মিয়ানমার
ভূমিকম্প: মিয়ানমারে তহবিল সংগ্রহে ‘সিংহ নাচ’
মিয়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ইয়াঙ্গুনের ব্যস্ততম চায়না টাউনের প্রাণকেন্দ্রে ‘সিংহ নাচ’ পরিবেশনের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করছেন দেশটির তরুণরা।
ফেং ই ড্রাগন ও লায়ন ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের ৩০ জনেরও বেশি তরুণের একটি দল চলতি মাসের ৩ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অভিনব এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
এ কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে জানান তারা। ওই তরুনরা বলেন, অনেক পথচারীই তাদের নাচে আকৃষ্ট হয়েছেন এবং উৎসাহ দিয়েছেন।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে দলটি মিয়ানমারেরে মুদ্রায় ৫ মিলিয়ন কিয়াট (প্রায় ২ হাজার ৩৮০ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তারা।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের ভূমিকম্পের পর ৮৯ আফটারশক অনুভূত
ভূমিকম্পে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দলটির সদস্যরা বলেন, সংগৃহীত অর্থ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্দালয় ও সাগাইং শহরে বাসিন্দাদের সহায়তায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
লায়ন ড্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য মিয়ো মং মং মিন্ট (৩৫) বলেন, ‘তহবিল সংগ্রহ ও জরিপ শেষে বাসিন্দাদের সরাসরি সহায়তা করতে আমরা সেখানে যাবো। তাদের কি ধরনের সহায়তা প্রয়োজন বা কোনটি আগে প্রয়োজন সেটি জানতে আগেই একটি জরিপ করেছি আমরা।’
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের এই অর্থ দিয়ে সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে বলে জানান মিয়ো।
অ্যাসোসিয়েশনের আরেক সদস্য বলেন, ‘এভাবে তহবিল সংগ্রহ করা মোটেই সহজ কাজ নয়। বিশেষত রোদের মধ্যে সিংহ নাচের পোশাক পরে নাচ করা বেশ কঠিন। তবে আমরা এতে অভ্যস্ত।’
১১ দিন আগে
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় বাংলাদেশের সমর্থন চায় গাম্বিয়া
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা সম্পর্কে অবহিত করেছেন গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা। তিনি বলেন, মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তার দেশ কাজ করছে।
বুধবার (১২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এই বিষয়টিকে সমর্থন করছেন এবং বিষয়টি দেখছেন। 'আমরা এই বিষয়টিকে আবার সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে চাই।’
তিনি বলেন, 'গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং গাম্বিয়ার জনগণ এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করার জন্য এবং এই মামলার সফল হওয়ার জন্য আফ্রিকান দেশটির অবিরাম প্রতিশ্রুতি ও অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই এই মামলা সফল হোক। আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সহায়ক।’
মামাদু টাঙ্গারা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, ‘গাম্বিয়ার জনগণের কাছে আপনি পরিচিত নাম। আপনার আভা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নতুন দায়িত্বে ড. ইউনূসের সাফল্য কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা আপনার মহৎ কাজ এবং চ্যালেঞ্জিং যাত্রার সাফল্য কামনা করি।’
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ সংগ্রহে ঢাকার প্রচেষ্টা এবং বাস্তুচ্যুত লোকদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তাসহ রাখাইনে মানবিক সাহায্য ও সহায়তা এবং সীমান্ত পেরিয়ে আরও বেশি লোকের বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া বন্ধ করার বিষয়ে তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ১/১১ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র ভুল করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে গভীর বাণিজ্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কীভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি—তা আমাদের জানান।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি সইয়ের বিষয়েও দুই নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তারা আফ্রিকার লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে এবং ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে মহাদেশটির সহিংসতাপীড়িত কয়েকটি অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান এবং বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিগগিরই চীন, থাইল্যান্ড ও জাপান সফরে যাবেন ড. ইউনূস
৩৯ দিন আগে
মিয়ানমারের সামরিক প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আহ্বান আইসিসির প্রসিকিউটরের
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সামরিক শাসনের প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম এ এ খান এই আহ্বান জানান।
মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে ২০২১ সালে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা গ্রহণকারী জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গণধর্ষণ, হত্যা ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে আদালতের শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খান এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি শিগগিরই মিয়ানমারের নেতাদের বিরুদ্ধে আরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করবেন।
বিট্রিশ এই ব্যরিস্টার বলেন, 'এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সব অংশীদারদের সঙ্গে মিলে দেখাবো যে রোহিঙ্গাদের ভুলে যাওয়া হয়নি। বিশ্বের অন্য সব মানুষের মতো তাদেরও আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের দমনে অভিযান শুরু করে।
মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান মিন অং হ্লাইং তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী এবং জাতীয় পুলিশকে রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি নেই’
খান বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মিয়ানমার থেকে আসা। যারা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে ২০১৭ সালেই পালিয়ে এসেছেন প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার। তাদের অধিকাংশকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বাঙালির ট্যাগ দিয়ে তাদেরকে দেশের ১৩৫তম বৈধ জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি- তাদের (রোহিঙ্গা) জন্মভূমি বাংলাদেশে এবং তারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে বসতি স্থাপন করেছে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ইউক্রেন ও গাজার সংঘাতের বিষয়টি সামনে আসায় রোহিঙ্গাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে মনোযোগ কমে গেছে।
যখন সাত বছর আগে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নতুন করে নৃশংসতার ঘটনা ঘটছে। ঠিক তখনিই আইসিসির প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত এলো।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র আন্তর্জাতিক বিচার উপদেষ্টা মারিয়া এলেনা ভিগনোলি বলেন, 'নির্যাতন ও দায়মুক্তির চক্র ভাঙার ক্ষেত্রে আইসিসির সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
আরও পড়ুন: আইসিসিতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিচার চাইবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
১৪৩ দিন আগে
মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে জেলে নিহতের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ
সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে এক বাংলাদেশি জেলে নিহতের ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার(৯ অক্টোবর) কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহ পরী দ্বীপের কোনা পাড়ার বাসিন্দা উসমান (৬০) নিহত হন।
ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাসে পাঠানো একটি কূটনৈতিক নোটে বাংলাদেশ এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের কাছে মাছ ধরার সময় প্রায় ৫৮ জন বাংলাদেশি জেলে এবং উসমানের নৌকাসহ ৬টি মাছ ধরার নৌকা অপহরণ করায় বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছেন তারা।
আরও পড়ুন: স্পেনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চান ড. ইউনূস
অবশেষে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও মিয়ানমার নৌবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগের পর বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুই দফায় নৌকাসহ জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে মিয়ানমারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। মিয়ানমারকে বাংলাদেশের জলসীমার অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন এবং ভবিষ্যতে আর কোনো উসকানি থেকে বিরত থাকার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত’
১৯১ দিন আগে
মিয়ানমার থেকে ৮৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন আজ
মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ৮৫ জন বাংলাদেশি। শনিবার সকালে মিয়ানমারের রাখাইনের সিতওয়ে বন্দর থেকে রওনা হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসা মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে কক্সবাজারে আগত মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ইউএমএস চিন ডুইন’ প্রত্যাবাসিতদের বহন করছে। জাহাজটি আজ (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালের মধ্যে কক্সবাজারে পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রত্যাগত ৮৫ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জন মিয়ানমারের মলামাইন কারাগারে, ১৬ জন পাথেইন কারাগারে, ৩ জন চকমারউ কারাগারে এবং বাকিরা রাখাইনের বিভিন্ন কারাগারে ছিলেন। প্রত্যাবর্তনকারীদের অধিকাংশই (৫৬জন) কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার এবং বাকিরা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও ঢাকা জেলার।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত
ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সিতওয়েস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অব্যাহত প্রচেষ্টায় আরও একবার বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৫ মাসে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বমোট ৩৩২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ জুন ৪৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাস, ইয়াঙ্গুন এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট, সিতওয়ে প্রত্যাগতদের পরিচয় যাচাইকরণ, তাদের জন্য ভ্রমণের অনুমতি প্রদান (ট্রাভেল পারমিট) এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে ইতিবাচক মিয়ানমার
২০৩ দিন আগে
মিয়ানমারের দীর্ঘস্থায়ী সংকট বাংলাদেশের জাতীয়-আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি করছে: অধ্যাপক ইউনূস
রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে রাখাইন রাজ্যে তাদের পৈতৃক বাড়িতে ফেরার পথ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, 'মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় দেওয়া ভাষণে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বলেন, মিয়ানমারের দীর্ঘায়িত সংকট বাংলাদেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি করেছে, যা প্রথাগত ও অপ্রথাগত উভয় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, সাত বছর ধরে বাংলাদেশ মানবিক কারণে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং এর কারণে উল্লেখযোগ্য সামাজিক-অর্থনৈতিক-পরিবেশগত ক্ষতি হচ্ছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমরা বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি বলেন, মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা এবং তাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আইসিজে ও আইসিসিতে চলমান জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
রোহিঙ্গারা যাতে মুক্ত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনা প্রচেষ্টার স্বীকার করে ও প্রশংসা করে বাংলাদেশ।
শান্তি বজায় রাখা :
বাংলাদেশ মনে করে, শান্তি বজায় রাখা এবং সংঘাত নিরসন করা জনগণের অগ্রগতির কেন্দ্রবিন্দু।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'সাম্প্রতিক বিপ্লবের সময় আমাদের বীর সশস্ত্র বাহিনী ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময়ে জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে দৃঢ়ভাবে পাশে দাঁড়িয়ে শান্তির প্রতি তাদের অঙ্গীকার আবারও দেখিয়েছে।’
শান্তিরক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে মানবাধিকারকে স্থান দেওয়ার অঙ্গীকারের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা'জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কমিশনের জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি সমানভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ' উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তারা বাংলাদেশের মূল্যবোধসম্পন্ন অবদান এগিয়ে নিতে ও বাড়াতে আগ্রহী।
তৃতীয় বৃহত্তম সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশের ৬৩টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছে।
বসনিয়া থেকে কঙ্গো পর্যন্ত ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আত্মত্যাগ করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমরা আশা করি, চ্যালেঞ্জ বা পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন, ভবিষ্যতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি আহ্বান অব্যাহত থাকবে।
গাজায় গণহত্যা
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বহু সংকটের এই বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত অধিকার খর্ব ও ব্যাপক অপব্যবহারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ও নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি শুধু আরব বা মুসলমানদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং সমগ্র মানবতার সঙ্গে সম্পর্কিত।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'ফিলিস্তিনিরা গুরুত্বহীন কোনো জাতি নয়' ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সবাইকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
ফিলিস্তিনি জনগণকে বিরুদ্ধে চালানো বর্বরতা থেকে বিশেষ করে শিশু ও নারীদের রক্ষার জন্য অবিলম্বে ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হিসেবে রয়ে যাওয়া দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ইউক্রেনে আড়াই বছর ধরে চলা যুদ্ধে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
এই যুদ্ধ সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে, এমনকি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষকে মতপার্থক্য নিরসন এবং যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও জনগণের আর্থ-সামাজিক মুক্তি ছাড়া শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব।
প্রায় এক দশক আগে বিশ্ব সর্বসম্মতিক্রমে 'এজেন্ডা ২০৩০' গ্রহণ করেছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বজনীন লক্ষ্যমাত্রার ওপর আমাদের সম্মিলিত আশা ও আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছি। তারপরও ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১৭ শতাংশ অর্জনের পথে রয়েছে। স্পষ্টতই, অনেক উন্নয়নশীল দেশ পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’
প্রতিবছর উন্নয়নশীল দেশগুলো এসডিজি অর্থায়নে উল্লেখযোগ্য ঘাটতির মুখোমুখি হয়, যা আনুমানিক আড়াই থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে থাকে।
উচ্চ ঋণের বোঝা, রাজস্ব আয় সংকুচিত হওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
জটিল ও পদ্ধতিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন বিষয়ক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ।
বহুপক্ষীয় অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গিতে চালিত হতে হবে, যেখানে সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা সবাই পেতে পারে। তারা যথাযথভাবে সামাজিক ব্যবসাকে নিজ নিজ কর্মসূচির মধ্যে স্থান দেবে। তারা যথাযথভাবে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। উদ্যোক্তা উন্নয়নে উৎসাহিত করবে এবং ব্যক্তির সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করবে এবং তারা যাতে বঞ্চিতদের সমর্থন করে।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অবৈধ আর্থিক প্রবাহ এবং সম্পদ পাচার প্রতিরোধে আরও বেশি মনোযোগের দাবি রাখে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছ থেকে পাচার করা বা চুরি হয়ে যাওয়া সম্পদ ফেরত পাঠাতে হবে। আমরা একটি আন্তর্জাতিক কর কনভেনশনের দ্রুত সমাপ্তির অপেক্ষায় রয়েছি যা কর ফাঁকি মোকাবিলা করতে পারে।’
আরও পড়ুন: দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
অভিবাসন এবং গতিশীলতা:
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে অভিবাসন ও গতিশীলতা একটি অনিবার্য বাস্তবতা।
অভিবাসীদের উৎপত্তিস্থল দেশ হিসেবে আমাদের ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বিশ্বব্যাপী বসবাস করে এবং কাজ করে।
অভিবাসন সবার জন্য লাভজনক করতে হলে আমাদের নিরাপদ, সুশৃঙ্খল, নিয়মিত ও দায়িত্বশীল অভিবাসন ও মানুষের চলাফেরার পথ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং অভিবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে হবে, তাদের অভিবাসন অবস্থা নির্বিশেষে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'বাংলাদেশ যেমন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশনের পূর্ণ বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তেমনি আমাদের সরকার অনিরাপদ অভিবাসনকে বন্ধ করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাদেশ আজ ও আগামীকালের চাহিদা পূরণের উপযোগী করে শিক্ষাকে উপযোগী করে তোলার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
‘তবুও, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কাজের জগৎ পরিবর্তিত হচ্ছে যেখানে একজন তরুণকে ক্রমাগত মানিয়ে নিতে হবে, পুনরায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে, নতুন মনোভাব গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ যেহেতু মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণের পথে যাত্রা করতে যাচ্ছে, তাই আমরা 'লার্নিং' ও 'টেকনোলজি' ক্ষেত্রে নিজেদের নিরাপদ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করছি।’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা:
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরঞ্জাম ও অ্যাপ্লিকেশনের উত্থানে বিশেষভাবে উৎসাহী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণরা দ্রুত জেনারেটিভ এআই উন্মোচনের সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা বিশ্ব নাগরিক হিসেবে চলতে ও কাজ করতে চায়। বিশ্বকে নিশ্চিত করতে হবে যে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কোনো তরুণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেতৃত্বাধীন রূপান্তরের সুফল অর্থবহভাবে পেতে পিছিয়ে থাকবে না।’
তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ যাতে মানব শ্রমের সুযোগ বা চাহিদা হ্রাস না করে তা বিশ্বকে নিশ্চিত করতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যেহেতু বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় এবং প্রযুক্তি বিশ্ব অব্যাহতভাবে 'স্বচালিত বুদ্ধিমত্তা' - কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যা মানুষের কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজেরাই প্রচার করতে পারে- আজ আমাদের সকলকে এবং আমাদের বাইরে, প্রতিটি মানুষ ব্যক্তি বা আমাদের সমাজের উপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক হওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, অনেকের বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে স্বচালিত বুদ্ধিমত্তা যদি দায়িত্বশীলভাবে বিকশিত না হয় তবে এটি মানব অস্তিত্বের জন্য হুমকি হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজনে শক্তিশালী সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসেরঅধ্যাপক ইউনূস বলেন, সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে, উদ্ভাবন এবং বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে তাদের প্রচেষ্টা, সামর্থ্য এবং সম্পদ একত্রিত করা তাদের জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, 'অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু স্থিতিশীলতা বা সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি তা অভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে।’
সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের অনন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ত্রিমুখী সহযোগিতা আমাদের সহায়তা করতে পারে।
গ্লোবাল সাউথের জন্য আমাদের কণ্ঠস্বর শোনানোও ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক এজেন্ডা প্রণয়ন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্লোবাল সাউথ সমান স্থান ও গুরুত্বের দাবি রাখে।
এ বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে বাংলাদেশ।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি পারস্পরিক শিক্ষার একটি যৌথ যাত্রা ছিল। আমাদের পরিমিত উপায়ে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, সাম্য, মানবাধিকার, সামাজিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে একটি নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে।’
উদাহরণস্বরূপ, তিনি ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে গঠিত ক্ষুদ্রঋণ প্রস্তাব এবং ক্ষুদ্রঋণের বন্ধুদের কথা স্মরণ করেন।
জাতিসংঘ ২০০৫ সালকে ক্ষুদ্রঋণ বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করার ফলে বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের প্রসার ঘটে।
তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে শান্তির সংস্কৃতি বিষয়ক সাধারণ পরিষদের বার্ষিক রেজুলেশন বা নিরাপত্তা পরিষদে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক রেজ্যুলেশন ১৩২৫ স্মরণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে 'নতুন বাংলাদেশের' সঙ্গে নতুন করে সম্পৃক্ত হোন: জাতিসংঘে অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান
২০৪ দিন আগে
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি পড়ছে টেকনাফে, স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ
মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়ছে টেকনাফ স্থলবন্দরে। তাই স্থলবন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২৬
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পর পর ৩টি গুলি এসে পড়ে। একটি গুলি স্থলবন্দরের অফিসে এসে পড়লে অফিসের কাচ ভেঙে যায়। দ্বিতীয় গুলি এসে পড়ে স্থলবন্দরের মালামাল বহনকারী ট্রাকে। অপরটি নারিকেল গাছে এসে লাগে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ভয়াবহ বন্যায় ৭৪ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৮৯
তিনি বলেন, স্থলবন্দরে কর্মরত সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে সবাই স্থলবন্দর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। আপাতত স্থলবন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
মিয়ানমারের ওপারে তোতারদিয়া দ্বীপে দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষের কারণে গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফ স্থলবন্দরসহ সীমান্ত এলাকায় গুলি এসে পড়ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ২
২১৪ দিন আগে
মিয়ানমারে ভয়াবহ বন্যায় ৭৪ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৮৯
টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মিয়ানমারে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ৭৪ জন নিহত ও ৮৯ জন নিখোঁজ রয়েছে।
রবিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বন্যায় নাইপিদো, বাগো, মান্দালয় ও আইয়াওয়াদির ৬৪টি শহরতলির ৪৬২টি গ্রাম ও ওয়ার্ডসহ মন, কায়িন ও শান প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: টাইফুন ইয়াগি: ভিয়েতনামে ভূমিধস ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩
বন্যা কবলিত এলাকায় ২৪টি সেতু, ৩৭৫টি স্কুল, একটি মঠ, পাঁচটি বাঁধ, চারটি প্যাগোডা, ১৪টি ট্রান্সফরমার, ৪৫৬টি ল্যাম্পপোস্ট ও ৬৫ হাজার ৭৫৯টি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্যোগ মোকাবিলায় নাইপিদোসহ বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলগুলোতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা, খাবার ও পানীয় জল সরবরাহের জন্য অস্থায়ী ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় বন্যায় ৪০ প্রাণহানি, ৪ লাখ ১৪ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
২১৭ দিন আগে
নিত্যপণ্য আমদানি করতে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গেও চুক্তি হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
নিত্যপণ্য আমদানির জন্য ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের চুক্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
বুধবার (২৬ জুন) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বিকল্প ব্যবস্থা হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
সংলাপে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আমরা কৃষি উৎপাদিত পণ্যগুলো আনতে পারি, যেগুলো তাদের উদ্বৃত্ত আছে।’
এ বিষয়ে একটি চুক্তি প্রায় সম্পন্নের পথে বলেও জানান তিনি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। আগামী জুলাই মাসে আমরা সেই চুক্তিটা সই করতে চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এই চুক্তি সই করবে বলেও জানিয়েছেন আহসানুল ইসলাম টিটু।
তিনি আরও জানান, নিত্যপণ্য জিনিসের সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ভারতের সঙ্গেও একটি চুক্তি করা হবে।
এছাড়াও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আনা যাবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে একটু স্বস্তি দিতে, বাজার সচল রাখতে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সীমান্ত হাটগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেক দুর্গম এলাকায় আমাদের সীমান্ত আছে। সেসব এলাকার মানুষগুলোর সুবিধার্থে কয়েকটা সীমান্ত হাট করা হয়েছে।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘কোভিডের জন্য কিছুটা স্থগিত ছিল, আবার আমরা বর্ডার হাটের দিকে নজর দেব। দুই সরকারেরই বর্ডার হাটের ব্যাপারে আগ্রহ আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা শিগগিরই দুর্গম বর্ডার এলাকায় বর্ডার হাট প্রতিষ্ঠা করব।’
এতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অনেক সহজ হবে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২৩টি দেশে আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আছেন, যাদের সরাসরি মনিটরিং করা হয়। তাদের জবাবদিহির আওতায় এনেছি। প্রতি মাসে মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি বাণিজ্যের অতিরিক্ত সচিবের কাছে রিপোর্ট করেন তারা।’
নতুন মার্কেট খুঁজে পেতে ও পণ্য বাজারজাতকরণ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আগামী ঈদ পর্যন্ত কোনো পণ্য ঘাটতি থাকবে না: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বিকল্প ব্যবস্থা হচ্ছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
২৯৮ দিন আগে
মিয়ানমার সরকার নয়, আরাকান আর্মি গুলি ছুঁড়েছে: কাদের
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে সরাসরি কোনো হামলা দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে বেশ কয়েকটি জাতিগত গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে সম্ভবত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সাম্প্রতিক এসব ঘটনা ঘটিয়েছে, মিয়ানমার সরকার নয়।
বুধবার (১৯ জুন) মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, 'সীমান্তে গুলি আসতে পারে বা গুলির শব্দ শোনা যেতে পারে। এটা কি সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন? এসব ঘটনা তাদের বিদ্রোহীদের কারণে ঘটছে। এর জন্য আমরা কেন মিয়ানমার সরকারকে দায়ী করব? যতদিন সম্ভব আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব।’
সেন্টমার্টিন ইস্যুতে সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে- বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধীরা সরকারের সিদ্ধান্তকে আজ্ঞাবহ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। কিন্তু কীভাবে তা আজ্ঞাবহ হয়? সেন্টমার্টিনে যে বুলেট পড়েছে সেটি মিয়ানমার সরকারের নয়, আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের ছোঁড়া।’
যুদ্ধের পরিবর্তে সংলাপের মাধ্যমে সংঘাত নিরসনে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের জাহাজটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রোহিঙ্গারা যখন জোয়ারের মতো বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তখনো উসকানি ছিল। মাঝেমধ্যে আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সে সময় ওয়াশিংটনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী প্রধানদের যেকোনো পরিস্থিতিতে যুদ্ধ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেন। মিয়ানমার উসকানি দিলে আমরা সংলাপে বসব এবং সমাধান বের করব, কিন্তু আমরা যুদ্ধে জড়াব না।’
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে তীব্র সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে- এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি যুদ্ধে জড়াতে চান, তাহলে আমরা উসকানির ফাঁদে পড়তে পারি। আমরা সরকারে আছি, আমাদের দায়িত্ব আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে ফখরুলের অবদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমি জানি না ফখরুল কী করেছিলেন বা মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন। এ ধরনের দাবি করে কোনো লাভ নেই। সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রয়েছে। যদি সত্যিই সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয় এবং আলোচনা ব্যর্থ হয়, যদি তারা সত্যিই আক্রমণ করে, আমরা কি চুপ করে বসে থাকব? আমাদের জবাব দিতে হবে।’
৩০৫ দিন আগে