতে বাধ্য হন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, দুপুরের পর ওই বেঞ্চে বিচারকাজ চলছিল। এ সময় একদল আইনজীবী এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা ডায়াসের সামনে গিয়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে উদ্দেশ্য করে বলেন- আপনি একজন বিচারপতি হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আপনি এখনও যদি ওই চিন্তাভাবনা পোষণ করেন, তাহলে আপনার বিচারকাজ পরিচালনার অধিকার নাই। এক পর্যায়ে আইনজীবীদের মধ্যে কেউ একজন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালকে লক্ষ্য করে ডিম ছুঁড়ে মারেন। তবে ছুঁড়ে মারা ডিম বিচারপতির আসনের সামনে থাকা ডেস্কে লাগে। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী হইচই করতে থাকেন। এ অবস্থায় বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম এজলাস ছেড়ে নেমে খাস কামরায় চলে যান।
২০১৬ সালে বিচারপতি অসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিয়ে করা ষোড়শ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর হাইকোর্টের একটি বৃহত্তর বেঞ্চ রায় প্রদান করেন। বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি ষোড়শ সংশোদনী বাতিল করলেও বিচারপতি আশরাফুল কামাল ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ করে রায় দেন।
রায়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল তার পর্যবেক্ষণের একাংশে বলেন, ‘মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাকবাকুম করে ক্ষমতা নিয়ে নিলেন, তথা রাষ্ট্রপতির পদ দখল করলেন। একবারও ভাবলেন না, তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। সরকারি কর্মচারী হয়ে কীভাবে তিনি রুলস ভঙ্গ করেন?’
‘ভাবলেন না তার শপথের কথা। ভাবলেন না- তিনি দেশকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে মৃত্যুকে বরণ করার শপথ নিয়েছিলেন। ভাবলেন না- তিনি ও তারা ব্যর্থ হয়েছিলেন দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে রক্ষা করতে। ভাবলেন না- তিনি ও তারা ব্যর্থ হয়েছেন জাতীয় চার নেতাকে রক্ষা করতে।’
আরও পড়ুন: বড় পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলা থেকে খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে অব্যাহতি
তিনি বলেন, ‘জনগণ আশ্চর্য হয়ে দেখল, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের দোসর হয়ে তাদের রক্তাক্ত হাতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করল। যাকে এক কথায় বলা যায়, বন্দুক ঠেকিয়ে জনগণের প্রতিষ্ঠান দখল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি ডাকাতরা সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করে। ডাকাতদের যে নেতৃত্ব দেয় তাকে ডাকাত সর্দার বলে। ডাকাতি করার সময়ে ডাকাতরা বাড়িটি বা ঘরটি কিছু সময়ের জন্য অস্ত্রের মুখে দখল করে এবং মূল্যবান দ্রব্যাদি লুণ্ঠন করে। বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান গংরা দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও অস্ত্র ও অবৈধ কলমের খোচায় নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে ভেঙে ডাকাতদের মতো অবৈধভাবে জোরপূর্বক জনগণের ক্ষমতা ডাকাতি করে দখল করেন।’
‘যে বিচার বিভাগ ও এর বিচারকদের ওপর আইনগত দায়িত্ব ছিল সাংবিধানের সামান্যতম বিচ্যুতিকে রক্ষা করা, সংরক্ষণ করা ও নিরাপত্তা প্রদান করা; সেই বিচার বিভাগ ও এর তৎকালীন বিচারকরা সংবিধানকে এক কথায় হত্যা করলেন, জনগণের রায় ডাকাতি করে জনগণের নির্বাচিত সংসদকে বাতিল করলেন। অপরদিকে, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান নিয়ম একজন সরকারী কর্মচারী হয়েও আর্মি রুলস ভঙ্গ করে জনগণের রায়ে নির্বাচিত জাতীয় সংসদকে হত্যা করে দেশের সংবিধানকে হত্যা করে অস্ত্রের মুখে অন্যায়ভাবে অসৎভাবে হত্যাকারীদের দোসর হয়ে জনগণকে চরম অবজ্ঞা করে ক্ষমতা দখল করেন।’
বিচারপতি আশরাফুল বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী তথা স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আল-শামস ও জামায়াতে ইসলামীকে এদেশে পুনর্বাসন করেন। তাদের রাজনীতি করার অধিকার দেন। তাদের নাগরিকত্ব দেন (যে নাগরিকত্বকে আমাদের তথাকথিত জামায়াতি এবং স্বাধীনতাবিরোধী মানসিকতার বিচারকরা বৈধ বলেন)। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সংসদ সদস্য করেন এবং তাদের মন্ত্রী বানিয়ে, তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে এবং দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের সঙ্গে বেইমানি করেন। এর পরেও কি বাংলাদেশের জনগণ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা বলতে পারে?’
তার কথায়, ‘মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান শুধু জাতির পিতা ও তার পরিবারের এবং জাতীয় চার নেতাকে হত্যাকারীদের শুধু দোসরই হননি, বরং তিনি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছেন রাষ্ট্রদূত, সংসদ সদস্য ইত্যাদি বানিয়ে। তিনি আরও জঘন্য যে কাজটি করেন তা হলো, তিনি জনগণের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারীদের হত্যার বিচার বন্ধ করে দায়মুক্তি আইন প্রণয়ন করেন। অর্থাৎ তিনি জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকে এই দায়মুক্তি আইন দ্বারা সমর্থন দিয়ে প্রমাণ করেন তিনিও জাতির পিতা ও তার পরিবারের হত্যাকারী এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদেরই একজন।’
আরও পড়ুন: জামিন নামঞ্জুর, সাবেক এমপি সুজন কারাগারে
৩ সপ্তাহ আগে
ভারত থেকে এলো ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আরও ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে।
এ নিয়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের (১৯ অক্টোবর) পর্যন্ত ৫ চালানে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩১০ পিস মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টায় ৫ চালানে সাড়ে ৭ টাকা দরের ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে।
আগামী মাসের মধ্যে সরকারের প্রথম ঘোষণার ৫০ লাখ ডিমের আরও ৪০ লাখ ডিম আমদানি করা হবে। এরই মধ্যে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩১০ পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে। ঘাটতি পূরণে আরও সাড়ে চার কোটি পিস মুরগির ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সেগুলোও পর্যায়ক্রমে আমদানি করা হবে।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে না পারার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে প্রতিটি ডিম কেনা হয়েছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা দরে। প্রতিটা ডিমের আমদানি শুল্ক ১ টাকা ৮৩ পয়সা। সব মিলিয়ে একটি ডিমের দাম পড়ছে সাড়ে সাত টাকার একটু বেশি। এ অবস্থায় পেঁয়াজ ও আলুর মতো ডিম আমদানিতে শুল্ক মওকুফের দাবি জানান তারা।
বেনাপোল কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে ডিম আমদানির পাঁচ চালানে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩১০ পিস মুরগির ডিম বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়। ঢাকার ‘হাইড্রো ল্যান্ড সল্যুশন’ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিমগুলো আমদানি করেছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাইড্রো ল্যান্ড সলুশনের প্রতিনিধি শাহ আলম বলেন, ‘দুই মাসের মধ্যে ৫০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত মাসের ১০ সেপ্টেম্বরের সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। এর মধ্যে মাত্র দুটি চালানে প্রায় ৩ লাখ ডিম আমদানি করার সুযোগ হয়। রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতির কারণে আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়। এ জন্য তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও দুই মাসের সময় বাড়িয়েছে মন্ত্রণালয়। যেটি নভেম্বরে শেষ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত থেকে প্রতিটি ডিম কেনা হয়েছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা দরে। অথচ প্রতিটি ডিমের শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে ১ টাকা ৮৩ পয়সা (অন্যান্য খরচসহ)। এই শুল্ক ৫০ পয়সার নিচে রাখলে বাজারে ডিমের দাম অনেক কমে যেত।
পেঁয়াজ ও আলুর মতো শুল্ক মওকুফ করার জন্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন তারা।
ডিমের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কলকাতার শ্রী লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ। আমদানিকারকের পক্ষে ডিমের চালানটি খালাসের জন্য কাস্টমস হাউসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ।
ব্যবসায়ীরা জানান, সাড়ে সাত টাকায় প্রতিটি ডিম আমদানি হলেও পরিবহন, শ্রমিক, ওয়েস্টেজ (নষ্ট ডিম) বাবদ প্রতিটি ডিমে আরও অন্তত ৩ টাকা খরচ হয়। আমদানি করা প্রতিটি ডিম ১০ দশমিক ৬০ টাকা থেকে ১০ দশমিক ৭০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়।
বেনাপোল কাস্টমসের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমদানি করা ডিমের শুল্কায়নসহ প্রতিটির দাম পড়েছে সাড়ে সাত টাকার মতো। গত বছরের ৫ নভেম্বর আসে প্রথম চালান, ৯ সেপ্টেম্বর আসে দ্বিতীয় চালান এবং চলতি মাসের ৬, ৭ ও ১৯ তারিখে আসে ডিমের তিনটি চালান। গত বছর ঢাকার বিডিএস করপোরেশন একই দামে ভারত থেকে ৬১ হাজার ৯৫০টি ডিম আমদানি করেছিল।’
আরও পড়ুন: খুলনায় সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম, বিপাকে জনসাধারণ
২ মাস আগে
খুলনায় সরকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম, বিপাকে জনসাধারণ
ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু খুলনার কোনো বাজারেই সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম। বাজারগুলোতে ঘোষণা দেওয়া হলেও আগের দামেই ডিম কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা দাম বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ করছেন তারা।
খুলনায় খুচরা প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১৩ টাকা। আর সরকার নির্ধারিত দর ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। প্রতিটি ডিমে ১ টাকা ৫৩ পয়সা বেশি গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারে কথা হয় রহিমা বেগমের সঙ্গে। এই গৃহিণীর অভিযোগ, ডিমের বাজার গত কয়েক মাস ধরে উর্ধ্বমুখী।
আরও পড়ুন: বাজারের চেয়ে বেশি দামে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়া এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্ধারণ প্রক্রিয়া শুভংকরের ফাঁকি
তিনি বলেন, মাংসের পর আমিষের চাহিদা মেটায় ডিম। কিন্তু সেই ডিমের দাম এত বেশি। তাছাড়া নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে জীবন ধারণ করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
বাজার ব্যবস্থাপনার দিকে সরকারের নজর দেওয়ার তাগিদ জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
দোলখোলা ইসলামপুর মোড়ের বাসিন্দা অতুনু কর বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও ব্যবসায়ীরা মানছে না।
খুলনার বিভিন্ন বাজারে পাইকারি হিসেবে ১০০ পিস ডিম সাড়ে ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী গ্রামের ডিম ব্যবসায়ী পারভেজ। তিনি বলেন, সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছেন সে দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। খামারিদের একটি ডিম উৎপাদন করতে সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশি পড়ছে। তাছাড়া সেখান থেকে কিনে এনে খুলনার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করছেন তারা। যুক্ত হচ্ছে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ। যা সরকার নির্ধারিত দর থেকে বেশি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বেশি দামে ডিম বিক্রি করায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা
পারভেজ আরও জানান, লেয়ার মুরগী থেকে ডিম উৎপাদন করা হয়। অনেক মালিক ডিম উৎপাদন শেষে ফার্ম বন্ধ করে দিচ্ছেন। খাবার ও বাচ্চার দাম বেশি থাকায় অনেকেই খামার ছেড়ে দিয়ে বিকল্প ব্যবসার চিন্তা করছেন।
বটিয়াঘাটার ফার্ম মালিক নিমাই চন্দ্র বলেন, বড় বড় কোম্পানিগুলোকে সরকার বিভিন্ন সময়ে সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে কিন্তু আমাদের দেওয়া হয় না। কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে চলেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে সরকার নির্ধারিত দরে ডিম বিক্রি করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকার অনেক খামারি বাচ্চার দাম বেড়ে যাওয়ায় ফার্ম বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার কোম্পানিগুলোর দিকে নজর না দিলে এ শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
পাইকারি পর্যায়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে উল্লেখ করে দোলখোলা ইসলামপুর মোড়ের ব্যবসায়ী বাসুদেব বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি করলে আমাদের কোনো চালান থাকবে না।’
আরও পড়ুন: ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
২ মাস আগে
আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্যে দুর্ভোগে মাগুরাবাসী, বাজার না নিয়েই ফিরতে হচ্ছে ঘরে
মাগুরায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। জিনিসপত্রের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখে অনেককে বাজার না করেই ফিরতে হচ্ছে ঘরে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের দুর্ভোগ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে বিক্রেতাদের আক্ষেপ, আগের মতো বেচাকেনা হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জের প্রতিটি হাট-বাজারে শাক-সবজিসহ সব কাঁচা বাজারের দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। অনেকেই বাজারে এসেও কাঁচা বাজার না নিয়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে বেশি দামেই কিনছেন।
মাগুরার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচ, ডিম ও সবজির দাম।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা।
জেলার বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়।
গত দুই সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি প্রায় ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা।
আরও পড়ুন: ২২ দিনের শিকার নিষেধাজ্ঞায় চাঁদপুরে রেকর্ড দামে ইলিশ বিক্রি, হতাশ হয়ে ফিরছেন ক্রেতারা
পাশাপাশি প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচু প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৮০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ১২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৮০ টাকা, মাঝারি লাউ প্রতিটি ১০০ টাকা, ফুলকপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০, শসা ৮০ টাকা ও প্রতি কেজি মুলা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ডিমের দাম।
প্রথমবারের মতো ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম রেকর্ড মূল্য ১৮০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ প্রতি হালি ডিমের দাম ৬০ টাকা, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর মুদি দোকানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা দরে। যেখানে মাত্র এক সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন ছিল ১৫০ টাকা। যার প্রতি হালি বিক্রি হতো ৫০ টাকায়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বেশি দামে ডিম বিক্রি করায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা
ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, গত কয়েকদিনে মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বেশি তাই স্বাভাবিকভাবেই খুচরা বাজারেও দাম বেশি।
গরু, ছাগল এবং দেশি ও ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম না বাড়লে মাছের দাম ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারগুলোতে ছোট মাছ নেই বললেই চলে। যেগুলো আছে সেগুলো সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। আবার বড় মাছের দামও অনেক বেশি। ইলিশের ভরা মৌসুমেও দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এছাড়া বেড়েছে সব ধরনের চাল ও তেলের দাম।
তবে হঠাৎ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে বিক্রিও কমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উপসচিব
ক্রেতারা বলছেন, সবকিছুর দাম বাড়লেও তাদের উপার্জন বাড়েনি। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এত বেশি যে বাজারে যেতেই ভয় হয়। বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে হু-হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।
বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে জেলার বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সামুনুল ইসলাম জানান, অধিক পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় ও পাইকারি দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিদিনই কাঁচা মরিচ ও সবজির দাম বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচও বেড়ে যাওয়ায় নিরুপায় হয়েই দাম বাড়াচ্ছে বিক্রেতারা।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি কমেছে ১ শতাংশ: সালেহউদ্দিন
২ মাস আগে
ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ডিম সহজলভ্যতার দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডিম প্রাপ্যতার কোনো বৈষম্য থাকবে না। সব শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে, যাদের ডিম বেশি দরকার তাদের জন্য তা সরবরাহ করতে হবে।
এছাড়াও তিনি আরও জানান, ডিমের মূল্য কমাতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
আপরও পড়ুন: দশমী পর্যন্ত সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৪ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিমের উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের নারীদের হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করতে আহ্বান জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, আগে গ্রামীণ নারীরা হাঁস-মুরগি পালন করতেন। গ্রামেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতেন। সেই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, বছরের আশ্বিন-কার্তিক মাসে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা বাড়ে। ডিম সাধারণ খামারি থেকে কয়েকদফা হাত বদল হয়ে ভোক্তার কাছে যায়। এ কারণেই ডিমের দাম বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, এজন্য উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সরাসরি কীভাবে ডিম পৌঁছানো যায় সে ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা চলছে। এছাড়া রমজানে ডিমের ব্যবহার কমে যায়। তাই মজুদ নয় চাহিদার আলোকে আমাদের কোল্ডস্টোরেজ করার চিন্তা করতে হবে। বন্যার কারণে দেশের অনেক খামার নষ্ট হয়েছে। এসব খামার উৎপাদনে যেতে কিছুটা সময় লাগছে। সব মিলিয়ে সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের মূল্য বাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে সরকার। বাজারে নিয়মিত অভিযান চলছে। পাইকারিতে কিছুটা দাম কমেছে। দ্রুতই দাম নাগালে আসবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ড্রাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এবং ওয়াপসা-বিবির যৌথ উদ্যোগে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর ও ওয়াপসার সভাপতি মসিউর রহমান।
আপরও পড়ুন: দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও উজ্জ্বল করার দায়িত্ব সব ধর্মের মানুষের: ধর্ম উপদেষ্টা
২ মাস আগে
ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ, অনাক্রম্যতা বৃদ্ধি এমনকি মানসিক সুস্থতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। শরীরের অভ্যন্তরে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নানাবিধ কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উপযুক্ত খাবার। পাশপাশি প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজে শরীরকে প্রাণবন্ত রাখার জন্য প্রত্যেকেরই আলাদা নজর থাকে পুষ্টিকর খাবারের প্রতি। তাই সঙ্গত কারণেই বিগত কয়েক বছর ধরে চলে আসছে ওমেগা-৩ ডিম নিয়ে গুঞ্জনটা। ডিমের বাজারে ব্যাপক হারে উপস্থিতির কারণে এটি সাধারণ ডিমের বিকল্প হিসেবেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। চলুন, ওমেগা-৩ ডিম আসলেই স্বাস্থ্যসম্মতো কি না তা যাচাই করে নেওয়া যাক।
ওমেগা-৩ কী
পিইউএফএ (পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড) এর যতগুলো ধরন রয়েছে সবগুলো একটি নির্দিষ্ট পুষ্টিগ্রুপের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ গ্রুপটির মাধ্যমে সরাসরি বোঝানো হয় পিইউএফএকে। আর এই পুষ্টিগ্রুপের নাম ওমেগা-৩, যেটি মূলত মাছের তেল এবং অন্যান্য খাদ্য উৎসে পাওয়া যায়। অবশ্য অনেকেই মাছের তেল ও ওমেগা-৩ কে একই জিনিস ভেবে থাকেন। কিন্তু ওমেগা-৩ একটি পুষ্টি উপাদান, আর মাছের তেল হচ্ছে সেই পুষ্টির অনেক উৎসের মধ্যে একটি।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো ৩ ধরনের। আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড (এএলএ), আইকোস্যা-পেন্টিনোয়িক অ্যাসিড (ইপিএ) এবং ডোকোস্যা-হেক্সিনোইক অ্যাসিড (ডিএইচএ)। এগুলোর মধ্যে ইপিএ এবং ডিএইচএ প্রধানত প্রাণিজ খাবার বিশেষত সামুদ্রিক খাবারে (প্রধানত মাছ) পাওয়া যায়। আর এএলএ’র সর্বোত্তম উৎস হলো উদ্ভিদজাত খাবার, যেমন আখরোট, তিসির বীজ, সয়াবিন এবং ক্যানোলার তেল।
আরও পড়ুন: নিরাপদ ব্রয়লার মুরগি কী, কেন খাবেন
ওমেগা-৩ ডিম বৃত্তান্ত
যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া মুরগি যে ডিম দেয়, সেগুলোই মূলত ওমেগা-৩ ডিম নামে পরিচিত। এক্ষেত্রে মুরগি পালনের সময় এদের খাদ্য তালিকায় তিসির বীজ অথবা মাছের তেল মেশানো হয়। মুরগির বেশি বেশি ওমেগা-৩ গ্রহণ করার ফলে তাদের টিস্যুগুলোতে এই ফ্যাটি অ্যাসিডের কার্যকারিতা শুরু হয়। তিসির বীজ হজমের সময় এতে থাকা এএলএ এবং ডিএইচএ উভয় ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমের কুসুমে গঠনে অংশ নেয়। ফলস্বরূপ ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিম তৈরি হয়।
ওমেগা-৩ মুরগির ডিম স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারি
স্বাস্থ্যকর কোষ ঝিল্লি
মানবদেহের প্রতিটি কোষ প্রধানত ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ কোষ ঝিল্লি দিয়ে পরিবেষ্টিত। এই ঝিল্লি দিয়ে কোষে সঠিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রবেশ করতে পারে এবং একই সঙ্গে কোষ থেকে বর্জ্য পদার্থগুলো দ্রুত বেরিয়ে যায়। এই কাজগুলোর সুষ্ঠু সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন হয় কোষ ঝিল্লির অখণ্ডতা এবং তারল্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।
ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতিতে কোষগুলো পানি এবং গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি ধরে রাখার ক্ষমতা হারায়। সেই সঙ্গে এগুলো অন্যান্য কোষের গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। কোষ ঝিল্লিকে কার্যকরভাবে তার সর্বোত্তম অবস্থায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে ওমেগা-৩।
আরও পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ত্বকের সুরক্ষা
মানব ত্বক একটি বেষ্টনি দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে, যেটি ত্বকের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ এবং এপিডার্মিসের ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করে। যথেষ্ট পরিমাণে ওমেগা-৩ গ্রহণ এই বেষ্টনিকে আরও মজবুত করতে পারে। সেই সঙ্গে এটি ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানির যোগান নিশ্চিত করে।
এছাড়া ত্বকের বেষ্টনিতে কোটি কোটি উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এগুলো বাইরে থেকে আগত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ত্বকের ভেতরে প্রবেশের আগেই ধ্বংস করে ফেলে। একটি ত্বকে ওমেগা-৩-এর পরিমাণ যত বেশি হয়, আক্রমণকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে এটি তত শক্তিশালী হয়।
হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস
ওমেগা-৩ এর গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড এএলএ হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে ‘প্ল্যাক’ কমায়। ধমনী প্ল্যাক হলো ধমনীর আভ্যন্তরীণ আস্তরণে এক ধরনের জমাট, যেটি সৃষ্টি হয় কোলেস্টেরল, চর্বি বা কোষীয় বর্জ্য পণ্যের মতো পদার্থের মাধ্যমে। এই জমাট বাধার কারণে ধমনী সরু এবং শক্ত হয়ে রক্ত প্রবাহকে বাধা দিতে পারে। প্ল্যাক ফেটে গেলে টিস্যুগুলোতে রক্ত না পৌঁছানোর কারণে সেগুলোতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে করে চূড়ান্ত অবস্থায় টিস্যুগুলো নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং হার্ট-অ্যাটক ও স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
টানা ৬ বছর ধরে এএলএ উচ্চ মাত্রায় গ্রহণ করলে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ কমে যায়। প্রতিদিন ১ থেকে ১ দশমিক ২ গ্রাম করে এএলএ গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এতে করে হৃদরোগ আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঝুঁকি ২০ শতাংশেরও বেশি কমে যায়। এটি সুস্থ ব্যক্তির হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ডিম ও ফ্যাটি অ্যাসিডের স্বাস্থ্যকর সমন্বয়
সাধারণ ডিমের পুষ্টিগুণ
ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ হোক বা না হোক, ডিম একাই প্রোটিন, ভিটামিন ডি, আয়রন এবং বি-১২ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিতে ভরপুর।
ডিমে থাকে কোলিন, যা মানবদেহের সুস্থ কোষঝিল্লি, মানসিক কার্যকারিতা এবং স্মৃতিশক্তির জন্য প্রয়োজন। এছাড়া এই কোলিন শরীরে হোমোসিস্টাইনের মাত্রা কম রাখতে সাহায্য করে। প্রোটিন সংশ্লেষণ ও বিপাক ব্যাহত করার পাশাপাশি হোমোসিস্টাইন কোষের বিভিন্ন কার্যকারিতা বিশেষ করে ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
ডিমে থাকা সেলেনিয়াম নামক খনিজটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য দরকার।
ভিটামিন বি এর পাওয়ার হাউজ হচ্ছে ডিম। এর মৌলিক উপাদান ফোলেট এবং রাইবোফ্ল্যাভিন শরীরের জন্য দরকারি খাবারগুলোকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। ফোলেট হোমোসিস্টাইনের মাত্রা কমাতে এবং জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে অংশ নেয়।
এছাড়া ডিম ভিটামিন এ ও ই এর একটি ভালো উৎস। ভিটামিন এ রাতের দৃষ্টিশক্তির প্রখরতা, কোষের সাধারণ বৃদ্ধি এবং ত্বকের সুস্থতায় কাজ করে। ভিটামিন এ এর সঙ্গে সম্পর্কিত দুটি উপাদান লুটেইন এবং জিয়াজান্থিন, যেগুলো পাওয়া যায় ডিমের কুসুমের হলুদ রঞ্জক পদার্থে। এগুলো চোখের রেটিনায় ম্যাকুলার অবক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে। ম্যাকুলার অবক্ষয় বার্ধক্যের সময় স্থায়ী ভাবে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়।
আরও পড়ুন: কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ব্যবহার কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, বিজ্ঞান কী বলে?
ভিটামিন ই একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ভিটামিন সি এবং সেলেনিয়ামের সঙ্গে মিলে শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল মুক্ত করে। ফ্রি-র্যাডিকেলের কারণে প্রদাহ জনিত রোগ এবং টিস্যুর ক্ষয় হয়ে থাকে।
ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিমের পুষ্টিগুণ
একটি ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ ডিমে ৬০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকতে পারে, যা সাধারণ ডিমের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। এই ডিমগুলো সাধারণ ডিমের তুলনায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং সামান্য কম কোলেস্টেরল প্রদান করে। ওমেগা-৩-এর কার্ডিও-প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবের কারণে এই ডিমগুলো উচ্চ কোলেস্টেরল থাকা এবং হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বেশ উপকারী।
এছাড়া ইপিএ এবং ডিএইচএ বিভিন্ন খাবার উৎসে পাওয়া যায়। কিন্তু এএলএ’র সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য উৎস হচ্ছে ডিমের কুসুম। তাই এএলএ’র উপরোক্ত উপযোগিতাগুলো পেতে হলে ওমেগা-৩ ডিম খেতে হবে।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
শেষাংশ
ওমেগা-৩ এর এএলএ (আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড) পুষ্টি উপাদানের স্বাস্থ্যগুণের বিচারে ওমেগা-৩ মুরগির ডিম নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য। বিশেষ করে ওমেগা-৩ এর অন্যান্য উৎসগুলোর তুলনায় ডিম সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার সব থেকে পরিচিত এবং উপাদেয় এই খাবারটি বাড়ন্ত বয়স থেকে শুরু করে সব বয়সেই প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। সেখানে ৫ গুণ বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি বিকল্প দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে আরও বেশি সহায়ক হতে পারে।
আরও পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
৬ মাস আগে
ডিমের মজুতের বিষয়টি তদারকি করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, ডিমের দাম কিছুটা বেশি। হিমাগারে ডিম মজুতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি তদারকি করা হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বোরো উৎপাদন ভালো হয়েছে। চালের কোনো ঘাটতি নেই, দাম স্থিতিশীল আছে। আলুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে, পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত আছে, কোনো সমস্যা হবে না।
সোমবার(২৭ মে) সচিবালয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও মজুত কার্যক্রম তদারকিবিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে মন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইনোভেশন শোকেসিংয়ের মাধ্যমে কৃষকরা উপকৃত হবেন: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমাদের মনিটরিং চলছে। আমরা কিন্তু বসে নেই, জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের সচিবদের যোগাযোগ হচ্ছে। আমাদের সচিবরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো জেলার ডিসিকে ফোন করেন।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের সার্বিক বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য আমরা এই তিন মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে বসেছিলাম। যেটুকু ফলাফল পাওয়ার প্রত্যাশা করেছিলাম সেটুকু ফলাফলের আমরা অনেকাংশ পেয়েছি।
তিনি বলেন, আজকেও আমরা একমত হয়েছি। বর্তমান অবস্থা কি এবং আমরা ভবিষ্যতে কী কী ব্যবস্থা নিতে পারি। সামনে আমাদের বাজেট আসছে। বাজেট আসার পর একটা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।
আগামীতে সব পর্যায়ের বাজার ব্যবস্থা যাতে আরও সুন্দরভাবে নিশ্চিত হয়, সে জন্য সবাই কাজ করার জন্য একমত হয়েছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, অতীতেও একমত ছিলাম। এটাতে আরও নতুন নতুন কিছু বিষয় যোগ হয়েছে কি না সেটা আমরা আলোচনা করেছি।
দেশে মূল্য পরিস্থিতি সহনীয় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। না হলে কিন্তু আপনারা দেখতেন দুইদিন পরপর মিছিল মিটিং এগুলো হতো। আমরা তো মিছিল করেই এত বড় হয়েছি। এগুলো নিয়ে তো আমাদের অভিজ্ঞতার অভাব নেই।
মন্ত্রী বলেন, চাল, চিনি, আদা, রসুন সব কিছুরই তুলনামূলক চিত্র আমরা দেখেছি, আমাদের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কেমন। সব জায়গায় আমরা একটা প্রিমিয়াম পজিশনে আছি। তাই আমি বলবো আমাদের দেশের নাগরিকদের অসন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। জনগণকে আমরা সন্তুষ্ট রাখার জন্য সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আগামীতে চালিয়ে যাব।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সজাগ আছেন। তিনি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। কালকে হয়তো উনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে আমাদের কথা হবে, আমরা যে আজকে সভা করেছি সেটি তাকে অবহিত করব।
কৃষিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: পানির প্রতিটি ফোঁটার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
প্রধান খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ: কৃষিমন্ত্রী
৬ মাস আগে
ফরিদপুরে ডিমের বাজারে অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
অস্থির হয়ে ওঠা ডিমের দাম সহনীয় পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজার ও আড়তে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে শহরের বিভিন্ন ডিমের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে ৩ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেককে ১২ হাজার টাকা করে জরিমানা করে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখের নেতৃত্বে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন বাজার তদারকি করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা ২৯ লাখ, উৎপাদন মাত্র ৪ লাখ
অভিযানে ডিমের দামে কারসাজি করা, ডিমের কেনা-বেচার রশিদ না থাকা, মূল্য তালিকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করার অপরাধে মিতালী ট্রেডার্স, মোল্লা স্টোর ও দিশারী টেড্রার্সকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে জরিমানা করা হয়।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ জানান, ফার্মগুলো প্রতি পিস ডিম ৯ দশমিক ৪৭ টাকায় বিক্রি করে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে। সেক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত দামে তাদের ১০ দশমিক ৫৭ টাকায় বিক্রি করার কথা। কিন্তু এসব অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিটি ডিম ১১ দশমিক ৫০ টাকা থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করছেন। যা অপরাধ।
এমন খবর পেয়ে ভোক্তাদের ন্যায্য মূল্যে ডিম পেতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
বাজার তদারকি অভিযানে জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন এবং জেলা পুলিশের টিম উপস্থিত থেকে অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
আরও পড়ুন: সবজির দাম স্থিতিশীল হলেও এখনো চড়া, বাড়ছে ডিম, মুরগি ও মাছের দামও
৬ মাস আগে
সিলেটে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা ২৯ লাখ, উৎপাদন মাত্র ৪ লাখ
সিলেট বিভাগে প্রতিদিন ২৫ লাখ ডিমের ঘাটতি রয়েছে। এই অঞ্চলে প্রতিদিন হাঁস ও মুরগির ডিমের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৯ লাখ।
চাহিদার বিপরীতে সিলেটে মাত্র ৪ লাখ ডিম উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।
এতে দেখা গেছে প্রতিদিন অন্তত ২৫ লাখ ডিম সিলেট বিভাগের বাইরে থেকে এনে চাহিদা মেটাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মধুখালীতে ন্যায্য মূল্যে দুধ-ডিম-গরুর মাংস বিক্রি উদ্বোধন
শনিবার (১৮ মে) সকালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের (ওয়াপসা বিবি) বিভাগীয় কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, হাঁসের ডিমের পুষ্টিগুন মুরগির ডিমের চেয়ে বেশি। এতে অন্য কোনো এলার্জেন্স নেই। দেশের ৪৫ ভাগ মানুষ প্রাণিজ প্রোটিনের উপর নির্ভরশীল। প্রাণিজ প্রোটিনের অন্যতম উৎস হলো পোলট্রি শিল্প। অথচ সিলেট অঞ্চলে লেয়ার খামার ও পোলট্রি হ্যাচারি নেই বললেই চলে।
বক্তারা আরও বলেন, সিলেট অঞ্চলে কর্মক্ষম যুব সমাজকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি গ্রামীণ নারীদের পোলট্রি শিল্পে নিয়োজিত করতে পারলে এ অঞ্চলে মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। পোলট্রি শিল্পেও কৃষির মতো কমার্শিয়াল বিদ্যুৎ বিলের পরিবর্তে আবাসিক বিল দিতে হবে। একইসঙ্গে উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের সুবিধা বাড়াতে হবে।
কর্মশালায় জানানো হয়, সিলেট জেলায় সোনালি জাতের মুরগির চাহিদা রয়েছে এক লাখ। অথচ স্থানীয়ভাবে সরবরাহ হচ্ছে ১০ হাজারের মতো।
কর্মশালায় বায়ু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রান্তিক চাষি পর্যায় থেকে বাজার পর্যন্ত ডিমের দামের বৈষম্য কমানোর তাগিদ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সবজির দাম স্থিতিশীল হলেও এখনো চড়া, বাড়ছে ডিম, মুরগি ও মাছের দামও
কর্মশালায় অংশ নেওয়া গবেষকরা বলেন, সিলেটের হাওরাঞ্চলে হাঁস পালনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে ব্যক্তি পর্যায়ে কাজে লাগানো যায়।
সিলেট কৃষি বিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, অ্যানিমেল ও বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূইঞা।
অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা লাকীর সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- ওয়াপসা বিবির সহসভাপতি অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় চিফ এপিডেমিউলজিস্ট ডা. আছির উদ্দিন, ওয়েস্টার পোলট্রি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন- ওয়াপসা বিবির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন।
আরও বক্তব্য দেন- অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব—ই—ইলাহী, অধ্যাপক ড. এম রাশেদ হাসনাত।
আরও পড়ুন: ৩৫টি জেলায় দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
৭ মাস আগে
৩৫টি জেলায় দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ঢাকাসহ ৩৫টি জেলায় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।
এ কার্যক্রমের আওতায় উদ্বোধনের দিন থেকে ২৭ রমজান পর্যন্ত ৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৭১ জন জন সুলভ মুল্যে দুধ, ডিম, মাংস কিনেছেন।
সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের চিকিৎসা ও শিক্ষা অনুদান ফোসার
এতে কলা হয়, প্রথমে রাজধানীতে এ কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে ঢাকাসহ ৩৫ টি জেলায় সুলভ মুল্যে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রয় করা হচ্ছে।
জেলাগুলো হলো- ঢাকা, চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী (সেনবাগ), ফেনী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, বান্দরবান, রাঙামাটি, রাজশাহী, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, জয়পুরহাট, নাটোর, বগুড়া, চাপাইনবাবগঞ্জ, বাগেরহাট, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, যশোর, সাতক্ষীরা, রংপুর, মৌলভীবাজার, নওগাঁ (বদলগাছী)।
তবে উৎপাদন খরচ ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বিবেচনায় ঢাকা জেলা ছাড়া বাকি জেলাগুলোতে পণ্যের দামের তারতম্য রয়েছে এবং বিভিন্ন তারিখে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
২৭ রমজান পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৮ কেজি গরুর মাংস, ৫ হাজার ১৩১ কেজি খাসির মাংস, ২ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ কেজি ড্রেসড ব্রয়লার, ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬১ লিটার তরল দুধ ও ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩৫৬ ডিম বিক্রয় করা হয়েছে।
২৭ রমজান পর্যন্ত সর্বমোট ২২ কোটি ৩৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকার এসব পণ্য বিক্রয় করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজনের সহযোগিতায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
পবিত্র রমজাম মাস উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গত ১০ মার্চ থেকে রাজধানীর ৩০টি স্থানে সুলভ মুল্যে দুধ, ডিম ও মাংস এবং ৮টি স্থানে মাছ বিপণন করা হচ্ছে।
রাজধানীতে তরল দুধ প্রতি লিটার টাকা এবং ডিম প্রথমদিকে ৯ দশমিক ১৭ টাকা হিসেবে এক ডজন ১১০ টাকা দরে বিক্রয় করা হলেও বর্তমানে প্রতি ডজন ১০০ টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে।
মাছ বিক্রয় কার্যক্রম ১৫ রমজানে শেষ হলেও দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রয় কার্যক্রম ২৮ রমজান পর্যন্ত চলবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান এ মাসের ১০ তারিখে সুলভ মুল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: পুনরাবৃত্তি-মূলধনী ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ অর্থ মন্ত্রণালয়ের
কক্সবাজারে বন কর্মকর্তার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: পরিবেশমন্ত্রী
৮ মাস আগে