বীরাঙ্গনা
‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদাকে কেন ভাতা দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল
‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি এবং বন্ধ হওয়া ভাতা পুনর্বহালের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে বীরাঙ্গনা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে চার বছরের বেশি সময় সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার পর তা বাতিলের সিদ্ধান্ত (গেজেট) স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
ঠাকুরগাঁওয়ের তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদার করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন।
মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর গ্রামের মৃত তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী ‘বীরাঙ্গনা’ মাজেদাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। সেই থেকে তিনি প্রতি মাসের ভাতাসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছিলেন। তবে একই এলাকার মৃত দারাজ উদ্দিনের স্ত্রী আরেক মাজেদা’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই ও শুনানির পর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আরেকটি গেজেট জারি করা হয়। সে গেজেটে মৃত দারাজ উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদাকে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: নাটক-শর্টফিল্ম-ওয়েব সিরিজ প্রচারে সেন্সর বোর্ড গঠনে রুল জারি
তবে ২০১৬ সালের গেজেটে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া মৃত তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী মাজেদার ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়।
মাজেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন বলেন, ‘আমার মক্কেল যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার চিঠি দিয়েও তার স্বীকৃতি ও ভাতা বাতিলের কোন কারণ জানতে পারেনি। এক পর্যায়ে আমার মক্কেল মাজেদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিলের কারণ ও তার ভাতা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযুদ্ধা কাউন্সিল বরাবর লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়। তবে সে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করি। সে রিটে তসলিম উদ্দীনের স্ত্রী বীরাঙ্গনা মাজেদার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি এবং তার ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহাল চাওয়া হয়। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীন পুলিশ তদন্ত কমিশন গঠন নিয়ে রুল জারি
৩ বছর আগে
বীরাঙ্গনা টেপরি বেওয়াকে জেলা প্রশাসকের ঈদ উপহার
ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈলে ৭১ এর বীরাঙ্গনা টেপরি বেওয়াকে ঈদ উপহার দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এই ঈদ উপহার তার হাতে তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক বীরাঙ্গনা টেপরি বেওয়া ও তার সন্তান সুধীরকে ঈদ সামগ্রী, কাপড় ও নগদ ২৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: বীরাঙ্গনার স্বীকৃতির পর মাথা গোজার ঠাঁই পেলেন মায়া রানী
জেলা প্রশাসক জানান, এর আগেও বীরাঙ্গনা টেপরি বেওয়াকে বাড়ি, আর্থিক সহায়তা, তার সন্তানের জন্য একটি ইজিবাইক এবং সরকারি সব রকমের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাপড়া ঘরে বীরাঙ্গনা চারুবালার বসবাস, দেখতে গেলেন ওসি
জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম আরও বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেদের সম্মান বিসর্জন দিয়েছেন, এদেশকে স্বাধীন করতে অবদনা রেখেছেন, তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাতে। তাদের পাশে আমরা সর্বদা আছি। সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা বীরাঙ্গনারা পাবেন।
ঈদ উপহার পেয়ে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানান টেপরি বেওয়া।
আরও পড়ুন: একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবার মাথাচারা দিয়েছে: তোফায়েল
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলম, রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকারনাইন কবির, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেফালী বেগম এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা।
৩ বছর আগে
বীরাঙ্গনার স্বীকৃতির পর মাথা গোজার ঠাঁই পেলেন মায়া রানী
বীরাঙ্গনার স্বীকৃতির পর এবার মাথা গোজার ঠাঁই পেলেন অসহায় বীরাঙ্গনা মায়া রানী সাহা (৭০)।
ফরিদপুর বর্ধিত পৌরসভার শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা নিঃসন্তান মায়া রানীর বসবাসের কোন ঘর না থাকায় খুব কষ্টে দিনপাত করছিলেন তিনি। মায়া রানীর দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার তার থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন।
শনিবার দুপুরে বীরাঙ্গনা মায়া রানী সাহার ঘরের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজ বাড়িতে ১৬ বছর বয়সে হানাদার বাহিনী ও স্থানীয় দোসরদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন মায়া রানী সাহা। স্বীকৃতি কিংবা ভরসার জায়গা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছিলেন তিনি। খবর পেয়ে গণশুনানির সময় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সাথে সাক্ষাত করেন তিনি। তখনি তার অসহায়ত্বতার কথা জানান জেলা প্রশাসককে।
তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক মায়া রাণী সাহার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ জামুকায় প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম রেজাকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
সেই নির্দেশনার আলোকে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে উপজেলা বীরাঙ্গনা যাচাই বাছাই সংক্রান্ত গঠিত বিশেষ কমিটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে জামুকা বরাবর প্রেরণ করেন। তারই প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে মায়া রাণী সাহাকে ৩৮০ নং গেজেটে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
এদিকে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তার ছিল না কোনো থাকার ঘর। মায়া রানী সাহার জরাজীর্ণ আবাসস্থল সেমি পাকা ভবনে রূপান্তরে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একটি সেমি পাকা ঘর নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে মায়া রানী সাহার জরাজীর্ণ বসত ভিটায়।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা বলেন, 'ফরিদপুরে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত পাঁচজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। এদের প্রত্যেককে একটি করে ঘর নির্মাণ করে দেবে সরকার। মায়া রানীর থাকার জায়গা না থাকায় একটু আগে ভাগেই আমরা ডিজাইন ঠিক রেখে তাকে একটি ঘর তৈরি করে দিচ্ছি জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে।'
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরো জানান, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত সকল গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য আবাসস্থল নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন বীরাঙ্গনা মায়া রানী সাহাকে এই ঘরটি মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে প্রদানের ব্যবস্থা নিয়েছে।
মাসুম রেজা জানান, জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা রয়েছে, 'জেলার যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা আবাসস্থলের কষ্টে আছেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে তাদের অনুকুলে ঘর বরাদ্দের পূর্ব পর্যন্ত তারা সম্মত থাকলে তাদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে পূনর্বাসন করতে । আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।'
মাথা গোজার ঠাঁই পেয়ে খুশি বীরাঙ্গনা মায়া রানী সাহা। তিনি জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, 'এমন ভালো মানুষ আর হয় না। তার কারণে আমার নাম তালিকায় উঠেছে। বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি পেয়েছি। এবার ঘর পেলাম।'
তিনি বলেন, 'আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে রান্না করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। সামনের দিনে আর হয়তো এই কাজ করতে হবে না। জীবনের শেষ বয়সে এই স্বীকৃতি আমাকে অনেক বেশি শক্তি জোগাবে বাচাঁর'।
পরে মায়া রানীর হাতে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি তেল, লবন সহ নানা ধরনের খাদ্য সামগ্রী হাতে তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এর আগে করোনাকালীন সময়ে জেলার মধুখালীতে দু’জন ও ভাঙ্গা উপজেলায় একজন বীরাঙ্গনার অসুবিধার কথা জানতে পেরে তাদের পাশে দাড়ান জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই দুই উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বীরাঙ্গনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাদ্য সামগ্রী।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন ও ভাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজীব আহমেদ সহ কর্মকর্তারা বীরাঙ্গনা দেবী আরতি রানী ঘোষের গ্রামের বাড়ি চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রামে যান। এ সময় তার হাতে উপহার ও খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন ইউএনও।
এদিকে মধুখালীতেও করোনাকালীন সময়ে বীরাঙ্গনা আম্বিয়া বেগম ও মোছা. ফুলজান বেগমের দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে তাদেরকেও সহায়তা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। তার নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তফা মনোয়ার তাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন।
অপরদিকে ১৯৭১ সালের ৭ মে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে অবর্নণীয় শারিরীক ও মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন চারুবালা বিশ্বাস। হানাদার বাহিনী চারুবালার স্বামী ও দুই মাসের কোলের সন্তানকে হত্যা করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার তাৎক্ষনিকভাবে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সরেজমিন গিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন। ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয় ইউএনও এর পক্ষ থেকে। সেই প্রতিবেদন সহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি নিয়ে চারুবালা বিশ্বাসকে নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরাঙ্গনা) হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ফরিদপুর বর্ধিত পৌরসভার শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা নিঃসন্তান মায়া রানীকে বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি প্রদানে সহায়তা করা হয়েছে। বসবাসের কোন ঘর না থাকায় খুব কষ্টে দিনযাপন করছিলেন তিনি। মায়া রানীর দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে তার থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'করোনাকালীন সময়ে জেলার আরো তিনজন বীরাঙ্গনা অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছিলেন এমন খবর পেয়ে তাদের পাশে দাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। জেলা প্রশাসন সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছে, ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে।'
৩ বছর আগে
ছাপড়া ঘরে বীরাঙ্গনা চারুবালার বসবাস, দেখতে গেলেন ওসি
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের দুর্গম চরাঞ্চলের রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে অসুস্থ বীরাঙ্গনা চারুবালাকে (৬৭) দেখতে গেলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ সময় তিনি অসুস্থ চারুবালার হাতে বিভিন্ন রকমের ফল তুলে দেন।
৩ বছর আগে
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে রাজাকারের তালিকা প্রকাশ: মন্ত্রী মোজাম্মেল
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আগামী ২৬ মার্চ সরকার রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
৪ বছর আগে