কৃষক
মন্দির তৈরির কথা বলে কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর, মারধরে আহত ৮
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হুদা শ্রীপুর গ্রামে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মন্দির নির্মাণের কথা বলে বাটুল বিশ্বাস নামে এক কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর, জবর দখল ও ৪ নারীসহ অন্তত ৮ জনকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সময় হামলাকারীরা ওই কৃষকের জমিতে থাকা টিনশেড বাড়িটির দরজা-জানালা ভেঙে বাইরে ফেলে দেয়। এদিকে ভাঙচুরে বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ৪ নারীসহ অন্তত ৮ জনকে লাঠি, হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে আহত করে।
আরও পড়ুন: নাটোরে আ’লীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৭, যুবলীগ নেতার বাড়ি ভাঙচুর
আহত ৮ জন হলেন- বাটুল বিশ্বাসের স্ত্রী শেফালী বিশ্বাস ও তার ভাইয়ের স্ত্রী প্রেমা রানী বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাসের স্ত্রী রূপা সেন, প্রহ্লাদ বিশ্বাসের স্ত্রী শিখা বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, মহিদ বিশ্বাস ও শান্তনু বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী কৃষক বাটুল বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস জানান, দুই মাস আগে তার বাবা প্রতিবেশী কাকাতো ভাই দিপংকর বিশ্বাসের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ১৩ শতক জমি কিনে নেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে একই গ্রামের প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, বিধান বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, সুব্রত বিশ্বাসসহ একটি গ্রুপ শাবল, কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের আধা পাকা ঘরে হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, এ সময় তারা এই ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা ৯৯৯ এ কল দিলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে ওই বাড়িটির দরজা-জানালা ও গ্রিল ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
এর আগে ওই বাড়ির সামনের জমিতে একটি পাটকাঠির বেড়া ও উপরে টিন দিয়ে বাঁশের তৈরি একটি মন্দির নির্মাণ করে গ্রামবাসী।
তিনি জানান, গ্রামে মন্দির হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের জমি দখল করে কেন মন্দির তৈরি করতে হবে? মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমরা তিল তিল করে অর্থ সংগ্রহ করে হালের গরু বিক্রি করে জমিটি কিনেছি। এখন গ্রামের কিছু ক্ষমতাশালী মানুষ জোর করে আমাদের জমি দখল করে সেখানে মন্দির ও ক্লাবঘর তৈরি করতে চায়। আমরা বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের বাড়ির মা-বোনসহ অন্তত ৮ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
আরও পড়ুন: বসতবাড়ি ভাঙচুর মামলায় বিআরডিবির চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
এ প্রসঙ্গে ওই জমিতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা এই জমিতে মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে ৭ লাখ টাকা এবং মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর ও স্থানীয় নাকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমুয়ুনুর রশিদ মুহিতের অনুদান মিলিয়ে মোট ৯ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি।
মাগুরায় আখের বাম্পার ফলনে চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা
মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলায় এ বছর গ্যান্ডারি জাতের আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এবং দাম ভালো পাওয়ায় আখ চাষে ঝুঁকছেন অনেকেই।
শ্রীপুর উপজেলার গোয়ালদাহ, ঘসিয়াল, কাদিরপাড়া, আমলসার, ছাবিনগর, বিলনাথুর, বিলসোনাই, চরপাড়া, কচুবাড়িয়া, সোনাতুন্দীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আখ চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এই ফসল আবাদ করলে ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে বাজারজাত করা সম্ভব। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আখের বাম্পার ফলন হয়েছে। আখ খেতে সাথী ফসল চাষ করা যায়।
আরও জানানো হয়, চলতি বছর উপজেলায় ৬৩ হেক্টর জমিতে অমৃত সাগর জাতের আখ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১৮ হেক্টর বেশি৷ ফলন হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৬০ থেকে ৬৫ মেট্রিক টন। এঁটেল, দো-আঁশ কিংবা বেলে দো-আঁশ প্রকৃতির মাটি আখ চাষের জন্য উপযোগী। চরাঞ্চলের মাটি আখ চাষের জন্য ভালো।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বোরোর বাম্পার ফলন, দামে খুশি কৃষক
নদ-নদী দ্বারা বেষ্টিত থাকায় যে কোনো ফসল চাষাবাদের জন্য এখানকার মাটি বেশ উপযোগী। এ উপজেলার অন্যান্য অঞ্চলেও আখ চাষ সম্ভব। কিন্তু প্রধান অন্তরায় চাষিদের সচেতনতার অভাব।
উপজেলার কচুবাড়িয়া গ্রামের চাষি রওশন মোল্লা বলেন, আখ আবাদে একটু পরিচর্যা করলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। আখ চাষে অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালমা জাহান নিপা বলেন, ‘আখ চাষ খুব লাভজনক। লাল পঁচা রোগ ছাড়া এ ফসলে তেমন জটিল রোগ নেই। বর্তমানে আমরা উপজেলায় চিবিয়ে খাওয়ার উপযোগী জাতের আখ চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আখ চাষে সাথী ফসল হিসেবে সরিষা, মুলা ও মসুর চাষ করা যায়। এছাড়া কৃষকদের ফিলিপাইনের কালো জাতের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করছি।’
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বাম্পার ফলন
সিরাজগঞ্জে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ, চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা
মাগুরা জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পাটের দাম কমে গেছে। পাটচাষিরা বলছেন, সিন্ডিকেটদের প্রভাবে কমে গেছে পাটের দাম।
ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকে আগামী বছর পাট না চাষ করার সিদ্ধান্তের কথা জানাচ্ছেন।
প্রতি মণ পাট ১ হাজার ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাতে করে খরচ উঠছে না চাষিদের।
আরও পড়ুন: পানির জন্য হাহাকার, গাইবান্ধায় পাটচাষিরা বিপাকে
স্থানীয় পাট ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহাজনরা কমমূল্য দিচ্ছে, তাই আমরাও কমমূল্যে ক্রয় করছি। এদিকে পাটচাষিরা বলছেন, সিন্ডিকেটদের প্রভাবে কমে গেছে পাটের দাম।
মাগুরা জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শালিখা উপজেলা সদর আড়পাড়ায় প্রতি শনি ও বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাটচাষিরা পাট বিক্রি করতে আসেন। তবে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে অনেকেই পাট ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।
অনেকে আবার অর্থের প্রয়োজনে বাধ্যহয়েই স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে উঠাচ্ছেন পাটচাষের খরচ। তবে প্রত্যাশিত মূল্য না পাওয়ায় উৎসাহ হারাচ্ছেন তারা।
আড়পাডা ইউনিয়নের দিঘী গ্রামের পাটচাষি অছিউদ্দিন মোল্যা বলেন, এ বছর দুই একর জমিতে পাট বুনেছি। পাট বুনা থেকে শুরু করে ধোয়া ও শুকানো পর্যন্ত যে খরচ হয়েছে, মণ প্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করলে সেই খরচ উঠবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে পাটের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা হতাশ
বরইচারা গ্রামের পাটচাষি উৎপল বিশ্বাস বলেন, এভাবে পাটের দাম কমে যাবে আগে জানলে পাট বুনতাম না। প্রতি হাটে পাটের দাম মণ প্রতি দুইশ’ টাকা কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন পাটচাষিরা।
পাটের দাম কম থাকায় হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পাট যেন হয়ে উঠেছে কৃষকের গলার কাঁটা। না পারছেন ফেলতে, না পারছেন ভালো দামে বিক্রি করতে।
ফলে অনেকেই আগামী বছর পাটচাষ থেকে বিরত থাকবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
হবিগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
হবিগঞ্জে বজ্রপাতে বাচ্চু মিয়া নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে প্রাণ গেলো কৃষকের
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির মধ্যেই কৃষক বাচ্চু মিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠ থেকে গরু আনতে যান। সেখানে বজ্রপাত হলে তিনি আহত হন।
তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসে।
এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে ৯ শিক্ষার্থী আহত
যশোরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল কৃষকের
দিনাজপুরে সাপের কামড়ে ২ কৃষকের মৃত্যু
দিনাজপুরের বিরল ও বীরগঞ্জ উপজেলায় সাপের কামড়ে ২ কৃষক মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার ধামইর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এবং ভোগনগর ইউনিয়নের চাউলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামে ঘটনা দুইটি ঘটে।
আরও পড়ুন: সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীসহ নিহত ২, আহত ১
কৃষক রণজিত চন্দ্র শীল (৩৮) গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত কালিন্দ্র চন্দ্র শীলের ছেলে এবং কৃষক আব্দুর রউফ (৫৫) চাউলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত কালু মোহাম্মদের ছেলে।
ধামইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দীন জানান, রণজিত চন্দ্র শীল নামে একজন কৃষক জমিতে আগাছা নিড়ানোর সময় সাপে কাটে। পরে তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এ ছাড়াও বীরগঞ্জ উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের চাউলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামে আব্দুর রউফ নামে আরেকজন কৃষক গবাদি পশুকে খাওয়ানোর জন্য খড়ের পালা থেকে খড় নেওয়ার সময় সাপে কাটে।
পরে তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথিমধ্যে মারা গেছে সে।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈলে সাপের কামড়ে কৃষকের মৃত্যু
সাপের কামড়ের চিকিৎসা বিষয়ে ডব্লিউএইচও-এর প্রথম নির্দেশিকা প্রকাশ
নাটোরে খেলা দেখার সময় ফুটবলের আঘাতে প্রাণ গেল কৃষকের
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় খেলা দেখার সময় বুকে ফুটবল লেগে ৬০ বছর বয়সী শুকুর আলী নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার কলম ইউনিয়নের পুন্ডরী দাখিল মাদরাসা মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নৌকা ঘাটের ইজারা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকালে সিংড়া উপজেলার পুন্ডরী দাখিল মাদরাসা মাঠে স্থানীয় যুবকদের মধ্যে ফুটবল খেলা চলছিল। মাঠের গোল পোস্টের পেছনে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন ৬০ বছর বয়সী স্থানীয় কৃষক শুকুর আলী।
গোলপোস্ট ভেদ করে প্রচণ্ড গতিতে বল তার বুকে লাগে। এতে সেখানেই লুটিয়ে পড়েন শুকুর আলী। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে বালুর স্তূপ ধসে নিহত ৩
কুমিল্লায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ৩
কুড়িগ্রামে পাটের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা হতাশ
কুড়িগ্রামে এ বছর পাটের ভালো ফলন হলেও দাম কমে যাওয়ায় হতাশাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। এমনি পরিস্থিতিতে আগামী মৌসুম থেকে পাট চাষ ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবছেন অনেকে।
চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম ভালো থাকলেও তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাট চাষীরা যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন তা এই অঞ্চলে পাট চাষের স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কারণ অনেকে এই গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল চাষ অব্যাহত রাখার অর্থনৈতিক কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাটে বসেছে পাটের বাজার। সপ্তাহে দু’দিন বসে এ হাট। দূর দূরান্ত থেকে নৌকা, সাইকেল, ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট বিক্রি করতে এসেছে চাষিরা। তবে হাটে এসে পাটের দাম শুনে মন খারাপ সবারই। গত হাটের চেয়ে পাটের দাম প্রতি মণে কমেছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। পরিবহন খরচ আর আবাদের খরচ মিলিয়ে তাদের লাভের অঙ্ক প্রায় শূন্যের কোটায়।
আরও পড়ুন: পাটের দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের মো. নুর ইসলাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে পাট আবাদ করে সার, পানি, কীটনাশক, আঁশ ছড়ানো মজুরি খরচসহ ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিঘায় পাট পাই ৮ থেকে ১০ মন। মোট খরচের হিসাবে আমাদের কোনো লাভই থাকে না।’
আরেক কৃষক মো. হাসানুর বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে পাটের দাম ভালো পাচ্ছি না। বৃষ্টি নাই, খড়া মৌসুমে পাট গাছের জমিতে বাড়তি পানি দিতে হয়। তাই খরচও বেশি হচ্ছে। সে তুলনায় তেমন লাভ নেই।’
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ভগবতীপুরের পাট ব্যবসায়ী আসলাম মিয়া বলেন, ‘আমি গ্রাম ঘুরে ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা দিয়ে পাটগুলো কিনছিলাম। আজকে সেই কেনা দামেই বিক্রি করতে হলো। পরিবহন খরচ, কুলি খরচ, হাটের খাজনা হিসাব করলে লাভ থাকছে না। গত হাটে এই পাটের দাম ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা ছিল। দিন যতই যাচ্ছে পাটের দাম ততই কমছে।’
কুড়িগ্রাম জেলা মূখ্য পাট পরিদর্শকের কার্যালয়ের পরিদর্শক এটিএম খায়রুল হক বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ আগে পাটের দাম ভালো ছিল। এখন পাটের দাম কমছে। কেননা অধিকাংশ ব্যবসায়ী কারখানায় পাট সরবরাহ করে পুরো পাওনা টাকা পায়নি। তাই ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা নাই। ব্যবসায়ীরাও পাট কেনায় আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পাটের দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে প্রাণ গেলো কৃষকের
ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নে বজ্রপাতে ইছাহাক খলিফা (৬০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে ধানের জমিতে বীজ রোপণ করতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান তিনি।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় পৃথক বজ্রপাতে প্রাণ গেল ২ জনের
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পোনাবালিয়া ইউনিয়নে ধানের বীজ রোপণ করছিলেন ইসাহাক। বিকালে বজ্রপাতের আঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন বলেন, ইছাহাক খলিফা বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এলাকার লোকজন ও আত্মীয় স্বজনরা তাকে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে ৯ শিক্ষার্থী আহত
যশোরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল কৃষকের
কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্প, কৃষকের মনে স্বস্তি
কুড়িগ্রামের নদীবিধৌত চরাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা চালু করে কৃষকের ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ)।
সরকারি অর্থায়ণে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পের সেচে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে কৃষকের মনে স্বস্তি ফিরেছে।
আরও পড়ুন: যশোরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে সরকারি সোলার!
এতদিন এ অঞ্চলের বন্যা, খরা ও প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম করে বাঁচা কৃষকেরা শ্যালো মেশিনের সেচ পাম্পের উপর নির্ভরশীল ছিল।
এখন আর শ্যালো মেশিনের জ্বালানি ডিজেলের দামবৃদ্ধি এবং যান্ত্রিক ভোগান্তি না থাকায় কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি চরাঞ্চলের কৃষকরা।
জানা গেছে, জেলার চিলমারীর সদর ইউনিয়নের বজরাদিয়ার খাতা গ্রামে কৃষকের খেতে পানি দিতে ছুটে বেড়াচ্ছে ভ্রাম্যমাণ সোলার সেচ পাম্প।
ওই এলাকার প্রায় ১ হাজার ৫০০ কৃষকের ধান ও ফসলের খেতে সেচের জন্য নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ সোলার পাম্পটি।
লোহার এঙ্গেলের উপর বিশেষ কায়দায় স্থাপন করা হয়েছে আটটি সোলার প্যানেল। ব্যাটারিবিহীন একটি কনভার্টার সাহায্যে বৈদ্যুতিক মটর সেট করে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে নদী-নালা, খাল-বিল থেকে সহজে পানি পাচ্ছেন কৃষকেরা।
পরিবহনের ঝামেলা এড়াতে চাকা লাগিয়ে বানানো এই ভ্রাম্যমাণ সোলার প্যানেলের সেচ পাম্প যাচ্ছে কৃষকের খেতের কাছে। খুব সহজে হাতের কাছে এমন সেচ ব্যবস্থা পেয়ে আশার আলো বুনছেন কৃষকেরা।
কথা হয় বজরাদিয়ার খাতা গ্রামের মো. হারুন রশীদ নামের এক কৃষকের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ২০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ বিল বাঁচানো সম্ভব: নসরুল হামিদ
তিনি বলেন, সোলার সেচ পাম্পের সাহায্যে কম খরচে ফসল ঘরে তুলতে পেরে আমরা অনেক খুশি। কেননা শ্যালো ইঞ্জিন সেচ পাম্পে এক বিঘা ধানের জমিতে প্রায় ৮-৯ হাজার টাকা খরচ হতো। সেখানে ৫ হাজার ৫০০ টাকায় আমরা ফসলে পানির কাজ শেষ করতে পারছি। আবাদে পানি নিয়ে আমাদের আর কোনো চিন্তা নাই।
আরেক কৃষক মো. আবু বক্কর বলেন, খেতে পানি নিয়ে আমাদের এলাকার মানুষের আর দৌড়াদৌড়ি নাই। ঘুম থেকে উঠে কে আগে জমিতে পানি নেবে সেই দিন শেষ। আমরা সোলার পাম্পের সঙ্গে চুক্তি করি, ওরা এসে আমাদের ধান বা অন্যান্য ফসলের খেতে পানির ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এমন নিরাপদ নির্ভেজাল সেচ ব্যবস্থা পেয়ে আমরা খুবই খুশি।
কুড়িগ্রামে নদীতে ডুবে নিখোঁজ কৃষকের লাশ উদ্ধার
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নে নদীতে নিখোঁজ কৃষকের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সকালে ওই ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকা থেকে প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর লাশটি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর অটোচালকের লাশ উদ্ধার
নিহত কৃষকের নাম আব্দুস শফি (৭০)। তিনি ফকিরের টাড়ী গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানায়, ফকিরের টাড়ী গ্রামের আব্দুস শাফি সারাদিন আমন ধান খেতে নিড়ানির কাজ শেষে ঘাসের বোঝা নিয়ে ফকিরের হাট বাজারের দক্ষিণের ব্রিজের পাশ দিয়ে সঁতার খাওয়া নদী সাঁতরে পার হওয়ার চেষ্টা করেন।
এসময় তিনি পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন। কিছুক্ষণ পর ওই কৃষক ভেসে না উঠায় এলাকায় হই-চই পড়ে যায়। প্রথমে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন।
পরে সংবাদ পেয়ে নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করে।
নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. ইমন মিয়া বলেন, নিখোঁজ কৃষকের লাশ সকালে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। খোঁজ খবর নিয়ে পরে জানাতে পারব।’
আরও পড়ুন: ঢাবি হল থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের হোটেল থেকে আ.লীগ নেতার লাশ উদ্ধার