সম্পদ
হলফনামায় প্রার্থীদের সম্পদের সত্যতা ও সম্পদের বৈধতা যাচাইয়ের আহ্বান টিআইবির
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের হলফনামায় প্রকাশ করা আয়, সম্পদ, ঋণ এবং ঋণের সত্যতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ঢাকায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ কথা জানায়।
টিআইবি ‘হলফনামায় প্রার্থী পরিচিতি’ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ ও ‘নো ইউর ক্যান্ডিডেট’ ড্যাশবোর্ড উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাজস্ব বিভাগ প্রার্থীদের হলফনামার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে স্বপ্রণোদিত হয়ে সেগুলো যাচাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম, সহসমন্বয়ক ও ড্যাশবোর্ড প্রস্তুতকারী রিফাত রহমান এবং কে. এম. রফিকুল আলম।
প্রতিবেদন উপস্থাপনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের সমন্বয়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর হলফনামায় দেওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ও আয়ের উৎস, মামলার বিবরণী, প্রার্থীর নিজের ও তার নির্ভরশীলদের আয়-ব্যয়, সম্পদ ও দায়-দেনা এই আট ধরনের তথ্যকে বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করেছে টিআইবি।
প্রতিবেদনের পাশাপাশি ইন্টারঅ্যাকটিভ ড্যাশবোর্ডটিও তৈরি করা হয়েছে। ড্যাশবোর্ডের লিংক: https://www.ti-bangladesh.org/kyc এর মাধ্যমে সর্বশেষ চারটি জাতীয় নির্বাচনের অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর সার্বিক, আসন ও দলভিত্তিক তুলনামূলক চিত্র দেখা যাবে। ড্যাশবোর্ডটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ হয়: টিআইবি
এর মাধ্যমে একদিকে যেমন ভোটারগণ ঘরে বসেই নিজ এলাকার প্রার্থী সম্পর্কে তথ্য ও তুলনামূলক চিত্র পাবেন, অন্যদিকে ইসি, দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ স্ব স্ব এখতিয়ার অনুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তথ্যের বহুমুখী বিশ্লেষণের সুযোগ নিতে পারবে।
প্রতিবেদনে দেখানো হয়, সর্বশেষ তিনটি ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে দ্বাদশ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। কোনো দলই তিনশ’ আসনে প্রার্থী দেয়নি, তবে শতভাগ আসনেই কমপক্ষে এক বা অনেক ক্ষেত্রে একাধিক প্রার্থী হয় ক্ষমতাসীন দলের সদস্য বা সমর্থনপুষ্ট।
প্রার্থীদের অর্ধেকের বেশিই প্রায় ৫৭ শতাংশই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রার্থী স্বশিক্ষিত।
সর্বশেষ তিনটি ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ৫৭ শতাংশ ব্যবসায়ী প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
গত ১৫ বছরে ব্যবসায়ী প্রার্থীদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে ১০ শতাংশ।
অন্যদিকে, বছরে ১ কোটি টাকা আয় করেন এমন প্রার্থীর সংখ্যা এবার সর্বোচ্চ ১৬৪ জন। তবে কোটি টাকার কম আয় করে এমন প্রার্থীর হার ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
এবার প্রায় ২৭ শতাংশ প্রার্থী কোটিপতি (অস্থাবর সম্পদ মূল্যের ভিত্তিতে)। শতকোটিপতি প্রার্থী সংখ্যায় ১৮, সর্বোচ্চ কোটিপতির প্রদর্শিত সম্পদমূল্য ১ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সর্বশেষ তিনটি ও আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক কোটিপতি প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন।
অর্থাৎ, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও কোটিপতি প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে নবম নির্বাচনে কোটিপতি প্রার্থী ছিলেন মাত্র ২৭ শতাংশের কিছু বেশি। সেটি ১৫ বছরের ব্যবধানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ শতাংশে। এদিকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করা প্রার্থীদের প্রায় ৪৭ শতাংশই কোটিপতি।
আরও পড়ুন: আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পক্ষে, কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়: টিআইবি
হলফনামায় আরও দেখা যাচ্ছে, অনেক প্রার্থীর নামেই বড় আকারের (সর্বোচ্চ ৮১৩ একর) ভূমির মালিকানা রয়েছে। অথচ, দেশের আইন (ল্যান্ড রিফর্ম অ্যাক্ট-২০২৩) অনুযায়ী একজন ব্যক্তির ভূমির মালিকানা পাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা (কৃষি জমির ক্ষেত্রে ৬০ বিঘা এবং অ-কৃষি জমিসহ যা ১০০ বিঘা পর্যন্ত যেতে পারে)।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রায় ২৭ শতাংশেই ঋণ বা দায় আছে। যার মোট পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।
হলফনামার তুলনামূলক হিসাবে দেখা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের কারো কারো আয় সর্বোচ্চ ২ হাজার শতাংশের বেশি বেড়েছে। ৫ বছরে এমপিদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আয় বৃদ্ধির হার ২ হাজার ২৩৮ শতাংশ এবং ১৫ বছরে এই হার ৭ হাজার ১১৬ শতাংশ। একইভাবে, ৫ বছরে এমপিদের সর্বোচ্চ সম্পদ বৃদ্ধির হার ৫ হাজার ৪৭০ শতাংশ। ১৫ বছরে এই হার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৩ শতাংশ।
মন্ত্রী/ প্রতিমন্ত্রীদের ৫ বছরে আয় সর্বোচ্চ বেড়েছে ২ হাজার ১৩৪ শতাংশ, একই সময়ে ৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ শতাংশ এবং ১৫ বছরে বেড়েছে ৬ হাজার ৩৫০ শতাংশ।
তবে হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য পর্যাপ্ত কিনা বা বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা যায়, টিআইবির প্রাপ্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুযায়ী, সরকারের মন্ত্রিসভার অন্তত একজন সদস্যের নিজ নামে বিদেশে একাধিক কোম্পানি থাকার প্রমাণ রয়েছে, যার প্রতিফলন হলফনামায় নেই।
মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মালিকানাধীন ছয়টি কোম্পানি এখনও বিদেশে সক্রিয়ভাবে রিয়েল এষ্টেট ব্যবসা পরিচালনা করছেন। যে সকল কোম্পানির মোট সম্পদ মূল্য প্রায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়ার সম্ভাবনা নেই: টিআইবি
বার্ষিক আয় কমলেও ৫ বছরে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সম্পদ বেড়েছে ৪ গুণ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সংসদ সদস্য হাসানুল ইনুর আয় তেমন না বাড়লেও গত ৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।
এই সময়ে তার বার্ষিক আয়ের পরিমাণ সামান্য কমে ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮০৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, গত ১০ বছরে ইনুর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ২৯ গুণ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী, পেশায় রাজনৈতিক কর্মী ও প্রকৌশলী হাসানুল হক ইনু। তার আয়ের বড় অংশ আসে ব্যবসা, বেতন-ভাতা, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ও টিভি টকশো থেকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় ইনু ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৭ লাখ ৬২ হাজার ১৪৯ টাকা, বেতন-ভাতা থেকে তার আয় ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৫৮০ টাকা, টিভি টকশো ও ব্যাংক সুদ থেকে পেয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৭০ টাকা। সব মিলিয়ে তার বার্ষিক আয় ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮০৪ টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় তিনি আয় দেখিয়েছিলেন ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৬২৩ টাকা। সে হিসেবে ইনুর বার্ষিক আয় একটু কমে গেছে।
তা সত্বেও, গত পাঁচ বছরে হাসানুল হক ইনুর সম্পদ বেড়ে প্রায় ৪ গুণ হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামায় তিনি সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন ১ কোটি ১৫ লাখ ৭ হাজার ৮৬৬ টাকা।
আরও পড়ুন: বিএনপির নেতারা গণতন্ত্রের ফেরেশতা নয়: ইনু
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় দেওয়া তথ্যে এর পরিমাণ ৩ কোটি ৯২ লাখ ৭৬ হাজার ২২৯ টাকা।
বর্তমানে ইনুর নগদ অর্থের পরিমান ৩ কোটি ৫৬ লাখ ১৫৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার নামে জমা রয়েছে ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯২৪ টাকা, সোনা রয়েছে ২৫ ভরি।
১৯৭৪ সালের দাম অনুযায়ী এই সোনার দাম দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার ৫০০ টাকা।
এছাড়া, তার ৪ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি আছে। আর রাজধানীর পূর্বাচলে ১০ কাঠার একটি প্লট রয়েছে, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা।
তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী হলফনামায় ইনুর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে।
স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৮৫ লাখ ৫২ হাজার ২৫৮ টাকা।
এর মধ্যে নগদ অর্থ রয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৩ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ২৭০ টাকা, তার নামে ৭ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৫ টাকার একটি অ্যাপার্ন্টমেন্ট আছে।
এছাড়া, তার স্ত্রীর ৪০ ভরি সোনা আছে, ১৯৭৪ সালের বাজার মূল্য অনুযায়ী এ সোনার দাম দেখানো হয়েছে ১২ হাজার টাকা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় হাসানুল হক ইনু তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৬০ লাখ ৩ হাজার ২৫৮ টাকা।
আর দশম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় জাসদ সভাপতি তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৬ লাখ ৩৮ হাজার ১৯০ টাকা।
আরও পড়ুন: সংবিধান পর্যালোচনার জন্য সংসদীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব ইনুর
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে ক্ষমতাবাজী বন্ধ এবং বৈষম্যের অবসান করতে হবে: ইনু
দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হুইপ সামশুল হক ও তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৪১ গুণ
দেড় দশকে জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর আয় বেড়েছে ৪১ গুণ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দেওয়া হলফনামায় তার সম্পদের এ বিবরণ পাওয়া যায়।
সামশুল হক বর্তমানে আওয়ামী লীগের এমপি হলেও এবার তাকে মনোনয়ন দেয়নি দলটি। তাই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়েছেন।
গত ৩০ নভেম্বর ইসিতে হলফনামা জমা দেন সামশুল হক।
আরও পড়ুন: বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আয় বৈষম্য বেড়েছে: ড. বিনায়ক সেন
এতে দেখা যায়, ২০০৮ সালে জমা দেওয়া হলফনামার চেয়ে সামশুল হক ও তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৪১ গুণ। একইসঙ্গে নিজের আয় বেড়েছে প্রায় ২১ গুণ।
২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, সেসময় তার বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ও অন্য ভাড়া থেকে ৪৫ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় হতো তার।
ওই সময়ে স্ত্রী কিংবা নির্ভরশীলদের কোনো আয় ছিল না হলফনামায়।
২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে সামশুল হক চৌধুরীর হাতে নগদ ছিল এক হাজার ৩৬৯ টাকা। লিমিটেড কোম্পানির ৪০টি শেয়ার ছিল।
যার মূল্য দেখানো হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের একটি টয়োটা গাড়ি ছিল। সোনা ও মূল্যবান ধাতু ছিল ২৫ হাজার টাকার। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ছিল ৩০ হাজার টাকার এবং ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছয় লাখ ৭৫ হাজার টাকার অকৃষি জমি, হালিশহর হাউজিং এস্টেট এবং রিয়াজ উদ্দিন বাজারে দুটি দালানের দাম দেখানো ছিল ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
ওই সময়ে ২৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকার ঋণ ছিল সামশুল হক চৌধুরীর।
অন্যদিকে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলে দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, বর্তমানে স্ত্রীসহ হুইপের বার্ষিক আয় ৮৮ লাখ ৫২ হাজার ১৯৮ টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর বার্ষিক আয় রয়েছে ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৮ টাকা।
বার্ষিক আয়ের মধ্যে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকানসহ অন্য ভাড়া খাতে আয় ১৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৪ টাকা। ব্যবসা খাতে আয় ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকা।
শেয়ার, সঞ্চয়পত্র কিংবা ব্যাংক আমানত খাতে আয় ৭ লাখ ৯৬ হাজার ১০৮ টাকা। হুইপের ভাতা খাতে ১১ লাখ চার হাজার এবং অন্য খাতে আয় রয়েছে ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৮ টাকা।
একইভাবে হুইপপত্নীর আয়ের মধ্যে বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকানসহ অন্য ভাড়া খাতে বছরে আয় ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮০০ টাকা। ব্যবসা খাতে আয় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা।
সঞ্চয়পত্র খাতে আয় চার লাখ ৬০ হাজার ৮০০ টাকা এবং ব্যাংক আমানতের সুদ হিসেবে আয় ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭১৮ টাকা।
আরও পড়ুন: বিএনপি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী: তথ্যমন্ত্রী
অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে বর্তমানে হুইপের হাতে নগদ রয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার ৬২৪ টাকা, রয়েছে ১০ হাজার ৩২ ডলার সাত সেন্ট। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯ টাকা।
গণনা প্রপার্টিজ লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ২৬০০ শেয়ার রয়েছে হুইপের। এই শেয়ারের দাম দেখানো হয়েছে দুই লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ১০০০ শেয়ার রয়েছে সামশুল হক চৌধুরীর। এসব শেয়ারের মূল্য দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে দুই কোটি ৩৫ লাখ টাকার। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩০ লাখ টাকার। এক কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি এবং ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মিলে মোট দুটি ল্যান্ড ক্রুজার রয়েছে হুইপ সামশুলের।
১৫ বছর আগের মতোই বর্তমানে সোনা ও মূল্যবান ধাতু ২৫ হাজার টাকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৩০ হাজার টাকার এবং ২০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। অন্য খাতে অস্ত্র ও ব্যবসায়িক মূলধন হিসেবে দেখানো হয়েছে ২২ লাখ ১৩ হাজার ৯২৭ টাকা।
একইভাবে হুইপপত্নীর নগদ টাকা রয়েছে ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৯৮৬ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৮২ টাকা। গণনা প্রপার্টিজ লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে ২০০০টি।
এসব শেয়ারের দাম দেখানো হয়েছে দুই লাখ টাকা। একইভাবে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের হুইপের সমপরিমাণ ১০০০ শেয়ার রয়েছে হুইপপত্নীর। এসব শেয়ারের মূল্য দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে দুই কোটি ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯১ টাকার। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৫০ লাখ টাকার এবং ব্যাংকে ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) রয়েছে তিন লাখ ৪০ হাজার টাকার।
এই সময়ে নতুন করে সোনা ও মূল্যবান ধাতু যুক্ত হয়েছে ৩০ তোলা। যার মূল্য দেখানো হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রী এক লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র রয়েছে ৬০ হাজার টাকার।
বর্তমানে ব্যবসায়িক মূলধন রয়েছে ৯ লাখ ৭ হাজার ৬১৩ টাকার।
এবার দাখিল করা হলফনামায় বলা হয়, সামশুল হকের স্থাবর সম্পত্তিতে কৃষি জমি না থাকলেও রয়েছে ৭৪ লাখ সাত হাজার ৯২০ টাকা পরিমাণের অকৃষি জমি। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ২৫০ টাকার মূল্যের অকৃষি জমি।
রয়েছে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকার দালান। স্ত্রীর নামে রয়েছে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের আটটি টিনশডে গোডাউন, নিজের নামে ৪৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের পাঁচ কাঠা জমিসহ চারতলা ভবন রয়েছে।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন, ছয় লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমির কথা। ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের দালানের তথ্য দিয়েছিলেন তখন।
সেবার স্ত্রীর নামে স্থাবর কোনো সম্পদ নেই বলে হলফনমায় উল্লেখ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি
বিএনপির ‘ আগুনসন্ত্রাস’ বন্ধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির আগুনসন্ত্রাস এবং দেশের ভূমি ও সম্পদ বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে দেওয়ার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। দেশের জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।
তিনি বলেন, শুক্রবার সমাবেশের নামে গণ্ডগোল করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এ জন্য তারা শনিবার আবার আগুনসন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে।
শনিবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ইয়ুথ গ্লোবাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘রাইজিং ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে দলের মধ্যে বড় বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, বাস পুড়িয়েছে, মানুষের সম্পত্তিতে আগুন দিয়েছে।
এই অপশক্তি দেশের তেল, গ্যাস, খনি বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালেও স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি অপশক্তি আমাদের মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, মানুষ জীবন দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। আজকেও যারা দেশের সম্পদ ও ভূমি বিশ্ব বেনিয়াদের হাতে তুলে দিতে চায়, মানুষ তা হতে দেবে না, তাদের প্রতিহত করবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, শনিবার বিএনপি যেসব বাস পুড়িয়েছে সেগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন বাস। অনেক কষ্ট করে, অনেক স্বপ্ন নিয়ে যে মানুষ বাস কিনেছে, সেই বাস তারা পুড়িয়ে দিয়েছে। অথচ সেসব মানুষের কোনো অপরাধ ছিল না।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এভাবে যারা রাজনীতির নামে মানুষ পোড়ায়, মানুষের সহায়-সম্পত্তি, স্বপ্নকে পোড়ায়, তাদের বর্জন করতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হবে।
আরও পড়ুন: কাঁটাতার ছিঁড়তে পারেনি নাড়ির বন্ধন: কলকাতায় তথ্যমন্ত্রী
আ. লীগ ক্ষমতায় না থাকলে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে: তথ্যমন্ত্রী
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ: জি কে শামীম ও তার মায়ের বিচার শুরু
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ -৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে আগামী ৭ নভেম্বর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করেন।
আদালতের কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি আট লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ এনে দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এরপর তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর দুদক জি কে শামীম ও তার মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেন।
আরও পড়ুন: জি কে শামীমসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় ২৫ সেপ্টেম্বর
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জি কে শামীম ২০১৮-১৯ কর বর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
এছাড়াও শামীমের বাসা থেকে উদ্ধার নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও সাত লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা, শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরও ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার এবং জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
অনুসন্ধানে জি কে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের কোনো বৈধ আয়ের উৎসও খুঁজে না পাওয়ায় মামলাটি করে দুদক। ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জি কে শামীমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন তাদের গুলশান থানায় অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: মাদক মামলায় হাইকোর্টে জি কে শামীমের জামিন আবেদন
জি কে শামীমের চার দেহরক্ষীর জামিন নিয়ে হাইকোর্টের রুল
পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিচার শুরু
৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কানাডায় অর্থ পাচারের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এর ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত চার্জ গঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত।
পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া প্রায় তিন ডজন মামলার মধ্যে এই প্রথম কোনো মামলার বিচার শুরু হলো।
বিচার শুরু হওয়া অপর আসামিরা হলেন, পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা।
আজ শুনানিকালে কারাগারে থাকা চার আসামি অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার চান।
পি কে হালদারসহ ১০ আসামি পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে শুনানি হয়নি। তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি।
আরও পড়ুন:পিকে হালদারের আরও দুই নারী সহযোগী আটক
পলাতক দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পি কে হালদার বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন।
মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করে দুদক৷
চার্জশিটে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে প্রায় এক কোটি ১৭ লাখ কানাডিয়ান ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশটিতে পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
আরও পড়ুন:রাজশাহীতে অবৈধ ক্লিনিকে অভিযান, তালা দিয়ে পালালেন মালিকরা
পাইকগাছায় অবৈধ কয়লা তৈরির কারখানা উচ্ছেদ
ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া সম্ভব: বাণিজ্যমন্ত্রী
প্রতারণাকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সম্পদ বিক্রি করে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে যে সকল প্রতিষ্ঠান মানুষকে প্রতারিত করেছে, সেগুলোর অনেক সম্পদ আছে। সম্পদগুলো বিক্রয় করলে অনেকের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব। এসব বিষয় মাথায় রেখে সরকার কাজ করছে।
রবিবার ঢাকায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে ইআরএফ এর ভুমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স বন্ধ নয়, শৃঙ্খলা আনতে রেগুলেটরি অথরিটি হচ্ছে: বাণিজ্যমন্ত্রী কর্মশালায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ই-কমার্স বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচার মাধ্যম তথা সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাণিজ্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। গুটি কয়েক অসৎ প্রতিষ্ঠানের কারণে ই-কমার্স বন্ধ করে দেয়ার সুযোগ নেই। করোনাকালীন ই-কমার্স ভোক্তাদের সেবায় কাজ করে সুনাম অর্জন করেছে। বিগত দুটি ঈদুল আযহায় কোরবানির প্রাণী ক্রয়-বিক্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সরকার যথাযথ আইন প্রনয়ণ করে সুশৃঙখল ভাবে ই-বাণিজ্য পরিচালনা করার জন্য কাজ করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স সম্পর্কে মানুষের ধারণা পরিষ্কার থাকা প্রয়োজন। এ জন্য মানুষের সচেতনতা বাড়াতে হবে, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাংবাদিকরা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন। দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মানুষকে প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। ই-কমার্স বিষয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে।
আরও পড়ুন: ৯৭ ভাগ পণ্য রপ্তানিতে বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে চীন: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি নতুন প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এটি নির্দিষ্ট আইনের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। এ কমিশনের জনবল এবং সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। এ কমিশনকে শক্তিশালী করতে সরকার কাজ করছে। এ কমিশন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে স্বপ্রনোদিতভাবে অনেক বিষয়ে তদন্ত করে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন শক্তিশালী হবে।বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য বি এম সালে উদ্দীন, ড. মো. মনজুর কাদির, নাসরিন বেগম, কমিশনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাফরুহ মুরফি, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর প্রেসিডেন্ট সারমিন রিনভি এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: মেডিকেল পণ্য উৎপাদনে সহায়তা দেবে সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশে প্রতিবছর নতুন কোটিপতি তৈরি হচ্ছে: নজরুল
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান রবিবার বলেছেন, কোটিপতি তৈরির সবচেয়ে বড় কারখানা হলো বাংলাদেশ। এখানে মাত্র পাঁচ ভাগ মানুষ রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করছে।