ওটিটি
‘ব্ল্যাক মানি’: পূজা চেরী ও রুবেলকে নিয়ে রায়হান রাফীর প্রথম ওয়েব সিরিজ
নতুন বছরের একদম শুরুতে প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজ নিয়ে হাজির হচ্ছেন বর্তমান সময়ের হিট নির্মাতা রায়হান রাফী। ২০২৫-এর ২ জানুয়ারি দেশীয় ওটিটি (ওভার-দ্যা-টপ) প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিরিজটি। বরাবরের মতো এবারও রাফীর কাস্টিংয়ে থাকছে নতুন চমক। ওয়েব কন্টেন্টটির শ্রেষ্ঠাংশে পূজা চেরীর সঙ্গে দেখা যাবে এক সময়ের প্রখ্যাত চিত্রনায়ক ও মার্শাল আর্ট হিরো মাসুম পারভেজ রুবেলকে। চলুন, বাংলা ওটিটি প্লাটফর্ম বঙ্গতে আসন্ন ‘ব্ল্যাক মানি’ সিরিজটির কলাকুশলী এবং গল্পের থিম নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
‘ব্ল্যাক মানি’ নির্মাণের নেপথ্যে
ওটিটির জন্য এর আগে তার বেশ কিছু ওয়েব ফিল্ম থাকলেও ওয়েব সিরিজ পরিচালনায় এই প্রথম রায়হান রাফী। ২০১৮ সালে তার সফল অভিষিক্ত চলচ্চিত্র ‘পোড়ামন ২’ এবং ‘দহন’ বঙ্গ’র স্ট্রিমিং তালিকায় স্থান পেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো প্রযোজক হিসেবে রাফীর সঙ্গে কাজ করেছে স্ট্রিমিং সাইটটি। যৌথ প্রযোজনায় সঙ্গে রয়েছে কানন ফিল্মস।
ভিএফএক্স (ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট)-এর দায়িত্বে ছিল ফোর্থ ডাইমেন্শন ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট।
আরো পড়ুন: আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২ রিভিউ: ছবি নিয়ে যত হইচই
সিরিজের গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আকাশ সেন এবং বাংলাদেশের দিলশাদ নাহার কণা। আরও আছেন র্যাপ সঙ্গীতশিল্পী সাইফ খান ও তার টিম সিএফইউ-৩৬।
কস্টিউম ডিজাইনে কাজ করেছেন এদিলা ফারিদ তুরিন। সাউন্ড ডিজাইনে রিপন নাথ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেছেন আরাফাত মহসিন। সিনেমাটোগ্রাফিতে তাহসিন রহমান, শিল্প নির্দেশনায় শিহাব নুরুন নবী এবং সার্বিক সম্পাদনায় ছিলেন সিমিত রায় অন্তর।
‘ব্ল্যাক মানি’ ওয়েব সিরিজের গল্প
রাতের অন্ধকারে একটি হোটেলের সামনে এসে থামে বস্তা ভর্তি একটি ট্রাক। প্রত্যেকটি বস্তা ভর্তি কাড়ি কাড়ি টাকা। কিন্তু এগুলো কার কাছে এসেছে, কোত্থেকেই বা এসেছে! আসল মালিকানা নিয়ে যখন দানা বেধে উঠছে রহস্য, অন্যদিকে তখনি এই টাকা নিতে সংঘর্ষে মেতে উঠেছে শহরের দুর্ধর্ষ দুই গ্যাংস্টার। একের পর এক পড়তে থাকে লাশ, যেখানে শহরের প্রভাবশালী মাফিয়া, শীর্ষ সন্ত্রাসী, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ কেউই বাদ যাচ্ছেন না। এত সব লাশের মিছিল পেরিয়ে অবশেষে কোথায় এই কালো টাকার গন্তব্য- এই প্রশ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে সিরিজের কাহিনী।
আরো পড়ুন: ঈদুল ফিতর ২০২৫-এ মুক্তি বরবাদ ও দাগি: আবারও মুখোমুখি শাকিব খান ও আফরান নিশো
ছয় পর্বের সিরিজটিতে একই সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে অ্যাকশন, ড্রামা, কমেডি ও থ্রিলার।
বাংলাদেশে চলমান প্রেক্ষাপটের কালো টাকা বিদেশে পাচারকে ঘিরে সৃষ্ট জটিলতাগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সিরিজে। পটভূমির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সবচেয়ে সার্বজনীন শব্দটিকেই শিরোনাম হিসেবে নির্বাচন করেছেন রাফী। গল্পটি রচনাও তিনিই করেছেন। চিত্রনাট্য রচনায় তার সঙ্গে ছিলেন আনাম বিশ্বাস ও আশরাফুল আলম শাওন।
‘ব্ল্যাক মানি’র অভিনয়শিল্পীরা
বঙ্গ অরিজিনাল সিরিজটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হিসেবে থাকছেন ৯০’দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রুবেল। এখানে গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ওয়েব কন্টেন্টে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে অ্যাকশন হিরোর।
আরও একটি প্রধান চরিত্রে থাকা পূজা চেরীরও এটি প্রথম ওয়েব ধারাবাহিক। রাফীর সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের এই তারকারও বড় পর্দায় অভিষেক ঘটেছিল ‘পোড়ামন ২’-এর মাধ্যমে। তারপর দীর্ঘ ৬ বছরের বিরতির পর দর্শক আবারও দেখতে যাচ্ছে এই নায়িকা-পরিচালক জুটির কাজ।
আরো পড়ুন: মুক্তি পাচ্ছে মেহজাবীনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’
এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে পূজা অনেক গুণী অভিনয়শিল্পীদের সংস্পর্শ পেলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রথিতযশা পরিচালক ও অভিনেতা সালাহউদ্দিন লাভলু, ইন্তেখাব দিনার, সুব্রত ফারদিন এবং এজাজুল ইসলাম। সমসাময়িক চলচ্চিত্রকর্মীদের মধ্যে আছেন শিবা শানু, রাশেদ মামুন অপু, মীর নওফেল আশরাফী জিসান, সুমন আনোয়ার এবং আরফান মৃধা শিবলু।
ছোট পর্দার সুপরিচিত মুখগুলোর মধ্যে দেখা যাবে জয় রাজ, কচি খন্দকার, সাইদুর রহমান পাভেল, মুকিত জাকারিয়া, ইকবাল বাবু এবং ফরহাদ লিমন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন তাশদিক নমিরা আহমেদ, মাহমুদ আলম এবং শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব।
পরিশিষ্ট
একসঙ্গে অনেক অভিষেকের অবতারণা নিয়ে বাংলা ওটিটি বঙ্গতে মুক্তি পেতে চলেছে পূজা, রুবেল, ও রাফীর ওয়েব সিরিজ ‘ব্ল্যাক মানি’। দুটি ভিন্ন সময়ের অভিনয়শিল্পী হিসেবে পূজা ও রুবেল দুজনেরই রয়েছে নিজস্ব দর্শক। অন্যদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হল ও ওটিটি উভয় মাধ্যমে চলচ্চিত্র দিয়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন রায়হান রাফী। তাই সমসাময়িক বাস্তবমুখী গল্পের চিত্রনাট্যে দুর্দান্ত পরিবেশনার প্রতিশ্রুতি রাখছে ওয়েব কন্টেন্টটি। একই সঙ্গে দেশীয় বিনোদন জগতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে ওয়েবমুখী হওয়ারও অন্যতম এক নিদর্শন স্থাপিত হতে যাচ্ছে এই নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
আরো পড়ুন: মাস্তি ৪: আসছে বলিউডের জনপ্রিয় কমেডি মুভির চতুর্থ সংস্করণ
২ দিন আগে
৩৬-২৪-৩৬: কারিনা কায়সার বনাম সমাজে নারীর প্রথাগত সৌন্দর্য্যের মাপকাঠি
শুধু মুখশ্রী ও শারীরিক গড়নের নিরীখে একজন নারীকে বিচার করা অনেক প্রাচীন ধ্যানধারণা। অথচ একবিংশ শতাব্দির তথ্য-প্রযুক্তির যুগেও এই সামাজিক স্টেরিওটাইপ থেকে বের হওয়া সম্ভব হয়নি। বরং আরও গেঁড়ে বসেছে সমাজের বেঁধে দেওয়া তথাকথিত সৌন্দর্যের মাপকাঠি। ফলে জন্মগত ভাবে যেসব নারী সেই শর্ত পূরণে অপারগ হচ্ছেন, তাদের বেছে নিতে হচ্ছে বিষণ্নতার জীবন। এমনি এক জীবনের বর্ণিল উপাখ্যান চরকি অরিজিনাল মুভি ৩৬-২৪-৩৬। ওটিটির আগেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা চলছে দর্শক মহলে। চলুন, ৩৬ ২৪ ৩৬ মুভিটির বিশদ বৃত্তান্তসহ জেনে নেওয়া যাক- কীভাবে চটকদার শিরোনামের চলচ্চিত্রটি বিস্তৃত পরিসরে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা পেল।
৩৬-২৪-৩৬ চলচ্চিত্রের নেপথ্যের মানুষ
চরকি ও ছবিয়ালের ব্যানারে নির্মিত এই কমেডি নাট্য-চলচ্চিত্রটি চরকির মিনিস্ট্রি অব লাভ প্রকল্পের পঞ্চম ছবি। এই প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে নির্মিত চারটি ছবি হলো- ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’, ‘মনোগামী’, ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ ও ‘ফরগেট মি নট’।
‘৩৬-২৪-৩৬’-এর পরিচালনায় ছিলেন রেজাউর রহমান, যিনি মোনতাসির মান্নানের সঙ্গে ছবিটির গল্পও লিখেছেন। রচনায় আরও ছিলেন মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা সামাজিক মাধ্যমের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে খ্যাত কারিনা কায়সার। এটিই তার বড় পর্দায় প্রথম কাজ। মুভির কয়েকটি দৃশ্যে দেখা গেছে তার বাবা জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় কায়সার হামিদ এবং মা লোপা কায়সারকে।
কারিনার সঙ্গে সিনেমার মূল চরিত্রগুলোতে ছিলেন সৈয়দ জামান শাওন, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, আবু হুরায়রা তানভীর এবং ডানা ভাই জোস খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কামরুন নাহার ডানা।
অন্যান্য গুরুত্ব ভূমিকায় দেখা গেছে শহীদুল আলম সাচ্চু, মিলি বাশার, গোলাম কিবরিয়া তানভীর, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস কুমার মৃধা, রোজী সিদ্দিকী ও শামীমা নাজনীনকে।
২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ছবিটি দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। অতঃপর ২৮ নভেম্বর থেকে ওটিটি চরকির গ্রাহকদের জন্যও ছবিটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন: পেক্ষাগৃহে আসছে ‘ভয়াল’
৩৬ ২৪ ৩৬ মুভি রিভিউ
.
দুটি স্তরে বিভক্ত চিত্রনাট্য
হাস্যরস ও আবেগের মিশেলে ভরপুর পুরো গল্পটি চার বছর সময়ে দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে কেন্দ্রীয় চরিত্রকে ঘিরে গড়তে থাকে গল্পের গাঁথুনি।
এ অংশে সায়রাকে দেখা যায়, একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে। নিছক আবেগের বশে নয়; মেধাবী ও বাস্তববাদী সায়রা যেকোনো কিছু বিচার করে যুক্তি দিয়ে। আর এই বৈশিষ্ট্য তাকে করে তুলেছে অনুসরণীয় পেশাদারিত্ব ও উদ্যোগী দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী।
নিজের স্থুল শরীর নিয়ে খুব ব্যতিব্যস্ত হওয়ার সুযোগ তার নেই।এরপরেও পেশা যখন সামাজিক অনুষ্ঠান নিয়ে, তখন প্রায়ই তাকে সমাজের তথাকথিত দৃষ্টিভঙ্গি সামাল দিতে হয়। তখন অলক্ষ্যেই হৃদয়ের গহীনে কোথাও গুপ্ত বঞ্চিত বিষণ্ণ সত্ত্বাটির মুখোমুখি হতে হয় সায়রাকে। অবশ্য প্রতিবারই বিষয়টিকে মেনে নিয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিজেকে সামলে নেয় সে।
কিন্তু মেঘমুক্ত আকাশে হঠাৎ বৃষ্টির মতো সায়রার জীবনে প্রেম নিয়ে আসে তাহসির। জীবন নিয়ে তার মনে এতদিন ধরে গড়ে ওঠা চিন্তা-চেতনা সব ভুল প্রতীয়মান করে ঘটতে শুরু করে অমূল্য কিছু ঘটনা। তবে বেশি দিন স্থায়ী হয় না এই সুখের অনুভূতি। হঠাৎ তাহসিরের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারে না সায়রা। বহু কষ্টে তার বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের পর জানতে পারে যে তাহসির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন। প্রচণ্ড শঙ্কায় মনোকষ্টে দিন কাটতে থাকে সায়রার। তাহসিরের আরোগ্য লাভের জন্য দোয়া করতে থাকে।
তারপর হঠাৎ একদিন সেই বন্ধু ফোন করে জানায়, তাহসির আর বেঁচে নেই। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সিনেমার প্রথম ভাগ।
দ্বিতীয় অংশে দেখা যায়- সায়রার নিজেরই একটা ওয়েডিং প্ল্যানিং প্রতিষ্ঠান হয়েছে। একসঙ্গে অনেক ক্ল্যায়েন্টকে সার্ভিস দিতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় তার টিমকে। এরই মধ্যে আবার এক পুরাতন ক্লায়েন্ট রহমান সাহেবের মেয়ের ওয়েডিং প্ল্যানের জন্য সময় বের করতে হয়। আর এখানেই দেখা মেলে নতুন চরিত্র প্রিয়ন্তির। প্রাণচ্ছল ও চঞ্চল প্রকৃতির মেয়েটির পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে আবর্তিত হয় গল্পের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ভাগ। এ অংশটি প্রথম অংশের তুলনায় আরও বিচিত্র এবং হাস্যরসে ভরপুর। সেই সঙ্গে রয়েছে সংগীত বিনোদন, প্রেম ও টুইস্ট।
আরো পড়ুন: কোন নাটকের মাধ্যমে নির্দেশনায় ইতি টানছেন অঞ্জন দত্ত
সায়রা চরিত্রের বিভিন্ন দিক
এই চরিত্রের মাঝে একাধারে রয়েছে একজন পেশাদার ব্যবস্থাপক, প্রতিভাবান শিল্পী, বিষণ্নতা আড়াল করে চলা মানুষ এবং ইতিবাচক মনোরম ব্যক্তি সত্ত্বা। কাহিনির বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিকভাবে এগুলো ফুটিয়ে তোলা যেকোনো নতুন অভিনেত্রীর জন্যই চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু তা মোকাবিলায় বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন কারিনা। বিশেষ করে মনোলগ, সংলাপহীন বিষণ্নতা ও দুঃখবোধের জায়গাগুলোতে তার অভিব্যক্তিগুলো ছিল প্রশংসনীয়।
গল্পের টুইস্ট ও ক্লাইমেক্স অংশগুলোতেও তার প্রতিক্রিয়াগুলো ছিল যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত এবং পরিমিতিবোধ সম্পন্ন। অবশ্য এখানে দৃশ্যের গতিশীলতার জন্য সম্পাদনা ও পরিচালনাও কৃতিত্বের দাবি রাখে।
২ সপ্তাহ আগে
আসছে তাহসান-মিথিলার ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’
স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়শৈলীর দৌলতে বর্তমান এপার ও ওপার বাংলার শোবিজ অঙ্গনে একটি সুপরিচিত মুখ রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। বিনোদন জগতের বিভিন্ন বিভাগে নিজের সমৃদ্ধ ছাপ রেখে বর্তমানে তিনি একজন সুপ্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। অপরদিকে বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনে জনপ্রিয় একটি নাম তাহসান রহমান খান। স্বতন্ত্র অভিনয় ধারায় নিজের একটি স্বাধীন ক্ষেত্র তৈরি করেছেন রোমান্টিক ঘরানার নাট্যজগতে। নিজেদের এই প্রতিভাগুলোর দারুণ মেলবন্ধনে ছোট পর্দার ভেতরে ও বাইরে সমান জনপ্রিয় জুটিতে পরিণত হয়েছিলেন তাহসান-মিথিলা। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে তাদেরকে আর একসঙ্গে দেখা যায়নি। অবশেষে ‘বাজি’ ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে দীর্ঘ বিরতির পর আবার একত্রিত হয়েছেন এই প্রাক্তন তারকা দম্পতি। চলুন, সদ্য নির্মিত এই ওয়েব সিরিজটির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
‘বাজি’ নির্মাণের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী
তাহসান-মিথিলা জুটির ছাড়াও ধারাবাহিকটিতে অভিনয় করেছেন মনোজ প্রামাণিক, নাজিয়া হক অর্ষা, তাসনুভা তিশা, মিম মানতাশা, পার্থ শেখ, শাহাদাত হোসেন এবং আবরার আতহারসহ আরও অনেকে।
ওয়েব কন্টেন্টটি পরিচালনার মধ্য দিয়ে ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ) প্ল্যাটফর্ম চরকির সঙ্গে প্রথমবারের মতো কাজ করলেন নব নির্মাতা আরিফুর রহমান। এর আগে তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন ‘স্কুটি’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে। তাছাড়া তার হাতে চরকির আরও একটি কাজ রয়েছে ‘জুঁই’ নামে, যেটি মুলত ‘চরকি মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ এর একটি ওয়েব ফিল্ম।
‘বাজি’র কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ভারতের আদিত্য সেন গুপ্ত এবং বাংলাদেশের হাসানাত।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ মুক্তির অপেক্ষায় কিছু চমকপ্রদ বাংলা নাটক
‘বাজি’ ওয়েব সিরিজের গল্প
৭ পর্বের এই সিরিজের গল্পের পটভূমিতে রয়েছে ক্রিকেট ম্যাচের উপর বাজি ধরা। এই বাজি সংক্রান্ত নানা সমস্যা বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে খেলার সঙ্গে জড়িত থাকা মানুষগুলোর জীবনকে। এই আবহ নিয়ে সাসপেন্স ও থ্রিলারের সন্নিবেশে দারুণ এক নাটকীয় পরিবেশন হতে যাচ্ছে ‘বাজি’। এর মাধ্যমে দর্শকদের সামনে উঠে আসবে ক্রিকেটের নানা অজানা গল্প। সেই সঙ্গে এটিই হতে যাচ্ছে ক্রিকেট নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ওয়েব সিরিজ।
‘বাজি’তে মিথিলা ও তাহসানের ভূমিকা
ওটিটি মাধ্যমে মিথিলা ইতোমধ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। ‘একাত্তর’, ‘মন্টু পাইলট ২’, এমনকি চরকির ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’-এ বিচিত্র রূপে হাজির হয়েছেন এই মেধাবী অভিনেত্রী। এবার ‘বাজি’তে তিনি আবির্ভূত হবেন একজন ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে।
অন্যদিকে টিভি নাটকে আনাগোনাটা বেশি থাকলেও প্রথমবারের মতো ওটিটিতে অভিষেক ঘটছে তাহসানের। এর মাধ্যমে আড়াই বছরের বিরতির পর তাহসান অভিনয়ে ফিরছেন। এখানে তাকে দেখা যাবে একজন ক্রিকেটারের ভূমিকায়।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ বাংলাদেশি যেসব সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়
চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে এই সঙ্গীতশিল্পীকে। ফ্লাড লাইটের আলোয় আলোকিত মাঠে কোন রূপ স্টান্ট ডাবল না নিয়ে নিজেই খেলেছেন ক্রিকেট। একটা ছক্কা হাকাতেই খেলেছেন ২০টা বল।
মিথিলা-তাহসানের জুটি নিয়ে বেশ হাইপ থাকলেও ৭ পর্বের এই সিরিজে শুধুমাত্র একটি দৃশ্যে তাদেরকে একসঙ্গে দেখা যাবে।
৬ মাস আগে
এল গার্লস স্কোয়াড সিজন-৩
জারা, তন্বী, রিয়া, ফারিয়া, মিম আর সাবরিনা। এই ছয় ব্যাচেলর বান্ধবী থাকে একই ফ্ল্যাটে। তাদের একেকজন একেক রকম। তাদের জীবনের নানা ঘটনা, অঘটন, প্রেম ও ঝামেলার গল্প নিয়ে ২০২১ সালে জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে এসেছিল ড্রামা সিরিজ ‘গার্লস স্কোয়াড’।
রিলিজের পরপরই সিরিজটি দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। লোকের মুখে মুখে চলে আসে সিরিজটির নাম। এই সিরিজের টাইটেল সং দিয়ে হয় টিকটক, পায় হাজার হাজার শেয়ার। সেই থেকে শুরু।
এরপর কেটে গেল একটি বছর। বের হলো এই সিরিজের আরেকটি সিজন। সেটিও পেল তুমুল জনপ্রিয়তা।
আর এই বছর এল সেই গার্লস স্কোয়াডের তৃতীয় সিজন!
মূল অভিনেত্রীদের পাশাপাশি এই সিজনে যোগ হয়েছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিকটক সেলিব্রেটি শামীমা আফরিন অমি।
গত দুই সিজনের মতো এবারের গল্পও স্কোয়াডের মেয়েদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে এগিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: অনন্ত জলিলের ‘দিন: দ্য ডে’ দেখা যাচ্ছে ওটিটি বঙ্গ বিডিতে
এখানে দেখা যায় টিকটকার অমি স্কোয়াডের নতুন ফ্ল্যাটমেট হয়ে এসেছেন। অন্যদিকে, জারা অর্থাৎ নাবিলার বিয়ে হচ্ছে। সেই বিয়ের দাওয়াতে স্কোয়াডের সবাই যায়। তারা গিয়ে জানতে পারে জারার বিয়ে হচ্ছে অন্য কারো সঙ্গে, গাঙ্গুয়া ভাইয়ের সঙ্গে নয়। এখান থেকেই শুরু হয় মূল গল্প। এরপর নানা ঘটনা, অঘটন ঘটতে থাকে স্কোয়াডের সদস্যদের জীবনে।
গার্লস স্কোয়াড সিজন-৩ নিয়ে বঙ্গের কন্টেন্ট ম্যানেজার হৃদয় জুলফিকার বলেন, ‘গার্লস স্কোয়াড অলরেডি মানুষের কাছে খুব পপুলার একটা সিরিজ। নতুন সিজনের জন্য অনেকদিন ধরেই আমাদের দর্শক বসেছিলেন। তাই রিলিজের সঙ্গে সঙ্গেই আমরা খুব ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। আশাকরি আগের দুই সিজনের মতো এই সিজনটিও মানুষের খুব ভালো লাগবে।’
গতকাল রাত ১২টা ০১ মিনিটে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে রিলিজ পায় গার্লস স্কোয়াড সিজন-৩।
রিলিজের পরপরই অসংখ্য দর্শক সিরিজটি দেখছেন বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: ওটিটিতে ঝড় তুলছে দিন-দ্য ডে!
ওয়েব ফিল্মে জুটি নিশো ও মেহজাবীন
১ বছর আগে
ওটিটিতে ঝড় তুলছে দিন-দ্য ডে!
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ-তে এসেছে অনন্ত জলিল ও বর্ষা অভিনীত চলচ্চিত্র দিন-দ্য ডে। ইরানের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত অ্যাকশনধর্মী এই ছবি গত ২৩ নভেম্বর রিলিজ পায়।
রিলিজের পর পরই সিনেমাটি দর্শক মহলে দারুণ সাড়া ফেলে দিয়েছে। মাত্র ৩ দিনে দুর্দান্ত ভিউজ পেয়েছে মুভিটি।
এই সিনেমায় নায়ক অনন্ত জলিলকে একজন আন্তর্জাতিক সংস্থার পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে দেখা যায়। নানা সন্ত্রাসগোষ্ঠী দমনে অভিযানে অংশ নেন তিনি।
সেই সূত্র ধরে তিনি আফগানিস্তানে একটি মিশনে যান। সেখানে মুখোমুখি হোন দুর্ধর্ষ টেরোরিস্ট আবু খালিদের সঙ্গে। জড়িয়ে পড়েন জীবন-মৃত্যুর এক কঠিন লড়াইয়ে!
সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন ইরানি পরিচালক মোর্তেজা অতাশ জমজম। বাংলাদেশ ছাড়াও সিনেমাটির শুটিং হয়েছে ইরান, তুরস্ক ও আফগানিস্তানে।
আরও পড়ুন: নতুন সিনেমার লুক প্রকাশ করলেন অনন্ত জলিল
এত কম সময়ে এত ভিউ পাওয়ায় দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ কর্তৃপক্ষ।
তারা বলেন, ‘দিন-দ্য ডে’র মাত্র তিন দিনে এত জনপ্রিয় হয়ে যাওয়া ওটিটিতে একটা বড় ব্যাপার। অনন্ত জলিলের এটি অন্যতম বিগ বাজেটের মুভি। মুভিটি আনার জন্য দর্শক অনেকদিন ধরেই আমাদের স্যোশাল মিডিয়াতে অনুরোধ করছিলেন। মুভিটি আনতে পেরে এবং এত ভালো সাড়া পেয়ে আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ! আমরা আশা রাখি, সামনের দিনগুলোতেও দর্শক আমাদের এভাবেই ভালোবেসে যাবেন!’
উল্লেখ্য, দিন-দ্য ডে সিনেমাটি ২০২২ সালের ঈদুল আজহায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশে পাঁচটি ভাষায় মুক্তি পায়। তবে মুক্তির পর সিনেমাটিকে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন অনন্ত জলিল।
আরও পড়ুন: ‘দিন: দ্য ডে’ এর বাজেট নিয়ে বিতর্ক, যা বললেন অনন্ত জলিল
অনন্ত জলিলের বিরুদ্ধে মামলা করবেন ‘দিন: দ্য ডে’র পরিচালক
১ বছর আগে
কড়ক সিং: জয়ার প্রথম হিন্দি সিনেমা আসছে ওটিটির পর্দায়
বলিউড সিনেমায় অভিষেক ঘটতে চলেছে ৫ বার বাংলাদেশের জাতীয় পুরষ্কার জয়ী অভিনেত্রী জয়া আহসানের। চলচ্চিত্রের নাম কড়ক সিং। যার প্রথম পোস্টার প্রকাশিত হয় ৯ নভেম্বর। তবে কোনো প্রেক্ষাগৃহে নয়, ছবিটি শিগগিরই মুক্তি পেতে চলেছে ভারতের ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ) প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে।
২০২২-এর শেষের দিকে প্রজেক্টটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন দুই বাংলার এই জনপ্রিয় তারকা। শুটিং ও নির্মাণের যাবতীয় কাজ শেষে ফার্স্ট লুক পোস্টারের মাধ্যমে তার হিন্দি সিনেমার ব্যাপারটি চূড়ান্ত হলো।
শুধু ক্যারিয়ারের একটি নতুন অধ্যায়ই নয়; এর মাধ্যমে ভারতের প্রতিভাবান সব চলচ্চিত্র কর্মীদের সাহচর্য পেলেন চির তরুণ এই অভিনেত্রী। চলুন, জয়ার এই নতুন যাত্রার বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কড়ক সিং নির্মাণের নেপথ্যের মানুষেরা
এই মুভির মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো হিন্দি ভাষায় নির্দেশনা দিলেন ভারতের বাঙালি নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী। ক্যারিয়ারের প্রথম ছবি অনুরণন (২০০৬) দিয়েই তিনি দর্শকদের কাছে নিজের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করেছিলেন। অনুরণনসহ অন্তহীন (২০০৮) এবং পিঙ্ক (২০১৬ ফিল্ম) তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এনে দেয়।
কড়ক সিং-এর কাস্টিং পরিচালনার কাজ করেছেন যোগী মল্লং, যিনি পূর্বে অস্কার জয়ী আরআরআর মুভির কাস্টিং ডিরেক্টর ছিলেন। তিনি নিজেও ছবির একটি ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তার সঙ্গে কাস্টিংয়ে সহপরিচালক হিসেবে রয়েছেন অভিষেক বাগচী।
আরও পড়ুন: অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে সিনেমাটি করতে হয়েছে: জয়া আহসান
প্রোডাকশন ডিজাইনের দায়িত্বে ছিলেন নাতাশা গৌউবা, যিনি এর আগে সালমান খানের রেস-৩ (২০১৮) ও দীপিকার রামলীলা (২০১৩) এর প্রোডাকশন ডিজাইন করেছিলেন।
সঙ্গীত আয়োজন করেছেন ভারতের খ্যাতিমান সুরকার, গায়ক ও সঙ্গীত পরিচালক শান্তনু মৈত্র।
চিত্রগ্রহণ সম্পন্ন করেছেন অভিক মুখোপাধ্যায়, যিনি অনিরুদ্ধর পিঙ্ক মুভির সিনেমাটোগ্রাফি করেছিলেন।
ছবির সামগ্রিক সম্পাদনায় নিয়োজিত ছিলেন অর্ঘকমল মিত্র।
কড়ক সিংয়ে জয়ার সহঅভিনয় শিল্পীরা
ছবির নাম ভূমিকায় এখানে দেখা যাবে বলিউড অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠী। যদিও চলচ্চিত্রের ভাষা বাংলা নয়; কিন্তু একজন বাঙালি পরিচালকের সঙ্গে এ নিয়ে পঙ্কজ তৃতীয়বারের মতো কাজ করলেন।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে 'দিল বেচারা'(২০২০) খ্যাত অভিনেত্রী সঞ্জনা সাংঘী, এবং মালায়ালাম অভিনেত্রী পার্বতী থিরুভোথু। এছাড়াও রয়েছেন দিলীপ শঙ্কর, পরেশ পাহুজা, বরুণ বুদ্ধদেব সহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: ‘বিউটি সার্কাস’ টিমের প্রতি কৃতজ্ঞ: জয়া আহসান
১ বছর আগে
পুনর্মিলনে: প্রতিটি চরিত্র গল্পের প্রাণ
ওটিটি বাংলাদেশের ফিকশন জগতের জন্য আশীর্বাদ বলাটাই হয়তো স্বার্থকতা হবে। কারণ আমাদের দেশের নির্মাতারাও যে এভাবে এত সুন্দর ও স্পষ্টভাবে গল্প বলতে পারে তা আগে আর জনা যায়নি। এখন তো সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ নিয়ে আলোচনায় বাংলা কনটেন্ট সবচেয়ে গুরুত্ব পায়।
এবার এই লেখার শিরোনাম প্রসঙ্গে আসি। গত ২১ সেপ্টেম্বর ‘চরকি’র পর্দায় মুক্তি পেল মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম ‘পুনর্মিলনে’। যেটির খবর প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক আলোচনায় ছিল। সিনেমাটি নিয়ে বলতে গেলে সবার আগে নির্মাতার লোকেশন সিলেকশন নিয়ে প্রশংসা করতে হয়। চা বাগানের এলাকার আঁকাবাঁকা পথ, উপর থেকে সবুজের সমারহ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী জিন্নাত বরকতুল্লাহ মারা গেছেন
পৌনে দুই ঘণ্টার এই সিনেমার আরও যেই বিষয়ে নির্মাতা খুব যত্ন দিয়েছেন তা হলো চরিত্র। প্রতিটি চরিত্রকে তিনি আলাদাভাবে ভেবে ডিজাইন করেছেন তা শেষ পর্যন্ত দেখলে বোঝা যায়। বাড়ির মুরুব্বি থেকে শুরু করে ছোটদের স্ক্রিন টাইম বেশ গুছিয়ে নিয়েছেন আরিয়ান।
যে দুটি চরিত্র নিয়ে একটু আলাদাভাবেই বলতে হয় তারা হলেন অন্তু ও নয়ন। নূর ইমরান মিঠুকে প্রথম দেখি ‘পিঁপড়াবিদ্যা’ সিনেমায়। পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয়ে তার সাবলীলতা বরাবরই ভালো লাগবে। মিজানুর রহমান আরিয়ানের কারণে তার প্রতি ভালো লাগাটা বাড়লো।
শুরুতে থেকে শেষ পর্যন্ত চরিত্রটি তিনি যেভাবে বয়ে নিয়ে গেছেন তা প্রশংসনীয়। আর ‘পুনর্মিলনে’র অন্তু হচ্ছেন সিয়াম আহমেদ। ধরা যাক আপনার সামনে একটি ফুলের বাগানে আছেন, সেখানে যেই ফুলের স্নিদ্ধতা আপনাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করবে সে অন্তু। বিশেষ করে সিনেমার প্রায় শেষাংশ যেন অন্তুময়।
‘পুনর্মিলনে’ যে তাসনিয়া ফারিণ করছেন সেটি তো সবারই জানা। পুরো সিনেমায় অল্প সময় পাওয়া গেছে তাকে। হয়তো তিনি যেই চরিত্রে ছিলেন সেটির স্পেস নির্মাতা নিজেই খুব বেশি দিতে চাননি। অবশ্যই সেটি নির্মাতার নিজস্বতা। কিন্তু যেহেতু তাসনিয়া ফারিণের শেষ কয়েকটি কাজে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে তাই হয়তো এখানে তার অভিনয়ের জায়গাটা পেলে দর্শক হিসেবে ভালো লাগতো।
এবার একটু গল্প নিয়ে বলি। গল্প চলে বর্তমান আর অতীতের পথ ধরে। এমন ছকে গল্প বলাটাও নতুন না। মানে দর্শক এভাবে গল্প দেখে অভ্যস্ত। এটি বলার কারণ, নির্মাতা এখানে প্রতিটি সিকোয়েন্স যেভাবে গল্পটাকে গেঁথেছেন তার শুরুর অনেকটা সময় চোখে খটকা লাগার মতো। মানে মনে হবে একটা ঘটনা শুরু হয়ে সেটার শেষ না হয়েই অন্য ঘটনায় চলে গেছে।
আর এটি যখন কয়েকবার হয় তখন দর্শকের মাঝেও একটা অপূর্ণতা তৈরি হয়। যেহেতু বর্তমান ও অতীত গল্পের সংমিশ্রন তাই এই যত্নে খানিকটা কমতি দেখা গেছে।
‘পুনর্মিলনে’ যদি এবার একটা ফুলের ঝুড়ি ভাবেন সেখানে দেখবেন সব সুন্দর সুন্দর ফুল, শুধু মালা গাঁথাটা মনে হয় আরেকটু ঠিকঠাক হতে পারতো।
তবে আপনি যখন সিনেমাটা দেখা শেষ হবে এসবকিছু যেন ভুলে যাওয়া যায়। তার কারণ সিয়াম আহমেদ। তিনি যে প্রতি নিয়ত অভিনয়ে আরও দক্ষ হয়ে উঠছেন ‘পুনর্মিলনে’ সেটি প্রমাণ করে। শেষ পর্যন্ত গল্পের আবেগ ধরে রেখেন এই অভিনেতা। সিনেমা শেষে ভাবনার বেশিরভাগ জায়গাজুড়েই সিয়াম।
আরও পড়ুন: 'বাঘা যতীন' লুকে দেবের চমক
বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে যা বললেন রাজ
১ বছর আগে
আমি কী তুমি: মেহজাবিনকে নিয়ে ভিকি জাহেদের নতুন ওয়েব সিরিজ
নিজের একটি আলাদা দর্শক শ্রেণী তৈরির পাশাপাশি বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে পরিবর্তনের হাওয়া দিয়ে চলেছেন নাট্য নির্মাতা ভিকি জাহেদ। যুগের চলমান সম্প্রচার মাধ্যম ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ) প্ল্যাটফর্মেও ঘটে চলেছে তার সরব বিচরণ। সেই অবিস্মরণীয় কাজগুলোর সারিতে শামিল হওয়া আরও একটি কাজ ‘আমি কী তুমি’। গত ২৭ জুলাই চ্যানেল আইয়ের ওটিটি আই স্ক্রিনের পর্দায় দুপুর ৩টায় স্ট্রিমিং হয়ে গেলো ওয়েব সিরিজটির। নারীপ্রধান সিরিজটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন মেহজাবিন চৌধুরী। চলুন, সদ্য শুরু হওয়া এই ধারাবাহিকটির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আমি কী তুমি: বৈজ্ঞানিক পটভূমির রহস্য গল্প
একদিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আট এপিসোডের সিজনকে খুব সংক্ষেপে বলা যেতে পারে রহস্য গল্প। প্রতিটি এপিসোডে সঙ্গতিপূর্ণ ভাবে রহস্যের জাল বুনে ধীরে ধীরে খোলা হয়েছে জটগুলোকে।
তবে নিজের প্রথাগত থ্রিলার ও সাসপেন্স আবহের সঙ্গে ভিকি জাহেদ এবার যোগ করেছেন বৈজ্ঞানিক প্রেক্ষাপট।
তিথি নামের একটি মেয়ের জীবনের একটাই লক্ষ্য; আর তা হলো সিনেমার নায়িকা হওয়া। শহরে একের পর এক ঘটতে থাকা নারী হত্যা এবং সিনেমায় কাজ করার ব্যাপারে পরিবারের চাপ কোন কিছুই তার পথের কাঁটা হতে পারে না। কিন্তু একদিন রহস্যময় ক্রিস্টাল বৃষ্টির পর থেকে অদ্ভূত সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে তিথির জীবনে। শুধু তাই নয়, পুরো জীবনের মানেটাই বদলে যায় তিথির কাছে।
আরও পড়ুন: ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের বিপরীতে এবার বলিউড নায়িকা
এমনি রহস্যে মোড়া জীবনচরিতের চারপাশ জুড়ে চিত্তাকর্ষক এক আবহের সৃষ্টি করা হয়েছে আকাশের গায়ে সবুজ বলয়রেখা দেখিয়ে। ট্রেলারের সময় থেকেই দৃশ্যটি দর্শকদের মনে একটাই সম্ভাবনার উদয় ঘটায়; আর তা হচ্ছে পৃথিবীতে এলিয়েন আগ্রাসন। কিন্তু তার সত্যতা এই প্রথম সিজনেই যাচাই করা হয়নি। এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে দ্বিতীয় সিজনের জন্য।
তবে প্যারালাল বা সমান্তরাল জগতের বিষয়টি এই প্রথমবারের মত চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হলো বাংলাদেশি কোনও নাটকে। বাংলাদেশের প্যারালাল ভার্সন; বা সিগমা বাংলাদেশ শব্দ দুটো ইতোমধ্যেই ঠাই করে নিয়েছে দর্শকদের হৃদয়ে।
ট্রেলার বা পোস্টার দর্শন পর্যন্ত ‘আমি কি তুমি’ শিরোনামটিকে ভাবা হয়েছিলো মনস্তাত্ত্বিক অথবা প্রতীকী হিসেবে। কিন্তু তা যে আসলে আক্ষরিক, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে সিরিজটি মুক্তির পর।
কিন্তু এরপরেও টুইস্টে ভরপুর সিজনটি নতুন কিছু রহস্যের বীজ রেখে গেছে দর্শকদের জন্য। সেই সঙ্গে বাড়িয়ে দিয়ে গেছে দ্বিতীয় সিজন দেখার অদম্য আগ্রহ।
ভিকি জাহেদের নৈপুণ্যে নাট্যশাস্ত্রের অভিজাত ষোলকলা
রেডরাম, দ্যা সাইলেন্স ও পূনর্জন্ম-এর দর্শকরা ভিকি জাহেদের অনন্য গল্প বলার সঙ্গে অভ্যস্ত। সেই সঙ্গে বিদেশি গল্প ও সিনেমা অনুসরণের ব্যাপারটিও জড়িয়ে আছে তার নাটক নির্মাণের সঙ্গে। কিন্তু এই অনুসরণ তাকে নগ্ন অনুকরণের দিকে ঠেলে দেয়নি। বরং তাকে সাহায্য করেছে নাট্যশাস্ত্রের অভিজাত উপাদানগুলোকে আবিষ্কার করতে এবং তা রপ্ত করতে। আর তারই প্রভাব দেখা গেছে তার প্রতিটি কাজে।
২০১৬-এর সেই ‘মোমেন্ট্স’ শর্টফিল্ম থেকে শুরু করে এই ‘আমি কী তুমি’ ওয়েব সিরিজ পর্যন্ত গল্প দেখানোর ব্যাকরণগুলোর উত্তোরোত্তর আগমন ঘটেছে তার নির্মাণশৈলীতে।
অধিকাংশ কাজে তার অনুসৃত পূর্বসূরীদের কিছুটা ঝলক থাকে। তবে এবার তিনি যেন উজাড় করে পরিবেশন করেছেন আলফ্রেড হিচকক, ডেভিড ফিঞ্চার ও মার্টিন স্করসেজের মত বিশ্বখ্যাত থ্রিলার নির্মাতাদের।
তাছাড়া এর সম্পাদনা এবং ভিজুয়াল ইফেক্টের কাজও বাংলাদেশি নাটকে আগে কখনোই দেখা যায় নি। তিনি দারুণ ভাবে দেখিয়েছেন, কিভাবে কারিগরি বিভাগের অল্প পরিবেশনা দিয়েও বিশ্ব মানের কন্টেন্ট তৈরি করা যায়।
নিজের কন্টেন্ট নির্মাণে যে তিনি কোনও রকম তাড়াহুড়ো করেন না, সে ব্যাপারে ভিকি ভক্তরা অবহিত আছেন।
আরও পড়ুন: সাড়ে ষোলো: হইচই ওটিটিতে আফরান নিশোর নতুন ওয়েব সিরিজ
কিন্তু এবার আরও মজবুত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তিনি বেশ পড়াশোনা করে তবেই মাঠে নামেন। সুতরাং দর্শক শুধু নির্মল বিনোদনই পাবেন না, তার নাটক দেখে অনেক চমকপ্রদ বিষয় সম্পর্কে জানবেনও। সেই অবাক করা তথ্যচিত্রের সাক্ষী হওয়ার জন্য হলেও দর্শকরা চোখ রাখতে চাইবেন এই নব্য নির্মাতার কাজে। এরকম বিস্ময়কর তথ্য সমৃদ্ধ কন্টেন্ট নির্মাণ করতে বাংলাদেশে এর আগে কেবল একজনকেই দেখা গেছে। তিনি হলেন প্রয়াত ঔপন্যাসিক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ুন আহমেদ।
১ বছর আগে
পাতালঘর: চরকিতে আসছে নুসরাত ফারিয়ার ওয়েব ফিল্ম
মডেলিং থেকে শুরু করে টিভি শো ও বড় পর্দা, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সমানভাবে পরিচিত মুখ নুসরাত ফারিয়া। ভারত ও বাংলাদেশে সমানভাবে নিজের স্বাক্ষর রাখা এই তারকা এবার পদার্পণ করতে চলেছেন ওটিটি জগতে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য ওটিটি চরকিতে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার অভিনীত ওয়েব ফিল্ম ‘পাতালঘর’। বাণিজ্যিক ঘরানার চলচ্চিত্রের বাইরে ভিন্ন বেশে দেখা যাবে নুসরাত ফারিয়াকে। চলুন, তারকাবহুল এই চলচ্চিত্রটির ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
পাতালঘরের গল্প
বহুদিন পর ঘরে ফিরে আপন মানুষগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে ভীষণ অস্বস্তিতে পড়ে যায় মেয়েটি। যেমনটা অস্বস্তির সৃষ্টি হয় কোনো অপরিচিত মানুষের সান্নিধ্যে। মায়ের সঙ্গেই যেখানে স্বাভাবিক হওয়া দায় হয়ে পড়ছে, সেখানে অন্যান্য মানুষগুলোকে রীতিমতো অচেনা ঠেকে মেয়েটির কাছে।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পেশাগত জীবনে সর্বোচ্চ শিখরে জায়গা করে নেওয়া অপরিহার্য। কিন্তু কর্মজীবনের সেই খ্যাতি যখন চিরচেনা সম্পর্কগুলোতে জটিলতা সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন পুরো জীবনটা যেন বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: এমআর-৯ ডু অর ডাই: মাসুদ রানা আসছেন রূপালি পর্দায়
এমনি সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে আবর্তিত হয়েছে পাতালঘরের কাহিনী। পরিণত সংলাপের মাধ্যমে নানা ধরনের চরিত্রের মাঝে সবচেয়ে বেশি আলোকিত হয়েছে মা ও মেয়ের গল্প।
দীর্ঘদিনের জীবনধারার দৌরাত্ম্য ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে ছাড়িয়ে চির সত্য এই সম্পর্কটি তার গন্তব্য খুঁজে পাবে কি না- তারই জবাব মিলবে এই পাতালঘরে।
পাতালঘর ওয়েব ফিল্মের নেপথ্যে রয়েছেন যারা
পাতালঘরের পরিচালনা করেছেন ‘কমলা রকেট’ খ্যাত নূর ইমরান মিঠু। ২০১৮ সালের কমলা রকেট ছিল তার প্রথম চলচ্চিত্র, যেটি দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
পাতালঘরের প্রযোজনা কমিটিতে আছেন আবু শাহেদ ইমন, মীর মোকাররম হোসেন, ফরিদুর রেজা সাগর ও তাহরিমা খান। চলচ্চিত্র নির্মাণ সংস্থাগুলো হলো- বক্স অফিস, গল্প রাজ্য ফিল্মস, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড, বাতায়ন প্রোডাকশনস এবং জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিন।
চলচ্চিত্রটির শুটিং হয়েছিল কোভিড মহামারির সময় ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে রাজবাড়ীর পাংশা এলাকায়।
আরও পড়ুন: দর্শক আগ্রহে এগিয়ে ‘সুড়ঙ্গ’, ‘প্রিয়তমা’ ও ‘প্রহেলিকা’
পাতালঘর ওয়েব ফিল্মের অভিনয়শিল্পীরা
তারকাবহুল ওয়েব ফিল্মটিতে নুসরাত ফারিয়ার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় রয়েছেন ৯০ দশকের জনপ্রিয় নাট্যাভিনেত্রী আফসানা মিমি। এ পর্যন্ত মাত্র চারটি চলচ্চিত্রে কাজ করলেও অভিনয় দক্ষতার ক্ষেত্রে নাটকের তুলনায় কোনো অংশে যে কম হবে না তা অনুমেয়। ফারিয়ার মতো তারও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এটা প্রথম কাজ। এই প্রথমবারের মতো তারা একসঙ্গে কাজ করছেন।
ওয়েব ফিল্মটিতে সেই তারকা খ্যাতি পাওয়া মেয়েটির ভূমিকায় থাকবেন নুসরাত ফারিয়া। আর তার মায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে আফসানা মিমিকে।
অন্যান্য তারকারা হলেন- রওনক হাসান, নাজিয়া হক অর্ষা, নাসির উদ্দিন খান, ফজলুর রহমান বাবু, সালাউদ্দিন লাভলু, এবং মামুনুর রশীদ। এছাড়াও রয়েছেন দীপান্বিতা মার্টিন, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, মামুন-উল-হক, আরফান মৃধা শিবলু, চন্দনা বিশ্বাস, হাসনাত রিপন, মৌটুসী বিশ্বাস এবং শাদাত রাসেল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সিনেমার বড় বাজার তৈরি হবে: নিরব
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাতালঘর
ওয়েব চলচ্চিত্রটি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রে উৎসবে সম্মানিত হয়েছে। ২০২২ সালে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত ৫৩-তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (আইএফএফআই) চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়েছিল। বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ার অন্যান্য প্রতিযোগী চলচ্চিত্রগুলোর সঙ্গে একই সারিতে শামিল ছিল পাতালঘর।
এ বছর মার্চে নেপালের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ৩৫টি দেশের ৯৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। সেগুলোর মধ্যে থেকে বাংলাদেশের পাতালঘর সেরা ফিচার চলচ্চিত্র হিসেবে ‘দন কিহোতে পুরস্কার’ জিতে নেয়।
শেষাংশ
চরকি অরিজিনাল ওয়েব ফিল্ম পাতালঘর তারকা নুসরাত ফারিয়ার জন্য হতে পারে এক বিশাল অর্জনের ক্ষেত্র। গ্ল্যামার জগতের বিচিত্র অঙ্গনে ইতোমধ্যে নিজের একটি সপ্রতিভ জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন ফারিয়া। সেই সূত্রে, এই মেধাবী তারকা ওটিটি চলচ্চিত্রের অভিনয় ধারায় কতটুকু উতড়ে যেতে পারছেন- এখন সেটাই দেখার বিষয়। এই ওয়েব ফিল্মের সম্ভাব্য সফলতায় নিজের পোর্টফোলিও ভারি হওয়ার বিষয়তো থাকছেই। পাশাপাশি একজন পূর্ণাঙ্গ ও দক্ষ অভিনেত্রী হিসেবেও দর্শকদের নিকট এক নতুন পরিচয় সৃষ্টি করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সাড়ে ষোলো: হইচই ওটিটিতে আফরান নিশোর নতুন ওয়েব সিরিজ
১ বছর আগে
সাড়ে ষোলো: হইচই ওটিটিতে আফরান নিশোর নতুন ওয়েব সিরিজ
ভক্ত থেকে শুরু করে নাট্যপাড়া; সর্বত্র আফরান নিশো মানেই এক বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিনেতার নাম। আর বর্তমান সময়ের ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ)ঘরানার কন্টেন্টগুলো সেই বিচিত্রতায় যেন জোয়ার এনেছে। সেই দক্ষতারই আরও এক ঝলক ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই-এর ওয়েব সিরিজ ‘সাড়ে ষোলো’। দর্শক ইতোমধ্যে নিশোর অভিনয়ের ষোলকলায় মশগুল হয়ে আছে। তাদের সম্বিত ফেরার আগেই আগামী ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘সাড়ে ষোলো’। নতুন এই হইচই অরিজিনাল সিরিজটি নিয়েই আজকের বিনোদন কড়চা।
ওয়েব সিরিজ সাড়ে ষোলোর গল্প
ধূর্ত শব্দটি একজন ব্যক্তি রেজার জন্য নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য হিসেবে জাহির করা যাবে না। কেননা ভালো-খারাপ নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ মানুষ। তবে এতটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়, পরিবারের প্রতি নিবেদিত রেজা বেশ বুদ্ধিমান।
অন্যদিকে পেশাগত জীবনে তিনি বেশ প্রতিভাবান ও সফল একজন আইনজীবী। তাই মামলার জটিলতা, শুনানির চাপ, বাদি-বিবাদি নিয়ে চিন্তা তার কাছে কোন নতুন ব্যাপার নয়। কিন্তু হঠাৎ এক মামলার শুনানির দিনের আগের রাতে রহস্যময় কিছু ঘটনা আমূল বদলে দেয় তার জীবনকে।
এমনি গল্প নিয়ে এগিয়েছে ৬ পর্বের মিনি থ্রিলার সিরিজ ‘সাড়ে ষোলো’। পুরো সিরিজের কাহিনী একটি হোটেল আর রেজার শুনানিতে যাবার আগের সেই রাতের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে। আর সাড়ে ষোলো হচ্ছে ফ্লোরের সংখ্যা। এখানে ১৬ ও ১৭-তম ফ্লোরের মাঝামাঝি কোনো জায়গা বা ফ্লোরের রহস্য লুকিয়ে আছে কিনা তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: সে খুবই চতুর কিন্তু একজন ফ্যামিলি ম্যান: নতুন চরিত্র সম্পর্কে আফরান নিশো
সাড়ে ষোলোর নেপথ্যের মানুষ
মিনি থ্রিলার সিরিজটির পরিচালকের নাম ইয়াসির আল হক। আর এই সিরিজটির মাধ্যমেই ওটিটি জগতে তার অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে। এছাড়া এটি তার নির্মিত প্রথম ওয়েব সিরিজও। মূল পরিচালনায় নব্য হলেও এই তরুণ নির্মাতা বেশ প্রতিশ্রুতিশীল এবং কাজের ব্যাপারে নিবেদিতপ্রাণ। তিনি ৭৪-তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘আন সার্তেন রিগার্দ’ পুরষ্কার প্রাপ্ত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর কাস্টিং ডিরেক্টর ও সহকারি পরিচালক ছিলেন।
সাড়ে ষোলোর আফরান নিশো
জীবনের প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘কাইজার’ দিয়েই বাজিমাত করে দিয়েছিলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় তারকা আফরান নিশো। তারপর সবেমাত্র এক বছর পেরিয়েছে। কাইজার জ্বর এখনো কাটেনি নিশো ভক্তদের। এর মধ্যে আবার গত ঈদুল আযহায় মুক্তি পেলো তার অভিনীত সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’।
জীবনের প্রথম সিনেমাতেই বুঝিয়ে দিলেন, তিনি শুধু ছোট পর্দায় আরামপ্রিয় নন। এছাড়া ভিকি জাহেদের পূনর্জন্ম ফ্র্যাঞ্চাইজিতে তার অভিনয়ের রেশ এখনো কাটেনি দর্শকদের মন থেকে।
চরিত্রের কর্মকান্ডকে আলাদা করে শুধুমাত্র তার আচরণ বা দৃষ্টিভঙ্গিকে বিবেচনা করলে, পুনর্জন্মের রাফসান ও সুড়ঙ্গের মাসুদ বেশ থ্রিলিং ও সাসপেন্সে ভরপুর ছিলো।
এবার সাড়ে ষোলোতেও কি ভক্তরা সেই রাফসান বা মাসুদকে দেখতে যাচ্ছেন কিনা তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে হৈচৈ অরিজিনাল সিরিজটির স্ট্রিমিং পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্ক মাতাচ্ছে 'সুড়ঙ্গ'
সাড়ে ষোলোর নির্মাণ ও হইচই যাত্রা
সিরিজটি মহা সমারোহে এর নির্মাণ যাত্রার সূচনা ঘটায় চলতি বছরের ১২ জুন ঢাকাতে শুটিং-এর মাধ্যমে। ১৪ দিন পর চিত্রগ্রহণের শেষ দিনটি ছিলো ২৬ জুন। এরপর গত ১৬ জুলাই রবিবার হইচই সিরিজটির ফার্স্ট লুক প্রকাশ করে। সেই সাথে ঘোষণা করা হয় আগামী ১৭ আগষ্টে এর মুক্তির দিনক্ষণও।
নির্মাতাগণ এখনো সিরিজটির বাকি কলাকুশলী ও অভিনয় শিল্পীদের কথা গোপন রেখেছেন। শিগগিরই প্রচারণার সময় তা প্রকাশ করা হবে, আর সেই সঙ্গে থাকবে সাড়ে ষোলো সংখ্যাটিকে ঘিরে আরও কিছু রহস্যের খোরাক।
শেষাংশ
ওটিটির কাজগুলো আফরান নিশোর অভিনয় ক্যারিয়ারের জন্য এক বিশাল মাইলফলক। সেই যাত্রায় হইচই ওটিটি প্লাটফর্মে আসন্ন ওয়েব সিরিজ ‘সাড়ে ষোলো’ এক অভাবনীয় পদক্ষেপ হতে যাচ্ছে। এ কথা বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের নাটক এমনকি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্যও এ ধরনের কন্টেন্ট বিপুল প্রভাব বিস্তার করছে। ইতিবাচক এই পরিবর্তনে আশা করা যায়, বাংলাদেশ শিগগিরই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সিরিজ নির্মাণের তালিকায় শামিল হতে পারবে।
আরও পড়ুন: এমআর-৯ ডু অর ডাই: মাসুদ রানা আসছেন রূপালি পর্দায়
১ বছর আগে