ঝুঁকি
ঈদ ও স্বাধীনতা দিবস ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র সচিব
আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সিনিয়র সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ এখন শক্ত অবস্থানে রয়েছে।
‘পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ঘরমুখী যাত্রীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় রয়েছে এবং নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলছে। শপিংমলগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রতারণা: অ্যাপ ও সরাসরি কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকেট কেনার পরামর্শ
নাসিমুল গনি বলেন, পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষ্যে যাতে কোনো শ্রম অসন্তোষের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া শ্রমিকদেরকে যাতে ঈদের আগে নির্ধারিত সময়ে বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করা হয়, সেটি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর (অব.) সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, আইজিপি বাহারুল আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
৮ ঘণ্টা আগে
তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের অনেক অংশে মঙ্গলবার সকালে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এটি দেশকে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশে কোনো হতাহতের খবর না পাওয়া গেলেও এটি ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বিপর্যয়কর ভূমিকম্প মোকাবিলায় দেশের প্রস্তুতির দিকে নতুন করে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: ভানুয়াতুতে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, সাম্প্রতিক নিদর্শনগুলো কেবল ২০২৪ সাল থেকে ৬০টিরও বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। এসব ঘটনা ব্যাপক দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতির জরুরি প্রয়োজনের প্রতিই ইঙ্গিত দেয়।
সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাপক ভূমিকম্পের ঝুঁকির মুখোমুখি। এখানকার ঘনবসতি, পুরোনো অবকাঠামো এবং বিল্ডিং কোডের দুর্বল প্রয়োগ এই বিপদগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অবিলম্বে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ভবিষ্যতের জন্য একটি ভয়াবহ দৃশ্য অপেক্ষা করছে।
নেপাল, ভারত, ভুটান ও চীনেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, যা এই ধরনের দুর্যোগের আন্তঃদেশীয় মাত্রাকে তুলে ধরে।
ঝুঁকিতে দেশ
বেশ কয়েকটি সক্রিয় ফল্ট লাইনসহ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান দেশটিকে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে। ঐতিহাসিকভাবে, এই অঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছে, ১৮৬৯ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে পাঁচটি বড় ঘটনা রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক শূন্য এর উপরে নিবন্ধিত হয়েছে।
এরপর থেকে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প স্তিমিত হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের আগে এই নীরবতা থাকতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের আঘাত উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সাল থেকে রেকর্ড করা ৬০টি ভূমিকম্পের মধ্যে তিনটি ৪ দশমিক শূন্য মাত্রার উপরে এবং ৩১টি ৩ দশমিক শূন্য থেকে ৪ দশমিক শূন্যের মধ্যে ছিল। এই ঊর্ধ্বগতি, শহর এলাকায় বিস্তৃতি এবং অপর্যাপ্ত অবকাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত জাতিকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
ঝুঁকিপূর্ণ শহর ঢাকা
ভূমিকম্পে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের তালিকায় ঢাকা অন্যতম। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারায়। এই ঘটনাটি দুর্বলভাবে নির্মিত ভবনগুলোর সৃষ্ট বিপদের একটি ভয়াবহ উদাহরণকে তুলে ধরে।
২০১৮ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, রামপুরা, মতিঝিল ও খিলগাঁওয়ের মতো এলাকার অনেক স্থাপনা কাঠামোগত ও নকশার মান পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের জৈন্তাপুর চরম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় একটি উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প ঢাকায় অকল্পনীয় মাত্রার বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
আন্তঃদেশীয় ভূমিকম্প ঝুঁকি মূল্যায়ন
২০২৪ সালের মার্চে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এমওডিএমআর) বাংলাদেশে আন্তঃদেশীয় ভূমিকম্প ঝুঁকি মূল্যায়ন চালু করে। যা জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যালয় (ইউএনডিআরআর) এবং গ্লোবাল ভূমিকম্প মডেল (জিইএম) ফাউন্ডেশনের সহায়তায় একটি কার্যকর পদক্ষেপ।
এই উদ্যোগটি দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করতে এবং কার্যকরী কৌশলগুলোর সুপারিশ করার জন্য উন্নত সম্ভাব্য ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ ধরণ, ভবনের ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং ভঙ্গুরতার মূল্যায়নকে তুলে ধরে।
ঢাকায় চার দিনব্যাপী প্রচার অনুষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যে গুরুতর দুর্বলতার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা, মানবিক সহায়তা সংস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক ভূমিকম্প, কাল্পনিক পরিস্থিতি এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে ভূমিকম্পের ধরনের উপর কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা পরবর্তী প্রজন্মকে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় প্রস্তুত করে।
দুর্বলতা প্রকাশ
মূল্যায়ন থেকে মূল অভ্যন্তরীণ উল্লেখযোগ্য ত্রুটিগুলো প্রকাশ করে-
ভঙ্গুর অবকাঠামো: হাসপাতাল, জরুরি প্রতিক্রিয়া কেন্দ্র এবং সরকাররি দপ্তরগুলো এমন কাঠামোর মধ্যে রয়েছে, যা ভূমিকম্পের ধাক্কা সহ্য করার জন্য জরুরি পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশের কিছু অংশ
নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি: বিল্ডিং কোডের দুর্বল প্রয়োগ এবং দ্রুত অপরিকল্পিত নগরায়ণ ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়।
জনসচেতনতার ঘাটতি: জরুরি প্রটোকলগুলোর বিষয়ে কম বোঝার কারণে অনেক নাগরিক ভূমিকম্প পরিস্থিতির জন্য অপ্রস্তুত থাকেন।
কার্যকর উদ্যোগের আহ্বান
আন্তঃদেশীয় মূল্যায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে চিহ্নিত হলেও বিশেষজ্ঞরা ঝুঁকি কমাতে একটি সমন্বিত, বহুমাত্রিক ক্ষেত্রভিত্তিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। মূল সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে:
• শক্তিশালী বিল্ডিং কোড ও প্রয়োগ করা।
• ভূমিকম্প প্রস্তুতি সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো।
• গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য সম্পদ বরাদ্দ করা।
• দক্ষতার সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বেসামরিক-সামরিক সমন্বয় বৃদ্ধি করা।
আন্তঃদেশীয় মূল্যায়নের সুপারিশগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার দুর্বলতাগুলোকে ভূমিকম্পের হুমকির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষায় রূপান্তর করতে পারে।
আরও পড়ুন: চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
৬৮ দিন আগে
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৪ ভিন্নমত-গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে: টিআইবি
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর অনেক ধারা নাগরিকদের বাক, ভিন্নমত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সংগঠনের অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ অধ্যাদেশে অনেকাংশে আগের কালো আইনসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক বৈশিষ্ট্য রয়ে গেছে।
টিআইবি বলছে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে যথাযথ পর্যালোচনার সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে এ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘অধ্যাদেশটি পর্যালোচনা করে আমরা দেখছি, এতে অনেকাংশে পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের এজেন্ডা ও ভাষ্যেরই প্রতিফলন ঘটেছে। একাধিক ধারায় পূর্বের ডিএসএ বা সিএসএ-এর পুনরাবৃত্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের পতন ভারতের জন্য বড় কূটনৈতিক ধাক্কা: টিআইবি
তিনি বলেন, এ অধ্যাদেশ জনগণের বাক, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম এবং সংগঠনের অধিকারকে খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। নতুন অধ্যাদেশটি দেশবাসীর ডিজিটাল অধিকার নিশ্চিতে সহায়ক হবে বলা হলেও বাস্তবে এতে আমরা অনেকটাই আগের কালো আইনসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকতে দেখছি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অধ্যাদেশে অনেক জটিল ও অস্পষ্ট শব্দ, শব্দগুচ্ছ ও ধারণার ব্যবহার করে এর অপব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত করে একটি জগাখিচুড়ি পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। অধ্যাদেশটির খসড়া প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়নি এবং যথাযথ পর্যালোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে তড়িঘড়ি করেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী চেতনায় গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে এমন প্রক্রিয়ায় এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিমূলক অধ্যাদেশ অনুমোদন পাওয়া বিব্রতকর।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অধ্যাদেশ অনুযায়ী ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য, যদিও ধর্মীয় অনুভূতির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। তদুপরি, ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত যেমন অগ্রহণযোগ্য, একইভাবে সকলের সমঅধিকার, অসাম্প্রদায়িক এবং বৈষম্যবিরোধী মূল্যবোধের উপর আঘাতও একই মাত্রায় অগ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। এ ধরনের ধারা যদি সংযুক্ত করতেই হয়, তাহলে ধর্মীয় মূল্যবোধে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। সকল মানুষের সমান অধিকার, অসাম্প্রদায়িকতা এবং সার্বিকভাবে বৈষম্যহীন মূল্যবোধের প্রতি আঘাত আনে এমন মন্তব্যও সমানভাবে অগ্রহণযোগ্য হবে, এমন ধারা সন্নিবেশ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, অধ্যাদেশটি বর্তমান অবস্থায় জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে না। আশা করি, অধ্যাদেশটি প্রণয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে অগ্রসর হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে ঢেলে সাজানো হবে, যাতে সাংবিধানিক অঙ্গীকার এবং সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাসহ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশনসমূহ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি সুরক্ষিত হয়।’
টিআইবি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ পর্যালোচনা করেছে এবং সংস্থাটির পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে যে, এই অধ্যাদেশের কাঠামো এবং বিষয়বস্তু আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অধ্যাদেশটি সাইবার সুরক্ষা, সাইবার অপরাধ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় একত্রিত করার চেষ্টা করলেও, এর অস্পষ্ট শব্দাবলী ও জটিল ভাষা সাধারণ জনগণ এবং বিশেষজ্ঞদের জন্য বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠেছে। আবার, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’, ‘ব্লকচেইন’ এবং ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’ এর মতো প্রযুক্তিগত শব্দগুলোর সঠিক সংজ্ঞা না থাকার কারণে আইনের প্রয়োগে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
টিআইবি মনে করে, অধ্যাদেশে সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ও পুলিশকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা পূর্বের সাইবার নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ধারা ২-এ ব্যবহৃত ‘কম্পিউটার’, ‘উপাত্ত ভাণ্ডার’ এবং ‘কম্পিউটার সিস্টেম’-এর সংজ্ঞাগুলো অতিরিক্ত বিস্তৃত এবং প্রযুক্তিগত বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, যা আইনের প্রয়োগে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, অধ্যাদেশের শিরোনাম এবং কাঠামোও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। শিরোনামে সাইবার সুরক্ষা, সাইবার অপরাধ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সব কিছু একত্রিত করা হলেও, এতে কিছু অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। ধারা ৮-এর উপ-ধারা (২)-এ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব, রাজনৈতিক অপব্যবহার বা নাগরিকদের ইন্টারনেট অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে। ধারা ১৬ ও ১৭-এ সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞদের সনদপ্রাপ্ত মনিটরিং প্রক্রিয়া এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাঙার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট বিধান থাকা উচিত। ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিং, অপমান, হয়রানি বা ব্ল্যাকমেইলের বিষয়টি খুবই বিস্তৃত এবং বিভ্রান্তিকরভাবে আনা হয়েছে, যা যুক্তিসঙ্গত সমালোচনাকেও ‘অপমান’ বা ‘হয়রানি’ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, ফলে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে। এ কারণে, এই ধারাটি সংশোধন করে সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এরশাদুল করিম টিআইবির পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন। উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের। সংস্থাটির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
আরও পড়ুন: হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
৭৪ দিন আগে
ঝুঁকিতে কাঠের সেতু, ৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ৭ নম্বর পাইকপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল গ্রামসহ আশপাশের ৪-৫ গ্রামের শত শত লোকের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে একমাত্র কাঠের সেতুটি। মেরামত না করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
দুই বছর আগে উপজেলা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অফিসে আবেদন করে সেতু কিংবা কালভার্ট নির্মাণে আজও কোনো বরাদ্দ মেলেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, কাঠের সেতুটি একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হেঁটে চলাও বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ। মাসখানেক আগে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ওই সময় সেতুর দুই পাশ ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল নিয়ে পার হতে গিয়ে স্থানীয়রা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
পূর্ব ভাওয়ালের দুলাল তালুকদার বলেন, ‘৫ গ্রামের মানুষসহ স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। তাই এখানে একটি সেতু কিংবা কালভার্ট নির্মাণ করা খুবই জরুরি।’
আরও পড়ুন: দুই প্রতিষ্ঠানের বিরোধে ভোগান্তির শিকার স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের ৬ লক্ষাধিক আবেদনকারী
এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের বহুবার জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শামীম বলেন, ‘প্রায় ২ বছর আগে এখানে ছোট একটি সেতু করে দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছিলাম। বছরের শুরুতে একবার পিআইওসহ অন্যান্য লোকজন সরেজমিনে পরিদর্শন করেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ আসেনি।’
ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা শামীম ইউএনবিকে বলেন, ‘আমি ৮ মাস আগে এই ইউনিয়নে যোগদান করেছি। এই কাঠের সেতু সম্পর্কে কিছুই জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিল্টন দস্তিদার ইউএনবিকে বলেন, ‘স্থানীয়দের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেতু নির্মাণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকাবাসীর দবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: ব্যাংকে তারল্য সংকট: টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে ৬ ব্যাংকের গ্রাহক
১১২ দিন আগে
বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় ঝুঁকিতে ২০ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ঘরবাড়ি, স্কুল ও গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় ২০ লাখেরও বেশি শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে গত ৩৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৬ লাখ মানুষ।
নজিরবিহীন মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি এলাকাগুলোকে প্লাবিত করে।
এতে ৫২ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এর ফলে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
আটকা পড়া লাখ লাখ শিশু ও পরিবারে খাদ্য ও জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সরকারি কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা উদ্ধার অভিযান চালালেও কিছু এলাকায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ছে। বর্ষা মৌসুমের আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ এমা ব্রিগহাম বলেছেন, 'বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা শিশুদের ওপর চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনা ও জলবায়ু সংকটের অব্যাহত প্রভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বহু শিশু তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে, তাদের বাড়িঘর, স্কুল ধ্বংস হয়েছে এবং তারা এখন পুরোপুরি নিঃস্ব।’
তিনি বলেন, ‘ইউনিসেফ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তবে এই শিশুদের কাছে পৌঁছাতে এবং তাদের ভবিষ্যতের ওপর আরও বিধ্বংসী প্রভাব রোধ করতে আরও তহবিলের প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: ২০২১ সালে বিশ্বে বায়ু দূষণে ৮১ লাখ মৃত্যু: ইউনিসেফ
দুর্যোগের শুরু থেকেই ইউনিসেফ মাঠে রয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হাসান আরিফের সঙ্গে একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন মিশনে যোগদানের করে। ইউনিসেফ তার অংশীদারদের সঙ্গে ১৩ লাখ শিশুসহ ৩ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষের কাছে ৩৬ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, পানি সংরক্ষণের জন্য ২৫ হাজার জেরি-ক্যান এবং ২৫ হাজারেরও বেশি ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট স্যাচেট পৌঁছিয়েছে।
কিন্তু আরও অনেক কিছু দরকার। মানুষ ও শিশুদের জরুরি ভিত্তিতে নগদ অর্থ সহায়তা, বিশুদ্ধ খাবার পানি, হাইজিন কিট, জরুরি ল্যাট্রিন, স্যানিটারি প্যাড, ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট এবং জরুরি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ প্রয়োজন।
অসুস্থ নবজাতক ও শিশুদের চিকিৎসা এবং গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসবে সহায়তা করার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দ্রুতই চালু করতে হবে।
সাম্প্রতিক বন্যা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা এবং মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কাছাকাছি সময়ে আঘাত হানে।
সামষ্টিকভাবে তিনটি দুর্যোগে ৫০ লাখ শিশুসহ সারা বাংলাদেশে ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই তিনটি জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইউনিসেফের জরুরি ভিত্তিতে শিশুদের পাশাপাশি গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, জীবন রক্ষাকারী এবং বহু-খাত সংশ্লিষ্ট সহায়তার জন্য ৩৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ৭ লাখ ৭২ হাজারের বেশি শিশু ক্ষতিগ্রস্ত: ইউনিসেফ
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং অন্যান্য চরম দুর্যোগপূর্ণ ঘটনাগুলোর ফ্রিকোয়েন্সি, তীব্রতা ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি বাড়িয়ে তোলে। জলবায়ু সংকট মূলত শিশু অধিকারের সংকট।
ইউনিসেফের শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক অনুযায়ী জলবায়ু ও পরিবেশগত ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশের শিশুরা।
বিশ্বব্যাপী, ইউনিসেফ জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করে:
(ক) শিশুর জীবন, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিত করা
(খ) প্রত্যেক শিশুকে পরিবেশের জন্য চ্যাম্পিয়ন হতে ক্ষমতায়ন করা; এবং
গ) নির্গমন ও পরিবেশগত ক্ষতি হ্রাস।
ব্রিগহাম আরও বলেন, 'বছরের পর বছর বন্যা, তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশের লাখ লাখ শিশুর জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন স্পষ্টতই শিশুদের জীবন পরিবর্তন করছে।’
তিনি বলেন, 'শিশুদের জন্য বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে জরুরি ও জোরালো ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আমরা বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে ৩২ শিশু নিহতের বিষয়ে ইউনিসেফের বিবৃতির জবাব দিল সরকার
১৯৮ দিন আগে
তাপপ্রবাহে মৃত্যু-স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকিতে গবাদিপশু, ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে গবাদিপশুর মৃত্যুসহ মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে এত লম্বা সময় তাপপ্রবাহ দেখা যায়নি।
তবে দীর্ঘসময় ধরে তীব্র গরমে মানুষের পাশাপাশি ঝুঁকিতে রয়েছে গবাদিপশুও। মৃত্যুসহ মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির কারণে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এটি মাঠ পর্যায়ের ভেটেরিনারিয়ান ও প্রাণি বিশেষজ্ঞদের জন্য নতুন একটি অভিজ্ঞতাও। তারা মনে করেন বৈশ্বিক উষ্ণতায় জলবায়ু উপযোগী খামার ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও গবাদি পশু-পাখির জাত নির্বাচন নিয়ে গবেষণা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন: বাকৃবি অধ্যাপক
তীব্র তাপপ্রবাহে গবাদিপশুর উপর কেমন প্রভাব পড়েছে জানতে চাইলে ইউএনবিকে এসব তথ্য জানান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
চুয়াডাঙ্গার জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তীব্র গরমে পোল্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি হিট স্ট্রোকের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মাঠপর্যায়ে গবাদিপশুর ক্ষেত্রে খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। তাপপ্রবাহ শেষ হলে মাঠপর্যায়ে গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি কেমন হয়েছে সেটি জানা যাবে।
এসময় শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কর্ণ চন্দ্র মল্লিকও বলেন, তাপপ্রবাহ শেষ হলে মাঠপর্যায়ের সম্পূর্ণ অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে।
তবে বাকৃবির তিনজন প্রাণী বিশেষজ্ঞ প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান, প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান ও ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ তাপপ্রবাহে গবাদিপশুর কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পরামর্শও দিয়েছেন।
অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান বলেন, উষ্ণ তাপমাত্রায় মশা-মাছিসহ বিভিন্ন রোগ-জীবাণু বহনকারী কীটপতঙ্গের প্রজনন বাড়ে। তবে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এসব কীটপতঙ্গের প্রজনন বন্ধ হয় এবং মারা যায়।
এ প্রাণি বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতায় শীত প্রধান দেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে এসব কীটপতঙ্গ প্রজনন উপযোগী হওয়ায় অনেক কীটপতঙ্গ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে পশু-পাখি ও মানুষে পরজীবী আক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
মুরগির হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে প্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সহিদুজ্জামান বলেন, মুরগির শরীরে পানি স্প্রে না করারই পরামর্শ থাকবে। কারণ এতে মুরগি তার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বাধাপ্রাপ্ত হবে এবং ঘরের আর্দ্রতা অতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে শ্বাসকষ্টে মুরগি মারা যাবে।
এছাড়া মুরগিকে সকালে ও দিনের উত্তপ্ত সময়ে সার্বক্ষণিক খাবার না দিয়ে বাইরে তাপমাত্রা কিছুটা কমার পর বিকেল থেকে সার্বক্ষণিক খাবার দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আরেক প্রাণী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান ইউএনবিকে বলেন, প্রাণীর জন্য গরমের মধ্যে মানুষের মতো শরীর ঠান্ডা করে খাবার খাওয়ার তেমন সুযোগ নেই। প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা রোদের মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে, ঘাসসহ নানা রকম খাবার খাচ্ছে। এত গরমে তাদের শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে। ফলে তাদের সম্পূর্ণ কিডনি বা কিডনির একটি অংশ বিকলাঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উচ্চ তাপমাত্রায় গবাদিপশুর মস্তিষ্কে প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী অংশ হাইপোথ্যালামাস ভালোভাবে কাজ না করার আশঙ্কা রয়েছে। তখন শরীরের তাপমাত্রা হয় একদম কমে যাবে না হলে একদম বেড়ে যাবে। এমনকি এ পর্যায়ে গবাদিপশুর হজম ক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন: সুস্থ-সবল জাতি গঠনে ওয়ান হেলথ গুরুত্বপূর্ণ: বাকৃবি উপাচার্য
৩১৬ দিন আগে
‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতিতে আমলাতন্ত্রই বড় বাধা’
ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতিতে আমলাতন্ত্রই বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ভূমিকম্প সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অচিরেই বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ করা জরুরি। গত ২০-২৫ বছরে ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলায় সচেতনতা তৈরিতে প্রচুর অর্থ খরচ করা হলেও প্রস্তুতিতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে গলদ আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই এক্ষেত্রে বড় বাধা।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকার এফডিসিতে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি রোধে করণীয় নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
মেহেদী আহমেদ বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে সবাই আমলা। সেখানে কোনো ইঞ্জিনিয়ার বা জিওলোজিস্ট নেই। আমলারা দক্ষ জনবলের কথা আমলে নিই না। রাজউকে এখনও অনিয়ম রয়ে গেছে। এখানে দুর্নীর্তি হচ্ছে, টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। বিগত সময়ে যে দুনীর্তি হয়েছে আজ তা সংশোধন করা কঠিন। ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেমের (ইসিপিএস) মাধ্যমে রাজউকের নকশার অনুমোদন শুরু করা ইতিবাচক। কিন্তু এক্ষেত্রে এখনও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। ঢাকা শহরে ২১ লাখ ভবনের মধ্যে অকুপেন্সি সনদ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭০-৮০টিকে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সক্ষমতা অর্জন করতে পারলেও ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, নগরের ৬৫ শতাংশ ভবনই দুর্বল মাটির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। যা ভবন নিরাপত্তা ঝুঁকির অন্যতম কারণ। ভবন নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ হচ্ছে কি না তা নজরদারিতে ঘাটতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনার আহ্বান ইউজিসি চেয়ারম্যানের
তিনি বলেন, অভিযোগ রয়েছে রাজউক থেকে নকশার অনুমোদন পেতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। নির্মাণ শেষে বিল্ডিংয়ের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট পেতেও বেশ কষ্ট হয়। এমনকি নকশা অনুমোদন ও বিল্ডিং কোড মানার ক্ষেত্রে রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। ভবন নির্মাণের অনিয়মের সঙ্গে ভবন মালিক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কিছু কিছু অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত।
চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, শুধু ঢাকা শহর নয়, দেশের সব জায়গায় ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যতক্ষণ পর্যন্ত ভবন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত নিয়ন্ত্রক সংস্থা নৈতিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, তবে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে সরকারকেই। ভবন মালিকের ক্যাপাসিটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা শহরে অপরিকল্পিতভাবে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লাইন নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০ দফা সুপারিশ করেন। যথা-
১) বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা
২) ভবন নির্মাণে ভূমিকম্প সহশীলতা নির্দেশিকা মানতে বাধ্য করা
৩) ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা চিহ্নিত করে এগুলোকে ভূমিকম্প সহনীয় করা
৪) ভবন নির্মাণে সব উপকরণ পরীক্ষার জন্য রিসার্চ, ট্রেনিং ও টেস্টিং ল্যাবরটরি স্থাপন নিশ্চিত করা
৫) ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদারের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সক্ষমতা বাড়ানো
৬) ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত তথ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জানানো
৭) প্রতি তিন মাস পরপর ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাসমূহের সমন্বয় ও প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা এবং মহড়া নিশ্চিত করা
৮) ভবন নির্মাণে নকশার ব্যত্যয় রোধে ভবনের অনুমোদিত নকশা অনলাইনে দেওয়া
৯) বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ ও ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেট বরাদ্দ রাখা
১০) রাজধানীর প্রতি ওয়ার্ডে আরবান রেসকিউ টিম তৈরি করে তাদের প্রশিক্ষিত করা।
‘ভবন মালিকদের দায়িত্বশীলতাই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে’- শীর্ষক ছায়া সংসদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিতার্কিকদের পরাজিত করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক শাহরিয়ার অনির্বাণ ও স্থপতি সাবরিনা ইয়াসমিন মিলি।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের ক্রেস্ট, ট্রফি ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিষণ্ণতায় ভুগছেন ৭৪ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী: গবেষণা
বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তালিকায় গাজীপুরের বশেমুরকৃবি
৪৬৩ দিন আগে
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে গুরুত্বপূর্ণ পাগলার বাজার
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে পাগলার বাজার। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার দুর্গম নারায়ণপুর ইউনিয়নের পদ্মারচর গ্রামে অবস্থিত এই জমজামট বাজারটি।
চলতি বছরের বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে বাজারের দেড়শটি দোকানের মধ্যে ২২টি দোকান নদীগর্ভে চলে গেছে।
ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে- পদ্মারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পদ্মারচর আবাসন প্রকল্প, আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি।
বাজারটি রক্ষায় এলাকাবাসী, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীগণ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
সরজমিনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের নৌঘাট থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা শ্যালো নৌকায় পৌঁছানো হয় পাগলার বাজার নামক স্থানে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে ৫০টি বাড়ি বিলীন
সেখানে গিয়ে দেখা যায় বাজারটির ভাঙন কবলিত দুর্দশা। বাজারের উত্তর-পশ্চিম ঘেঁষে ২২টি দোকানের স্থানটি নদীতে ধ্বসে পরেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি দোকান।
বাজারের ইজারাদার শাহাজুল হক জানান, ২০১২ সালে বাজারটি স্থাপন করা হয়। প্রথমে এমপির বাজার নামকরণ করা হলেও একজন অচেনা পাগলের আবির্ভাবের পর এর নাম হয়ে যায় পাগলার বাজার। এই বাজারের আশে পাশে কোন বাজার নেই। উত্তরে ৫ কিলোমিটার নৌপথে রয়েছে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা নারায়ণপুর বাজার।
তিনি আরও জানান, দক্ষিণে রয়েছে ১০ কিলোমিটার নৌপথে যাত্রাপুর বাজার। এখানকার ১০টি চরের ২০ হাজার মানুষের কেনাকাটার জন্য রয়েছে একমাত্র এই বাজারটি। এটি ভেঙে গেলে বাজারের দেড়শ ব্যবসায়ী পরে যাবে চরম বিপদে। দুর্গম এলাকা জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে কোন কাজ করতে চায় না। আমরা বাজার, স্কুল ও আবাসনটি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মানববন্ধন ও সমাবেশ আয়োজন করেছি।
বাজারের ব্যবসায়ী মানিক হোসেন ডাক্তার, জাহেদুল ইসলাম ও রফিকুল মাস্টার জানান, আমাদের পদ্মারচরটি প্রায় ৭০ বছরের পুরনো চর। এখানে প্রায় ২ হাজার ৬০০ পরিবারের বসবাস। এছাড়াও পাশেই রয়েছে ঝুনকারচর, দেবারী খোলা, পয়াস্তি ঝুনকা, অস্টআশির চর, রলাকাটা, বারোবিশ, নারায়ণপুর, মোল্লাপাড়া, ব্যাপারীর চর ও শান্তিয়ার চর। এসব চরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ক্রয়-বিক্রয় করে এই বাজার থেকে। এই বাজার ভেঙে গেলে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা-বিক্রেতা ভীষণ বিপদে পরে যাবে।
এই বাজারের অরছব আলী, দুলাল, বুলু ও আলী হোসেন জানান, কুড়িগ্রাম জেলায় ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর ও দ্বীপচর। চরবাসীদের জীবন-জীবিকার সাথে হাট-বাজারগুলোর অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। জেলার দুর্গম ব্রহ্মপুত্র নদের ভেতরে স্থানীয়দের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাগলার বাজারটি আশপাশের ১০টি চরের মানুষের একমাত্র ক্রয়-বিক্রয় ও সময় কাটানোর জায়গা। বিকাল হলেই লোকজন এক কাপ চা আর গল্প করার জন্য এখানে ছুটে আসেন। এছাড়াও সপ্তাহে হাট বসে শুক্রবার ও সোমবার। হাটটি বিলিন হলে বিপদে পড়বে ২০ হাজার মানুষ।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। পাগলার বাজারে ভাঙনের কথা আমরা জানতে পারলাম। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আরও পড়ুন: রূপসায় নদী ভাঙন, ৫২৫ হেক্টর আবাদি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানোর আতঙ্কে এলাকাবাসী
৫৩৯ দিন আগে
পরিবেশগত ঝুঁকি রোধে টেকসই সমাধান খুঁজতে হবে: স্পিকার
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশগত ঝুঁকিও বাড়ছে উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘বৈশ্বিক পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশের অবদান সর্বনিম্ন হলেও পরিবেশগত ঝুঁকির দিক থেকে সবচেয়ে উপরে অবস্থান করছে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি রোধে উদ্ভাবনী টেকসই সমাধান খুঁজতে হবে।’
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে ‘ক্লাইমেট পার্লামেন্ট, ‘দ্য আর্থ, ‘অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’এবং ‘ক্লাইমেট পার্লামেন্ট, বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলন-২০২৩’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন: স্পিকার
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে নবায়নযোগ্য ও গ্রিন এনার্জির ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদও দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কার্যকর সহযোগিতার পরিসর বাড়াতে আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে। পরিবেশ ইস্যুতে আঞ্চলিক ঐক্য বৃদ্ধিতে দেশ ও সীমানার ঊর্ধ্বে উঠে কার্যকর আলোচনা করতে হবে।’
আঞ্চলিক জলবায়ু সম্মেলন-২০২৩ আয়োজন একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘এই সম্মেলন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশগত সংকট নিয়ে আলোচনা করার পথ প্রশস্ত করেছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবিলায় এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
এ সম্মেলনে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের আহ্বায়ক সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক স্বাগত বক্তব্য দেন। এ ছাড়াও বিশেষ বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়।
সংগঠনের চিফ প্যাট্রন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট, ইন্ডিয়ার সভাপতি সংসদ সদস্য ড. সঞ্জয় জয়স্বল এবং পিকেএসএফের সভাপতি ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সহসভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: স্পিকারের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
স্পিকারের সঙ্গে সফররত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ
৫৫৫ দিন আগে
শতবছর পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, দেশে ঝুঁকিতে থাকা শতবছরের পুরনো ভবন ভেঙে ফেলা হবে।
তিনি বলেন, ওই জায়গায় ভবন নির্মাণ সম্পর্কিত নতুন নীতিমালা অনুযায়ী জমির মালিককে সহজ শর্তে ও বিনা সুদে ঋণ দিয়ে নতুন ভবন করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন: চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত বন্ধু: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত দুর্যোগ সহনশীল সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী বলেন, জাপানের মতো ভূমিকম্পপ্রবণ দেশে যেসব পুরনো ভবনের নির্মাণপদ্ধতি ঠিক ছিল না, ডিজাইন ছিল না, রড সিমেন্ট ছিল না; সেসব ভবন ভূমিকম্পসহিষ্ণু ভবনে রূপান্তর করা হয়েছে। এ জন্য তাদের সময় লেগেছে ৩০ বছর।
আমরাও আশা করছি আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশকে ভূমিকম্পসহনীয় রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা ভবনের সংখ্যা অনেক। নতুন যেসব ভবন তৈরি হচ্ছে সেগুলো ভূমিকম্পসহিষ্ণু কিনা তা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে প্রকৌশলীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে দেওয়া হবে। তারা এসব ভবন পরীক্ষা করে ঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলো সংশোধনের ব্যবস্থা করবে।
তিনি বলেন, শুধু কথা নয়, মানুষের জন্য সত্যিকার অর্থে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন খাতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও, ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে আছে। আমরা সেদিকে মনোযাগ দিয়েছি। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আহ্বান করা হচ্ছে।
এছাড়াও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, জাপানসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে বৈঠক করে প্ল্যান অব অ্যাকশন মোতাবেক কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে উপকূলের ৬ জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগ মোকাবিলায় টেলিযোগাযোগ সেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
৫৫৮ দিন আগে