পর্যটন স্পট
ঈদ পর্যটন: ঢাকায় সংকীর্ণতা, বাইরে একঘেয়ে
ঈদ মানে এখন কেবল নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার গল্পই না। সময়ের ব্যবধানে ঈদের ছুটিতে মানুষের ঘোরাঘুরি নিজ গ্রামের পাশাপাশি অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে পরিব্যাপ্ত হয়েছে। রূপ নিয়েছে রীতিমতো পর্যটনে। কিন্তু বৈচিত্র্যহীন আয়োজনে ঢাকার পর্যটন হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ। আর সবকিছুতে গতানুগতিক ও একঘেয়েমির কারণে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যেতেও স্বস্তিবোধ করছেন না পর্যটকরা।
ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) বিকালে রাজধানীর বাড্ডায় বসে সেই অভিজ্ঞতার কথাই বলছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম (৫৫)। ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে এবার দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষমেশ আর যাচ্ছেন না। দেশেই থেকে যাচ্ছেন তিনি।
আবার দেশে থাকলেও কোথাও ঘুরতে যাবেন না বলে ঠিক করেছেন নজরুল। এমনকি ঢাকা শহরেও ঈদের দিন বিকাল বেলা বের হবেন না। পুরো সময়টা কাটাবেন পরিবারের সঙ্গে।
কেন এমন চিন্তা, জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘খেয়াল করলে দেখবেন আমাদের দেশে প্রায় প্রতিটি উৎসবের রঙ একই রকম। ঈদের দিন সকাল বেলা নামাজ শেষে বাসায় ফিরে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করার পর বের হয়ে ঢাকায় সর্বোচ্চ কোথায় যাওয়া যায়; হয় কোনো আত্মীয়ের বাসায়, আর না হয় পার্কে, না হলে সবাই মিলে ভালো কোনো রেস্তোরাঁয়।’
‘এই যে প্রি-স্ক্রিপ্টেড ঈদ। ঘুরে ফিরে প্রতিবছর একই রকম আনন্দ নেয়ার চেষ্টা। এটা বিশ্বের ভালো কোনো দেশের শহরে নেই। ঢাকার বাইরে গিয়েও কোনো লাভ নেই। আধাবেলা ঘুরে একঘেয়েমি জিনিসপত্র দেখে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়,’ বলেন তিনি।
এক সময় ঈদে ঢাকার প্রতিটি এলাকায় ছোট-বড় মেলা বসতো। সেই স্মৃতিচারণ করে রাজধানী গোপীবাগের বাসিন্দা মোসাব্বের হোসেন (৭২) বলেন, ‘মেলার পাশাপাশি পুরান ঢাকায় নৌকা বাইচের আয়োজন করা হতো। বড় বড় মাঠে ঘোড়দৌড়ের ব্যবস্থা থাকতো। কিন্তু এখন ঈদ হয়ে গেছে পার্কে ঘোরা আর রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মধ্যের সীমাবদ্ধ।’
এ জন্য রাজধানীর অতি বাণিজ্যিকীকরণকে দায়ী করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর-পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান। তার ভাষ্য, ‘এখন আর এই শহরে বাণিজ্যিক বড় লাভের বাইরে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠার সুযোগ নেই। আগে ঢাকার যেসব মাঠে মেলা বসতো, এখন সেসব মাঠের অনেকগুলোর অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: ঈদের একাল-সেকাল: প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় ত্রিমাত্রিক উদযাপন ঢাকায়
‘নৌকা করে ঘুরে বেড়ানোর খাল দখল হয়ে গেছে। জলাশয় ভরাট করে বড় বড় বাণিজ্যিক অট্টালিকা উঠেছে ঢাকার বুকে। আর এসব অট্টালিকা কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা রেস্টুরেন্ট হয়ে উঠেছে ঈদ আনন্দের খোরাক।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকার পার্কগুলোও দখল হয়ে গেছে। ধানমণ্ডি লেক এলাকা ঘুরলে এখন মনে হয় এখানে লেক মুখ্য না, মুখ্য হয়ে উঠেছে লেকের পাশে গড়ে উঠা ডজনখানেক রেস্টুরেন্ট। ঢাকাকে নিয়ে কোনো ধরনের কোনো কার্যকর পরিকল্পনা কারও মধ্যে দেখা যায় না। ঈদের দিন যারা ঢাকায় থাকেন, তারা প্রতিবছরই একমুখী সংকীর্ণ ঈদ পালন করতে করতে একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছেন।’
গতবার ঈদে পরিবার-পরিজন নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলেন হুমায়ুন রশিদ (৩২)। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার ঘুরে দেখতে আপনার দুই দিনের বেশি সময় লাগবে না। এরপরই যে কারো একঘেয়েমি ধরে যাবে। এখানে সমুদ্র দেখার বাইরে আর যেসব বিনোদনের ব্যবস্থা আছে, তা একরকমের ধাপ্পাবাজি। বেশি টাকা নিয়ে বোট রাইডিং, প্যারা সাইকেলিং, হর্স রাইডিং, বাইক রেসিং এর নামে বিনোদনের খোলসে যা কিছু হয় তা এক রকমের লোক ঠকানো।’
হুমায়ুন বলেন, ‘যখন একটি দেশের পর্যটক বুঝতে পারেন তাকে পদে পদে ঠকানো হচ্ছে, তখন সে এসব পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেন। গত ঈদে কক্সবাজারে প্রায় ৮ লাখ পর্যটক এসেছিল। সি-বিচে যারপরনাই ভিড় দেখে মনে হচ্ছিল রাজধানীর কোনো মাছের বাজারে দাঁড়িয়ে আছি। হোটেলে রুম ভাড়া ছিল কয়েকগুণ বেশি। ২০ টাকার আলুভর্তা মানুষ বাধ্য হয়ে ১৫০ টাকায় কিনে খেয়েছে। এই যদি পর্যটন কেন্দ্রগুলোর ব্যবস্থাপনার অবস্থা তাহলে মানুষ কেন আসবে!’
গতবারের মতো এবার ঈদেও দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো সেজেছে নানা সাজে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের ৮০ শতাংশ হোটেল বুক হয়ে গেছে। বাকিটাও দুই একদিনের মধ্যে হয়ে যাবে বলে আশা করছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বরাবরের মতো এবারও হোটেল বুকিংয়ে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে এমন অভিযোগ ক্রেতাদের।
ঈদের একদিন পর কক্সবাজারে সি-বিচ মুখোমুখি যেকোনো হোটেলের ভালো মানের এসি রুম বুক করতে গিয়ে ফয়সাল দেখেন প্রতিটি কাপল রুমের ভাড়া ৮-৯ হাজার টাকা। ফয়সাল বলেন, ‘থ্রি স্টার হোটেলের এসব রুমের ভাড়া আগে ছিল ৪-৫ হাজার টাকা। ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ভাড়া দ্বিগুণ করা হয়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়।’
দীর্ঘদিন কক্সবাজারের একটি হোটেলে ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মুরশিদ হোসেন। বর্তমানে ঢাকার একটি তিন তারকা হোটেলের মহাব্যবস্থাপক পদে আছেন তিনি।
কেন পর্যটন মৌসুমে হোটেলগুলোতে বাড়তি ভাড়া নেয়া হয় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মৌসুম ছাড়া বেশিরভাগ সময়েই হোটেল ব্যবসা মন্দা যায়। তখন ৫০ শতাংশের উপরে রুম বুকিংয়ে ছাড় দিয়েও পর্যটক পাওয়া যায় না। হোটেলগুলোকে টিকিয়ে রাখতে, কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে বাধ্য হয়ে পর্যটন মৌসুমি পর্যটকদের থেকে বাড়তি অর্থ আদায় করতে হয়।’
সিলেট, কক্সবাজার, বান্দরবান এবং কুয়াকাটা অঞ্চলের হোটেলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এপ্রিলের ১-৫ তারিখের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রুম বুকিং দিয়েছেন পর্যটকরা। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে এবং বিনোদনের ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত হচ্ছে পর্যটন স্পটগুলো।
এ প্রস্তুতি আদৌ যথেষ্ট কিনা সে প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ শোয়েব-উর-রহমান বলেন, ‘কীভাবে পর্যটক টানতে হয়, তার নূন্যতম কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।’
‘প্রতি বছর ঈদ শেষে শোনা যায় ১৫ লাখ পর্যটক দেশের নানা স্পট ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু এই সংখ্যাটির অফিসিয়াল কোনো ভিত্তি নেই। যতদিন না পর্যটকদের সংখ্যার নিরিখে পর্যটনকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হবে, যতদিন না পর্যটন স্পটে বিনোদনের নতুন সংজ্ঞা সেট করা হবে, ততদিন পর্যন্ত আশু সমাধান আশা করা যায় না।’
শোয়েব বলেন, ‘দেশের মানুষ এক-দুবার কক্সবাজার-বান্দরবান গেলে পরে আর যেতে চায় না। কিন্তু বালি বা ব্যাংককের মতো শহরে মানুষ বারবার যেতে চায়। এর সবচেয়ে বড় কারণ বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোর বিনোদন নিতান্তই একমুখী। কিন্তু দেশের বাইরে শুধু প্রকৃতি না, প্রকৃতি আর মানুষের সৃষ্টিকর্মের মিথস্ক্রিয়ায় এক একটি পর্যটন কেন্দ্রকে একেক রূপে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পর্যটক জানেন, চাইলেই দুই দিনে পুরো ব্যাংকক ঘুরে দেখা সম্ভব না। কিন্তু আপনি সকালে শুরু করলে সন্ধ্যার মধ্যে কক্সবাজারের মূল মূল স্পটগুলো ঘোরা শেষ হয়ে যাবে ‘
আরও পড়ুন: ধনীদের আস্থা ব্র্যান্ডে, ফেনীতে ফুটপাতেই ভরসা গরিবের
‘আবার পর্যটনকে কেন্দ্র করে স্পটগুলোতে যেসব সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে, তাতে করে পর্যটকদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। এক ধরনের অদ্ভুত মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। পর্যটকদের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ পর্যটকদের ওপর তাদের একরকমের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিনের এই বৈরিতা পর্যটকদের সঙ্গে তাদের দূরত্ব তৈরি করে। এতে করে আইন-শৃঙ্খলারও অবনতি হওয়ার শঙ্কা থাকে,’ যোগ করেন শোয়েব।
এবারের ঈদ পর্যটনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। রাজধানীর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য জেলায় বিগত কয়েক মাসের বিভিন্ন ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মনে বিরাজ করছে এক ধরণের চাপা শঙ্কা।
বিয়ের পর এবারের ঈদের ছুটিতে স্ত্রীকে নিয়ে প্রথমবারের মতো সাজেক ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেও বাদ দিয়েছেন এনজিও কর্মী আহমেদ পিয়াস (২৮)। বলেন, ‘দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দুজন মিলে কোথাও যেতে সাহস হচ্ছে না। পরিবার এবং বন্ধু পরিজনদের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে গেলে দল বেধে যেতে। যাতে করে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি হলে মোকাবেলা করা যায়।’
১৯ দিন আগে
খুলে দেওয়া হয়েছে সিলেটের জাফলং ও রাতারগুল পর্যটন স্পট
দর্শনার্থীদের জন্য শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে জাফলং ও রাতারগুল পর্যটন স্পট।
রবিবার (২৩ জুন) থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকা সাপেক্ষে উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং ট্যুরিস্ট স্পট চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পাশাপাশি, জাফলং পর্যটন স্পটে নৌ-চলাচলের রুটে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বিবেচনায় সব বোট মালিক, নৌ-চালক ও মাঝিদেরকে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পানির গভীরতা ও স্রোত বিবেচনা করে সাঁতার জানেন না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটন স্পটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে। উল্লিখিত শর্তসাপেক্ষ সবকটি পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শুক্র (২১ জুন) ও শনিবার (২২ জুন) দুই দফায় জাফলং ট্যুরিস্ট স্পট সরেজমিনে পরিদর্শন করে গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি একটি টিম।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গোয়াইনঘাট উপজেলার সবকটি পর্যটনকেন্দ্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি প্রতিনিধি দল কয়েক দফা পরিদর্শন করেন।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের নির্দেশে বন্যা পরিস্থিতির কারণে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
তার আগে, গত ৩০ মে বন্যা পরিস্থিতির জন্য প্রথম দফায় পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করেছিল ইউএনও ও উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়কগণ। পরবর্তীতে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে শুক্রবার (৭ জুন) পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়।
৩০০ দিন আগে
বসন্ত উৎসবে বর্ণিল সাজে চট্টগ্রাম
বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বসন্ত বরণে বর্ণিল উৎসব চলছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পর্যটন স্পটগুলোতে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে প্রাণের মেলা বসেছে।
নগরীর সিআরবি শিরষতলা, শিল্পকলা একাডেমি ও চারুকলা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে নানা অনুষ্ঠান চলছে দিনভর। ফুলে ফুলে বসন্ত উৎসবের আয়োজনে আছে সুস্থ সাংস্কৃতিক আয়োজন। বিভিন্ন সংগঠন পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে তরুণ তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ যোগ দিয়েছেন।
মেয়েরা খোঁপায় গাঁদা-পলাশসহ নানা রকম ফুলের মালা গুঁজে বাসন্তী রঙের শাড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামা ও ফতুয়ায় শাশ্বত সাজে পহেলা ফাল্গুনে উৎসবের হাওয়ায় যোগ দিয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভিড়। অনুষ্ঠান চলবে বিকাল পর্যন্ত।
ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন, পহেলা ফাল্গুন। করোনা ভীতি আর নিষ্প্রাণ প্রায় এই কংক্রিটের নগরী তারুণ্যের প্রাণের উচ্ছাস আর ভালোবাসায় মুখর হয়ে উঠেছে।
নগরীর চেরাগী পাহাড় ও মোমিন রোডের ফুলের দোকানগুলোতে ক্রেতার ভিড় লেগেছে। সকাল থেকে সেখানে মানুষের ভিড় আরও বাড়ছে, আর তাই হরেক ফুলের সম্ভার প্রতিটি দোকানে। দোকানিদের আশা এবার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে। তবে অন্য বারের মতো এবার জমজমাট ব্যবসা নেই।
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের সঙ্গে প্রকৃতিতে লেগেছে তার ছোঁয়া। ন্যাড়া গাছগুলোতে আসতে শুরু করেছে নতুন পাতা। শিমুল আর পলাশ গাছে ফুটেছে আগুন রঙের রঙিন ফুল। হালকা শীতে মৃদু বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর অন্যরকম পরিবেশ। বসন্তের প্রথম দিনে নগরীর পর্যটন স্পটগুলোতে উপচে পড়া মানুষের ভিড়ে তৈরি করেছে এক ভিন্ন আবেশ।
৪৩১ দিন আগে
পর্যটন স্পটে মাস্ক না পরায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে মানুষ মাস্ক না পরায় করোনা (নতুন ধরণ ওমিক্রন) সংক্রমণ বাড়ার আশংকা রয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষ মাস্ক না পরেই ভিড় করছেন, রাজনৈতিক সমাবেশেও মাস্ক পড়ছে না মানুষ। এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন মোকাবিলায় বুস্টার ডোজ সহায়ক হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রীমন্ত্রী বলেন,করোনা টিকার বুস্টার ডোজ সবাইকে দিতে সুরক্ষা অ্যাপ আপডেট করা হচ্ছে। এখন সীমিত আকারে দেয়া হচ্ছে ফ্রন্টলাইনারদেরকে। টিকা গ্রহণের কার্ড নিয়ে ষাটোর্ধ্ব ও ফ্রন্টলাইনাররা টিকা দিতে পারবেন। এ মাসের শেষের দিকে অ্যাপস এর মাধ্যমে তা শুরু হবে আগেরগুলোর মত। এখন তা নিয়ে কাজ করছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।তিনি বলেন,দেশে এখনও ওমিক্রন ছড়ায়নি।ওমিক্রন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সারাদেশের মানুষ যাতে আগের মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এজন্য জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনদের চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।এ পর্যন্ত করোনা টিকার প্রথম ডোজ সাত কোটি ও দ্বিতীয় ডোজ সাড়ে চার কোটি মানুষকে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ৬০ শতাংশ মানুষকে। ৩৫ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এখন কোনো লকডাউন দেয়া হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে টিকা একটা বড় কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে।স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ কোভিড নিয়ন্ত্রণে সফলতার উদাহরণ হয়েছে। এখন যে সংক্রমণ কমে গেছে এটা ধরে রাখতে হবে। সব হাসপাতালে এখন অক্সিজেন সাপোর্ট আছে।জাহিদ মালেক আরও বলেন, মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি হবে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে ডাক্তার-নার্স নেবে তারা।
১২১৫ দিন আগে
সব পর্যটন স্পট ২ সপ্তাহ বন্ধের ঘোষণা সিলেটে
সিলেটের সকল পর্যটন স্পট আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। দ্বিতীয় ধাপে করোনার সংক্রমণ রোধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সিলেট রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন জানান, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সিলেট রিজিওনের সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও পর্যটন স্পট আগামী দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। করোনার সংক্রমণ রোধে সকলকে মাক্স পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: সিলেটে বাসচাপায় মা-মেয়েসহ নিহত ৩
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দেশের সকল পর্যটন স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ সিলেটের সকল পর্যটন স্পট বন্ধের ঘোষণা দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। ছয় মাস পর গত ৯ সেপ্টেম্বর ২৫ শর্তে এসব পর্যটন স্পট ও রিসোর্ট সেন্টার খোলার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু, কোনো পর্যটন কেন্দ্রই এসব নির্দেশনা পালন করেনি। এ অবস্থায় ফের সিলেটের পর্যটন স্পটসমূহ বন্ধের ঘোষণা এলো।
আরও পড়ুন: সিলেটে ‘কোয়ারেন্টাইন’ ভঙ্গ করায় ২ প্রবাসীকে ৭ দিনের কারাদণ্ড
করোনা পরিস্থিতি
বাংলাদেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩৫৮ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৩৫৮ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যা দেশে করোনা শনাক্তের পর একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আরও ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ হাজার ৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৪২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত এবং ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৪টি পরীক্ষাগারে ২৬ হাজার ৬৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ পরীক্ষা করা হয় ২৬ হাজার ৯৩১টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৯.৯০ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এর আগে মঙ্গলবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ১৮.৯৪ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ২১৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৯৯ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমকি ৭৩ শতাংশ।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১৪৮০ দিন আগে
হিমছড়ি পাহাড়ের সিঁড়ি থেকে পড়ে শিশু পর্যটকের মৃত্যু
কক্সবাজারের পর্যটন স্পট হিমছড়ির পাহাড়ে উঠতে গিয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে শুক্রবার এক শিশু পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
১৫৯৭ দিন আগে