চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’
চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কুমিল্লার মেধাবী ছাত্র মাহাদী জে আকিব (আকিব হোসেন)। সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই নিজ প্রতিষ্ঠানে আজ অনেকটা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়ছেন তিনি। কলেজের ৬২তম ব্যাচের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্র আকিব বর্তমানে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে আকিবের মাথা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেয়া হয়েছে। মাথায় মারাত্মক জখম নিয়ে ভর্তি হন চমেক হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর ঠাঁই এখন আইসিইউতে।
তার মাথার ব্যান্ডেজে লেখা আছে ‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’। এমন একটি ছবি রবিবার (৩১ অক্টোবর) ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।আকিব হোসেন ছাত্রলীগের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ: চমেক বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশচিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আকিবের ব্রেইনে মারাত্মক জখম হয়েছে। এ ক্ষত সেরে ওঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রবিবার রাতে আকিবের জ্ঞান ফেরেনি। তবে জ্ঞান ফিরে আসলেও তার স্বাভাবিক চলাফেরা নিয়ে শঙ্কিত চিকিৎসকরা।জানা যায়, শনিবার হামলার পর গুরুতর আহত হয়ে আকিবকে প্রথমে চমেক হাসপাতালের ওয়ানস্টপ সেন্টারে নেয়া হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড নিউরো সার্জারিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে মাথায় অস্ত্রপচার হয় আকিবের। প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এ অস্ত্রপচারে নেতৃত্ব দেন চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী।অধ্যাপক নোমান খালেদ ছাড়াও মেডিকেল টিমে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আখলাক হোসেন, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ: আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুঅধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, অপারেশন সফল হয়েছে। তবে আকিব গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। মাথার হাড়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে। সাথে ব্রেইনেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ইনজুরিটা খুব ভয়াবহ হওয়ায় এই মুহূর্তে কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবুও আমি খুবই আশাবাদী।স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান জানিয়েছেন, আকিবের চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আকিবের ব্রেনে অপারেশন করতে হয়েছে। ওর ব্রেনে রক্ত জমে গিয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। ওই রক্তগুলো সরানো হয়েছে। সরানোর পরেও সে আউট অব ডেঞ্জার না। এজন্য তাকে আপাতত ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে।সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আকিবের একজন সহপাঠী বলেন, কলেজের মেইন গেইটের কাছে অবস্থান করছিলেন আকিবসহ আরও কয়েকজন। হঠাৎ তারই রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্রলীগের অপর একটি পক্ষ তাকে’সহ কয়েকজনকে ধাওয়া করে। সাথে থাকা সবাই দ্রুত সরে যেতে পারলেও প্রতিপক্ষ আকিবকে ঘিরে ফেলে। এরপর লোহার চেইন, বোতল এবং ধারালো রামদা দিয়ে ওর মাথায় আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।মাথা থেঁতলানো অবস্থায় সহপাঠীরা আকিবকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে হাসপাতালটির আইসিইওতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এখনও ফেরেনি সংজ্ঞা।ছাত্রলীগের দুই পক্ষের এ সংঘর্ষে আকিব ছাড়াও মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) সহ আরও দুজন আহত হন।
এ ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ ব্যাপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের ‘অভিযোগ’এদিকে এই ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কলেজ প্রশাসন শনিবার থেকে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার জানান, ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে পাচঁ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ: চমেক বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশ
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।
আহতরা হলেন- মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) এবং আকিব হোসেন (২০)। তাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এবং শনিবার সকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজন নেতাকর্মী আহত হয়। সংঘর্ষে লিপ্ত দুই গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আজম নাছিরের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এদিকে সকালে সংঘর্ষের পর চমেক একাডেমিক কাউন্সিলে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। এর আগে গত মার্চে একই ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সিট দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, রাতের ঘটনার জের ধরে সকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। কি কারণে এই ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ঘটনার পর হাসপাতাল ও ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কী কারণে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি ওসি। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানান তিনি।
চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি। পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া না পর্যন্ত কলেজ বন্ধ থাকবে। আমরা সব শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেছি। এছাড়া এ ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ড. মতিউর রহমানকে।
আরও পড়ুন: চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
চমেক হাসপাতালে আগুন: লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি
চট্টগ্রামে জাহাজ থেকে পড়ে চীনা নাগরিকের মৃত্যু
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকতে একটি বিদেশি জাহাজ থেকে পড়ে এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত চীনা নাগরিক হু হাইকিয়াং (৩৮) মায়েকর্স জাকার্তা জাহাজের ক্রু হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ অক্টোবর পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘মায়েকর্স জাকার্তা’ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য নিয়ে আসে। আজ সকালে বহির্নোঙরে নোঙর করতে গিয়ে ছিটকে সাগরে পড়ে যান হাইকিয়াং হু।
এ সময় কোস্টগার্ডকে খবর দেয়া হলে কোস্টগার্ডের টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নাবিক ‘হাইকিয়াং হু’কে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে দুপুরের দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী ময়নাতদন্ত ও লাশ নিহতের নিজ দেশে পাঠানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক চীনা নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে ডুবে গেছে পণ্যবাহী লাইটার জাহাজ
শ্রমিক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট চলছে
চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির অর্থসহ আটক ৫: র্যাব
চমেকে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের জের ধরে হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বুধবার থেকে কর্মবিরতির কারণে কোনো ওয়ার্ডে যোগ দেননি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে চমেক ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের জেরে দুজন ইন্টার্ন ডাক্তারসহ পাঁচ জন আহত হন। এর মধ্যে চমেকের ৫৭ ব্যাচের ইন্টার্ন ডাক্তার ও বর্তমান সভাপতি হাবিবুর রহমান এবং ডাক্তার ওসমান গনি। এছাড়া আরও কয়েকজন আহত হন। এর জের ধরে বুধবার থেকে কোনও ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ফলে করোনাকালীন এ সময়ে চিকিৎসা নিতে আসা হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চমেক ছাত্রলীগের নাছির ও নওফেল গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫
সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে বৈঠকে বসেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, সিএমপির উত্তর বিভাগের ডিসি এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কিন্তু সেই বৈঠক অমীমাংসিতভাবেই শেষ হয়েছে। ফলে কর্মবিরতি চলবে বলে জানায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ‘ছাত্রলীগের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবক নিহত
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়শনের সদস্য সচিব ডা. তাজওয়ার রহমান অয়ন বলেন, ‘আমরা স্যারদের সাথে বৈঠকে তিনটি দাবি দিয়েছি। তারা তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেন নি। তাই আমরাও অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি অব্যাহত রাখব।’
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, ধুনটে ১৪৪ ধারা জারি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, কয়েকটি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে কোনোটাতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগ দেয়নি। এনিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক, হাসপাতাল প্রশাসনের মধ্যে একটি বৈঠকে কোন সমাধান হয়নি।
চট্টগ্রামে করোনায় প্রাণ গেল আরও ৭ জনের
চট্টগ্রামে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছে আরও ৭ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট মৃতের সংখ্যা হলো ৫০৪ জন। নগরীতে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৭৫ জন এবং জেলায় ১২৯ জন। এর আগের দিন মৃত্যু হয়েছিল ১১ জনের।
সোমবার চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: জুনের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না: বিশেষজ্ঞ মতামত
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার চট্টগ্রামে ১ হাজার ৩৬১টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২০৮ জন।এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯ হাজার ৯৫ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরীর ১৫৯ জন এবং জেলায় ৪৯ জন।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
এছাড়া রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৫০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬০ জন ও ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে ১২১টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৫ জন শনাক্ত হয়।
আরও পড়ুন: করোনার ১ম ডোজের টিকাদান সোমবার থেকে স্থগিত
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৪৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জন ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৭ জন শনাক্ত হয়।
শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ২০৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩০ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জন, জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় ১২ জন এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টারে ২৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৭ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রামে করোনায় আরও ৩ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৪১৪
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ৪২ হাজার ৭১৫ জন।
এদিকে নতুন করে করোনায় মৃত্যু হয়েছে আরও তিনজনের। চট্টগ্রামে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ৪০০ জনে।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজ বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আটটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে ১ হাজার ১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৩ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ৫৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৫ জন ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৩২৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৪ জনের করোনা পাওয়া গেছে।
এদিকে বেসরকারি ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ১৩৬ জনের করোনা টেস্ট করে ৪৫ জন ও শেভরন ল্যাবে ৫২১টি ল্যাব টেস্টে ৯৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এছাড়া আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে ১০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩১ জনের ও আরটিআরএলে ৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৩ জনের করোনা ধরা পড়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: দেশে শনাক্তে নতুন রেকর্ড, মৃত্যু আরও ৬৩
অন্যদিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে এদিন ২৫টি নমুনা সংগ্রহ করো পাঁচজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।
সিভিল সার্জন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তদের মধ্যে ৩৭৩ জন নগরের ও ৪১ জন উপজেলার বাসিন্দা।
এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন মোট ৪০০ জন, এর মধ্যে ২৯৪ জন নগরের ও ১০৬ জন উপজেলার।
এছাড়া মোট আক্রান্তদের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৯৪ জন নগরের ও ৮ হাজার ৫২১ জন উপজেলা পর্যায়ের বাসিন্দা।
হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে হেফাজতে ইসলামের অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন ।
হেফাজত কর্মীরা হাটহাজারী মডেল থানায়, ভূমি অফিসে ও ডাকবাংলোয় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় ভূমি অফিসের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় মাদরাসা ছাত্ররা।
নিহতরা হলেন- হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষার্থী মেরাজুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, জামিল ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
মেগা উদযাপনে যোগ দিতে ঢাকায় নরেন্দ্র মোদি
শুক্রবার জুমার নামাজের পর নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে হাটহাজারী সদরে মাদরাসা ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে সেখান থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জুমার নামাজের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন মাদরাসা ছাত্ররা। এ সময় মাদরাসার মাইক থেকে তাদের মাদরাসায় ফিরে যেতে বলা হলেও তারা মিছিল নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়।
পরে মাদরাসার ছাত্ররা থানার সামনে গিয়ে হঠাৎ থানার দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ মাদরাসা ছাত্রদের ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশ ও মাদরাসা ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এক পর্যায়ে হেফাজত কর্মীরা থানা কম্পাউন্ডে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। একই সময়ে মাদরাসা ছাত্ররা হাটহাজারী ভূমি অফিসে হামলা চালিয়ে ভূমি অফিসের একটা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গের চেষ্টা চালায়। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ হেফাজত কর্মীদের ঠেকাতে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এ সময় পুলিশের গুলিতে নয়জন গুলিবিদ্ধ সহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে চারজনকে চমেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার চারজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত হাটহাজারী থেকে গুলিবিদ্ধ নয়জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন।
সংঘর্ষে হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি- রাঙামাটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ থানায় হামলা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন: মোদির বাংলাদেশ সফরে সাধারণ মানুষ খুশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোদি বিরোধী মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২৫
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজত অনুসারীরা মিছিল করার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে তারা হাটহাজারী থানায় প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সংঘর্ষ চলাকালে রাস্তায় পুলিশ অবস্থান নিলে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে অনুসারীরা অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল ছুঁড়ে।’
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন,‘ থানায় হামলার পর হেফাজতের নেতা-কর্মীরা এখানকার ভূমি অফিসে ঢুকেও ভাঙচুর করেছে। তারা ভূমি অফিসের ফাইলপত্র-আসবাবপত্র সব জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভূমি অফিসের একটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। শুধু ভূমি অফিস নয়, উপজেলার ডাকবাংলোতে ঢুকেও ব্যাপক ভাঙচুর করেছে হেফাজতের কর্মীরা।’
চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে কিশোর খুন, আটক ১
চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার এক্সেস রোডে ছুরিকাঘাতে এক কিশোর নিহত হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৫
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রাবাসে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রামে দেয়াল ধসে ২ শ্রমিক নিহত
চট্টগ্রাম মহানগরীর লাভলেইন এলাকায় নির্মাণাধীন দেয়াল ধসে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।