ফাইজার
৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে কাজ করছে ফাইজারের টিকা!
পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ফাইজারের টিকা কাজ করছে। আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা দেয়ার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে শিশুদের ওপর টিকার পরীক্ষা চালানোর পর সোমবার মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট ফাইজার এ কথা জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, এই বয়সী শিশুদের টিকা দেয়ার জন্য শিগগিরই তারা যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন চাইবে।
ফাইজার এবং এর জার্মান অংশীদার বায়োটেকের তৈরি ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সীদের দেয়া হচ্ছে। কিন্তু শিশুরা এখন স্কুলে ফিরে এসেছে এবং করোনার অতিরিক্ত সংক্রামক ডেল্টা ধরনের কারণে শিশুদের সংক্রমণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক অভিভাবক তাদের ছোট শিশুদের টিকা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
আরও পড়ুন: ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা পাবে ফাইজার-মডার্নার টিকা
ফাইজারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বিল গ্রুবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, প্রাথমিক স্কুলগামী শিশুদের জন্য ফাইজার অনেক কম ডোজ পরীক্ষা করেছে যা এখন দেয়া প্রতিটি শটের পরিমাণের এক তৃতীয়াংশ। এতে দেখা গেছে, শিশুদের শরীরে অ্যান্টিবডি বেড়েছে এবং যার মাধ্যমে তারা করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করতে সক্ষম।
শিশুদের ডোজ নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে। কম সাময়িক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - যেমন ক্ষত, জ্বর বা ব্যথা হতে পারে।
আরও পড়ুন: ফাইজারের আরও ১০ লাখ টিকা দেশে
গ্রুবার বলেন, ফাইজার ও বায়োটেকের লক্ষ্য হচ্ছে, এই মাসের মধ্যে এই বয়সী শিশুদের জরুরি ভিত্তিতে টিকা দেয়ার জন্য খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছে আবেদন করা এবং কিছুদিন পরে ইউরোপীয় ও ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রকদের কাছে আবেদন করা।
একজন বাইরের বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বিজ্ঞানীরা আরও বিস্তারিত দেখতে চান। তবে প্রতিবেদনটিকে তিনি উৎসাহজনক বলেছেন।
আরও পড়ুন: বুস্টার ডোজের অনুমোদন চেয়েছে ফাইজার
জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন এফডিএ ভ্যাকসিন প্রধান ড. জেস গডম্যান বলেন, শিশুদের ওপর ফাইজারের চালানো এই পরীক্ষার ফলাফল খুব ভালো। প্রতিরোধ ক্ষমতার মাত্রা ‘প্রতিরক্ষামূলক’ বলে মনে হচ্ছে।
১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা পাবে ফাইজার-মডার্নার টিকা
১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের ফাইজার এবং মডার্নার টিকা দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘১৮ বছরের ওপরে হলো যে কোন টিকা দেয়া যাবে। ১৮ বছরের নিচে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা ও অন্যান্য দেশের নির্দেশনা দেখে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেয়া হতে পারে। তবে টিকা পাওয়া সাপেক্ষে।
শিক্ষার্থীদের কোন প্রক্রিয়ায় টিকা দেয়া হবে আগামীকাল (রবিবার) মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান।
শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কোর্সে কমপ্রিহেনসিভ পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বয়সের একটা বিষয় আছে। শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো ধরনের টিকা দেয়া যাবে। আর ১২ বছরের বেশি হলে অন্যান্য দেশে যেভাবে দেয়া হচ্ছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে শিশুদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেয়া হচ্ছে। আমরাও এটি অনুসরণ করতে পারি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে করোনা: সীমাহীন চিকিৎসা ব্যয় অনেক মানুষকে দরিদ্র করে তুলেছে
ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় ডোজের টিকা মজুত আছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে যাদের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে। প্রথম ডোজ যে কেন্দ্র দেয়া হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজও একই কেন্দ্রে নিতে হবে। গ্রামের টিকা নেয়ার মানুষের আগ্রহ কম ছিল আমরা তাদের অনুপ্রাণিত করতেই এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছেলাম।
চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ৮০ ভাগ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে টিকার আওতায় এসেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘টিকাপ্রাপ্তির ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বাকিদেরও টিকা নিশ্চিত করা হবে। চীনের সঙ্গে নতুন করে ছয় কোটি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে সাড়ে কোটি টিকা অর্ডার দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ এসব টিকা পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এই সাড়ে ১৬ কোটি টিকা পেলে সংকট কেটে যাবে।’
স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চিকিৎসকের তুলনায় তিনগুণ বেশি নার্সের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনার শুরু থেকে চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্সরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমাদের দেশে নার্সের স্বল্পতা রয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি নিয়োগের মাধ্যমে সেই স্বল্পতা কাটিয়ে উঠার জন্য। গত এক বছরে আমরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, নার্সিং কলেজ ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল সাস্থ্যবিধি মেনে এমবিবিএস কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে চিকিৎসা শিক্ষার সাথে জড়িত প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষকে আমাদের টিকা দেয়া হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বুস্টার ডোজের অনুমোদন চেয়েছে ফাইজার
শিগগিরই আসছে ফাইজারের ৬০ লাখ ডোজ টিকা
ফাইজারের আরও ১০ লাখ টিকা দেশে
বিশ্বজুড়ে সকলের জন্য টিকা নিশ্চিতে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির সহায়তায় যুক্তরাষ্ট থেকে আরও ১০ লাখ ফাইজার টিকা দেশে এসে পৌঁছেছে।
বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তার্জাতিক বিমান বন্দরে টিকাগুলো বিশেষ ব্যবস্থায়া এসে পৌঁছায়।
এসময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারএ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে ৫০ কোটি টিকা কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় সরবরাহ করার অংশ হিসেবে এবার ১০ লাখ ৩ হাজার ডোজ টিকা বাংলাদেশে পাঠালো।
আরও পড়ুন: চলতি মাসে কোভ্যাক্সের ৩৫ লাখ টিকা পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
টিকাগুলো আল্ট্রা লো ফ্রিজিং সেন্টার সমূহে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্স থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলতি সেপ্টেম্বর মাসে আরও ৫০ লাখ ফাইজার-বায়োনটেক ভ্যাকসিন বাংলাদেশে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
বুস্টার ডোজের অনুমোদন চেয়েছে ফাইজার
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ফাইজারের দুই ডোজ টিকার পর আরও একটি বুস্টার ডোজ (কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির টিকা) প্রয়োগের জন্য মার্কিন অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি বুধবারের একটি ঘোষণায় জানায়, তারা ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সী আমেরিকানদের জন্য তাদের ভ্যাকসিনের তৃতীয় (বুস্টার) ডোজের অনুমোদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ফাইজারের ১০ লাখ টিকা আসছে ৩০ আগস্ট
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তারা এই সপ্তাহের শেষের দিকে ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) সাথে তাদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে বলে আশা করছে।
করোনার ডেল্টা সংক্রমণের মাঝে গেলো সপ্তাহে মার্কিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আমেরিকানদের সুরক্ষার জন্য কোভিড-১৯ এর বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল।
আরও পড়ুন: শিগগিরই আসছে ফাইজারের ৬০ লাখ ডোজ টিকা
যদিও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন সুরক্ষা সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পাচ্ছে। তবে সংক্রমণ এবং মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি তিনটি ভ্যাকসিন দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
এই মাসের শুরুর দিকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল যে, অঙ্গ প্রতিস্থাপিত এবং দূর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা ফাইজার বা মডার্না ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ পেতে পারেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু
গণটিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরু ৭ সেপ্টেম্বর
করোনা প্রতিরোধে সারাদেশে গণটিকা কার্যক্রমের আওতায় দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে। বুধবার কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে (সিএমএসডি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, গণটিকা কার্যক্রমের দ্বিতীয় ডোজ ৭ সেপ্টেম্বর থেকে দেয়া শুরু হবে। এই কয়দিনে আরও টিকা আসবে। দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করতে কোন সমস্যা হবে না।
খুরশীদ আলম বলেন, সারাদেশে গণটিকা চলাকালে যে যেই কেন্দ্র থেকে টিকা নিয়েছেন, সেখানেই দ্বিতীয় ডোজ নেয়া যাবে। কিছু কিছু দেশ আমাদের কাছে মডার্না ও ফাইজারের টিকা চাচ্ছে, এটা এখন দেয়া সম্ভব নয়। শিগগিরই দেশে ৬০ লাখ ফাইজার আসবে।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, কিছু রেপিড আরটি পিসিআর মেশিন কেনার চেষ্টা চলছে। নতুন করে আরও ৩০টি আরটি পিসিআর মেশিন কেনা হচ্ছে। উপজেলায় জিন এক্সপার্ট মেশিন সেনসিটিভিটি ১০০ শতাংশ। এই মেশিনগুলোকে চালু করার জন্য একটা স্পেশাল ইকুইপমেন্টস লাগে, যেটা আমরা ইতোমধ্যেই সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করছি। সেটা যদি হয় তাহলে পরে এক্টিভেশন কোন জায়গা দিয়েছে, সেগুলো কাজ করতে পারবে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন যে প্রতিটি মেশিন নষ্ট হতে পারে। যেকোনো মেশিন, এয়ার কন্ডিশনও হতে পারে। এই জিনিসগুলো আমাদের মাথায় রেখে কাজ করতে হচ্ছে। আমরা যথাযথ ব্যবহারের চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: গণটিকা কার্যক্রম আর নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলোতে ব্যবহৃত মেশিন যন্ত্রপাতিগুলো যত্ন করে ব্যবহার করার নির্দেশনা দিয়ে খুরশীদ আলম বলেন, আমি আশা করব যেই জিনিসগুলো হাসপাতালে দেয়া হচ্ছে, সেগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করবেন। যত্ন করে ব্যবহার করবেন এবং এটা রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো করবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা শুনেছেন যে ৫৬১টি ভ্যান্টিলেটর পেয়েছি। এগুলো আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দেবো। এই যন্ত্রগুলো আমরা ৩০০টি হাসপাতালে দেয়ার কথা ভাবছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেনাকাটা প্রসঙ্গে ডিজি বলেন, আপনারা জানেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবচেয়ে বড় একটি প্রক্রিয়া হলো কেনাকাটা। সারাদেশের হাসপাতালগুলো যে চাহিদা দেয়, সে অনুযায়ী সেগুলো হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে সিএমএসডি। এই মহামারির সময় আমাদেরকে যারা সহায়তা করেছেন সেজন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
আরও পড়ুন: করোনায় আজও ১১৪ মৃত্যু, শনাক্ত ৪৯৬৬
সারাদেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরু
ফাইজারের ১০ লাখ টিকা আসছে ৩০ আগস্ট
যুক্তরাষ্ট্রের উপহার হিসেবে ফাইজারের আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা আগামী ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় দেশে আসবে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আগামী ৩০ আগস্ট সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার এয়ারওয়েজের মাধ্যমে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের মাধ্যমে আমেরিকার উপহার ফাইজারের আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসে পৌঁছবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ও আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আর. মিলার বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে ২৩ আগস্ট দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরেই আমেরিকা থেকে আরও ৬০ লাখ ডোজ ফাইজার টিকা পাওয়া যাবে। সেই ৬০ লাখ ডোজ টিকার অংশ হিসেবে আগামী ৩০ আগস্ট এই ১০ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসছে। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে আরও ৫০ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দেশে পৌঁছবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গণটিকা কার্যক্রম আর নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কারখানার শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে দ্রুত টিকাদানের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
টিকা বিক্রিতে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা
টিকা পেতে ভোগান্তি, বিশৃঙ্খলা
দেশব্যাপী গণ টিকাদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শনিবার নগরীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে টিকা প্রত্যাশীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা হাজারো টিকা প্রত্যাশীকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষকে। একপর্যায়ে সেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
নারী ও পুরুষসহ প্রায় চার হাজার টিকা প্রত্যাশীকে হাসপাতালের প্রথম এবং দ্বিতীয় তলার বারান্দায় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। টিকাদান ধীর গতিতে চলছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন। ‘অব্যবস্থাপনা’ দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে টিকা প্রত্যাশীরা বলেন, নারীদের আলাদা লাইনে দাঁড়ানোর কোনও ব্যবস্থা নেই বলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে।
লাইনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার এবং হাসপাতালের কর্মীদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ সময় অনেককেই টিকাদান কক্ষে জোর করে প্রবেশের জন্য ধাক্কাধাক্কি করতে দেখা গেছে।
টিকাদান কক্ষের ভেতরে দেখা গেছে, মাত্র দুই থেকে তিনজন নার্স টিকা দিচ্ছেন, অন্য দুই বা তিনজন চিকিৎসাকর্মী টিকা নিবন্ধনের কাগজপত্র পরীক্ষা করছেন। জনবলের অভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের হিমশিম খেতে হয়।।
আরও পড়ুন: টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
এই পরিস্থিতি সম্পর্কে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, টিকা কেন্দ্রটি মূলত গণটিকা দেয়ার জন্য নির্বাচিত হওয়ার আগে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নির্ধারিত ছিল। এই কারণেই হাসপাতালকে অতিরিক্ত চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে টিকা নেয়ার জন্য এক হাজার মানুষকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু প্রায় চার হাজার মানুষ চলে এসেছে। এই হাসপাতাল টিকাদান ছাড়াও ৫০০ করোনা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছে। এটি একটি বড় চাপ।
তিনি উল্লেখ করেন, এই কেন্দ্রে বিভিন্ন ধরনের টিকা দেয়া হচ্ছে। যেমন: অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোভ্যাক, মডার্না ও ফাইজার। সুতরাং আমাদের সঠিক ব্র্যান্ড বেছে নেয়ার জন্য টিকাগুলো খুব সাবধানে সরবরাহ করতে হচ্ছে। কারণ কিছু লোক প্রথম ডোজের জন্য এসেছেন এবং কিছু লোক দ্বিতীয় ডোজের জন্য।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় গণ টিকাদান শুরু
গোয়ালন্দে ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে টিকাদানে মানুষের ভিড়
আগামী সপ্তাহে সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ডোজ টিকা আসছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ আগামী সপ্তাহে সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ডোজ টিকা এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফাইজারের ৬০ লাখ টিকার চালান পেতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশ কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ১০ লাখ ডোজ টিকা শিগগিরই পাবে।
আরও পড়ুনঃ জাপানের দেয়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার তৃতীয় চালান ঢাকায়
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ভালোভাবেই গুছিয়ে নিয়েছি। আমরা মনে করি, আমরা সঠিক পথেই আছি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ের কথা উল্লেখ করে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে এক কোটি ২৩ লাখ ডোজ টিকা মজুদ আছে। এর মধ্য থেকে কিছু টিকা (অ্যাস্ট্রাজেনেকা) দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে রাখা হবে।
যৌথভাবে টিকা উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যৌথভাবে সিনোফার্ম টিকা উৎপাদন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) যে কোনো মুহূর্তে স্বাক্ষরিত হবে।
আরও পড়ুনঃ সিনোফার্মেরর সাথে যৌথ টিকা উৎপাদনে সমঝোতা স্মারক প্রস্তুত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ করেন, আইন মন্ত্রণালয় যাচাই -বাছাইয়ের পর ইতোমধ্যেই তা অনুমোদন করেছে এবং এটি যে কোনো মুহূর্তে স্বাক্ষরিত হবে। সবকিছুই চূড়ান্ত।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে যৌথভাবে টিকার উৎপাদন অপরিহার্য। আমি যৌথ উৎপাদনের শুরু চাই।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে রয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত এটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা।
আরও পড়ুনঃ সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা দেবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সরকার, সিনোফার্ম এবং একটি স্থানীয় কোম্পানি (ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড) চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।
শিগগিরই আসছে ফাইজারের ৬০ লাখ ডোজ টিকা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আগস্ট মাসের শুরুতেই ফাইজারের ৬০ লাখ ডোজ টিকা আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কনভেনশন সেন্টারে ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুনঃ চলতি মাসে কোভ্যাক্সের ৩৫ লাখ টিকা পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাহিদ মালেক বলেন, ‘শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে চিঠি এসেছে। তারা জানিয়েছে, আগস্ট মাসের শুরুতেই কোভ্যাক্স সুবিধার আওতা থেকে ৬০ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা আমাদেরকে দেওয়া হবে। এছাড়াও এ মাসের শেষের দিকে বা আগস্টের প্রথম দিকে চীন থেকে আরও ৫০ লাখ টিকা আসছে।’
আরও পড়ুনঃ গণটিকার নিবন্ধন শুরু বৃহস্পতিবার
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী দেড় মাসের মধ্যে আমাদের হাতে এক থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা থাকবে। এছাড়াও আগস্ট মাসে আরও কিছু টিকা আসার কথা রয়েছে। ‘
আরও পড়ুনঃ এখন থেকে ৩৫ বছর হলেই টিকার নিবন্ধন
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের ডাক্তার নার্সরা গত দেড় বছর ধরে দিনরাত কাজ করছে। অনেকেই মৃত্যুবরণ করছে। তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ,আমরা আশা করবো আপনারা তাদের প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করবেন। তাদেরকে একটু উৎসাহিত করবেন।’
রাজধানীতে ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টায় দিকে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট পরিচালক ফারুক আহমেদ টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এর আগে সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশন সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
একই সময়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ নিজ কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এই প্রসঙ্গে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে থেকে ১১৫ জনকে এসএমএস পাঠানো হয়েছে। যারা এই হাসাপাতালে টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেও টিকা পায়নি। ১১৫ জনের মধ্যে যারা আসবে তাদের সবাইকেই এই টিকা দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: বাইডেন রাজত্বের ১৫০ দিনে ৩০ কোটি টিকার মাইলফলক
এর আগে গত রবিবার স্বাস্থ্য বুলেটিনে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখার জন্য ৭ থেকে ১০ দিন প্রত্যেককে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
টিকাদান কার্যক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একাধিক কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি।
যাদের টিকা নেয়া বারণ
যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা হিসেবে ‘ব্লাড প্লাজমা’ কিংবা ‘মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’ নিয়েছেন বা এখনও নিচ্ছেন তাদের করোনাভাইরাসের টিকা নেয়া উচিত হবে না।
আরও পড়ুন: অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫ লাখ মানুষ ভ্যাকসিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
যারা ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন তাদের শারীরিক যেকোনো অস্বস্তির দিকে সতর্ক নজর থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোনো ‘অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন’ দেখা দিচ্ছে কি না। যেকোনো অস্বস্তি, তা যত সামান্যই হোক, চিকিৎসককে জানাতে হবে। পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া যদি দেখা দেয় তবে শুরুতে ঘাবড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। জ্বর, অবসাদ, ব্যথা, চুলকানি ইত্যাদি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া কথা ইতোমধ্যেই জানা গেছে। আর এসবই হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় টিকার প্রতিক্রিয়া, যাতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন বাণিজ্যে স্বচ্ছতার আহ্বান বাংলাদেশের
বাংলাদেশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকা দান কার্যক্রম শুরু করে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসা টিকা দিয়ে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এই টিকার ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ কেনার চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। তবে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে ৭০ লাখ ডোজ দেয়ার পর সিরাম আর টিকা দিতে পারেনি।
এ অবস্থায় অন্য দেশ থেকে টিকা পাওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। আর ফাইজারের কিছু টিকা পাওয়া গেছে, তবে তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই কম।