কৃষক
ঝিনাইদহে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নায়েব আলী (৬২) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। নিহত নায়েব আলী উপজেলার মালিয়াট গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টার দিকে নায়েব আলী বাড়ির পাশে বসে ছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের ইউনুছ আলী ও তার ছেলে আল-আমিন এসে তার ওপর হামলা চালায়।
তারা বাশের লাঠি দিয়ে তাকে উপর্যপুরি পিটিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। পরে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, নায়েব আলীর বোনের জমি কিনেছে প্রতিবেশি ইউনুছ আলী। ওই জমি দখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকালে এ বিরোধের জেরে নায়েব আলীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার খালিদ হাসান বলেন, “নায়েব আলী আগেই মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে লাঠির আঘাত ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন।”
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।”
তিনি আরও জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আসামিদের আটক করার চেষ্টা চলছে।
১৭ দিন আগে
নড়াইলে কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
নড়াইলের লোহাগড়ায় খাজা মোল্যা (৪৫) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৪ মে) উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত খাজা মোল্যা ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গা পার ঈশাখালি গ্রামের লবা মোল্যার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকালে কৃষক খাজা মোল্যা নিজ বাড়ি থেকে চা পানের উদ্দেশে কুমারডাঙ্গা বাজারে যান। সেখানে দুর্বৃত্তরা ধারাল অস্ত্রসহ খাজা মোল্যাকে ঘিরে ফেলে।
আরও পড়ুন: দুর্বৃত্তের হাতে ঢাবি শিক্ষার্থী খুন: ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের প্রতিবাদ মিছিলে বহিরাগত!
পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে জখম করে। উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।’
৩১ দিন আগে
ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
শহুরে মানুষের খাদ্যের জোগান ও দাম নাগালে রাখতে কৃষকের দিকটা না দেখেই আমদানির মাধ্যমে তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় জোর দিতে গিয়ে কৃষকের দিকটা সেভাবে দেখা হয় না।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের খাদ্যে সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে হবে, যাতে ভোক্তা এবং কৃষক দুই পক্ষই উপকৃত হন। ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে।’
সোমবার (৫ মে) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা সম্মেলন ২০২৫’ এর ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকের ন্যায্যতা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা বলেন, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের কথা বলা হচ্ছে। সেটা করতে গিয়ে কোনো ক্ষতি করছি কিনা সেটিও দেখতে হবে। কারণ এর কারণে গবাদিপশুর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। এখানে ভোক্তার দিকটাও দেখতে হবে, যেন তারা নিরাপদ খাদ্য পায়। আবার কৃষকের দিকটাও দেখতে হবে, যেন তারা উৎপাদন করে লাভবান হন।
তিনি বলেন, এক সময় কৃষির অধীনেই মৎস ও প্রাণিসম্পদ ছিল। এখন এগুলো আলাদা হয়েছে। পণ্যভিত্তিক কৃষকও আলাদা হয়েছে। মৎসের ক্ষেত্রে আমরা যদি দেখি, উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ আহরণে বাংলাদেশ ভারতের পরই দ্বিতীয় স্থানে আছে। অথচ হাওর, নদী-নালা ধ্বংস করছি আমরা। জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে চাচ্ছি যখন, তখন আবার দেখা যাচ্ছে কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশকে মাছ মারা যাচ্ছে।
আরো পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে কৃষকের আত্মহত্যা
হাওরে কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, হাওর মাছের অনেক বড় একটি উৎস। আবার অনেক সময় আগাছা পরিষ্কার না করে কীটনাশক দিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। এতে করে গরু ছাগলসহ অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতি হচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহারে একটা নীতি গ্রহণ করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের এখানে মাংস উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। এখন আমাদের লাখ লাখ খামারি আছে। আমাদের দেশে এক কোটি ২৪ লাখের বেশি গরু ছাগল মজুদ আছে। ২২ লাখের মতো চাহিদার চেয়ে বেশি আছে।
বণিক বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। এছাড়া, প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম, টি.কে গ্রুপের গ্রুপ ডিরেক্টর মোহাম্মদ মুস্তফা হায়দার, এসিআই এগ্রি বিজনেস ডিভিশনের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী, ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান, সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
৪০ দিন আগে
মাগুরায় নিম্নমানের সরকারি পাটবীজ বিতরণ, অনাগ্রহ কৃষকদের
পাটের জীবনকাল বেশি, লম্বা, পেঁচিয়ে যাওয়া ও ফলন কম হওয়ার কারণে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার পাট চাষিরা সরকারি বিএডিসির দেওয়া পাট বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। জমিতে চাষ করছেন না সরকারের দেওয়া বিএডিসির বীজ। বিকল্প হিসেবে চাষিরা ঝুঁকে পড়েছেন এলসির মাধ্যমে আসা ভারতীয় সেবায়ন জে আর ও ৫২৪, চক্র মার্কা জে আর ও ৫২৪, ও শঙ্খ মার্কা পাটের বীজের দিকে।
এ মৌসুমে উপজেলায সর্বমোট ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।
উপজেলার পাট চাষিরা সরকারিভাবে উপজেলা থেকে দুইটি মাধ্যমে পাটের বীজ ও রাসায়নিক সার পেয়ে থাকেন। প্রথমত উপজেলা কৃষি অফিস, দ্বিতীয় উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অধীনে পাট অফিস থেকে।
তথ্যমতে, এই মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এক কেজির ১ হাজার ৫৩০ প্যাকেট ও পাট অফিস থেকে ২ হাজার ৪০০ প্যাকেট বীজ চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা
এ ব্যাপারে উপজেলার কমলাপুর গ্রামের কৃষক জামাল মোল্লা ও ঘাসিয়ারা গ্রামের বক্কার মোল্লার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সরকারি বিএডিসির পাট বীজ জমিতে বপন করলে পাট দ্রুত বেড়ে অনেক লম্বা হয়ে যায় এবং লাল হয়ে যায়, যা অত্যন্ত নরম এবং পাটের সঙ্গে পাট পেঁচিয়ে যায়। আমরা সাধারণত যে সময় পাট কাটি সে সময় পাট কাটলে এর ফলন কম হয়। পাট কাটতে অনেক ঝামেলা হয়, যেকারণে আমরা জমিতে এ পাট বীজ বপণ করি না। যারা উপজেলা থেকে এ বীজ আনে তারা শুধুমাত্র রাসায়নিক সার পাওয়ার জন্য।
এ ব্যাপারে উপজেলার একজন সচেতন কৃষক গোলাম আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিবছর বিএডিসির কৃষি মন্ত্রণালয় ও পাট অধিদপ্তর থেকে চাষিদের জন্য কোটি কোটি টাকার যে পাটবীজ বিতরণ করা হয়, তা চাষিদের কোনো কাজেই আসছে না। ব্যাপারটি ভেবে দেখার সময় এসেছে।
এ ব্যাপারে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন খান জানান, সরকারি বিএডিসি থেকে যে পাট দেওয়া হয় সেটার প্রতি কৃষকদের অনীহা রয়েছে। এ মৌসুমে সরকারি বীজ নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হলেও কিছু কৃষক এসেছে। বাকি বীজের প্যাকেট গোডাউনে পড়ে আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা জানান, বিএডিসির দেওয়া এ পাট বীজের জীবনকাল বেশি। অন্যান্য পাটের জীবনকাল সাধারণত ৯০ থেকে ৯৫ দিন হয়ে থাকে। আমরা বিএডিসি থেকে সরকারি যে বীজ দিয়ে থাকি সেটি জীবনকাল ১২০ থেকে ১২৫ দিন হয়ে থাকে। যে কারণে হয়তোবা চাষিরা এ বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
উপজেলা পাট কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন জানান, এ বীজের প্রতি চাষিদের অনীহার কারণ যে এটি বপণ করলে অন্যান্য পাটের তুলনায় আশ শক্ত হতে বেশি দিন সময় লাগে। চাষিরা তাদের জমিতে অন্য ফসল ফলানোর জন্য তাড়াতাড়ি পাট কেটে ফেলে। যে কারণে এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যদি সময় মতো পাট কাটা যায়, তাহলে অন্য পাটের তুলনায় এর ফলন বেশি হবে। এ ব্যাপারে চাষিদের নিয়ে আমারা কর্মশালা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাষিদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেগুনে রঙের ধান চাষে সাড়া ফেলেন কৃষক রবিউল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি বিএডিসি থেকে যে পাটবীজ পাট চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়—তা চাষিরা বপণ করে না। ঘরেই রেখে দেন। আর প্রণোদনা হিসেবে যে সার পাওয়া যায়—তা অন্য জমিতে ব্যবহার করা হয়।
৪৭ দিন আগে
ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা
সুনামগঞ্জের হাওরে পুরোদমে চলছে ধান মাড়াইয়ের কাজ। ধান কাটা আর কেনাবেচা নিয়েও আলোচনা মুখে মুখে। তবে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা। তারা ধারণা করছেন, সরকার প্রতিমণ ধানের মূল্য ১ হাজার ৪৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও, হয়তো সেটি পাবেন না।
রাজনীতিবিদ ও কৃষক সংগঠকদের পরামর্শ সরকার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এবং বেশি সংখ্যক কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনতে পারলেই কেবল ধানের নির্ধারিত মূল্য পাবেন কৃষকরা। অর্থাৎ মিলার ও ফড়িয়ারা তখন বাধ্য হবে উপযুক্ত মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে।
বাজারে ধানের মূল্য কি পরিমাণ বাড়বে বা কমবে তা অনেকটাই নির্ভর করছে রবিবার(২০ এপ্রিল) জেলা ধান ক্রয় কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্তের উপরই।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে এখন জোরেশোরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত হাওর ও হাওরেরে বাইরের খেত মিলিয়ে ২৪ শতাংশ ধান কাটা ও মাড়াই করা হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পাশাপশি খরচের জন্য ধান বিক্রয়ও করছেন কৃষকরা। এক্ষেত্রে বিপদগ্রস্ত কৃষকরা মিলার ও ফড়িয়াদের কাছে কম দামে অগ্রিম বিক্রয় করছেন ধান। আবার কেউ কেউ অপেক্ষা করছেন, সরকার ধান কেনা শুরু করলে ধানের দাম কিছুটা বাড়তে পারে, তখনই ধান বিক্রি করবেন তারা।
বিশ্বম্ভরপুরের করচার হাওরপাড়ের মুক্তিখলার এক কৃষক জানান, ধান কাটানোসহ অন্যান্য খরচ চালানোর জন্য ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম এনেছি। তাদের কথা দিয়েছি শুকনো ধান দেব প্রতিমণ ১০০০ টাকা দরে।
আরও পড়ুন: কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
একই এলাকার আরেক কৃষক মহিবুর রহমান বলেন, সাত কেয়ার (তিন কেয়ারে এক এক একর)জমিতে ধানচাষ করেছেন তিনি। এরমধ্যে চার কেয়ার বর্গা (আধা আধি দেবার চুক্তিতে) করেছেন। চার কেয়ার শ্রমিক দিয়ে কেটেছেন, সাত ভাগে একভাগ দেবার চুক্তিতে। ধান পেয়েছেন প্রতি কেয়ারে ২২ মণ। সব মিলিয়ে ১৫০ মণের মতো ধান পাবেন তিনি। ১৫ থেকে ২০ মণ ধান বিক্রয় করবেন। সরকার ধান কেনা শুরু করলে গোডাউনে এক টন দেবার চেষ্টা করবেন। না হলে মহাজনের আড়তে নিয়ে যাবেন ১৫ থেকে ২০ মণ ধান।
জামালগঞ্জের বেহেলী ইউনিয়নের রহিমাপুরের কৃষক মুকুল রায় বলেন, ব্যাপারী (ধান কাটার শ্রমিক) মিলাইতে পারিনি। কাল-পরশু কাটানোর চেষ্টা করবো। ভরতপুর থেকে শ্রমিক আনার চেষ্টা করছি। তারা বলেছে কেয়ারে ৩০০ টাকা নগদ এবং সাত ভাগের এক ভাগ দিতে। হাওরে হারভেস্টার মেশিন (ধান কাটার যন্ত্র) নামে না। এজন্য বিপদে পড়েছি। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর শুকিয়ে, আমরা দুই তিন ভাই মিলে দুই তিন টন ধান বিক্রি করবো। সরকারি গুদামে দিতে পারলে ভালো হত। এর আগে কোনো সময়ই দিতে পারিনি।
তাহিরপুরের বড়দলের সামায়ুন আহমদ বলেন, বিগত সময়ে ৫০ থেকে ৬০ জনের কৃষি কার্ড একজন নিয়ে গেছে। এই টাউটরাই ধান দিয়েছে। খাদ্য গোদামে ধান দিতে গেলেও তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে আমাদের বিদায় করেছে। এবার যদি সুযোগ পাই খাদ্য গোদামে ধান দেবার চেষ্টা করবো।
সামায়ুন জানান, বারো কেয়ার (এক হাল) জমি করেছেন। ছয় কেয়ার জমির ধান কেটেছেন, বাকী আছে ছয় কেয়ার। সব মিলিয়ে ২৫০ মণ ধান পাবেন।
৫৪ দিন আগে
ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক তার গলায় জড়িয়ে কৃষকের মৃত্যু
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ঘাস কাটতে গিয়ে ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক লাইনের তারে গলা আটকে গিয়ে আসাদুল ইসলাম (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের খর্পদোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আসাদুল উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকার মৃত সামাদ আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, আসাদুল বাড়ির অদূরে ভারতীয় সীমান্তঘেষা খর্পদোলায় ঘাস কাটতে যান। সেখানে পানি সেচের জন্য বৈদ্যুতিক মোটরের সংযোগের লাইনের বাঁশের খুটি ভেঙে তার ঝুলে ছিল। একপর্যায়ে ওই ঝুলে থাকা তারে তার গলা জড়িয়ে যায়, আর তিনি সেখানেই পড়ে থাকেন। পরে দুপুরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মৃত অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ১৬ বছর পর ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোনাব্বেরুল হক মোনা বলেন, ‘ঘাস কাটতে গিয়ে ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক লাইনের তারে গলা আটকে আসাদুলের মৃত্যু হয়।’
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন-নবী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
৬২ দিন আগে
ভুট্টাখেতে মিলল কৃষকের লাশ
রাজশাহীর বাঘায় ভুট্টাখেত থেকে শফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) চর কালিদাশখালীর আমবাগান এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শফিকুল ইসলাম চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ফজল শেখের ছেলে। শফিকুলের ছোট দুইটি সন্তান রয়েছে। এক ছেলে (৪) ও এক কন্যাসন্তান (১)।
স্থানীয়রা জানান, বাড়ির পাশে গবাদিপশুর জন্য ঘাস কাটতে যান শফিকুল। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। পরে হাবলু নামের এক মাঠ পাহারাদার রক্তাক্ত অবস্থায় শফিকুলকে পড়ে থাকতে দেখে তার ভাগনে আবদুল হালিমকে খবর দিলে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় নিজ বাড়ি থেকে ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার কারণ উদঘাটন ও অপরাধী শনাক্তে পুলিশ কাজ করছে।’ ‘লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে’ বলেন তিনি।
৬৫ দিন আগে
পুকুরে যেতে কৃষকের সর্বনাশ করে রাস্তা বানালেন মেম্বার
নিজের পুকুরে যেতে কৃষকের সর্বনাশ করে রাস্তা বানানোর অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এতে ৪০ বিঘা জমির ক্ষতি হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে।
এই ঘটনা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেনের নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
তারা জানান, কৃষকের মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে সবুজ ধানের গাছ। আর মাত্র ১৫ থেকে ২০দিন পর জমি থেকে কাটা হবে ইরি ধান। তবে এরই মধ্যে ঘটল বিপত্তি। সেই ধান গাছ নষ্ট করে হয়েছে রাস্তা।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করা বাংলাদেশিদের ফেরাতে চুক্তি
তারা আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পে কৃষকের লাগানো জমিতে লাগানো ধান গাছ ধ্বংস করে নিজ পুকুরে যাওয়ার রাস্তা বানিয়েছেন ইউপি মেম্বার। এতে করে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অথচ কাবিখা প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী ব্যক্তি মালিকানাধীন ও বিরোধপূর্ণ কোনো জমিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না বলেও জানান ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাটপাড়া বরাক বিলের মাঝ দিয়ে ১০ ফুট প্রশস্ত নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এ সড়কের শেষ প্রান্তে কোনো বাড়িঘর নেই। রয়েছে কয়েকটি পুকুর। সেই পুকুরের মালিক ইউপি সদস্য ইকবাল হোছাইন ও তার পরিবারের সদস্যরা।
নতুন সড়কটি জমিতে লাগানো ধানের গাছ ও জমি ধ্বংস করে বানানো হয়েছে, ফলে সড়কের দুপাশ গভীর হয়ে নালায় পরিণত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাবিখা প্রকল্পের টাকায় অনিয়ম করে ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন এই প্রকল্প করেছেন। শুধু মাত্র ইউপি সদস্যের কথায় কোনো প্রকার পরিদর্শন ও কৃষকদের মতামত না নিয়ে কৃষি জমির ওপর দিয়েই এই প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
কাবিখা প্রকল্পের নিয়ম গাইডলাইনে বলা আছে— ব্যক্তি মালিকানাধীন অথবা বিরোধপূর্ণ জমিতে এই প্রকল্প দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি শ্রমিক দিয়ে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির অংশ হলেও এই প্রকল্প ভেকু মেশিন দিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এই রাস্তা বানাতে বেশি জমি পড়েনি। আর ভেকু দিয়ে কাটতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস বলেছে, তাই কেটেছি। এই বিষয়ে ইউএনও সাহেব ডেকেছিলেন, তিনি পরিদর্শনে আসবেন। এখন সবাই আপত্তি করায় কাজ বন্ধ রেখেছি।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, ‘ওই গ্রামের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন, ইকবাল হোসেন নামে একজন মেম্বার তার পুকুরে যেতে একটা রাস্তা নির্মাণ করেছেন। এতে কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে রাস্তা বা ঘরবাড়ি করতে পারে না, এর জন্যে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে অনুমতি নিতে হয়। ঘটনাটি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।’
আরও পড়ুন: সিলেটে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
এই বিষয়ে জানতে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে একাধিক কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূইয়া বলেন, ‘একটি ফসলি জমির ওপর রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ এসেছে। এই বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। উন্নয়ন যেমন দরকার আছে, তেমন কৃষি জমি সংরক্ষণে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব। দেখা হবে— রাস্তাটি জনগণের উপকারের কিনা ও কৃষি জমির কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা।’
৮২ দিন আগে
মুন্সীগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলনেও কপালে চিন্তার ভাঁজ কৃষকদের
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে আলু তোলা শুরু হয়েছে। এ বছর আলুর বাম্পার ফলনের পরও হাসি নেই কৃষকের মুখে। আলুর দাম কম থাকায় নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন এই এলাকার কৃষকরা।
তথ্যানুযায়ী উপজেলার ১ হাজার ৯৫০ হেক্টরের অধিক জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। আর আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার ৫০০ টন। আলুর ফলন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও আলুর পাইকারি দামে হতাশ প্রান্তিক কৃষকরা। এছাড়া হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য কৃষকের অনেক আলু বস্তায় করে খোলা আকাশের নিচে রাখতে হচ্ছে।
এরই মধ্যে আবহাওয়া বার্তায় বৃষ্টির আশঙ্কায় উত্তোলন করা আলু ভেজা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকরা এখনই আলু বিক্রি করতে নারাজ। স্থানীয় হাট-বাজারে প্রকার ভেদে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২-২৫ টাকা। পাইকারী বাজারে কৃষকের উৎপাদিত আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৭ টাকা কেজি দরে। এই পরিস্থিতিতে লোকসানের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আলু চাষিরা।
আলু চাষিরা জানিয়েছে, এবার সিন্ডিকেটের কারণে কয়েকগুণ বেশি দামে আলুবীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সংগ্রহ করতে হয়েছে তাদের। প্রতি কানি (১৪০ শতাংশ) জমিতে আলু চাষে ব্যয় ধরা হচ্ছে প্রায় পৌনে ৪ লাখ টাকা। যদিও এলাকাভিত্তিক এই খরচ কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। সেই হিসেবে প্রতি কানি জমিতে অন্তত ৪০০ মণ আলু উৎপানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। তবে গড়ে কানি প্রতি সাড়ে ৩০০ মণ আলুর ফলন পাওয়ার কথা বলছেন তারা।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের হিমাগারে আলু রাখতে বিড়ম্বনা, অপেক্ষায় নষ্ট হওয়ার শঙ্কা
এতে এই অঞ্চলে প্রতি মণ আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এজন্য এখনই লোকসানে আলু বিক্রি করতে চাইছেন না তারা।
কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এলাকার হিমাগারে আলু রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। কারণ হিসেবে তারা বলেন, সিন্ডিকেটের লোকজন অন্য জেলা থেকে আলু এনে হিমাগার ভরছেন।
এলাকার কিছু আলু রাখার জন্য আটপড়ার হিমাগারটির আংশিক খালি রাখা হয়েছে। হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে না পাড়ার আশঙ্কায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় সচল হিমাগারের সংখ্যা ৩টি। এর মধ্যে তন্তরের সোন্ধারদীয়ার এ. এন. খান হিমাগারে আলুর ধারণ ক্ষমতা ৩ হাজার টন, শ্রীনগর সদর এলাকার চকবাজার এলাকায় আল-আমিন আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজের ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার টন আলু ও আটপাড়া এলাকার শ্রীনগর হিমাগারে আলুর ধারণ ক্ষমতা ৬ হাজার টন।
উপজেলার ৩টি হিমাগারের আলুর ধারণ ক্ষমতা সর্বমোট ১৪ হাজার মেট্রিক টন। আর আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৫৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের কুকুটিয়া ও তন্তর এলাকার প্রায় ৮৫ শতাংশ কৃষক তাদের উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করে থাকেন পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার হাট নওপাড়া বাজার এলাকার হিমাগারে। চলমান রমজান ও আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে কৃষি শ্রমিকের সংকট থাকায় অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও চাহিদা মতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া চক ও প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আলু বহনকারী সাইকেল ও অন্যান্য ট্রলির সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। দূরত্ব ভেদে হিমাগার পর্যন্ত আনতে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকে বস্তা প্রতি নেওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।
স্থানীয় হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বছর হিমাগারে ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা আলু সংরক্ষণের জন্য চার্জ ধরা হচ্ছে ৩০০ টাকা।
আরও পড়ুন: আলু সংরক্ষণে ৮ টাকা ভাড়া বেঁধে দিল হিমাগার মালিকরা
শ্রীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহসিনা জাহান তোরণ জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলায় ৩টি সচল হিমাগার রয়েছে। হিমাগারগুলোতে মোট ধারণ ক্ষমতা ১৪ হাজার মেট্রিক টন।
এ পর্যন্ত হিমাগারগুলোতে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণের তথ্য পাওয়া গেছে।
৮৪ দিন আগে
নরসিংদীতে কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
নরসিংদীতে কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি চক্রের বিরুদ্ধে।
আব্দুল কাইয়ুম ১৮ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে গত তিন মাস যাবত অবৈধভাবে আলোকবালীর গৌরীপুরা চরের কৃষি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন। যার ফলে ১৩৯ কৃষকের কয়েকশত একর কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে থেকে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়া ১৮ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে তিনমাস ধরে অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন। ইতোমধ্যে ১৩৯ জন কৃষকের প্রায় কয়েকশত একর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধে দফায় দফায় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্তদের জরিমানা করলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। উল্টো অবৈধ বালু উত্তোলনের গতি আরও বেড়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কাইয়ুম মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলা ও একাধিক অস্ত্র মামলাও রয়েছে। তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই কৃষকদের ভয় দেখানো হয়।
এমনকি, গত ৯ মার্চ ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে আয়োজিত নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার পথে আসা কৃষকদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে চারজন কৃষক আহত হয়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে জমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তরা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক দুদুল মিয়া বলেন, ‘আমার ২৫৪ শতাংশ জমি কেটে নিয়ে গেছে কাইয়ুম। জমিতে ধান চাষ করতাম, আমাদের চরের দুই পাশে নদী হওয়ায় প্রতিবছর জমির পরিমাণ বৃদ্দি পায়। ফলে, প্রতিটি কৃষকের জমিই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব জমি অবৈধ চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপি নেতা কাইয়ুম।’
‘এমকি প্রতিবাদ করলেই হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় আমাদের।’
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
আরেক ভুক্তভোগী কৃষক ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘কাইয়ুমের প্রভাবে আমরা অসহায়। জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তারা কাইয়ুমকে জরিমানাও করেছে, কিন্তু কাইয়ুম আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
কাইয়ুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তাকে ফোন করলেও রিসিভ করেননি।
নরসিংদী জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব দীপক কুমার বর্মণ প্রিন্স বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ, ‘কৃষক বাঁচলেই, দেশ বাঁচবে।’
‘কৃষকদের পাশে থাকতে কৃষক দল সারা দেশে কৃষক সমাবেশ আয়োজন করছে। যারা কৃষকদের ক্ষতি করবেন, তাদের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে। দলের নেতাদের প্রতি সুপারিশ করব তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
৮৭ দিন আগে