ধনী দেশ
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি তহবিল সম্পূর্ণরূপে চালু করুন: ধনী দেশগুলোর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
ক্ষয়ক্ষতি তহবিলকে পুরোপুরি চালু করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি তহবিলটি সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়া উচিত।’
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেসের (ইউএনওপিএস) নির্বাহী পরিচালক জর্জ মোরেইরা দা সিলভা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
ক্ষয়ক্ষতি তহবিলের লক্ষ্য হলো দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া। কারণ তারা জলবায়ু পরিবর্তনের অনিবার্য ঝুঁকি থেকে উদ্ভূত নেতিবাচক পরিণতিগুলো যেমন- ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, চরম তাপপ্রবাহ, মরুকরণ, দবানল, ফসল ব্যর্থতা প্রভৃতি মোকাবিলা করে।
ধনী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি পালন না করায় প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘ধনী দেশগুলো থেকে ক্ষয়ক্ষতি তহবিলের প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যাপ্ত নয়।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শেখ রাসেল দিবস ২০২৩ উদযাপন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বাংলাদেশকে একটি জলবায়ু সহনশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নিজস্ব সম্পদ দিয়ে জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন।
তিনি বলেন, তারা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় কক্সবাজারের খুরুশকুলে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের বাড়ি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গ্রিন বেল্ট, কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট তৈরি করেছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণকে জলবায়ু সহনশীল ঘর দেওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ করেছে।
ইউএনওপিএস কর্মকর্তা শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের, বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ইউএনওপিএস স্বাস্থ্য পরিষেবার মহাপরিচালকের সহযোগিতায় বাংলাদেশের ২৯টি হাসপাতালের জন্য মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় প্লান্ট নির্মাণ করা হলে ভালো হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময় এবং ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় মানবিক প্রয়োজনে সাড়া দেওয়ার জন্য ইউএনওপিএসকে অভিনন্দন জানান।
তিনি ইউএনওপিএস’র প্রকল্প পরিচালনার দক্ষতার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় ইউএনওপিএস প্রমাণিত দক্ষতা বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্কৃতি উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
বৈঠকে অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ম্যান্ডেট না পাওয়া পর্যন্ত জাতিসংঘ বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সম্পৃক্ত হবে না: মুখপাত্র দুজারিক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে: প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে
কপ-২৭: ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে অর্থ দিতে এখনও একমত হয়নি ধনী দেশগুলো
এবারের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) অংশগ্রহনকারী দেশগুলো এখনও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কর্মসূচির আওতায় ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি এই সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিয়াউল হক ইউএনবিকে বলেন, উন্নত দেশগুলো ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কর্মসূচির কাঠামো চূড়ান্ত করার জন্য ২০২৪ সালকে নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতিসহ জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে অর্থ দেয়ার প্রাথমিক ইস্যুতে আমরা একমত হতে পারিনি। কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রশমন কর্মসূচির পরিধি নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি মনে করি না যে আমরা এই বছরের সম্মেলনে খুব বেশি অর্জন করব, কারণ ধনী দেশগুলো পুরনো ইস্যুতেই ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যস্ত।’
আরও পড়ুন: কপ-২৭ আলোচনায় সবুজ জলবায়ু তহবিল আদায়কে অগ্রাধিকার দেয় বাংলাদেশ: ইউএবনবিকে জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী
তিনি আরও বলেন যে কপ-২৭ এ অংশগ্রহনকারীরা বর্তমানে অভিযোজন ও ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কর্মসূচির বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রার রূপরেখা প্রস্তুত করছে, যাতে পরবর্তী সম্মেলনে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
জিয়াউল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার বিষয়টি প্রতিটি সম্মেলনে ব্যাপকভাবে আলোচিত হলেও নীতিমালার অভাব থাকায় কেউ কোনও অর্থ প্রদান করে না। এজন্য আমরা অভিযোজন সংক্রান্ত বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। আশা করি পরবর্তী সম্মেলনে লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্ত করা হবে এবং তারপর আমরা অর্থ পাব।’
কপ-২৭ এ বিভিন্ন বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে ইউএনবি জানতে পেরেছে যে গ্লাসগো-শারম আল-শেখ ওয়ার্ক প্রোগ্রাম অন মিটিগেশনের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো এই কাজের কর্মসূচির জন্য চাপ দিচ্ছে।
কোন দেশগুলোতে প্রথমে কার্বন নির্গমন পরীক্ষা করতে হবে তা এই কর্মসূচির আওতায় তালিকা করা হবে। এছাড়াও, এই কর্মসূচির আওতায় ২০৩০ সাল পর্যন্ত কী পরিমাণ কার্বন নির্গত হচ্ছে তার একটি সমন্বয় প্রতিবেদনও প্রস্তুত করা হবে।
এই বিষয়ে কপ-২৭ এ ৩৮টি অনুচ্ছেদের সমন্বয়ে একটি খসড়া নথি প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে অংশগ্রহনকারীরা একে সংক্ষিপ্ত করতে অনুচ্ছেদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছে।
সম্মেলনে কর্মকর্তা স্তরের আলোচনা শেষ হয়েছে এবং বর্তমানে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা চলছে। সম্মেলনটি শুক্রবার শেষ হলে অংশগ্রহনকারী দেশগুলোর মন্ত্রীদের অনুমোদিত চুক্তি হিসেবে ‘শারম আল-শেখ সিদ্ধান্ত’ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৭ সম্মেলনে লস এন্ড ড্যামেজ স্বীকৃতি পেয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন এবারের কপ-২৭ আলোচনার মূল ফোকাস: তথ্যমন্ত্রী
২ বছর আগে
জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ধনী দেশগুলো ব্যর্থ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিণতি মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না।
বৃহস্পতিবার তার কার্যালয়ে ইইউ কমিশনার ফর হোম অ্যাফেয়ার্স ওয়াইভা জোহানসনের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
২০০৯ সালে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী উন্নত দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে পরিণতি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রতি বছর সহায়তা হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ না হওয়ায় কিছু উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে তাদের উষ্ণতা নির্গমন হ্রাস ত্বরান্বিত করার জন্য অবিশ্বাস এবং অনীহা তৈরি হয়েছে।
ইহসানুল করিম বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য তাকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, আগামী বছর ইইউ ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করবে।
তারা রোহিঙ্গাসহ অভিবাসন ইস্যুতেও আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা।
তিনি আরও বলেন, নতুন শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
হাসিনা আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপ নেয়া উচিত, যার জন্য সারা বিশ্ব এখন ভুগছে।
ঝুঁকিপূর্ণ পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশিদের অভিবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার এটা বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, আইওএম-এর সহায়তায় আমরা কয়েকজন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে নিয়েছি।
ইভা জোহানসন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইইউ বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইইউ বর্তমানে সাড়ে চার মিলিয়ন ইউক্রেন শরণার্থীকে আতিথ্য দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে অনেক বাংলাদেশি বসবাস করছেন।
‘কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রবেশের চেষ্টা করে। আমাদের জনবল দরকার, এখান থেকে (বাংলাদেশ) মানুষ যদি আইনি পথে আসে তাহলে উভয়ের জন্যই লাভজনক হবে।
তারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন।
জোহানসন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের পদক্ষেপ জানতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই নিজস্ব সম্পদ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমনে পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনে সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সারাদেশে অনেক গাছ লাগানো হচ্ছে। বাংলাদেশ যেকোনও ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের গৃহীত নীতির কারণে নারীরা এখন প্রতিটি খাতে ভালো কাজ করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার তৃণমূলের উন্নয়নে বিশ্বাসী। ‘আমাদের লক্ষ্য তৃণমূল মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা।’
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
আরও পড়ুন: টানা ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকার বাচ্চারা ফ্ল্যাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ধনী দেশগুলোকে প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার আহ্বান
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার, স্থানীয় সিএসও, রোহিঙ্গা প্রতিনিধি, আরআরআরসি, জেলা প্রশাসক ও আইএসসিজি’র অংশগ্রহণে একটি একক কর্তৃপক্ষ গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে এ সংকট নিয়ে কর্মরত ৫০টিরও বেশি সিএসও এনজিওর নেটওয়ার্ক কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ)।
৪ বছর আগে