সার
এলএনজি-সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিশন
এলএনজি ও সার আমদানিসহ মোট ৭টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি (এসিসিজিপি)।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সার ও গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এসব প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা আশা করছি চলতি মৌসুমে সারের সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না। এছাড়া সরকার এলএনজি আমদানির মাধ্যমে গ্যাসের ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করছে।’
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে সিঙ্গাপুরভিত্তিক গানভর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করবে।
আরও পড়ুন: সামিটের এলএনজি টার্মিনালের মেরামত সম্পন্ন, পরিষেবা পেতে লাগবে ২০ দিন
এর মধ্যে প্রথম কার্গোতে ৩৩লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন এমএমবিটিইউ রয়েছে। এর দাম পড়বে ৬৪০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউয়ের দর ১৩ দশমিক ৫৭ ডলার। সম পরিমাণের দ্বিতীয় কার্গোর দাম পড়বে ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউয়ের দাম পড়ছে ১৩ দশমিক ৭৭ ডলার।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস, ২০০৮ এর অধীনে কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরবরাহকারী নির্বাচন করে পেট্রোবাংলা।
সার আমদানির জন্য বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০,০০০ মেট্রিক টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া আমদানি করবে বিসিআইসি। এর খরচ হবে ১২৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা এবং প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৩৪৬.৩৩ ডলার। একইসঙ্গে, ৩০,০০০ মেট্রিক টন ব্যাগ গ্রানুলার ইউরিয়া কার্নফুলি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১২০ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় আমদানি করা হবে; যেখানে প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৩৩৫.৫০ ডলার।
নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে ২টি বাফার গোডাউন নির্মাণের দরপত্র বাতিলের জন্য বিসিআইসির আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিটি।
সার আমদানির জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর মধ্যে একটি হলো- বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন মরক্কোর ওসিপি এসএ থেকে ১৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানি করবে।প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ৪১৫ ডলার।
এছাড়া সৌদি আরবের মা'দেন থেকে প্রতি মেট্রিক টন ৫৮১ মার্কিন ডলার দরে ২৭৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করবে বিএডিসি।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে তালিকাভুক্ত ২৩ কোম্পানি থেকে উন্মুক্ত দরপত্রে এলএনজি কিনবে সরকার
সেপ্টেম্বরের আগে সামিটের এলএনজি টার্মিনালের কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা নেই
১ মাস আগে
দেশে সারের কোনো সংকট নেই: কৃষি উপদেষ্টা
দেশে সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যাপ্ত সারের মজুদ রয়েছে। তাই কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী সার কিনতে ও ব্যবহার করতে পারবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নির্ধারণ করে পুনর্বাসনের আহ্বান কৃষি উপদেষ্টার
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, বন্যার্তদের পুনর্বাসনে গৃহীত পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) কার্যক্রম সম্পর্কে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সার আমদানির প্রক্রিয়া স্বাভাবিক আছে।
তাই ভবিষ্যতে সংকট হতে পারে এ শঙ্কায় অতিরিক্ত সার কেনা বা মজুদ না করার জন্য কৃষি উপদেষ্টা আহ্বান জানান।
এসময় কৃষি উপদেষ্টা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানসহ মন্ত্রণলয়, দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও প্রধানরা।
উল্লেখ্য, পত ১৬ আগস্ট থেকে আকস্মিক বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জেলাগুলোর মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর। ফসল উৎপাদনে ক্ষতির পরিমাণ ৭ লাখ ১৪ হাজার ৫১৪ মেট্রিক টন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। বন্যায় ২৩টি জেলার মোট আবাদ করা ফসলের শতকরা ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ডাক বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
বন্যায় অধিক আক্রান্ত ৭টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ-
ফেনী ৩৫ হাজার ৬৭৩ হেক্টর (৮০ শতাংশ), নোয়াখালী ৩৮ হাজার ৪৫৬ হেক্টর (৩৭ শতাংশ), কুমিল্লা ৪৯ হাজার ৬০৮ হেক্টর (৩৬ শতাংশ), লক্ষ্মীপুর ১৫ হাজার ৬২৬ হেক্টর (৩৩ শতাংশ), চট্টগ্রাম ২৩ হাজার ৯৯২ হেক্টর (১৬ শতাংশ), মৌলভীবাজার ১৫ হাজার ২২২ হেক্টর (১২ শতাংশ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৮ দশমিক ৩২৬ হেক্টর (৩৫ শতাংশ)।
বন্যায় জেলাগুলোর রোপা আমন ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০৯ হেক্টর, আউশ ৩৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর, বোনাআমন ৭৬৪ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১৪ হাজার ৯০৮ হেক্টর ও শাকসবজি ১১ হাজার ২৯০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আদা, হলুদ, আখ, পান, মরিচ, তরমুজ, পেঁপে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, টমেটো ইত্যাদি ফসল এবং ফলবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা মোকাবিলায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে রোপণের জন্য আমন ধানের বীজ বিতরণ ও বীজতলা প্রস্তুত করা, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান এবং কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় ও মনিটরিং করা হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে পুনর্বাসন কর্মসূচি বাবদ ৯টি জেলায় (কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর ও খাগড়াছড়ি) রোপা আমন চাষের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে আমন ধানের ৪০০ টন বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। উপকারভোগী কৃষক পরিবারকে ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওপি সার ও নগদ ১০০০ টাকা (মোবাইল/অনলাইন ব্যাংকিং) দেওয়া হচ্ছে। এতে ১০ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমি রোপা আমন চাষের আওতায় আসবে এবং উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ৮০ হাজার জন।
বন্যাকবলিত জেলাকে গুরুত্ব দিয়ে ৬৪ জেলায় ১২টি ফসলে (গম, ভুট্টা, সরিষা, সুর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন, পেঁয়াজ, মুগ, মসুর, খেসারি, ফেলন ও অড়হড়) রবি মৌসুমে প্রণোদনা/পুনর্বাসনের জন্য ১৬৪ দশমিক ৭৯ কোটি টাকা অর্থছাড় করা হয়েছে। যাতে ১৬ দশমিক ৪১ লাখ কৃষক উপকৃত হবে। পরবর্তীতে শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদনে জন্য ২২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা ১ দশমিক ৫ লাখ কৃষককে প্রণোদনা প্রদানের জন্য অর্থছাড় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বিভিন্ন খামারে ২২ দশমিক ৫ একর জমিতে চারা উৎপাদনের জন্য ৪ হাজার ৫০০ কেজি আমন ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। উৎপন্ন চারা দিয়ে ৪৫০ একর (১ হাজার ৩৫০ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা সম্ভব হবে।
আগামী ২০-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ২ হাজার ৫০০টি কৃষক পরিবারের কাছে রোপা আমন ধানের চারা পৌঁছাবে। যা দিয়ে ২ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে। এরমধ্যে বিএডিসির সরবরাহ করা বীজে ১ হাজার ৩২৫ বিঘা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরবরাহ করা বীজে ৩৭৫ বিঘা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সরবরাহ করা বীজে ৪৫০ বিঘা এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সরবরাহ করা বীজে ৩৫০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হবে। বিএডিসির মধুপুরস্থ খামারের ১ দশমিক ৫০ একর উঁচু জমিতে আমন ধানের বীজ রোপন করা হয়েছে। যা দ্বারা ফেনী জেলার মহিপালে অবস্থিত খামারের ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ একর (৭৫ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কুমিল্লা সেনানিবাসে ২ দশমিক ৫০ একর (৭ দশমিক ৫ বিঘা) জমিতে চারা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলার কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১ হাজার ২০০ কেজি বীজের চারা ২৪০টি কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করবে মর্মে আশ্বাস পাওয়া গেছে। বেসরকারি সংস্থা সিনজেন্টার ১৫ টন বীজ ৫ কেজি হারে ৩ হাজার কৃষক পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
২ মাস আগে
ডিসেম্বর পর্যন্ত সারের পর্যাপ্ত মজুদ আছে: কৃষি সচিব
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, দেশে ইউরিয়া-নন ইউরিয়া সারের যে মজুদ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো সংকট হবে না।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সার নিয়ে কোনো চিন্তার কারন নেই।
রবিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় বিএআরএফের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক কাওসার আজম, অর্থ সম্পাদক আয়নাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ফারুক আহমাদ আরিফ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক শওকত আলী পলাশ, কার্যনির্বাহী সদস্য মুন্না রায়হান ও হরলাল রায় সাগর উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
কৃষি সচিব বলেন, ‘সারের বর্তমান মজুদ দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মেটানো যাবে। তবে সার আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে এখনো কিছুটা সংকট রয়েছে, যেটা আমরা সমাধানে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।’
সভায় জানানো হয়, দেশে ১০ লাখ ৬৩ হাজার টন নন ইউরিয়া সার মজুদ আছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কয়েকটি ধাপে প্রণোদনা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান কৃষি সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
তিনি বলেন, আমরা কৃষকদের সহায়তার জন্য এখন পর্যন্ত ১৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা কয়েকটি ধাপে কৃষি পুনর্বাসনে ব্যবহার করা হবে।
তিনি বলেন, ২৩ টি জেলার ১৪ লাখের বেশি কৃষক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মূলত ১১টি জেলায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রণোদনার বেশিরভাগই এই জেলাগুলোর কৃষকদের টার্গেট করেই দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব জেলা এবং আশপাশের জেলাগুলোর কৃষি বিভাগের যত অব্যবহৃত জায়গা রয়েছে সব জায়গায় রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যা আমন চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
পুনর্বাসনের আওতায় নয়টি জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৮০ হাজার কৃষককে এক বিঘা জমি চাষের জন্য বিনামূল্যে রোপা আমনের উফশী জাতের বীজ, সার সহায়তা (১০ কেজি) এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ১ হাজার করে নগদ টাকা দেওয়া হবে বলে জানান সচিব।
তিনি বলেন, বসতবাড়িতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষের জন্য ২২টি জেলায় দেড় লাখ কৃষককে বিভিন্ন জাতের সবজির বীজ ও এক হাজার করে নগদ টাকা দেওয়া হবে।
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে গত ১৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। যে পরিমাণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে তাতে করে ধান, সবজি, ফলমূল সহ প্রায় ১০ লাখ মে টন উৎপাদন নষ্ট হয়েছে। টাকার অংকে এই ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। বন্যায় মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ধানের বীজ, চারা, সার ও নগদ অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে সেই অনুযায়ী পূনর্বাসনের জন্য আর কী কী কর্মসূচি নেওয়া যায় তা ঠিক করা হবে বলে জানান কৃষি সচিব।
আরও পড়ুন: শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
বন্যার কারণে দেশে খাদ্য ঘাটতিতে পড়বে কি না-জানতে চাইলে সচিব বলেন, আগামী মৌসুমে বোরো উৎপাদনে কোনো সমস্যা না হলে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংকট হবে না। তাই এখন আমাদের টার্গেট আগামী বোরো মৌসুমে ভালো উৎপাদন করা।
২ মাস আগে
বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনে কর্মসূচি গ্রহণ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
দেশের বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে এটি থেকে সার উৎপাদনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘দেশের বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে সরকার। বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। এগুলো সংগ্রহ করে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সার উৎপাদনের কাজ শুরু হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সচিবালয়ে ইউএসএআইডি ও ঢাকা কলিংয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পরিবেশমন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।
তিনি জানান, ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে বিভিন্ন খাতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হবে। ভবিষ্যতে শুধু শহর নয়, সব এলাকার বর্জ্যেরই ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এগুলো সংগ্রহ করে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সার উৎপাদনের কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: বনশ্রীতে বিধি লঙ্ঘন করে বাড়ি নির্মাণ করায় ১১ লাখ টাকা জরিমানা
তিনি আরও বলেন, ‘বর্জ্য থেকে মানসম্পন্ন সার পাওয়া গেলে আমরা আমদানি কেন করব? বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন শুরু হলে সার আমদানি কমে যাবে। এতে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।’
মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ১০০ কর্মদিবসের কর্মসূচির মধ্যে ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পর্যায়ে আছে।
‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পুরো ইকোসিস্টেমের দিকে আমরা তাকাচ্ছি। কীভাবে সেটার উন্নয়ন ও কার্যকর করা যায় তা ভাবা হচ্ছে। আপাতত কঠিন বর্জ্য বা সলিড ওয়েস্ট নিয়ে কাজ হবে। পর্যায়ক্রমে মনুষ্য বর্জ্য, ট্যানারি বর্জ্য, ই-বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য নিয়েও কাজ হবে। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিককেও পুনর্ব্যবহারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভবিষ্যতের প্রয়োজন বিবেচনায় এখন থেকেই জায়গা চিহ্নিত করে জমি অধিগ্রহণ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।’
সাভারের ট্যানারির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানকার বর্জ্য থেকে যে ক্রোমিয়াম পাওয়া যাচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা করতে চায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়।’
আরও পড়ুন: সবুজ ভবিষ্যৎ নির্মাণে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশগুলো: পরিবেশমন্ত্রী
৮ মাস আগে
এলএনজি, সার, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেল কিনবে সরকার
অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), সার, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেল কিনবে সরকার।
মঙ্গলবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) প্রথম বৈঠকে বেশ কয়েকটি পাইকারি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৪৭০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজির এলএনজি কার্গো আমদানি করবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা।
কমিটি সার আমদানির জন্য আটটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পাঠ্যবইয়ে ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলে সংশোধন হবে
এর মধ্যে চারটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চারটি বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে মোট ১ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করবে।
বিএডিসি সৌদি আরবের মা’দেন থেকে ২৫৯ কোটি ১৬ লাখ টাকায় প্রতি টন ৫৮৯ ডলারে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার, মরক্কোর ওসিপি, এসএ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার ১১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় প্রতি টন ৩৮৬ ডলার মূল্যে, মরক্কোর একই কোম্পানি থেকে ২৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকায় আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার প্রতি টন ৫৪৭ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারে এবং রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন প্রোডিনটর্গ থেকে ৩০ হাজার এমওপি সার প্রতি টন ৩০২ ডলার দরে ৯৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় আমদানি করবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃথক চারটি প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) মোট ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানি করবে।
এর মধ্যে কাতারের মুনতাজাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন দানাদার ইউরিয়া ১০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায় এবং প্রতি মেট্রিক টন ৩১৩ দশমিক ৪২ মার্কিন ডলারে ইউরিয়া আমদানি করা হবে। কাফকো থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগযুক্ত দানাদার ইউরিয়া ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় প্রতি মেট্রিক টন ৩১৬ দশমিক ৬২ ডলারে আমদানি করা হবে। সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ১০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ৩০ হাজার বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া প্রতি মেট্রিক টন ৩১৩ দশমিক ৪২ ডলার এবং একই সৌদি কোম্পানি থেকে ১০২ কোটি ৪২ লাখ ডলার দরে আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন দানাদার ইউরিয়া আমদানি করা হবে।
কমিটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক উত্থাপিত তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ভারতের উমা এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সংগ্রহ করবে। প্রতি কেজি ১০১ টাকা ১৩ পয়সায় ৯৬ কোটি ১৪ লাখ টাকায়এসব ডাল কেনা হবে। এ ছাড়া আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন বগুড়ার রায় এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড ও ঢাকার নাবিল নাবা ফুডস লিমিটেড থেকে প্রতি কেজি ১০৫ দশমিক ৪৫ টাকা দরে ১০৫ দশমিক ৪৫ কোটি টাকায় কেনা হবে। মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১ কোটি ২০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল; (২) মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস লিমিটেড ও আলী ন্যাচারাল অয়েল মিলস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ১৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকায় প্রতি লিটার মূল্য ১৫৮ টাকা দরে কেনা হবে।
টিসিবি খোলাবাজারে বিক্রয়ের মাধ্যমে ১ কোটি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে পণ্য বিক্রি করবে।
আরও পড়ুন: ঈশা খাঁ'র জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ভ্রমণ গাইড, আনুষঙ্গিক খরচ
১০ মাস আগে
১ লাখ ১৫ হাজার টন সার আমদানি করা হবে
এক লাখ ১৫ হাজার টন সার আমদানিসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিজিপি)।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় এ অনুমোদন জানানো হয়।
আরও পড়ুন: আজ মুস্তফা কামালের প্রথম বাজেট
শিল্প মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী, এর অধীনস্থ সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ৬০ হাজার টন সার কিনবে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরবভিত্তিক এসএবিআইসি এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩ লাখ টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে আরও ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া আমদানি করা হবে।
কৃষিমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, এর অধীনস্থ সংস্থা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) তিউনিসিয়ার জিসিটি থেকে ২৫ হাজার টন এবং রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক কর্পোরেশন (প্রোডিন্টর্গ) থেকে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
বৈদেশিক ঋণ প্রাপ্তিতে নিরাপদ অবস্থানে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
১ বছর আগে
ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও সার কেনার প্রস্তাবে মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন
ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও সার সংগ্রহসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিজিপি)।
বুধবার(২০ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) স্থানীয় উন্মুক্ত টেন্ডার পদ্ধতির মাধ্যমে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য ১২৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে। এতে প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৬০ দশমিক ৩০ টাকা।
টিসিবি দুটি পৃথক লটে দুটি স্থানীয় কোম্পানির কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) মাধ্যমে ১০৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৫ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল কিনবে। এতে প্রতি লিটারের দাম পড়বে ১৫৯ টাকা। আর এই তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দু’টি হলো- মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং এমআরটি এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড।
আরও পড়ুন: বিইআরসি ছাড়াই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করবে সরকার, মন্ত্রিসভায় সংশোধনী অনুমোদন
বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ও ফুডকো এগ্রো সিটি লিমিটেডের কাছ থেকে ৬৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে টিসিবি সরাসরি ৬ হাজার টন (এমটি) মসুর ডাল কিনবে। এতে প্রতি কিলোগ্রাম (কেজি) দাম পড়বে ১১১ টাকা।
এ ছাড়া টিসিবি দরপত্র ছাড়াই আরও ২১ হাজার টন মসুর ডাল সরাসরি নাবিল নাবা ফুড, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ফুডকো এগ্রো সিটি এবং জেআই ট্রেডার্সের কাছ থেকে ২৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে কিনবে। যার প্রতি কেটির মূল্য পড়বে ৯৯ টাকা।
বৈঠকে সার আমদানির চারটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
আরও পড়ুন: এলএনজি, সার ও মসুর ডাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন মন্ত্রিসভায়
এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) ১২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্ট কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া সার আমদানি করবে। এতে প্রতি টনে খরচ হবে ৩৬৫ মার্কিন ডলার।
কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ১১৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ হাজার টন ব্যাগযুক্ত দানাদার ইউরিয়া সার কিনবে বিসিআইসি। প্রতি টনে খরচ হবে ৩৬০ দশমিক ১২৫ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ১৩০ কোটি ২ লাখ ব্যয়ে মরক্কো থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, ওসিপি, এস.এ আমদানি করবে। এতে প্রতি টনে খরচ হবে ৩৯৪ মার্কিন ডলার।
কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন (সিসিসি) থেকে ১৮০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অধীনে ৫০ হাজার টন মিউরিয়েট-অব-পটাশ (এমওপি) সার কিনবে বিএডিসি। প্রতি টনে খরচ হবে ৩২৭ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।
এটি একই সিসিসি থেকে ১৮০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও ৫০ হাজার টন মিউরিয়েট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানি করবে। প্রতি টনে খরচ হবে ৩২৭ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।আরও পড়ুন: এলএনজি, রাইস ব্রান অয়েল ও সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি
১ বছর আগে
রাশিয়া থেকে এলএনজি, গম, সার সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে: ল্যাভরভ
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন,বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আলোচনা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা গম এবং সার সরবরাহের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করছে।’
বৃহস্পতিবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ল্যাভরভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই সত্যটির প্রশংসা করি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করা সত্ত্বেও আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুরা তাদের জাতীয় স্বার্থে একচেটিয়াভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’
এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর আরও এক ঘণ্টার নৈশভোজে দুই পক্ষ রোহিঙ্গা ও ইউক্রেন সংকটসহ সব দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রাশিয়া বাংলাদেশকে খাদ্যশস্য, জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশি রপ্তানি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের জন্য আমরা একটি রোড ম্যাপেও সম্মত হয়েছি।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা কাজের পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করবেন। যেমন প্রতি বছর বাণিজ্য নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে দুই দেশ এটিকে পরিচালনার একটি স্থায়ী উপায়ে পরিণত করবে।
ল্যাভরভ রোহিঙ্গা সংকটের কথা বলেন এবং বলেন যে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান কথোপকথনকে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, তারা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অব্যাহত আলোচনাকে সমর্থন করে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ল্যাভরভ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে বাইরের নেতাদের কেবল পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধানের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরিতে নিজেদের সীমাবদ্ধ করা উচিত। রাশিয়ান ফেডারেশন মিয়ানমারের সঙ্গে তার প্রেক্ষাপটে ঠিক এটিই করছে এবং তা চালিয়ে যাবে।’
তবে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কোনো একটি পক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বাইরের কিছু নেতা এই বিষয়গুলো ব্যবহার করে এবং দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে।
ল্যাভরফ আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে এটি উভয়ই বিপরীতমুখী এবং অগ্রহণযোগ্য।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে ও জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।
বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ভালো ও দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ জোরদার করছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়েও কথা বলেন এবং এর ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসায় আমরা খুবই আনন্দিত। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, তারা রোহিঙ্গা ইস্যু, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং রাশিয়ায় বৃহত্তর বাজারে প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মোমেন বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই আলোচনা ও আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হোক।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াকালীন রাশিয়া যে ভূমিকা পালন করেছিল তা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। যেমন- ১৯৭১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক জনপ্রিয় সংগ্রামে সহায়তা এবং নবগঠিত রাষ্ট্রকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা করেছিল।
রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারপর থেকে আমাদের সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার নীতির উপর ভিত্তি করে।’
ল্যাভরভ বলেন, ‘আমি ইতিবাচক যে আমাদের আলোচনা এই প্রবণতাকে পুনঃনিশ্চিত করবে এবং এটিকে আরও শক্তিশালী করবে।’
তিনি বলেছিলেন যে তারা এই অঞ্চলে তাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে যাতে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার কোনও প্রচেষ্টা রোধ করা যায়।
প্রবণতা এবং বিনিয়োগ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্য ধারাবাহিকভাবে দুই বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। প্রধান রাশিয়ান রপ্তানির মধ্যে রয়েছে শিল্প সরঞ্জাম, ধাতু, খনিজ সার এবং গম।
রাশিয়ায় প্রাথমিক আমদানি মূলত পোশাক এবং সামুদ্রিক খাবার। ২০২২ সালে প্রতিকূল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের বাণিজ্য ২১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন হয়েছে।
এই নেতিবাচক প্রবণতা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা নিয়ে আন্তঃসরকারি রাশিয়ান-বাংলাদেশ কমিশন অন ট্রেড, ইকোনমিক এবং সায়েন্টিফিক-টেকনিক্যাল কোঅপারেশন নিয়ে আলোচনা করবে।
কমিশনের প্রথম সভা মস্কোতে ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর, দ্বিতীয়টি ঢাকায় ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর এবং তৃতীয় ও চতুর্থটি যথাক্রমে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর এবং ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর নির্মাণ দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বের প্রধান প্রকল্প।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
রাশিয়ান পক্ষ বলেছে, ২০২৪-২০২৫ সালে এর কমিশনিং বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে একটি যুগান্তকারী হিসাবে আসবে।
একই সময়ে, এর নির্মাণে রাশিয়ার সম্পৃক্ততা রাশিয়ার ১০০ টিরও বেশি শিল্প কোম্পানির জন্য দীর্ঘমেয়াদী কাজ নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশে প্রথাগত জ্বালানিতে রাশিয়ার দক্ষতার খুব বেশি চাহিদা রয়েছে।
গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে একটি গ্যাজপ্রম সাবসিডিয়ারি সে দেশে সফলভাবে কাজ করছে।
২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এটি টার্নকি ভিত্তিতে বাংলাদেশে ২০টি গ্যাসক্ষেত্র কূপ খনন ও সম্পন্ন করেছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন যা পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্বাধীনতার পর রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন যাত্রার আগে তিনি ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর শেষ করে ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
গত বছলের২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২২তম আইওআরএ মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে যোগদানের জন্য ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরের কথা ছিল ল্যাভরভের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই সফর স্থগিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা-মস্কো দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী
১ বছর আগে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশে সারের দাম ১০৫ শতাংশ বেড়েছে: সমীক্ষা
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা একশনএইড এর পরিচালিত একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে বিশ্বের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য, জ্বালানি এবং সারের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট দেয়া দিয়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকগুলো প্যারামিটারে বেড়েছে, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে সারের দাম বেড়েছে ১০৫ শতাংশ, চিনির দাম ৬০ শতাংশ, পেট্রোলের দাম ৪৭ শতাংশ এবং স্যানিটারি প্যাডের দাম ২৩ শতাংশ।
ফলস্বরূপ, দেশের জনগণ একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী, মেয়ে ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে তাদের শিক্ষা, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে আপোস করতে হচ্ছে।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং ক্যারিবিয়ান জুড়ে মোট ১৪ টি দেশে এক হাজারের বেশি মানুষের ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় দেখা গেছে যে নিরীক্ষণের সময় সারের দাম ১১৫ শতাংশ এর বেশি বেড়েছে, পেট্রোল ও স্যানিটারি প্যাডের দাম ৮০ শতাংশ বা তার বেশি বেড়েছে।
একই সঙ্গে বাল্যবিবাহের হার বৃদ্ধি, নারী স্বাস্থ্যের অবনতি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে।
একশনএইড-এর গ্লোবাল পলিসি অ্যানালিস্ট আলবার্টা গুয়েরা বলেন, ‘এই সমীক্ষা থেকে দেখায় যে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষরা আকাশ ছোঁয়া খাদ্য, জ্বালানি ও সারের দামের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা এই সময়ে নানান সংকট দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে যা তাদের খাদ্যগ্রহণ, শিক্ষা, বাল্যবিবাহ থেকে মুক্ত থাকার অধিকার এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে প্রভাবিত করেছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ১.৮০ লাখ টন সার আমদানির চুক্তি সই
বাংলাদেশসহ ১৪ টি দেশের মধ্যে ১০ টি দেশে মেয়ে ও ছেলে উভয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপও বাল্যবিবাহের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার একজন বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের নিরাপত্তার চেয়ে শিক্ষা অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেদেরকে বাংলাদেশে পাথর কোয়ারিতে বা যাদুকাটা নদীতে প্রতিদিন ৩০০ টাকায় বালু উত্তোলনের কাজ করতে হয়। এ কারণে তারা স্কুলে যেতে পারে না।’
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয় যে বাংলাদেশ জলবায়ু বিপর্যয়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, কোভিড-১৯, ঋণের চাপ এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন থেকে শুরু করে একাধিক সংকটে রয়েছে। এই কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল জলবায়ু বিপর্যয়, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘জ্বালানির দামের অস্থিরতা সব ক্ষেত্রেই সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে খাদ্যের ওপর, যা নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বেশি মাত্রায় প্রভাবিত করে। আমাদের জাতীয় প্রতিবেদন (বাংলাদেশ ব্যাংক) নির্দেশ করে যে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৯.৫ শতাংশ। যদি আমরা বাস্তব দৃষ্টিতে দেখি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এখন চাল ও ডিমের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর জন্য আগের দামের প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিতে হচ্ছে।
যার ফলে খাদ্যগ্রহণে মারাত্মক হ্রাস ঘটেছে, যা মানুষের পুষ্টির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করেছে। অন্যদিকে, আমাদের এনার্জি খাত অত্যন্ত জ্বালানি-নির্ভর এবং তাই জ্বালানির অতিরিক্ত দাম আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ এবং জাতীয় ব্যয়ের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে’।
আরও পড়ুন: সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল
তিনি বলেন, ‘একশনএইড একটি সমন্বিত ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত তহবিলের পক্ষে জোর দাবি জানাচ্ছে যা জলবায়ু পরিবর্তন, ঋণের চাপ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের গভীর প্রতিক্রিয়াসহ মূল্য সংকটকে বাড়িয়ে তোলা সমস্ত আন্তঃসংযুক্ত সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম’।
ফারাহ্ কবির আরও বলেন, ‘পরিবর্তিত বাস্তবতা এবং মানুষের বর্তমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে জরুরিভাবে সামঞ্জস্য করা দরকার। শিশুসহ পরিবারগুলোকে তাদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে হবে। চাষাবাদে অধিক বিনিয়োগের মাধ্যমে খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তি এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এগ্রোইকোলোজিক্যাল চাষ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনয়ন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন’।
১৪ টি দেশের মোট ১০১০ জন মানুষের মধ্যে ১লা মার্চ থেকে ২৩শে এপ্রিলের মধ্যে এই সমীক্ষা পরিচালিত হয়। উত্তরদাতাদের ৬৩ শতাংশ ছিলেন নারী। অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে সমীক্ষার দিনে গমের পণ্য, রান্নার তেল, পেট্রোল, রান্নার জন্য গ্যাস, সার ও স্যানিটারি প্যাডের দাম কত ছিল এবং এই পণ্যগুলো মূল্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগের মূল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছিল (যখন রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল)।
অংশগ্রহণকারীদের তাদের জীবন জীবিকার ওপর এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং সম্ভাব্য উত্তরগুলোর একটি সিরিজ থেকে কমপক্ষে একটি প্রতিক্রিয়া নির্বাচন করতে উৎসাহিত করা হয়।
জরিপে অংশ নেওয়া ১৪টি দেশ হলো- আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি), ইথিওপিয়া, হাইতি, কেনিয়া, মালাউই, মিয়ানমার, নেপাল, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন, সোমালিল্যান্ড, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
আরও পড়ুন: আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
১ বছর আগে
এলএনজি, রাইস ব্রান অয়েল ও সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) বৈঠকে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দুটি কার্গো, ৫০ হাজার মেট্রিক টন রাইস ব্রান অয়েল এবং ৯৫ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানিসহ মোট ৩৪টি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
বৃহস্পতিবার সিসিজিপি’র ভার্চুয়াল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সিসিজিপি-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলা সিঙ্গাপুরের গানভোর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানি করবে, যার প্রতিটির পরিমাণ ৩৩ দশমিক ৬০ লাখ এমএমবিটিইউ।
প্রথম এলএনজি কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ মূল্য ১২ দশমিক ৯৮ ডলার, যার মোট মূল্য ৫৫৭ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় এলএনজি কার্গোর প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩ দশমিক ৮৫ ডলার, যার মোট মূল্য ৫৯৫ দশমিক ১০ কোটি টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কোনো টেন্ডার ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় একটি কোম্পানির দুটি আউটলেট থেকে মোট ৫০ মিলিয়ন লিটার রাইস ব্র্যান অয়েল আমদানি করবে।
এর মধ্যে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন লিটার মজুমদার ব্র্যান অয়েল মিলস লিমিটেড, যশোর থেকে কেনা হবে এবং বাকি ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন লিটার মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড, ঢাকা থেকে কেনা হবে।
বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএডিসি) রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অধীনে তিউনিসিয়ার জিসিটি থেকে ৯১ দশমিক ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ হাজার মেট্রিক টন (এমটি) টিএসপি সার আমদানি করবে এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির অধীনে ১১০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মরক্কোর ওসিপি, এস.এ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিকটন টিএসপি সার আমদানি করা হবে।
বিএডিসি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অধীনে ২০৬ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মরক্কোর ওসিপি, এস.এ থেকে ৪০ হাজার মেট্রিকটন ডিএপি সার আমদানি করবে।
১ বছর আগে