বেহাল দশা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশে বেহাল দশা, হুমকিতে অর্থনীতির গতি
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে খানা-খন্দকের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটারের রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নোয়াপাড়া সহ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অংশেরও একই হাল।
এছাড়া আদর্শ সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর থেকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পর্যন্ত দুই লেনের সড়কের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সড়কের এই বেহাল অবস্থায় বিশেষ করে পণ্য বোঝাই বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। যার ফলে যানবাহনের গতি কমেছে এবং ঘন ঘন যানযটের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে যানজটের ভোগান্তি এবং ধুলো দূষণ যাত্রীদের জন্য প্রতিদিনের অগ্নিপরীক্ষায় পরিণত হয়েছে।
চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার একটি বড় অংশ ভেঙে যাওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
মহাসড়কের বাইরে কুমিল্লার অন্যান্য আঞ্চলিক সড়কও বেহাল অবস্থায় রয়েছে।
৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক খানা-খন্দ ও সরু হওয়ায় চালক ও যাত্রী উভয়ের জন্য ভ্রমণকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।
যাত্রী ও চালকদের ওপর প্রভাব
কুমিল্লা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের (বাস মালিক সমিতি) সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, 'কুমিল্লায় মহাসড়কের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চালক-যাত্রী উভয়কেই চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজট, ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মিনিবাস চালক আবুল হোসেন প্রতিদিনের ভোগান্তির বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সরু রাস্তা, ভারী যানবাহন এবং গর্ত সব মিলিয়ে চালকদের জন্য একটি নিয়মিত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মুজাফফরগঞ্জ থেকে আসা যাত্রী আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লা অংশটি তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চাঁদপুর অংশে যাতায়াত অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
সাম্প্রতিক বন্যা ও ভারী বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা।
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, 'আমরা ১৫ দিনের মধ্যে মেরামতের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছি।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের বৃহত্তম বন্দর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার সংযোগকারী প্রধান সড়ক হিসেবে কাজ করে।
এই মহাসড়কটি গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষির মতো শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনকে সহজতর করে, যা আমদানি-রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এই রুট দিয়ে পরিচালিত হয়। যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য এর গুরুত্ব তুলে ধরে।
যানজট নিরসন ও বাণিজ্য করিডোর হিসেবে মহাসড়কটির সক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য মহাসড়কটির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বেহাল দশা শুধু সড়ক নিরাপত্তাই নয়, দেশের অর্থনৈতিক গতিকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮ কিলোমিটার যানজট
১ সপ্তাহ আগে
রূপগঞ্জে সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী
ডেমরা-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়কের মুশুরী থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সড়কটির স্থানে স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট গর্তে কোথাও হাঁটু সমান পানি। আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমে থাকে। প্রতিদিনই হালকা পরিবহন উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রাস্তার দুই পাশ দিয়ে পথচারীরা চলাচল করতে পারছে না। পাকা রাস্তার মাঝখানে কাদার ছড়াছড়ি। দিন-দিন এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়েই চলছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর বেহাল দশা, রোগীর সেবায় পরিচ্ছন্নকর্মীরা
পাথরবাহী লড়ি ও মালবাহী ট্রাক অবাধে চলাচল করার কারণে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে বলে স্থানীয়দের জানান। সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে স্থানীয় লোকজনের ভোগান্তিও চরমে উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলা সদর, থানা, সাব রেজিষ্ট্রি অফিস, প্রধান ডাকঘর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা লোকজনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ইছার মাথা ও ইটবহনকারী ট্রাক চলাচল করে সড়কটি ভেঙে যাচ্ছে। রাতের আঁধারে এনডিই এর পাথরবাহী ট্রাক সহ মালবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কটি দিন দিন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। স্থানে স্থানে খানাখন্দের গর্তে পানি জমে থাকায় হালকা যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গাড়ির মালিকরা।
হারিন্দা গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সড়কটি ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় তাদের উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বাজারজাত করতে পারছেন না তারা। তাতে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অন্যদিকে পরিবহন খরচ ও সময় বেশি লাগছে। অনেকেই দশ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে বিকল্প রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করতে বাধ্য হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের বেহাল দশা, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘ডেমরা-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়কটি এলজিইডির হলেও আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে রাস্তাটি একাধিকবার সংস্কার করেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। শিগগিরই সড়কটি সংস্কার করা হবে বলে আমি আশা করি।’
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জামালউদ্দিন জানান, ডেমার-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়কের উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলছে। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শাহজাহান ভুঁইয়া বলেন, এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সড়কের উভয়পাশ ৩ফুট প্রশ্বস্ত করে দ্রুত সংস্কার কাজ করা হবে।
৩ বছর আগে
পঞ্চগড়-দেবীগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা, দুর্ভোগ চরমে
পঞ্চগড় জেলা শহর থেকে দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরে যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক পঞ্চগড়-ভাউলাগঞ্জ-দেবীগঞ্জ সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। এক বছর ধরে ভাঙা চোরা খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে রিকশা-ভ্যান, অটো ও সিএনজি, বাস ও ট্রাক চালকরা হেলে-দুলে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যাত্রীরা।
৪ বছর আগে
রাঙ্গাবালীতে সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ
পটুয়াখালীর সাগর উপকূলীয় রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে অধিকাংশ সড়কই কাঁচা। দীর্ঘদিনেও সড়কের কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা মাটিতে একাকার হয়ে যায় মাটির রাস্তাটি। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন ওই এলাকার অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।
৪ বছর আগে
বেহাল অবস্থায় কুমিল্লার চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন
প্রায় ১০ একর জমির ওপর গড়ে তোলা কুমিল্লার চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন এক সময় জেলাবাসীর বিনোদনের অন্যতম স্থান ছিল। কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এতে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।
৫ বছর আগে