মৌলিক অধিকার
সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: জাতিসংঘ
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সবার মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতার যেকোনো প্রতিবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে এবং সহিংসতায় যুক্ত অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করেছে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে বিজয়ী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হবার মাত্র ২০ মিনিট আগে যা ঘটল তা অনাকাঙ্ক্ষিত, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই: হিরো আলমের ওপর হামলা প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
তিনি আরও বলেন, ‘যারা মারামারি করল, তারা আর যাই হোক নৌকার শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। নির্বাচনকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
তিনি দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে বনানীতে ভোটকেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় শারীরিকভাবে ‘লাঞ্ছিত’ করা হয়।
বিকালে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ভোটকেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় হিরো আলমের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলা গণতন্ত্রের নামে আ. লীগের তামাশা: ফখরুল
হিরো আলমের ওপর হামলাকারীরা ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চেয়েছিল: আ.লীগ প্রার্থী আরাফাত
সংসদ সদস্যকে নিজ এলাকা ছাড়তে বলা মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ: তথ্যমন্ত্রী
কোনো সংসদ সদস্যকে নিজ নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা তার মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত আমার প্রশ্ন হচ্ছে যিনি ওই এলাকার সংসদ সদস্য, ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা যিনি ওই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ভোটার, তাকে নির্বাচন কমিশন এলাকা ছাড়ার কথা বলতে পারে কি না। এটি কি তার মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ নয়? তাহলে তো ঢাকা শহরে যখন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে তখন ঢাকা থেকে নির্বাচিত সব সংসদ সদস্য, মন্ত্রীদেরকেও ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।’
‘এভাবে তাকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে তার মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে আমি মনে করি’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘তিনি যাতে কোনো নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা বা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ না করেন, সেটির নির্দেশনা অবশ্যই থাকবে, থাকা বাঞ্ছনীয়। এবং সেটি করলে অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হতে পারে, কিন্তু যিনি ওখানে ভোটার ওই এলাকার সংসদ সদস্য তাকে নিজের ভিটে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা কি সমীচীন হয়েছে, সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন?’
মন্ত্রী বলেন, ‘এলাকা ছেড়ে যেতে হবে এটি দুনিয়ার কোথাও নাই। সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না-এটি ভারতে নাই, পাকিস্তানে নাই, ইংল্যান্ডে নাই, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে নাই, অস্ট্রেলিয়া, জাপানে নাই, কোথাও নাই। সেই আইনটাও কিন্তু বৈষম্যমূলক।’
পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই: সিইসি
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে অনেক কাগজে দেখলাম এটি নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এখানে নির্বাচন কমিশন কি ভুল করেছে আগে সেটি আলোচনা হওয়া প্রয়োজন রয়েছে। এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা কখনো কোথাও দেয়া হয়নি। আমার বাড়ি চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় আমি মন্ত্রী এবং আমি চট্টগ্রাম শহরে ছিলাম, কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় আমি অংশগ্রহণ করিনি, বাড়ি থেকে দু’ একবার বের হয়েছি প্রটোকল ছাড়া।’
এর আগে বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান রক্তদান ও জনহিতকর কর্মসূচির জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭২ সালের ১০ জুন দেশে প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক পরে জাতীয় অধ্যাপক প্রয়াত অধ্যাপক ডা. নূরুল ইসলাম নিজে রক্ত দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন।
আমরা শুধুমাত্র অবকাঠামোগত দিক দিয়ে বা বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমেই উন্নত রাষ্ট্র নয়, বাংলাদেশকে আমরা একটি মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র, একটি মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। আর মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানবিকতার বিকাশ প্রয়োজন। যারা মানবিকতা প্রদর্শন করে, মানবিক কাজ করে তাদের প্রশংসা করা উচিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ডা. নিজামউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোটিভেশন এম. রেজাউল হাসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
পড়ুন: আমাদেরও সময় আসবে, ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’: এমপি বাহার প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা
বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যক্তির চলাফেরায় বাধা দেয়া যাবে: আপিল বিভাগ
সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার হিসেবে কোনো ব্যক্তির চলাফেরার যে স্বাধীনতা দেয়া আছে তা একচ্ছত্র নয় (নন-অ্যাবসলুট) বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগ বলেছেন, একজনের দেশত্যাগের অধিকারকে কখনোই একচ্ছত্র অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই অধিকার স্থগিত করা যেতে পারে। ৩৬ অনুচ্ছেদ ব্যক্তির চলাফেরায় বাধা দেয়াকে অনুমতি দেয় তবে তা অবশ্যই আইন অনুযায়ী এবং জনস্বার্থে হতে হবে। তবে, আইনের সমর্থনে আরোপিত বিধি নিষেধ ছাড়া কোন নির্বাহী আদেশে কারও চলাফেরার স্বাধীনতা খর্ব করা অসাংবিধানিক। বুধবার দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুদকের আবেদন নিষ্পত্তির পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এক রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। ১৮ পৃষ্ঠার রায়টি বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে।
আপিল বিভাগ রায়ে বলেন, ৩৬ অনুচ্ছেদে যে স্বাধীনতা দেয়া আছে তার মূল উদ্দেশ্য সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা। তাই ফৌজদারি অপরাধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, পাসপোর্ট জব্দ ও বিদেশ যাত্রা আটকানো যাবে। তারপরও যদি কেউ আইনকে পাশ কাটিয়ে বিদেশ যাত্রার চেষ্টা করে, তাহলে আটকানোর পর, তিন কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। কিন্তু, ফৌজদারি অপরাধে কারও নাম এলেই তার বিদেশযাত্রা রোধ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: সপ্তাহে ৩ দিন চলবে ভার্চুয়াল আপিল বিভাগ
এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে মর্মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেন আপিল বিভাগ। দেশ ত্যাগে দুদকের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি রিটে হাইকোর্ট তিনটি রায় ও দুটি আদেশ দেন। ওইসব আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এ পাঁচ রিটের মধ্যে একটি হলো, নরসিংদীর আতাউর রহমানের মামলা। বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নরসিংদীর আতাউর রহমান ওরফে সুইডেন আতাউর রহমানের করা এক রিট আবেদনে জারি করা রুলের ওপর ১৬ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট।
দুদকের দেয়া নিষেধাজ্ঞার চিঠি অবৈধ ঘোষণা করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ অভিমতে বলেন, সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিষয়ে দুদক নয়, সিদ্ধান্ত নেবেন বিশেষ জজ আদালত। হাইকোর্ট রায়ে বলেছিলেন, বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিষয়ে দুদকের সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি নেই। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধিমালা করা প্রয়োজন। তাই আশা করছি, এ বিষয়ে দুদক বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আইন বা বিধি করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
আরও পড়ুন: যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর সাজা: আপিল বিভাগ
আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতির শপথ গ্রহণ
মৌলিক অধিকার বঞ্চিত সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যে অসন্তোষ
সরকারের অবহেলার কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা মৌলিক অধিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ দ্বীপটিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের।