সিকিম
১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
স্বপ্ন যখন বিদেশ ভ্রমণের, তখন তা পূরণের মূল্যও দুর্গম সীমান্ত অতিক্রমের সমান। আপন দেশ থেকে যতটা দূরে সেই জায়গাটি, ভ্রমণ খরচটাও যেন ঠিক ততটা প্রকাণ্ড হয়ে সামনে আসে। কিন্তু প্রকৃতিপ্রেম বলে কথা; অকৃত্রিম এই আদিম প্রবৃত্তি যেন কিছুতেই ম্লান হবার নয়! অনেকেই খুঁজে বেড়ান, কোথায় সাধ্যের মধ্যে বিদেশ বিভূয়ীয়ের স্বাদ পাওয়া যায়। তাদের জন্যই আজকের ভ্রমণ কড়চা। এখানে একত্রিত করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মন্ত্রমুগ্ধ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। আলোচনা করা হয়েছে খুব অল্প বাজেটে কীভাবে এই গন্তব্যগুলোতে বিচরণ করবেন। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই- মাত্র ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যেতে পারেন।
১০ হাজার টাকায় দেশের বাইরে ভ্রমণের ১০টি দর্শনীয় স্থান
চেরাপুঞ্জি
মহকুমা শহটির স্থানীয় নাম সোহরা, যার অবস্থান ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড়ে। এখানকার চেরাপুঞ্জি গ্রাম, সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হওয়া মওসিনরাম, ডাবল ডেকার রুট ব্রিজ, মোসমাই কেভ, মকডক ভিউ পয়েন্ট বহিরাগতদের প্রধান আকর্ষণ। ঝর্ণার মধ্যে মুগ্ধতা ছড়ায় নোহকালীকাই ফলস, থাংখারাং পার্ক, মোসমাই ফলস, কালিকাই ফলস, রেইনবো ফলস, ক্রাংসুরি ঝর্ণা, এবং সেভেন সিস্টার্স ফল্স।
সোহরায় যেতে হলে ঢাকা থেকে প্রথমে ট্রেনে করে সিলেট পৌঁছে সেখান থেকে বাসে তামাবিল যেতে হবে। ঢাকা থেকে সিলেট রেলপথে সর্বনিম্ন ভাড়া প্রায় ৪০০ টাকার কাছাকাছি, আর সিলেট থেকে তামাবিলগামী বাসে নিবে ৩৫ টাকা।
আরও পড়ুন: আপনি কি মার্কিন ডলার না কিনে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন?
তামাবিলে ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশ অভিবাসন এবং সীমান্ত পেরিয়ে ভারত কাস্টমসে চেকিং শেষ করতে হবে। তারপর সেখান থেকে ট্যাক্সি বা মিনি বাস ডাউকি বাজার দিয়ে নিয়ে যাবে শিলং। শিলংয়ের ওয়ার্ড্সলেকের গেট পার হয়ে কিছুটা সামনে এগোলেই চেরাপুঞ্জি।
সোহরা মার্কেটের সোহরা প্লাজার হোটেলগুলো কম খরচে থাকার জন্য বেশ ভালো। এ ছাড়া নৈংরিয়াত গ্রামেও হোম স্টে-র ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এখানে ৪ জনের জন্য রুম ভাড়া পড়তে পারে ১ থেকে দেড় হাজার রুপি, যা প্রায় ১ হাজার ৩৩০ থেকে ২ হাজার বাংলাদেশি টাকার সমান (১ রুপি = ১.৩৩ বাংলাদেশি টাকা)। খাবার খরচ একদিনে জনপ্রতি ১৬০ থেকে ২০০ রুপি (প্রায় ২১৫ থেকে ২৬৬ টাকা) পড়তে পারে।
সব মিলিয়ে, প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় ৩ দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে শিলং দিয়ে চেরাপুঞ্জি ঘুরে আবার ঢাকায় ফিরে আসা যাবে।
দিল্লি
যমুনা নদীর তীরে এই রাজধানী শহরটি একই সঙ্গে ধরে রেখেছে পরিব্রাজকদের জনপ্রিয়তা ও নিজস্ব প্রাচীনতা। দিল্লির জামে মসজিদ, কুতুব মিনার, চাঁদনী চক বাজার, ইন্ডিয়ান গেট, লাল কেল্লা, সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি জনবহুল শহরটির সেরা দর্শনীয় স্থান।
স্বল্প খরচে দিল্লি দর্শনের জন্য ঢাকাবাসীদের প্রথমে বাসে করে কলকাতায় আসতে হবে। নন এসি কোচে একজনের জন্য খরচ নিবে ৮৯০ থেকে ৯০০ টাকা। এবার কলকাতার হাওড়া গিয়ে সেখানকার রেল স্টেশন থেকে দিল্লির ট্রেনে ধরতে হবে। ননএসি স্লিপারের জন্য খরচ পড়বে প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ রুপি (প্রায় ৮৬৫ থেকে ৯৩১ টাকা)।
দিল্লির মোটামুটি সব দর্শনীয় জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে ২দিনই যথেষ্ট। এর জন্যে কোনো ট্যুর এজেন্সির সাইট সিইং প্যাকেজ নেওয়াটা উত্তম। এগুলোতে একজনের জন্য ডে ট্যুরের প্যাকেজ থাকে সাধারণত ৩০০ থেকে ৫০০ রূপির (প্রায় ৩৯৯ থেকে ৬৬৫ টাকা) মতো।
এখানে খাবারের জন্য গড় খরচ প্রতিদিন ৩৯০ রুপি (প্রায় ৫১৯ টাকা)। পাহাড়গঞ্জে ৫০০ থেকে ৬৫০ রুপির (প্রায় ৬৫৫ থেকে ৮৬৫ টাকা) মধ্যে ডাবল-বেডের রুম পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সেরা ১০ মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত
১১ মাস আগে
ভারতের সিকিমে আকস্মিক বন্যায় নিহত ১৪, নিখোঁজ শতাধিক
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য সিকিমের বেশ কয়েকটি শহরে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ নিখোঁজ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সিকিম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবারের বন্যার পরে দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজ্য কর্তৃপক্ষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের জন্য ২৬টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে।
বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানিয়েছে, ১০২ জন নিখোঁজ রয়েছে।
রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, বন্যায় ১৪ জন মারা গেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিখোঁজদের মধ্যে ২২ জন সেনা সদস্য রয়েছে। বন্যার কারণে কিছু সেনা ক্যাম্প ও যানবাহন কাদায় তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবার নিখোঁজ হওয়া এক সেনা সদস্যকে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করেছে।
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ১১টি সেতু বন্যার পানিতে ভেসে গেছে এবং চারটি জেলার ২৭০টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের শিমলায় ভূমিধসে ২১ জনের মৃত্যু: মুখ্যমন্ত্রী সুখু
সিকিম রাজ্যের লাচেন উপত্যকায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং একটি বাঁধের কিছু অংশ ভেসে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে।
রাজ্যের শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, তিস্তার পাড়ের ডিকচু ও রংপোসহ বেশ কয়েকটি শহর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং রবিবার পর্যন্ত চারটি জেলার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের রাজধানী সিকিমের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযোগকারী একটি মহাসড়কের কিছু অংশ ভেসে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্যার পরে সরকার রাজ্য কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবে।
আকস্মিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই অঞ্চলে বন্যা ও ভূমিধস হতে পারে, যা হাজার হাজার মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। রাজ্যের ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এক ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
নিকটবর্তী হিমাচল প্রদেশে গত আগস্টে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
জুলাই মাসে রেকর্ড বৃষ্টিতে উত্তর ভারতে জলাবদ্ধ ও বাড়িঘর ধসে পড়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।
জুন-সেপ্টেম্বরে বর্ষা মৌসুমে ভারতের হিমালয় অঞ্চলে ভূমিধস ও বন্যায় প্রায়ই প্রাণহানি ঘটে।
আরও পড়ুন: ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসে ৫ তীর্থযাত্রী নিহত
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে এ অঞ্চলে আরও ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে।
বুধবারের আকস্মিক বন্যার বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্টের জলবায়ু বিজ্ঞানী জ্যাকব স্টেইনার বলেছেন, ‘এটি দুঃখজনকভাবে সত্যি যে অনিবার্যভাবে এ ধরনের দুর্যোগ বাড়তেই থাকবে।’
এই বছরের শুরুতে স্টেইনারের সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তবে হিমালয়ের হিমবাহগুলোর আয়তন ৮০ শতাংশ কমতে পারে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ২০০ মানুষ মারা যায় এবং বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে যায়।
আরও পড়ুন: ভারতে সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত ক্রেন ধসে ১৬ শ্রমিক নিহত
১ বছর আগে
কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখতে পঞ্চগড়ে পর্যটকদের ভিড়
পঞ্চগড় থেকে দেখা যাচ্ছে নেপাল এবং সিকিম সীমান্তে অবস্থিত বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্লভ মায়াবী রূপ। আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় এবং বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ কমে যাওয়ায় এবার আগেভাগেই দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
৩ বছর আগে