নবায়নযোগ্য জ্বালানি
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে কর অব্যাহতি: দেশে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাড়ানোর পরিকল্পনা
শুধু ১০টি প্রকল্প নয়, এখন আরও অনেক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের পরিকল্পনা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এই ধরনের বেসরকারি বিনিয়োগে কর মওকুফ পুনর্বহালের জন্য এনবিআরের বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর এমন চিন্তাভাবনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান ১০টি প্রস্তাবিত কেন্দ্র ছাড়াও সৌর প্রকল্পের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে এটি নিশ্চিত।
এর আগে বেসরকারি খাতে ১০টি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিল বিদ্যুৎ বিভাগ। একই সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগের উপর কর অবকাশ পুনর্বহালের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি চেয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
প্রস্তাবিত প্রতিটি কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হওয়ার কথা ছিল ৫০ মেগাওয়াট সেই হিসাবে মোট উৎপাদন ক্ষমতা হওয়ার কথা ছিল ৫০০ মেগাওয়াট।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, 'অবশেষে আমরা এ বিষয়ে এনবিআরের প্রজ্ঞাপন পেয়েছি এবং এখন সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১০টির বেশি হবে।’
তবে এ ধরনের প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট সংখ্যা কত হবে তা এখনো চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হয়নি বলে তিনি ইউএনবিকে জানান।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ৩০-৪০টির মধ্যে হতে পারে।
গত ২৭ অক্টোবর জারি করা এনবিআরের পরিপত্র অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের ওপর ১০ বছরের কর অব্যাহতি পাবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতির আওতায় ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে ২০৩৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে তাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করবে, তারা ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ পাবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অপরিকল্পিত ও ব্যয়বহুল উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েছে হাসিনা সরকার: উপদেষ্টা ফাওজুল
এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘এসব কোম্পানি প্রথম ৫ বছরের জন্য শতভাগ, পরবর্তী ৩ বছরের জন্য ৫০ শতাংশ এবং বাকি ২ বছরের জন্য ২৫ শতাংশ কর অব্যাহতি পাবে।’
এতে আরও বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে সহায়তা করতেই ১০ বছর মেয়াদে এই কর প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের ২৬ জুনে জারি করা একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই ছাড়গুলো প্রত্যাহার করে নিয়েছিল সরকার। সেখানে বলা হয়েছিল, যেসব সংস্থা ১ জানুয়ারি, ২০২৩ থেকে ৩০ জুন, ২০২৪ এর মধ্যে তাদের বাণিজ্যিক অপারেশন তারিখ (সিওডি) অর্জন করবে, তারা কর ছাড় পাবে।
আগের গেজেটের শর্ত অনুযায়ী, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাদে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কর ছাড় পাওয়ার যোগ্য।
এনবিআরের আগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলো ২০৩৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত শতভাগ আয়কর অব্যাহতি সুবিধা ভোগ করবে; যা বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম থেকে প্রাপ্ত আয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি কর্মীরা বাংলাদেশে আসার পর তিন বছরের জন্য আয়কর ছাড় পাবেন।
পূর্ববর্তী বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আরও ছাড়ের মধ্যে রয়েছে সিওডি থেকে শুরু করে অপারেশনের প্রথম পাঁচ বছরের জন্য ১০০ শতাংশ, পরবর্তী তিন বছরের জন্য ৫০ শতাংশ এবং পরবর্তী দুই বছরের জন্য ২৫ শতাংশ আয়কর মওকুফ।
সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ স্থগিত করে এবং এই আইনের অধীনে অনুমোদিত ৩৪টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে।
এসব প্রকল্প মূলত কোনো দরপত্র প্রক্রিয়া ছাড়াই এবং অযাচিতভাবে তাদের নির্বাচিত করা হয়েছিল।
এরপর বিদ্যুৎ বিভাগ ১০টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে অনেক সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী কর অব্যাহতি সুবিধা না পেয়ে দরপত্রে অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) প্রকল্পগুলোর দরপত্র দিতে পারেনি। এরপরই বিদ্যুৎ বিভাগ এনবিআরকে চিঠি দিয়ে কর অব্যাহতি সুবিধা পুনর্বহালের অনুরোধ জানায়।
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কর অবকাশ পুনর্বহালের পর তারা এখন আশা করছেন বেসরকারি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নিলামে আরও বেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রয়েছে - মোট সৌর প্রকল্পগুলো গড়ে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৪০টি পর্যন্ত হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের সক্ষমতা থেকে শুরু করে স্থান নির্ধারণ পর্যন্ত সবকিছু এ সপ্তাহের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে।’
বাংলাদেশের পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে রূপান্তর
বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ জ্বালানি চাহিদা পূরণের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, এটি অর্জনে আনুমানিক ১.৫ থেকে ১.৭১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
স্বল্প কার্বন নিঃসরণের বিষয়ে অগ্রগতির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমানভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জ্বালানি দক্ষতার দিকে মনোনিবেশ করছে।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৩৫ মেগাওয়াট, জলবিদ্যুৎ থেকে ২৩০ মেগাওয়াট এবং সৌরশক্তি থেকে ১ হাজার ৮০ দশমিক ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
পাওয়ার সেলের নথি অনুযায়ী, মোট ৩ হাজার ৯৬৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াটের প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে ৯৪৩.৫ মেগাওয়াট প্রকল্প নির্মাণাধীন, ৬০৯ মেগাওয়াট লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বা নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ), ২২৮ মেগাওয়াট দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ২,১৮৩ মেগাওয়াট পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্মূল্যায়নে কমিটি গঠন
১ মাস আগে
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ১০ বছরের কর ছাড় দিচ্ছে সরকার
দেশের সবুজ জ্বালানি খাতে আরও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর জন্য কর ছাড় দিচ্ছে সরকার। নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলো দীর্ঘমেয়াদী করতে এবং উন্নয়নে সহায়তা করতে কোম্পানিগুলোকে ১০ বছরের জন্য কর সুবিধা দেওয়া হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সই করা আয়কর ছাড়ের শর্ত নিয়ে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
আদেশে বলা হয়, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে ২০৩০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে উৎপাদন শুরু করা কোম্পানিগুলোকে কর ছাড় দেওয়া হবে।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, যোগ্য কোম্পানিগুলো উৎপাদন শুরুর পর প্রথম পাঁচ বছর শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা ভোগ করবে। পরবর্তী তিন বছরের জন্য, ছাড়ের হার ৫০ শতাংশ হবে এবং শেষ দুই বছরে এটি ২৫ শতাংশ হবে। ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এই কর ছাড় কার্যকর হবে।
এই কর ছাড় সুবিধা পেতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিতে নির্ধারিত বিল্ড ওন অপারেট (বিওও) মডেলের অধীনে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে।
বর্তমানে কৃষি যন্ত্রপাতি, স্বয়ংক্রিয় ইট উৎপাদন, অটোমোবাইল, বাইসাইকেল, আসবাবপত্র, চামড়াজাত পণ্য, গৃহস্থালি ইলেকট্রনিক্স যেমন এলইডি টিভি ও রেফ্রিজারেটর, খেলনা, মোবাইল ফোন, ওষুধপত্র, টায়ার, টেক্সটাইল যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন খাতে কর ছাড় সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও আইটি সেক্টর সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, ওয়েবসাইট পরিষেবা, কল সেন্টার অপারেশন এবং বিদেশি মেডিকেল ট্রান্সমিশন পরিষেবার ক্ষেত্রে কর ছাড় উপভোগ করে। বড় আকারের প্রকল্পগুলোতেও শর্তানুযায়ী কর ছাড় দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী এক্সিলারেট এনার্জি
১ মাস আগে
‘২০৩০ সালের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের পরিকল্পনা’
১০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে সরকারি দাবি থাকলেও পাওয়ার সেলের এক নথিতে দেখা যায়, ২০৩০ সালের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে ২৩০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ এবং ১ হাজার ৮০ দশমিক ৩৬ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ।
ইউএনবির হাতে আসা পাওয়ার সেলের নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মোট ৩ হাজার ৯৬৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট প্রকল্প বাস্তবায়নের নানা স্তরে রয়েছে। এর মধ্যে ৯৪৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট প্রকল্প নির্মাণাধীন, ৬০৯ মেগাওয়াট লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) বা নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) পেয়েছে, ২২৮ মেগাওয়াটের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন এবং ২ হাজার ১৮৩ মেগাওয়াট পরিকল্পনা গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল, ১ জুন থেকে কার্যকর
গত বছর এক আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, ১০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
‘এনসিউরিং অ্যাক্সেস টু অ্যাফর্ডেবল, রিলায়েবল অ্যান্ড মর্ডার্ন এনার্জি সার্ভিসেস টুয়ার্ডস আ রিসাইলেন্ট সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক সম্মেলনে তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন জোরদারের লক্ষ্যে সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা, সোলার ইরিগেশন রোডম্যাপ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতির মতো উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন নসরুল হামিদ।
তবে পাওয়ার সেলের নথিপত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। বর্তমানে মাত্র ১৫টি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণাধীন। এর মধ্যে চারটি সরকারি খাতে (১৫৩ মেগাওয়াট) এবং ১১টি বেসরকারি খাতে (৪০৮ মেগাওয়াট)।
সরকারি খাতের প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- সিরাজগঞ্জ ২ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র
- বরিশাল ১ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ
- সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ
- মাদারগঞ্জ জামালপুর ১০০ মেগাওয়াট সোলার পার্ক
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা
বেসরকারি খাতের প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- কক্সবাজার ৬০ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ (ইউএস-ডিকে গ্রিন এনার্জি বিডি)
- পাটগ্রাম লালমনিরহাট ৫ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ (পিভি পাওয়ার পাটগ্রাম)
- সিলেট ৫ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ (ইকি সুজি ও সান সোলা পাওয়ার)
- সুনামগঞ্জ ৩২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ (হাওর বাংলা, কোরিয়া গ্রিন এনার্জি)
- তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় ৩০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ (করতোয়া সোলার)
- বেড়া ৩.৭৭ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ (সৌদি এগ্রো সোলার)
- পাবনা ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ (ডায়নামিক সান এনার্জি)
- সিরাজগঞ্জ ৬৮ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ (বিসিআরইসিএল)
- মোংলা, বাগেরহাট ৫৫ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ (মোংলা গ্রিন পাওয়ার)
- নারায়ণগঞ্জ ৬ মেগাওয়াট বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ (ইউডি গ্রিন এনার্জি)
- উত্তর ঢাকা ৪২.৫০ মেগাওয়াট বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ (ডব্লিউটিই পাওয়ার প্ল্যান্ট নর্থ ঢাকা প্রাইভেট লিমিটেড)
পাওয়ার সেলের এক কর্মকর্তা জানান, এসব প্রকল্পের বাইরে ৬০৯ মেগাওয়াটের মোট ১৩টি প্রকল্পের জন্য এলওআই ও এনওএ ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি প্রকল্পের (২২৮ মেগাওয়াট) দরপত্র প্রক্রিয়াধীন এবং ২৫টি প্রকল্প (২১৯৩ মেগাওয়াট) পরিকল্পনা গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ, বিশেষ করে সৌর ও জলবিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
গত মার্চে নসরুল হামিদ বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিল জরুরি: বক্তারা
৪ মাস আগে
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে শীর্ষ পর্যায়ের এই আলোচনা শুরু হয়।
সেই উপলক্ষে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের টেকসই সবুজ রূপান্তরে অবদান রাখতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি সই করেছে ইইউ’র ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও বাংলাদেশ। এটি দেশের জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষ্যেও করা হয়েছে।
শিক্ষা সহায়তা, নিরাপদ কাজ, সবুজায়ন, ই-গভর্নেন্স ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তার জন্য ৭০ কোটি ইউরো মূল্যের পাঁচটি অতিরিক্ত সহযোগিতামূলক পদক্ষেপও চালু করা হয়েছে।
ব্রাসেলসের বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেন, 'ইইউ ও বাংলাদেশ ৫০ বছর ধরে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত অংশীদার। এখন, গ্লোবাল গেটওয়ের অধীনে সবুজ রূপান্তরের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে আমরা এই অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইউরোপীয় কমিশন, ইআইবি ও বাংলাদেশ নবায়ণযোগ্য জ্বালানি সহায়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একযোগে কাজ করবে। এই ৪০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ বাংলাদেশের জনগণ ও অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই উদ্যোগ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অবকাঠামোগত ঘাটতি দূরীকরণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল উদ্ভাবন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আরও অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করতে সক্ষম করবে। গ্লোবাল গেটওয়ে বন্ধুত্বের, অংশীদারিত্বের, বিশ্বাসের, স্বার্থসংশ্লিষ্ট পারস্পরিক নির্ভরশীলতার একটি প্রতীক।
নবায়ণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলোর জন্য ইইউ এবং ইআইবি (৩৯৫ মিলিয়ন) ইউরোর মধ্যে ঘোষিত ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর অংশীদারিত্বের মধ্যে সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর ইইউ-গ্যারান্টিযুক্ত ইআইবি ঋণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিনিয়োগ অনুদানসহ ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর মিশ্রণ সহায়তা প্যাকেজের পরিপূরক।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
উপরন্তু, ১২ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন প্রকল্প, যার মধ্যে ৭ মিলিয়ন ইউরো রয়েছে যা জার্মানির সহ-অর্থায়নে পরিচালিত হয়, যার লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ জ্বালানি রূপান্তরকে সহজতর করার নীতি, আইনি কাঠামো এবং বিনিয়োগের পরিবেশে কাজ করা।
প্রকল্পগুলো মূলত ইউটিলিটি স্কেল সৌর ফোটোভোলটাইক এবং উপকূলীয় বায়ু প্রকল্প এবং সম্ভাব্য সম্পর্কিত ব্যাটারি শক্তি সঞ্চয় ব্যবস্থার সমন্বয়ে সমগ্র বাংলাদেশে জ্বালানি ও গ্রামীণ উন্নয়নে অ্যাক্সেস বাড়াতে অবদান রাখবে।
এই কার্যক্রম বাংলাদেশে আনুমানিক ৭৫০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা স্থাপনে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিনিয়োগগুলো বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিকেন্দ্রীকরণের উন্নতি করবে, শেষ পর্যন্ত জাতীয় ও সম্ভাব্য আঞ্চলিক, সংযোগ ও সহনশীলতা বাড়াবে।
কারিগরি সহায়তার অংশ হিসেবে, ইইউ একই জমিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং খাদ্য উৎপাদন, সৌর শক্তি, হাইব্রিড সৌর শক্তি/বায়ু ও ব্যাটারিচালিত সৌরশক্তি একত্রিত করার উপায়সহ প্রকল্প প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব অংশীজনদের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকার আহ্বান অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সৌর প্রকল্প ও উপকূলীয় বায়ু প্রকল্প জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশনের জন্য অংশীদারিত্ব বাংলাদেশি আইনি কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে যা অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ জ্বালানি রূপান্তরের জন্য বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং জ্বালানি খাতে নারী পেশাদারদের কর্মসংস্থানের সুযোগও উন্নত করবে।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা খাতের (৩০ মিলিয়ন ইউরো), নিরাপদ কাজের কর্মসূচির উন্নয়নে, সবুজ নির্মাণ, কার্যকর ডিজিটাল গভর্নেন্স জোরদার এবং দেশের উন্মুক্ত স্থানে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে (প্রতিটি ক্ষেত্রে ১০ মিলিয়ন ইউরো) সহযোগিতার জন্য অতিরিক্ত ৭০ মিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ সই হয়।
এ বছর ইইউ-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী। এই সময়ে ইইউ বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন, বাণিজ্য ও মানবিক অংশীদার হয়েছে।
এই পাঁচ দশকে রাজনীতি, বাণিজ্য, উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও কানেক্টিভিটির সমন্বয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক বহুমাত্রিক হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
১ বছর আগে
১০ বছর মেয়াদি সোলার রোডম্যাপ প্রণয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে আইএসএ
ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যাসোসিয়েশন (আইএসএ) নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য ১০ বছর মেয়াদি সোলার রোডম্যাপ প্রণয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে।
মঙ্গলবার আইএসএ'র প্রোগ্রাম অ্যান্ড প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ক্লাস্টারের প্রধান রেমেশ কুমার বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ‘আমরা পরামর্শক হিসেবে সোলার রোডম্যাপ প্রকল্পে নিযুক্ত আছি। যা একটি বিস্তৃত দলিল। আমরা বৃহত্তর সৌর নাগালের জন্য সমস্ত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি।’
ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোলার এনার্জি (এনআইএসই) ক্যাম্পাসে আইএসএ সচিবালয় পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশি সাংবাদিকরা।
আইএসএ'র চিফ অব অপারেশনস জোশুয়া উইক্লিফ মহাপরিচালক অজয় মাথুরের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন।
উইক্লিফ তার বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক সৌর জোট ও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সমাধান হিসেবে সৌরশক্তির প্রসারে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, তা সেই দেশের মানুষই নির্ধারণ করবে: অরিন্দম বাগচি
তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে সদস্য দেশ হিসেবে যোগদানের পর বাংলাদেশ আইএসএ'র প্রথম দিকের সমর্থকদের মধ্যে অন্যতম এবং এখন দুই বছরের মেয়াদে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশ।’
বাংলাদেশ ও টুভালু এখন এই অঞ্চলের আইএসএ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতিত্ব করছে।
কমিটির পঞ্চম বৈঠকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সোলার সল্যুশন স্থাপনের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি রূপান্তরে আইএসএ'র ভূমিকার প্রশংসা করেন।
আইএসএ'র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘আইএসএর ৯টি বিস্তৃত প্রোগ্রাম রয়েছে, যাতে রয়েছে কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবহন, স্টোরেজ, সবুজ হাইড্রোজেন এবং আরও অনেক কিছুসহ বিস্তৃত ক্ষেত্রসমূহ। সবকিছুর লক্ষ্য- সৌরশক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএসএ'র মহাপরিচালক ড. অজয় মাথুর বলেন, বাংলাদেশ বিশেষ করে ছাদে সৌরশক্তি প্রয়োগকে উল্লেখযোগ্যভাবে উৎসাহিত করেছে।
তিনি বলেন, ‘টেকসই জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সৌরশক্তি গ্রহণ এবং সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা গড়ে তোলার বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করছি।’
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক: মোদির টুইট
মাথুর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি, বিনিয়োগ সংগঠিত করা এবং সৌর গ্রহণের মাত্রা বাড়ানোর আশা প্রকাশ করেন।
আইএসএ'র সহযোগিতায় বাংলাদেশ সংরক্ষণযোগ্য সৌর প্রকল্পের পাইপলাইন তৈরি এবং বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কাজ করছে।
এই অংশীদারিত্ব জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্যারিস চুক্তির দিকে যাত্রা ত্বরান্বিত করার অঙ্গীকার করেছে।
ভারত এবং ফ্রান্স সৌর শক্তি সমাধান স্থাপনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রচেষ্টাকে একত্রিত করার জন্য একটি যৌথ প্রচেষ্টা হিসেবে আইএসএ কল্পনা করে।
২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর প্যারিসে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ যৌথভাবে আইএসএ চালু করেন।
আইএসএ কার্বন-নিরপেক্ষ ভবিষ্যতের টেকসই রূপান্তরের উপায় হিসেবে সৌরশক্তিকে প্রচার করছে।
আরও পড়ুন: সমুদ্র তলদেশের সম্পদের পূর্ণ সুবিধা ঘরে তুলতে আইএসএ’র সহযোগিতা চায় ঢাকা
১ বছর আগে
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও অর্থায়ন প্রয়োজন: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে অর্থের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তাও প্রয়োজন।
রবিবার (১ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পূর্ব, এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক পিটারিস উস্তুবাসের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ই্ইউ) একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ ক্লিন এনার্জি থেকে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে এবং আরও ১০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাতের জন্য আগামী ২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের ৯০ শতাংশই বেসরকারি খাতের পৃষ্ঠপোষকতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
নসরুল হামিদ বলেন, সরকার উপকূলীয় ও অফশোর বায়ু শক্তি, উভয় ক্ষেত্রেই আরও প্রকল্প গ্রহণ করতে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় বায়ুশক্তির সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।
তিনি বলেন, ইউরোপের কয়েকটি দেশ বায়ু প্রকল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, তাই বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করতে এই বিষয়ে কাজ করতে পারে ইইউ। ট্রান্সমিশন লাইন ও সাব-স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে গুণগত মান ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল হওয়ায় দেশে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হারিয়েছে। এই পরিমাণ বিনিয়োগ এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে আসা উচিত।
তিনি প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন, ছাদে সৌরবিদ্যুৎ বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
পিটারিস বলেন, ইইউ বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইইউ’র ৭০৬ মিলিয়ন ইউরো থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারে, যা কারিগরি সহায়তা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে অনুদান হিসেবে সরবরাহ করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্রিনহাউজ গ্যাস হ্রাস, বিদ্যুৎ নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ইইউ ‘এনার্জি কানেক্টিভিটি ইন সাউথ এশিয়া’ নামে একটি প্রকল্পে কাজ করছে।
এছাড়াও ইইউ ‘পার্টনারশিপ ফর গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন ইন বাংলাদেশ’- প্রকল্পের আওতায় টেকসই ও নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (স্রেডা) সহায়তা করছে।
আঞ্চলিক বিদ্যুতের বাজার, ইইউ বাজার, গ্রিডের উন্নয়ন, আঞ্চলিক স্থান, নেপাল থেকে পাবলিক সেক্টরের সহযোগিতা, সমন্বিত জ্বালানি এবং পাওয়ার মাস্টার প্ল্যানের বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, দক্ষিণ এশিয়ার সেক্টর হেড অড্রে মেলোট এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জৈব জ্বালানি বাড়াতে উৎসাহিত করে: নসরুল হামিদ
শান্তি-উন্নয়নের পক্ষে আবারও নৌকায় ভোট দিন: নসরুল হামিদ
১ বছর আগে
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী নরওয়ে
নরওয়ের ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের আওতায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি।
মঙ্গলবার অসলো ফোরাম ২০২৩ এর সাইডলাইনে অসলো শহরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স এরলিং রিমেস্টাড পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের কাছে এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উভয় পক্ষ জাহাজ পুনর্ব্যবহার ও নীল অর্থনীতিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগিতা এবং বিশেষ করে আর্থিক খাতে নরফান্ড-এর বিনিয়োগের জন্য নরওয়েকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা এবং তাদের নিরাপদ, টেকসই ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে নরওয়ের রাজনৈতিক সহায়তার প্রশংসা করেন।
নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারি নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাংলাদেশের দ্রুত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়েও উভয় পক্ষ আলোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: নরওয়ের একদিনের রাষ্ট্রদূত হলেন বৈশাখী
নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
১ বছর আগে
নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০% বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৬.৫ বিলিয়ন ডলার
নতুন একটি সমীক্ষা বলছে ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ২৬ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের বহুমুখী হলরুমে ‘রিনিউয়েবল এনার্জি ফাইন্যান্সিং, প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য তুলে ধরেন গবেষণা সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান গবেষক জাকির হোসেন খান মূল উপস্থাপনায় বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে প্রায় ৩৮ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ছয় দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন পেয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিবেশ সুবিধা, গ্লোবাল ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যালায়েন্স, জিসিএফ-পিপিএফ, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড, গ্লোবাল এনার্জি এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে ক্লিন টেকনোলজি ফান্ডসহ বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থায়ন এসেছে।
তিনি বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার একর অকৃষি বিশেষ জমি রয়েছে।
এসব অকৃষি জমির পাঁচ শতাংশ ব্যবহার করা গেলে সৌরবিদ্যুৎ বা নবায়নযোগ্য খাত থেকে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব।
এমনকি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের খাস জমিতেই ২২ হাজার ৩১৯ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াসেকা আয়শো খান।
আরও পড়ুন: সিলেটে জ্বালানি সংকট, অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষণা
এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সাবেক সচিব ও সাবেক রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম আজাদ,পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, পলিসি রিসার্চার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোলার যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক কমানো এখন সময়ের দাবি।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ বছরের জন্য এই শুল্ক কমানো উচিত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত। ভবিষ্যতে কোনো ছাদ খালি রাখা যাবে না।
মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ২০০৯ সালের শেষ দিকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রায় ৩ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি পরিবর্তন করছি। প্রধানমন্ত্রী চান মোট বিদ্যুতের ৪০ শতাংশ আসবে ক্লিন এনার্জি থেকে। টাকা কোনো সমস্যা নয়।’
আরও পড়ুন: জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিনাজপুরে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীরা এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করতে চাইছে। সৌরবিদ্যুৎ প্রযুক্তির দামও কমেছে। ‘সুতরাং সৌর আমাদের পরবর্তী অগ্রাধিকার।’
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে গত এক দশকের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ক্লিন এনার্জি এখন তিন শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘এটা মোটেও সুখকর নয়। ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো ইউরোপ এখন বায়ু বিদ্যুতে ঝুঁকেছে।’ বাংলাদেশে তা সম্ভব নয়, তাই আমাদেরকে দ্রুত নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হতে হবে।
বর্তমানে চার ধরনের সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক রয়েছে এবং এসব শুল্ক কমানো বা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি উঠেছে সেমিনারের একাধিক বক্তার কাছ থেকে।
সুপারিশের মধ্যে রয়েছে আগামী ১০ বছরের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগকারীদের কর ছাড়সহ বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান।
প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, দ্রুত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ (বিশেষ) আইন বাতিল করা এবং বিনিয়োগকারীদের একটি নির্দিষ্ট হারে অকৃষি খাস জমি পাওয়ার অনুমতি দেয়াও সুপারিশের অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি ও বন্দর খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী সৌদি আরব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে
সবুজ জ্বালানির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ: সরকারি নথি
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন খরচ, বিশেষ করে সৌর বিদ্যুতের, সাম্প্রতিক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে কমলেও দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়নি।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) নথিতে এই হতাশাজনক তথ্য পাওয়া গেছে।
নথিপত্র অনুসারে,নবায়নযোগ্য জ্বালানি এখনও দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক শতাংশের নিচে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানির সময় দেয়া নথি থেকে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সবুজ জ্বালানি: মিনি সৌর গ্রিডগুলো বাঁচাতে চায় সরকার
সরকারি নথি থেকে আরও দেখা যায়, ক্রমবর্ধমান বার্ষিক আর্থিক ক্ষতি পূরণে সরকার জীবাশ্ম জ্বালানির প্রসারে মনোযোগ অব্যাহত রেখেছে বিশেষ করে ভাড়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
এদিকে বিপিডিবি ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বর্তমান ৫ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে আরও ৬৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। আর তা না হলে সংস্থাটি ৩০ হাজার ২৫১ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানায়।
বিইআরসি’র কারিগরি মূল্যায়ন দল ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। তবে বিইআরসি এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বিপিডিবি’র নথিতে দেখা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে (মার্চ পর্যন্ত) ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সরকারকে প্রতি ইউনিটে গড়ে ৪৩ দশমিক ৪২ টাকা খরচ করতে হয়েছে। তারপর ফার্নেস অয়েল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫ দশমিক ৫১ টাকা, কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১২ দশমিক ৭৭ টাকা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে (সোলার) ১২ দশমিক ৬৪ টাকা, গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩ দশমিক ৪৬ টাকা এবং জলবিদ্যুৎ থেকে ২ দশমিক ৬৭ টাকা এবং আমদানি করা বিদ্যুতের জন্য ৫ দশমিক ৯৫ টাকা।
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাত উন্নয়নে মার্কিন বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে: নসরুল হামিদ
সর্বোচ্চ ৫৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফার্নেস ওয়েল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, এক দশমিক ০৩ শতাংশ জলবিদ্যুৎ থেকে, ৯ দশমিক ২০ শতাংশ আমদানি এবং মাত্র শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে উৎপাদন করা হয়েছে।
খরচ উল্লেখযোগ্য হ্রাসের কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এত বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সবুজ জ্বালানির দিকে মনোযোগ দেয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দাবি করেছে, নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ ৮৯ শতাংশ কমেছে।
টিআইবি বলছে, নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম দেশ যেখানে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দুই হাজার ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বর্তমান উৎপাদন মাত্র ৭৭৯ মেগাওয়াট।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে ধীরগতির বিষয়ে বাংলাদেশ সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসআরইএ) জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি মুনাওয়ার মঈন বলেন, ‘বাজেটের সঙ্গে সঠিক নীতি সহায়তার অভাব এই খাতের উন্নয়নে প্রধান সমস্যা।’
আরও পড়ুন: প্রযুক্তি ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির আশ্বাস ডেনমার্কের
এই মুহূর্তে একমাত্র সম্ভাব্য স্থাপনা হলো নেট মিটারসহ ‘রুফটপ সোলার’। তবে আর্থিক প্রণোদনাসহ উপযুক্ত অর্থায়ন বিকল্প শিল্প মালিকদের দ্রুত স্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি স্থাপনা বাড়ানোর জন্য বাজেট বরাদ্দসহ একটি লক্ষ্যভিত্তিক নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।’
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার নেট মিটারিং ও অন্যান্য নীতি নির্দেশিকাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।’
সম্প্রতি একটি ওয়েবিনারে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন,সবুজ জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ভূমি স্বল্পতার প্রধান প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী প্রযুক্তির পাশাপাশি বিদেশি আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম আরও বাড়লে জনগণের জন্য বড় চাপ হবে: জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা
২ বছর আগে
অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও সম্প্রসারিত করতে আগ্রহী বাংলাদেশ-নরওয়ে
বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সামুদ্রিক খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও সম্প্রসারিত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ও নরওয়ে।
দুই দেশ বিশেষভাবে অফশোর নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানেকিন হুইটফেল্ডকে তৈরি পোশাক খাতের নিরাপত্তা ও সবুজ উৎপাদন সুবিধা নির্মাণে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
নরওয়েজিয়ান মন্ত্রী জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং হংকং কনভেনশন অনুসমর্থনের বিষয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনার বিষয়ে খোঁজ নেন।
রবিবার ড. মোমেন ঢাকায় সফররত নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন।
পড়ুন: ডেনমার্কের রাজকুমারী ঢাকায়
২ বছর আগে