মিষ্টি
শিল্পকলায় মিষ্টি মেলা: বাহারি মিষ্টির স্বাদ-গন্ধে মাতোয়ারা রাজধানীবাসী
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি নিয়ে গত বুধবার (৬ মার্চ) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হয়েছে প্রথমবারের মতো জাতীয় মিষ্টি মেলা ২০২৪।
৫ দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। খাদ্য সংস্কৃতি হিসেবে দেশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলোকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভিন্নধর্মী এ আয়োজন। এতে অংশ নিয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা ৬৪ এর অধিক মিষ্টি শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) প্রথম জাতীয় মিষ্টিমেলার দ্বিতীয় দিন বিকেলে মূল অনুষ্ঠানের আগে পরিবেশিত হয় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সংগীত পরিবেশন করে সরকারি সংগীত কলেজ। সমবেত শাস্ত্রীয় সংগীত ‘রাগ বৈরাগী ভৈরব’ এবং সমবেত যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন তারা। এরপর পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হয় একক সংগীত। একক সংগীত পরিবেশন করেন ড. ফকির শহীদুল ইসলাম, শেখ খালিদ হাসান, মাইনুল আহসান, ছন্দা চক্রবর্তী, উত্তম কুমার সাহা, মফিজুর রহমান, এম এ মমিন, উর্বী সোম, সৌমিতা বোম, পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডল, সাইফুল ইসলাম, এম এম ইউনুসুর রহমান ও গোলাম মোস্তফা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মনসুর।
প্রথম জাতীয় মিষ্টি মেলা ২০২৪, ১০ মার্চ পর্যন্ত চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৫টায় থাকবে লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
৮ মাস আগে
হিলি সীমান্তে বিএসএফকে বিজিবির মিষ্টি উপহার
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কে মিষ্টি উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার ১২টার দিকে সীমান্তের চেকপোস্টর শূন্য রেখায় বিজিবির হিলি সিপি ক্যাম্পের সুবেদার মোকলেছুর রহমান ভারতের হিলি বিএসএফের ক্যাম্পের এএসআই বালকিশানের হাতে পাঁচ প্যাকেট মিষ্টি তুলে দেন।
আরও পড়ুন: বাংলা নববর্ষ: হিলি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
পরে দুই বাহিনীর পক্ষ থেকে একে অপরের কুশল বিনিময় করেন।
বিজিবির হিলি সিপি ক্যাম্পের সুবেদার মোকলেছুর রহমান জানান, সীমান্তে সোহার্দ-সম্প্রতি ও ভ্রাতত্ববোধ বজায় রেখে বিজিবি ও বিএসএফ তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে এবং দুইবাহিনীর মধ্যে বিরাজমান সুসম্পর্ক যেন আরও জোরদার হয় সেই লক্ষে মিষ্টি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়েছে। এসময় বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
২ বছর আগে
খুলনায় ভোজন রসিকদের টানছে কাঁচা মরিচের রসগোল্লা
কাচের তাকে সাজানো নানা নাম আর বাহারি রঙয়ের রসগোল্লা, মিষ্টি ও সন্দেশ। একেকটির স্বাদ একেক রকম। কোনোটা ঝাল-মিষ্টি, কোনোটা অরেঞ্জ আবার কোনোটা শুধুই মিষ্টি। তবে কাঁচা মরিচের রসগোল্লা একটু ঝাল, একটু মিষ্টি স্বাদের। দেখতে যেমন সুন্দর, স্বাদে-গন্ধেও অতুলনীয়। বাহারি রঙ, স্বাদ ও ঘ্রাণের এই রসগোল্লা টানছে খুলনার ভোজন রসিকদের।
খুলনা মহানগরীর গল্লামারী ও সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের মধ্যবর্তী স্থানে রাজ মহল ফুড কোর্ট অবস্থিত। রাজ মহলের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রাজ মিঠাই।
এখানে মিলছে কাঁচা মরিচের রসগোল্লা, স্ট্রোবেরি রসগোল্লা, অরেঞ্জ রসগোল্লা, রসের রসগোল্লা, স্পঞ্জ, ক্ষির চমচম, ক্ষির স্যান্ডউইচ, চকলেট বরফি, লেমন বরফি, কাঁচা সন্দেশ, কাশ্মীরি লাড্ডু, কালোজাম, ড্রাই রসগোল্লা, কাজু বরফি, মালাই সরাই, জাফরান ভোগ, গোলাপ জাম, দধিসহ প্রায় ১০০ ধরনের ভিন্ন স্বাদের মিষ্টান্ন।
আরও পড়ুন: বসন্ত দোলায় পর্যটকরা: ফাগুনে মেরিনড্রাইভ সেজেছে পলাশ-শিমুলের অপরূপ সাজে
এর মধ্যে ব্যতিক্রমী কাঁচা মরিচের আর অরেঞ্জের রসগোল্লা।
রাজ মহল ফুড কোর্টে পরিবার নিয়ে আসা নেইনা রুমানা বলেন, এই মিষ্টিটা খুলনায় প্রথম রাজ মহলই নিয়ে আসছে। এই জন্য পরিবার নিয়ে এসেছি মিষ্টিটার স্বাদ নিতে। টেস্ট একটু ঝাল ঝাল, মিষ্টিও আছে। একটা জিনিস ভালো লেগেছে-মিষ্টিটা অতিরিক্ত না, আবার ঝালটাও অতিরিক্ত না। দুটোই সহনীয় পর্যায়ে আছে।
২ বছর আগে
দুর্গাপূজার মহোৎসবে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ১০ পদের মিষ্টি
শারদীয়া দুর্গাপূজা মানেই আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি জুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহান ধর্মীয় উৎসব। বাঙালিদের এই মহোৎসবে দেবী দুর্গার স্তুতির সাথে সাথে পেট পূজাও চলে সমানতালে। এসময় আরাধনার জন্য তৈরি প্রসাদের স্বাদে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার সীমানা ছাড়িয়ে দিগ্বিদিক একাকার হয়ে যায়। পূজা উপলক্ষে একদিকে যখন চলে পোশাক-আসাক ও সাঁজ-গোজের কড়চা, অন্যদিকে ভোজন রসিক বাঙালি স্বপ্ন বুনতে থাকে মিষ্টি দিয়ে উদরপূর্তির। এ শুধু ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত জিবের খোরাক মিটানো নয়, দুর্গাপূজার মিষ্টি বাঙালির ঐতিহ্যও বটে। বাঙালির ঘরে ঘরে অন্যান্য জমকালো অনুষ্ঠানগুলোতেও ভোজন পর্বের এক বিরাট অংশ জুড়ে জায়গা করে নেয় এই মিষ্টিগুলো।
দুর্গাপূজার এই মিষ্টিগুলোতেই ভরপুর থাকবে এবারের ফিচারটি।
দুর্গাপূজায় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ১০ পদের মিষ্টি
নলেন গুড়ের সন্দেশ
শীতকালে খেজুরগাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খাঁটি নলেন রস আর এই রসেই বানানো হয় নলেন গুড়। এই গুড়ের ডিশের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। বংশ পরম্পরায় বিশেষত হিন্দু কারিগরেরা নলেন গুড়ের সন্দেশ বানিয়ে থাকেন। নলেন গুড়ের সাথে এই সন্দেশ বানানোর প্রধান উপাদান দুধের ছানা।
বছরের শেষ নাগাদ শীত ও বসন্ত জুড়ে প্রায় ছয় মাস এই সন্দেশ পাওয়া যায়। আর তাই এই সময়ের বাঙালির প্রতিটি উৎসবে ভোজের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় এই মিষ্টান্নটি। চিনির বদলে এই গুড় ব্যবহার করে তৈরি করা নলেন গুড়ের পায়েসও বেশ জনপ্রিয়।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
ছানার পায়েস
বাঙালির প্রতিটি উৎসবে ছানার পায়েসের জুড়ি মেলা ভার। চেখে দেখার আগে ছানার ক্যানভাসের উপর পেস্তা, কিশমিশ, অ্যামন্ড ও কাজু বাদামের সজ্জা দেখেই মন ভরে যায়। তাই পরিবেশনের সাথে সাথেই বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো কারোরই গলধকরণে বেগ পেতে হয় না।
অনেকের কাছে এটি ক্ষীর বা ফিরনি নামেও পরিচিত। মূলত পায়েস হলো মোঘল আমলের মিষ্টান্ন। এতে কাশ্মিরী ও পারস্য রন্ধনশৈলী সংযোজিত হয়ে তৈরি হয় ফিরনি। আর ফিরনিতে উত্তর ভারতীয় রীতিতে দুধের মিষ্টি থাকায় এর নাম কোথাও কোথাও বদলে ক্ষীর হয়ে যায়।
পড়ুন: থটস অফ শামস: মজার সব চরিত্রে এককভাবে অভিনয়কারী প্রতিভাবান কন্টেন্ট নির্মাতা
মিষ্টি দই
মিষ্টি দইকে মিষ্টির রাজা বলা যেতে পারে। শুধুমাত্র ঘনীভূত দুধ ও চিনিতে তৈরি আশ্চর্য এই খাবারটির স্বর্গীয় স্বাদ একবার নিলে বারবার মনে করিয়ে দেয়। মুখের ভেতরে নিয়ে হালকা চাপ দিতেই অমৃত স্বাদের অনুভূতি জানান দিতে শুরু করে।
বাংলাদেশসহ ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের প্রিয় মিষ্টান্নের নাম মিষ্টি দই। বগুড়ার দইয়ের জগৎ জোড়া খ্যাতির কথা সবার-ই জানা। স্থানীয়দের মতে দইয়ের ইতিহাস প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো। সে সময় বগুড়ার কাছেই অবস্থিত শেরপুরে বসবাসরত ঘোষ সম্প্রদায় বংশ পরম্পরায় দই বানানোর কাজ করতো।
পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
রসগোল্লা
ভোজনরসিক বাঙালির পরিচয় বহন করে রসগোল্লা, যার জন্য এর মিষ্টান্নের নাম বলা হয় বাঙালির রসগোল্লা। কড়া রান্না করায় পোড়ামাটির মতো বাদামি রঙের হয় এই মিষ্টি। এই মিষ্টিকে ভিত্তি ধরে বানানো হয় বিভিন্ন নামকরা মিষ্টি। এগুলোর মধ্যে রাজভোগ ও ক্ষীর কদম অন্যতম।
রসগোল্লার উৎপত্তি নিয়ে বেশ মতবিরোধ আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে পর্তুগীজদের আমলে বর্তমান বরিশালের পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় হিন্দু ময়রাগণ রসগোল্লা বানাতেন। পরবর্তীতে এদের বংশধরেরা কলকাতা, ওড়িশায় স্থানান্তরের মাধ্যমে সেখানেও রসগোল্লার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে দেন।
পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
রাজভোগ
ছানা, জাফরান ও শুকনো ফলের মিশ্রণে চিনিতে ভরপুর জিহ্বে জল আনা মিষ্টি রাজভোগ। আকারে বড় মুখ রোচক এই স্পঞ্জি মিষ্টিগুলো অনেকটা রসগোল্লার মত। খোয়া দিয়ে ভরা এই রসাল মিষ্টি একের পর এক শেষ করার জন্য রীতিমত দুঃসাহসের প্রয়োজন। কারণ মিষ্টি স্বাদের এই আধিক্য একমাত্র শুধু মিষ্টিপ্রেমীদের পক্ষেই বশে আনা সম্ভব। এরপরেও দেশ-বিদেশের মিষ্টিপ্রিয়রা একবার হলেও এই মিষ্টির স্বাদ আস্বাদন করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে রাখেন।
পান্তুয়া
পশ্চিমবঙ্গের কালনা, রানাঘাট ও কাটোয়ায় বিখ্যাত এই মিষ্টান্ন বেশ সুস্বাদু এবং হৃদয়গ্রাহী। পান্তুয়া অনেকটা গুলাব জামুনের মতো দেখতে এই রসাল মিষ্টি ছানা, ময়দা, ও খোসার পেস্ট থেকে তৈরি করা হয়। মাঝারি আকারের মিষ্টিবলগুলো ডুবো চিনির সেরায় ভেজে তাতে এলাচ দেয়া হয়।
পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
এই মিষ্টিটির জনপ্রিয়তা শুরু হয় দেশভাগের সময় সুরেন্দ্রলাল কুন্ডুর হাত ধরে। সে সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাটোয়ায় চলে যান এবং ছেলে প্রাণকৃষ্ণকে সাথে নিয়ে একটি খাবারের দোকান দেন। সেখানেই প্রাণকৃষ্ণ বানাতে শুরু করেন ক্ষীরের পান্তুয়া। প্রাণকৃষ্ণের ডাকনাম পরান-এর নামানুসারে স্থানীয়রা মিষ্টান্নটিকে পরানের পান্তুয়া বলে ডাকতে শুরু করে।
ল্যাংচা
বর্ধমানের রাজা তাঁর পূত্রবধূর মিষ্টি খাওয়ার শখ মেটাতে নদিয়া নিবাসী ময়রা নামক এক ল্যাংড়া মিষ্টির কারিগরকে রাজপ্রাসাদে ডেকে আনিয়েছিলেন। ময়রা’র বানানো মিষ্টির স্বাদে মুগ্ধ হয়ে তাকে বর্ধমানের বড়শূল গ্রামে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। ময়রা’র মিষ্টির দোকান করে দেয়া হয় বাদশাহী সড়কের উপর শক্তিগড় গ্রামে, যেখান থেকে প্রতিদিন এক মণ করে মিষ্টি যেতো বর্ধমান প্রাসাদে। পরবর্তীতে এই ময়রা’র মিষ্টান্ন ল্যাংচা নামে বহুল পরিচিতি পায়।
পান্তুয়ার একই গোত্রভুক্ত এই রসাল মিষ্টিটি প্রথমে নলাকার ছিলো। পরে এটি পান্তুয়ার মতই গোলাকার করা হয়। অনেকের কাছে এটা বাংলাদেশের কালোজামের মত দেখতে।
পড়ুন: ২০০ কেজি সোনায় কারুকার্যমণ্ডিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পবিত্র কোরআন
চমচম
বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম বাঙালির একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। ভারতের উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলার রাজা রামগড় ও তাঁর নাতি মতিলাল গড়-এর অবদানে এই মিষ্টি স্বাদ ও উপাদানের গুণগত মানে সিদ্ধি লাভ করে।
প্রায় দুইশত বছর পূর্বে যশোরত হাল নামের এক কারিগরের হাতে প্রথম চমচম তৈরি হয়। টাঙ্গাইলের
যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানির সহজাত বৈশিষ্ট্যের কারণে চিনির গায়ে দ্রবণ থাকায় অন্যান্য মিষ্টি থেকে চমচম অপেক্ষাকৃত কম পচনশীল হয়ে থাকে। মাখন, চিনি ও ময়দার মিশ্রণে সুস্বাদু এই মিষ্টিকে বাংলাদেশের মিষ্টির রাজা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
পড়ুন: মাগুরায় ৭১২ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
ক্ষীর কদম
বাইরে গুড়ো চিনির খোয়া ভাজা ক্ষীর এবং ভেতরে লুকানো রসগোল্লা- এই দুই স্তরের ক্ষীর কদম খেতে যেমন মজা দেখতেও তেমনি সুন্দর। পরিবেশনে আলাদা সৌন্দর্য্য আনার জন্য এর অতিরিক্ত কিছুই প্রয়োজন পড়ে না। কদম ফুলের মত দেখতে হওয়ায় মিষ্টান্নটির এরকম নামকরণ। ক্ষীর ও কদমের এমন দারুণ সংযোজনে বাঙালির পূজাগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে। এছাড়া শৈল্পিক রন্ধনপ্রণালীর এক আশ্চর্য প্রয়োগ এই ক্ষীর কদম যেখানে মেহমান ও মেজবান উভয়ের মাঝেই মুগ্ধতা সৃষ্টি করে।
কাঁচাগোল্লা
গরুর দুধের কাঁচা ছানা ও এলাচে মিশ্রিত নিমেষেই মুখ মিষ্টি করে দেয়ার মত একটি খাবার এই কাঁচাগোল্লা। কাঁচাগোল্লার নামের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের জেলা নাটরের নামটি।
একদা নাটরের প্রসিদ্ধ লালবাজারের মধূসুদন পাল-এর মিষ্টির দোকানে কারিগর না আসায় দুশ্চিন্তায় পড়ে যান দোকানের মালিক। এরপরেও তিনি কর্মচারীদেরকে কাঁচা ছানাতে চিনির রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে রাখতে বলেন। অবশেষে সেই ছানা চেখে দেখে বিস্মিত হয়ে যান। এই কাঁচা ছানার মিষ্টির কথাই সে সময় কাঁচাগোল্লা নামে ঢোল পিটিয়ে চারপাশ জানানো হোতো।
পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
মিহিদানা
১৯০৪ সালে বর্ধমানের মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগ সর্বপ্রথম মিহিদানা তৈরি করেছিলেন। বর্ধমানের ভূস্বামী বিজয়চাঁদ মহতাব বড়লাট জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন-এর বর্ধমান ভ্রমণ স্মরণীয় করতে এই মিষ্টি বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি বুন্দিয়ার আদলে তৈরি রঙ-বেরঙের এই চমৎকার মিষ্টিটি অবলীলায় ভোজনরসিকদের মন জয় করে নেয়। এর মুল উপাদান বেসন, ঘি, চিনি, জাফরান ও চাল হলেও এখন অনেক কারিগর এতে চিনির বদলে খেজুরের গুড়ও ব্যবহার করছেন।
পরিশিষ্ট
যুগ যুগ ধরে দুর্গাপূজার মিষ্টিগুলো বাঙালিয়ানাকে সমৃদ্ধ করেছে। আবহমান বাংলার ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর উপসনাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানগুলোতে করেছে প্রাণের সঞ্চার। এরকম আরো বহু মিষ্টান্নের আকর্ষণের জন্য এদের কারিগরেরা বেশ মর্যাদার আসনে আসীন হন। বর্তমানে যোগাযোগ মাধ্যমের উৎকর্ষের কারণে ঘরে ঘরে এ ধরণের মিষ্টি বানানোর রেসিপিও ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্যব্যাপী। ফলে পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি বাঙালির মিষ্টিমুখ অনুষ্ঠানে অবলীলায় জায়গা করে নিচ্ছে দুর্গাপূজার মিষ্টি।
পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
৩ বছর আগে
ভারত সীমান্তে সীমান্তরক্ষীদের মিষ্টি এবং ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বুধবার সকালে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষীরা মিষ্টি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) কমান্ডার সুবেদার শওকত আলী মোল্লা জানান, ভারতীয় পক্ষের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) কমান্ডারের কাছে মিষ্টি উপহার দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ করোনা মহামারির মাঝে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ইদুল আজহা
জয়পুরহাট -১০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার রমাকান্ত সিং উপহার হিসেবে এই মিষ্টি পাঠিয়েছেন।
বিজিবি শিবিরের কমান্ডার জানিয়েছেন, ধর্মীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠান উদযাপনের সময় উভয় দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে বিজিবি এবং বিএসএফ ঐতিহ্য হিসেবে উপহার, শুভেচ্ছা ও মিষ্টি বিনিময় করে আসছে।
এদিকে, বিএসএফ শিবিরের কমান্ডার বলেন ‘এই জাতীয় মিষ্টি ও শুভেচ্ছা বিনিময় উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষীদের প্রেরণা জুগায়।’
৩ বছর আগে
চাঁদপুরের মতলবে বাবার লাশ দাফনের পরই বিয়ের পিড়িতে ছেলে
ছেলেকে বিয়ের মিষ্টি কেনার জন্য বাজারে যাওয়ার সময় সড়ক র্দুঘটনায় লাশ হলো বাবা। সেই বাবার লাশ দাফন করেই বিয়ে করে নববধূকে ঘরে তুলেছেন ছেলে। নিহতের নাম আবুল খায়ের বকাউল(৬৫) ।
জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার নাগদা গ্রামে শুক্রবার বিকালে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
আজ শনিবার সারাদিন লোকজনের মুখে এই ঘটনাই ছিলো আলোচনার বিষয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫, আহত-২০
স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আবুল খায়ের বকাউলের ছেলে রুবেল বকাউলের (কাতার প্রবাসী) সাথে একই গ্রামের মজিব প্রধানের মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করা হয় শুক্রবার।
জুম্মা নামাযের পর ছেলের বিয়ের মিষ্টি ও কিছু বাজার করতে বাড়ির কাছ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোবাইকে করে মতলব বাজারের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন আবুল খায়ের। দগরপুর এলাকায় যাওয়ার পর বিপরীত দিক থেকে আসা একটি নসিমনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোবাইকে থাকা আবুল বকাউল ছিটকে নসিমনের নীচে পড়ে যান। ছেলেসহ স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্বার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওইদিন বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
পরে তার পরিবারের লোকজন এসে আবুল খায়েরের লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত
এদিকে লাশ দাফন করার পর সন্ধ্যায় ছেলে রুবেল বাবার পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে প্রতিবেশী জিলানী তালুকদারসহ অনেকে বলেন, বিয়ের দিন পূর্ব নির্ধারিত হওয়ায় পরিবারের সিদ্ধান্তে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিষয়ে মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া জানান, বিষয়টি জানি না । কেউ থানা পুলিশকে অবহিতও করেনি। তবে, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কারোর কোন অভিযোগও নেই।
৩ বছর আগে
মিষ্টির প্যাকেটের ওজনই ১৯২ গ্রাম!
বিয়ে বা আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাওয়ার সময় মিষ্টি নিয়ে যাওয়া, কিংবা যেকোনো খুশির খবরে মিষ্টিমুখ করানোর রীতিটা বহুদিনের।
৪ বছর আগে
বিজয় দিবসে বিএসএফকে বিজিবির মিষ্টি উপহার
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে মিষ্টি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ- বিজিবি।
৪ বছর আগে