কোটা
ফের বন্ধ মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নির্দেশে আবারও বন্ধ করা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।
রবিবার (৪ আগস্ট) পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফোরজি নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বিটিআরসি।
শুধুমাত্র কল করার জন্য টুজি পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিটিআরসি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ।
এদিকে এক বিবৃতিতে গ্রামীণফোন জানায়, 'কর্তৃপক্ষ মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
৩ মাস আগে
পুরানা পল্টন থেকে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ
পূর্বঘোষিত আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনে জড়ো হওয়া বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে ইউএনবির ফটোগ্রাফার জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাত সমন্বয়ককে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আটক এবং 'চলমান আন্দোলন প্রত্যাহারে চাপ' দেওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা সমাবেশ করছিলেন। ।
এছাড়া মিরপুর ১০ নম্বর মোড় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের জমায়েতের খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার রাতে ডিবি হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এক ভিডিও বার্তায় তাদের আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এই ঘোষণার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়ে তাদের নয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
৩ মাস আগে
কোটা আন্দোলনকারী-পুলিশ-ছাত্রলীগ ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র বগুড়া
কোটা সংস্কারের দাবিতে বগুড়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে স্কুলছাত্রসহ অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে এ ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশের টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে সাতমাথা এলাকা দখলে নেয় পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজের নিকটবর্তী কামারগাড়ী রেল গেইট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে দিয়ে কলেজের মূল ক্যাম্পাস অতিক্রম করে রেল গেইটের সামনে পৌঁছে সাতমাথা-তিনমাথা সড়ক অবরোধ করে। সেখানে আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ মিনিট সড়ক অবরোধ করে রাখার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের
এরপর বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ ক্যাম্পাসে বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে যান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসের দখল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এদিকে, বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার প্রতিবাদে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শহরের বনানী-সাতমাথা রোড কয়েক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন।
মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরে মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামে। মিছিলটি বনানীর দিকে যাওয়ার সময় শাহসুলতান কলেজ থেকে কোটার সমর্থকরা মিছিলে হামলা চালায়। এসময় তাদের লাঠির আঘাতে একজন শিক্ষার্থী আহত হন। তাকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পলিটেকনিকের সামনে ফিরে এসে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এসময় দুই পক্ষই ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে।
এরপর পলিটেকনেকের শিক্ষার্থীরা লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকের একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। এসময় বনানী-সাতমাথা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বগুড়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা দুপুরে মিছিল বের করলে তাদের মিছিলে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেলের আঘাতে জিলা স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্কুলের শত শত সাবেক ও বর্তমান ছাত্র সাতমাথায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে তিন থেকে চারটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।
পুলিশের সামনেই একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটলেও পুলিশ নীরব ছিল বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কারের দাবিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
একপর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে সাত থেকে আট হাজার শিক্ষার্থী শহরের জিরো পয়েন্ট-সাতমাথা দখলে নেয়। এসময় আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে থেকে ফের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা দমে যায়নি। বরং চারদিক থেকে ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে ফেলে। কিছু সময় উভয় পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপের পর শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাতমাথায় অবস্থিত মুজিব মঞ্চ দখল করে বিজয়োল্লাস করতে থাকেন। এসময় আওয়ামী লীগ অফিসের আশপাশে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে অবস্থিত পুলিশের অস্থায়ী বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধরা। দীর্ঘ সময় আগুন দাউ দাউ করে জ্বললেও নেভানোর জন্য সেসময় কেউ এগিয়ে যায়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শহরের জিরো পয়েন্ট অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতারের নেতৃত্বে বিকাল ৫টার পর ডিবির একটি টিম আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এসময় জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা পুলিশকে পিছু হটতে বাধ্য করে।
পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে সাতমাথা দখলে নেয়। প্রতিবাদে ছাত্ররাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এ ঘটনায় কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে কি না জানা যায়নি। তবে বেশকিছু শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, সন্ধ্যার পর শহরের গালাপটি্টস্থ শহর বিএনপি অফিসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একইসঙ্গে জেলা শ্রমিকদলের অফিসেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি এ ঘটনার জন্য যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম মঙ্গলবার সন্ধা সোয়া ৬টার দিকে বলেন, ‘বগুড়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় আহত যুবকের মৃত্যু
৪ মাস আগে
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ছাত্রদলের
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এই ঘোষণা দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ছাত্রদল সভাপতি।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় যুবদলের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ
তিনি বলেন, ‘১৫ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন হিসেবে থাকবে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ (মঙ্গলবার) থেকে কোটা বাতিলের জন্য আন্দোলনকারীদের পাশে থেকে সর্বদা রাজপথে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছে।’
একইসঙ্গে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার মূল উৎস বর্তমান ‘ফ্যাসিবাদী ও অবৈধ’ সরকারকে উচ্ছেদ করে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাভিত্তিক সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান ছাত্রদল সভাপতি।
পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘কটূক্তিমূলক’ বক্তব্য এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বুধবার (১৭ জুলাই) দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে রাকিব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেদিন থেকে আন্দোলন শুরু করেছে, সেদিন থেকেই ছাত্রদল তাদের পাশে আছে।’
তবে এই আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই আন্দোলনে ছাত্রদল সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে আছে। কিন্তু আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা ও সম্পৃক্ততা নেই, যাতে কেউ ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে না পারে।’
রাকিব বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ছাত্রদল কোনো কৃতিত্ব নিতে চায় না। আমরা চাই এই যৌক্তিক আন্দোলন একটি ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনুক। আমরাও চাই এই বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত হোক এবং শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হোক।’
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন নাছির বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নিষ্ঠুর ও নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ছাত্রদেরও মারধর করেছে ছাত্রলীগ। এটা শুধু আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনই নয়, ফৌজদারি অপরাধও বটে।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের সমর্থন
ছাত্রদলের ২৬০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
৪ মাস আগে
কোটা পুনর্বহাল প্রসঙ্গে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধাসহ বিদ্যমান কোটা বাতিল-সংক্রান্ত ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
রবিবার বিকেলে ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ১১ জুলাই হাইকোর্টের রায়ের সিদ্ধান্ত, নির্দেশনা ও আদেশ (অপারেটিভ অংশ) সম্বলিত এক পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয়।
তবে আইনজীবীরা বলছেন, আপিল বিভাগ গত ১০ জুলাই কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আগামী ৭ আগস্ট শুনানির দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় কার্যকর হবে না।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কারের দাবিতে বরিশাল নগরীর প্রধান সড়কে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, সরকার যদি বিদ্যমান কোটার হার পরিবর্তন করতে, কমাতে অথবা বাড়াতে চায়, তাহলে এই রায় বাধা হবে না।
কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ও আইনগত কোনো ভিত্তি নেই উল্লেখ করে এই রায়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে করা ২৩৫ নম্বর রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় ও আদেশ এবং যে রায়টি ২০৬২/২০১৩ নম্বর লিভ টু আপিলের মাধ্যমে সংশোধিত আকারে আপিল বিভাগে বহাল রাখা হয়েছে, সেই রায়ের আলোকে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতিদের কোটা পুনরায় বহাল করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী, উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ অন্যান্য যদি থাকে সেক্ষেত্রে কোটা বহাল রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব, সেটা আদেশের কপি গ্রহণের সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দেওয়া হলো। যেভাবেই হোক, যদি সব ক্ষেত্রে কোটার হার পরিবর্তন করতে, কমাতে অথবা বাড়াতে চায়, তাহলে বিবাদীদের (সরকারের) জন্য এই রায় ও নির্দেশনা বাধা হবে না। যদি কোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হয়, সেক্ষেত্রে শূন্য পদ সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করার ক্ষেত্রে বিবাদীদের স্বাধীনতা থাকবে।
রায়ের ব্যাপারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান বলেন, ‘আপিল বিভাগ কোটার বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৭ আগস্ট শুনানির দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় কার্যকর হবে না।’
হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী রায়ের বিষয়ে বলেন, রায়ে সব কোটা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। তবে প্রয়োজনে সরকার তা কমাতে বা বাড়াতে পারবে। আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন। ফলে এ রায় এখনই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ ভাগ কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকারি পরিপত্র জারি করা হয়।
এই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর রুলের শুনানি শেষে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। রবিবার এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: রেলওয়ের ৪০% পোষ্য কোটা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়: হাইকোর্ট
সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কোটা আন্দোলনকারীদের
৪ মাস আগে
আদালতে সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই: কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
আদালত সমাধান না দেওয়া পর্যন্ত কোটা পদ্ধতির বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালত বা আদালত যখন রায় দেন তখন নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না। বিষয়টির সমাধান আদালতেই করতে হবে।’
রবিবার (১৪ জুলাই) সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চীন সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন রবিবার
কোটা আন্দোলনকারীদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা আইন মানে না, আদালতকে সম্মান করে না, সংবিধান বোঝে না, সরকারি কাজকর্ম বোঝে না।
তিনি আরও বলেন, 'হ্যাঁ, তারা মেধাবী, কিন্তু এসব বিষয়ে তাদের ধারণা থাকতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আদালত আন্দোলনকারীদের আইনি পদ্ধতিতে তাদের যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু তারা রাজপথে বিক্ষোভের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে পছন্দ করছে বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে এবং আদালত রায় দিয়েছেন, তাই এই মুহূর্তে রায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কোনো অধিকার আমার নেই এবং সংবিধানও আমাকে তা করার অনুমতি দেয় না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আদালতে এর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছু করার নেই। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা তাদের মেনে নিতে হবে। অন্যথায় আমাদের কিছু করার নেই এবং তারাও আন্দোলন চালিয়ে যাবে (কোনো ফল ছাড়াই)।’
বিক্ষোভের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু তারা যদি পুলিশের ওপর হামলা এবং যানবাহন ভাঙচুরের মতো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তাহলে আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার অনুসন্ধান করতে রপ্তানিকারকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
জাতীয় অগ্রগতিতে খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
৪ মাস আগে
কোটা সংস্কার: শিক্ষার্থীদের শাহবাগ মোড় অবরোধ
সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতি বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আবারও শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা।
তবে ঢাকার বাইরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে মিছিল করার ঘোষণা দিলেও শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকাল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার: রায়ের কার্যকরী অংশ প্রকাশ
এর আগে বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন। পরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে যুক্ত হন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে দেশব্যাপী ক্যাম্পাসে মিছিল করার ঘোষণা দেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম।
সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন কোটায় ৫৬ শতাংশ পদ সংরক্ষিত রাখার কোটা পদ্ধতি ২০১৮ সালে বাতিল করা হয়। ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করলে ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করেন।
পরে ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রেতাত্মারা: আইনমন্ত্রী
৪ মাস আগে
সরকার শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সবকিছু করতে প্রস্তুত: জনপ্রশাসনমন্ত্রী
কোটার বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার পর সরকার শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সবকিছু করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী কমিশন গঠন করা হবে কি না- জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আদালতের বিষয় আদালতে সমাধান হোক। এই সমাধানের পর যদি আরও কিছু আলোচনা করতে হয় সেটি আলোচনা করার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে যা করা লাগে আমরা সবকিছু করতে প্রস্তুত আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোটার বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী বিভাগের অংশ। এটি এখন আদালতে রয়েছে। বিচার বিভাগে কোনো বিষয় থাকলে সেটি বিচার বিভাগেই নিষ্পত্তি করতে হয়।'
বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি করতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যেটি যেখানে নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন সেটি সেখানে নিষ্পত্তি করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কথা শুনে আদালত যে রায় দিয়েছে, এখানে কিন্তু সুযোগ রয়ে গেছে, প্রধান বিচারপতি সেই আহ্বান জানিয়েছেন। আদালত হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে আপনার কথা শুনে আসলে কী করতে হবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।'
তিনি আরও বলেন, ‘কোর্টে না গিয়ে রাস্তায় আন্দোলন-সংগ্রাম করে, ব্যারিকেড দিয়ে ভোগান্তির সৃষ্টি করা, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা- এটি অনুচিত ও অযৌক্তিক।'
কিছু কুচক্রী, কোনো পরামর্শদাতা বা কারো ইন্ধনের কারণে পানির মতো একটি সহজ জিনিসকে জটিল করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ফরহাদ হোসেন।
কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে শিক্ষার্থীরা যেন ভিন্ন জায়গায় না যায় সে বিষয়ে সতর্ক করে মন্ত্রী বলেন, 'আপনারা কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে যথাযথ জায়গায় যাবেন। আপনাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। আমি মনে করি সুন্দরভাবে সেটি সমাধান হওয়া সম্ভব।'
একটি গোষ্ঠী দেশের উন্নয়নের সমালোচনা করে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
কারা শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, 'যারা দেশের উন্নয়ন চায় না, যারা সেই সময়ে দেশে লুটপাট করেছে, যারা দেশে জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে, তারা চাচ্ছে না। তারা বসে আছে যেকোনো বিষয়কে পুঁজি করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে।'
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ‘৪৩তম বিসিএসে মাত্র ১৭ শতাংশ নারীরা সুযোগ পেয়েছেন। ৪০তম বিসিএসে ৫৯ জেলা থেকে পুলিশে একজন নারী ও চাকরির সুযোগ পাননি। ১৭টি জেলায় নারী-পুরুষ কেউই সুযোগ পায়নি। এরকম যদি হয়, তাহলে একটা অসমতা তৈরি হয়। কোটার সংস্কার দরকার। কোটা কতটুকু থাকবে সেটা আলোচনা হতে পারে।’
উল্লেখ্য, বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে পরিপত্র জারি করে সরকার। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাইকোর্ট সেই পরিপত্র বাতিল করে। এতে ফের কোটা বাতিলে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেছে। যার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এরমধ্যে কোটা বাতিলের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করে আপিল বিভাগ। এরপরও আন্দোলন থেকে সরে আসেনি শিক্ষার্থীরা।
৪ মাস আগে
কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সড়ক অবরোধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি ডিএমপির
‘বাংলা ব্লকেড’র নামে যারা সড়ক অবরোধ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. মহিদ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
মহিদ উদ্দিন আরও বলেন, সড়ক অবরোধের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা বিদ্যমান আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা জারি করলেও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সারাদেশে 'বাংলা ব্লকেড' চালিয়ে যাচ্ছে। তারা কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানায়।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান ছাত্রলীগের
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ফের রাস্তায় নামার কর্মসূচি রয়েছে তাদের।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, 'গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দিয়ে ২০১৮ সালের সার্কুলার বহাল রেখেছেন। ফলে সার্কুলারটি এই সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তাই বিক্ষোভের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও সহানুভূতি আছে, কিন্তু বিদ্যমান আইন ও সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করবেন না। ২০১৮ সালের সার্কুলার এখনও বলবৎ।’
ডিএমপির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'গতকাল আন্দোলনকারীরা ২১ জায়গায় অবরোধ দিয়েছে। ঢাকাবাসীর অবাধ চলাচল নিশ্চিত করে আমরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। যেহেতু আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন, আমরা আশা করছি আর জনগণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে না।’
মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলনের একটি যৌক্তিক ভিত্তি থাকা উচিত। বর্তমানে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আন্দোলনকারীদের পক্ষেই। আন্দোলনে যুক্তি না থাকলে তা চালিয়ে যাওয়া উচিত নয়। আমরা শিক্ষার্থীদের এসব কর্মসূচি বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে ঢাকাবাসীসহ সবার উপকার হবে এবং আমাদের বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে সরকারের পরিপত্র বলবৎ: কোটা প্রসঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সড়ক বন্ধ থাকলে আমাদের সংবিধান অনুযায়ী চলাচলের স্বাধীনতায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা এই অপরাধ করবে না আশা করছি। গত ১০ দিনে শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মান বজায় রেখে পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীরা আইন, নগরবাসী ও পুলিশের প্রতি এই শ্রদ্ধাবোধের প্রতিদান দেবে।’
বিক্ষোভ চলতে থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শান্তভাবে এই পরিস্থিতিগুলো সামলে নেওয়া আমাদের কাজের ধরন এবং এভাবেই কাজ করব। আমরা আশা করি, বিক্ষোভকারীরা তাদের অবস্থান বুঝতে পারবেন, বিশেষ করে আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে। যেহেতু ২০১৮ সালের সার্কুলার এখনও কার্যকর আছে, সেহেতু আন্দোলনের কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই।’
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কারে ‘বাংলা ব্লকেড’, সারাদেশে পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
৪ মাস আগে
চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ২ শিক্ষার্থীর আবেদন
মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন দুই শিক্ষার্থী। এই দুই শিক্ষার্থীর আবেদনের ওপর বুধবার (১০ জুলাই) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।
আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের আদালত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) শুনানির দিন ধার্য করেন।
এর আগে সকাল ১১টার দিকে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে এফিডেভিট দায়েরের জন্যে ওই দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: কোটাবিরোধী আন্দোলন: রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের কঠোর ‘বাংলা ব্লকেড’
চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এফিডেভিট দাখিলের জন্যে অনুমতি দেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন দায়ের করা হয়।
আবেদনকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আলসাদি ভূঁইয়া ও আহনাফ সাঈদ খান।
তাদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রিটকারী পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি করা হয়।
আরও পড়ুন: কোটাবিরোধী আন্দোলনে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশ
রিট আবেদনকারীপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘নট টুডে’ (আজ নয়) বলে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন সর্বোচ্চ আদালত।
এ আদেশের পর কোটাবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।
এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, চাইলে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা আপিল বিভাগে আবেদন করতে পারেন। এমন মন্তব্যের পর মঙ্গলবার দুইজন শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীদের পক্ষে আবেদন করেন। আবেদনে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্ট নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা গত ৯ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ৪ জুলাই শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন।
আরও পড়ুন: কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধ
সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। ক্রম অনুসারে বিষয়টি উঠলে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী অন রেকর্ড মো. জহিরুল ইসলাম একদিনের (নট টুডে) সময়ের প্রার্থনা জানান।
৪ মাস আগে