যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্য আশা করে ড. ইউনূস জাতীয় ঐক্যের পরিকল্পনা তুলে ধরবেন: ক্যাথরিন
যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার জাতীয় ঐক্য ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই যুক্তরাজ্য আশা করছে, কীভাবে সেসব বাস্তবায়ন করা হবে, সে বিষয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ক্যাথরিন বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জনগণকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে সহায়তা করার চেষ্টা করবে।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের
উত্তরে তিনি বলেন, 'অবশ্যই এবং আমরা আশা করছি, কীভাবে এসব ঘটবে সে বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন অধ্যাপক ইউনূস।’
ওয়েস্ট বলেন, তারা জানেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এসব উদ্দেশ্য সাধন করতে যুক্তরাজ্য সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, তারা একক কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি। তবে বাংলাদেশ বর্তমানে রূপান্তরের পর্যায়ে থাকায় তারা সরকারকে সমর্থন করতে চান।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেসব কাজ করছে আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করতে চাই।’
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, 'আমরা জানি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী।’
বাংলাদেশের জনগণের জন্য উন্নত গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃঢ় সংকল্পকে স্বাগত জানান তিনি।
ওয়েস্ট বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের খুব শক্তিশালী ও অবিচল বন্ধুত্ব রয়েছে। আমরা শক্তিশালী অংশীদারত্ব গঠন করতে চাই এবং সেই গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিপ্রস্তরটি শক্তিশালী সম্পর্কের ওপর নির্মাণ করতে চাই। পাশাপাশি একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
অর্থনীতি ও বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি জানান, তারা একসঙ্গে অনেক কিছু করছেন এবং তাদের অবশ্যই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রিন্সেস ক্যাথরিনের সাহসিকতায় গর্বিত রাজা চার্লস
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, কয়েক মাসের অশান্ত অবস্থার পর বাংলাদেশের জনগণের 'শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ ও জবাবদিহির' জন্য একটি পথ পাওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, 'অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে এবং শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজে যুক্তরাজ্য কীভাবে সর্বোত্তম সহায়তা করতে পারে তা, নিয়ে আলোচনা করতে আমি এখানে এসেছি।’
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা শরণার্থীদের জন্য উপযুক্ত আশ্রয় নির্মাণ এবং শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ ও শিক্ষা নিশ্চিত করতে তারা আরও ১০ মিলিয়ন পাউন্ড ঘোষণা করেছেন।
গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এই প্রথম যুক্তরাজ্যের কোনো মন্ত্রীর সফর বাংলাদেশ সফর।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, নিরাপত্তা, বাণিজ্য সহযোগিতা এবং যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ অভিবাসনে চলমান সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বর্তমানে অনন্য ও ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব বিরাজ করছে। এটি দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক এবং অভিন্ন কমনওয়েলথ মূল্যবোধের কারণে দৃঢ় হয়েছে।
এই সফরে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতা এবং সুশীল সমাজের সঙ্গেও বৈঠক করবেন ওয়েস্ট।
ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের জন্য আরও সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজকে সমর্থন করে যুক্তরাজ্য।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, 'ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্টকে বাংলাদেশে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।’
হাইকমিশনার বলেন, এই সফর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারত্বকে আরও ব্যাপক ও গভীর করবে।’
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ বর্তমানে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারে সহায়তা করবে। এটি বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে।’
যুক্তরাজ্যের সহায়তার মধ্যে বিক্ষোভে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত মেডিকেল টিম মোতায়েনের কথাও রয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশের স্থানীয়রা যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সেবা পাবে।
এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিরাও যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে সহায়তাও পাবেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে ছাত্রনেতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন ব্রিটিশ মন্ত্রী।
এছাড়া দৃঢ় সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে এবং পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রিন্সেস ক্যাথরিন ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে উঠবেন, প্রিন্স হ্যারি-মেগানের আশা
১ সপ্তাহ আগে
গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ চায় যুক্তরাজ্য
জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভের ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনাকে ‘আরেকটি স্মরণীয় ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে সকল বাংলাদেশির স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ জনগণের সাহসিকতার স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাজ্য। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের আহ্বান জানায়।’
তিনি বলেন, ‘আজ যেসব রোগীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, যুক্তরাজ্যের ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিম হাসপাতালের টিমের সঙ্গে কাজ করে প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত চিকিৎসা দিচ্ছে।’
যুক্তরাজ্যের ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিম নিটোরের যেখানে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিচ্ছে, সে জায়গাটি পরিদর্শন করেন সারা কুক।
অভিজ্ঞ এই দলটি গত ৫ নভেম্বর থেকে বেশ কয়েকজন আহত শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি জটিল অস্ত্রোপচারসহ ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন সেবাও দিচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের দশকে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী: অধ্যাপক ইউনূস
১ সপ্তাহ আগে
ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
একটি দেশের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সভ্যতা বিনির্মাণ ও সংস্কৃতির সংস্কারের প্রতিটি স্তরে যোগ্য লোকের উপস্থিতি দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে। আর এর মধ্যে সুপ্ত থাকে সেখানে বসবাসরত মানুষের মানসম্পন্ন জীবন ধারণের বীজ। এই বিষয়গুলো বিচারে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় দেশটি হলো যুক্তরাজ্যের অন্যতম প্রধান দেশ ইংল্যান্ড। বিশ্ববিখ্যাত সব বিদ্যাপীঠের আশ্রয়স্থল হওয়ায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে দেশটিকে ঘিরে ক্যারিয়ার গঠন করার। চলুন, ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন পদ্ধতি, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুবিধাগুলো জেনে নেওয়া যাক।
কেন ইংল্যান্ড উচ্চশিক্ষার সেরা গন্তব্য
ক্যারিয়ার গঠনে ইংল্যান্ড শিক্ষার্থীদের সেরা পছন্দ হওয়ার নেপথ্যের মূলে রয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে দীর্ঘ সময় ধরে শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে চারটি ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়। তার মধ্যে দ্বিতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ। তারপরেই রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। ৬ ও ৯ নাম্বারে রয়েছে যথাক্রমে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন।
তাছাড়া যুক্তরাজ্যের দেশগুলো আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের রীতিমতো স্বর্গরাজ্য। তার মধ্যে শিক্ষার্থীর সেরা শহর বিবেচনায় কিউএস র্যাংকিং ২০২৪-এর শীর্ষতম স্থানটি দখল করে আছে লন্ডন।
যুক্তরাজ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইংল্যান্ডের জীবন ধারণের মানও উন্নত। বিশেষ করে আকর্ষণীয় স্কলারশিপগুলো অর্জনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি সেই জীবন ধারণের সান্নিধ্যে যেতে পারে বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের পূর্বশর্ত
একমাত্র অন্য প্রয়োজন হলো আইইএলটিএস পরীক্ষায় ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর।
আন্ডারগ্রেড প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য ন্যূনতম ১৩ বছরের একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ অতিবাহিত করতে হবে। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের যোগ্যতা যুক্তরাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক বা ন্যাশনাল ডিপ্লোমায় পরিচালিত ‘এ’ স্তরের পরীক্ষার সমতুল্য হওয়া আবশ্যক। আর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে আবেদনের প্রথম শর্ত হলো স্নাতক পাশ করা।
শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত জিপিএ ৮০ এবং ৯৫ শতাংশের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। সেখানে ফলাফল ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ হলে আবেদন করা যাবে মাঝারি-স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলো সর্বশেষ অর্জিত ডিগ্রির মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) ইংরেজি দেখেই আবেদন গ্রহণ করে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভর্তির অন্যতম প্রধান যোগ্যতা থাকে ভালো আইইএলটিএস স্কোর। উপরন্তু, স্কলারশিপের প্রদানে একাডেমিক যোগ্যতার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হয়।
স্নাতক অধ্যয়নের জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ থাকতে হয়। প্রি-মাস্টার প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর। সরাসরি স্নাতকোত্তরে আবেদন করতে লাগবে ৬ থেকে ৭ ব্যান্ড স্কোর। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে তা ভিন্ন হতে পারে। এমবিএতে আবেদনের যোগ্যতায় অতিরিক্ত দেখাতে হবে ২ থেকে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। এই ক্ষেত্রে আইইএলটিএস ফলাফল ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭-এর মধ্যে থাকা জরুরি। আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোরের এই শর্তটি পিএইচডির জন্যও প্রযোজ্য। তবে অবশ্যই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।
স্নাতকোত্তরের কোনো কোনো কোর্সে আরও কিছু প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোরের প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন হচ্ছে জিআরই ও জিম্যাট।
আরো পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কোর্সের তালিকা
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-
· ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ
· ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড
· ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন
· ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
· ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ
· ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার
· কিংস কলেজ লন্ডন
· লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্স
· ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল
· ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক
আরো পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
অধ্যয়নের জন্য ইংল্যান্ডগামী ছাত্রছাত্রীরা যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি বাছাই করে, সেগুলো হলো-
· আইন
· ফিজিওথেরাপি
· অ্যাকচুয়ারিয়াল সায়েন্স
· ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা
· মনোবিজ্ঞান
· ডেটা সায়েন্স
· মেডিসিন ও সার্জারি
· কম্পিউটার সায়েন্স
· বিজনেস স্টাডিজ
· বিজনেস অ্যানালাইটিক্স
আরো পড়ুন: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের উপায়, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ, ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
সাধারণত সামার, অটাম, ও স্প্রিং- এই তিনটি সময়ে ইংল্যান্ডের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। এখানে সামারের সময়কালটি মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর অব্দি থাকে অটাম এবং জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চলে স্প্রিং অ্যাডমিশন। তবে ভর্তির মৌসুম নির্বিশেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার ন্যূনতম ৯ থেকে ১০ মাস আগে থেকে আবেদন শুরু করা উচিত।
ইংল্যান্ডসহ গোটা ইউকেতে (ইউনাইটেড কিংডম) একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্নাতকের আবেদনগুলো নেওয়া হয়। সাইটটির নাম ইউসিএএস (ইউনিভার্সিটিস অ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশন সার্ভিস), যার ওয়েব ঠিকানা: https://www.ucas.com/undergraduate/applying-to-university। এখানে ছাত্রছাত্রীরা নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করে আবেদন সম্পন্ন করে থাকে।
অপরদিকে, স্নাতকোত্তর কোর্সগুলোতে আলাদাভাবে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যেয়ে আবেদন করতে হয়।
আরো পড়ুন: ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্র
· উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী বা সমমানে ডিপ্লোমার সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
· মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) সার্টিফিকেট (নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য)
· বৈধ পাসপোর্ট
· জাতীয় পরিচয়পত্র
· ইংরেজি দক্ষতার শংসাপত্র (আইইএলটিএস স্কোর)
· পার্সনাল স্টেটমেন্ট
· রেফারেন্স লেটার
· সিভি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
স্নাতকোত্তরের জন্য অতিরিক্ত যুক্ত করতে হবে
· স্নাতক ডিগ্রির শংসাপত্র
· অভিজ্ঞতার শংসাপত্র (এমবিএর জন্য)
· অন্যান্য প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর যেমন জিআরই, জিম্যাট।
পিএইচডি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি
· স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির শংসাপত্র
· গবেষণা প্রস্তাব
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
অফার লেটার গ্রহণ
বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ এবং প্রার্থীদের মধ্যকার সাধারণ যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ই-মেইল। শিক্ষার্থীর প্রদানকৃত কাগজপত্র যাচাই করে তার ই-মেইল ঠিকানায় দরকারি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এই ই-মেইলগুলোর মাধ্যমে সাধারণত অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় কাগজ, প্রবেশিকা পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের কথা জানানো হয়।
সবদিক মূল্যায়নের পর ভর্তির সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলে শিক্ষার্থীকে অফার লেটার পাঠানো হয়। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি কনফার্মেশন অব একসেপ্টেন্স ফর স্টাডিজ (সিএএস) নামে পরিচিত। এই লেটারটিই ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসার আবেদনের সর্বপ্রথম শর্ত। সিএএস পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।
ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদী উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যেতে হলে দেশটির স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হয়। এটি পূর্বে টায়ার ৪ স্টুডেন্ট ভিসা ছিল। কমপক্ষে ১৬ বা তার বেশি বয়সী ছাত্রছাত্রীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে।
ভিসার মেয়াদ নির্ভর করে ভর্তি হওয়া কোর্সের সময়কালের ওপর। স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো ডিগ্রি পর্যায়গুলোতে অধ্যয়নের জন্য সাধারণত ৫ বছর পর্যন্ত ইংল্যান্ডে থাকার অনুমতি দেয়া হয়।
ভিসার আবেদনের জন্য https://www.gov.uk/student-visa/apply-online -এই লিংকে যেয়ে অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। এ সময় ভিসার জন্য দরকারি যাবতীয় কাগজপত্র আপলোডের প্রয়োজন হবে। আবেদন সাবমিটের পর সম্পূর্ণ পূরণকৃত অনলাইন ফর্মটি ডাউনলোড করে তার একটা প্রিন্ট নিতে হবে।
আরো পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
ভিসার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি
· বয়স ১৮ বছরের কম হলে, পিতামাতার বা অভিভাবকের সম্মতির প্রমাণপত্র
· অফার লেটার - সিএএস এবং তার সাথে একটি ভিসা লেটার। লেটারটি আবেদনের পূর্বে বিগত সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে ইস্যূকৃত হতে হবে।
· বৈধ পাসপোর্ট - যেখানে ইউকে ভিসা সিলের জন্য কমপক্ষে ১টি পৃষ্ঠা অবশিষ্ট থাকতে হবে
· তহবিলের প্রমাণ- ন্যূনতম প্রথম বছরের অধ্যয়নের জন্য কোর্স ফি এবং সর্বাধিক ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ সঙ্কুলান থাকবে। এর সুস্পষ্ট পরিমাণটি নির্ভর করে প্রার্থী লন্ডনে নাকি তার বাইরে থেকে পড়াশোনা করবেন- তার ওপর। এছাড়াও তহবিলটি কমপক্ষে ২৮ দিন ধরে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অপরিবর্তিতভাবে থাকতে হবে।অধ্যয়ন ফির বাইরে ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ বাবদ যে তহবিলটি দেখাতে হবে তা হলো-
o লন্ডনের বাইরের শহরের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে পাউন্ড ১ হাজার ৩৩৪ বা ২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকা (১ পাউন্ড = ১৫৬ দশমিক ৬৯ বাংলাদেশি টাকা)। এটি নয় মাসে দাড়ায় মোট ১২ হাজার ৬ পাউন্ড কিংবা ১৮ লাখ ৮১ হাজার ২৭২ টাকা।
o লন্ডনে থাকলে মাসে ১ হাজার ২৩ (১ লাখ ৬০ হাজার ২৯৮ টাকা) করে ৯ মাসে মোট ৯ হাজার ২০৭ পাউন্ড (১৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৮৫ টাকা)।
· স্টুডেন্ট লোন বা স্পন্সরশিপ থাকলে লোন বা স্পন্সরশিপ প্রদানকৃত কোম্পানির প্রমাণ
· প্রার্থীর যক্ষ্মা টেস্টের ফলাফল
· ভিসা ফি প্রদান নিশ্চিতকরণ রশিদ
· বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ও মূল মার্ক শীট
· ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ (আইইএলটিএস স্কোর)
· প্রবেশিকা পরীক্ষার (জিম্যাট, জিআরই) স্কোর; (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভিসা আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
ইংল্যান্ড দূতাবাসে সশরীরে আবেদন জমা দেয়ার আগে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এই তারিখ নেওয়ার জন্য https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/gbr/your-appointment- এই লিংকে যেয়ে প্রার্থীর নিজস্ব ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এই ই-মেইলেই পাঠানো হবে সাক্ষাৎকার গ্রহণের তারিখ।
দূতাবাসের ঠিকানা: ভিএফএস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, নাফি টাওয়ার, ৫৩, গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১, ৭ম তলা, ঢাকা-১২১২।
নির্ধারিত তারিখে উপরের ঠিকানায় ভিসার আবেদনের প্রতিটি নথি মূল কপিসহ উপস্থিত হতে হবে। ভিসা কেন্দ্রে সাক্ষাৎকারসহ প্রার্থীর ছবি এবং দশ আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। সবশেষে ভিসা ফি গ্রহণপূর্বক একটি রশিদ দেওয়া হবে। ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট নিতে আসার সময় এই রশিদটি সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সময় এবং ভিসা প্রাপ্তি
ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসা প্রক্রিয়া করার সাধারণ সময় হচ্ছে কমপক্ষে ৩ কার্যসপ্তাহ। তবে কাগজপত্রে কোনো সমস্যা থাকলে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
অবশ্য অতিরিক্ত ফি দিয়ে ভিসা প্রক্রিয়াকরণের এই সময়টাকে আরও কমিয়ে আনা যেতে পারে। দ্রুত ভিসা প্রাপ্তির পরিষেবাটি প্রায়োরিটি এবং সুপার প্রায়োরিটি- এই দুই ভাগে বিভিক্ত। প্রায়োরিটি ভিসা বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেওয়ার পর থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সুপার প্রায়োরিটি ভিসা দেয়া হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের আনুষঙ্গিক খরচ
স্টুডেন্ট ভিসা ফি ৪৯০ পাউন্ড, ঢাকাস্থ ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস) অনুসারে যা ৭৯ হাজার ২৬৫ টাকা। তবে প্রয়োরিটি ভিসার ফি ৫০০ পাউন্ড বা ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা, যেখানে সুপার প্রয়োরিটি ভিসার জন্য দিতে হবে ৮০০ পাউন্ড (১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫৬ টাকা)।
আবেদনের অংশ হিসেবে এই খরচের সাথে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবা সারচার্জ দিতে হয়। এর মাধ্যমে প্রার্থী ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা লাভ করতে পারে। এই চার্জ নির্ভর করে সাধারণত ভিসার মেয়াদের ওপর। https://www.immigration-health-surcharge.service.gov.uk/checker/type - লিংক থেকে এই সারচার্জ বাবদ ঠিক কত খরচ হবে তা জানা যাবে।
ইংল্যান্ডে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ
সাধারণত হিউম্যানিটিস, আর্ট্স, এবং জেনারেল এডুকেশন কোর্সগুলো বেশ স্বল্প খরচের হয়। অন্যদিকে মেডিসিন এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয়গুলো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। স্নাতক অপেক্ষা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অধ্যয়ন ফি সাধারণত বেশি হয়ে থাকে, যা বিষয়ভেদে ভিন্ন হয়। অন্যান্য দেশের মতৈাত এমবিএ প্রোগ্রামগুলোর খরচ সর্বাধিক।
স্নাতক ডিগ্রির বার্ষিক খরচ ১০ থেকে ২০ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ১৫ লাক ৬৬ হাজার ৯৪৩ থেকে ৩১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৬ টাকার সমতূল্য। স্নাতকোত্তরে গড়পড়তায় খরচ হয় প্রতি বছর ১২ থেকে ২২ হাজার পাউন্ড অথবা ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৩৩২ থেকে ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৫ টাকা। বার্ষিক ১৫ থেকে ২৪ হাজার পাউন্ড (২৩ লাখ ৫০ হাজার ৪১৫ থেকে ৩৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৩ টাকা) বাজেট রাখতে হবে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিএইচডি প্রোগ্রামগুলোর জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়নের ব্যবস্থা থাকে।
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে লন্ডনের বাইরে থাকা হলে বাজেট অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়ে আসে। শেয়ার করা রুমে থাকার ক্ষেত্রে গড়ে আবাসন খরচ হতে পারে মাসিক ৫৫৪ পাউন্ড কিংবা ৮৬ হাজার ৮০৯ টাকা। মাসে সম্ভাব্য ইউটিলিটি বিল হতে পারে ৪০ থেকে ৫০ পাউন্ড (৬ হাজার ২৬৮ থেকে ৭ হাজার ৮৩৫ টাকা)। খাদ্য ও গৃহস্থালির জন্য রাখতে হবে ১৬০ থেকে ২০০ পাউন্ড (২৫ হাজার ০৭১ থেকে ৩১ হাজার ৩৩৯ টাকা)।
মোবাইল ফোন বিল ১৫ থেকে ৫০ পাউন্ড, যা প্রায় ২ হাজার ৩৫১ থেকে ৭ হাজার ৮৩৫ টাকার সমান। স্টুডেন্ট পাস নিয়ে যাতায়াত করা হলে পরিবহনে ব্যয় হবে প্রায় ৩২ পাউন্ডের (৫ হাজার ১৪ টাকা) মতো।
ইংল্যান্ডে স্কলারশিপের সুবিধা
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ইংল্যান্ডসহ গোটা ইউকে ও ইউরোপের একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি প্রকল্প। কমনওয়েলথভূক্ত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের সুবিধা ভোগ করতে পারে। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর বা ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য পূর্ণ বা আংশিক অর্থায়ন দিয়ে থাকে। এর আওতায় থাকে টিউশন ফি, বিমান ভাড়া, এবং জীবনযাত্রার ভাতা।
ব্রিটিশ কাউন্সিল গ্রেট স্কলারশিপ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরতদের জন্য প্রদান করা হয়। এই বৃত্তির মূল্যমান ৫ থেকে ২৫ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭২ থেকে ৩৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৮ টাকার সমান। এর মধ্যে অনায়াসেই পড়াশোনার অর্থ সঙ্কুলান হয়ে যায়।
চেভেনিং স্কলারশিপ সম্পূর্ণ অর্থায়ন করা কার্যক্রমগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর মধ্যে টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ এবং প্লেন ফেয়ার পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সর্বোচ্চ এক বছরকালীন স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারে।
আরো পড়ুন: চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
টায়ার ৪ স্টুডেন্ট ভিসার মধ্যে চাকরি-সংক্রান্ত সুবিধাগুলো হচ্ছে-
· স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাবেটিকাল অফিসার হিসেবে কাজের সুযোগ
· পেশাদার ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া প্রশিক্ষক ব্যতীত যে কোনো খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
সেমিস্টার চলাকালে শিক্ষার্থীরা এই কাজগুলোর জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মঘণ্টা পেয়ে থাকে। তবে ছুটির সময়ে এরকম কোনো বাধ্য-বাধকতা না থাকায় ফুল-টাইম কাজের সুযোগ থাকে।
অন-ক্যাম্পাস পার্ট-টাইম চাকরিগুলোর মধ্যে রয়েছে লাইব্রেরি সহকারী, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট, নতুন ছাত্রদের জন্য ক্যাম্পাস গাইড ও ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর।
অন্যদিকে, অফ-ক্যাম্পাস কাজগুলো হলো গ্রাহক পরিষেবা প্রতিনিধি, বিক্রয় বিশেষজ্ঞ, রেস্তোরাঁ পরিষেবা সহকারী, এবং ডেলিভারি সহকারী।
এগুলোতে সপ্তাহে গড়ে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০ পাউন্ড (৩১ হাজার ৩৩৮ থেকে ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা) পর্যন্ত আয় হয়। এ ক্ষেত্রে আয়করের বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি, কেননা ইউকেতে খণ্ডকালীন চাকরির ওপরও ট্যাক্স এবং জাতীয় বীমা ধার্য হয়।
মাসে গড়ে ১ হাজার ৪২ পাউন্ডের (১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৬ টাকা) বেশি উপার্জনকারীদের আয়কর দেয়া বাধ্যতামূলক। আর সপ্তাহে ১৬৬ পাউন্ডের (২৬ হাজার ১২ টাকা) বেশি আয়কারিদের বীমা ফি পরিশোধ করতে হয়। মূলত নিয়োগকর্তারাই আয়কর এবং জাতীয় বীমা ফি কেটে মজুরি দিয়ে থাকেন।
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
শেষাংশ
বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ ও উন্নত জীবনযাত্রার নিরিখে ইংল্যান্ড উচ্চশিক্ষার শ্রেষ্ঠ গন্তব্য। তবে অধ্যয়ন ও জীবন ধারণের খরচ একটা বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে।
এক্ষেত্রে আর্থিক চাপ মুক্ত থেকে নির্দ্বিধায় পড়াশোনা করার উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে স্কলারশিপগুলো। দুর্দান্ত একাডেমিক ফলাফল এবং আইইএলটিএস স্কোরের দৌলতে এই সুযোগটি সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। তাছাড়া ঢাকাতেই ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের অবস্থানটি আরও একটি বড় সুবিধা। উপরন্তু, ভর্তির আবেদন থেকে ভিসা প্রাপ্তি পর্যন্ত পুরো কার্যক্রমে একটি সঠিক ও নিরবচ্ছিন্ন কর্মপরিকল্পনা বজায় রাখা অপরিহার্য।
২ মাস আগে
বন্যার্তদের জরুরি অর্থ সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য জরুরি অর্থ সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
ফেনী, খাগড়াছড়ি ও নোয়াখালী জেলার বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩৩ হাজার পাউন্ড অর্থাৎ প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা দিচ্ছে দেশটি।
এই এলাকাগুলোতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ এই অর্থ সহায়তা পাবে।
এই অর্থ সহায়তা দিয়ে জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম, খাদ্য, নগদ অর্থ ও স্বাস্থ্যবিধি সেবা নিশ্চিত করা হবে।
অর্থ সহায়তার ব্যয় ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করছে স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশ ও সেইভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল।
বর্তমানে দেশে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ১২ লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
২ মাস আগে
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন কেয়ার স্টারমার। শুক্রবার(৫ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন তিনি।
এর আগে 'হাতে চুম্বন' অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার গঠনের জন্য রাজা তৃতীয় চার্লসের আশীর্বাদ পান স্টারমার।
এর আগে শুক্রবার ঋষি সুনাক রাজার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ ভাষণ দিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ত্যাগ করেন সুনাক।
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দেওয়া শেষ ভাষণে সুনাক বলেন, 'এটি একটি কঠিন দিন। বিশ্বের সেরা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমি সম্মানিত হয়েছি এবং এখন আমি এই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছি।’
সুনাক বলেন, তিনি তার সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২, আহত ৩
ভোট গণনা নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুনাক সকালে পরাজয় স্বীকার করে নেন। তবে লেবার পার্টির কাছে তার কনজারভেটিভ দলের চরম পরাজয়ের পূর্বাভাস ছিল।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বসতে যাওয়া ৬৫০ জন আইনপ্রণেতাকে বেছে নিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।
পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এক দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর সুনাকের কনজারভেটিভরা বড় ধরনের পরাজয় বরণ করেছে।
রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন সুনাক। সুনাককে একজন চালক মন্ত্রীর গাড়িতে করে প্রাসাদে নিয়ে যান। পরে তিনি একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বেরিয়ে যান।
রাজার সঙ্গে স্টারমারের সাক্ষাৎ
লেবার পার্টির বিপুল বিজয়ের পর রাজা তৃতীয় চার্লসের সরকার গঠনের অনুরোধ গ্রহণ করতে বাকিংহাম প্যালেসে পৌঁছান লেবার নেতা কেয়ার স্টারমার।
'হাতে চুম্বন' অনুষ্ঠানে স্টারমার আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে তার সরকারি বাসভবনে যাবেন।
প্রাসাদে স্টারমারের আগমন সরকার পরিবর্তনের পটভূমির অংশ। এটি এমন এক সময়ে ঘটে, যখন রাজা সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন এবং তার সরকার পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেন।
আধুনিক সময়ের সাংবিধানিক রাজতন্ত্র এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। রাজা আনুষ্ঠানিকভাবে হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে এই পদ গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনের পার্লামেন্টে লেবার পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা, নতুন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার
স্টারমারকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতাদের অভিনন্দন
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতারা নির্বাচনে জয়ের জন্য লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, তিনি নতুন ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে 'গঠনমূলকভাবে কাজ করার' অপেক্ষায়।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, 'নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং একসঙ্গে আরও অনেক কিছু করতে পারে।’
সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে উদ্দেশ্য করে লুক্সন বলেন, 'আপনার জাতির প্রতি আপনার সেবা এবং নিউজিল্যান্ডের প্রতি বন্ধুত্বের জন্য ধন্যবাদ।’
বুথের গণনা অনুযায়ী, কনজারভেটিভরা ২০০টিরও বেশি আসন হারাতে যাচ্ছে এবং ১৯০৬ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফলাফল দেখতে যাচ্ছে।
কনজারভেটিভদের ১৪ বছরের ক্ষমতার অবসানে ভোটাভুটি শুরু
পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য বৃহস্পতিবার(৪ জুলাই) সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ব্রিটিশ ভোটাররা নতুন সরকার হিসেবে বিরোধী দল লেবার পার্টিকে তুলে আনতে ভোট দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক দূরাবস্থা, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস এবং ভঙ্গুর সামাজিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটে ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির বিরুদ্ধে ভোটাররা তাদের রায় দিচ্ছেন।
কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মধ্য-বাম লেবার পার্টি কয়েক মাস ধরে জনমত জরিপে স্থির এবং উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। তবে লেবার নেতারা নির্বাচনের ফলাফলকে হালকাভাবে নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। কারণ তাদের সমর্থকরা বের হবেন না বলে উদ্বিগ্ন ছিলেন তারা।
অন্যদিকে সুনাক তার সমর্থকদের সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি রবিবার বলেছেন, তিনি এখনও মনে করেন কনজারভেটিভরা জিততে পারে এবং অর্থনীতিতে তাদের অবদান অটুট রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: পরাজয় মেনে প্রধানমন্ত্রীর শেষ ভাষণ দিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়েছেন সুনাক
৪ মাস আগে
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ: লন্ডনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শান্তিপূর্ণ ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা এবং গাজা ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসানে সহযোগিতা করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার (১ মে) সন্ধ্যায় চার্চিল হলে বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা ও ইউক্রেনসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তি বাড়াতে আগ্রহী রাশিয়া
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল। হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট, যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘের এফসিডিও মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণবিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড এবং বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমর্থনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার, সেদেশের নাগরিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উষ্ণ অভ্যর্থনাকারী এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশকারী প্রয়াত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনকে কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের নজর এখন ২০৩০ সালের মধ্যে নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর 'স্মার্ট বাংলাদেশ' হতে চলা আমাদের দেশের দিকে।
আরও পড়ুন: এডিবির বার্ষিক সভা: এডিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বৈঠক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান এ সময় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন পত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি 'বঙ্গবন্ধু-অ্যাডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' এবং 'বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' চালু করার জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। পেনি মর্ডান্ট এমপি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। লর্ড তারিক আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনা উদ্বোধন, 'বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ' এবং 'বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন' অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের স্পিকার, হাইকমিশনার ও বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ‘মুজিব অ্যান্ড ব্রিটেন’ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন। বাংলাদেশের দুই বন্ধু লর্ড মারল্যান্ড এবং লর্ড স্বরাজ পলের হাতে যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশেষ প্রদর্শনী, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিল্পীদের বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী শাড়ি প্রদর্শনীতে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ, হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত, কমনওয়েলথ ও ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সিনিয়র প্রতিনিধি, কূটনীতিক, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, মিডিয়া, একাডেমিয়া এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যরা যোগ দেন।
আরও পড়ুন: গাম্বিয়ায় ওআইসি সম্মেলনে যোগ দেবেন হাছান মাহমুদ
৬ মাস আগে
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর
যুক্তরাজ্যের হসপিটালিটি এবং ক্যাটারিং খাতে কাজ করতে চাওয়া বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ কর্মীদের জন্য ভিসার শর্ত সহজ করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) যুক্তরাজ্যের অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) বাংলাদেশবিষয়ক হাই প্রোফাইল সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ পরিণত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশিদের চলমান মঙ্গল এবং কল্যাণ প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রগতিশীল পররাষ্ট্রনীতির ফলে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: বিদেশে কর্মী পাঠাতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে মানবিক হতে হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীর করতে এখনো অনেক ক্ষেত্র অন্বেষণের সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন নগরী ও শহরের বাংলাদেশি রেস্তোরাঁগুলো সুদক্ষ কর্মীদের অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। এ কারণে যুক্তরাজ্য ন্যূনতম বার্ষিক বেতন ৩৮০০ পাউন্ডে উন্নীত করেছে, যা অনেক রেস্তোরাঁর মালিকদের পক্ষে বহন করা কষ্টসাধ্য।
এ সময় হসপিটালিটি সেক্টরে কর্মরত ব্যক্তিদের ন্যূনতম বার্ষিক বেতনের শর্ত শিথিল করতে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দক্ষ নির্মাণ শ্রমিক এবং খামার শ্রমিক দিতে পারে- যারা যুক্তরাজ্যে মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে পারবে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য সরকার একযোগে বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিকদের জন্য রেস্তোরাঁ কর্মী, চিকিৎসক ও নার্সসহ আরও কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্যে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য আরও কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য কাজ করছে।
আরও পড়ুন: প্রবাসী কর্মীদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দিতে হবে: প্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে অনেক কেয়ারগিভার যুক্তরাজ্যে নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি খামার শ্রমিকদের নিয়োগও শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রুশনারা আলী।
এপিপিজি অন বাংলাদেশ চেয়ার রুশনারা আলীর সভাপতিত্বে এ সংলাপে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, সংসদ সদস্য বব ব্ল্যাকম্যান এবং এপিপিজির ভাইস-চেয়ার লর্ড করণ বিলিমোরিয়া বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন যুক্তরাজ্যের উচ্চপদস্থ সংসদীয় কর্মকর্তা ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট সদস্যরা।
এর আগে ব্রিটিশ বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রতিমন্ত্রী।
একই দিনে মন্ত্রী শফিকুর পূর্ব লন্ডনে ইউকে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই) আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক সভায়ও যোগ দেন।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সেবা দিতে সবাইকে আরও আন্তরিক হতে হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
৬ মাস আগে
বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাবে রূপান্তরে সহযোগী হতে চায় যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশকে এভিয়েশন হাবে রূপান্তর করতে যুক্তরাজ্য সহযোগীর ভূমিকা রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক।
বুধবার(২৪ এপ্রিল) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্ব রয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নসহ এভিয়েশন শিল্পের নানা খাতে একসঙ্গে কাজ করেছে দুটি দেশ।
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও উন্নতি আনাসহ সম্ভাব্য নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিস্তৃত পরিসরে সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলে জানান সারাহ কুক।
বৈঠকে বাংলাদেশকে সফলভাবে এভিয়েশন হাবে রূপান্তরের জন্য যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে দুই দেশের একত্রে কাজ করাটা হবে আনন্দের। এভিয়েশন শিল্পে কোন কোন ক্ষেত্রে দুই দেশের একত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
ফারুক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি অন্যতম প্রধান এভিয়েশন হবে রূপান্তরের জন্য সরকার কাজ করছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণসহ দেশের সকল বিমানবন্দরে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আরও অধিকতর উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাবে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছি। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ সমাপ্তির পর তা বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক যোগাযোগ, অর্থনীতি এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গেম চেঞ্জারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে।
৬ মাস আগে
সম্পর্ক গভীর করার অঙ্গীকার বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের
অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে আমরা সম্পর্ক আরও গভীর করতে পারি।’
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বহুমুখী সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন অংশীদার এবং এখানে তাদের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বিশেষ করে আইসিটি, সাইবার নিরাপত্তা, দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আমরা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে কাজ করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এক বার্তা পাঠিয়েছেন এবং এ সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে একযোগে কাজ করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন ও রোহিঙ্গাদের কল্যাণের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইস্যু এবং দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবেন।
কুক বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে ভালো বৈঠক হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গাদের কল্যাণে আমাদের অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান।
মানবাধিকার ইস্যু সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই মানবাধিকার বিশ্বব্যাপী একটি ইস্যু এবং প্রতিটি দেশ এই ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য কাজ করছে।
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর ও ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন: বকেয়া পাওনা আদায়ে টেলিটক-বিটিসিএল-বিটিআরসির বৈঠক অনুষ্ঠিত
৯ মাস আগে
পাট ও চামড়া খাতে বিনিয়োগে ইইউ ও যুক্তরাজ্যের প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
বাংলাদেশ রপ্তানি বহুমূখীকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে উল্লেখ করে পাট ও চামড়া খাতে বিনিযোগ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ আহ্বান জানান। মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার পৃথক পৃথক সাক্ষাৎ করেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রপ্তানি বহুমূখীকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটজাত এবং চামড়া চামড়াজাত পণ্য খাতকে এগিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন। এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য ইইউ ও যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
এ ছাড়া পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্যের পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল বিশেষ করে এপিআই খাতে, এগ্রো প্রসেসিং, সি ফুড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য, বাই সাইকেল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষিপণ্যে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি ও গুণগতমান উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ট্রেড ও রেগুলেটোরি সংক্রান্ত বাধা দূর করে আমদানি ও রপ্তানি পলিসি যুগোপযোগী করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডা দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি এবং বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিচ্ছে।
২১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এবছর মেলায় বাংলাদেশে অবস্থিত সব মিশনের প্রধান এবং ট্রেড বা কমার্সিয়াল কাউন্সিলরদের নিয়ে মেলা পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে। দেশে উৎপন্ন পণ্য প্রদর্শনের সবচেয়ে বড় আসর এই মেলা উল্লেখ করে তিনি বলেন এখানে অনেক বিদেশি প্যাভেলিয়নও থাকে। মিশন কর্মকর্তাদের মেলা পরিদর্শনের মাধ্যমে বাংলাদেশি পণ্যের ব্রান্ডিং করা সম্ভব হবে বলেও জানান।
যেসব পণ্য ইইউ ও যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে সেসব পণ্য কন্ট্রাক্ট ম্যানু্ফ্যাকচারিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গা হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। অনেক দেশ সরকার নির্ধারিত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়াও শিল্প কলকারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
সাক্ষাৎকালে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আগামী ২৬-২৯ ফেব্রুয়ারি আবুধাবীতে অনুষ্ঠিব্য ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজন আয়োজিত মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশসমূহের অবস্থানের পক্ষে প্রয়োজনীয় সমর্থনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার কামনা করেন।
হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। বর্তমানে উভয় দেশের চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। উন্নয়ন সহযোগিতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে তিনি অংশীদারিত্বের উপরও গুরুত্বারোপ করেন। দক্ষ জনবল তৈরি করার লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ পেশাদারী খাতে সার্টিফিকেশন ও অ্যাক্রিডিটেশন সমতায়নে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার।
এছাড়া, সারাহ কুক বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক বাধা দূরীকরণ, সেবা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্বের প্রয়োগ ও সংরক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উদারীকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তা সত্যিই প্রসংশনীয় উল্লেখ করে ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইটি খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিযোগের আগ্রহ প্রকাশ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
এসময়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি দেশে-বিদেশে গুজব ছড়িয়ে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত: কাদের
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে রাজস্ব আয় বাড়ানোর নির্দেশ বিমানমন্ত্রীর
১০ মাস আগে