যুক্তরাজ্য
লন্ডনে খালেদা জিয়ার ‘পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ শুরু
যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছেন। লন্ডনে অবস্থানরত তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বুধবার (২ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) থেকে ম্যাডামের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী চারদিন উনার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। এ সময় উনার ডাক্তাররা (লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা) বাসায় উনাকে দেখতে আসবেন।’
তিনি বলেন, ‘কিছু পরীক্ষা করার জন্য হয়তো উনাকে লন্ডনে ক্লিনিকেও নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী কয়েকটি দিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, যা চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে করা হচ্ছে।’
কবে দেশে ফিরতে পারেন জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যেসব পরীক্ষা করতে বলেছেন, সেগুলোর রিপোর্ট পর্যালোচনা করে এখানকার ডাক্তাররা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন—কত দ্রুত ছুটি দেওয়া যায়।’
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য ঐক্যবদ্ধ হোন: খালেদা জিয়া
এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ম্যাডামের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। মানসিকভাবে উনি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভালো। মাচ বেটার।’
সম্প্রতি লন্ডনের একটি পার্কে খালেদা জিয়ার হুইল চেয়ারে বসা একটি ভিডিও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) হুইল চেয়ারে করে জাস্ট উনাকে (খালেদা জিয়া) গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘোরানো হয়েছিল। শীত কম ছিল, সেজন্য কিছুক্ষণ ঘোরানো হয়েছিল। একুট মন ভালো লাগার জন্য, উনাকে স্থানীয় একটি পার্কে (সাউথ-ওয়েস্ট ইনার লন্ডনে) গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘোরানো হয়েছিল এই আর কি। পার্কের নানা রঙের ফুল, বাগান দেখালে ম্যাডামের একটু ভালো লাগবে—এই চিন্তা করে এটা করা হয়েছিল।’
তারেক রহমানের বাসায় থেকে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে লন্ডনে যান তিনি। গত ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর থেকে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
লন্ডনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। ছেলে তারেক রহমানের বাসায় আনন্দঘন পরিবেশে সময় কাটছে তার। ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতনিদের সান্নিধ্যে এবার উৎসবের আমেজে ঈদ উদযাপন করেছেন তিনি।
১৪ দিন আগে
সিঙ্গাপুর-যুক্তরাজ্য থেকে ২ কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন
দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দরপত্রের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮২ হাজার ৪০০ টাকা।
এরমধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এবং যুক্তরাজ্য থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মর্চ) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক এই প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (১৪-১৫ এপ্রিল ২০২৫ সময়ে ১৫তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
সূত্রটি জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরের গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৬৭৫ কোটি ২৮ লাখ ৫৮ হাজার ১১২ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ’র মূল্য ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ০৮ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: চাহিদা মেটাতে এলএনজি, সার, মসুর ডাল আমদানি করবে সরকার
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে (১৪-১৫ এপ্রিল ২০২৫ সময়ে ১৬তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
যুক্তরাজ্যের মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে এই এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৬৯১ কোটি ৫৯ লাখ ২৪ হাজার ২৮৮ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ’র দাম ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫৭ মার্কিন ডলার।
২০ দিন আগে
বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশে যুক্তরাজ্যের ভিসার জন্য এআই চ্যাটবট চালু
যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারীদের জন্য গ্রাহক সেবা উন্নত করতে সম্প্রতি একটি নতুন জেনারেটিভ এআই-চালিত চ্যাটবট চালু করেছে ভিএফএস গ্লোবাল। ১৪১টি দেশের গ্রাহকদের উন্নত সেবা দিতে এই সেবা চালু করেছে সংস্থাটি।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভিএফএস গ্লোবাল।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এআই চ্যাটবট প্রযুক্তি জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ভারতে অবস্থিত ভিএফএস গ্লোবালের এআই সেন্টারে তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশে যুক্তরাজ্যের ভিসা গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। জেনারেটিভ এআই-চালিত চ্যাটবটটি কথোপকথনে পারদর্শী, যা মানবসদৃশ কথোপকথন সেবা দিয়ে থাকে।
এটি ভয়েস এবং টেক্সট ইনপুটের মাধ্যমে কাজ করতে সক্ষম, যা নানা ধরনের সেবা গ্রহীতাকে কার্যকরভাবে সেবা দেয়। এটি টেক্সট ও ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমেও কাজ করে।
আরও পড়ুন: অনলাইন বই বাজার: ঘরে বসেই যে ১০ ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন পছন্দের বই
যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারী গ্রাহকদের জন্য তাৎক্ষণিক, নির্ভুল ও সহজলভ্য তথ্য সরবরাহ করে থাকে এই চ্যাটবট।
কাস্টমার সার্ভিসেস গ্রুপ, ইউকে ভিসা অ্যান্ড ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তা জেন ভিডলার বলেছেন, ভিএফএস গ্লোবালের এআই-চালিত চ্যাটবটটি আমাদের ভিসা পরিষেবাগুলোকে আরও সহজ, কার্যকর ও সব ধরনের গ্রাহকের চাহিদা পূরণের প্রতিশ্রুতি হিসেবে চালু করা হয়েছে।
৪৯ দিন আগে
লন্ডন কি ২০২৫ এ আপনার পরবর্তী ভ্রমণ গন্তব্য?
সারা বছর ধরে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসুদের রিভিউ ও রেটিংয়ের ভিত্তিতে জনপ্রিয় সব ঘুরে বেড়ানোর শহর এবং রেস্তোরাঁর তালিকা প্রকাশ করে ট্রিপ অ্যাডভাইজার। এ বছর ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিনোদন ও পর্যটনসহ সামগ্রিক বিচারে ভ্রমণের সেরা গন্তব্যের খেতাব পেয়েছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন। এই অর্জন বছরের পরবর্তী দিনগুলিতে লন্ডনের অত্যাশ্চর্যগুলো আলাদা করে আকর্ষণ করবে বিশ্ব পরিব্রাজকদের। যে মাপকাঠিগুলোর ভিত্তিতে ইউরোপের প্রসিদ্ধ মহানগরীটি এমন গুরুত্বপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে, চলুন, তার বিস্তারিত পর্যালোচনা করা যাক।
২০২৫ সালে লন্ডনের বিশ্বসেরা ভ্রমণ গন্তব্য হওয়ার নেপথ্যে
.
সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সুদৃশ্য স্থাপনা
লন্ডনের প্রতিটি ইমারতের গাঁথুনিতে মিশে আছে শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাসের নির্যাস, যা অর্বাচীন দর্শনার্থীদের শিহরিত করে শহরের প্রাণকেন্দ্র বিচরণের সময়। রোমান শাসনের প্রতিধ্বনি থেকে শুরু করে রাজকীয় বংশের মহিমার ঐতিহাসিক উপকরণগুলো এই নির্যাসকে রীতিমত অমৃত সুধায় রূপ দেয়। সংমিশ্রণে উদ্ভাসিত হয় শক্তি ও স্থায়িত্বের প্রতীক টাওয়ার অফ লন্ডন, রাজ্যাভিষেক ও রাজকীয় বিবাহের মঞ্চ ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে এবং ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সিংহাসন বাকিংহাম প্রাসাদ।
টাওয়ার ব্রিজ, বিগ বেন ও হাউস অফ পার্লামেন্টের অভিজাত স্থাপত্যশৈলী রাঙিয়ে তোলে লন্ডনের আকাশকে। শহরের সহস্র অতীতের চিহ্ন ধরে রাখা এই বহুতল ভবনগুলো খোরাক যোগায় বিস্ময়ের, একই সঙ্গে ফ্রেমবন্দি করার জন্য কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্তের।
আরো পড়ুন: শীতকালে নিরাপদে মোটরসাইকেল চালকদের প্রয়োজনীয় সেফটি গিয়ার ও পোশাক
বিশ্বমানের যাদুঘর ও গ্যালারী
শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসঙ্গে লন্ডনকে বলা যেতে পারে সর্বকালের বিশ্বকোষ। কেবল দর্শনের জন্যই নয়, এখানকার যাদুঘর ও গ্যালারীগুলো প্রাচীন নিদর্শন নিয়ে গবেষণার জন্যও যথেষ্ট রসদ যোগায়। তন্মধ্যে প্রাচীন নিদর্শনগুলোর বিস্ময়কর সংগ্রহশালা ব্রিটিশ মিউজিয়াম। সঙ্গে রহস্যময় প্রকৃতির অভিজ্ঞতা দিতে রয়েছে ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম।
ভিক্টোরিয়া, অ্যালবার্ট মিউজিয়াম ও টেট মডার্নে ফ্যাশন থেকে আসবাবপত্র পর্যন্ত সবকিছুতেই মেলে কারুশিল্পের ছোঁয়া। যুগযুগ ধরে এগুলোতে সংরক্ষিত নিদর্শনের সমাহার কেবল অমূল্যই নয়, খুব কাছ থেকে এক নজর দর্শনও অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার সঞ্চার করে।
বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং প্রাণবন্ত নগর উপকণ্ঠ
ইংল্যান্ডসহ যুক্তরাজ্যের বৃহৎ এই নগরীতে পা রাখা মাত্রই যেকোনো আগন্তুক সর্বপ্রথম যে বিষয়টি অনুভব করেন, তা হলো এর স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। ক্যামডেন, শোরডিচ, নটিং হিল ও চায়নাটাউনের মতো শহুরে উপকণ্ঠগুলোর প্রত্যেকটি যেন এক টুকরো লন্ডন।
গভীর দৃষ্টিতে অচিরেই ধরা পড়ে শোরডিচের রাস্তায় ইট-কাঠ ও গলা ইস্পাতের সৃজনশীলতা ও নটিং হিলের পটে আঁকা ভিক্টোরিয়ান টাউনহাউস। নিভৃত নগরীর বেরসিক মানুষটিও ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে যান ক্যামডেনের বাজার ও চায়নাটাউনের খাবার পাড়ার বৈঠকখানায় শামিল হতে।
আরো পড়ুন: ফিলিপাইনের ভিগান ভ্রমণ গাইড : ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
নাট্যমঞ্চ ও বিনোদন
যুদ্ধটা যখন নাট্যমঞ্চ নিয়ে, তখন নিউ ইয়র্কের ব্রডওয়ের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে লন্ডনের ওয়েস্ট ইন্ড। এখানে সাক্ষী হওয়া যায় কিংবদন্তি দ্য ফ্যান্টম অফ দ্য অপেরা-র। ঐতিহাসিক গ্লোব থিয়েটারে গিয়ে উপভোগ করা যায় শেক্সপিয়রের জগদ্বিখ্যাত কাজগুলো।
এখানে সঙ্গীত উৎসাহীদের জন্য রয়েছে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলের গ্র্যান্ড অ্যাকোস্টিক ক্লাসিক্যাল ও ২ অ্যারিনার স্ফুলিঙ্গ দ্বীপ্ত কনসার্ট সন্ধ্যা। সঙ্গীতপ্রেমীরা যাই হোক না কেন, গীতি আর বাদ্যের ঐকতান নিমেষেই ঝড় তোলে আনমনে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যেকোনো শ্রোতার মনের মুকুরে।
মনোরম পার্ক
শহুরের ব্যস্ততা আর জনাকীর্ণতাকে বহু যতনে আগলে রেখেছে সবুজ উদ্যানগুলো। নিঃসীম যান্ত্রিকতার মোড়কে যেন এক প্রাণোচ্ছল অভয়ারণ্য। হাইড পার্ক, রিজেন্টস পার্ক এবং হ্যাম্পস্টেড হিথ যেন তা-ই সগৌরবে ঘোষণা করে। সব বয়সের লোকের জন্য এখানে রয়েছে পিকনিক থেকে শুরু করে খেলাধুলার জায়গা। যারা একটু নিরিবিলিতে থাকতে চান তাদের জন্য রয়েছে হল্যান্ড পার্কের কিয়োটো গার্ডেন ও ব্রকওয়েল পার্কের বিস্তীর্ণ তৃণভূমি।
এই সবুজায়নের মাঝে শহরের বাসযোগ্যতা, গতিশীলতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। ক্লান্তিকর দিনের শেষে তাই ঘরে ফেরা লোকটির মনের মতো অবকাশ খুঁজে পেতে তেমন বেগ পেতে হয় না।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান,শপিংমল ও জনপ্রিয় খাবার
শপিংমল ও খাবারের দোকান
বাহারি পোশাকের সাজে ইউরোপীয় বিপণীকে কাছে থেকে দেখতে হলে অবশ্যই যেতে হবে লন্ডনে। তন্মধ্যে বিলাসবহুল পণ্যের খোঁজে ঢুঁ মারা যায় বন্ড স্ট্রিট, হ্যারডস ও বেস্পোক-এ। বাজেট-বান্ধব পণ্য পাওয়া যাবে পোর্টোবেলো রোড এবং ক্যামডেন মার্কেটে, যেগুলো কেনাকাটা ছাড়া ঘুরে বেড়ানোর জন্যও উপযোগী। ওয়েস্টফিল্ড স্ট্রাটফোর্ড সিটি ও ব্রেন্ট ক্রস শপিং সেন্টারে দারুণ মেলবন্ধন ঘটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর সঙ্গে উচ্চ ফ্যাশন ও ব্র্যান্ডের সামগ্রীর।
একই সঙ্গে বিচিত্র ইউরোপকে স্বাদের মাধ্যমে পরখ করে দেখার জন্য ভোজনরসিকদের শ্রেষ্ঠ জায়গাও এই লন্ডন। মিশেলিন-তারকার স্থাপনা থেকে শুরু করে বোরো মার্কেটের দোকানগুলোর খাবার প্রত্যেক শহরবাসীর হৃদয়কে জয় করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকে। ফিশ অ্যান্ড চিপস বা সানডে রোস্টের মতো ব্রিটিশ ভোজগুলো বিশ্বমানের শেফদের রন্ধনশৈলীকে প্রতিনিধিত্ব করে।
স্বাচ্ছন্দ্যময় পথঘাট
গহীন লোকারণ্য হলেও ভিড়গুলোর চলাফেরায় আরামদায়ক বেশভূষা অচিরেই টের পাওয়া যায়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে শহরের সহজলভ্য সরকারি যাতায়াত ব্যবস্থা। টিউব অথবা লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে শহরের প্রতিটি গন্তব্যে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। বাস এবং ওভারগ্রাউন্ড ট্রেনগুলো অতিরিক্ত সংযোগের মাধ্যমে ভ্রমণকে আরও নির্বিঘ্ন এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।
কর্মব্যস্ততার বাইরে অবকাশ যাপন ও পায়চারির জন্য নিবেদিত রাস্তাগুলোতে মেলে সুপরিকল্পিত নগরায়নে পরিচয়। ফলে যাত্রা একক বা সম্মিলিত যাই হোক না কেন, শহরের সুশৃঙ্খল পরিবহন নেটওয়ার্ক ভ্রমণের শতভাগ সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আরো পড়ুন: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ভ্রমণ গাইড
রাজকীয় ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা
এখানকার রাজসিক বহুতল দর্শনীয় ভবনগুলো অকপটে প্রকাশ করে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ঐতিহাসিক চাকচিক্য। গার্ড পরিবর্তনের অনুষ্ঠানের সময় বাকিংহাম প্যালেসের জাঁকজমক ভাব রীতিমত চোখ কপালে তোলার মতো। সুপরিচিত রাজকীয় মুখগুলোর প্রাক্তন বাসভবন দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন কেনসিংটন প্রাসাদে। সময় পরিভ্রমণে অতীতে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি দেয় হ্যাম্পটন কোর্ট প্যালেস টিউডর।
এগুলো ভ্রমণের সময় সুদৃশ্য দেয়ালের জড় আভরণে সুপ্ত অভিজাত গল্পগাঁথাগুলো অনুগত শ্রোতায় পরিণত করে পর্যটকদের। ফলশ্রুতিতে প্রায়ই চোখে পড়ে সদ্য আসা কোনো দর্শনার্থী কোনো ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতির সামনে মোহাবিষ্ট হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
উদ্ভাবন ও আধুনিকতা
মহাকালের বির্বতনের এক উন্মুক্ত প্রতিচ্ছবি এই লন্ডন। শতাব্দী পুরনো ইতিহাস অঙ্গে ধারণ করে এখনও অগ্রগতির ধারা বজায় রেখেছে মহানগরীটি। দ্যা শার্ড, দ্যা ঘের্কিন এবং দ্যা লন্ডন আই-এর মতো আধুনিক কাঠামো তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এগুলোর স্থাপত্যশৈলী প্রাচীনতা থেকে নগরের অধুনা যুগের পথে বিবর্তিত যাত্রাকে অভিহিত করে।
তাই প্রযুক্তি উৎসাহীদেরকেও এতটুকু হতাশ করে না আধুনিক লন্ডন। বিশ্ব-মানের প্রযুক্তি ইভেন্ট ও প্রদর্শনী হোস্ট করার জন্য এই শহরের রয়েছে আলাদা বিশ্বখ্যাতি। এই উদ্দেশ্যে প্রতি বছরই শত শত মেধাবীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় পশ্চিমা ইউরোপের এই প্রাণকেন্দ্রটি।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
সমগ্র ইউরোপের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার
দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের টেম্স নদীর অবস্থিত এই বিস্তৃত অঞ্চল পৃথিবীর আন্তঃসংযুক্ত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। হিথ্রো ও গ্যাটউইকসহ একাধিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর ইউরোস্টার রেল লিংকের মাধ্যমে অনায়াসেই প্রবেশ করা যায় ইউরোপে। সঙ্গত কারণে অনেক আগে থেকেই যাত্রাপথটা ঘুরে বেড়ানোর জন্য অনুকূল হয়েই তৈরি হয়েছে। তাই বিশ্ব পরিব্রাজকদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠতেও খুব বেশি সময় লাগেনি।
সেই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ জীবনধারণের সব রকম অত্যাধুনিক সুবিধা থাকায় আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় উভয় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য শহরটি একটি উৎকৃষ্ট গন্তব্য।
প্রতিটি মৌসুমের উৎসবমুখরতা
লন্ডন ভ্রমণের জন্য আসলে কোনো মৌসুমই অফ-পিক টাইম হিসেবে প্রতীয়মান হয় না। গ্রীষ্মের খরতাপ, কনকনে শীত, শুভ্র মেঘের শরৎ, আর নতুন পাতার বসন্ত সব সময়ই এখানে থাকে মন্ত্রমুগ্ধতা। বছরব্যাপী পুরো মৌসুম জুড়ে ক্রিসমাস মার্কেট যান্ত্রিক শহরকে রূপান্তরিত করে যাদুর নগরে। এছাড়াও বছরজুড়ে মিউজিক ফেস্ট ও ফুড ফেস্টসহ বর্ণীল উৎসবগুলো প্রকৃতির রঙের মতোই গোটা শহরকে রাঙাতে থাকে ভিন্ন রঙে।
শেষাংশ
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ে লন্ডন ট্রিপ অ্যাডভাইজার ২০২৫-এর শীর্ষ ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বিগ বেন ও বাকিংহাম প্যালেস থেকে শুরু করে দ্য শার্ড-এর মতো সমসাময়িক বিস্ময় যেন শতবর্ষজীবী নগরের বিবর্তনের গল্প বলে। এলাকার পথঘাট, ভোজন, কেনাকাটা ও বিনোদনের নিরন্তর মূর্ছনায় প্রাণবন্ত আধুনিক অবকাঠামোগুলো। সার্বজনীন সংস্কৃতি ও প্রশান্ত সবুজ উদ্যান যেন উজ্জীবনের পূণ্যভূমি। ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগসূত্রগুলো কেবল নতুন ভূখণ্ডের নয়, নতুন অভিজ্ঞতারও দিগন্ত উন্মোচন। সর্বপরি, বছরব্যাপী ভিন্ন মৌসুমে বিচিত্র উৎসবের নিবেদন ফেরার সময় আরও একবার ঘুরে যাওয়ার সাধ জাগাবে পর্যটকের মনে।
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা
৮৫ দিন আগে
খালেদার চিকিৎসায় সুবিধা দেওয়ায় কাতার ও যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ দিল বিএনপি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুবিধা দেওয়ায় কাতার ও যুক্তরাজ্য সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা কাতার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য বিনা ভাড়ায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করেছে। আর লন্ডনে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় ব্রিটিশ সরকারকেও ধন্যবাদ জানাই।’
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যা মামলায় আদালতে দেওয়া বিবরণ সম্বলিত 'রাজবন্দীর জবানবন্দি' নামের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মুক্তি পাওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় লন্ডনে যান এবং হাজার হাজার মানুষ তাকে বিদায় জানায়। লন্ডন যাওয়ার পথে তিনি কোনো বাধার সম্মুখীন হননি বলেও জানিয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৭ বছর পর মা-ছেলের আবেগঘন পুনর্মিলন
হিথ্রো বিমানবন্দরে বড় ছেলে তারেক রহমান তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান নিয়ে মাকে অভ্যর্থনা জানান।
এর আগে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ হযরত আলী খান বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছার এম আহমদসহ অনেক নেতাকর্মী বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
২০২১ সালের শেষ দিকে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকেই তার চিকিৎসকরা বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
তার অবস্থার তীব্রতা সত্ত্বেও, দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আইনি বাধার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য ভ্রমণের অনুমতি দেয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের একদিন পর ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের আদেশে খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়া হয়।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস এবং তার কিডনি, ফুসফুস, হার্ট এবং চোখের জটিলতাসহ একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন: জাতিকে বিভক্ত করার প্রচেষ্টা রুখতে ঐক্য জরুরি: ফখরুল
৯৭ দিন আগে
যুক্তরাজ্য আশা করে ড. ইউনূস জাতীয় ঐক্যের পরিকল্পনা তুলে ধরবেন: ক্যাথরিন
যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকার জাতীয় ঐক্য ত্বরান্বিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই যুক্তরাজ্য আশা করছে, কীভাবে সেসব বাস্তবায়ন করা হবে, সে বিষয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ক্যাথরিন বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জনগণকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে সহায়তা করার চেষ্টা করবে।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের
উত্তরে তিনি বলেন, 'অবশ্যই এবং আমরা আশা করছি, কীভাবে এসব ঘটবে সে বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন অধ্যাপক ইউনূস।’
ওয়েস্ট বলেন, তারা জানেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এসব উদ্দেশ্য সাধন করতে যুক্তরাজ্য সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, তারা একক কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি। তবে বাংলাদেশ বর্তমানে রূপান্তরের পর্যায়ে থাকায় তারা সরকারকে সমর্থন করতে চান।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেসব কাজ করছে আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করতে চাই।’
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, 'আমরা জানি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী।’
বাংলাদেশের জনগণের জন্য উন্নত গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃঢ় সংকল্পকে স্বাগত জানান তিনি।
ওয়েস্ট বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের খুব শক্তিশালী ও অবিচল বন্ধুত্ব রয়েছে। আমরা শক্তিশালী অংশীদারত্ব গঠন করতে চাই এবং সেই গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিপ্রস্তরটি শক্তিশালী সম্পর্কের ওপর নির্মাণ করতে চাই। পাশাপাশি একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
অর্থনীতি ও বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি জানান, তারা একসঙ্গে অনেক কিছু করছেন এবং তাদের অবশ্যই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রিন্সেস ক্যাথরিনের সাহসিকতায় গর্বিত রাজা চার্লস
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, কয়েক মাসের অশান্ত অবস্থার পর বাংলাদেশের জনগণের 'শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ ও জবাবদিহির' জন্য একটি পথ পাওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, 'অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে এবং শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজে যুক্তরাজ্য কীভাবে সর্বোত্তম সহায়তা করতে পারে তা, নিয়ে আলোচনা করতে আমি এখানে এসেছি।’
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা শরণার্থীদের জন্য উপযুক্ত আশ্রয় নির্মাণ এবং শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ ও শিক্ষা নিশ্চিত করতে তারা আরও ১০ মিলিয়ন পাউন্ড ঘোষণা করেছেন।
গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এই প্রথম যুক্তরাজ্যের কোনো মন্ত্রীর সফর বাংলাদেশ সফর।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, নিরাপত্তা, বাণিজ্য সহযোগিতা এবং যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ অভিবাসনে চলমান সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বর্তমানে অনন্য ও ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব বিরাজ করছে। এটি দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক এবং অভিন্ন কমনওয়েলথ মূল্যবোধের কারণে দৃঢ় হয়েছে।
এই সফরে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতা এবং সুশীল সমাজের সঙ্গেও বৈঠক করবেন ওয়েস্ট।
ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের জন্য আরও সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজকে সমর্থন করে যুক্তরাজ্য।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, 'ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্টকে বাংলাদেশে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত।’
হাইকমিশনার বলেন, এই সফর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারত্বকে আরও ব্যাপক ও গভীর করবে।’
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ বর্তমানে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারে সহায়তা করবে। এটি বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে।’
যুক্তরাজ্যের সহায়তার মধ্যে বিক্ষোভে গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত মেডিকেল টিম মোতায়েনের কথাও রয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশের স্থানীয়রা যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সেবা পাবে।
এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিরাও যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে সহায়তাও পাবেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনরুদ্ধারে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে ছাত্রনেতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন ব্রিটিশ মন্ত্রী।
এছাড়া দৃঢ় সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে এবং পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রিন্সেস ক্যাথরিন ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে উঠবেন, প্রিন্স হ্যারি-মেগানের আশা
১৫১ দিন আগে
গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ চায় যুক্তরাজ্য
জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভের ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনাকে ‘আরেকটি স্মরণীয় ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে সকল বাংলাদেশির স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ জনগণের সাহসিকতার স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাজ্য। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের আহ্বান জানায়।’
তিনি বলেন, ‘আজ যেসব রোগীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, যুক্তরাজ্যের ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিম হাসপাতালের টিমের সঙ্গে কাজ করে প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত চিকিৎসা দিচ্ছে।’
যুক্তরাজ্যের ইমার্জেন্সি মেডিকেল টিম নিটোরের যেখানে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিচ্ছে, সে জায়গাটি পরিদর্শন করেন সারা কুক।
অভিজ্ঞ এই দলটি গত ৫ নভেম্বর থেকে বেশ কয়েকজন আহত শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি জটিল অস্ত্রোপচারসহ ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন সেবাও দিচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের দশকে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী: অধ্যাপক ইউনূস
১৫৪ দিন আগে
ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
একটি দেশের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সভ্যতা বিনির্মাণ ও সংস্কৃতির সংস্কারের প্রতিটি স্তরে যোগ্য লোকের উপস্থিতি দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে। আর এর মধ্যে সুপ্ত থাকে সেখানে বসবাসরত মানুষের মানসম্পন্ন জীবন ধারণের বীজ। এই বিষয়গুলো বিচারে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় দেশটি হলো যুক্তরাজ্যের অন্যতম প্রধান দেশ ইংল্যান্ড। বিশ্ববিখ্যাত সব বিদ্যাপীঠের আশ্রয়স্থল হওয়ায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে দেশটিকে ঘিরে ক্যারিয়ার গঠন করার। চলুন, ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন পদ্ধতি, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুবিধাগুলো জেনে নেওয়া যাক।
কেন ইংল্যান্ড উচ্চশিক্ষার সেরা গন্তব্য
ক্যারিয়ার গঠনে ইংল্যান্ড শিক্ষার্থীদের সেরা পছন্দ হওয়ার নেপথ্যের মূলে রয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে দীর্ঘ সময় ধরে শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে চারটি ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়। তার মধ্যে দ্বিতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ। তারপরেই রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। ৬ ও ৯ নাম্বারে রয়েছে যথাক্রমে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন।
তাছাড়া যুক্তরাজ্যের দেশগুলো আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের রীতিমতো স্বর্গরাজ্য। তার মধ্যে শিক্ষার্থীর সেরা শহর বিবেচনায় কিউএস র্যাংকিং ২০২৪-এর শীর্ষতম স্থানটি দখল করে আছে লন্ডন।
যুক্তরাজ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইংল্যান্ডের জীবন ধারণের মানও উন্নত। বিশেষ করে আকর্ষণীয় স্কলারশিপগুলো অর্জনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি সেই জীবন ধারণের সান্নিধ্যে যেতে পারে বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের পূর্বশর্ত
একমাত্র অন্য প্রয়োজন হলো আইইএলটিএস পরীক্ষায় ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর।
আন্ডারগ্রেড প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য ন্যূনতম ১৩ বছরের একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ অতিবাহিত করতে হবে। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের যোগ্যতা যুক্তরাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক বা ন্যাশনাল ডিপ্লোমায় পরিচালিত ‘এ’ স্তরের পরীক্ষার সমতুল্য হওয়া আবশ্যক। আর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে আবেদনের প্রথম শর্ত হলো স্নাতক পাশ করা।
শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত জিপিএ ৮০ এবং ৯৫ শতাংশের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। সেখানে ফলাফল ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ হলে আবেদন করা যাবে মাঝারি-স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলো সর্বশেষ অর্জিত ডিগ্রির মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) ইংরেজি দেখেই আবেদন গ্রহণ করে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভর্তির অন্যতম প্রধান যোগ্যতা থাকে ভালো আইইএলটিএস স্কোর। উপরন্তু, স্কলারশিপের প্রদানে একাডেমিক যোগ্যতার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হয়।
স্নাতক অধ্যয়নের জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ থাকতে হয়। প্রি-মাস্টার প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর। সরাসরি স্নাতকোত্তরে আবেদন করতে লাগবে ৬ থেকে ৭ ব্যান্ড স্কোর। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে তা ভিন্ন হতে পারে। এমবিএতে আবেদনের যোগ্যতায় অতিরিক্ত দেখাতে হবে ২ থেকে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। এই ক্ষেত্রে আইইএলটিএস ফলাফল ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭-এর মধ্যে থাকা জরুরি। আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোরের এই শর্তটি পিএইচডির জন্যও প্রযোজ্য। তবে অবশ্যই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।
স্নাতকোত্তরের কোনো কোনো কোর্সে আরও কিছু প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোরের প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন হচ্ছে জিআরই ও জিম্যাট।
আরো পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কোর্সের তালিকা
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-
· ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ
· ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড
· ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন
· ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
· ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ
· ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার
· কিংস কলেজ লন্ডন
· লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্স
· ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল
· ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক
আরো পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
অধ্যয়নের জন্য ইংল্যান্ডগামী ছাত্রছাত্রীরা যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি বাছাই করে, সেগুলো হলো-
· আইন
· ফিজিওথেরাপি
· অ্যাকচুয়ারিয়াল সায়েন্স
· ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা
· মনোবিজ্ঞান
· ডেটা সায়েন্স
· মেডিসিন ও সার্জারি
· কম্পিউটার সায়েন্স
· বিজনেস স্টাডিজ
· বিজনেস অ্যানালাইটিক্স
আরো পড়ুন: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের উপায়, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ, ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
সাধারণত সামার, অটাম, ও স্প্রিং- এই তিনটি সময়ে ইংল্যান্ডের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। এখানে সামারের সময়কালটি মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর অব্দি থাকে অটাম এবং জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চলে স্প্রিং অ্যাডমিশন। তবে ভর্তির মৌসুম নির্বিশেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার ন্যূনতম ৯ থেকে ১০ মাস আগে থেকে আবেদন শুরু করা উচিত।
ইংল্যান্ডসহ গোটা ইউকেতে (ইউনাইটেড কিংডম) একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্নাতকের আবেদনগুলো নেওয়া হয়। সাইটটির নাম ইউসিএএস (ইউনিভার্সিটিস অ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশন সার্ভিস), যার ওয়েব ঠিকানা: https://www.ucas.com/undergraduate/applying-to-university। এখানে ছাত্রছাত্রীরা নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করে আবেদন সম্পন্ন করে থাকে।
অপরদিকে, স্নাতকোত্তর কোর্সগুলোতে আলাদাভাবে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যেয়ে আবেদন করতে হয়।
আরো পড়ুন: ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্র
· উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী বা সমমানে ডিপ্লোমার সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
· মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) সার্টিফিকেট (নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য)
· বৈধ পাসপোর্ট
· জাতীয় পরিচয়পত্র
· ইংরেজি দক্ষতার শংসাপত্র (আইইএলটিএস স্কোর)
· পার্সনাল স্টেটমেন্ট
· রেফারেন্স লেটার
· সিভি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
স্নাতকোত্তরের জন্য অতিরিক্ত যুক্ত করতে হবে
· স্নাতক ডিগ্রির শংসাপত্র
· অভিজ্ঞতার শংসাপত্র (এমবিএর জন্য)
· অন্যান্য প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর যেমন জিআরই, জিম্যাট।
পিএইচডি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি
· স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির শংসাপত্র
· গবেষণা প্রস্তাব
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
অফার লেটার গ্রহণ
বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ এবং প্রার্থীদের মধ্যকার সাধারণ যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ই-মেইল। শিক্ষার্থীর প্রদানকৃত কাগজপত্র যাচাই করে তার ই-মেইল ঠিকানায় দরকারি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এই ই-মেইলগুলোর মাধ্যমে সাধারণত অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় কাগজ, প্রবেশিকা পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের কথা জানানো হয়।
সবদিক মূল্যায়নের পর ভর্তির সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলে শিক্ষার্থীকে অফার লেটার পাঠানো হয়। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি কনফার্মেশন অব একসেপ্টেন্স ফর স্টাডিজ (সিএএস) নামে পরিচিত। এই লেটারটিই ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসার আবেদনের সর্বপ্রথম শর্ত। সিএএস পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।
ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদী উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যেতে হলে দেশটির স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হয়। এটি পূর্বে টায়ার ৪ স্টুডেন্ট ভিসা ছিল। কমপক্ষে ১৬ বা তার বেশি বয়সী ছাত্রছাত্রীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে।
ভিসার মেয়াদ নির্ভর করে ভর্তি হওয়া কোর্সের সময়কালের ওপর। স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো ডিগ্রি পর্যায়গুলোতে অধ্যয়নের জন্য সাধারণত ৫ বছর পর্যন্ত ইংল্যান্ডে থাকার অনুমতি দেয়া হয়।
ভিসার আবেদনের জন্য https://www.gov.uk/student-visa/apply-online -এই লিংকে যেয়ে অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। এ সময় ভিসার জন্য দরকারি যাবতীয় কাগজপত্র আপলোডের প্রয়োজন হবে। আবেদন সাবমিটের পর সম্পূর্ণ পূরণকৃত অনলাইন ফর্মটি ডাউনলোড করে তার একটা প্রিন্ট নিতে হবে।
আরো পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
ভিসার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি
· বয়স ১৮ বছরের কম হলে, পিতামাতার বা অভিভাবকের সম্মতির প্রমাণপত্র
· অফার লেটার - সিএএস এবং তার সাথে একটি ভিসা লেটার। লেটারটি আবেদনের পূর্বে বিগত সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে ইস্যূকৃত হতে হবে।
· বৈধ পাসপোর্ট - যেখানে ইউকে ভিসা সিলের জন্য কমপক্ষে ১টি পৃষ্ঠা অবশিষ্ট থাকতে হবে
· তহবিলের প্রমাণ- ন্যূনতম প্রথম বছরের অধ্যয়নের জন্য কোর্স ফি এবং সর্বাধিক ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ সঙ্কুলান থাকবে। এর সুস্পষ্ট পরিমাণটি নির্ভর করে প্রার্থী লন্ডনে নাকি তার বাইরে থেকে পড়াশোনা করবেন- তার ওপর। এছাড়াও তহবিলটি কমপক্ষে ২৮ দিন ধরে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অপরিবর্তিতভাবে থাকতে হবে।অধ্যয়ন ফির বাইরে ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ বাবদ যে তহবিলটি দেখাতে হবে তা হলো-
o লন্ডনের বাইরের শহরের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে পাউন্ড ১ হাজার ৩৩৪ বা ২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকা (১ পাউন্ড = ১৫৬ দশমিক ৬৯ বাংলাদেশি টাকা)। এটি নয় মাসে দাড়ায় মোট ১২ হাজার ৬ পাউন্ড কিংবা ১৮ লাখ ৮১ হাজার ২৭২ টাকা।
o লন্ডনে থাকলে মাসে ১ হাজার ২৩ (১ লাখ ৬০ হাজার ২৯৮ টাকা) করে ৯ মাসে মোট ৯ হাজার ২০৭ পাউন্ড (১৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৮৫ টাকা)।
· স্টুডেন্ট লোন বা স্পন্সরশিপ থাকলে লোন বা স্পন্সরশিপ প্রদানকৃত কোম্পানির প্রমাণ
· প্রার্থীর যক্ষ্মা টেস্টের ফলাফল
· ভিসা ফি প্রদান নিশ্চিতকরণ রশিদ
· বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ও মূল মার্ক শীট
· ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ (আইইএলটিএস স্কোর)
· প্রবেশিকা পরীক্ষার (জিম্যাট, জিআরই) স্কোর; (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভিসা আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
ইংল্যান্ড দূতাবাসে সশরীরে আবেদন জমা দেয়ার আগে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এই তারিখ নেওয়ার জন্য https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/gbr/your-appointment- এই লিংকে যেয়ে প্রার্থীর নিজস্ব ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এই ই-মেইলেই পাঠানো হবে সাক্ষাৎকার গ্রহণের তারিখ।
দূতাবাসের ঠিকানা: ভিএফএস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, নাফি টাওয়ার, ৫৩, গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১, ৭ম তলা, ঢাকা-১২১২।
নির্ধারিত তারিখে উপরের ঠিকানায় ভিসার আবেদনের প্রতিটি নথি মূল কপিসহ উপস্থিত হতে হবে। ভিসা কেন্দ্রে সাক্ষাৎকারসহ প্রার্থীর ছবি এবং দশ আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। সবশেষে ভিসা ফি গ্রহণপূর্বক একটি রশিদ দেওয়া হবে। ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট নিতে আসার সময় এই রশিদটি সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সময় এবং ভিসা প্রাপ্তি
ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসা প্রক্রিয়া করার সাধারণ সময় হচ্ছে কমপক্ষে ৩ কার্যসপ্তাহ। তবে কাগজপত্রে কোনো সমস্যা থাকলে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
অবশ্য অতিরিক্ত ফি দিয়ে ভিসা প্রক্রিয়াকরণের এই সময়টাকে আরও কমিয়ে আনা যেতে পারে। দ্রুত ভিসা প্রাপ্তির পরিষেবাটি প্রায়োরিটি এবং সুপার প্রায়োরিটি- এই দুই ভাগে বিভিক্ত। প্রায়োরিটি ভিসা বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেওয়ার পর থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সুপার প্রায়োরিটি ভিসা দেয়া হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের আনুষঙ্গিক খরচ
স্টুডেন্ট ভিসা ফি ৪৯০ পাউন্ড, ঢাকাস্থ ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস) অনুসারে যা ৭৯ হাজার ২৬৫ টাকা। তবে প্রয়োরিটি ভিসার ফি ৫০০ পাউন্ড বা ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা, যেখানে সুপার প্রয়োরিটি ভিসার জন্য দিতে হবে ৮০০ পাউন্ড (১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫৬ টাকা)।
আবেদনের অংশ হিসেবে এই খরচের সাথে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবা সারচার্জ দিতে হয়। এর মাধ্যমে প্রার্থী ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা লাভ করতে পারে। এই চার্জ নির্ভর করে সাধারণত ভিসার মেয়াদের ওপর। https://www.immigration-health-surcharge.service.gov.uk/checker/type - লিংক থেকে এই সারচার্জ বাবদ ঠিক কত খরচ হবে তা জানা যাবে।
ইংল্যান্ডে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ
সাধারণত হিউম্যানিটিস, আর্ট্স, এবং জেনারেল এডুকেশন কোর্সগুলো বেশ স্বল্প খরচের হয়। অন্যদিকে মেডিসিন এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয়গুলো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। স্নাতক অপেক্ষা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অধ্যয়ন ফি সাধারণত বেশি হয়ে থাকে, যা বিষয়ভেদে ভিন্ন হয়। অন্যান্য দেশের মতৈাত এমবিএ প্রোগ্রামগুলোর খরচ সর্বাধিক।
স্নাতক ডিগ্রির বার্ষিক খরচ ১০ থেকে ২০ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ১৫ লাক ৬৬ হাজার ৯৪৩ থেকে ৩১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৬ টাকার সমতূল্য। স্নাতকোত্তরে গড়পড়তায় খরচ হয় প্রতি বছর ১২ থেকে ২২ হাজার পাউন্ড অথবা ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৩৩২ থেকে ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৫ টাকা। বার্ষিক ১৫ থেকে ২৪ হাজার পাউন্ড (২৩ লাখ ৫০ হাজার ৪১৫ থেকে ৩৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৩ টাকা) বাজেট রাখতে হবে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিএইচডি প্রোগ্রামগুলোর জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়নের ব্যবস্থা থাকে।
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে লন্ডনের বাইরে থাকা হলে বাজেট অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়ে আসে। শেয়ার করা রুমে থাকার ক্ষেত্রে গড়ে আবাসন খরচ হতে পারে মাসিক ৫৫৪ পাউন্ড কিংবা ৮৬ হাজার ৮০৯ টাকা। মাসে সম্ভাব্য ইউটিলিটি বিল হতে পারে ৪০ থেকে ৫০ পাউন্ড (৬ হাজার ২৬৮ থেকে ৭ হাজার ৮৩৫ টাকা)। খাদ্য ও গৃহস্থালির জন্য রাখতে হবে ১৬০ থেকে ২০০ পাউন্ড (২৫ হাজার ০৭১ থেকে ৩১ হাজার ৩৩৯ টাকা)।
মোবাইল ফোন বিল ১৫ থেকে ৫০ পাউন্ড, যা প্রায় ২ হাজার ৩৫১ থেকে ৭ হাজার ৮৩৫ টাকার সমান। স্টুডেন্ট পাস নিয়ে যাতায়াত করা হলে পরিবহনে ব্যয় হবে প্রায় ৩২ পাউন্ডের (৫ হাজার ১৪ টাকা) মতো।
ইংল্যান্ডে স্কলারশিপের সুবিধা
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ইংল্যান্ডসহ গোটা ইউকে ও ইউরোপের একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি প্রকল্প। কমনওয়েলথভূক্ত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের সুবিধা ভোগ করতে পারে। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর বা ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য পূর্ণ বা আংশিক অর্থায়ন দিয়ে থাকে। এর আওতায় থাকে টিউশন ফি, বিমান ভাড়া, এবং জীবনযাত্রার ভাতা।
ব্রিটিশ কাউন্সিল গ্রেট স্কলারশিপ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরতদের জন্য প্রদান করা হয়। এই বৃত্তির মূল্যমান ৫ থেকে ২৫ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭২ থেকে ৩৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৮ টাকার সমান। এর মধ্যে অনায়াসেই পড়াশোনার অর্থ সঙ্কুলান হয়ে যায়।
চেভেনিং স্কলারশিপ সম্পূর্ণ অর্থায়ন করা কার্যক্রমগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর মধ্যে টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ এবং প্লেন ফেয়ার পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সর্বোচ্চ এক বছরকালীন স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারে।
আরো পড়ুন: চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
টায়ার ৪ স্টুডেন্ট ভিসার মধ্যে চাকরি-সংক্রান্ত সুবিধাগুলো হচ্ছে-
· স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাবেটিকাল অফিসার হিসেবে কাজের সুযোগ
· পেশাদার ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া প্রশিক্ষক ব্যতীত যে কোনো খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
সেমিস্টার চলাকালে শিক্ষার্থীরা এই কাজগুলোর জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মঘণ্টা পেয়ে থাকে। তবে ছুটির সময়ে এরকম কোনো বাধ্য-বাধকতা না থাকায় ফুল-টাইম কাজের সুযোগ থাকে।
অন-ক্যাম্পাস পার্ট-টাইম চাকরিগুলোর মধ্যে রয়েছে লাইব্রেরি সহকারী, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট, নতুন ছাত্রদের জন্য ক্যাম্পাস গাইড ও ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর।
অন্যদিকে, অফ-ক্যাম্পাস কাজগুলো হলো গ্রাহক পরিষেবা প্রতিনিধি, বিক্রয় বিশেষজ্ঞ, রেস্তোরাঁ পরিষেবা সহকারী, এবং ডেলিভারি সহকারী।
এগুলোতে সপ্তাহে গড়ে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০ পাউন্ড (৩১ হাজার ৩৩৮ থেকে ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা) পর্যন্ত আয় হয়। এ ক্ষেত্রে আয়করের বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি, কেননা ইউকেতে খণ্ডকালীন চাকরির ওপরও ট্যাক্স এবং জাতীয় বীমা ধার্য হয়।
মাসে গড়ে ১ হাজার ৪২ পাউন্ডের (১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৬ টাকা) বেশি উপার্জনকারীদের আয়কর দেয়া বাধ্যতামূলক। আর সপ্তাহে ১৬৬ পাউন্ডের (২৬ হাজার ১২ টাকা) বেশি আয়কারিদের বীমা ফি পরিশোধ করতে হয়। মূলত নিয়োগকর্তারাই আয়কর এবং জাতীয় বীমা ফি কেটে মজুরি দিয়ে থাকেন।
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
শেষাংশ
বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ ও উন্নত জীবনযাত্রার নিরিখে ইংল্যান্ড উচ্চশিক্ষার শ্রেষ্ঠ গন্তব্য। তবে অধ্যয়ন ও জীবন ধারণের খরচ একটা বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে।
এক্ষেত্রে আর্থিক চাপ মুক্ত থেকে নির্দ্বিধায় পড়াশোনা করার উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে স্কলারশিপগুলো। দুর্দান্ত একাডেমিক ফলাফল এবং আইইএলটিএস স্কোরের দৌলতে এই সুযোগটি সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। তাছাড়া ঢাকাতেই ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের অবস্থানটি আরও একটি বড় সুবিধা। উপরন্তু, ভর্তির আবেদন থেকে ভিসা প্রাপ্তি পর্যন্ত পুরো কার্যক্রমে একটি সঠিক ও নিরবচ্ছিন্ন কর্মপরিকল্পনা বজায় রাখা অপরিহার্য।
২২৪ দিন আগে
বন্যার্তদের জরুরি অর্থ সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য জরুরি অর্থ সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
ফেনী, খাগড়াছড়ি ও নোয়াখালী জেলার বন্যাদুর্গতদের জন্য ৩৩ হাজার পাউন্ড অর্থাৎ প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা দিচ্ছে দেশটি।
এই এলাকাগুলোতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ এই অর্থ সহায়তা পাবে।
এই অর্থ সহায়তা দিয়ে জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম, খাদ্য, নগদ অর্থ ও স্বাস্থ্যবিধি সেবা নিশ্চিত করা হবে।
অর্থ সহায়তার ব্যয় ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করছে স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশ ও সেইভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল।
বর্তমানে দেশে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ১২ লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
২৩৩ দিন আগে
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন কেয়ার স্টারমার। শুক্রবার(৫ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন তিনি।
এর আগে 'হাতে চুম্বন' অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার গঠনের জন্য রাজা তৃতীয় চার্লসের আশীর্বাদ পান স্টারমার।
এর আগে শুক্রবার ঋষি সুনাক রাজার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ ভাষণ দিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ত্যাগ করেন সুনাক।
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দেওয়া শেষ ভাষণে সুনাক বলেন, 'এটি একটি কঠিন দিন। বিশ্বের সেরা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমি সম্মানিত হয়েছি এবং এখন আমি এই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছি।’
সুনাক বলেন, তিনি তার সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২, আহত ৩
ভোট গণনা নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুনাক সকালে পরাজয় স্বীকার করে নেন। তবে লেবার পার্টির কাছে তার কনজারভেটিভ দলের চরম পরাজয়ের পূর্বাভাস ছিল।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বসতে যাওয়া ৬৫০ জন আইনপ্রণেতাকে বেছে নিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।
পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এক দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর সুনাকের কনজারভেটিভরা বড় ধরনের পরাজয় বরণ করেছে।
রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন সুনাক। সুনাককে একজন চালক মন্ত্রীর গাড়িতে করে প্রাসাদে নিয়ে যান। পরে তিনি একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বেরিয়ে যান।
রাজার সঙ্গে স্টারমারের সাক্ষাৎ
লেবার পার্টির বিপুল বিজয়ের পর রাজা তৃতীয় চার্লসের সরকার গঠনের অনুরোধ গ্রহণ করতে বাকিংহাম প্যালেসে পৌঁছান লেবার নেতা কেয়ার স্টারমার।
'হাতে চুম্বন' অনুষ্ঠানে স্টারমার আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে তার সরকারি বাসভবনে যাবেন।
প্রাসাদে স্টারমারের আগমন সরকার পরিবর্তনের পটভূমির অংশ। এটি এমন এক সময়ে ঘটে, যখন রাজা সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন এবং তার সরকার পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেন।
আধুনিক সময়ের সাংবিধানিক রাজতন্ত্র এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। রাজা আনুষ্ঠানিকভাবে হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে এই পদ গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনের পার্লামেন্টে লেবার পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা, নতুন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার
স্টারমারকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতাদের অভিনন্দন
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতারা নির্বাচনে জয়ের জন্য লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, তিনি নতুন ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে 'গঠনমূলকভাবে কাজ করার' অপেক্ষায়।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, 'নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং একসঙ্গে আরও অনেক কিছু করতে পারে।’
সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে উদ্দেশ্য করে লুক্সন বলেন, 'আপনার জাতির প্রতি আপনার সেবা এবং নিউজিল্যান্ডের প্রতি বন্ধুত্বের জন্য ধন্যবাদ।’
বুথের গণনা অনুযায়ী, কনজারভেটিভরা ২০০টিরও বেশি আসন হারাতে যাচ্ছে এবং ১৯০৬ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফলাফল দেখতে যাচ্ছে।
কনজারভেটিভদের ১৪ বছরের ক্ষমতার অবসানে ভোটাভুটি শুরু
পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য বৃহস্পতিবার(৪ জুলাই) সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ব্রিটিশ ভোটাররা নতুন সরকার হিসেবে বিরোধী দল লেবার পার্টিকে তুলে আনতে ভোট দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক দূরাবস্থা, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস এবং ভঙ্গুর সামাজিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটে ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির বিরুদ্ধে ভোটাররা তাদের রায় দিচ্ছেন।
কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মধ্য-বাম লেবার পার্টি কয়েক মাস ধরে জনমত জরিপে স্থির এবং উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। তবে লেবার নেতারা নির্বাচনের ফলাফলকে হালকাভাবে নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। কারণ তাদের সমর্থকরা বের হবেন না বলে উদ্বিগ্ন ছিলেন তারা।
অন্যদিকে সুনাক তার সমর্থকদের সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি রবিবার বলেছেন, তিনি এখনও মনে করেন কনজারভেটিভরা জিততে পারে এবং অর্থনীতিতে তাদের অবদান অটুট রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: পরাজয় মেনে প্রধানমন্ত্রীর শেষ ভাষণ দিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়েছেন সুনাক
২৮৫ দিন আগে