ইংল্যান্ড
রেকর্ডের মালা গেঁথে নতুন ইতিহাস গড়ল অস্ট্রেলিয়া
৩৫১ রান তুলে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গড়া ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছিল ইংল্যান্ড। তবে সেই রেকর্ড এক দিনও ধরে রাখতে পারল না জশ বাটলার অ্যান্ড কোং। দ্বিতীয় ইনিংসেই তা টপকে একাধিক রেকর্ড গড়ে ম্যাচ জিতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বেন ডাকেটের অনবদ্য ১৬৫ রানের ইনিংসে ভর করে আট উইকেটে ৩৫১ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ২০০৪ সালের আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের গড়া ৩৪৭ রানের রেকর্ডটি ভেঙে এদিন রেকর্ড বইয়ে নিজেদের নাম তোলে ইংলিশরা।
এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর গড়েন বেন ডাকেট। তবে ইংলিশদের এসব রেকর্ড ম্লান করে পাঁচ উইকেটের এক স্মরণীয় জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ১৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্টিভেন স্মিথ অ্যান্ড কোং। ৪৭.৩তম বলটিতে ছক্কা হাঁকিয়ে দারুণ নৈপুণ্যে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন অ্যালেক্স ক্যারি।
এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যেকোনো ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড (৩৫৬) গড়ল অজিরা। তাছাড়া আইসিসির যেকোনো ওয়ানডে ইভেন্টে এটিই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০১৭ সালে ওভালে ভারতের বিপক্ষে ৩২১ রান তাড়া করে জয়ই ছিল তাদের সর্বোচ্চ।
আরও আছে; এটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান তাড়ার জয়।
এছাড়া এ জয়টি অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। তাদের সর্বোচ্চ রেকর্ডটি ৪৩৪ রানের; ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সেই ম্যাচটি খেলে তারা।
আরও পড়ুন: ডাকেটের ব্যক্তিগত কীর্তির দিনে ইংল্যান্ডের রেকর্ড সংগ্রহ
পাকিস্তানের মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটিও এই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেই গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ ৬ উইকেটে করা পাকিস্তানের ৩৬৮ রান তারা পেরিয়ে যায় এক ওভার বাকি থাকতেই। ৭ উইকেটে সেদিন ৩৭২ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচে ১৫৬ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন ট্র্যাভিস হেড।
আর টানা দুটি সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড দেখল গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন রেকর্ড অত্যন্ত বিরল।
আজকের ম্যাচে ৮৬ বলে আটটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ১২০ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন জশ ইংলিস।
মাত্র ৭৭ বলে সেঞ্চুরি করে ব্যক্তিগত রেকর্ডেও নাম উঠিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিরেন্দর শেবাগের সঙ্গে যৌথভাবে দ্রুততম শতকের মালিক এখন তিনি। এছাড়া ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ ইনিংস।
এ ছাড়াও আরও রেকর্ড হয়েছে ম্যাচটিতে। এই ম্যাচে দুই দল মিলে মোট ৭০৭ রান সংগ্রহ করেছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যা এক ম্যাচে সর্বোচ্চ মোট রানের রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ড গড়ে ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল ম্যাচ। সেই ম্যাচে মোট ৬৫৯ রান সংগ্রহ করে দুই দল। সেদিন ভারতের চার উইকেটে ৩৩৮ রানের সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩২১ রান তুলতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। ফলে ১৭ রানের হার দেখতে হয় দলটিকে।
ম্যাচটি আজ মোট ২৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছে দুদলের ব্যাটাররা (ইংল্যান্ড ৭, অস্ট্রেলিয়া ১৬), যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একটি ম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার ১৬টি ছক্কা এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এক ইনিংসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই রেকর্ডটি এখনও রয়েছে ভারতের দখলে। ২০১৩ সালের ১১ জুন ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮টি ছক্কা হাঁকান ভারতের ব্যাটাররা।
৩০ দিন আগে
ডাকেটের ব্যক্তিগত কীর্তির দিনে ইংল্যান্ডের রেকর্ড সংগ্রহ
রিয়ারে প্রথমবার আইসিসি ইভেন্টে খেলতে নেমেছেন ইংলিশ ব্যাটার বেন ডাকেট। নেমেই দিনটিকে শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসেও স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫১ রানের পুঁজি পেয়েছে ইংল্যান্ড।
এটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড। ২০০৪ সালের আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের গড়া ৩৪৭ রানের ইনিংসটিই এতদিন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ছিল।
এদিন ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বেন ডাকেট। ১৪৩ বলে ১৭টি চার ও তিনটি ছক্কায় ১৬৫ রান করেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এক ইনিংসে এটি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। এই রেকর্ড গড়ার পথে পথে তিনি ২০০৪ সালের ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের ন্যাথান অ্যাস্টলের করা অপরাজিত ১৪৫ রানের স্কোরটি ছাড়িয়ে যান।
আরও পড়ুন: ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নতুন দলে নাম লেখালেন সাকিব
ডাকেট ছাড়াও এদিন হাসে জো রুটের ব্যাট। শুরুর দিকে দুই উইকেট হারানোর পর ৭৮ বলে ব্যক্তিগত ৬৮ রান করে ডাকেটের সঙ্গে ১৫৮ রানের জুটি গড়েন তিনি।
দলীয় ৪৩ রানে দুই উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের পরবর্তী উইকেটটি যখন পড়ে, তখন স্কোরবোর্ডে দেখা যায় তিন উইকেটে ২০১ রান। ৩১তম ওভারের শেষ বলে রুট আউট হলে তাই মনে হচ্ছিল স্কোর আরও বড় হবে। তবে রুটের উইকেটের মধ্য দিয়েই হারানো ছন্দ খুঁজে পায় অস্ট্রেলিয়া। তারপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলতে থাকেন দলটির বোলোররা।
ওই দুই ব্যাটার বাদে অধিনায়ক জশ বাটলারের ২৩ ও শেষের দিকে জোফলা আর্চারের ১০ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংসটিই কেবল বলার মতো।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৬ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন বেন ডুয়ারশিস, আর দুটি করে উইকেট গিয়েছে অ্যাডাম জ্যাম্পা ও মার্কাস লাবুশেনের ঝুলিতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ৩৫১/৮ (ডাকেট ১৬৫, রুট ৬৮, বাটলার ২৩; ডুয়ারশিস ৩/৬৬, লাবুশেন ২/৪১, জ্যাম্পা ২/৬৪)।
৩০ দিন আগে
লন্ডন কি ২০২৫ এ আপনার পরবর্তী ভ্রমণ গন্তব্য?
সারা বছর ধরে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসুদের রিভিউ ও রেটিংয়ের ভিত্তিতে জনপ্রিয় সব ঘুরে বেড়ানোর শহর এবং রেস্তোরাঁর তালিকা প্রকাশ করে ট্রিপ অ্যাডভাইজার। এ বছর ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিনোদন ও পর্যটনসহ সামগ্রিক বিচারে ভ্রমণের সেরা গন্তব্যের খেতাব পেয়েছে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন। এই অর্জন বছরের পরবর্তী দিনগুলিতে লন্ডনের অত্যাশ্চর্যগুলো আলাদা করে আকর্ষণ করবে বিশ্ব পরিব্রাজকদের। যে মাপকাঠিগুলোর ভিত্তিতে ইউরোপের প্রসিদ্ধ মহানগরীটি এমন গুরুত্বপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে, চলুন, তার বিস্তারিত পর্যালোচনা করা যাক।
২০২৫ সালে লন্ডনের বিশ্বসেরা ভ্রমণ গন্তব্য হওয়ার নেপথ্যে
.
সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সুদৃশ্য স্থাপনা
লন্ডনের প্রতিটি ইমারতের গাঁথুনিতে মিশে আছে শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাসের নির্যাস, যা অর্বাচীন দর্শনার্থীদের শিহরিত করে শহরের প্রাণকেন্দ্র বিচরণের সময়। রোমান শাসনের প্রতিধ্বনি থেকে শুরু করে রাজকীয় বংশের মহিমার ঐতিহাসিক উপকরণগুলো এই নির্যাসকে রীতিমত অমৃত সুধায় রূপ দেয়। সংমিশ্রণে উদ্ভাসিত হয় শক্তি ও স্থায়িত্বের প্রতীক টাওয়ার অফ লন্ডন, রাজ্যাভিষেক ও রাজকীয় বিবাহের মঞ্চ ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে এবং ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সিংহাসন বাকিংহাম প্রাসাদ।
টাওয়ার ব্রিজ, বিগ বেন ও হাউস অফ পার্লামেন্টের অভিজাত স্থাপত্যশৈলী রাঙিয়ে তোলে লন্ডনের আকাশকে। শহরের সহস্র অতীতের চিহ্ন ধরে রাখা এই বহুতল ভবনগুলো খোরাক যোগায় বিস্ময়ের, একই সঙ্গে ফ্রেমবন্দি করার জন্য কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্তের।
আরো পড়ুন: শীতকালে নিরাপদে মোটরসাইকেল চালকদের প্রয়োজনীয় সেফটি গিয়ার ও পোশাক
বিশ্বমানের যাদুঘর ও গ্যালারী
শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসঙ্গে লন্ডনকে বলা যেতে পারে সর্বকালের বিশ্বকোষ। কেবল দর্শনের জন্যই নয়, এখানকার যাদুঘর ও গ্যালারীগুলো প্রাচীন নিদর্শন নিয়ে গবেষণার জন্যও যথেষ্ট রসদ যোগায়। তন্মধ্যে প্রাচীন নিদর্শনগুলোর বিস্ময়কর সংগ্রহশালা ব্রিটিশ মিউজিয়াম। সঙ্গে রহস্যময় প্রকৃতির অভিজ্ঞতা দিতে রয়েছে ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়াম।
ভিক্টোরিয়া, অ্যালবার্ট মিউজিয়াম ও টেট মডার্নে ফ্যাশন থেকে আসবাবপত্র পর্যন্ত সবকিছুতেই মেলে কারুশিল্পের ছোঁয়া। যুগযুগ ধরে এগুলোতে সংরক্ষিত নিদর্শনের সমাহার কেবল অমূল্যই নয়, খুব কাছ থেকে এক নজর দর্শনও অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতার সঞ্চার করে।
বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং প্রাণবন্ত নগর উপকণ্ঠ
ইংল্যান্ডসহ যুক্তরাজ্যের বৃহৎ এই নগরীতে পা রাখা মাত্রই যেকোনো আগন্তুক সর্বপ্রথম যে বিষয়টি অনুভব করেন, তা হলো এর স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। ক্যামডেন, শোরডিচ, নটিং হিল ও চায়নাটাউনের মতো শহুরে উপকণ্ঠগুলোর প্রত্যেকটি যেন এক টুকরো লন্ডন।
গভীর দৃষ্টিতে অচিরেই ধরা পড়ে শোরডিচের রাস্তায় ইট-কাঠ ও গলা ইস্পাতের সৃজনশীলতা ও নটিং হিলের পটে আঁকা ভিক্টোরিয়ান টাউনহাউস। নিভৃত নগরীর বেরসিক মানুষটিও ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে যান ক্যামডেনের বাজার ও চায়নাটাউনের খাবার পাড়ার বৈঠকখানায় শামিল হতে।
আরো পড়ুন: ফিলিপাইনের ভিগান ভ্রমণ গাইড : ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
নাট্যমঞ্চ ও বিনোদন
যুদ্ধটা যখন নাট্যমঞ্চ নিয়ে, তখন নিউ ইয়র্কের ব্রডওয়ের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে লন্ডনের ওয়েস্ট ইন্ড। এখানে সাক্ষী হওয়া যায় কিংবদন্তি দ্য ফ্যান্টম অফ দ্য অপেরা-র। ঐতিহাসিক গ্লোব থিয়েটারে গিয়ে উপভোগ করা যায় শেক্সপিয়রের জগদ্বিখ্যাত কাজগুলো।
এখানে সঙ্গীত উৎসাহীদের জন্য রয়েছে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলের গ্র্যান্ড অ্যাকোস্টিক ক্লাসিক্যাল ও ২ অ্যারিনার স্ফুলিঙ্গ দ্বীপ্ত কনসার্ট সন্ধ্যা। সঙ্গীতপ্রেমীরা যাই হোক না কেন, গীতি আর বাদ্যের ঐকতান নিমেষেই ঝড় তোলে আনমনে পাশ কাটিয়ে যাওয়া যেকোনো শ্রোতার মনের মুকুরে।
মনোরম পার্ক
শহুরের ব্যস্ততা আর জনাকীর্ণতাকে বহু যতনে আগলে রেখেছে সবুজ উদ্যানগুলো। নিঃসীম যান্ত্রিকতার মোড়কে যেন এক প্রাণোচ্ছল অভয়ারণ্য। হাইড পার্ক, রিজেন্টস পার্ক এবং হ্যাম্পস্টেড হিথ যেন তা-ই সগৌরবে ঘোষণা করে। সব বয়সের লোকের জন্য এখানে রয়েছে পিকনিক থেকে শুরু করে খেলাধুলার জায়গা। যারা একটু নিরিবিলিতে থাকতে চান তাদের জন্য রয়েছে হল্যান্ড পার্কের কিয়োটো গার্ডেন ও ব্রকওয়েল পার্কের বিস্তীর্ণ তৃণভূমি।
এই সবুজায়নের মাঝে শহরের বাসযোগ্যতা, গতিশীলতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সব মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। ক্লান্তিকর দিনের শেষে তাই ঘরে ফেরা লোকটির মনের মতো অবকাশ খুঁজে পেতে তেমন বেগ পেতে হয় না।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান,শপিংমল ও জনপ্রিয় খাবার
শপিংমল ও খাবারের দোকান
বাহারি পোশাকের সাজে ইউরোপীয় বিপণীকে কাছে থেকে দেখতে হলে অবশ্যই যেতে হবে লন্ডনে। তন্মধ্যে বিলাসবহুল পণ্যের খোঁজে ঢুঁ মারা যায় বন্ড স্ট্রিট, হ্যারডস ও বেস্পোক-এ। বাজেট-বান্ধব পণ্য পাওয়া যাবে পোর্টোবেলো রোড এবং ক্যামডেন মার্কেটে, যেগুলো কেনাকাটা ছাড়া ঘুরে বেড়ানোর জন্যও উপযোগী। ওয়েস্টফিল্ড স্ট্রাটফোর্ড সিটি ও ব্রেন্ট ক্রস শপিং সেন্টারে দারুণ মেলবন্ধন ঘটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর সঙ্গে উচ্চ ফ্যাশন ও ব্র্যান্ডের সামগ্রীর।
একই সঙ্গে বিচিত্র ইউরোপকে স্বাদের মাধ্যমে পরখ করে দেখার জন্য ভোজনরসিকদের শ্রেষ্ঠ জায়গাও এই লন্ডন। মিশেলিন-তারকার স্থাপনা থেকে শুরু করে বোরো মার্কেটের দোকানগুলোর খাবার প্রত্যেক শহরবাসীর হৃদয়কে জয় করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকে। ফিশ অ্যান্ড চিপস বা সানডে রোস্টের মতো ব্রিটিশ ভোজগুলো বিশ্বমানের শেফদের রন্ধনশৈলীকে প্রতিনিধিত্ব করে।
স্বাচ্ছন্দ্যময় পথঘাট
গহীন লোকারণ্য হলেও ভিড়গুলোর চলাফেরায় আরামদায়ক বেশভূষা অচিরেই টের পাওয়া যায়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে শহরের সহজলভ্য সরকারি যাতায়াত ব্যবস্থা। টিউব অথবা লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে শহরের প্রতিটি গন্তব্যে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। বাস এবং ওভারগ্রাউন্ড ট্রেনগুলো অতিরিক্ত সংযোগের মাধ্যমে ভ্রমণকে আরও নির্বিঘ্ন এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।
কর্মব্যস্ততার বাইরে অবকাশ যাপন ও পায়চারির জন্য নিবেদিত রাস্তাগুলোতে মেলে সুপরিকল্পিত নগরায়নে পরিচয়। ফলে যাত্রা একক বা সম্মিলিত যাই হোক না কেন, শহরের সুশৃঙ্খল পরিবহন নেটওয়ার্ক ভ্রমণের শতভাগ সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আরো পড়ুন: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ভ্রমণ গাইড
রাজকীয় ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা
এখানকার রাজসিক বহুতল দর্শনীয় ভবনগুলো অকপটে প্রকাশ করে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ঐতিহাসিক চাকচিক্য। গার্ড পরিবর্তনের অনুষ্ঠানের সময় বাকিংহাম প্যালেসের জাঁকজমক ভাব রীতিমত চোখ কপালে তোলার মতো। সুপরিচিত রাজকীয় মুখগুলোর প্রাক্তন বাসভবন দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন কেনসিংটন প্রাসাদে। সময় পরিভ্রমণে অতীতে নিয়ে যাওয়ার হাতছানি দেয় হ্যাম্পটন কোর্ট প্যালেস টিউডর।
এগুলো ভ্রমণের সময় সুদৃশ্য দেয়ালের জড় আভরণে সুপ্ত অভিজাত গল্পগাঁথাগুলো অনুগত শ্রোতায় পরিণত করে পর্যটকদের। ফলশ্রুতিতে প্রায়ই চোখে পড়ে সদ্য আসা কোনো দর্শনার্থী কোনো ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতির সামনে মোহাবিষ্ট হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
উদ্ভাবন ও আধুনিকতা
মহাকালের বির্বতনের এক উন্মুক্ত প্রতিচ্ছবি এই লন্ডন। শতাব্দী পুরনো ইতিহাস অঙ্গে ধারণ করে এখনও অগ্রগতির ধারা বজায় রেখেছে মহানগরীটি। দ্যা শার্ড, দ্যা ঘের্কিন এবং দ্যা লন্ডন আই-এর মতো আধুনিক কাঠামো তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এগুলোর স্থাপত্যশৈলী প্রাচীনতা থেকে নগরের অধুনা যুগের পথে বিবর্তিত যাত্রাকে অভিহিত করে।
তাই প্রযুক্তি উৎসাহীদেরকেও এতটুকু হতাশ করে না আধুনিক লন্ডন। বিশ্ব-মানের প্রযুক্তি ইভেন্ট ও প্রদর্শনী হোস্ট করার জন্য এই শহরের রয়েছে আলাদা বিশ্বখ্যাতি। এই উদ্দেশ্যে প্রতি বছরই শত শত মেধাবীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় পশ্চিমা ইউরোপের এই প্রাণকেন্দ্রটি।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
সমগ্র ইউরোপের অন্যতম প্রধান প্রবেশদ্বার
দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের টেম্স নদীর অবস্থিত এই বিস্তৃত অঞ্চল পৃথিবীর আন্তঃসংযুক্ত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। হিথ্রো ও গ্যাটউইকসহ একাধিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আর ইউরোস্টার রেল লিংকের মাধ্যমে অনায়াসেই প্রবেশ করা যায় ইউরোপে। সঙ্গত কারণে অনেক আগে থেকেই যাত্রাপথটা ঘুরে বেড়ানোর জন্য অনুকূল হয়েই তৈরি হয়েছে। তাই বিশ্ব পরিব্রাজকদের নিকট জনপ্রিয় হয়ে উঠতেও খুব বেশি সময় লাগেনি।
সেই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ জীবনধারণের সব রকম অত্যাধুনিক সুবিধা থাকায় আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় উভয় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য শহরটি একটি উৎকৃষ্ট গন্তব্য।
প্রতিটি মৌসুমের উৎসবমুখরতা
লন্ডন ভ্রমণের জন্য আসলে কোনো মৌসুমই অফ-পিক টাইম হিসেবে প্রতীয়মান হয় না। গ্রীষ্মের খরতাপ, কনকনে শীত, শুভ্র মেঘের শরৎ, আর নতুন পাতার বসন্ত সব সময়ই এখানে থাকে মন্ত্রমুগ্ধতা। বছরব্যাপী পুরো মৌসুম জুড়ে ক্রিসমাস মার্কেট যান্ত্রিক শহরকে রূপান্তরিত করে যাদুর নগরে। এছাড়াও বছরজুড়ে মিউজিক ফেস্ট ও ফুড ফেস্টসহ বর্ণীল উৎসবগুলো প্রকৃতির রঙের মতোই গোটা শহরকে রাঙাতে থাকে ভিন্ন রঙে।
শেষাংশ
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ে লন্ডন ট্রিপ অ্যাডভাইজার ২০২৫-এর শীর্ষ ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বিগ বেন ও বাকিংহাম প্যালেস থেকে শুরু করে দ্য শার্ড-এর মতো সমসাময়িক বিস্ময় যেন শতবর্ষজীবী নগরের বিবর্তনের গল্প বলে। এলাকার পথঘাট, ভোজন, কেনাকাটা ও বিনোদনের নিরন্তর মূর্ছনায় প্রাণবন্ত আধুনিক অবকাঠামোগুলো। সার্বজনীন সংস্কৃতি ও প্রশান্ত সবুজ উদ্যান যেন উজ্জীবনের পূণ্যভূমি। ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগসূত্রগুলো কেবল নতুন ভূখণ্ডের নয়, নতুন অভিজ্ঞতারও দিগন্ত উন্মোচন। সর্বপরি, বছরব্যাপী ভিন্ন মৌসুমে বিচিত্র উৎসবের নিবেদন ফেরার সময় আরও একবার ঘুরে যাওয়ার সাধ জাগাবে পর্যটকের মনে।
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা
৬১ দিন আগে
দায়িত্ব নিয়েই ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ জেতানোর প্রত্যয় টুখেলের
ইংল্যান্ড জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েই বড় প্রাপ্তির প্রত্যয় ঝরেছে টমাস টুখেলের কণ্ঠে। ইংলিশদের ৫৮ বছরের বিশ্বকাপ খরা ঘোচানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) অন্তর্বতীকালীন কোচ লি কার্সলির জায়গায় টুখেলকে প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)।
আগামী বছরের প্রথম দিন থেকেই দায়িত্ব পালন শুরু করবেন ৫১ বছর বয়সী এই কোচ। এর ফলে মাত্র তৃতীয় কোচ হিসেবে ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নেবেন তিনি।
বুধবার নতুন দায়িত্বের বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টুখেল। এ সময় ইংল্যান্ডের মতো দলের মাধ্যমে জাতীয় দলে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারায় সম্মানিত বোধ করার কথা জানান তিনি।
‘আমি যা করছি, তা করতে ভালোবাসি। তাছাড়া ফুটবলের প্রতি আমার আলাদা টান রয়েছে।’
‘(ইংল্যান্ডের কোচের) ভূমিকাটি আমাকে নিজের তরুণ বয়সের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে সময় যেমন নতুন পেলেই উৎসাহী হয়ে উঠতাম, এখন তেমনই অনুভূত হচ্ছে। ফলে নিজের আবেগ দিয়ে যে শতভাগ চেষ্টা করব, এ বিষয়ে সবাইকে এখনই আশ্বস্ত করতে পারি।’
আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডের কোচ হলেন টুখেল
স্বদেশি কোচকে দায়িত্ব না দিয়ে একজন জার্মানের ওপর আস্থা রাখায় ইংল্যান্ডজুড়ে এফএর সমালোচনাও কম হচ্ছে না। সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়েও কথা বলেন টুখেল।
‘আশা করছি, আগামী ১৮ মাসে কাজ দিয়ে তাদের নিজেকে প্রমাণ করতে পারব। তাদের (সমালোচকদের) দেখিয়ে দিতে পারব যে, ইংলিশ ফুটবল ও এই দায়িত্ব নিয়ে আমি কতটা গর্বিত।’
এই সময়ের মধ্যে নিজের সর্বোচ্চ লক্ষ্য যে ২০২৬ বিশ্বকাপ জয়, সেটিও এক ফাঁকে বলে দিলেন এই কোচ।
‘(ইংল্যান্ডের) জার্সিতে আমি দ্বিতীয় তারকা যুক্ত করতে চাই। ফুটবলের সর্বোচ্চ লক্ষ্য অর্জনে আমরা কঠোর পরিশ্রম করব। ২০২৬ বিশ্বকাপেই যেন আমাদের স্বপ্নপূরণ হয়, তার জন্য চেষ্টার কমতি থাকবে না।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ইউরোর ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে ইংল্যান্ডের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান গ্যারেথ সাউথগেট। তারপর থেকেই নতুন কোচের সন্ধানে ছিল তারা। এই সময়ে অন্তর্বতীকালীন কোচ হিসেবে উয়েফা নেশন্স লিগে ইংল্যান্ডকে দিশা দেখাচ্ছেন লি কার্সলি।
তবে চুক্তি নবায়ন প্রশ্নে আরও বেশি সময় ধরে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের ভার বইতে তিনি রাজি হননি। ফলে টুখেলকে বেছে নিয়েছে এফএ।
কার্সলির অধীনে এ পর্যন্ত উয়েফা নেশন্স লিগে চারটি ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। এর তিনটিতে জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা। গ্রুপের বাকি দুই রাউন্ডে আগামী মাসে গ্রিস ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে ইংল্যান্ড। ওই দুই ম্যাচেও ডাগআউটে থাকবেন কার্সলি। এরপরই নতুন বছরে নতুন যাত্রা শুরু করবেন টুখেল।
১৫৯ দিন আগে
ইংল্যান্ডের কোচ হলেন টুখেল
গ্যারেথ সাউথগেট দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে একের পর এক কোচের ইংল্যান্ড জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার গুঞ্জন চলছিল। এসবের মধ্যে থেকে টমাস টুখেলের ওপরই আস্থা রাখল ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশন (এফএ)।
বুধবার (১৬ অক্টাবর) নিজেদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে টুখেলকে নিয়োগ দেওয়ার কথা জানায় এফএ।
২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেড় বছরের চুক্তিতে ইংল্যান্ড দলের দায়িত্ব নিয়েছেন ৫১ বছর বয়সী এই জার্মান কোচ। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন তিনি।
এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, বছরে ৫০ লাখ পাউন্ড (৫ মিলিয়ন) পারিশ্রমিকে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের ইউরোর ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে ইংল্যান্ডের কোচের পথ থেকে সরে দাাঁড়ান গ্যারেথ সাউথগেট। তার পর থেকেই নতুন কোচের সন্ধানে ছিল দলটি। এই সময়ে অন্তর্বতীকালীন কোচ হিসেবে উয়েফা নেশন্স লিগে ইংল্যান্ডকে দিশা দেখাচ্ছেন লি কার্সলি। তবে চলতি সপ্তাহে তিনিও জানান, ইংল্যান্ডের জন্য এমন একজন কোচ দরকার যার বড় শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা আছে।
গত কয়েকদিন ধরে থ্রি লায়ন্সদের দায়িত্ব নিতে পেপ গার্দিওলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে গুঞ্জন চলছিল। এর মাঝে টুখেলের নামটি উঠে আসে হঠাৎ করে। তবে গুঞ্জন সত্যি করে তিনিই বসছেন ইংল্যান্ডের ডাগআউটে।
ইংল্যান্ডের তৃতীয় বিদেশি কোচ হচ্ছেন টুখেল। তার আগে ইংল্যান্ডের বাইরে থেকে দলটির দায়িত্ব সামলেছেন মাত্র দুজন- সদ্য প্রয়াত সুইডিশ কোচ সভেন-গোরান এরিকসন ও ইতালির ফাবিও কাপেলো।
তবে ১৭ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এই প্রথম কোনো জাতীয় দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন টুখেল। ৬ বছরের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টেনে ২০০৭ সালে ৩৪ বছর বয়সেই কোচিংয়ে নাম লেখান তিনি। এরপর বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, পিএসজি, চেলসি ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর ম্যানেজার ছিলেন তিনি।
চেলসির দায়িত্ব নিয়ে ইংলিশ ফুটবলের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এই জার্মান। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্লাবটির দায়িত্ব নিয়ে ওই মৌসুমেই চেলসিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ এনে দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন টুখেল। তবে বেশিদিন দীর্ঘায়িত হয়নি তার চেলসি ক্যারিয়ার। পরের বছরই চেলসির দায়িত্ব ছেড়ে জার্মানিতে পাড়ি দেন তিনি।
বায়ার্নের কোচ হয়ে নতুন অধ্যায় শুরুর মৌসুমেই বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন হয় তার দল। তবে তার পরের বছর এক যুগের মধ্যে প্রথমবার বুন্দেসলিগা শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয় বায়ার্ন। পাশাপাশি তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করে টুখেলের দল। ফলে বায়ার্ন মিউনিখ থেকেও ছাঁটাই করা হয় তাকে। এরপর থেকে অবসরেই ছিলেন এই কোচ।
এবার জাতীয় দলের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে তার নতুন পথচলা। তবে ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়ে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে তাকে।
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর আর কোনো বড় শিরোপা জেতেনি ইংল্যান্ড। সাউথগেটের অধীনে পরপর দুবার ইউরোর ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছে তাদের। ফলে দারুণ সব প্রতভাধর ফুটবলারে ঠাসা দলটিকে কীভাবে তিনি পরিচালনা করেন, তা-ই দেখার অপেক্ষায় থাকবে ফুটবল বিশ্ব।
১৫৯ দিন আগে
জোড়া গোলে শততম ম্যাচ রাঙালেন কেইন
ইংল্যান্ডের জার্সিতে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে অসাধারণ হ্যারি কেইনে মাতল ইংলিশ সমর্থকরা। ম্যাচজুড়ে অসাধারণ পারফর্ম করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেন ইংলিশ অধিনায়ক।
নেশন্স লিগের ‘বি’ লিগের দ্বিতীয় গ্রুপের ম্যাচে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। ম্যাচের দুটি গোলই করেছেন হ্যারি কেইন।
এদিন ম্যাচ শুরুর আগে শত ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ উপলক্ষে কেইনকে বিশেষ সম্মাননা জানায় ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ম্যাচে নেমেই জোড়া গোল করেন এই তারকা স্ট্রাইকার।
আরও পড়ুন: জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু
গোল পেতে এদিন মুখিয়ে থাকলেও বারবার হতাশ হতে হয়েছে কেইনকে। ম্যাচের ২১তম মিনিটে অসাধারণ দক্ষতায় কেইনের নিশ্চিত একটি গোল ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ফিনিশ গোলরক্ষক লুকাশ রাদাস্তকি। তার দুই মিনিট পর জালে বল পাঠান ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড, কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে পড়ে সে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
ফলে স্কোরলাইন গোলশূন্য রেখে বিরতিতে যায় দুই দল।
১৯৫ দিন আগে
ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
একটি দেশের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সভ্যতা বিনির্মাণ ও সংস্কৃতির সংস্কারের প্রতিটি স্তরে যোগ্য লোকের উপস্থিতি দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে। আর এর মধ্যে সুপ্ত থাকে সেখানে বসবাসরত মানুষের মানসম্পন্ন জীবন ধারণের বীজ। এই বিষয়গুলো বিচারে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় দেশটি হলো যুক্তরাজ্যের অন্যতম প্রধান দেশ ইংল্যান্ড। বিশ্ববিখ্যাত সব বিদ্যাপীঠের আশ্রয়স্থল হওয়ায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে দেশটিকে ঘিরে ক্যারিয়ার গঠন করার। চলুন, ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন পদ্ধতি, অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুবিধাগুলো জেনে নেওয়া যাক।
কেন ইংল্যান্ড উচ্চশিক্ষার সেরা গন্তব্য
ক্যারিয়ার গঠনে ইংল্যান্ড শিক্ষার্থীদের সেরা পছন্দ হওয়ার নেপথ্যের মূলে রয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে দীর্ঘ সময় ধরে শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে চারটি ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়। তার মধ্যে দ্বিতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ। তারপরেই রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। ৬ ও ৯ নাম্বারে রয়েছে যথাক্রমে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন।
তাছাড়া যুক্তরাজ্যের দেশগুলো আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের রীতিমতো স্বর্গরাজ্য। তার মধ্যে শিক্ষার্থীর সেরা শহর বিবেচনায় কিউএস র্যাংকিং ২০২৪-এর শীর্ষতম স্থানটি দখল করে আছে লন্ডন।
যুক্তরাজ্যের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইংল্যান্ডের জীবন ধারণের মানও উন্নত। বিশেষ করে আকর্ষণীয় স্কলারশিপগুলো অর্জনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি সেই জীবন ধারণের সান্নিধ্যে যেতে পারে বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন: অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের পূর্বশর্ত
একমাত্র অন্য প্রয়োজন হলো আইইএলটিএস পরীক্ষায় ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর।
আন্ডারগ্রেড প্রোগ্রামগুলোতে ভর্তির জন্য ন্যূনতম ১৩ বছরের একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ অতিবাহিত করতে হবে। এখানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের যোগ্যতা যুক্তরাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক বা ন্যাশনাল ডিপ্লোমায় পরিচালিত ‘এ’ স্তরের পরীক্ষার সমতুল্য হওয়া আবশ্যক। আর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে আবেদনের প্রথম শর্ত হলো স্নাতক পাশ করা।
শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত জিপিএ ৮০ এবং ৯৫ শতাংশের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। সেখানে ফলাফল ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ হলে আবেদন করা যাবে মাঝারি-স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলো সর্বশেষ অর্জিত ডিগ্রির মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) ইংরেজি দেখেই আবেদন গ্রহণ করে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভর্তির অন্যতম প্রধান যোগ্যতা থাকে ভালো আইইএলটিএস স্কোর। উপরন্তু, স্কলারশিপের প্রদানে একাডেমিক যোগ্যতার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার দক্ষতাকে মূল্যায়ন করা হয়।
স্নাতক অধ্যয়নের জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫ থাকতে হয়। প্রি-মাস্টার প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজন হবে ৫ দশমিক ৫ থেকে ৬ স্কোর। সরাসরি স্নাতকোত্তরে আবেদন করতে লাগবে ৬ থেকে ৭ ব্যান্ড স্কোর। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে তা ভিন্ন হতে পারে। এমবিএতে আবেদনের যোগ্যতায় অতিরিক্ত দেখাতে হবে ২ থেকে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। এই ক্ষেত্রে আইইএলটিএস ফলাফল ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭-এর মধ্যে থাকা জরুরি। আইইএলটিএস ব্যান্ড স্কোরের এই শর্তটি পিএইচডির জন্যও প্রযোজ্য। তবে অবশ্যই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।
স্নাতকোত্তরের কোনো কোনো কোর্সে আরও কিছু প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোরের প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন হচ্ছে জিআরই ও জিম্যাট।
আরো পড়ুন: আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কোর্সের তালিকা
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-
· ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ
· ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড
· ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন
· ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন
· ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ
· ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার
· কিংস কলেজ লন্ডন
· লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্স
· ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল
· ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক
আরো পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
অধ্যয়নের জন্য ইংল্যান্ডগামী ছাত্রছাত্রীরা যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি বাছাই করে, সেগুলো হলো-
· আইন
· ফিজিওথেরাপি
· অ্যাকচুয়ারিয়াল সায়েন্স
· ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা
· মনোবিজ্ঞান
· ডেটা সায়েন্স
· মেডিসিন ও সার্জারি
· কম্পিউটার সায়েন্স
· বিজনেস স্টাডিজ
· বিজনেস অ্যানালাইটিক্স
আরো পড়ুন: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের উপায়, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ, ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
ইংল্যান্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
সাধারণত সামার, অটাম, ও স্প্রিং- এই তিনটি সময়ে ইংল্যান্ডের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। এখানে সামারের সময়কালটি মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর অব্দি থাকে অটাম এবং জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চলে স্প্রিং অ্যাডমিশন। তবে ভর্তির মৌসুম নির্বিশেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার ন্যূনতম ৯ থেকে ১০ মাস আগে থেকে আবেদন শুরু করা উচিত।
ইংল্যান্ডসহ গোটা ইউকেতে (ইউনাইটেড কিংডম) একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্নাতকের আবেদনগুলো নেওয়া হয়। সাইটটির নাম ইউসিএএস (ইউনিভার্সিটিস অ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশন সার্ভিস), যার ওয়েব ঠিকানা: https://www.ucas.com/undergraduate/applying-to-university। এখানে ছাত্রছাত্রীরা নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করে আবেদন সম্পন্ন করে থাকে।
অপরদিকে, স্নাতকোত্তর কোর্সগুলোতে আলাদাভাবে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যেয়ে আবেদন করতে হয়।
আরো পড়ুন: ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্র
· উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী বা সমমানে ডিপ্লোমার সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
· মিডিয়াম অব ইন্স্ট্রাকশন (এমওআই) সার্টিফিকেট (নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য)
· বৈধ পাসপোর্ট
· জাতীয় পরিচয়পত্র
· ইংরেজি দক্ষতার শংসাপত্র (আইইএলটিএস স্কোর)
· পার্সনাল স্টেটমেন্ট
· রেফারেন্স লেটার
· সিভি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: ডুওলিঙ্গো ইংলিশ টেস্ট কী? কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
স্নাতকোত্তরের জন্য অতিরিক্ত যুক্ত করতে হবে
· স্নাতক ডিগ্রির শংসাপত্র
· অভিজ্ঞতার শংসাপত্র (এমবিএর জন্য)
· অন্যান্য প্রবেশিকা পরীক্ষার স্কোর যেমন জিআরই, জিম্যাট।
পিএইচডি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নথি
· স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির শংসাপত্র
· গবেষণা প্রস্তাব
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
অফার লেটার গ্রহণ
বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ এবং প্রার্থীদের মধ্যকার সাধারণ যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ই-মেইল। শিক্ষার্থীর প্রদানকৃত কাগজপত্র যাচাই করে তার ই-মেইল ঠিকানায় দরকারি নির্দেশনা পাঠানো হয়। এই ই-মেইলগুলোর মাধ্যমে সাধারণত অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় কাগজ, প্রবেশিকা পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের কথা জানানো হয়।
সবদিক মূল্যায়নের পর ভর্তির সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলে শিক্ষার্থীকে অফার লেটার পাঠানো হয়। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি কনফার্মেশন অব একসেপ্টেন্স ফর স্টাডিজ (সিএএস) নামে পরিচিত। এই লেটারটিই ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসার আবেদনের সর্বপ্রথম শর্ত। সিএএস পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।
ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদী উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যেতে হলে দেশটির স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হয়। এটি পূর্বে টায়ার ৪ স্টুডেন্ট ভিসা ছিল। কমপক্ষে ১৬ বা তার বেশি বয়সী ছাত্রছাত্রীরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে।
ভিসার মেয়াদ নির্ভর করে ভর্তি হওয়া কোর্সের সময়কালের ওপর। স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের মতো ডিগ্রি পর্যায়গুলোতে অধ্যয়নের জন্য সাধারণত ৫ বছর পর্যন্ত ইংল্যান্ডে থাকার অনুমতি দেয়া হয়।
ভিসার আবেদনের জন্য https://www.gov.uk/student-visa/apply-online -এই লিংকে যেয়ে অনলাইন আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। এ সময় ভিসার জন্য দরকারি যাবতীয় কাগজপত্র আপলোডের প্রয়োজন হবে। আবেদন সাবমিটের পর সম্পূর্ণ পূরণকৃত অনলাইন ফর্মটি ডাউনলোড করে তার একটা প্রিন্ট নিতে হবে।
আরো পড়ুন: ডলার এনডোর্সমেন্ট কী, কীভাবে করবেন
ভিসার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
· অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি
· বয়স ১৮ বছরের কম হলে, পিতামাতার বা অভিভাবকের সম্মতির প্রমাণপত্র
· অফার লেটার - সিএএস এবং তার সাথে একটি ভিসা লেটার। লেটারটি আবেদনের পূর্বে বিগত সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে ইস্যূকৃত হতে হবে।
· বৈধ পাসপোর্ট - যেখানে ইউকে ভিসা সিলের জন্য কমপক্ষে ১টি পৃষ্ঠা অবশিষ্ট থাকতে হবে
· তহবিলের প্রমাণ- ন্যূনতম প্রথম বছরের অধ্যয়নের জন্য কোর্স ফি এবং সর্বাধিক ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ সঙ্কুলান থাকবে। এর সুস্পষ্ট পরিমাণটি নির্ভর করে প্রার্থী লন্ডনে নাকি তার বাইরে থেকে পড়াশোনা করবেন- তার ওপর। এছাড়াও তহবিলটি কমপক্ষে ২৮ দিন ধরে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অপরিবর্তিতভাবে থাকতে হবে।অধ্যয়ন ফির বাইরে ৯ মাস পর্যন্ত জীবনযাত্রার খরচ বাবদ যে তহবিলটি দেখাতে হবে তা হলো-
o লন্ডনের বাইরের শহরের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে পাউন্ড ১ হাজার ৩৩৪ বা ২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকা (১ পাউন্ড = ১৫৬ দশমিক ৬৯ বাংলাদেশি টাকা)। এটি নয় মাসে দাড়ায় মোট ১২ হাজার ৬ পাউন্ড কিংবা ১৮ লাখ ৮১ হাজার ২৭২ টাকা।
o লন্ডনে থাকলে মাসে ১ হাজার ২৩ (১ লাখ ৬০ হাজার ২৯৮ টাকা) করে ৯ মাসে মোট ৯ হাজার ২০৭ পাউন্ড (১৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৮৫ টাকা)।
· স্টুডেন্ট লোন বা স্পন্সরশিপ থাকলে লোন বা স্পন্সরশিপ প্রদানকৃত কোম্পানির প্রমাণ
· প্রার্থীর যক্ষ্মা টেস্টের ফলাফল
· ভিসা ফি প্রদান নিশ্চিতকরণ রশিদ
· বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ও মূল মার্ক শীট
· ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ (আইইএলটিএস স্কোর)
· প্রবেশিকা পরীক্ষার (জিম্যাট, জিআরই) স্কোর; (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: রোমানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, স্কলারশিপ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ভিসা আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
ইংল্যান্ড দূতাবাসে সশরীরে আবেদন জমা দেয়ার আগে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এই তারিখ নেওয়ার জন্য https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/gbr/your-appointment- এই লিংকে যেয়ে প্রার্থীর নিজস্ব ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এই ই-মেইলেই পাঠানো হবে সাক্ষাৎকার গ্রহণের তারিখ।
দূতাবাসের ঠিকানা: ভিএফএস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, নাফি টাওয়ার, ৫৩, গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১, ৭ম তলা, ঢাকা-১২১২।
নির্ধারিত তারিখে উপরের ঠিকানায় ভিসার আবেদনের প্রতিটি নথি মূল কপিসহ উপস্থিত হতে হবে। ভিসা কেন্দ্রে সাক্ষাৎকারসহ প্রার্থীর ছবি এবং দশ আঙুলের ছাপ নেওয়া হবে। সবশেষে ভিসা ফি গ্রহণপূর্বক একটি রশিদ দেওয়া হবে। ভিসাযুক্ত পাসপোর্ট নিতে আসার সময় এই রশিদটি সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সময় এবং ভিসা প্রাপ্তি
ইংল্যান্ডের স্টাডি ভিসা প্রক্রিয়া করার সাধারণ সময় হচ্ছে কমপক্ষে ৩ কার্যসপ্তাহ। তবে কাগজপত্রে কোনো সমস্যা থাকলে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
অবশ্য অতিরিক্ত ফি দিয়ে ভিসা প্রক্রিয়াকরণের এই সময়টাকে আরও কমিয়ে আনা যেতে পারে। দ্রুত ভিসা প্রাপ্তির পরিষেবাটি প্রায়োরিটি এবং সুপার প্রায়োরিটি- এই দুই ভাগে বিভিক্ত। প্রায়োরিটি ভিসা বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেওয়ার পর থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সুপার প্রায়োরিটি ভিসা দেয়া হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
আরো পড়ুন: কীভাবে আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করবেন?
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের আনুষঙ্গিক খরচ
স্টুডেন্ট ভিসা ফি ৪৯০ পাউন্ড, ঢাকাস্থ ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস) অনুসারে যা ৭৯ হাজার ২৬৫ টাকা। তবে প্রয়োরিটি ভিসার ফি ৫০০ পাউন্ড বা ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা, যেখানে সুপার প্রয়োরিটি ভিসার জন্য দিতে হবে ৮০০ পাউন্ড (১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫৬ টাকা)।
আবেদনের অংশ হিসেবে এই খরচের সাথে অতিরিক্ত স্বাস্থ্যসেবা সারচার্জ দিতে হয়। এর মাধ্যমে প্রার্থী ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা লাভ করতে পারে। এই চার্জ নির্ভর করে সাধারণত ভিসার মেয়াদের ওপর। https://www.immigration-health-surcharge.service.gov.uk/checker/type - লিংক থেকে এই সারচার্জ বাবদ ঠিক কত খরচ হবে তা জানা যাবে।
ইংল্যান্ডে পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ
সাধারণত হিউম্যানিটিস, আর্ট্স, এবং জেনারেল এডুকেশন কোর্সগুলো বেশ স্বল্প খরচের হয়। অন্যদিকে মেডিসিন এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয়গুলো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। স্নাতক অপেক্ষা স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অধ্যয়ন ফি সাধারণত বেশি হয়ে থাকে, যা বিষয়ভেদে ভিন্ন হয়। অন্যান্য দেশের মতৈাত এমবিএ প্রোগ্রামগুলোর খরচ সর্বাধিক।
স্নাতক ডিগ্রির বার্ষিক খরচ ১০ থেকে ২০ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ১৫ লাক ৬৬ হাজার ৯৪৩ থেকে ৩১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৬ টাকার সমতূল্য। স্নাতকোত্তরে গড়পড়তায় খরচ হয় প্রতি বছর ১২ থেকে ২২ হাজার পাউন্ড অথবা ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৩৩২ থেকে ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৫ টাকা। বার্ষিক ১৫ থেকে ২৪ হাজার পাউন্ড (২৩ লাখ ৫০ হাজার ৪১৫ থেকে ৩৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৩ টাকা) বাজেট রাখতে হবে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পিএইচডি প্রোগ্রামগুলোর জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়নের ব্যবস্থা থাকে।
আরো পড়ুন: ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে লন্ডনের বাইরে থাকা হলে বাজেট অনেকটাই সাশ্রয়ী হয়ে আসে। শেয়ার করা রুমে থাকার ক্ষেত্রে গড়ে আবাসন খরচ হতে পারে মাসিক ৫৫৪ পাউন্ড কিংবা ৮৬ হাজার ৮০৯ টাকা। মাসে সম্ভাব্য ইউটিলিটি বিল হতে পারে ৪০ থেকে ৫০ পাউন্ড (৬ হাজার ২৬৮ থেকে ৭ হাজার ৮৩৫ টাকা)। খাদ্য ও গৃহস্থালির জন্য রাখতে হবে ১৬০ থেকে ২০০ পাউন্ড (২৫ হাজার ০৭১ থেকে ৩১ হাজার ৩৩৯ টাকা)।
মোবাইল ফোন বিল ১৫ থেকে ৫০ পাউন্ড, যা প্রায় ২ হাজার ৩৫১ থেকে ৭ হাজার ৮৩৫ টাকার সমান। স্টুডেন্ট পাস নিয়ে যাতায়াত করা হলে পরিবহনে ব্যয় হবে প্রায় ৩২ পাউন্ডের (৫ হাজার ১৪ টাকা) মতো।
ইংল্যান্ডে স্কলারশিপের সুবিধা
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ইংল্যান্ডসহ গোটা ইউকে ও ইউরোপের একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি প্রকল্প। কমনওয়েলথভূক্ত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের সুবিধা ভোগ করতে পারে। এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর বা ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য পূর্ণ বা আংশিক অর্থায়ন দিয়ে থাকে। এর আওতায় থাকে টিউশন ফি, বিমান ভাড়া, এবং জীবনযাত্রার ভাতা।
ব্রিটিশ কাউন্সিল গ্রেট স্কলারশিপ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরতদের জন্য প্রদান করা হয়। এই বৃত্তির মূল্যমান ৫ থেকে ২৫ হাজার পাউন্ড, যা প্রায় ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭২ থেকে ৩৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৮ টাকার সমান। এর মধ্যে অনায়াসেই পড়াশোনার অর্থ সঙ্কুলান হয়ে যায়।
চেভেনিং স্কলারশিপ সম্পূর্ণ অর্থায়ন করা কার্যক্রমগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর মধ্যে টিউশন ফি, জীবনযাত্রার খরচ এবং প্লেন ফেয়ার পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সর্বোচ্চ এক বছরকালীন স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারে।
আরো পড়ুন: চীনে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
টায়ার ৪ স্টুডেন্ট ভিসার মধ্যে চাকরি-সংক্রান্ত সুবিধাগুলো হচ্ছে-
· স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাবেটিকাল অফিসার হিসেবে কাজের সুযোগ
· পেশাদার ক্রীড়াবিদ বা ক্রীড়া প্রশিক্ষক ব্যতীত যে কোনো খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
সেমিস্টার চলাকালে শিক্ষার্থীরা এই কাজগুলোর জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কর্মঘণ্টা পেয়ে থাকে। তবে ছুটির সময়ে এরকম কোনো বাধ্য-বাধকতা না থাকায় ফুল-টাইম কাজের সুযোগ থাকে।
অন-ক্যাম্পাস পার্ট-টাইম চাকরিগুলোর মধ্যে রয়েছে লাইব্রেরি সহকারী, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট, নতুন ছাত্রদের জন্য ক্যাম্পাস গাইড ও ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর।
অন্যদিকে, অফ-ক্যাম্পাস কাজগুলো হলো গ্রাহক পরিষেবা প্রতিনিধি, বিক্রয় বিশেষজ্ঞ, রেস্তোরাঁ পরিষেবা সহকারী, এবং ডেলিভারি সহকারী।
এগুলোতে সপ্তাহে গড়ে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০ পাউন্ড (৩১ হাজার ৩৩৮ থেকে ৭৮ হাজার ৩৪৭ টাকা) পর্যন্ত আয় হয়। এ ক্ষেত্রে আয়করের বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি, কেননা ইউকেতে খণ্ডকালীন চাকরির ওপরও ট্যাক্স এবং জাতীয় বীমা ধার্য হয়।
মাসে গড়ে ১ হাজার ৪২ পাউন্ডের (১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৬ টাকা) বেশি উপার্জনকারীদের আয়কর দেয়া বাধ্যতামূলক। আর সপ্তাহে ১৬৬ পাউন্ডের (২৬ হাজার ১২ টাকা) বেশি আয়কারিদের বীমা ফি পরিশোধ করতে হয়। মূলত নিয়োগকর্তারাই আয়কর এবং জাতীয় বীমা ফি কেটে মজুরি দিয়ে থাকেন।
আরো পড়ুন: পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
শেষাংশ
বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ ও উন্নত জীবনযাত্রার নিরিখে ইংল্যান্ড উচ্চশিক্ষার শ্রেষ্ঠ গন্তব্য। তবে অধ্যয়ন ও জীবন ধারণের খরচ একটা বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে।
এক্ষেত্রে আর্থিক চাপ মুক্ত থেকে নির্দ্বিধায় পড়াশোনা করার উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে স্কলারশিপগুলো। দুর্দান্ত একাডেমিক ফলাফল এবং আইইএলটিএস স্কোরের দৌলতে এই সুযোগটি সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। তাছাড়া ঢাকাতেই ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের অবস্থানটি আরও একটি বড় সুবিধা। উপরন্তু, ভর্তির আবেদন থেকে ভিসা প্রাপ্তি পর্যন্ত পুরো কার্যক্রমে একটি সঠিক ও নিরবচ্ছিন্ন কর্মপরিকল্পনা বজায় রাখা অপরিহার্য।
২০০ দিন আগে
নেশন্স লিগে তিন প্রতিভাবান তরুণকে পাচ্ছে না ইংল্যান্ড
উয়েফা নেশন্স লিগের গ্রুপপর্ব শুরু হতে বাকি আর একদিন। এরই মধ্যে ভক্তদের দুঃসংবাদ দিল ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশন (এফএ)। স্কোয়াডে রাখলেও তিন তরুণ প্রতিভা- ফিল ফোডেন, কোল পালমার ও অলি ওয়াটকিন্সকে পাচ্ছেন না দলটির অন্তর্বর্তীকালীন কোচ লি কার্সলি।
ডাবলিনে আগামী শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নেশন্স লিগ অভিযান শুরু করবে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এরপর মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১টায় ফিনল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা। এই দুই ম্যাচের জন্য দল থেকে ছিটকে গেছেন ওই তিন প্রতিভা।
কয়েক দিন আগে পিএফএর বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন গত মৌসুমে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ফোডেন। তবে নতুন মৌসুমে এখনও মাঠে নামতে পারেননি ম্যানচেস্টার সিটির এই উইঙ্গার। সেই অসুস্থতার কারণে জাতীয় দল থেকেও ছিটকে গেছেন তিনি।
তবে দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিয়েছিলেন চেলসি ফরোয়ার্ড পালমার ও অ্যাস্টন ভিলা ফরোয়ার্ড ওয়াটকিন্স। কিন্তু চোটের কারণে তাদের নিজ নিজ ক্লাবে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোনালদোকে নিয়ে নেশন্স লিগে পর্তুগালের স্কোয়াড ঘোষণা
এক বিবৃতিতে এফএ জানিয়েছে, শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে পালমার ও ওয়াটকিন্স দুজনকেই নিজ নিজ ক্লাবে ফিরে পুনবার্সন চালিয়ে যেতে (জাতীয় দল থেকে) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ইউরো আসরের ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় ইংল্যান্ডের। ২-১ ব্যবধানের ওই হারের ফলে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে ব্যর্থ হওয়ায় পদত্যাগ করেন কোচ গ্যারেথ সাউথগেট।
তিনি দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে ইংল্যান্ড জাতীয় দল সামলাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন কোচ লি কার্সলি। নেশন্স লিগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটিই হতে চলেছে তার প্রথম ম্যাচ।
এদিকে, ইউরো স্কোয়াডে ডাক না পেলেও নেশন্স লিগের জন্য ডাক পেয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার জ্যাক গ্রিলিশ এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুইয়ার।
আরও পড়ুন: অভিজ্ঞদের বাদ রেখে বেলজিয়ামের নেশন্স লিগের স্কোয়াড ঘোষণা
২০২২-২৩ মৌসুমের নেশন্স লিগের গ্রুপপর্বে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর প্রথম লিগ থেকে দ্বিতীয় লিগে অবনমন হয় গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ডের। ফলে এবারের মৌসুমে লিগ ‘বি’-তে র্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে খেলে আগামী মৌসুমের মূল লিগে ওঠার লড়াই করবে ইংল্যান্ড।
লিগ ‘বি’এর গ্রুপ-২ এ তাদের অন্য প্রতিপক্ষ গ্রিস। আগামী ১০ অক্টোবর গ্রিসের বিপক্ষে প্রথম লেগের ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। এরপর অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে তিন দিন পর ফিরতি লেগে ফিনল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা।
এরপর নভেম্বর মাসে বাকি দুই দলের সঙ্গে ফিরতি লেগের ম্যাচ খেলে গ্রুপপর্বের খেলা শেষ করবে ইংল্যান্ড।
ছয়টি ম্যাচ খেলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে থাকলে সরাসরি আগামী মৌসুমে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে তারা। তবে দ্বিতীয় হলেও থাকবে সুযোগ, সেক্ষেত্রে প্লে-অফ খেলে মূল পর্বে যেতে হবে তাদের। কিন্তু টেবিলের তলানিতে থাকলে আরও অবনমন হয়ে লিগ ‘সি’-তে নেমে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: নেশন্স লিগ চ্যাম্পিয়নদের স্কোয়াডে নতুন দুই মুখ
২০১ দিন আগে
ফাইনালের আগে যে ভয় পাচ্ছেন স্পেন কোচ
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা, এরপরই ইউরোপসেরার শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে স্পেন ও ইংল্যান্ডের কোনো একটি দল। টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠলেও প্রতিপক্ষকে যথেষ্ট সমীহ করছেন স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে।
তবে মাঠে সেরাটা বের করে আনতে নিজেদের পরিচয়ের দিকেই মনোযোগ দিতে চান ৬৩ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ কোচ। তিনি মনে করেন, আক্রমণাত্মক ও নান্দনিক ফুটবল খেলে যে আত্মপরিচয় তৈরি করেছে তার দল, ফাইনালেও তা ধরে রাখতে পারলে শিরোপাজয় সহজ হবে।
দলীয় পারফরম্যান্সে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে টানা ৬ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে দে লা ফুয়েন্তের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া স্পেন। তবে সেমিফাইনালে একাদশের বেশ কয়েকজন ফুটবলারের অনুপস্থিতিতে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে তারা। ফলে শক্তি ও প্রতিভায় ভরা ফ্রান্সের সামনে বেশ ভুগতে হয় দলটির। ফাইনালে আবার যেন শিষ্যরা খেই হারিয়ে না বসে, সেই ভয়টাই পাচ্ছেন দে লা ফুয়েন্তে।
ফাইনালের চাপ, প্রত্যাশা ও নানা সমীকরণে মাঠের খেলায় বদলে যায় অনেক কিছুই। তবে নিজেদের হারিয়ে বসলেই বিপদ বলে মনে করছেন দে লা ফুয়েন্তে। তার আশা, নিজেদের পরিচিত ফুটবলই যেন খেলে শিষ্যরা।
আরও পড়ুন: সুন্দর ফুটবলের মধ্যে দিয়েই জিততে চায় স্পেন: দে লা ফুয়েন্তে
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা যদি স্পেন হয়ে উঠতে না পারি, তাহলে কোনো সুযোগই নেই। নিজেদের উন্নতি করতে আমরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। রবিবারেও সে ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। তবে অবশ্যই নিজেদের পরিচয় ধরে রেখে।’
‘ফুটবলে বিভিন্ন কৌশল আছে, আছে শৈলীও। আমাদের সামনে প্রতিপক্ষও কোনো একটি কৌশলে খেলবে। তবে আমাদের পরিকল্পনা দৃঢ়, নিজেদের ফুটবলই খেলতে হবে।’
তবে মাঠের পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে, তাও মাথায় আছে দে লা ফুয়েন্তের।
‘আমরা অবশ্যই আমাদের সহজাত ফুটবল খেলব। তবে যদি (কৌশলে) কোনো পরিবর্তন আসে, তা খেলার বিশেষ কোনো পরিস্থিতির কারণে আসবে। এর মানে এই নয় যে, আমরা কৌশল পাল্টে ফাইনাল খেলছি।’
আরও পড়ুন: দলীয় ঐক্য ও তারুণ্যের চমকে ফ্রান্সকে বিদায় করে ফাইনালে স্পেন
চলতি ইউরো আসরে স্পেনই একমাত্র দল, যারা সবগুলো ম্যাচ জিতেছে। জয়ের এই ধারায় আক্রমণাত্মক, ছন্দময়, কার্যকর ও গতিময় আধুনিক ফুটবল উপহার দিয়েছে দর্শককে। ‘হাই প্রেসিং’ ও ‘ওয়ান টাচ’ ফুটবলে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্রমণে ওঠে দলটি। লুইস আরাগোনেস ও ভিসেন্তে দেল বস্কের পর লুইস দে লা ফুয়েন্তের হাত ধরে ফের এমন নান্দনিক ফুটবল উপহার দিচ্ছে স্পেন।
এই আসরে ছয় ম্যাচে মোট ১০৮টি শট নিয়েছে স্পেন, যার ৩৭টি ছিল লক্ষ্যে। এ থেকে গোল পেয়েছে ১৩টি। এর সবগুলো সংখ্যাই যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে, টুর্নামেন্টজুড়ে ইংল্যান্ডের মোট ৬৬টি শটের ১৯টি ছিল লক্ষ্যে।
পরিসংখ্যান থেকে দলদুটির কৌশল বিপরীতমুখী এবং ইংল্যান্ডকে কিছুটা দুর্বল বলে মনে হলেও নিজেদের ফেভারিট মানতে নারাজ দে লা ফুয়েন্তে।
‘আমরা জানি, ফাইনালে কোনো ফেভারিট নেই। দুই দলের ভারসাম্যই সঠিকভাবে আছে। কে ফেভারিট তা জুয়াড়িরাই নির্ধারণ করুক।’
‘কারণ আমরা জানি, যদি নিজেদের সেরাটা না খেলতে পারি, তাহলে এতদিনের পরিশ্রম মূল্যহীন হয়ে যাবে। তবে আমি এও জানি যে, ছেলেরা সবাই জানে- মাঠে কী করতে হবে। আর তারা সেটাই করবে।’
আরও পড়ুন: ইয়ামালের ইতিহাস গড়ার রাতে স্পেনে বিধ্বস্ত ক্রোয়েশিয়া
দারুণ ফুটবল খেলে এতদূর আসতে পেরে খুশি দে লা ফুয়েন্তে। দলকে ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দিতে চান তিনি।
‘যেভাবে আমরা ফাইনালে উঠেছি, তাতে আমি গর্বিত। এখানে পৌঁছাতে কেউই আমাদের ছেড়ে কথা বলেনি। তাই গর্ববোধ করার অধিকার আমাদের আছে।’
ভালো ফুটবল খেললেও এই দলটি এখনও কিছু জিতে দেখাতে পারেনি। তাই ফাইনালকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন কোচ।
‘অসাধারণ একটি প্রজন্ম এটি। আমাদের বর্তমান আলোকিত, ভবিষ্যতও উজ্জ্বল। আমরা ইতিহাস গড়তে চাই। জাতীয় দলের সবাই যখন দেশের প্রতি নিবেদিত থাকে, তখন ব্যাপারটি দারুণ হয়। স্পেনকে ইউরোর ইতিহাসের সেরা দলে পরিণত করার সুযোগ আছে এই দলের সামনে।’
ইতোমধ্যে তিনটি শিরোপা জিতে জার্মানির সঙ্গে সর্বোচ্চ ইউরো জয়ের রেকর্ড ভাগাভাগি করছে স্পেন। রবিবারের ফাইনাল জিতলে চতুর্থবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে রেকর্ডটি নিজেদের করে নেবে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।
অপরদিকে, ফুটবলের আঁতুরঘর হলেও ইউরোপসেরার মুকুট কখনও পরা হয়নি ইংল্যান্ডের। গতবার ইতালির কাছে ফাইনালে টাইব্রেকারে হেরে তীরে গিয়েও তরী ডোবে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যদের।
তবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এবারও ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। গতবারের ভুলভ্রান্তি ঘুচিয়ে তাই এবার ইউরো শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে চাইবে তারাও।
২৫৩ দিন আগে
ব্যালন দ’র: ভিনিসিউস, বেলিংহ্যামকে ফেভারিট মনে করেন না কারভাহাল
লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় দলটির দুই তারকা খেলোয়াড় ভিনিসিউস জুনিয়র ও জুড বেলিংহ্যামকে এ বছরের ব্যালন দ’র পুরস্কারের জন্য ফেভারিটের তালিকায় শীর্ষে রেখেছেন অনেকেই। তবে রিয়াল মাদ্রিদের দানি কারভাহালই তার সতীর্থদের এ বছর এই পুরস্কারের জন্য ফেভারিট মনে করেন না।
ব্যালন দ’রের জন্য তিন ফেভারিটের মধ্যে ভিনি, বেলিংহ্যামকে দেখছেন না ৩২ বছর বয়সী রিয়াল মাদ্রিদের এই স্প্যানিশ ফুলব্যাক। তবে তার পছন্দের সেরা পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে তারা আছেন বলে জানিয়েছে স্পেনের ফুটবল সাময়িকী ফুতবল এস্পানিয়া।
যদিও ব্যালন দ’রে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই কারভাহালের। তবে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, নিজেদের সেরাদের কাতারে রাখতে গত মৌসুমে তারা (ভিনি, বেলিংহ্যাম) যথেষ্ট কাজ করেছে। তবে (ব্যালন দ’রে ভোট দিতে পারলে) আমার পাঁচ পয়েন্টের তিন পয়েন্টই আমি দেব রদ্রিকে। আর এক পয়েন্ট দেব হোসেলুকে।
আরও পড়ুন: শাস্তি পেতে পারেন বেলিংহ্যাম
উল্লেখ্য, জমজ বোনকে বিয়ে করায় হোসেলু কারভাহালের ভায়রা। তবে এসবের ওপরে তিনি ফুটবলকে স্থান দেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, ক্লাবের হয়ে আলো ছড়ালেও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মোটেও ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র। চলমান কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে উরগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।
তবে, বেলিংহ্যাম উঠেছেন ইউরোর ফাইনালে। গ্রুপ পর্বের খুব বেশি আশার সঞ্চার করতে না পারলেও কোনোমতে নকআউট পেরিয়ে, সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে বেলিংহ্যামদের ইংল্যান্ড।
অপরদিকে, গত মৌসুমেও প্রিমিয়ার লিগ জিতে টানা চার মৌসুম ধরে লিগ শিরোপা ধরে রেখেছে পেপ গার্দিওয়লার ম্যানচেস্টার সিটি। রদ্রি দলটির অধিনায়ক। এছাড়া চলমান ইউরো জয়ের দৌড়ের বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন তিনি।
আজ রাত একটায় রেকর্ড চতুর্থবারের মতো ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে রদ্রি-কারভাহালের স্পেন।
আরও পড়ুন: বিরল কীর্তিতে রোনালদোর পাশে বসলেন ইয়ামাল
২৫৩ দিন আগে